পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬২-[১৭] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিমকে হত্যা করার চেয়ে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহ তা’আলার কাছে অধিকতর সহজ। (তিরমিযী ও নাসায়ী; আর কোনো কোনো মুহাদ্দিস হাদীসটিকে মাওকূফ বলেছেন, আর এটাই সঠিক।)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَزَوَالُ الدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ قَتْلِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ ووقفَه بعضُهم وَهُوَ الْأَصَح
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৩-[১৮] তবে ইবনু মাজাহ এ হাদীসটি বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ
ব্যাখ্যা: উপরোল্লিখিত দু’টি হাদীসে প্রত্যেক মুসলিমের সম্মান ও গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। এক মুসলিমকে হত্যার দ্বারা পুরো পৃথিবী ধ্বংসের শামিল হয়। দুনিয়া হলো আখিরাতের ক্ষেত স্বরূপ। এ দুনিয়াতে যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ বলে ডাকার মতো লোক বাকী থাকবে ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত হবে না, তাই আল্লাহর কাছে একজন মুসলিমের সম্মান ও গুরুত্ব অত্যধিক। অতএব যদি কেউ এমন কাউকে হত্যা করে তবে যেন পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দিল। এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا
অর্থাৎ- ‘‘যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করে হত্যার বিনিময় ব্যতীত (কিসাস) অথবা জমিনে ফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশে সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করল।’’ (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৩২)
সুতরাং কোনো নিরাপরাধ মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা যাবে না, এমনকি অহেতুক কারো ওপর জুলুম নির্যাতনও করা যাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯৫; শারহেন্ নাসায়ী ৩য় খন্ড, হাঃ ৩৯৯৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৪-[১৯] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি আকাশমন্ডলী ও জমিনের সকল অধিবাসীরা সম্মিলিতভাবে একজন মু’মিনকে হত্যা করে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা সকলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (তিরমিযী; তিনি হাদীসটিকে গরীব বলেছেন)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن أبي سعيدٍ وَأبي هريرةَ عَن رسولِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبَّهُمُ اللَّهُ فِي النَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
ব্যাখ্যা: ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ لَوْ শব্দটি অতীতকালের জন্য। এ হাদীসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো অন্যায়মূলক হত্যাকে প্রতিহত করা। কেউ যেন কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা না করে সে ব্যাপারে আলোচ্য হাদীসে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। সমস্ত দুনিয়াবাসী মিলে যদি কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে তবে আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত মানুষকেই জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯৮)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৫-[২০] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার স্বীয় হাত দিয়ে হত্যাকারীর কপাল ও মাথার কেশগুচ্ছ ধরে এরূপ অবস্থায় উপনীত হবে যে, তার রগসমূহ হতে রক্তক্ষরণ হতে থাকবে এবং সে বলতে থাকবে, হে আমার রব! এই ব্যক্তিই আমাকে হত্যা করেছে। এ কথা বলতে বলতে সে ’আর্শের সন্নিকটবর্তী হয়ে যাবে। (তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَجِيءُ الْمَقْتُولُ بِالْقَاتِلِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ نَاصِيَتُهُ وَرَأْسُهُ بِيَدِهِ وَأَوْدَاجُهُ تَشْخُبُ دَمًا يَقُولُ: يَا رَبِّ قَتَلَنِي حَتَّى يُدْنِيَهُ مِنَ العرشِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: হাদীসের বাণী (يَجِيْءُ الْمَقْتُولُ بِالْقَاتِلِ) এর মধ্যে الباء টি متعدى এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীসহ উপস্থিত হবে। نَاصِيَة বলা হয় মাথার সামনের অংশকে। অর্থাৎ কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীর মাথার সামনের চুল ধরে টেনে হিচড়ে আল্লাহর দরবারে বিচারের জন্য উপস্থিত করবে। এমনকি সে তাকে নিয়ে ‘আরশের নিকটবর্তী হবে। যেন সে এর দ্বারা তার নিহত হওয়ার সাক্ষী অনুসন্ধান করছে এবং সে এর বিনিময়ে মহান আল্লাহর সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায়। তখন তার শরীর থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে যে রক্ত খুন হওয়ার সময় প্রবাহিত হয়েছিল। সেই আঘাত নিয়ে সে উপস্থিত হবে যে আঘাতে সে নিহত হয়েছে।
(মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ৩০২৯; শারহেন্ নাসায়ী ৩য় খন্ড, হাঃ ৪০১৬)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৬-[২১] আবূ উমামাহ্ ইবনু সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উসমান ইবনু ’আফফান(রাঃ) তাঁর অবরোধের দিন উঁচুস্থানে উঠে (বিদ্রোহীদের উদ্দেশে) বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি। তোমরা কি জান না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিমের রক্ত তিনটি কারণের কোনো একটি ব্যতীত হালাল নয়- (১) বিবাহের পর ব্যভিচার করা, (২) ইসলাম গ্রহণের পর পুনরায় কুফরীতে লিপ্ত হওয়া এবং (৩) অনৈতিকভাবে কোনো লোককে হত্যা করা। এ তিনটি কারণের কোনো একটি করলে তাকে হত্যা করা যাবে। আল্লাহর কসম! আমি জাহিলিয়্যাত যুগেও যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হইনি এবং ইসলাম গ্রহণের পরও না। আমি যেদিন থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে ইসলামের বায়’আত গ্রহণ করেছি, সেদিন হতে কক্ষনো কুফরীতে লিপ্ত হইনি এবং আমি এমন কোনো লোককে হত্যাও করিনি, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন। তাহলে বল, তোমরা কেন আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছ? (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ; হাদীসের শব্দবিন্যাস দারিমীর)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَشْرَفَ يَوْمَ الدَّارِ فَقَالَ: أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ أَتَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِإِحْدَى ثلاثٍ: زِنىً بَعْدَ إِحْصَانٍ أَوْ كُفْرٌ بَعْدَ إِسْلَامٍ أَوْ قتْلِ نفْسٍ بِغَيْر حق فَقتل بِهِ ؟ فو الله مَا زَنَيْتُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلَا إِسْلَامٍ وَلَا ارْتَدَدْتُ مُنْذُ بَايَعْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا قَتَلْتُ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ فَبِمَ تَقْتُلُونَنِي؟ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَه وللدارمي لفظ الحَدِيث
ব্যাখ্যা: এ হাদীসের আলোকে অবগত হওয়া যায় তিনটি কাজ কারো দ্বারা সংগঠিত হলে তাকে হত্যা করা যাবে। আর তা হলো- ১. বিবাহের পর যিনা বা ব্যভিচারে লিপ্ত হলে ২. ইসলাম গ্রহণ করার পর কুফরী করলে বা মুরতাদ হলে। ৩. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করলে
আলোচ্য হাদীসে (يَوْمَ الدَّارِ) বলে সে দিবসকে বুঝানো হয়েছে, যে দিবসে ‘উসমান বিদ্রোহীদের হাতে নিজ গৃহে অবরুদ্ধ হয়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের হাতে শহীদ হন।
এ হাদীস দ্বারা আরো জানা গেল যে, ‘উসমান ইসলাম পূর্বকালেও কোনো প্রকার পাপ কাজে লিপ্ত হননি। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২১৫৮; শারহেন্ নাসায়ী ৩য় খন্ড, হাঃ ৪০৩১)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৭-[২২] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মু’মিন বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত অনৈতিকভাবে কোনো লোক হত্যা না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে নেক কাজে অগ্রগামী থাকে। কিন্তু যখনই সে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করবে, তখনই তার (কল্যাণকর) অগ্রগামী রোধ হয়ে যাবে। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَزَالُ الْمُؤْمِنُ مُعْنِقًا صَالِحًا مَا لَمْ يُصِبْ دَمًا حَرَامًا فَإِذَا أَصَابَ دَمًا حَرَامًا بَلَّحَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: কাযী ‘ইয়ায (রহঃ) বলেনঃ মু’মিন ব্যক্তি নেক ও সাওয়াবের কাজের প্রতি আগ্রহের সাথে ততদিন পর্যন্ত ধাবিত হয় যতদিন পর্যন্ত সে কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা না করে। যখনই সে কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে তখনই সে দুর্বল হয়ে পড়ে, তার নেক ‘আমল করার পথ বন্ধ হয়ে যায় আর সে আল্লাহর রহমাত ও সাহায্য হতে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪২৬৪)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৮-[২৩] উক্ত রাবী ([আবুদ্ দারদা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আশা করা যায় যে, আল্লাহ তা’আলা সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না, যে ব্যক্তি মুশরিক অবস্থায় মারা যায়, অথবা স্বেচ্ছায় কোনো মু’মিনকে হত্যা করে। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْهُ عَنْ
رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «كُلُّ ذَنْبٍ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَغْفِرَهُ إِلَّا مَنْ مَاتَ مُشْرِكًا أَوْ مَنْ يقتُلُ مُؤمنا مُتَعَمدا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে বলা হচ্ছে, দু’ ধরনের গুনাহ ব্যতীত অন্য সকল গুনাহের ব্যাপারে ক্ষমা আশা করা যায় যে, আল্লাহ তা মাফ করে দিবেন। আর সে দুই ধরনের গুনাহ হলো- আল্লাহর সাথে শরীক করা অবস্থায় মারা যাওয়া এবং কোনো মু’মিন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা।
(يَّقْتُلُ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا) মু’মিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করল। অর্থাৎ মু’মিন হওয়ার কারণে তাকে হত্যা করল। কিন্তু আল্লাহ যদি তাকে ক্ষমা করে দেন তবে ভিন্ন কথা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৪৮, ১১৬) আল্লাহ তাঁর সাথে শরীককারীকে ক্ষমা করবেন না, এতদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা করবেন তাকে ক্ষমা করে দিবেন। এ হাদীস দ্বারা আরো বুঝা যায় যে, যে ব্যক্তি কোনো মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করবে তাকেও আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। সে চিরকালে জাহান্নামে অবস্থান করবে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهٗ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا অর্থাৎ- ‘‘যে ব্যক্তি কোনো মু’মিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে তার প্রতিদান হলো জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে-’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৯৩)। ‘আল্লামা মুযহির বলেনঃ যে ব্যক্তি মু’মিনকে হত্যা করা হালাল মনে করে হত্যা করবে সে চির জাহান্নামী। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪২৬৪)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৬৯-[২৪] আর ইমাম নাসায়ী এ হাদীসটি মু’আবিয়াহ্ হতে বর্ণনা করেছেন।[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَرَوَاهُ النَّسَائِيّ عَن مُعَاوِيَة
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭০-[২৫] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মসজিদে দণ্ডবিধি কার্যকরী করা যাবে না। আর পিতা যদি সন্তানকে হত্যা করে ফেলে, তার কোনো কিসাস নেই। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُقَامُ الْحُدُودُ فِي الْمَسَاجِدِ وَلَا يُقَادُ بِالْوَلَدِ الْوَالِدُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي
ব্যাখ্যা: এ হাদীসের আলোকে বুঝা যাচ্ছে যে, মসজিদের ভিতরে শারী‘আতের বিধান (হাদ্দে শার‘ঈ) প্রয়োগ করা যাবে না। কেননা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে ফরয সালাত আদায় করার জন্য। ফরযের সাথে নফল আদায় ও জ্ঞান শিক্ষার জন্য। (ইবনুল হুমাম)
‘আল্লামা মুযহির (রহঃ) বলেনঃ অত্র হাদীসে মসজিদে পবিত্রতা রক্ষা করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ হাদীসের আলোকে একটি মাস্আলায় হানাফী ও শাফি‘ঈরা পরস্পর বিরোধিতা করেছেন, অর্থাৎ- যদি এমন কোনো ব্যক্তি হারামের মধ্যে অবস্থান করে যার কিসাস বৈধ তথা তাকে হত্যা করা জরুরী তবে ক্ষেত্রে কি হুকুম প্রযোজ্য হবে?
এ ক্ষেত্রে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ তার জন্য সব কিছু সংকীর্ণ করে দিতে হবে যাতে সে হারাম থেকে বের হয় এবং বের হওয়ার পর তাকে হত্যা করতে হবে। আর ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেনঃ তাকে হারামের মধ্যেই হত্যা করা যাবে।
এ হাদীসের অপর অংশে বলা হচ্ছে- সন্তানকে হত্যা করার দায়ে পিতা হতে কিসাস (তথা খুনের বদলে খুন) নেয়া যাবে না। অর্থাৎ সন্তান হত্যার দায়ে পিতার কাছ থেকে দিয়াত তথা রক্তমূল্য আদায় করতে হবে। ইবনুল হুমাম ইখতিলাফুল আয়িম্মাহ্ (ইমামদের মতভেদ) গ্রন্থে বলেনঃ এ ব্যাপারে সকল ‘উলামায়ে কিরাম একমত পোষণ করেছেন যে, যখন কোনো সন্তান পিতা-মাতার থেকে কাউকে হত্যা করে তবে সন্তানকে হত্যা করতে হবে। কিন্তু পিতা যদি সন্তানকে হত্যা করে তবে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ এ ক্ষেত্রে পিতাকে হত্যা করা যাবে না। ইমাম আহমাদ এবং ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-ও এ মত পোষণ করেন। কিন্তু ইমাম মালিক (রহঃ) বলেনঃ পিতা যদি সন্তানকে যাবাহ করে হত্যা করে তবে পিতা হতে কিসাস নেয়া হবে। আর যদি তরবারি বা অন্য কিছু দ্বারা মারধর করে এবং এতে সন্তান মারা যায় তবে কিসাস নেয়া যাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪০১)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭১-[২৬] আবূ রিমসাহ্ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) আমি আমার পিতার সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার সাথে এটা কে? আমার পিতা বললেন, আমার ছেলে। এ ব্যাপারে আপনি সাক্ষী থাকুন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, জেনে রাখ! তার অন্যায়ের শাস্তি তোমার ওপর এবং তোমার অন্যায়ের শাস্তি তার ওপর বর্তাবে না। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
আর শারহুস্ সুন্নাহ্-তে হাদীসের প্রথম দিকে কিছু অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে। তিনি (আবূ রিমসাহ্ ) বলেন, আমি আমার পিতার সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম। তখন আমার পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পৃষ্ঠদর্শনে (মোহরে নাবূওয়াত দেখে) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন। আপনার পিঠে যেটি আছে, আমি এর সুচিকিৎসা করে দেই। কেননা আমি একজন চিকিৎসক। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কেবল একজন সেবক আর আল্লাহ তা’আলা হলেন (প্রকৃত) চিকিৎসক।
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن أبي رِمْثَةَ قَالَ: أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ أبي فقالَ: «مَنْ هَذَا الَّذِي مَعَكَ؟» قَالَ: ابْنِي أَشْهَدُ بِهِ قَالَ: «أَمَا إِنَّهُ لَا يَجْنِي عَلَيْكَ وَلَا تَجْنِي عَلَيْهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَزَادَ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» فِي أَوَّلِهِ قَالَ: دَخَلْتُ مَعَ أَبِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَأَى أَبِي الَّذِي بِظَهْرِ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: دَعْنِي أُعَالِجُ الَّذِي بِظَهْرِكِ فَإِنِّي طَبِيبٌ. فَقَالَ: «أَنْتَ رفيقٌ واللَّهُ الطبيبُ»
ব্যাখ্যা: ‘‘সে আমার পুত্র, এ ব্যাপারে আপনি সাক্ষী থাকুন।’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- যদি আমি কোনো অপরাধ করি তাহলে আমার বদলে সে, আর যদি সে কোনো অপরাধ করে তাহলে তার বদলে আমি শাস্তি ভোগ করব। আর এ ধরনের নিয়ম জাহিলী যুগের সমাজ ব্যবস্থায় চালু ছিল।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী : তোমার অপরাধের শাস্তি তার ওপর এবং তার অপরাধের শাস্তি তোমার ওপর বর্তাবে না। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, একজনের অপরাধের দরুন অপরজনকে জবাবদিহি করতে হবে না।
