পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৩-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যিম্মাদার আর মুয়াযযিন আমানাতদার। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দু’আ করলেন, ’’হে আল্লাহ! তুমি ইমামদেরকে হিদায়াত দান কর। আর মুয়াযযিনদেরকে মাফ করে দাও’’। (আহমাদ, আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]
আহমাদ ২/৪১৯। ইমাম শাফি‘ঈর শব্দ হলো اَلْاَئِمَّةُ ضُمَنَاءُ وَالْمُؤَذِّنُوْنَ أُمَنَاءُ فَارْشُدْ اَللّهُمَّ...। তবে ইমাম শাফি‘ঈর সানাদটি দুর্বল। কারণ তাতে ইব্রাহীম ইবনু মুহাম্মাদ আল আসলামী রয়েছে যিনি একজন মাতরূক (পরিত্যক্ত) রাবী।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْإِمَامُ ضَامِنٌ وَالْمُؤَذِّنُ مؤتمن الله أَرْشِدِ الْأَئِمَّةَ وَاغْفِرْ لِلْمُؤَذِّنِينَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَفِي أُخْرَى لَهُ بِلَفْظِ المصابيح
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের দায়িত্বের পরিধি ও ফাযীলাতের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যামিনদার। ‘আল্লামা জাফরী (রহঃ) বলেন, ইমাম যামিনদার এ কথার উদ্দেশ্য হলো ইমাম সাহেব সালাতকে দায়িত্ব ও কর্তব্যের সাথে যত্ন সহকারে সম্পাদন করবেন। কেননা, ইমামই সালাতকে সংরক্ষণ করেন। কারণ তার নেতৃত্বে সকলে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে। অপর এক বর্ণনায় বলা হয়, ইমামের সালাতের শুদ্ধতার উপর মুক্তাদীর সালাতের শুদ্ধতা নির্ভরশীল। অর্থাৎ- ইমামই সকল বিষয় যত্ন সহকারে হিসাব রাখেন। যেমন কত রাক্‘আত সালাত আদায় করা হলো ইত্যাদি।
এ হাদীসে আরো বলা হয়েছে যে, মুয়াযযিন বিশ্বস্ত ব্যক্তি। এ কথার উদ্দেশ্য হলো, লোকেরা সালাত, সওম ও অন্যান্য ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে মুয়াযযিনের ওপর নির্ভরশীল। মুসলিম সমাজের লোকেরা মুয়াযযিনের উপর তাদের ‘ইবাদাতের সময়ের ব্যাপারে নির্ভরশীল। ইবনু মাজার মধ্যে ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হাদীসে পাওয়া যায়- মুসলিমদের দু’টি বিষয়, মুয়াযযিনের ওপর ন্যাস্ত, আর তা হলো তাদের সালাত ও সওম।
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ হে আল্লাহ! তুমি ইমামদের সঠিক পথ দেখাও। এর অর্থ, ‘ইলমের ব্যাপারে সঠিক পথ দেখাও। আর তার ‘ইলমের মধ্যে শার‘ঈ মাস্আলাহ্-মাসায়িলের সঠিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, হে আল্লাহ! তুমি মুয়াযযিনদেরকে ক্ষমা কর। এ কথার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ যেন মুয়ায্যিনদের দায়িত্ব যেমন সালাত ও সওম। এর ক্ষেত্রে কোন প্রকার আগপিছ করা ভুলের অপরাধ ক্ষমা করে দেন।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৪-[১১] (’আবদুল্লাহ) ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (পারিশ্রমিক ও বিনিময়ের লোভ বাদ দিয়ে) শুধু সাওয়াব লাভের আশায় সাত বছর পর্যন্ত আযান দেয় তার জন্য জাহান্নামের মুক্তি লিখে দেয়া হয়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «من أذن سبع سِنِين محتسبا كتبت لَهُ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه.
