পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮১৯-[১৯] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বয়স যখন আট বছর তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সেবায় যোগ দেই এবং দশ বছর তাঁর সেবা করি। কোন সময় কোন বস্তু আমার হাতে নষ্ট হয়ে গেলেও তিনি (সা.) আমাকে কখনো তিরস্কার করেননি। পরিবারবর্গের কেউ যদি আমাকে তিরস্কার করতেন, তখন তিনি (সা.) বলতেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা যা ভাগ্যে লিপিবদ্ধ ছিল তা তো হবেই। [এটা মাসাবীহ-এর শব্দ, আর ইমাম বায়হাকী (রহিমাহুল্লাহ) শু’আবূল ঈমানে কিছু পরিবর্তনসহ বর্ণনা করেছেন]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: خَدَمْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا ابْنُ ثَمَانِ سِنِينَ خَدَمْتُهُ عَشْرَ سِنِينَ فَمَا لَامَنِي عَلَى شَيْءٍ قَطُّ أَتَى فِيهِ عَلَى يَدَيَّ فَإِنْ لَامَنِي لَائِمٌ مِنْ أَهْلِهِ قَالَ: «دَعُوهُ فَإِنَّهُ لَوْ قُضِيَ شَيْءٌ كَانَ» . هَذَا لَفَظُ «الْمَصَابِيحِ» وَرَوَى الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» . مَعَ تَغْيِيرٍ يَسِيرٍ

صحیح ، ذکرہ البغوی فی المصابیح السنۃ (4 / 57 ۔ 58 ح 4538) و رواہ البیھقی فی شعب الایمان (8070 و کتاب القدر : 212 و سندہ صحیح) ولہ شواھد عند احمد (3 / 231 و ابن سعد (7 / 17) و البخاری (2768 ، 6038 ، 6911) و مسلم (2309) و الخطیب فی تاریخ بغداد (3 / 303) و ابن حبان (الموارد : 1816) وغیرھم ۔ * و رواہ الخرائطی فی مکارم الاخلاق (71) ۔
(صَحِيح)

عن انس قال: خدمت رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا ابن ثمان سنين خدمته عشر سنين فما لامني على شيء قط اتى فيه على يدي فان لامني لاىم من اهله قال: «دعوه فانه لو قضي شيء كان» . هذا لفظ «المصابيح» وروى البيهقي في «شعب الايمان» . مع تغيير يسير صحیح ، ذکرہ البغوی فی المصابیح السنۃ (4 / 57 ۔ 58 ح 4538) و رواہ البیھقی فی شعب الایمان (8070 و کتاب القدر : 212 و سندہ صحیح) ولہ شواھد عند احمد (3 / 231 و ابن سعد (7 / 17) و البخاری (2768 ، 6038 ، 6911) و مسلم (2309) و الخطیب فی تاریخ بغداد (3 / 303) و ابن حبان (الموارد : 1816) وغیرھم ۔ * و رواہ الخراىطی فی مکارم الاخلاق (71) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (لَوْ قُضِيَ شَيْءٌ كَانَ) অর্থ ‘যা নির্ধারিত ছিল তা তো হবেই।' অর্থাৎ কোন জিনিস ভেঙে যাওয়া, ফেটে যাওয়া ও নষ্ট হওয়া সবই মহান আল্লাহর ফায়সালা ও হুকুমের অধীনে হয়ে থাকে, যদিও তার বাহ্যিক কারণ অন্য কিছু হয়ে থাকে। অতএব যদি কোন ব্যক্তি কোন জিনিস নষ্ট হওয়ার বাহ্যিক কারণ হয় তাহলে তাকে তিরস্কার করার দ্বারা কোন লাভ হবে না। এ বাস্তবতাকেই সামনে রেখে এক হাদীসে এসেছে যে, যদি বাঁদি ও খাদিমার হাতে কোন পাত্র ভেঙ্গে যায় তাহলে তাকে মারধর করো না। কেননা প্রতিটি বস্তুরই ধ্বংস আছে এবং তা অবশিষ্ট থাকার একটি সময়সীমা রয়েছে। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬৫৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২০-[২০] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অশ্লীলভাষী ছিলেন না এবং অশালীন কথা বলার চেষ্টাও করতেন না। তিনি (সা.) হাট-বাজারে শোর-গোলকারী ছিলেন না। আর মন্দের প্রতিশোধ তিনি মন্দের দ্বারা নিতেন না, বরং তা ক্ষমা করে দিতেন এবং উপেক্ষা করে চলতেন। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاحِشًا وَلَا مُتَفَحِّشًا وَلَا سَخَّابًا فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا يَجْزِي بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلَكِنْ يَعْفُو وَيَصْفَحُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2016 وقال : حسن صحیح) ۔
(صَحِيح)

