পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪২৮-[১৩] তালহা ইবনু ’উবায়দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদ দেখে বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা আহিল্লাহূ ’আলায়না- বিল আম্‌নি ওয়াল ঈমা-নি, ওয়াস্‌সালা-মাতি ওয়াল ইসলা-মি রব্বী ওয়া রব্বুকাল্ল-হু’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাদের প্রতি চাঁদকে উদয় করো নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের উপর। [হে চাঁদ!] আমার রব ও তোমার রব এক আল্লাহ।)। (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব)[1]

عَن طلحةَ بنِ عبيدِ اللَّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَأَى الْهِلَالَ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ رَبِّي وَرَبُّكَ اللَّهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

عن طلحة بن عبيد الله ان النبي صلى الله عليه وسلم كان اذا راى الهلال قال: «اللهم اهله علينا بالامن والايمان والسلامة والاسلام ربي وربك الله» . رواه الترمذي. وقال: هذا حديث حسن غريب

ব্যাখ্যা: চন্দ্র মাসের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাতের চাঁদকে الْهِلَالَ ‘‘আল হিলাল’’ বলা হয়। এর পরবর্তী রাতের চন্দ্রকে القمر ‘‘আল কামার’’ বলা হয়। ‘আল কামূস’-এ রয়েছে ‘‘আল হিলাল’’ হলো চন্দ্রের উজ্জ্বলতা অথবা দু’রাত থেকে তিন রাত অথবা সাত রাত পর্যন্ত এবং মাসের শেষের দু’রাত যথাক্রমে ২৬ ও ২৭তম রাত। এ ব্যতীত অন্যান্য রাতের চন্দ্রগুলোকে আল কামার বলা হয়। এ হাদীসে এ মর্মে সতর্কবাণী রয়েছে যে, আল্লাহ তা‘আলা নিদর্শনমালা প্রকাশ পাওয়ার সময় ও কোন অবস্থার পরিবর্তনে দু‘আ করা মুস্তাহাব। তাতে মস্তক অবনমিত হবে প্রতিপালকের দিকে, কখনোই প্রতিপালিতের দিকে নয়। আর এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করতে হবে উদ্ভাবকের উদ্ভাবনের দিকে, উদ্ভাবিত বস্ত্তর দিকে নয়।

‘আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীস থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, নতুন চাঁদ দেখার সময় দু‘আ করা শারী‘আতসম্মত। যার উপর এ হাদীস সম্পৃক্ত রয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪২৯-[১৪] ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা উভয়েই বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন বিপদগ্রস্ত লোককে দেখে বলবে,

’’আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী ’আ-ফা-নী মিম্মাব্ তালা-কা বিহী ওয়া ফায্‌যালানী ’আলা- কাসীরিম্ মিম্মান্ খলাকা তাফযীলা’’

(অর্থাৎ- আল্লাহর কৃতজ্ঞতা, যিনি তোমাকে এতে পতিত করেছেন, তা হতে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন। আর আমাকে তাঁর সৃষ্টির বহু জিনিস হতে বেশি মর্যাদা দান করেছেন।)। সে যেখানেই থাকুক না কেন তার ওপর এ বিপদ কক্ষনো পতিত হবে না। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا مِنْ رَجُلٍ رَأَى مُبْتَلًى فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ وَفَضَّلَنِي عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيلًا إِلَّا لَمْ يُصِبْهُ ذَلِكَ الْبَلَاءُ كَائِنا مَا كانَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن عمر بن الخطاب وابي هريرة قالا: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ما من رجل راى مبتلى فقال: الحمد لله الذي عافاني مما ابتلاك به وفضلني على كثير ممن خلق تفضيلا الا لم يصبه ذلك البلاء كاىنا ما كان . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: নিশ্চয় সুস্থ থাকা বিপদগ্রস্ত থাকার চেয়ে অধিক প্রশস্ত। কেননা অসুস্থতা একটি অস্বস্তিকর বিষয় ও ফিতনা, আর ঐ সময় তা পরীক্ষাও বটে। আর দৃঢ় মু’মিন বা ঈমানদার দুর্বল ঈমানদারদের তুলনায় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। যেমন- বর্ণিত রয়েছে,

আবূ জা‘ফার মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী  হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে দেখবে তখন আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করতে হবে এবং এ দু‘আটি মনে মনে বলতে হবে। বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে শুনানো যাবে না।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩০-[১৫] ইবনু মাজাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাদীসটি গরীব এবং তার রাবী ’আমর ইবনু দীনার সবল নয়।[1]

وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنِ ابْنِ عُمَرَ. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَعَمْرُو بْنُ دِينَارٍ الرَّاوِي لَيْسَ بِالْقَوِيّ

ورواه ابن ماجه عن ابن عمر. وقال الترمذي هذا حديث غريب وعمرو بن دينار الراوي ليس بالقوي

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের সানাদে ‘আমর ইবনু দীনার রয়েছেন এবং উক্ত হাদীসটি ত্ববারানী তাঁর ‘আল আওসাত’ গ্রন্থে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের শব্দে বর্ণনা করেছেন।

‘আল্লামা আল হায়সামী (রহঃ) বলেনঃ এতে যাকারিয়্যা ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু আইয়ূব আয্ যারীর রয়েছেন। আমি তাকে চিনি না। আর অন্য রাবীগুলো নির্ভরযোগ্য রয়েছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩১-[১৬] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক বাজারে প্রবেশ করে এ দু’আ পড়ে,

’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুল্‌কু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু, ওয়াহুওয়া হায়য়ুন, লা- ইয়ামূতু, বিয়াদিহিল খয়রু, ওয়াহুয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর’’

(অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা’বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শারীক নেই, তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা, তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দান করেন, তিনি চিরঞ্জীব, কক্ষনো মৃত্যুবরণ করবেন না। তাঁর হাতেই কল্যাণ এবং তিনি সমস্ত জিনিসের উপর ক্ষমতাশীল।)।