ব্যাখ্যা: হাদীসে আযানদাতার ফাযীলাত বর্ণনা করা হয়েছে। পার্থিব কোন স্বার্থ ছাড়াই শুধুমাত্র পরকালের সাওয়াবের লক্ষ্যে এ দীর্ঘ সময় ধরে আযান দেয়ায় আল্লাহ তা‘আলা তাকে মর্যাদা দান করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ঐ ব্যক্তি প্রথমে জান্নাতে প্রবেশকারীদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তার প্রথম ও শেষ ছোট এবং বড় সকল গোনাহ আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো, তাকে ঈমানের উপর মৃত্যুবরণ করতে হবে।
এই ফাযীলাতের কারণ হলো, এ ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে আযান দিয়েছে। আর আযানের মধ্যে তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য রয়েছে। সে দীর্ঘদিন দুনিয়ার কোন স্বার্থ ছাড়াই সালাতের দিকে, অর্থাৎ- আল্লাহর দিকে মানুষকে আহবান করেছে। এমন ব্যক্তিকে জাহান্নাম স্পর্শ না করারই কথা।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৫-[১২] ’উক্ববাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমার রব সেই মেষপালক রাখালের উপর খুশী হন, যে একা পর্বত চূড়ায় দাঁড়িয়ে সালাতের জন্য আযান দেয় ও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে। আল্লাহ তা’আলা সে সময় তার মালায়িকাহ্-কে (ফেরেশতাগণকে) বলেন, তোমরা আমার এই বান্দার দিকে তাকাও। সে আমাকে ভয় করে (এই পর্বত চূড়ায়) আযান দেয় ও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে। তোমরা সাক্ষী থাক আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম এবং জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিলাম। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةٍ لِلْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلَاةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلَاةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: যে ব্যক্তি মাঠে-ঘাটে অবস্থান করা সত্ত্বেও মহান আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর বিধান মেনে চলে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। হাদীসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি মাঠে ময়দানে রাখাল হিসেবে কাজ করে কিন্তু সালাতের সময় হলে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে আবার তা এমনভাবে আদায় করে যে, আযান দেয় এবং ইক্বামাতও দেয়। আল্লাহ তা‘আলা এমন রাখালের বিষয়ে আশ্চর্যবোধ করেন। এ বিষয়টি তাঁর নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন বান্দাকে তিনি তার সন্তুষ্টি দ্বারা ভূষিত করেন এবং তাকে এ কাজের জন্য যথেষ্ট পুরস্কার দান করেন। কারণ এ বান্দা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। সে নিয়মিত সালাত আদায় করে। আর যা করে তা একমাত্র তার রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য। দুনিয়ার কোন স্বার্থ বা কাউকে দেখানোর জন্য না। তার এ কাজের খবর আল্লাহ তা‘আলা মালায়িকাকে জানিয়ে দেন এবং তিনি এ ঘোষণাও দেন যে, আমি আমার এ বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৬-[১৩] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তিন ধরনের ব্যক্তি ’মিস্কের’ টিলায় থাকবে। প্রথম সেই গোলাম, যে আল্লাহর হক আদায় করে নিজ মুনীবের হকও আদায় করেছে। দ্বিতীয় সেই ব্যক্তি, যে মানুষের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করায়, আর মানুষরা তার উপর খুশী। আর তৃতীয় হলো সেই ব্যক্তি, যে দিনরাত সব সময় পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য আযান দিয়েছে। (তিরমিযী হাদীসটি গারীব বলেছেন)[1]