এ ব্যাপারে ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এখানে দু’টি ব্যাখ্যা হওয়ার সম্ভাবনা রাখে- ১. একজনের জন্য অপরজনের ওপর কিসাস বর্তাবে না। ২. একজন অপরজনের পাপের শাস্তি ভোগ করবে না।
এ হাদীসের শেষাংশে বলা হয়েছে যে, সমস্ত রোগ নিরাময়কারী একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ শুধু সেবাযত্ন করতে পারে। প্রকৃত আরোগ্য দানকারী হলেন একমাত্র মহান আল্লাহ। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪৮৬; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৮৪৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭২-[২৭] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে, তিনি সুরাকহ্ ইবনু মালিক হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে দেখেছি, তিনি পুত্র থেকে পিতার কিসাস গ্রহণ করতেন, কিন্তু পিতা থেকে পুত্রের কিসাস গ্রহণ করতেন না। (তিরমিযী, তবে তিনি এ হাদীসটিকে য’ঈফ বলেছেন)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ
شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جدِّهِ عَن سُراقةَ بنِ مالكٍ قَالَ: حَضَرْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقِيدُ الْأَبَ مِنِ ابْنِهِ وَلَا يُقِيدُ الِابْنَ من أَبِيه. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ (لم تتمّ دراسته)
وَضَعفه
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তান হত্যার অপরাধে পিতা হতে কিসাস নিতেন না কিন্তু পিতা হত্যার অপরাধে পুত্র হতে কিসাস নিতেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯৯)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৩-[২৮] হাসান (রহঃ) সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার গোলামকে হত্যা করবে, আমরাও তাকে হত্যা করব। আর যে কেউ তার গোলামের কোনো অঙ্গ কাটবে, আমরাও তার অঙ্গ কেটে দেব। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]
আর ইমাম নাসায়ী তাঁর অন্য বর্ণনায় এ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, যে কেউ তার গোলামকে খাসী করবে আমরাও তাকে খাসী করে দেব।
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن الْحسن عَن سَمُرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَتَلَ عَبْدَهُ قَتَلْنَاهُ وَمَنْ جَدَعَ عَبْدَهُ جَدَعْنَاهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَزَادَ النَّسَائِيُّ فِي رِوَايَةٍ أُخْرَى: «وَمن خصى عَبده خصيناه»
ব্যাখ্যা: এখানে ‘হাসান’ দ্বারা ইমাম হাসান বাসরী (রহঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। আলোচ্য হাদীসে বলা হয়েছে- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাস হত্যার অপরাধে মুনীবকে হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ‘আল্লামা খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ এ বাক্যটি ভীতিপ্রদর্শন স্বরূপ বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গোলামের বদলে তার মুনীবকে হত্যা করা যাবে না। অবশ্য এ কথাটি এজন্যই বলা হয়েছে যেন কোনো মুনীব তার দাসকে হত্যা করার ইচ্ছাও পোষণ না করে। যেমন এক হাদীসে বলা হয়েছে যে, মদ্যপায়ী বার বার মদ্য পান করলে তাকে তিনবার পর্যন্ত চাবুক মারা হবে। কিন্তু চতুর্থবার বা এর বেশী বার পান করলে তাকে হত্যা করতে হবে। অথচ এমন এক মদ্যপায়ীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আনা হলে তিনি তাকে হত্যা করলেন না। কিছুসংখ্যক ‘উলামাহ্ বলেন যে, আল্লাহর বাণী الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ এ আয়াত দ্বারা আলোচ্য হাদীসটি রহিত করা হয়েছে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ কোনো আযাদ ব্যক্তিকে তার নিজের গোলাম হত্যার