আল্লাহ তা’আলা তার জন্য দশ লক্ষ সাওয়াব লিখবেন, দশ লক্ষ গুনাহ মিটিয়ে দেন, এছাড়া তার জন্য দশ লক্ষ মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর তৈরি করবেন। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; কিন্তু তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব। আর শারহুস্ সুন্নাহয় ’বাজার’ শব্দের স্থলে ’বড় বাজার’ রয়েছে যেখানে ক্রয়-বিক্রয় হয়।)[1]

وَعَنْ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ دَخَلَ السُّوقَ فَقَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيٌّ لَا يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ أَلْفَ أَلْفَ حَسَنَةٍ وَمَحَا عَنْهُ أَلْفَ أَلْفَ سَيِّئَةٍ وَرَفَعَ لَهُ أَلْفَ أَلْفَ دَرَجَةٍ وَبَنَى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَفِي شَرْحِ السُّنَّةِ: «مَنْ قَالَ فِي سُوقٍ جَامِعٍ يباعُ فِيهِ» بدل «من دخل السُّوق»

وعن عمر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: من دخل السوق فقال: لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد يحيي ويميت وهو حي لا يموت بيده الخير وهو على كل شيء قدير كتب الله له الف الف حسنة ومحا عنه الف الف سيىة ورفع له الف الف درجة وبنى له بيتا في الجنة . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب وفي شرح السنة: «من قال في سوق جامع يباع فيه» بدل «من دخل السوق»

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ বাজারের সঙ্গে জিকির বা দু‘আ নির্দিষ্ট করার কারণ হলোঃ বাজার আল্লাহর জিকির হতে উদাসীন থাকার জায়গা ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার জায়গা। সুতরাং তা শয়তানের রাজত্বের ও তার সৈন্য সমাগমের স্থান। কাজেই সেখানে আল্লাহর জিকিরকারী শয়তানের সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করে এবং তার সৈন্যদের পরাভূত করে। অতএব সে উল্লেখিত সাওয়াবের উপযুক্ত।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩২-[১৭] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে দু’আ করতে শুনলেন, লোকটি বলছেনঃ ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা তামা-মান্ নি’মাহ্’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে পূর্ণ নিয়ামত চাই)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, পূর্ণ নিয়ামত কি? সে বললো, এই দু’আ দিয়ে আমি সম্পদ প্রাপ্তির (অধিক উত্তম বস্ত্ত) আশা করি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, পূর্ণ নিয়ামত তো হলো জান্নাতে প্রবেশ করা ও জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভ করা (দুনিয়াপ্রাপ্তি উদ্দেশ্য নয়)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আর এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, ’’ইয়া- যাল জালা-লি ওয়াল ইক্‌র-ম’’ (অর্থাৎ- হে মহত্ব ও মর্যাদার অধিকারী)। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার দু’আ কবূল করা হবে, তুমি দু’আ করো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, সে বলছে, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাস্ সব্‌রা’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ধৈর্যধারণের শক্তি চাই)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তো আল্লাহর কাছে বিপদ চাইলে, বরং তুমি তাঁর কাছে নিরাপত্তা প্রত্যাশা করো। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: سَمِعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا يَدْعُو يَقُولُ: اللهُمَّ إِني أسألكَ تمامَ النعمةِ فَقَالَ: «أيُّ شَيْءٍ تَمَامُ النِّعْمَةِ؟» قَالَ: دَعْوَةٌ أَرْجُو بِهَا خَيْرًا فَقَالَ: «إِنَّ مِنْ تَمَامِ النِّعْمَةِ دُخُولَ الْجَنَّةِ وَالْفَوْزَ مِنَ النَّارِ» . وَسَمِعَ رَجُلًا يَقُولُ: يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ فَقَالَ: «قَدِ اسْتُجِيبَ لَكَ فَسَلْ» . وَسَمِعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا وَهُوَ يَقُولُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الصَّبْرَ فَقَالَ: «سَأَلْتَ اللَّهَ الْبَلَاءَ فَاسْأَلْهُ الْعَافِيَةَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن معاذ بن جبل قال: سمع النبي صلى الله عليه وسلم رجلا يدعو يقول: اللهم اني اسالك تمام النعمة فقال: «اي شيء تمام النعمة؟» قال: دعوة ارجو بها خيرا فقال: «ان من تمام النعمة دخول الجنة والفوز من النار» . وسمع رجلا يقول: يا ذا الجلال والاكرام فقال: «قد استجيب لك فسل» . وسمع النبي صلى الله عليه وسلم رجلا وهو يقول: اللهم اني اسالك الصبر فقال: «سالت الله البلاء فاساله العافية» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা কারী (রহঃ) বলেনঃ সর্বোপরি কথা হলো লোকটি নিয়ামত দ্বারা দুনিয়ার নিয়ামত উদ্দেশ্য করেছে। যা আবশ্যকীয়ভাবে ধ্বংসশীল। আর দু‘আর মাঝে তার পূর্ণতা, অর্থাৎ- পূর্ণ নিয়ামত চাচ্ছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা প্রত্যাখ্যান করলেন এবং প্রমাণ দিলেন যে, আখিরাতের স্থায়ী নিয়ামত ছাড়া কোন (পূর্ণ) নিয়ামত নেই।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৩-[১৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মাজলিসে (বৈঠকে) বসে অনর্থক কথা বলল, আর বৈঠক হতে ওঠার আগে বলে,

’’সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা ওয়া বিহাম্‌দিকা, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা আস্‌তাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলায়কা’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পাক-পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মা’বূদ নেই। আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং তোমার কাছে তওবা্ করছি।)।

তাহলে ঐ মাজলিসে সে যা (ত্রুটি-বিচ্যুতি) করেছে আল্লাহ তা’আলা তা ক্ষমা করে দেবেন। (তিরমিযী, বায়হাক্বী- দা’ওয়াতুল কাবীর)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ جَلَسَ مَجْلِسًا فَكَثُرَ فِيهِ لَغَطُهُ فَقَالَ قَبْلَ أَنْ يَقُومَ: سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا كَانَ فِي مَجْلِسِهِ ذَلِكَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالْبَيْهَقِيّ فِي الدَّعْوَات الْكَبِير