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ثَلَاثَةٌ عَلَى كُثْبَانِ الْمِسْكِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَبَدٌ أَدَّى حَقَّ اللَّهِ وَحَقَّ مَوْلَاهُ وَرَجُلٌ أَمَّ قَوْمًا وَهُمْ بِهِ راضون وَرجل يُنَادي بالصلوات الْخمس فِي كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث غَرِيب
ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীসে ঐসব ব্যক্তিদের ফাযীলাত ও গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে যারা আল্লাহ এবং স্বীয় মুনীবের হক আদায় করে। এমন ব্যক্তি যে কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে ইমামতি করে আর সম্প্রদায়ের লোকেরা তার উপর সন্তুষ্ট এবং এমন ব্যক্তি যে দিনে রাতে পাঁচবার মানুষদেরকে সালাতের দিকে আহবান করে। আর এসব ব্যক্তি ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) দিবসে কস্তুরীর স্তুপের উপর অবস্থান করবে।
এমন বান্দা যে আল্লাহর হক আদায় করে। এখানে আল্লাহর হক বলতে বুঝানো হয়েছে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে নেয়া, তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করা বরং একনিষ্ঠভাবে তাঁর ‘ইবাদাতে নিজেকে নিয়োজিত রাখা।
আর মুনীবের হক বলতে বুঝানো হয়েছে, পার্থিব জীবনে ব্যক্তি যার তত্ত্বাবধানে থাকবে তার প্রয়োজন মিটানো।
এমন ইমাম, মুক্তাদীগণ যার ওপর খুশী। এর অর্থ হলো ইমামের জ্ঞান, দায়িত্ববোধ ও ‘ইলমে ক্বিরাআতের বিশুদ্ধতার জন্য মুক্তাদীগণ খুশী। আসলে একজন ইমামের মধ্যে শারী‘আতের জ্ঞান মজবুতভাবে না থাকলে সে মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারবে না। আবার তার মধ্যে যদি দায়িত্ববোধ না থাকে তাহলে সে সালাতে সময়মত উপস্থিত হতে পারবে না এবং ইমামের ‘ইলমে ক্বিরাআত (কিরআত) শুদ্ধ না হলে সালাতও শুদ্ধ হবে না। সুতরাং একজন ইমামের এ গুণগুলো থাকা আবশ্যক। আর যে সকল মুয়াযযিন ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে মানুষদেরকে দৈনিক পাঁচবার সালাতের দিকে আহবান করে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন অন্যান্য মানুষের ওপর তাদেরকে মর্যাদা দানের জন্য মিস্কের স্তুপের উপর দাঁড় করিয়ে রাখবেন।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৭-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুয়াযযিন, তাকে মাফ করে দেয়া হবে। তার আযানের আওয়াজের শেষ সীমা পর্যন্ত তার জন্য সাক্ষ্য দেবে প্রতিটা সজীব ও নির্জীব জিনিস। যে সালাতে উপস্থিত হবে, তার জন্য প্রতি সালাতে পঁচিশ সালাতের সাওয়াব লিখা হবে। মাফ করে দেয়া হবে তার দুই সালাতের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহগুলো। (আহমাদ, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ্ ও নাসায়ী)[1]
কিন্তু নাসায়ী, প্রত্যেক সজীব নির্জীব পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। তারপর তিনি আরও বলেছেন, তার জন্য সাওয়াব রয়েছে যারা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছে তাদের সমান।[2]
[2] সহীহ : নাসায়ী ৬৪৬, সহীহ আল জামি‘ ১৮৪১।
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُؤَذِّنُ يُغْفَرُ لَهُ مد صَوْتِهِ وَيَشْهَدُ لَهُ كُلُّ رَطْبٍ وَيَابِسٍ وَشَاهِدُ الصَّلَاة يكْتب لَهُ خمس وَعِشْرُونَ حَسَنَة وَيُكَفَّرُ عَنْهُ مَا بَيْنَهُمَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَرَوَى النَّسَائِيُّ إِلَى قَوْلِهِ: «كُلُّ رَطْبٍ وَيَابِسٍ» . وَقَالَ: «وَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ من صلى»