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: لم يكن رسول الله صلى الله عليه وسلم فاحشا ولا متفحشا ولا سخابا في الاسواق ولا يجزي بالسيىة السيىة ولكن يعفو ويصفح. رواه الترمذي اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2016 وقال : حسن صحیح) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সা.) অশ্লীলভাষী ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি কথায় ও কাজে অশ্লীল ছিলেন না।
(مُتَفَحِّشًا) অর্থাৎ তিনি তাতে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় অভ্যস্ত ছিলেন না। নিহায়াহ্ গ্রন্থে এরূপই এসেছে। কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে রাসূলুল্লাহ (সা.) যে স্বাভাবিকভাবে বা কষ্টে পড়ে অশ্লীল বাক্য বা কাজ করতেন এমন বিষয়কে অস্বীকার করা হয়েছে।
(يَصْفَحُ) অর্থৎ তিনি তাদের ভুল-ত্রুটিকে বাহ্যিকভাবে উপেক্ষা করে চলতেন। আর এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, (فَاعۡفُ عَنۡهُمۡ وَ اصۡفَحۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ) “আর আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন আর তাদেরকে উপেক্ষা করে চলুন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালোবাসেন”- (সূরাহ্ আল মায়িদাহ ৫ : ১৩)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২১-[২১] আনাস (রাঃ) নবী (সা.) -এর চরিত্র প্রসঙ্গে বলেছেন যে, তিনি (সা.) রোগীর সেবা-শুশ্রুষা করতেন, জানাযার সাথে যেতেন, দাস-গোলামদের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করতেন এবং গাধায় আরোহণ করতেন। বর্ণনাকারী [আনাস (রা.)] বলেন, খায়বারের যুদ্ধের দিন আমি তাকে এমন একটি গাধায় আরোহণ অবস্থায় দেখেছি, যার লাগাম ছিল খেজুর গাছের ছালের। (ইবনু মাজাহ ও বায়হাক্বী’র শুআবূল ঈমান)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ أَنَسٍ يُحَدِّثَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كانَ يعودُ المريضَ وَيتبع الْجِنَازَة ويجيب دَعْوَة الْمَمْلُوك ويركب الْحمار لَقَدْ رَأَيْتُهُ يَوْمَ خَيْبَرَ عَلَى حِمَارٍ خِطَامُهُ لِيفٌ. رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ»

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (4178 ، 2296) و البیھقی فی شعب الایمان (8190 ۔ 8191) [و الترمذی (1017 وقال : غریب ، لا نعرفہ الا من حدیث مسلم عن انس و مسلم الاعور یضعف ،،، الخ)] * مسلم بن کیسان الاعور : ضعیف ۔
(ضَعِيف)