বদলে হত্যা করা যাবে না। তবে ইব্রাহীম নাখ‘ঈ ও সুফ্ইয়ান সাওরী বলেনঃ নিজের গোলামের বদলেও তার মালিকে হত্যা করা যাবে। কেননা আল্লাহর বাণী النَّـفْسَ بِالنَّفْسِ অর্থাৎ জানের বদলে জান হত্যা করতে হবে। এ আয়াতে আযাদ/মুনীব ও দাসের মধ্যে কোনরূপ পার্থক্য করা হয়নি, অর্থাৎ ‘আম্ভাবে বলা হয়েছে। [আল্লাহই অধিক অবগত] (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫০৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪১৪; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৭৫০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৪-[২৯] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় হত্যা করবে, তাকে নিহত ব্যক্তির অভিভাবক ও ওয়ারিসদের হাতে অর্পণ করা হবে। নিহত ব্যক্তির লোকেরা ইচ্ছা করলে তাকে হত্যা করতে পারে অথবা তার থেকে দিয়াত (রক্তপণ) নিতে পারে। আর দিয়াত হলো ত্রিশটি চার বৎসর বয়সী উট, ত্রিশটি পাঁচ বৎসর বয়সী উট এবং চল্লিশটি গর্ভধারণের উপযুক্ত উটনী অর্থাৎ যার পেটে বাচ্চা রয়েছে। আর ওয়ারিসগণ যদি এর চেয়ে কম উট নিয়ে রাজি হয়ে যায়, সেটাও হতে পারে। (তিরমিযী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ قَتَلَ مُتَعَمِّدًا دُفِعَ إِلَى أولياءِ المقتولِ فإِنْ شاؤوا قَتَلوا وإِنْ شَاؤوا أَخَذُوا الدِّيَةَ: وَهِيَ ثَلَاثُونَ حِقَّةً وَثَلَاثُونَ جَذَعَةً وَأَرْبَعُونَ خَلِفَةً وَمَا صَالَحُوا عَلَيْهِ فَهُوَ لَهُمْ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে দিয়াত ও তার পরিমাণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। কেউ যদি কাউকে স্বেচ্ছায় হত্যা করে ফেলে তবে হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কাছে সমর্পণ করতে হবে। অভিভাবকরা ইচ্ছা করলে তাকে হত্যা করে ফেলবে অথবা জীবনের বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করে তাকে ছেড়েও দিতে পারে। যাকে শারী‘আতে দিয়াত বলা হয়। আর এর পরিমাণ হবে একশত উট। এ একশত উটের মধ্যে
* ত্রিশটি হিক্কাহ্, (হিক্কাহ্ বলা হয় ঐ উটকে যে উট তিন বছর পূর্ণ করে চতুর্থ বছরে পড়েছে)।
* ত্রিশটি জাযাআহ্ (যা চার বছর শেষে পঞ্চম বছরে পড়েছে)।
* চল্লিশটি খলিফাহ্ (যা গর্ভধারণের বয়সে পতিত হয়েছে)।
* অভিভাবক যদি একশত উটের কম নিয়ে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয় তা হলেও বৈধ হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৮৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৫-[৩০] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত মুসলিমের রক্ত সমপর্যায়ের। যে কোনো একজন মুসলিমও যদি কাউকে (নিরাপত্তার) আশ্রয় দেয়, তবে তা সকলকেই রক্ষা করতে হবে। আর যদি দূরে কোনো বিচ্ছিন্ন সেনাদল গনীমাতের সম্পদ অর্জন করে, তাহলে তৎনিকটবর্তী পুরো দলও এর অংশীদার হবে। আর অমুসলিমদের মুকাবেলায় সমস্ত মুসলিম এক হাতের ন্যায় (অর্থাৎ অভিন্ন শক্তি)। সাবধান! কোনো কাফিরের বদলায় কোনো মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। আর যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ আছে, চুক্তির মেয়াদ পর্যন্ত তাকেও হত্যা করা যাবে না। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْمُسْلِمُونَ تَتَكَافَأُ دِمَاؤُهُمْ وَيَسْعَى بِذِمَّتِهِمْ أَدْنَاهُمْ وَيَرُدُّ عَلَيْهِمْ أَقْصَاهُمْ وَهُمْ يَدٌ عَلَى مَنْ سِوَاهُمْ أَلَا لَا يُقْتَلُ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ وَلَا ذُو عَهْدٍ فِي عَهْدِه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বেশ কয়েকটি বিধান সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সমস্ত মুসলিমের প্রাণসমপর্যাযের। ‘শারহুস্ সুন্নাহ্’ কিতাবে এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ক্বিসাসের ক্ষেত্রে সমস্ত মুসলিমের রক্ত সমান। যে কোনো মুসলিমের হত্যার বিনিময়ে শত্রুর যে কাউকে হত্যা করা যাবে, অর্থাৎ সম্মানিত ব্যক্তির বিনিময়ে কম মর্যাদাবানকে, ছোটর বিনিময়ে বড়কে, ‘আলিমের বদলে জাহিলকে, নারীর বদলে পুরুষকে, যদিও নিহত ব্যক্তি সম্মানিত বা ‘আলিম হোক, আর হত্যাকারী অসম্মানিত বা মূর্খ হোক।