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من جلس مجلسا فكثر فيه لغطه فقال قبل ان يقوم: سبحانك اللهم وبحمدك اشهد ان لا اله الا انت استغفرك واتوب اليك الا غفر له ما كان في مجلسه ذلك . رواه الترمذي والبيهقي في الدعوات الكبير

ব্যাখ্যা: (...سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ) এটা আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘আপনি আপনার পালনকর্তার সপ্রশংসা পবিত্রতা ঘোষণা করুন, যখন আপনি দন্ডায়মান হন।’’ (সূরা আত্ তূর ৫২ : ৪৮)

‘আত্বা (রহঃ) বলেনঃ প্রতিটি বৈঠকে, অর্থাৎ- যে কোন বৈঠক (ভাল কাজের) শেষে এ দু‘আটি পাঠ করতে হয়। মুসতাদরাক আল হাকিম-এ রয়েছে- কোন দল কোন বৈঠকে বসল, অতঃপর সেখানে দীর্ঘ সময় কথা বলল। এরপর কতক লোক দাঁড়ানোর পূর্বেই এ দু‘আটি (সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা আসতাগফিরুকা, ওয়া আতূবু ইলাইক) একজন বলল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৪-[১৯] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আরোহণ করার জন্য তাঁর কাছে একটি আরোহী আনা হলো। তিনি রিকাবে পা রেখে বললেন, ’’বিসমিল্লা-হ’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর নামে)। যখন এর পিঠে আরোহিত হলেন তখন বললেন, ’’আলহাম্‌দুলিল্লা-হ’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর প্রশংসা)। এরপর বললেন, ’’সুবহা-নাল্লাযী সাখখারা লানা- হা-যা- ওয়ামা- কুন্না- লাহূ মুকরিনীন, ওয়া ইন্না- ইলা- রব্বিনা- লামুনক্ব লিবূন’’ (অর্থাৎ- প্রশংসা আল্লাহর, যিনি [আরোহণের জন্য] এটাকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন)। তারপর তিনি তিনবার বললেন, ’’আলহাম্‌দুলিল্লা-হ’’, তিনবার বললেন, ’’ওয়াল্ল-হু আকবার’’; এরপর বললেন, ’’সুবহা-নাকা ইন্নী যলামতু নাফসী, ফাগফিরলী, ফাইন্নাহূ লা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আন্‌তা’’ (অর্থাৎ- তোমার পবিত্রতা, আমি আমার ওপর যুলম করেছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও)।

অতঃপর তিনি হেসে ফেললেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আমীরুল মু’মিনীন! কি কারণে আপনি হাসলেন? তিনি জবাবে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি, আমি যেভাবে করলাম, তিনি ঐভাবে করলেন অর্থাৎ- হাসলেন। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, কি কারণে আপনি হাসলেন, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন যখন সে বলে, ’’রব্বিগ্ ফিরলী যুনূবী’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমার অপরাধসমূহ ক্ষমা করো)। আল্লাহ বলেন, সে বিশ্বাস করে আমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে অপরাধসমূহ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। (আহমাদ, তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ: أَنَّهُ أُتِيَ بِدَابَّةٍ لِيَرْكَبَهَا فَلَمَّا وضَعَ رِجْلَه فِي الركابِ قَالَ: بسمِ اللَّهِ فَلَمَّا اسْتَوَى عَلَى ظَهْرِهَا قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ ثُمَّ قَالَ: (سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ وَإِنَّا إِلَى رَبنَا لمنُقلِبون)
ثُمَّ قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ ثَلَاثًا وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثَلَاثًا سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ ثُمَّ ضَحِكَ فَقِيلَ: مِنْ أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَنَعَ كَمَا صَنَعْتُ ثُمَّ ضَحِكَ فَقُلْتُ: مِنْ أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: إِنَّ رَبَّكَ لَيَعْجَبُ مِنْ عَبْدِهِ إِذَا قَالَ: رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي يَقُولُ: يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ غَيْرِي رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد

وعن علي: انه اتي بدابة ليركبها فلما وضع رجله في الركاب قال: بسم الله فلما استوى على ظهرها قال: الحمد لله ثم قال: (سبحان الذي سخر لنا هذا وما كنا له مقرنين وانا الى ربنا لمنقلبون) ثم قال: الحمد لله ثلاثا والله اكبر ثلاثا سبحانك اني ظلمت نفسي فاغفر لي فانه لا يغفر الذنوب الا انت ثم ضحك فقيل: من اي شيء ضحكت يا امير المومنين؟ قال: رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم صنع كما صنعت ثم ضحك فقلت: من اي شيء ضحكت يا رسول الله؟ قال: ان ربك ليعجب من عبده اذا قال: رب اغفر لي ذنوبي يقول: يعلم انه لا يغفر الذنوب غيري رواه احمد والترمذي وابو داود

ব্যাখ্যা: মিশকাতের সকল অনুলিপিতে অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে এবং মাসাবীহ, শারহ আস্ সুন্নাহ ও মুস্তাদরাকেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। সহীহ ইবনু হিব্বানেও অনুরূপ রয়েছে।

তবে আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় এভাবে রয়েছে- অতঃপর তিনি আল হামদুলিল্লা-হ তিনবার বললেন, এরপর আল্ল-হু আকবার তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি সুবহা-নাকা..... (উল্লেখিত দু‘আ) পড়লেন। আহমাদ, ইবনুস্ সুন্নী ও আল হাকিম-এর বর্ণনায় কিছু বর্ধিত রয়েছে। তা হলোঃ তিনি ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা’’ একবার পড়লেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৫-[২০] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন লোককে বিদায় দিতেন তার হাত ধরে রাখতেন, তা ছাড়তেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি নিজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত ছেড়ে না দিতেন। আর হাত ছেড়ে দেবার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ’’আস্‌তাও দি’উল্ল-হা দীনাকা ওয়া আমা-নাতাকা ওয়া আ-খিরা ’আমলিকা’’ (অর্থাৎ- তোমার দীন, তোমার আমানাত, তোমার শেষ ’আমলকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করলাম)। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ; কিন্তু শেষ দু’জনের বর্ণনায় ’সর্বশেষ কাজ’ শব্দের উল্লেখ নেই)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا وَدَّعَ رَجُلًا أَخَذَ بِيَدِهِ فَلَا يَدَعُهَا حَتَّى يَكُونَ الرَّجُلُ هُوَ يَدَعُ يَدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَقُولُ: «أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَآخِرَ عَمَلِكَ» وَفِي رِوَايَة «خَوَاتِيم عَمَلِكَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَفِي روايتهما لم يذكر: «وَآخر عَمَلك»