وعن انس يحدث عن النبي صلى الله عليه وسلم انه كان يعود المريض ويتبع الجنازة ويجيب دعوة المملوك ويركب الحمار لقد رايته يوم خيبر على حمار خطامه ليف. رواه ابن ماجه والبيهقي في «شعب الايمان» اسنادہ ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (4178 ، 2296) و البیھقی فی شعب الایمان (8190 ۔ 8191) [و الترمذی (1017 وقال : غریب ، لا نعرفہ الا من حدیث مسلم عن انس و مسلم الاعور یضعف ،،، الخ)] * مسلم بن کیسان الاعور : ضعیف ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: (ويجيب دَعْوَة الْمَمْلُوك) অর্থাৎ তিনি (সা.) অনুমতিপ্রাপ্ত দাসের দা'ওয়াত গ্রহণ করতেন অথবা মুক্ত দাসের দাওয়াত গ্রহণ করতেন অথবা তিনি দাসের মালিকের বাড়িতে দাওয়াত নিতে দাসের দা'ওয়াতে সাড়া দিতেন।
(ويركب الْحمار) অর্থাৎ এসবই সৃষ্টির প্রতি তার পূর্ণ বিনয়ের প্রতি ইঙ্গিত বহন করে। সৃষ্টির প্রতি তার সুন্দর আচরণ ও নমনীয় ব্যবহার কেমন ছিল তা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখান থেকে আরো বুঝা যায়, গাধায় আরোহণ করা সুন্নাত। আমি বলি, যদি কেউ অহংকার করে নাক ছিটকায় তাহলে সে গাধার চেয়ে নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে। হিন্দুস্তানের কতিপয় জাহিলগণ এরূপ কাজ করে থাকে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২২-[২২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের জুতা নিজেই ঠিক করে নিতেন, কাপড় সেলাই করতেন এবং গৃহের কাজকর্ম করতেন, যেমন তোমাদের কেউ স্বীয় গৃহের কাজকর্ম করে থাকে। আয়িশাহ্ (রাঃ) এটাও বলেছেন যে, তিনি (সা.) অন্যান্য মানুষের মতো একজন মানুষই ছিলেন। নিজের কাপড়চোপড় হতে উকুন বাছতেন, নিজ বকরির দুধ দোহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই সম্পাদন করতেন। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْصِفُ نَعْلَهُ وَيَخِيطُ ثَوْبَهُ وَيَعْمَلُ فِي بَيْتِهِ كَمَا يَعْمَلُ أَحَدُكُمْ فِي بَيْتِهِ وَقَالَتْ: كَانَ بَشَرًا مِنَ الْبَشَرِ يَفْلِي ثَوْبَهُ وَيَحْلُبُ شَاتَهُ وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

حسن ، رواہ الترمذی [فی الشمائل (341) و البخاری فی الادب المفرد (541 و سندہ حسن)] * الشطر الاول الی ’’ فی بیتہ ‘‘ رواہ احمد (6 / 106 ، 121 ، 167 ، 260 ایضًا) و فیہ علۃ عند احمد (6 / 241) و للحدیث شواھد عند احمد (6 / 256) وغیرہ ۔
(صَحِيح)