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে মুয়াযযিনের ফাযীলাত বর্ণনার পাশাপাশি জামা‘আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মুয়াযযিনের আযানের ধ্বনি যে পর্যন্ত পৌঁছবে তার মধ্যকার সকল প্রাণী ও অপ্রাণী মুয়াযযিনের ক্ষমার জন্য দু‘আ করতে থাকবে। মূলত এর দ্বারা মুয়াযযিনকে উচ্চৈঃস্বরে আযান দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। আর যে ব্যক্তি সালাতে উপস্থিত হবে তাকে পঁচিশ রাক্‘আত সালাতের সাওয়াব দেয়া হবে। এখানে উপস্থিত হওয়ার দ্বারা জামা‘আতে সালাত আদায় করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর মর্মার্থ হলো, দুই আযান তথা আযান ও ইক্বামাতের মধ্যে অথবা এক সালাত থেকে অপর সালাতের মধ্যে সংঘটিত গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৮-[১৫] ’উসমান ইবনু আবুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আমার জাতির ইমাম নিযুক্ত করে দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি তাদের ইমাম। তবে ইমামতির সময় তাদের সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তির প্রতি লক্ষ্য রেখ। একজন মুয়াযযিন নিযুক্ত করে নিও, যে আযান দেবার বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে না। (আহমাদ, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ قَالَ قُلْتُ: يَا رَسُول الله اجْعَلنِي إِمَام قومِي فَقَالَ: «أَنْتَ إِمَامُهُمْ وَاقْتَدِ بِأَضْعَفِهِمْ وَاتَّخِذْ مُؤَذِّنًا لَا يَأْخُذُ عَلَى أَذَانِهِ أَجْرًا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসের মাধ্যমে ইমামের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি আযানের বিনিময়ে বিনা পারিশ্রমিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ হাদীসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমামকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, তুমি যাদের ইমামতি করবে তাদের দুর্বলদের প্রতি খেয়াল রাখো। জামা‘আতের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকে। যেমন- অসুস্থ, বয়োঃবৃদ্ধ ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে ইমাম সালাতকে ছোট করবে যাতে কোন আরকান-আহকাম ছুটে না যায়। ইমাম সাহেব সালাতের ক্বিরাআত (কিরআত) ও বিভিন্ন সময়ের তাসবীহ কমিয়ে দিয়ে সালাতকে সংক্ষেপ করবে। আমির আল ইয়ামিনী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত হয় যে, ভালো কাজের নেতৃত্ব চেয়ে নেয়া জায়িয। আলোচ্য হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, আযানের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়িয। ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, অধিকাংশ ‘উলামায়ে কিরামের রায় হলো, আযানের বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেয়া মাকরূহ।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৬৯-[১৬] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে মাগরিবের আযানের সময় এ দু’আটি পড়ার জন্য শিখিয়ে দিয়েছেনঃ ’’আল্লা-হুম্মা ইন্না হা-যা- ইক্ববা-লু লায়লিকা ওয়া ইদবা-রু নাহা-রিকা ওয়া আস্ওয়া-তু দু’আ-তিকা ফাগফির লী’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! এ আযানের ধ্বনি তোমার দিনের বিদায় ধ্বনি এবং তোমার মুয়াযযিনের আযানের সময়। তুমি আমাকে ক্ষমা কর।)। (আবূ দাঊদ ও বায়হাক্বী- দা’ওয়াতে কাবীর)[1]