وعن ابن عمر قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا ودع رجلا اخذ بيده فلا يدعها حتى يكون الرجل هو يدع يد النبي صلى الله عليه وسلم ويقول: «استودع الله دينك وامانتك واخر عملك» وفي رواية «خواتيم عملك» . رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه وفي روايتهما لم يذكر: «واخر عملك»

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ এখানে أمانة (আমানাত) দ্বারা মুসাফির ব্যক্তি পরিবার-পরিজন, যাদের সে রেখে এসেছে এবং সম্পদ উদ্দেশ্য। যেগুলোর দেখভাল ও সংরক্ষণ করে তার কোন প্রতিনিধি। আর কারো মতে সমস্ত দায়িত্বই আমানাত। যার ব্যাখ্যায় আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘আমি আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এ আমানাত (দায়িত্ব) পেশ করেছিলাম, অতঃপর তারা এটা বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হলো কিন্তু মানুষ তা বহন করল। নিশ্চয় সে যালিম অজ্ঞ’’- (সূরা আল আহযা-ব ৩৩ : ৭২)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৬-[২১] ’আবদুল্লাহ আল খত্বমী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৈন্যবাহিনীকে বিদায় দেবার সময় বলতেন, ’’আস্‌তাও দি’উল্ল-হা দীনাকুম ওয়া আমা-নাতাকুম ওয়া খওয়া-তীমা আ’মা-লিকুম’’ (অর্থাৎ- তোমাদের দীন, তোমাদের আমানাত ও তোমাদের শেষ আ’মাল আল্লাহর হাতে সমর্পণ করলাম)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ الْخَطْمِيِّ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَسْتَوْدِعَ الْجَيْشَ قَالَ: «أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكُمْ وأمانتكم وخواتيم أَعمالكُم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عبد الله الخطمي قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اراد ان يستودع الجيش قال: «استودع الله دينكم وامانتكم وخواتيم اعمالكم» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ‘আবদুল্লাহ আল খত্বমী, তিনি আবূ মূসা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ ইবনু যায়দ ইবনু হুসায়ন ইবনু ‘আমর ইবনুল হারিস ইবনু খত্বমাহ্ আল আওসী আনসারী, তিনি ছোট সাহাবী ছিলেন, তিনি ছোট অবস্থায় হুদায়বিয়ায় উপস্থিত হয়েছিলেন। অনুরূপ বর্ণনা আত্ তাহযীবে রয়েছে। ‘আল্লামা আল খাররাজী (রহঃ) বলেনঃ তিনি ১৭ বছর বয়সে হুদায়বিয়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি উষ্ট্রির যুদ্ধ ও সিফফীনের যুদ্ধে ‘আলী (রাঃ) এর পক্ষ নিয়েছিলেন। ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ) এর সময় কুফার গভর্নর ছিলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৭-[২২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমি সফরের ইচ্ছা করেছি, আমাকে কিছু পাথেয় (উপদেশ) দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তোমাকে তাকওয়া অবলম্বনের পাথেয় দান করুন (ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বাঁচান)। লোকটি বললো, আমাকে আরো কিছু উপদেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তোমার গুনাহ মাফ করুন। লোকটি আবার বললো, আমার মাতাপিতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আমাকে আরো কিছু উপদেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি যেখানেই থাকো আল্লাহ যেন তোমার জন্য কল্যাণকর কাজ করা সহজ করে দেন। (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ سَفَرًا فَزَوِّدْنِي فَقَالَ: «زَوَّدَكَ اللَّهُ التَّقْوَى» . قَالَ: زِدْنِي قَالَ: «وَغَفَرَ ذَنْبَكَ» قَالَ: زِدْنِي بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي قَالَ: «وَيَسَّرَ لكَ الْخَيْر حيثُما كُنْتَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

وعن انس قال: جاء رجل الى النبي صلى الله عليه وسلم قال: يا رسول الله اني اريد سفرا فزودني فقال: «زودك الله التقوى» . قال: زدني قال: «وغفر ذنبك» قال: زدني بابي انت وامي قال: «ويسر لك الخير حيثما كنت» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب

ব্যাখ্যা: قَالَ: وَغَفَرَ ذَنْبَكَ এ কথা বলার উদ্দেশ্য হল- তাকওয়ার বিশুদ্ধতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আর তার ওপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(وَيَسَّرَ لكَ الْخَيْرَ) অর্থাৎ- দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ তোমার জন্য সহজ করুন।

মানাবী (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীসে মুসাফির ব্যক্তিকে বিদায় জানানোর বিধান বা দলীল বর্ণিত হয়েছে। তাই প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য মুস্তাহাব হল, কোন মুসাফির ব্যক্তিকে বিদায় দেয়ার সময় এ দু‘আ পাঠ করা। মোটকথা আলোচ্য হাদীসে প্রমাণিত হয় যে, মুসাফিরের জন্য এ দু‘আগুলো পাঠ করা শার‘ঈভাবে স্বীকৃত।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৮-[২৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমি সফরে যাবার ইচ্ছা পোষণ করছি। আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি সবসময় আল্লাহর ভয় মনে পোষণ করবে এবং (পথিমধ্যে) প্রতিটি উঁচু জায়গায় অবশ্যই ’’আল্ল-হু আকবার’’ বলবে। সে লোকটি যখন চলে গেল তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’’আল্ল-হুম্মা আত্ববিলাহুল বু’দা ওয়া হাওবিন্ ’আলায়হিস্ সাফার’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! লোকটির সফরের দূরত্ব কমিয়ে দাও এবং তার জন্য সফর সহজ করে দাও)। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُسَافِرَ فَأَوْصِنِي قَالَ: «عَلَيْكَ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالتَّكْبِيرِ عَلَى كل شرف» . قَالَ: فَلَمَّا وَلَّى الرَّجُلُ قَالَ: «اللَّهُمَّ اطْوِ لَهُ الْبعد وهون عَلَيْهِ السّفر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي هريرة قال: ان رجلا قال: يا رسول الله اني اريد ان اسافر فاوصني قال: «عليك بتقوى الله والتكبير على كل شرف» . قال: فلما ولى الرجل قال: «اللهم اطو له البعد وهون عليه السفر» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: (عَلَيْكَ) এটি ইসমে ফে‘ল, এটি خُذْ বা গ্রহণ করো- এ অর্থে ব্যবহার হয়। এর অর্থ হলোঃ তাকওয়া বা আল্লাহভীতিতে অটল থাকা, তাকওয়ার সকল স্তরের উপর সর্বদা অটুট থাকা। নিশ্চয় এটি একটি নির্দেশ, যা আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের প্রতি করেছেন। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘বস্ত্ততঃ আমি নির্দেশ দিয়েছি তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থধারীদেরকে এবং তোমাদেরকে যে, তোমরা সবাই আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করো’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১৩১)।

(اَللّٰهُمَّ اطْوِ لَهُ الْبُعْدَ) অর্থাৎ- তিনি তাঁর সফরের দূরত্বকে নিকটবর্তী করে দেন। এ ব্যাপারে ইমাম জাযারী (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তার সফরকে সহজ ও নিকটবর্তী করে দেন যাতে সফর দীর্ঘ না হয়। আর মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ অর্থগতভাবে ও উপলব্ধিগতভাবে সফরকে নিকটবর্তী করার মাধ্যমে সফরের কষ্টকে দূরীভূত করেন।

(وَهَوِّنْ عَلَيْهِ السَّفَرَ) অর্থাৎ- একই কথা আবার বলার মাধ্যমে নির্দিষ্টতাকে আরো বেশী প্রশস্ততা করা।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৩৯-[২৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে বের হবার সময় রাত হয়ে গেলে বলতেন,

’’ইয়া- আরযু রব্বী ওয়া রব্বুকিল্লা-হু আ’ঊযুবিল্লা-হি মিন শাররিকি ওয়া শাররি মা- ফীকি ওয়া শাররি মা- খুলিকা ফীকি ওয়া শাররি মা- ইয়াদিব্বু ’আলায়কি ওয়া আ’ঊযুবিল্লা-হি মিন্ আসাদিন ওয়া আস্ওয়াদা ওয়া মিনাল হাইয়্যাতি ওয়াল ’আকরাবি ওয়ামিন্ শাররি সা-কিনিল বালাদি ওয়ামিন্ ওয়া-লিদিন ওয়ামা- ওয়া-লিদ’’

(অর্থাৎ- হে জমিন! আমার প্রতিপালক ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ। সুতরাং আমি তোমার অনিষ্ট হতে, তোমার মধ্যে যা আছে তার অনিষ্ট হতে, তোমার মধ্যে যা সৃষ্টি করা হয়েছে এর অনিষ্ট হতে এবং যা তোমার ওপর চলাফেরা করে তার অনিষ্ট হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। আমি আল্লাহর কাছে আরো আশ্রয় চাই সিংহ, বাঘ, কালো সাপ ও সাপ-বিচ্ছু হতে, শহরের অধিবাসী ও পিতা-পুত্র হতে।)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَافَرَ فَأَقْبَلَ اللَّيْلُ قَالَ: «يَا أَرْضُ رَبِّي وَرَبُّكِ اللَّهُ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّكِ وَشَرِّ مَا فِيكِ وَشَرِّ مَا خُلِقَ فِيكِ وَشَرِّ مَا يَدِبُّ عَلَيْكِ وَأَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ أَسَدٍ وَأَسْودَ وَمِنَ الْحَيَّةِ وَالْعَقْرَبِ وَمِنْ شَرِّ سَاكِنِ الْبَلَدِ وَمِنْ والدٍ وَمَا ولد» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عمر قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا سافر فاقبل الليل قال: «يا ارض ربي وربك الله اعوذ بالله من شرك وشر ما فيك وشر ما خلق فيك وشر ما يدب عليك واعوذ بالله من اسد واسود ومن الحية والعقرب ومن شر ساكن البلد ومن والد وما ولد» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (...إِذَا سَافَرَ) আহমাদ এবং হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধ করতেন অথবা ভ্রমণ করতেন। অতঃপর রাত আসলে তিনি বলতেন। এখানে (يَا أَرْضُ) বলে জমিনকে সম্বোধন করা হয়েছে এবং তিনি তাকে প্রশস্ততার ভিত্তিতে এবং খাস করার উদ্দেশে আহবান করেছেন।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) এটা উল্লেখ করেছেন। কারো মতে (مِنْ شَرِّ سَاكِنِ الْبَلَدِ)-এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ মানুষ, এখানে তাদের নাম উল্লেখ করার কারণ হলোঃ বেশীরভাগ ভূ-খণ্ডে তারা বসবাস করে। অথবা তারা শহর নির্মাণ করে এবং তারা সেটা দেশ বানিয়ে নেয়। আবার কারো মতে তারা জিন্, যারা জমিনে বাস করে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪০-[২৫] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধে বের হবার সময় বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা আন্‌তা ’আযুদী ওয়া নাসীরী বিকা আহূলু ওয়াবিকা আসূলু ওয়াবিকা উকাতিলু’’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমার শক্তি-বল। তুমি আমার সাহায্যকারী। তোমার সাহায্যেই আমি শত্রুর ষড়যন্ত্র পর্যুদস্ত করি। তোমার সাহায্যেই আমি আক্রমণে অগ্রসর হই এবং তোমারই সাহায্যে আমি যুদ্ধ পরিচলনা করি।)। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا غَزَا قَالَ: «اللَّهُمَّ أَنْتَ عَضُدِي وَنَصِيرِي بِكَ أَحُولُ وَبِكَ أَصُولُ وَبِكَ أُقَاتِلُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد

وعن انس رضي الله عنه قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا غزا قال: «اللهم انت عضدي ونصيري بك احول وبك اصول وبك اقاتل» . رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে এ মর্মে দলীল রয়েছে যে, যুদ্ধের সময় এ দু‘আ এবং এর সমার্থক অনুরূপ দু‘আ পাঠ করা শার‘ঈভাবে প্রমাণিত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪১-[২৬] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন দলের ব্যাপারে ভয় করতেন, তখন বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্না- নাজ্’আলুকা ফী নুহূরিহিম ওয়ানা’ঊযুবিকা মিন্ শুরূরিহিম’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমরা তোমাকে তাদের মোকাবেলা করলাম [তুমিই তাদের প্রতিহত কর] এবং তাদের অনিষ্টতা হতে তোমার কাছে আশ্রয় নিলাম)। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي مُوسَى: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَافَ قَوْمًا قَالَ: «اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُورِهِمْ وَنَعُوذُ بِكَ من شرورهم» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد

وعن ابي موسى: ان النبي صلى الله عليه وسلم كان اذا خاف قوما قال: «اللهم انا نجعلك في نحورهم ونعوذ بك من شرورهم» . رواه احمد وابو داود

ব্যাখ্যা:  (كَانَ إِذَا خَافَ قَوْمًا) অর্থাৎ- কোন সম্প্রদায়ের অনিষ্টতা নিয়ে আশঙ্কা করতেন।

(اَللّٰهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِىْ نُحُورِهِمْ) অর্থাৎ- বুকে সাহস ও শত্রুর মুকাবিলায় শক্তি সঞ্চার করা। যাতে করে যুদ্ধের ময়দানে শত্রুকে সাহসের সাথে মুকাবিলা করতে পারে।

(وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ) অর্থাৎ- তাদের মুকাবিলায় বুকে শক্তি দাও, আর শত্রুদের চক্রান্ত মুকাবিলা করার তাওফীক দাও। আমি আশ্রয় চাচ্ছি তাদের চক্রান্তের অনিষ্টতা থেকে।

অতএব অত্র হাদীসের দলীল রয়েছে যে, শত্রুর ভয়ে এ দু‘আ পড়া শার‘ঈভাবে প্রমাণিত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪২-[২৭] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর হতে বের হবার সময় বলতেন, ’’বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ’আলাল্ল-হি, আল্ল-হুম্মা ইন্না- না’ঊযুবিকা মিন্ আন্ নাযিল্লা আও নাযিল্লা আও নাযলিমা আও নুযলামা আও নাজহালা আও ইউজহালা ’আলায়না-’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর নামে, আমি আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা করলাম। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই পদস্খলিত হওয়া, বিপথগামী হওয়া, উৎপীড়ন করা, উৎপীড়িত হওয়া, অজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং কারো অজ্ঞতা প্রকাশের পাত্র হওয়া হতে।)। (আহমাদ, তিরমিযী, নাসায়ী; তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ)

আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহর অন্য বর্ণনায় আছে, উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই ঘর হতে বের হতেন, তখন আকাশের দিকে মাথা উঠিয়ে বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা আন্ আযিল্লা আও উযল্লা, আও আযলিমা আও উযলামা, আও আজহালা আও ইউজহালা ’আলাইয়্যা’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই বিপথগামী হওয়া, বিপথগামী করা, উৎপীড়ন করা, উৎপীড়িত হওয়া, অজ্ঞতা প্রকাশ করা বা অজ্ঞতা প্রকাশের পাত্র হওয়া হতে।)।[1]

وَعَنْ أُمُّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ قَالَ: «بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ نَزِلَّ أَوْ نَضِلَّ أَوْ نَظْلِمَ أَوْ نُظْلَمَ أَوْ نَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَيْنَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ وَابْنِ مَاجَهْ قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ: مَا خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْتِي قَطُّ إِلَّا رَفَعَ طَرْفَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ أَو يجهل عَليّ»

وعن ام سلمة رضي الله عنها ان النبي صلى الله عليه وسلم كان اذا خرج من بيته قال: «بسم الله توكلت على الله اللهم انا نعوذ بك من ان نزل او نضل او نظلم او نظلم او نجهل او يجهل علينا» . رواه احمد والترمذي والنساىي وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح وفي رواية ابي داود وابن ماجه قالت ام سلمة: ما خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم من بيتي قط الا رفع طرفه الى السماء فقال: «اللهم اني اعوذ بك ان اضل او اضل او اظلم او اظلم او اجهل او يجهل علي»

ব্যাখ্যা: (اَللّٰهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ نَزِلَّ أَوْ نَضِلَّ) অর্থাৎ- খারাপ বা পাপাচার পতিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।

মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ ইচ্ছা ছাড়াই সত্য পথ হতে বিচ্যুত হওয়া। অথবা ইচ্ছা ছাড়াই পাপ কাজে লিপ্ত হওয়া।

(أَوْ نَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَيْنَا) অর্থাৎ- আল্লাহর হক বা বান্দার হাক্বের ব্যাপারে কোন অন্যায় করা। অথবা, মানুষের উপায়ে কোন কষ্টদায়ক বস্ত্ত চালিয়ে দেয়া।

ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ ইচ্ছা ছাড়াই কোন পাপ কাজ পতিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাওয়া। অথবা, মানুষের সাথে লেনদেন বা চলাফেরায় কষ্ট দেয়া বা তাদের উপর অত্যাচার করা।

নাসায়ী’র শব্দে রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাড়ী থেকে বের হতেন, বলতেন, (بسم الله رب أعوذ بك من أن أزل، أو أضل، أو أظلم أو أظلم، أو أجهل أو يجهل علي) অর্থাৎ- আল্লাহর নামে শুরু করছি- হে আমার প্রতিপালক! আপনার নিকট লাঞ্ছনা, গোমরাহ্ হওয়া অথবা অত্যাচার করা, অত্যাচারিত হওয়া, অজ্ঞ হওয়া ও আমার ওপর অজ্ঞতার আরোপ থেকে আশ্রয় চাই। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন- হাকিম (১ম খণ্ড, ৫১৯ পৃঃ), আহমাদ (৩য় খণ্ড, ৩১৮, ৩৩২ পৃঃ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪৩-[২৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি ঘর হতে বের হবার সময় যখন বলে, ’’বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কাল্তু ’আলাল্ল-হি, লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর নামে বের হলাম, আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম, আল্লাহ ছাড়া কোন উপায় নেই, ক্ষমতা নেই)- তখন তাকে বলা হয়, পথ পেলে, উপায়-উপকরণ পেলে এবং নিরাপদ থাকলে। সুতরাং শয়তান তার কাছ হতে দূর হয়ে যায় এবং অন্য এক শয়তান এই শয়তানকে বলে, যে ব্যক্তিকে পথ দেখানো হয়েছে, উপায়-উপকরণ দেয়া হয়েছে এবং রক্ষা করা হয়েছে- তাকে তুমি কি করতে পারবে? (আবূ দাঊদ; আর তিরমিযীতে বর্ণিত হয়েছে ’শয়তান বিদূরিত হয়ে যায়’ পর্যন্ত)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْتِهِ فَقَالَ: بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ يُقَالُ لَهُ حِينَئِذٍ هُدِيتَ وَكُفِيتَ وَوُقِيتَ فَيَتَنَحَّى لَهُ الشَّيْطَانُ وَيَقُولُ شَيْطَانٌ آخَرُ: كَيْفَ لَكَ بِرَجُلٍ قَدْ هُدِيَ وَكُفِيَ وَوُقِيَ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وروى التِّرْمِذِيّ إِلى قَوْله: «الشَّيْطَان»

وعن انس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا خرج الرجل من بيته فقال: بسم الله توكلت على الله لا حول ولا قوة الا بالله يقال له حينىذ هديت وكفيت ووقيت فيتنحى له الشيطان ويقول شيطان اخر: كيف لك برجل قد هدي وكفي ووقي . رواه ابو داود وروى الترمذي الى قوله: «الشيطان»

ব্যাখ্যা: যখন বান্দা আল্লাহর কাছে সাহায্য চায় তার বারাকাতপূর্ণ নামের সাথে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে হিদায়াত দেন, সঠিক পথ দেখান এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কর্মগুলোতে সাহায্য করেন। বান্দা যখন আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা রাখবে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। অতএব তিনি তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনি তার জন্য যথেষ্ঠ’’- (সূরা আত্ব ত্বলা-ক ৬৫ : ৩)। আর যে ‘‘লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ’’ পড়বে আল্লাহ তাকে শয়তানের অনিষ্টতা থেকে মুক্ত করবেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪৪-[২৯] আবূ মালিক আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে সে যেন বলে, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা খয়রল মাওলিজি ওয়া খয়রল মাখর-জি বিস্‌মিল্লা-হি ওয়ালাজনা- ওয়া ’আলাল্ল-হি রব্বিনা- তাওয়াক্কালনা-’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ঘরে প্রবেশ ও ঘর হতে বের হওয়ার কল্যাণ চাই। তোমার নামেই আমি প্রবেশ করি (ও বের হই)। হে আমাদের বর! আল্লাহর নামে ভরসা করলাম।)। অতঃপর সে যেন নিজ পরিবারের লোকদেরকে সালাম দেয়। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا وَلَجَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ فَلْيَقُلْ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلِجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا ثُمَّ لْيُسَلِّمْ عَلَى أَهْلِهِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي مالك الاشعري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا ولج الرجل بيته فليقل: اللهم اني اسالك خير المولج وخير المخرج بسم الله ولجنا وعلى الله ربنا توكلنا ثم ليسلم على اهله . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা : মিরকাতে ইমাম সুয়ূত্বী (রহঃ) ব্যাখ্যা করেছেন, তাতে আল্লাহ তা‘আলার কথার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, তার শিক্ষার জন্য। হে পালনকর্তা! আমাকে দাখিল করুন সত্যরূপে এবং আমাকে বের করুন সত্যরূপে।

এখানে আয়াতে কারীমা সব ধরনের প্রবেশ ও বের হওয়াকে অন্তর্ভুক্ত করবে। যদিও আয়াতটি মক্কা বিজয়ের দিনে নাযিল হয়েছে। কেননা শিক্ষা তো ‘আম্ শব্দ দ্বারা সাব্যস্ত হয়, নির্দিষ্ট কোন কারণে নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪৫-[৩০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি বিয়ে করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলতেন, ’’বা-রকাল্ল-হ লাকা ওয়া বা-রকা ’আলায়কুমা- ওয়া জামা’আ বায়নাকুমা- ফী খায়রিন’’ (অর্থাৎ- আল্লাহ তোমাকে বারাকাত দিন, তোমাদের উভয়ের ওপর বারাকাতময় করুন এবং তোমাদেরকে [সর্বদা] কল্যাণের সাথে একত্রিত রাখুন)। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَفَّأَ الْإِنْسَانَ إِذَا تَزَوَّجَ قَالَ: «بَارَكَ اللَّهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكُمَا وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِي خَيْرٍ» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن ابي هريرة ان النبي صلى الله عليه وسلم كان اذا رفا الانسان اذا تزوج قال: «بارك الله لك وبارك عليكما وجمع بينكما في خير» رواه احمد والترمذي وابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: নব দুলালের জন্য সুখী জীবন ও অধিক সন্তানের দু‘আকারী- এ কথাগুলো জাহিলী জামানার লোকেরা বলত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা প্রত্যাখ্যান করলেন। যেমন- বাক্বী ইবনু মিখলাদ বর্ণনা করেছেন গালিব (রহঃ)-এর সূত্রে, তিনি হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বানু তামীম গোত্রের এক লোক থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ আমরা জাহিলী যুগে নব বিবাহিত দুলালের প্রতি সুখী-জীবন ও অধিক সন্তান জন্মের দু‘আ করতাম, যখন ইসলাম আসলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বলো- (بارك الله لكم وبارك فيكم وبارك عليكم) অর্থাৎ- আল্লাহ তোমাদের জন্য বারাকাত দান করুন, তোমাদের মাঝে বারাকাত দান করুন, তোমাদের ওপর বারাকাত দান করুন। (নাসায়ী, ত্ববারানী)