যদি কোনো মুসলিম কোনো কাফিরকে নিরাপত্তা দেয় তবে সে নিরাপত্তা সকল মুসলিমের পক্ষ থেকে হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। অর্থাৎ এ অবস্থায় ঐ কাফিরের রক্ত সমস্ত মুসলিমের জন্য হারাম। শারহুস্ সুন্নাহ্ কিতাবে বলা হয়েছে যে, মুসলিমের মধ্যে যদি কোনো নিম্নস্তরের ব্যক্তিও কোনো কাফিরকে আশ্রয় দেয় বা কোনো মহিলা আশ্রয় দেয় তবে ঐ কাফিরের রক্ত সমস্ত মুসলিমের জন্য হারাম সাব্যস্ত হবে। তাকে হত্যা করা যাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪৯৭; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪১৩)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৬-[৩১] আর ইবনু মাজাহও হাদীসটি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَرَوَاهُ ابْن مَاجَه عَن ابْن عَبَّاس
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৭-[৩২] আবূ শুরাইহ আল খুযা’ঈ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয় অথবা আঘাতের কারণে অঙ্গহানি হয়। তখন তার অভিভাবক তিনটির যে কোনো একটি গ্রহণ করতে পারে। তবে যদি সে চতুর্থ কোনটি ইচ্ছা করে তখন তার হাত ধরে ফেল। তিনটি জিনিস হলো- কিসাস, ক্ষমা ও দিয়াত গ্রহণ করা। আর এ তিনটির কোনো একটি গ্রহণ করার পর যদি সে সীমালঙ্ঘন করে, তাহলে তার জন্য জাহান্নাম। সেখানে সে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। (দারিমী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن أبي شُريحِ الخُزاعيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ أُصِيبَ بِدَمٍ أَوْ خَبْلٍ وَالْخَبْلُ: الْجُرْحُ فَهُوَ بِالْخِيَارِ بَيْنَ إِحْدَى ثَلَاثٍ: فَإِنْ أَرَادَ الرَّابِعَةَ فَخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ: بَيْنَ أَنْ يَقْتَصَّ أَوْ يَعْفُوَ أَوْ يَأْخُذَ الْعَقْلَ فَإِنْ أَخَذَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا ثُمَّ عَدَا بَعْدَ ذَلِكَ فَلَهُ النَّارُ خَالِدًا فِيهَا مُخَلَّدًا أبدا . رَوَاهُ الدَّارمِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, যদি কারো দ্বারা নিহত বা আহত হয় তবে এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের মধ্য থেকে যে কোনো একটিকে নিহত বা আহত ব্যক্তির অভিভাবকদের মেনে নিতে হবে। আর তা হলো- ১. কিসাস তথা হত্যার বদলে হত্যা, আহতের বদলে আহত করা, ২. অথবা হত্যাকারী বা আহতকারীকে ক্ষমা করে দিবে, ৩. অথবা দিয়াত (রক্তমূল্য) গ্রহণ করবে। আর এ তিনটির যে কোনো একটি গ্রহণ করার পর যদি সে সীমালঙ্ঘন করে, অর্থাৎ অন্য কিছু দাবী করে তবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং সেখানে সে সর্বদা অবস্থান করবে। তবে হাদীসের অংশ (خَالِدًا فِيهَا مُخَلَّدًا أَبَدًا) এর অর্থ সর্বসময়ের জন্য নয় বরং এর অর্থ হলো (مَكَثَ طَوِيلًا) অর্থাৎ দীর্ঘ সময় জাহান্নামে থাকবে। কেননা কবীরা গুনাহের কারণে কেউ চির জাহান্নামী হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪৮৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৮-[৩৩] ত্বাঊস (রহঃ) সূত্রে ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গোলযোগের মধ্যে নিহত হয়। যেমন- পাথর মারামারি অথবা চাবুক ছোঁড়াছুঁড়ি বা লাঠালাঠি দ্বারা গোলমাল হয়েছে- এমতাবস্থায় তাকে অনিচ্ছাকৃত হত্যা বলে ধরা হবে। আর এর দিয়াত (রক্তপণ)-ও ভুলবশত হত্যার দিয়াতের মধ্যেই শামিল হবে। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে, তখন ঐ হত্যাকারী ক্বিসাসের আওতায় এসে যাবে। আর যে ব্যক্তি কিসাস গ্রহণ করার মাঝে বাধা দেয়, তার ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত ও গজব রয়েছে। তার ফরয ও নফল কোনো ’ইবাদাতই গৃহীত হবে না। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن طَاوُوس
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ قُتِلَ فِي عِمِّيَّةٍ فِي رَمْيٍ يَكُونُ بَيْنَهُمْ بِالْحِجَارَةِ أَوْ جَلْدٍ بِالسِّيَاطِ أَوْ ضَرْبٍ بِعَصًا فَهُوَ خَطَأٌ عقله الْخَطَأِ وَمَنْ قَتَلَ عَمْدًا فَهُوَ قَوَدٌ وَمَنْ حَالَ دُونَهُ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَغَضَبُهُ لَا يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে ভুলবশতঃ হত্যার বিধান সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, قتل خطاء তথা ভুলবশতঃ হত্যা দুই ধরনের হতে পারে। ১. নির্ণয় করতে ভুল করেছে। যেমন দূর হতে কোনো একটি বস্তুকে শিকার মনে করে তীর নিক্ষেপ করেছে অথচ তা একজন মানুষ ছিল এবং সে মারা গেল। ২. সত্যই সে কোনো একটি শিকারকে লক্ষ্য করে তীর নিক্ষেপ করেছে, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তা কোনো মানুষের গায়ে বিঁধেছে অথবা সে একটি লক্ষ্যবস্তুকে তীর নিক্ষেপ করেছে এমন সময় হঠাৎ একটি লোক চলার পথে তার সম্মুখে পড়ে মারা গেল। এ দু’ প্রকার হত্যার বেলাতেই দিয়াত ওয়াজিব হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৩০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৯-[৩৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দিয়াত (রক্তপণ) গ্রহণ করার পরও (হত্যাকারীকে) হত্যা করল, আমি তাকে ক্ষমা করব না। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا أُعْفِي مَنْ قَتَلَ بعدَ أَخذ الديةِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, কোনো হত্যাকারীর কাছ থেকে যখন রক্তমূল্য আদায় করা হয় তখন তাকে আর হত্যা করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে যে, (সূরা আল বাকারা ২ : ১৭৮) فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ أَلِيم অর্থাৎ এরপর (রক্তপণ ও ক্ষমার পর) যারা সীমালঙ্ঘন করবে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, অর্থাৎ শেষ দিবসে তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ‘আল্লামা কাযী (রহ) বলেছেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী, রক্তপণ আদায় করার পর যে হত্যাকারীকে হত্যা করবে আমি তাকে ছেড়ে দিব না। এর অর্থ হলো তার থেকে রক্তমূল্য আদায় না করে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪৯৮)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮০-[৩৫] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে কোনো ব্যক্তি শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, আর আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেয়, তখন আল্লাহ তা’আলা তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার গুনাহ মাফ করে দেন। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا مِنْ رَجُلٍ يُصَابُ بِشَيْءٍ فِي جَسَدِهِ فَتَصَدَّقَ بِهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللَّهُ بِهِ دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ خَطِيئَة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে ক্ষমার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। কেউ যদি কারো দ্বারা আহত হওয়ার পরও তাকে ক্ষমা করে দেয় তবে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাকারীর গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দেন। অর্থাৎ এ ক্ষমার কারণে আল্লাহ খুশী হয়ে তাকে মাফ করে দেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯৩)