পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৭৮-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন নারীও তার (কাফির) গোত্রের জন্য নিরাপত্তা লাভ করতে পারে। অর্থাৎ- সে মুসলিমদের পক্ষে আশ্রয় দিতে পারে। (তিরমিযী)[1]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الْمَرْأَةَ لَتَأْخُذُ لِلْقَوْمِ» يَعْنِي تُجيرُ على الْمُسلمين. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: («إِنَّ الْمَرْأَةَ لَتَأْخُذُ لِلْقَوْمِ» يَعْنِىْ تُجِيْرُ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ) অর্থাৎ- একজন মহিলাও স্বীয় সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা নিতে পারে, এক কথায় মুসলিম নারীর পক্ষে সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা গ্রহণ বৈধ। ইবনুল হুমাম বলেনঃ আবূ দাঊদ স্বীয় সানাদে ‘আয়িশাহ্ সিদ্দীকা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ «إِنْ كَانَتِ الْمَرْأَةُ لَتُجِيرُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ» অর্থাৎ- ‘‘নিঃসন্দেহে মহিলা মু’মিনদের ব্যাপারে নিরাপত্তা গ্রহণ করতে পারে।’’
ইমাম তিরমিযী ‘‘মহিলা কর্তৃক নিরাপত্তা দান’’ এ সম্পর্কে একটি অধ্যায় বেঁধেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে ইয়াহ্ইয়া বিন আকসাম হাদীস বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি তিনি আবূ হুরায়রাহ্ পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ «إِنَّ الْمَرْأَةَ لَتَأْخُذُ لِلْقَوْمِ» ‘‘নিশ্চয় মহিলা সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা নিতে পারে।’’ অর্থাৎ- মুসলিমদের ওপর স্বীয় সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিবে। তিনি বলেন, এটি হাসান, গরীব হাদীস। তিনি তার ‘ইলালুল কুবরা’ গ্রন্থে বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন ইসমা‘ঈল-কে এ হাদীস সম্পর্কে প্রশ্ন করেছি। উত্তরে তিনি বলেছেন, এটা বিশুদ্ধ হাদীস। অত্র অধ্যায়ের হাদীসসমূহের অন্তর্ভুক্ত আল্লাহর রসূলের কন্যা যায়নাব কর্তৃক আবুল ‘আস-কে নিরাপত্তা দানের হাদীস। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «أَلَا وَإِنَّه يُجِيرُ عَلَى الْمُسْلِمِينَ أَدْنَاهُمْ» অর্থাৎ- ‘‘জেনে রাখ অবশ্যই সর্বনিম্ন ব্যক্তি মুসলিমদের ওপর নিরাপত্তা দান করবেন।’’ ত্ববারানী একে দীর্ঘাকারে বর্ণনা করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
ইমাম তিরমিযী অন্য সানাদে একটি হাদীস এনেছেন যা ‘আক্বীল বিন আবূ ত্বালিব-এর গোলাম আবূ মুররাহ্ উম্মু হানী থেকে বর্ণনা করেন, উম্মু হানী বলেন, আমি আমার শ্বশুর বংশীয় দু’জন লোককে আশ্রয় দিয়েছি। অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি যাকে নিরাপত্তা দান করেছ আমরাও তাকে নিরাপত্তা দান করেছি।’’ আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস। এর উপরে বিদ্বানগণের ‘আমল রয়েছে। তারা মহিলা কর্তৃক নিরাপত্তা দানকে বৈধ ঘোষণা দিয়েছেন। আর তা আহমাদ, ইসহক-এর উক্তি। তারা উভয়ে মহিলা ও দাস উভয়ের নিরাপত্তা দানকে বৈধ ঘোষণা করেছেন। ‘উমার থেকে বর্ণনা করা হয়েছে, তিনি দাস কর্তৃক নিরাপত্তা দানকে বৈধ ঘোষণা করেছেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৭৯)
পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৭৯-[৩] ’আমর ইবনুল হামিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তিকে কেউ যদি নিরাপত্তা দান করার পর তাকে হত্যা করে, কিয়ামতের দিন উক্ত আশ্রয় দানকারীকে বিশ্বাসঘাতকতার পতাকা প্রদান করা হবে। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَمِقِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: «من أَمَّنَ رَجُلًا عَلَى نَفْسِهِ فَقَتَلَهُ أُعْطِيَ لِوَاءَ الْغَدْرِ يَوْمَ الْقَيَامَةِ» . رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ
ব্যাখ্যা: (فَقَتَلَه أُعْطِىَ لِوَاءَ الْغَدْرِ يَوْمَ الْقَيَامَةِ) হাদীসের এ অংশ উপস্থিত লোকেদের সামনে তাকে অপমানিত করার ইঙ্গিত রয়েছে। শারহে ইবনুল হুমামে আছে- সাধারণত বিশ্বাসঘাতকতা হারাম। যেমন বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে এসেছে যা ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর ইবনুল ‘আস কর্তৃক বর্ণিত। চারটি বৈশিষ্ট্য যার মাঝে থাকবে সে খাঁটি মুনাফিক। যে ব্যক্তি কথা বলার সময় মিথ্যা বলবে, যখন ওয়া‘দা করবে তখন তা ভঙ্গ করবে, যখন কোনো চুক্তি করবে তখন তাতে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আর যখন ঝগড়া করবে তখন সত্য থেকে অসত্যের দিকে ফিরে যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৮০-[৪] সুলায়ম ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মু’আবিয়াহ্ ও রোমীয়দের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল, কিন্তু উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণের পূর্বেই মু’আবিয়াহ্ রোমীয়দের দিকে অগ্রসর হতে লাগলেন। কেননা চুক্তির মেয়াদ শেষ হতেই যেন তাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালাতে পারে। ঠিক সে সময়ই জনৈক ব্যক্তি ’আরবী অথবা তুর্কী ঘোড়ার উপর সওয়ার হয়ে বলতে বলতে আসছিলেন, ’আল্লা-হু আকবার’ ’আল্লা-হু আকবার’ চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করতে হবে, বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না। তিনি নিকটে আসলে লোকেরা তাকিয়ে দেখলেন, তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিশিষ্ট সাহাবী ’আমর ইবনু ’আবাসাহ্।
অতঃপর মু’আবিয়াহ্ তাকে কথাগুলো বলার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো সম্প্রদায়ের সাথে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করে, তবে সে যেন তা ভঙ্গ না করে এবং শক্তও না করে, যে পর্যন্ত না মেয়াদ অতিবাহিত হয় অথবা পূর্বাহ্নে তাদেরকে স্পষ্টভাবে চুক্তি ভঙ্গের সংবাদ না দেয়। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) নিজের লোকেদেরকে নিয়ে ফিরে আসলেন। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: كَانَ بَيْنَ مُعَاوِيَةَ وَبَيْنَ الرُّومِ عَهْدٌ وَكَانَ يَسِيرُ نَحْوَ بِلَادِهِمْ حَتَّى إِذَا انْقَضَى الْعَهْدُ أَغَارَ عَلَيْهِمْ فَجَاءَ رَجُلٌ عَلَى فَرَسٍ أَوْ بِرْذَوْنٍ وَهُوَ يَقُولُ: اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَفَاءٌ لَا غدر فَنظر فَإِذا هُوَ عَمْرو ابْن عَبَسَةَ فَسَأَلَهُ مُعَاوِيَةُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول: «مَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ فَلَا يَحُلَّنَّ عَهْدًا وَلَا يَشُدَّنَّهُ حَتَّى يُمْضِيَ أَمَدَهُ أَوْ يَنْبِذَ إِلَيْهِمْ عَلَى سَوَاءٍ» . قَالَ: فَرَجَعَ مُعَاوِيَة بِالنَّاسِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (فَجَاءَ رَجُلٌ عَلٰى فَرَسٍ أَوْ بِرْذَوْنٍ) ত্বীবী বলেন, الفَرَسٍ দ্বারা এখানে ‘আরবীয় ঘোড়া উদ্দেশ্য। আর بِرْذَوْنٍ দ্বারা তুর্কী ঘোড়া উদ্দেশ্য।
(وَكَانَ يَسِيْرُ نَحْوَ بِلَادِهِمْ) অর্থাৎ- চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় রোম দেশের কাছাকাছি হয়ে থাকার জন্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই মু‘আবিয়াহ্ তাদের দিকে অগ্রসর হন।
(وَهُوَ يَقُولُ : اَللّٰهُ أَكْبَرُ اَللّٰهُ أَكْبَرُ وَفَاءٌ لَا غَدْرَ) অর্থাৎ- তোমাদের থেকে চুক্তি যেন পূর্ণতা লাভ করে, কোনো প্রকার যেন বিশ্বাসঘাতকতা সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ- আল্লাহ প্রেমী ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মাত কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতায় জড়িত হওয়া অসম্ভব। শারহুস্ সুন্নাহতে আছে- ‘আমর বিন ‘আবাসাহ্ এটা কেবল এজন্য অপছন্দ করেছেন যে, মু‘আবিয়াহ্ যখন তাদের সাথে নির্দিষ্ট এক সময় পর্যন্ত সন্ধি করলেন তখন তিনি নিজ দেশে অবস্থান করছিলেন। তাই রোম দেশের দিকে তার অগ্রসর হওয়াটা চুক্তির নির্দিষ্ট সময় সম্পন্ন হওয়ার পর সংঘটিত হতে হবে। যেমন চুক্তিতে উল্লেখিত সময় শেষ হওয়ার আগে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যাবে না, তেমনি সময় শেষ হওয়ার আগে যুদ্ধের জন্য অগ্রসরও হওয়া যাবে না। যেহেতু মু‘আবিয়াহ্-এর সফর সন্ধির অন্তর্ভুক্ত দীনগুলোতে সংঘটিত হয়েছে, তাই ‘আমর একে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে গণ্য করেছেন। পক্ষান্তরে সন্ধিকারী যদি সন্ধি ভঙ্গ করে তাদের থেকে খিয়ানাত প্রকাশ পায় তাহলে প্রতিপক্ষের অধিকার আছে তাদের উদাসীন অবস্থায় তাদের ওপর আক্রমণ করা।
(وَلَا يَشُدَّنَّه) অর্থাৎ- এ বাক্যাংশ দ্বারা চুক্তি পরিবর্তন না করার ব্যাপারে আধিক্যতা উদ্দেশ্য করেছেন, চুক্তি রক্ষার ক্ষেত্রে আধিক্যতা ও গুরুত্ব প্রদানে কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ- কোনক্রমেই চুক্তি পরিবর্তন করবে না এবং তা ভঙ্গ করবে না।
(أَوْ يَنْبِذَ إِلَيْهِمْ) অর্থাৎ- প্রতিপক্ষকে প্রকাশ্য বলে দিবে যে, সে প্রতিপক্ষ থেকে খিয়ানাতের আশঙ্কায় চুক্তি ভঙ্গ করেছে। যাতে তার প্রতিপক্ষ তার সাথে চুক্তিভঙ্গের ক্ষেত্রে সমান হতে পারে। এটা যেন তার থেকে বিশ্বাসঘাতকতা স্বরূপ না হয়। আর এটা মূলত মহান আল্লাহর এ বাণীর কারণে, অর্থাৎ- ‘‘আর আপনি যদি কোনো সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিশ্বাসঘাতকতার আশংকা করেন তাহলে তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি একইভাবে তাদের দিকে ছেড়ে দিন’’- (সূরা আল আনফাল ৮ : ৫৮)। মুযহির বলেনঃ সে তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, সন্ধি উঠে গেছে। তখন উভয় দল ঐ জ্ঞানের ক্ষেত্রে সমান। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৮০; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৭৫৫)
পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৮১-[৫] আবূ রাফি’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন কুরায়শরা আমাকে মদীনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে পাঠিয়েছিল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখামাত্রই ইসলামের মহানুভবতা আমার অন্তরে গেঁথে গেল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম, আমি আর তাদের (কুরায়শদের) কাছে কখনো ফিরে যাব না। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি চুক্তি ভঙ্গ করি না এবং কোনো দূতকেও বন্দী করি না। তবে তুমি এখন চলে যাও। তোমার অন্তরে বর্তমানে ইসলাম গ্রহণের যে আগ্রহ আছে তা যদি চলে যাওয়ার পরও এ অবস্থায় (ইসলাম) জাগরুক থাকে, তখন তুমি চলে এসো। আবূ রাফি’ (রাঃ) বলেন, আমি চলে গেলাম। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে ইসলাম গ্রহণ করলাম। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن أبي رافعٍ قَالَ: بعثَني قُرَيْشٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُلْقِيَ فِي قَلْبِيَ الْإِسْلَامُ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي وَاللَّهِ لَا أَرْجِعُ إِلَيْهِمْ أَبَدًا قَالَ: «إِنِّي لَا أَخِيسُ بِالْعَهْدِ وَلَا أَحْبِسُ الْبُرُدَ وَلَكِنِ ارْجِعْ فَإِنْ كَانَ فِي نَفْسِكَ الَّذِي فِي نَفْسِكَ الْآنَ فَارْجِعْ» . قَالَ: فَذَهَبْتُ ثُمَّ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَأسْلمت. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (فَلَمَّا رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ أُلْقِىَ فِىْ قَلْبِىَ الْإِسْلَامُ) অর্থাৎ- তাঁকে দেখামাত্র আমার অন্তরে ইসলামের প্রতি সত্যায়ন এবং ইসলামের প্রতি ভালোবাসা গেঁথে গেল। ত্বীবী বলেনঃ অত্র হাদীসাংশে এ কথা বিদ্যমান যে, অন্তরে ইসলাম প্রবেশ তাঁকে দর্শনের পর বিলম্বিত হয়নি। উল্লেখিত উক্তি আবূ রাফি‘-এর বিচক্ষণতা ও ধূর্ততা ও সঠিক দৃষ্টির প্রমাণ বহন করে। আর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ মু‘জিযা দ্বারা সন্নিবেশিত করা হয়েছে যে, অনড় দৃষ্টি নিক্ষেপকারী তাঁর দিকে দৃষ্টি দিলেই ঈমান আনত।
«فارجع ثم أسلم» অর্থাৎ- অতঃপর কাফিরদের কাছ থেকে আমাদের কাছে ফিরে আসবে। এরপর ইসলাম গ্রহণ করবে। কেননা এখন যদি তোমার ইসলাম মেনে নিয়ে তোমাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে না দেই তাহলে অবশ্যই আমি বিশ্বাসঘাতকতা করে ফেলব- এটা ইবনুল মালিক বলেছেন। এতে আছে ইসলাম গ্রহণ করাতে বিশ্বাসঘাতকতা হয় না। বরং এ থেকে উদ্দেশ্য হলো যখন তাকে আটক করা আপত্তিকর তখন সে ইসলাম গ্রহণ না করে কাফিরদের কাছে ফিরে যাবে, কেননা এ পন্থাই সর্বাধিক উপযুক্ত। অতঃপর সে সঠিক পন্থায় সত্যের দিকে ফিরে আসবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