ইবনুস্ সুন্নীর অপর বর্ণনায় রয়েছে যে, ‘আক্বীল ইবনু আবী ত্বলিব বাসরাহ্ গমন করলেন। অতঃপর এক নারীকে বিয়ে করলেন। অতঃপর তারা তাকে সুখী জীবন ও অধিক সন্তানের দু‘আ করল। তিনি বললেন, এরূপ বলো না, তোমরা তাই বলো যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (اللهم بارك لهم وبارك عليهم) ‘‘হে আল্লাহ! তাদেরকে বারাকাত দান করো ও তাদের ওপর বারাকাত নাযিল করো।’’


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪৬-[৩১] ’আমর ইবনু শু’আয়ব হতে বর্ণিত। তিনি তার পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন কোন মহিলাকে বিয়ে অথবা কোন চাকর ক্রয় করে তখন সে যেন বলে,

’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা খয়রহা- ওয়া খয়রা মা- জাবালতাহা- ’আলায়হি ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন্ শাররিহা- ওয়া শাররি মা- জাবালতাহা- ’আলায়হি’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তার কল্যাণ এবং তাকে যে সৎ চরিত্রের সাথে সৃষ্টি করেছো তার কল্যাণ চাই। আর তোমার কাছে আমি তার অনিষ্ট ও তাকে যে খারাপ স্বভাবের সাথে সৃষ্টি করেছো তা হতে আশ্রয় চাই।)।

আর যখন কোন ব্যক্তি উট ক্রয় করে, তখন যেন ঠোঁটের চূড়া ধরে আগের মতো দু’আ পড়ে। অন্য এক বর্ণনায় মহিলা ও চাকর সম্বদ্ধে বলা হয়েছে, তখন সে যেন তার সামনের চুল ধরে বারাকাতের জন্য দু’আ করে। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا تَزَوَّجَ أَحَدُكُمُ امْرَأَةً أَوِ اشْتَرَى خَادِمًا فَلْيَقُلْ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَإِذَا اشْتَرَى بَعِيرًا فليأخُذْ بِذروةِ سنامِهِ ولْيَقُلْ مِثْلَ ذَلِكَ» . وَفِي رِوَايَةٍ فِي الْمَرْأَةِ وَالْخَادِمِ: «ثُمَّ لْيَأْخُذْ بِنَاصِيَتِهَا وَلْيَدْعُ بِالْبَرَكَةِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اذا تزوج احدكم امراة او اشترى خادما فليقل اللهم اني اسالك خيرها وخير ما جبلتها عليه واعوذ بك من شرها وشر ما جبلتها عليه واذا اشترى بعيرا فلياخذ بذروة سنامه وليقل مثل ذلك» . وفي رواية في المراة والخادم: «ثم لياخذ بناصيتها وليدع بالبركة» . رواه ابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: ইবনু মাজাহ্, ইবনুস্ সুন্নী ও হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছে, সে যেন তার কপাল ধারণ করে। অতঃপর দু‘আ বলবে। এখানে কপাল দ্বারা মাথার অগ্রভাগের চুল উদ্দেশ্য, যেমন ‘‘আস্ সিহাহ’’-তে বর্ণিত রয়েছে। তবে মোদ্দা কথা হলো- এর দ্বারা মাথার অগ্রভাগ উদ্দেশ্য, চাই তাতে চুল থাকুক বা না থাকুক। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) (بِذَرْوَةِ سَنَامِه) উল্লেখের পর বলেনঃ আবূ সা‘ঈদ অর্থাৎ- সা‘ঈদ ইবনু ‘আবদিল্লাহ, (যিনি তার একজন উস্তায ছিলেন) তিনি এ হাদীসের বর্ণনায় কিছু বর্ধিত করেছেন যে, অতঃপর সে যেন তার কপাল ধারণ করে। অতঃপর নারী ও খাদিমের জন্য বারাকাতের দু‘আ করবে।

এ হাদীসে দলীল রয়েছে যে, বিবাহ, খাদিম কিংবা কোন পশু ক্রয়ের সময় এ দু‘আ পড়া শার‘ঈভাবে প্রমাণিত-সুন্নাত।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিভিন্ন সময়ের পঠিতব্য দু‘আ

২৪৪৭-[৩২] আবূ বকরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিপদগ্রস্ত লোকের দু’আ হলো,

’’আল্ল-হুম্মা রহমতাকা আরজূ ফালা- তাকিলনী ইলা- নাফসী ত্বরফাতা ’আয়নিন, ওয়া আসলিহ লী শা’নী কুল্লা-হূ, লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার রহমত প্রত্যাশা করি। তুমি আমাকে আমার নিজের ওপর ক্ষণিকের জন্যও ছেড়ে দিও না। বরং তুমি নিজে আমার সকল বিষয়াদি সংশোধন করে দাও। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মা’বূদ নেই।)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَعَوَاتُ الْمَكْرُوبِ اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي بكرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «دعوات المكروب اللهم رحمتك ارجو فلا تكلني الى نفسي طرفة عين واصلح لي شاني كله لا اله الا انت» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ) এ দু‘আর শেষে ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা’’ এর উল্লেখ করা। এটাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। কেননা তা একক মা‘বূদের ফায়দা দেয়। অর্থাৎ- ‘ইবাদাতের যোগ্য মাত্র একজনই এটা জানিয়ে দেয়।

‘আল্লামা মানাবী (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার হাজির-নাজির ও স্বাক্ষর শব্দ দ্বারা এটি শেষ করার দ্বারা এদিকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, নিশ্চয় এ দু‘আ চিন্তিত ব্যক্তির উপকার করবে এবং চিন্তা দূর করবে। আর যে ব্যক্তি তাওহীদের সাক্ষ্য দিবে সে পার্থিব জীবনে চিন্তা দূর হওয়ার মাধ্যমে মুক্ত হয়ে যাবে এবং আখিরাতে রহমাত ও উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »