পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮১-[৩৬] সা’ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) এক ব্যক্তির হত্যার বদলে (কিসাস স্বরূপ) পাঁচ অথবা সাত ব্যক্তিকে হত্যা করেন। তারা সংগোপনে সম্মিলিতভাবে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। অতঃপর ’উমার (রাঃ) বললেন, যদি ঐ লোকটিকে সমস্ত সান্’আ-এর অধিবাসী মিলে হত্যা করত, তাহলে আমিও কিসাসস্বরূপ তাদের সকলকে হত্যা করতাম। (মালিক)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخطاب قَتَلَ نَفَرًا خَمْسَةً أَوْ سَبْعَةً بِرَجُلٍ وَاحِدٍ قَتَلُوهُ قَتْلَ غِيلَةٍ وَقَالَ عُمَرُ: لَوْ تَمَالَأَ عَلَيْهِ أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ جَمِيعًا. رَوَاهُ مَالِكٌ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে ক্বিসাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এ হাদীসের আলোকে এ কথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, কোনো এলাকার সকলে মিলে যদি একজন ব্যক্তিকে হত্যা করে তবে সকলের কাছ থেকে কিসাস বা রক্তপণ আদায় করতে হবে। যেমন ‘উমার এক ব্যক্তির হত্যার কারণে সান্‘আ এলাকার বহু লোককে হত্যা করেছেন। ‘উমার (রাঃ)-এর উক্তি (لَوْ تَمَالَأَ عَلَيْهِ أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ جَمِيْعًا) এটা ‘আরব জাতির কাছে একটি প্রবাদ হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা অধিক সংখ্যক কোনো কিছুকে বুঝানোর ক্ষেত্রে সান্‘আবাসীর উদাহরণ দিত। কেননা সান্‘আতেই অধিক সংখ্যক লোকের বসবাস ছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহে মুয়াত্ত্বা মালিক ৯ম খন্ড, হাঃ ১৫৩৯)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮২-[৩৭] ইমাম বুখারী (রহঃ) এ হাদীসটি ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন।[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وروى البُخَارِيّ عَن ابْن عمر نَحوه
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮৩-[৩৮] জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে কতক লোক বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিহত ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে (আল্লাহ তা’আলার নিকট) তার হত্যাকারীকে ধরে নিয়ে এসে বলবে, এ লোকটিকে জিজ্ঞেস করুন, সে কেন আমাকে হত্যা করেছে? তখন সে (হত্যাকারী) বলবে, আমি অমুক লোকের বলে বলীয়ান হয়ে (জিম্মাদারীতে) তাকে হত্যা করেছি। রাবী জুনদুব বলেন, সুতরাং তোমরা এ জাতীয় হত্যাযজ্ঞের সহযোগিতা হতে বেঁচে থাক। (নাসায়ী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَن جُنْدبٍ قَالَ: حَدَّثَنِي فُلَانٌ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَجِيءُ الْمَقْتُولُ بِقَاتِلِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ: سَلْ هَذَا فِيمَ قَتَلَنِي؟ فَيَقُولُ: قَتَلْتُهُ عَلَى مُلْكِ فُلَانٍ . قَالَ جُنْدُبٌ: فاتَّقِها. رَوَاهُ النَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: হত্যাকারীকে কোনো অবস্থাতেই সাহায্য করা যাবে না। কেননা কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করে তাকে হত্যার কারণ জানতে চাইবেন। তখন হত্যাকারী তাকে মদদ দাতাদের নাম উল্লেখ করে দিবে। ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন- এখানে জুনদুব এমন এক লোককে উপদেশ দিচ্ছিলেন যিনি হত্যার সহযোগিতা করতে চেয়েছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহেন্ নাসায়ী ৩য় খন্ড, হাঃ ৪০০৯)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮৪-[৩৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সামান্য কথার দ্বারাও কোনো মু’মিনের হত্যার ব্যাপারে সহযোগিতা করল, সে এমন অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাৎ করবে যে, তার কপালের মধ্যে লেখা থাকবে- অর্থাৎ ’আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ’। (ইবনু মাজাহ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَعَانَ عَلَى قَتْلِ مُؤْمِنٍ شَطْرَ كَلِمَةٍ لَقِيَ اللَّهَ مَكْتُوبٌ بينَ عينيهِ آيسٌ من رَحْمَة الله» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা : এ হাদীস থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করার ব্যাপারে হত্যাকারীকে কোনো প্রকার সাহায্য করা যাবে না। যদিও সে সাহায্য হোক সামান্য একটি কথা বা ইঙ্গিত। আর যদি কেউ এরূপ সাহায্য করে তবে উক্ত সাহায্যকারী কিয়ামত দিবসে আল্লাহর সামনে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার কপালে লিখা থাকবে (اٰئِسٌ مِنْ رَحْمَةِ اللهِ) অর্থাৎ আল্লাহর রহমাত হতে নিরাশ।
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন, শাক্বীক (রহঃ) বলেছেনঃ যদি কেউ হত্যাকারীকে উৎসাহিত করার জন্য اقْتُلْ শব্দের اقْ পর্যন্তও উচ্চারণ করে তবুও ইঙ্গিতকারী হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮৫-[৪০] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তি যদি কাউকে আটক রাখে, আর আটককৃত ব্যক্তিকে অন্য কেউ হত্যা করে, তাহলে হত্যার দরুন হত্যাকারীকে হত্যা করা হবে এবং যে আটক রেখেছিল তাকে বন্দী করা হবে। (দারাকুত্বনী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا أَمْسَكَ الرَّجُلُ الرَّجُلَ وَقَتَلَهُ الْآخَرُ يُقْتَلُ الَّذِي قتَل ويُحبسُ الَّذِي أمْسَكَ» . رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসের বক্তব্য হচ্ছে, যে ব্যক্তি হত্যার কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করবে তার ওপর কিসাস প্রযোজ্য হবে। তবে যে ব্যক্তি বন্দী করবে, তাকেও বন্দী করা হবে। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি আটককারী এ উদ্দেশে আটক করে যে, তাকে হত্যা করা হোক তাহলে উভয়কেই হত্যা করা হবে। আর যদি প্রহার করার উদ্দেশে আটক করে তাহলে শুধুমাত্র হত্যাকারীকেই হত্যা করা হবে। আর আটককারী বন্দী করে রাখা হবে।য় (মিরকাতুল মাফাতীহ)