وعن عاىشة قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخصف نعله ويخيط ثوبه ويعمل في بيته كما يعمل احدكم في بيته وقالت: كان بشرا من البشر يفلي ثوبه ويحلب شاته ويخدم نفسه. رواه الترمذي حسن ، رواہ الترمذی [فی الشماىل (341) و البخاری فی الادب المفرد (541 و سندہ حسن)] * الشطر الاول الی ’’ فی بیتہ ‘‘ رواہ احمد (6 / 106 ، 121 ، 167 ، 260 ایضا) و فیہ علۃ عند احمد (6 / 241) و للحدیث شواھد عند احمد (6 / 256) وغیرہ ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْصِفُ) অর্থাৎ তিনি (সা.) কাপড়ে তালি বা জোড়া দিতেন। শারহুস সুন্নাহতে এসেছে- অর্থাৎ তিনি একটির সাথে অন্যটিকে মিলিয়ে দিতেন। খসফ’ শব্দটির প্রকৃত অর্থ হলো মিলানো ও একত্রিত করা।
(يَفْلِي ثَوْبَهُ) অর্থাৎ তিনি তাঁর কাপড়ে লক্ষ্য করতেন সেখানে কোন ধরনের কোন উকুন আছে কি? আর এ অর্থটাও ঠিক আছে যাতে বর্ণিত আছে- উকুন তাকে কোন ধরনের কষ্ট দিত না। ব্যাখ্যাকার বলতেন, তিনি উকুন বেছে ফেলে দিতেন।
(وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ) আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ আচরণ থেকে বুঝা যায় যে, তিনি (সা.) একজন মানুষ ছিলেন। কারণ কাফিরদের আকীদাহ্ হলো এই যে, নবী (সা.) অন্য সাধারণ মানুষ যা করে তা তিনি করতে পারেন না। তারা তাকে বাদশাহ-এর মতো মনে করেন। তারা অহঙ্কার করে তাকে দুনিয়ার সাধারণ কাজকর্মের ঊর্ধ্বে মনে করেন। যেমন মহান আল্লাহ তাদের ‘আকীদাহ্ উল্লেখ করে বলেন, (وَ قَالُوۡا مَالِ هٰذَا الرَّسُوۡلِ یَاۡکُلُ الطَّعَامَ وَ یَمۡشِیۡ فِی الۡاَسۡوَاقِ) “আর তারা বলে, এটা কেমন রাসূল যে খাবার খায় ও বাজারে চলাফেরা করে?” (সূরা আল ফুরকান ২৫ : ৭)।
অতএব তিনি বলেন, তিনি তো মহান আল্লাহর একজন সৃষ্টি। আর আদম সন্তানের একজন। আল্লাহ তাকে নুবুওয়্যাত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আর তাকে রাসূল করে তাঁকে মর্যাবান করেছেন। আর তিনি (সা.) উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে সৃষ্টির সাথে জীবনযাপন করবেন। আর সত্য ও হাক্বের সাথে জীবনযাপন করবেন। তিনি (সা.) তাই করবেন যা তারা করে। তিনি (সা.) তাদের কাজে সাহায্য করবেন, তিনি বিনয়ী হবেন ও বিনয়ের প্রতি দিক-নির্দেশনা প্রদান করবেন। আর অহংকার পরিহার করবেন এবং সৃষ্টির প্রতি সত্য রিসালাত প্রচার করবেন। যেমনটি তিনি আদেশ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, (قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ) “বলুন! আমি তোমাদের মতো মানুষ আমার ওপর ওয়াহী করা হয়”- (সূরাহ্ আল কাহফ ১৮ : ১১০)। আল জামি' গ্রন্থে এসেছে, তিনি দুর্বল মুসলিমদের নিকট আসতেন, তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতেন, তাদের অসুস্থদের দেখাশোনা করতেন। তাদের জানাযায় শরীক থাকতেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৩-[২৩] খারিজাহ্ ইবনু যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন কতিপয় লোক যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর কাছে এসে বলল, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কিছু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আমি ছিলাম তার প্রতিবেশী, যখন তার ওপরে ওয়াহী অবতীর্ণ হত, তখন তিনি লোক পাঠিয়ে আমাকে ডেকে আনতেন, আমি তাকে তা লিখে দিতাম। রাসূল (সা.) -এর সাধারণ অভ্যাস ছিল, যখন আমরা দুনিয়ার ব্যাপারে কোন আলোচনা করতাম, তিনিও আমাদের সাথে সেই আলোচনায় শামিল হতেন। আর আমরা যখন পরকাল সম্পর্ক কথাবার্তা বলতাম, তখন তিনিও আমাদের সাথে সেই আলোচনায় অংশ নিতেন এবং যখন আমরা খানাপিনার কথা বলতাম, তখন তিনিও আমাদের সাথে সেই আলোচনায় শামিল হতেন। মোটকথা, উল্লিখিত সকল বিষয়গুলো আমি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করছি। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ خَارِجَةَ بْنِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ: دَخَلَ نَفَرٌ عَلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ فَقَالُوا لَهُ: حَدِّثْنَا أَحَادِيثَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كُنْتُ جَارَهُ فَكَانَ إِذَا نزل الْوَحْيُ بَعَثَ إِلَيَّ فَكَتَبْتُهُ لَهُ فَكَانَ إِذَا ذَكَرْنَا الدُّنْيَا ذَكَرَهَا مَعَنَا وَإِذَا ذَكَرْنَا الْآخِرَةَ ذَكَرَهَا مَعَنَا وَإِذَا ذَكَرْنَا الطَّعَامَ ذَكَرَهُ مَعَنَا فَكُلُّ هَذَا أُحَدِّثُكُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (فی الشمائل : 342) و البغوی فی شرح السنۃ (13 / 245 ح 3679)] * فیہ سلیمان بن خارجۃ : مجھول الحال ۔
(ضَعِيف)

وعن خارجة بن زيد بن ثابت قال: دخل نفر على زيد بن ثابت فقالوا له: حدثنا احاديث رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: كنت جاره فكان اذا نزل الوحي بعث الي فكتبته له فكان اذا ذكرنا الدنيا ذكرها معنا واذا ذكرنا الاخرة ذكرها معنا واذا ذكرنا الطعام ذكره معنا فكل هذا احدثكم عن رسول الله صلى الله عليه وسلم. رواه الترمذي اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (فی الشماىل : 342) و البغوی فی شرح السنۃ (13 / 245 ح 3679)] * فیہ سلیمان بن خارجۃ : مجھول الحال ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: (دَخَلَ نَفَرٌ) অর্থাৎ তাবিঈদের একটি দল। বলা হয়ে থাকে যে, ‘নাফার’ বলা হয় যেখানে তিন থেকে দশজন সদস্য হয়ে থাকে।
(إِذَا ذَكَرْنَا الدُّنْيَا) অর্থাৎ দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র হিসেবে তিনি প্রশংসা ও নিন্দা করার জন্য আমাদের সাথে আলোচনায় শামিল হতেন।
(وَإِذَا ذَكَرْنَا الْآخِرَةَ ذَكَرَهَا مَعَنَا) অর্থাৎ তিনি (সা.) আমাদের সাথে শামিল থাকতেন যাতে বেশি কল্যাণ লাভ হয় ও তাক্বওয়ার কাজে সহযোগিতা হয়।
(وَإِذَا ذَكَرْنَا الطَّعَامَ ذَكَرَهُ مَعَنَا) অর্থাৎ তিনি (সা.) এখানে ইঙ্গিত করেছেন তার উপকারিতার প্রতি, তার হিকমাতের প্রতি, সূক্ষ্ম বিষয়ের প্রতি ও তার আদবের প্রতি।

মোটকথা তিনি (সা.) কথায় নমনীয়তা প্রকাশ করতেন যাতে কোন ধরনের ক্ষতি না হয়। তাকে যেভাবে শারী'আতের বিধি-বিধান প্রচারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৪-[২৪] আনাস (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোন লোকের সাথে মুসাফাহা করতেন, তখন তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত হাতখানা সরিয়ে নিতেন না, যতক্ষণ না সেই লোক নিজের হাত সরিয়ে নিত। আর তিনি (সা.) সেই লোকের দিক হতে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিতেন না, যতক্ষণ না সে রাসূল (সা.) -এর দিক হতে স্বীয় চেহারা ফিরিয়ে নিত। আর তাকে নিজের সাথে বসা লোকজনের সাথে কখনো হাঁটু বাড়িয়ে বসতে দেখা যায়নি। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا صَافَحَ الرَّجُلَ لَمْ يَنْزِعْ يَدَهُ مِنْ يَدِهِ حَتَّى يَكُونَ هُوَ الَّذِي يَنْزِعُ يَدَهُ وَلَا يَصْرِفُ وَجْهَهُ عَنْ وَجْهِهِ حَتَّى يَكُونَ هُوَ الَّذِي يَصْرِفُ وَجْهَهُ عَن وَجهه وَلم يُرَ مقدِّماً رُكْبَتَيْهِ بَين يَدي جليس لَهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2490 وقال : غریب) [و ابن ماجہ (3716)] * زید العمی ضعیف و تلمیذہ لین ولہ شاھد ضعیف عند ابی داود (4794) وغیرہ ۔
(ضَعِيف)

وعن انس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذا صافح الرجل لم ينزع يده من يده حتى يكون هو الذي ينزع يده ولا يصرف وجهه عن وجهه حتى يكون هو الذي يصرف وجهه عن وجهه ولم ير مقدما ركبتيه بين يدي جليس له. رواه الترمذي اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2490 وقال : غریب) [و ابن ماجہ (3716)] * زید العمی ضعیف و تلمیذہ لین ولہ شاھد ضعیف عند ابی داود (4794) وغیرہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসটি থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মুসাফাহ্ করতে হবে এক হাত দিয়ে। তা হলো ডান হাত দিয়ে। যেমন- হাদীসে বলা হলো (اذاصافح الرجل لم ينزع يده من يده حتى يكون هو الزى ينزع يده) অর্থাৎ “যখন কোন ব্যক্তির সাথে নবী (সা.) এ মুসাফাহ্ করতেন, তখন তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত নিজের হাতখানা (ডানহাত) সরিয়ে নিতেন না, যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি নিজের হাত সরিয়ে নিতেন।” এখান থেকে বুঝা গেল, মুসাফাহ্ করার সময় উভয়ে এক হাত করে ব্যবহার করবেন তা হলো উভয়ের ডান হাত। হাদীসের শব্দগুলো তার প্রমাণ- (يده) শব্দটি হাদীসে তিনবার ব্যবহার করা হয়েছে। যার অর্থ একহাত বা হাতখানা। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার ডান হাতখানা দ্বারা মুসাফাহ্ করতেন, তার সাথে যিনি মুসাফাহ্ করতেন তিনিও তাঁর ডান হাতখানা বাড়িয়ে দিতেন।

বর্তমানে দু’জনে মুসাফাহ করার সময় যে চার হাত ব্যবহার করা হচ্ছে নবী (সা.) থেকে এ মর্মে পৃথিবীতে কোন হাদীস পাওয়া যায় না। (সম্পাদকীয়)

(رُكْبَتَيْهِ بَين يَدي جليس) অর্থাৎ তিনি (সা.) যখন কোন মজলিসে বসতেন তখন তার দু' হাটুকে তার সাথির দু হাঁটুর উপর রাখতেন না। যেমনটিভাবে অহংকারী রাজা বাদশাগণ তাদের মাজলিসগুলোতে করে থাকে। বলা হয়ে থাকে, তার সামনে যারা বসত তিনি তাদের নিকট তার দু' হাঁটুকে উঁচু করতেন না। বরং তিনি (সা.) তাদের সম্মানার্থে দু' হাঁটুকে নামিয়ে রাখতেন। তারা বলেছেন, তিনি (সা.) দু' হাঁটু দিয়ে উদ্দেশ্য করেছেন দু' পা। আর আগে বাড়ানো হলো তাকে লম্বা করা ও বাড়িয়ে দেয়া। বলা হয়ে থাকে, এক পা আগে বাড়িয়ে রাখা ও আর এক পা পিছনে রাখা। এর অর্থ হলো তার সাথির সম্মানার্থে তার দিকে তার পা লম্বা করে দিবে না। নবী (সা.) -এর কথার ব্যাপারে ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তিনি তার সাথির হাত সরিয়ে নেয়ার আগে তার নিজের হাতকে সরিয়ে নিতেন না, এতে তার উম্মতের জন্য শিক্ষা হলো তার সাথিকে সম্মান ও মর্যাদা করবে। তার সাথির হাত থেকে নিজের হাতকে আগে সরিয়ে নিবে না, আর তার দিকে তার পা বাড়িয়ে দিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করবে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৫-[২৫] উক্ত রাবী [আনাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) আগামী দিনের উদ্দেশে (নিজের জন্য) কোন কিছুই জমা করে রাখতেন না। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَا يَدَّخِرُ شَيْئًا لِغَدٍ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2362 وقال : غریب) ۔
(صَحِيح)

وعنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان لا يدخر شيىا لغد. رواه الترمذي اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2362 وقال : غریب) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (كَانَ لَا يَدَّخِرُ شَيْئًا لِغَدٍ) অর্থাৎ আল্লাহর ওপর ভরসা করে ও তাঁর ধন-ভাণ্ডারের ওপর নির্ভর করে। এমন তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে পারে কেবল সেই ব্যক্তি যে বিশেষভাবে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল। তিনি (সা.) তার পরিবার-পরিজনের জন্য মাঝে মাঝে এক বছরের খাবার জমা করে রাখতেন তাদের দুর্বল অবস্থার কারণে, তাদের ধৈর্যের কমতি ও অপূর্ণতা থাকার কারণে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৬-[২৬] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অধিক সময় নীরব থাকতেন। (শারহুস্ সুন্নাহ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَوِيلَ الصَّمْتِ. رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»

حسن ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 256 ح 3695 ، و فی الانوار فی شمائل النبی المختار بتحقیقی : 331) [و احمد (5 / 86 ، 105) و الترمذی (2850) و مسلم (2322 مختصرًا)] ۔
(صَحِيح)

وعن جابر بن سمرة قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم طويل الصمت. رواه في «شرح السنة» حسن ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 256 ح 3695 ، و فی الانوار فی شماىل النبی المختار بتحقیقی : 331) [و احمد (5 / 86 ، 105) و الترمذی (2850) و مسلم (2322 مختصرا)] ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (طَوِيلَ الصَّمْتِ) অর্থাৎ তিনি (সা.) অনেক সময় চুপ থাকতেন। কোন প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতেন না।
আর এ প্রসঙ্গে সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তা হলো- “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।” আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বলেন, আল্লাহর যিকর ছাড়া আমি যদি বোবা থাকতাম তাহলেই ভালো হত! (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৭-[২৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কথায় ছিল খুবই স্পষ্টতা ও ধীরগতি। (আবূ দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: كَانَ فِي كَلَامَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَرْتِيلٌ وَتَرْسِيلٌ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4838) * الشیخ ، الراوی عن جابر رضی اللہ عنہ : مجھول

وعن جابر قال: كان في كلام رسول الله صلى الله عليه وسلم ترتيل وترسيل. رواه ابو داود اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4838) * الشیخ ، الراوی عن جابر رضی اللہ عنہ : مجھول

ব্যাখ্যা: তারতীল ও তারসীল শব্দদ্বয়ের অর্থ একই অর্থাৎ কোন বিষয় পড়া এবং বলার সময় এক একটি অক্ষর পৃথক পৃথকভাবে খুব স্পষ্ট করে পড়া ও বলা। কেউ কেউ উক্ত শব্দদ্বয়ের অর্থের মাঝে সামান্য পার্থক্য বর্ণনা করেছেন যে, তারতীল এর অর্থ হলো, প্রতিটি অক্ষর সমানভাবে উচ্চারণ করা। আর তারসীল এর অর্থ হলো, প্রতিটি অক্ষর বলার সময় তাড়াহুড়া ও দ্রুততা না করা; বরং ধীরগতিতে উচ্চারণ করা।
বাহ্যিকভাবে বুঝে যাচ্ছে যে, এ হাদীসে তারতীল-এর সম্পর্ক রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করার সাথে এবং তারসীল-এর সম্পর্ক রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাধারণ কথাবার্তার সাথে। (মিরকাত, মাযাহিরে হাক্ শারহে মিশকাত)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৮-[২৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা যেভাবে অনর্গল বিরতিহীন কথাবার্তা বল, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঐরূপভাবে কথা বলতেন না; বরং তিনি প্রতিটি বাক্যকে পৃথক পৃথকভাবে বলতেন। ফলে যে লোক তাঁর কাছে বসত, সে তা স্মরণ রাখতে পারত। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْرُدُ سَرْدَكُمْ هَذَا وَلَكِنَّهُ كَانَ يَتَكَلَّمُ بِكَلَامٍ بَيْنَهُ فَصْلٌ يَحْفَظُهُ من جَلَسَ إِلَيْهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

صحیح ، رواہ الترمذی (3639 وقال : حسن صحیح) ۔
(إِسْنَاده جيد)

وعن عاىشة قالت: ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يسرد سردكم هذا ولكنه كان يتكلم بكلام بينه فصل يحفظه من جلس اليه. رواه الترمذي صحیح ، رواہ الترمذی (3639 وقال : حسن صحیح) ۔ (اسناده جيد)

ব্যাখ্যা: নবী (সা.) খুব স্পষ্ট ভাষায় ধীরে ধীরে কথা বলতেন। যাতে তার পাশে থাকা শ্রোতা তার কথা বুঝতে কোন সমস্যায় না পড়ে। তারা তার কথা শুনে তা হিফাযত করতে পারত।
সাধারণ মানুষ যেভাবে তাড়াতাড়ি একটার পর একটা কথা ধারাবাহিকভাবে বলে যায় রাসূলুল্লাহ (সা.) তা করতেন না। কথা বলার সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) সময় নিয়ে আস্তে আস্তে বলতেন। কথা বলার সময় তিনি (সা.) বাক্যের মাঝে পার্থক্য করতেন। যাতে তার শ্রোতাদের তার কথা বুঝতে কোন অসুবিধা না হয়। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮২৯-[২৯] ’আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনু জাযই (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর চেয়ে বেশি মুচকি হাসির লোক কাউকেও দেখিনি। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ جَزْءٍ قَالَ: مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَكْثَرَ تَبَسُّمًا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3641) * عبداللہ بن لھیعۃ حدث بہ قبل اختلاطہ و لکنہ مدلس و عنعن فالسند ضعیف و حدیث الترمذی (3642) یغنی عنہ

وعن عبد الله بن الحارث بن جزء قال: ما رايت احدا اكثر تبسما من رسول الله صلى الله عليه وسلم رواه الترمذي سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3641) * عبداللہ بن لھیعۃ حدث بہ قبل اختلاطہ و لکنہ مدلس و عنعن فالسند ضعیف و حدیث الترمذی (3642) یغنی عنہ

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি হতে আমরা বুঝতে পারলাম, মুচকি হাসি হাসা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত। তিনি (সা.) সবসময় মুচকি হাসি হাসতেন, উচ্চৈঃস্বরে হাসতেন না।
আর মুচকি হাসির উপকারিতাও অনেক। শরীর মন সুস্থ রাখার জন্য মুচকি হাসি খুবই সহায়ক একটি উপকরণ। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮৩০-[৩০] ’আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন বসে কথাবার্তা বলতেন, তখন তিনি বার বার আকাশের দিকে দৃষ্টি উঠাতেন। (আবূ দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلَامٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا جَلَسَ يَتَحَدَّثُ يُكْثِرُ أَنْ يَرْفَعَ طَرْفَهُ إِلَى السَّمَاء. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4837) * محمد بن اسحاق مدلس و عنعن ، الا فی روایۃ سفیان بن وکیع (ضعیف) عن یونس بن بکیر بہ فالسند معلل ۔
(ضَعِيف)

وعن عبد الله بن سلام قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا جلس يتحدث يكثر ان يرفع طرفه الى السماء. رواه ابو داود اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4837) * محمد بن اسحاق مدلس و عنعن ، الا فی روایۃ سفیان بن وکیع (ضعیف) عن یونس بن بکیر بہ فالسند معلل ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সা.) কথা বলার সময় জিবরীল (আঃ)-এর আগমনের অথবা ওয়াহীর প্রতিক্ষায় বারবার আকাশের দিকে তাকাতেন। আর তিনি (সা.) আল্লাহর ভালোবাসার কারণেও এমনি করতেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে