পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা
৫৮২২-[২২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের জুতা নিজেই ঠিক করে নিতেন, কাপড় সেলাই করতেন এবং গৃহের কাজকর্ম করতেন, যেমন তোমাদের কেউ স্বীয় গৃহের কাজকর্ম করে থাকে। আয়িশাহ্ (রাঃ) এটাও বলেছেন যে, তিনি (সা.) অন্যান্য মানুষের মতো একজন মানুষই ছিলেন। নিজের কাপড়চোপড় হতে উকুন বাছতেন, নিজ বকরির দুধ দোহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই সম্পাদন করতেন। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْصِفُ نَعْلَهُ وَيَخِيطُ ثَوْبَهُ وَيَعْمَلُ فِي بَيْتِهِ كَمَا يَعْمَلُ أَحَدُكُمْ فِي بَيْتِهِ وَقَالَتْ: كَانَ بَشَرًا مِنَ الْبَشَرِ يَفْلِي ثَوْبَهُ وَيَحْلُبُ شَاتَهُ وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
حسن ، رواہ الترمذی [فی الشمائل (341) و البخاری فی الادب المفرد (541 و سندہ حسن)] * الشطر الاول الی ’’ فی بیتہ ‘‘ رواہ احمد (6 / 106 ، 121 ، 167 ، 260 ایضًا) و فیہ علۃ عند احمد (6 / 241) و للحدیث شواھد عند احمد (6 / 256) وغیرہ ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْصِفُ) অর্থাৎ তিনি (সা.) কাপড়ে তালি বা জোড়া দিতেন। শারহুস সুন্নাহতে এসেছে- অর্থাৎ তিনি একটির সাথে অন্যটিকে মিলিয়ে দিতেন। খসফ’ শব্দটির প্রকৃত অর্থ হলো মিলানো ও একত্রিত করা।
(يَفْلِي ثَوْبَهُ) অর্থাৎ তিনি তাঁর কাপড়ে লক্ষ্য করতেন সেখানে কোন ধরনের কোন উকুন আছে কি? আর এ অর্থটাও ঠিক আছে যাতে বর্ণিত আছে- উকুন তাকে কোন ধরনের কষ্ট দিত না। ব্যাখ্যাকার বলতেন, তিনি উকুন বেছে ফেলে দিতেন।
(وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ) আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ আচরণ থেকে বুঝা যায় যে, তিনি (সা.) একজন মানুষ ছিলেন। কারণ কাফিরদের আকীদাহ্ হলো এই যে, নবী (সা.) অন্য সাধারণ মানুষ যা করে তা তিনি করতে পারেন না। তারা তাকে বাদশাহ-এর মতো মনে করেন। তারা অহঙ্কার করে তাকে দুনিয়ার সাধারণ কাজকর্মের ঊর্ধ্বে মনে করেন। যেমন মহান আল্লাহ তাদের ‘আকীদাহ্ উল্লেখ করে বলেন, (وَ قَالُوۡا مَالِ هٰذَا الرَّسُوۡلِ یَاۡکُلُ الطَّعَامَ وَ یَمۡشِیۡ فِی الۡاَسۡوَاقِ) “আর তারা বলে, এটা কেমন রাসূল যে খাবার খায় ও বাজারে চলাফেরা করে?” (সূরা আল ফুরকান ২৫ : ৭)।
অতএব তিনি বলেন, তিনি তো মহান আল্লাহর একজন সৃষ্টি। আর আদম সন্তানের একজন। আল্লাহ তাকে নুবুওয়্যাত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আর তাকে রাসূল করে তাঁকে মর্যাবান করেছেন। আর তিনি (সা.) উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে সৃষ্টির সাথে জীবনযাপন করবেন। আর সত্য ও হাক্বের সাথে জীবনযাপন করবেন। তিনি (সা.) তাই করবেন যা তারা করে। তিনি (সা.) তাদের কাজে সাহায্য করবেন, তিনি বিনয়ী হবেন ও বিনয়ের প্রতি দিক-নির্দেশনা প্রদান করবেন। আর অহংকার পরিহার করবেন এবং সৃষ্টির প্রতি সত্য রিসালাত প্রচার করবেন। যেমনটি তিনি আদেশ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, (قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ) “বলুন! আমি তোমাদের মতো মানুষ আমার ওপর ওয়াহী করা হয়”- (সূরাহ্ আল কাহফ ১৮ : ১১০)। আল জামি' গ্রন্থে এসেছে, তিনি দুর্বল মুসলিমদের নিকট আসতেন, তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতেন, তাদের অসুস্থদের দেখাশোনা করতেন। তাদের জানাযায় শরীক থাকতেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।