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: عَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَن أَقُول عِنْد أَذَان الْمغرب: «اللَّهُمَّ إِن هَذَا إِقْبَالُ لَيْلِكَ وَإِدْبَارُ نَهَارِكَ وَأَصْوَاتُ دُعَاتِكَ فَاغْفِرْ لِي» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের সময় তথা মাগরিবের আযানের পর পড়ার জন্য একটি বিশেষ দু‘আ শিক্ষা দিয়েছেন। এ হাদীসে দু‘আর শব্দ বলতে আযানকে বুঝানো হয়েছে। এ সময়ে ক্ষমা চাওয়ার দ্বারা এ কথাও প্রমাণিত হয় যে, আযানের সময়টা দু‘আ কবূলের একটি বিশেষ সময়। মুয়াযযিন যখন আযান শেষ করবেন তখন নাবীর প্রতি দরূদ পাঠ করা, আযানের দু‘আ পাঠ করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা মুস্তাহাব।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৭০-[১৭] আবূ উমামাহ্ অথবা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন সাহাবী বলেন, একবার বিলাল (রাঃ)ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিতে শুরু করলেন। তিনি যখন ’’ক্বদ্ ক্ব-মাতিস্ সলা-হ্’’ বললেন, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’আক্ব-মাহাল্ল-হু ওয়া আদা-মাহা-’’ (আল্লাহ সালাতকে ক্বায়িম করুন ও একে চিরস্থায়ী করুন)। বাকী সব ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ে ’উমার (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে আযানের উত্তরে যেরূপ উল্লেখ রয়েছে সেরূপই বললেন। (আবূ দাঊদ)[1]
বিঃ দ্রঃ যখন হাদীসটির দুর্বলতা প্রমাণিত হয়ে যায় তখন সে হাদীসের প্রতি দু’টি কারণে ‘আমল করা যাবে না। প্রথমত হাদীসটি ফাযীলাত সংক্রান্ত নয় কারণ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ -এর সময় أَقَامَهَا اللّهُ وَأَدَامَهَا বলা শারী‘আতসম্মত নয় এবং অন্য কোন হাদীসে এর ফাযীলাত বর্ণিত হয়নি যে, বলা হবে এটি ফাযীলাত সংক্রান্ত ‘আমল যার প্রতি ‘আমল করা যাবে। পক্ষান্তরে এটিকে কেবলমাত্র এ ধরনের দুর্বল হাদীস দ্বারা প্রমাণিত করে শারী‘আত সম্মত করাটা শারী‘আতের নীতির অনেক দূরবর্তী বিষয় যা গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিতীয়ত এটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যাপক উক্তির পরিপন্থী। যেখানে তিনি বলেছেন যখন তোমরা মুয়াযযিনকে আযান বা ইক্বামাত বলতে শুনবে তখন তোমরা তার মতো বলো.....। তাই হাদীসটি তার ব্যাপকতার উপর রাখাটাই আবশ্যক। অতএব, আমরা ইক্বামাতের সময় قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ বলব।
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ أَوْ بَعْضِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ بِلَالًا أَخَذَ فِي الْإِقَامَةِ فَلَمَّا أَنْ قَالَ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَقَامَهَا اللَّهُ وَأَدَامَهَا» وَقَالَ فِي سَائِر الْإِقَامَة: كنحو حَدِيث عمر رَضِي الله عَنهُ فِي الْأَذَان. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: এ হাদীস দ্বারা ইক্বামাতের উত্তর দেয়ার বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া যায়। ইক্বামাতের উত্তর দেয়ার সময় ইক্বামাত দাতা যা বলবেন উত্তরদাতাও তাই বলবেন। তবে দুই হাইয়্যা......... বলার সময় বলতে হবে লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ। তা ছাড়া মুয়াযযিন যখন ক্বদ্ ক্ব-মাতিস সলা-হ্ বলবেন তার উত্তরে বলতে হবে ‘‘আক্ব-মাহাল্লা-হু ওয়া আদামাহা-’’। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহ এই সালাতকে প্রতিষ্ঠিত করুন এবং স্থায়ী রাখুন। এ হাদীস দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে, ইক্বামাত দাতা যখন ইক্বামাত শেষ করবেন তখনই ইমাম সাহেব তাকবীর দেবেন।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৭১-[১৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আযান ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ আল্লাহ তা’আলার দরবার হতে ফেরত দেয়া হয় না। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يُرَدُّ الدُّعَاءُ بَيْنَ الْأَذَان وَالْإِقَامَة» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ের দু‘আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। অর্থাৎ- তা আল্লাহ তা‘আলা কবূল করে নেন। তাই এ সময়ে সকলের দু‘আ করা উচিত। আর এ ব্যাপারে সহীহ ইবনু হিব্বান-এর হাদীস রয়েছে। যাতে বলা হয়েছে যে, আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়টা দু‘আ কবূলের সময়। আর এখানে দু‘আ বলতে যে কোন দু‘আর কথা বলা হয়েছে। অন্য হাদীসে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, ঐ দু‘আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না, যা আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে করা হয়ে থাকে। তখন সহাবায়ি কিরামগণ বললেন, আমরা কোন্ দু‘আ করবো? রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর দুনিয়া ও আখিরাতের সুখ-শান্তি প্রার্থনা কর।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৭২-[১৯] সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ সময়ের দু’আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না অথবা (তিনি বলেছেন) কমই ফিরিয়ে দেয়া হয়। আযানের সময়ের দু’আ ও যুদ্ধের সময়ের দু’আ, যখন পরস্পর কাটাকাটি, মারামারি আরম্ভ হয়ে যায়। আর এক বর্ণনায় আছে বৃষ্টি বর্ষণের সময়ে দু’আ। (আবূ দাঊদ)[1] তবে দারিমীর বর্ণনায় ’’বৃষ্টির বর্ষণের’’ কথাটুকু উল্লেখ হয়নি।
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ثِنْتَانِ لَا تُرَدَّانِ أَوْ قَلَّمَا تُرَدَّانِ الدُّعَاءُ عِنْدَ النِّدَاءِ وَعِنْدَ الْبَأْسِ حِينَ يُلْحِمُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا» وَفِي رِوَايَةٍ: «وَتَحْتَ الْمَطَرِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ إِلَّا أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ «وَتَحْت الْمَطَر»
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে দু‘আ কবূলের সময়ের কথা বলা হয়েছে। ডাকার সময় অর্থাৎ- যখন আযান চলে অথবা আযান শেষ হওয়ার পর যে দু‘আ করা হয় তা আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। বরং কবূল করেন। যুদ্ধের সময়ে যে দু‘আ করা হয়, আল্লাহ তা‘আলা তা কবূল করে নেন। অর্থাৎ- কাফিরদের সাথে যুদ্ধের চরম মুহূর্তে যদি আল্লাহর কাছে দু‘আ করা হয় আল্লাহ সে দু‘আ ফিরিয়ে দেন না বরং কবূল করে নেন। আল্লাহর নিকট বৃষ্টির সময় দু‘আ করলে আল্লাহর সে দু‘আ কবূল করে নেন। অর্থাৎ- কোন ব্যক্তির উপর যখন বৃষ্টি পতিত হয় তখন আল্লাহ তার দু‘আ কবূল করেন। কেননা, যখন বৃষ্টি হয় তখন আল্লাহর রহমাত ও বারাকাত নাযিল হয়। সুতরাং যখন রহমাত ও বারাকাত নাযিল হয়, তখন দু‘আ করা উচিত।
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযানের ফযীলত ও মুয়াযযিনের উত্তর দান
৬৭৩-[২০] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আবেদন করলো, হে আল্লাহর রসূল! আযানদাতাতো আমাদের চেয়ে মর্যাদায় বেড়ে যায়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা যেভাবে বলে তোমরাও তাদের সাথে সাথে সেভাবে বলে যাও। আর আযানের উত্তর শেষে যা খুশী তাই আল্লাহর কাছে চাও, তোমাদেরকে দেয়া হবে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الْمُؤَذِّنِينَ يَفْضُلُونَنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قُلْ كَمَا يَقُولُونَ فَإِذَا انْتَهَيْتَ فسل تعط» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে মুয়াযযিনদের মর্যাদা ও আযানের উত্তরদাতাদের মাহাত্ম্যের বিষয় আলোচিত হয়েছে। মুয়াযযিন আযানে যা বলে শ্রবণকারীও যদি তাই বলে, তাহলে মুয়াযযিনের সমান মর্যাদা ও সাওয়াব লাভ করবে। তবে হাইয়ালাতায়নের সময় ব্যতীত। আর শেষ হলে আল্লাহর কাছে দু‘আ, আল্লাহ কবূল করেন এবং দু‘আকারীর প্রয়োজন মিটিয়ে দেন।