অত্র হাদীস থেকে বুঝা যায়, দূতদেরকে হত্যা করা যাবে না, আটকও করা যাবে না। (সম্পাদক)
পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৮২-[৬] নু’আয়ম ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদিন (নাবূওয়াতের মিথ্যা দাবিদার) মুসায়লিমাহ্ কায্যাব-এর পক্ষ হতে দু’জন ব্যক্তি তাঁর নিকট আসলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বললেন, আল্লাহর কসম! দূতকে হত্যা করার যদি বিধান থাকত, তাহলে এখনই আমি তোমাদের শিরশ্ছেদ করতাম। (আহমাদ, আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ نُعَيْمِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلَيْنِ جَاءَا مِنْ عِنْدِ مُسَيْلِمَةَ: «أَمَّا وَاللَّهِ لَوْلَا أَنَّ الرُّسُلَ لَا تُقْتَلُ لَضَرَبْتُ أَعْنَاقَكُمَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَالَ لِرَجُلَيْنِ) তাদের দু’ ব্যক্তির একজন হলো- ‘আবদুল্লাহ বিন নাওয়াহাহ্। দ্বিতীয় জন হলো ইবনু উসাল। (مِنْ عِنْدِ مُسَيْلِمَةَ) মুসায়লিমাহ্ হলো নাবূওয়্যাতের দাবীতে প্রসিদ্ধ মিথ্যাবাদী।
(وَاللّٰهِ لَوْلَا أَنَّ الرُّسُلَ لَا تُقْتَلُ) তূরিবিশতী বলেনঃ ওটা এ কারণে যে, তারা যেভাবে চিঠি পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত অনুরূপ চিঠির জওয়াব পৌঁছিয়ে দেয়াও তাদের দায়িত্ব। তাই তাদের ওপর আবশ্যক হয়ে গেছে উভয় বিষয়কে সম্পন্ন করা। তাদের আটক বা হত্যা করা হলে তারা তাদের লক্ষ্য প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে বিশ্বাসঘাতকতার চিহ্নে চিহ্নিত হয়ে যাবে অথচ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মাঝে এ থেকে সর্বাধিক দূরে ছিলেন। তাছাড়া দূতদের আসা যাওয়ার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কল্যাণ রয়েছে। যখনই তাদেরকে বন্দী করা, অপছন্দনীয় উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সম্মুখীন হওয়া বৈধ ঘোষণা করা হবে তখন তা বিরোধী দু’টি দলের মাঝে যোগাযোগের উপায় রোধ হয়ে যাবে। আর এতে রয়েছে ফিতনা এবং বিশৃঙ্খলা, যা জ্ঞানবান ব্যক্তির কাছে গোপনীয় নয়।
(لَضَرَبْتُ أَعْنَاقَكُمَا) এটা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে কেবল এজন্য বলেছেন যে, তারা তাঁর উপস্থিতিতে বলেছে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুসায়লিমাহ্ আল্লাহর রসূল। একমতে বলা হয়েছে, দূতদেরকে হত্যা করা বৈধ না হওয়ার বিধান আল্লাহ তা‘আলার অর্থাৎ- ‘‘আর মুশরিকদের কেউ যদি আপনার কাছে আশ্রয় চায় তাহলে আপনি তাকে আশ্রয় দিন’’- (সূরা আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৫); এ বাণী থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে, মুসায়লিমাহ্-এর দূতদ্বয়কে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি বল? তারা জওয়াবে বলল, «نَقُولُ كَمَا قَالَ» অর্থাৎ- আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসায়লিমার দূতদ্বয়কে মুসায়লিমাহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে দূতদ্বয় বলল, মুসায়লিমাহ্ যেমন বলে আমরাও তেমন বলি। অর্থাৎ- মুসায়লিমাহ্ আল্লাহর রসূল। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপস্থিতিতে এটা বলা দূতদ্বয়ের তরফ থেকে কুফরী ও ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
মুসনাদে আহমাদে আছে- নু‘আয়ম বিন মাস্‘ঊদ আল আশজা‘ঈ থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় তিনি বলেন, মিথ্যুক মুসায়লিমার পত্র যখন পাঠ করা হয়েছে তখন আমি তা শুনেছি, সে সময় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত দূতদ্বয়কে বললেন, ‘‘তোমরা কি বল?’’ দূতদ্বয় বলল, আমরা ঐ রকম বলি যেমন মুসায়লিমাহ্ বলেছে। অতঃপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আল্লাহর শপথ! দূতদেরকে হত্যা করা যায় না। এমনটি যদি না হতো তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদের গর্দানকে উড়িয়ে দিতাম।’’ অত্র হাদীসে ঐ ব্যাপারে প্রমাণ আছে যে, কাফিরদের থেকে প্রেরিত দূতদেরকে হত্যা করা হারাম। যদিও তারা ইমামের উপস্থিতিতে কুফরীর বাক্য উচ্চারণ করে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৭৫৮)
পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান
৩৯৮৩-[৭] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তার পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেন। একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খুৎবায় বললেনঃ তোমরা জাহিলিয়্যাত যুগের সন্ধি বা কসমসমূহ রক্ষা করে চল। কেননা, ইসলাম চুক্তিকে আরো শক্তিশালী করে। আর ইসলাম কবূলের পর নতুন করে কোনো প্রকার চুক্তি করো না। (তিরমিযী)[1]
হাদীসটি হুসায়ন ইবনু যাক্ওয়ান-এর সানাদে ’আমর হতে বর্ণনা করেন। অতঃপর বলেন, হাদীসটি হাসান।
আর ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি ’’সমগ্র মুসলিমের খুন (প্রাণ) এক সমান’’ কিসাস পর্বে বর্ণিত হয়েছে।
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي خطْبَة: «أَوْفوا بِحلف الْجَاهِلِيَّة فَإِنَّهُ لَا يزِيد يَعْنِي الْإِسْلَامَ إِلَّا شِدَّةً وَلَا تُحْدِثُوا حَلِفًا فِي الإِسلامِ» . رَوَاهُ الترمذيُّ من طريقِ ابنِ ذَكْوَانَ عَنْ عَمْرٍو وَقَالَ: حَسَنٌ
وَذَكَرَ حَدِيثَ عليٍّ: «المسلمونَ تَتَكَافَأ» فِي «كتاب الْقصاص»
ব্যাখ্যা: (أَوْفُوْا بِحَلْفِ الْجَاهِلِيَّةِ) জাহিলী যুগে পারস্পারিক সহযোগিতার উপর শপথ চুক্তি বিদ্যমান ছিল, যা আল্লাহ তা‘আলার ‘‘তোমরা চুক্তিসমূহ পূর্ণ কর’’- (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ১); এ বাণীর দ্বারা জানা যায়। তবে তা আল্লাহ তা‘আলার অর্থাৎ- ‘‘আর তোমরা পুণ্য ও আল্লাহ ভীরুতার ব্যাপারে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা কর, পাপ ও সীমালঙ্ঘনতার কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো না’’- (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ২); এ বাণীর সাথে শর্তযুক্ত। «إِلَّا شِدَّةً» কেননা ইসলাম চুক্তি অপেক্ষাও শক্তিশালী। সুতরাং যে ব্যক্তি শক্তিশালী রক্ষাকারীকে আঁকড়িয়ে ধরবে সে দুর্বল রক্ষাকারী থেকে আলাদা থাকবে, অমুখাপেক্ষী থাকবে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে, حَلْفِ-এর আসল হলো- পরস্পর সহযোগিতা ও একমতের উপর চুক্তি করা। অতঃপর জাহিলী যুগে গোত্রসমূহের মাঝে ফিতনা ও হত্যার উপর যে শপথ ছিল ঐ সম্পর্কে ইসলামে আল্লাহর রসূলের «لَا حَلِفَ فِي الْإِسْلَامِ» অর্থাৎ- ‘‘ইসলামে কোনো শপথ নেই’’ এ বাণীর মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে।
পক্ষান্তরে জাহিলী যুগে যে শপথ নির্যাতিতকে সাহায্য করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখা এবং অনুরূপ ভালো কাজের উপর ছিল। ঐ শপথ সম্পর্কেই আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম «أَيُّمَا حَلِفٍ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ لَمْ يَزِدْهُ الْإِسْلَامُ إِلَّا شِدَّةً» অর্থাৎ- ‘‘জাহিলী যুগে যে শপথ ছিল ইসলাম কেবল তার গুরুত্বকেই বৃদ্ধি করেছে’’ এ বাণী উপস্থাপন করেছেন।
(وَلَا تُحْدِثُوْا حَلِفًا فِى الْإِسْلَامِ) ‘‘নতুন করে কোনো সহযোগিতা চুক্তি করো না’’ অর্থাৎ- কেননা পারস্পারিক সহযোগিতা আবশ্যক হওয়ার ক্ষেত্রে ইসলাম যথেষ্ট।
ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ حَلِفًا শব্দটি অনির্দিষ্ট যা দু’টি দিকের সম্ভাবনা রাখছে, দু’টির একটি শব্দটি দ্বারা জাত বুঝানো উদ্দেশ্য। তখন (لَا تُحْدِثُوْا حَلِفًا) এর অর্থ হবে, তোমরা যে কোনো ধরনের শপথ করবে না। অপর দিকটি হলো- শ্রেণী বুঝানো উদ্দেশ্য।
আমি (মিরকাতুল মাফাতীহ প্রণেতা) বলবঃ দ্বিতীয় দিকটি স্পষ্ট। আর একে সমর্থন করছে মুযহির-এর উক্তি, অর্থাৎ- তোমরা যদি জাহিলী যুগে কতক কতককে সাহায্য করার এবং কতক কতক থেকে উত্তরাধিকারী হওয়ার শপথ করে থাক, অতঃপর যদি তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে থাক, তাহলে তোমরা তা পূর্ণ করবে। কেননা ইসলাম তোমাদেরকে তা পূর্ণ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে, তবে তোমাদের কতক থেকে উত্তরাধিকারী হওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামে নতুন করে চুক্তি করো না।
ইবনুল হুমাম বলেনঃ যখন কোনো ব্যক্তি কোনো স্বাধীন ব্যক্তিকে এবং কোনো মহিলা স্বাধীন মহিলাকে অথবা কাফিরকে, অথবা একটি দলকে অথবা দূর্গ বা শহরের অধিবাসীকে নিরাপত্তা দিবে তাদের নিরাপত্তাদান বিশুদ্ধ বলে বিবোচিত হবে। কোনো মুসলিম ব্যক্তির পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বৈধ হবে না। এ ব্যাপারে মূল হলো এ হাদীসটি। একে আবূ দাঊদ সংকলন করেছেন, যা ‘আমর বিন শু‘আয়ব তার পিতার মাধ্যমে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তার দাদা বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
«الْمُسْلِمُونَ تَتَكَافَأُ دِمَاؤُهُمْ» তথা মুসলিমদের রক্ত পরস্পর সমান হবে।
অর্থাৎ- উচুশ্রেণীর ব্যক্তির দিয়াত নীচু শ্রেণীর ব্যক্তির দিয়াতের অপেক্ষা বেশি হবে না, তাদের সর্বাধিক নিম্নশ্রেণীর ব্যক্তি নিরাপত্তাদানের ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করলে তা তাদের ওপর শ্রেণীর ব্যক্তির ওপরও বর্তাবে।
আর ইবনু মাজার শব্দ আর তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি তাদের ওপর নিরাপত্তা দান করবে। এমতাবস্থায় তারা অন্যদের ওপর একটি হাত স্বরূপ, অর্থাৎ- তাদের সত্বা অন্যদের সহকারে ক্ষমতার দিক থেকে একটি যন্ত্র স্বরূপ, তাদের পারস্পারিক সহযোগিতার দিক থেকে একটি অঙ্গ স্বরূপ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)