পরিচ্ছেদঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান
১১১১-[৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন। যখন আমাদের তিন লোক সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন আমাদের একজন (উত্তম ব্যক্তি) সামনে চলে যাবে অর্থাৎ ইমামতি করবে। (তিরমিযী)[1]
عَن سَمُرَة بن جُنْدُب قَالَ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كُنَّا ثَلَاثَةً أَنْ يَتَقَدَّمَنَا أَحَدُنَا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: হাদীস থেকে বুঝা গেল, ইমামের সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের ক্ষেত্রে দু’জন মুক্তাদী হলে তাদের দাঁড়ানোর স্থান ইমামের পেছনে।
পরিচ্ছেদঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান
১১১২-[৭] ’আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি (একদিন) মাঠে (সালাতে) মানুষের ইমামতি করছিলেন। সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্যে তিনি একটি চত্বরের উপর দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগণ ছিলেন তার নীচে দাঁড়িয়ে। এ অবস্থা দেখে হুযায়ফাহ্ কাতার থেকে বেরিয়ে এসে সামনের দিকে গেলেন এবং ’আম্মারের হাত ধরলেন। ’আম্মার তাঁকে অনুকরণ করলেন। হুযায়ফাহ্ তাঁকে নীচে নামিয়ে দিলেন। ’আম্মারের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হওয়ার পর হুযায়ফাহ্ তাঁকে বললেন। আপনি কি জানেননি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কোন লোক জামা’আতে সালাতের ইমাম হলে তার দাঁড়াবার স্থান যেন মুক্তাদীদের দাঁড়াবার স্থান হতে উঁচু না হয়। অথবা এ রকমের কোন শব্দ উচ্চারণ করেছেন। ’আম্মার উত্তর দিলেন, এ জন্যেই তো আপনি যখন আমার হাত ধরেছেন আমি আপনার অনুসরণ করেছি। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ: أَنَّهُ أَمَّ النَّاسَ بِالْمَدَائِنِ وَقَامَ عَلَى دُكَّانٍ يُصَلِّي وَالنَّاسُ أَسْفَلَ مِنْهُ فَتَقَدَّمَ حُذَيْفَةُ فَأَخَذَ عَلَى يَدَيْهِ فَاتَّبَعَهُ عَمَّارٌ حَتَّى أَنْزَلَهُ حُذَيْفَةُ فَلَمَّا فَرَغَ عَمَّارٌ مِنْ صَلَاتِهِ قَالَ لَهُ حُذَيْفَةُ: أَلَمْ تَسْمَعْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا أَمَّ الرَّجُلُ الْقَوْمَ فَلَا يَقُمْ فِي مَقَامٍ أَرْفَعَ مِنْ مَقَامِهِمْ أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ؟» فَقَالَ عَمَّارٌ: لِذَلِكَ اتَّبَعْتُكَ حِينَ أَخَذْتَ عَلَى يَدي. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: ইমাম তাঁর মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানো মাকরূহ হাদীসটি এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। চাই উচ্চতার পরিমাণ ব্যক্তির পায়া বা তার অপেক্ষা কম বা বেশি হোক কিন্তু এর সানাদে একজন মাজহূল বা অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে তবে ইমাম আবূ দাঊদ, হাকিম, বায়হাক্বী হুমাম থেকে যা বর্ণনা করেছেন তা মুক্তাদী অপেক্ষা ইমাম উঁচু স্থানে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে জোরদার করেছে আর তা হচ্ছে হুযায়ফাহ্ (রাঃ) একবার মাদায়েন শহরে মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে মানুষের ইমামতি করলেন তখন আবূ মাস্‘ঊদ হুযায়ফার জামা ধরে টানলেন, অতঃপর হুযায়ফাহ্ তার সালাত শেষ করলে আবূ মাস্‘ঊদ তাকে বললেন তুমি কি জান না রসূলের সময় ইমামদের এ ধরনের উঁচু জায়গাতে দাঁড়ানো থেকে নিষেধ করা হত?
হুযায়ফাহ্ বলল, হ্যাঁ আপনি যখন আমাকে টেনেছিলেন তখন আমার স্মরণ পরেছিল তবে মুনযিরী ও আবূ দাঊদ এ ব্যাপারে চুপ থেকেছেন এবং নাবাবী বলেন আবূ দাঊদ একে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হাফিয তালখীসে ১২৮ পৃষ্ঠাতে বলেন, ইবনু খুযায়মাহ্, ইবনু হিব্বান ও হাকিম একে সহীহ বলেছেন। এ ব্যাপারে মারফূ' সূত্রে হাকিম-এর এক বর্ণনা রয়েছে তাতে আছে হুযায়ফাহ্ তিনি ইমাম ছিলেন আর আবূ মাস্‘ঊদ তিনি কাপড় ধরে টেনেছিলেন। বর্ণনাটি পরস্পর বিরোধী হবে না।
কেননা উভয় বর্ণনাতে একই সমস্যা এবং কোনতেই অসম্ভব না যে, হুযায়ফার এ ধরনের ঘটনা আবূ মাস্‘ঊদের সাথে ঘটার পূর্বে ‘আম্মারের সাথে ঘটেছিল। সালাতে ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞাটিকে আরও জোরদার করেছে দারকুতনী ও হাকিম আবূ মাস্‘ঊদ থেকে যা বর্ণনা করেছেন তা। আবূ মাস্‘ঊদ বলেন, ইমাম উঁচু স্থানে দাঁড়াবে এ অবস্থায় মুক্তাদী তার অপেক্ষা নীচু স্থান দাঁড়াবে এমন করাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। হাফিয তালখীসে এটা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে চুপ থেকেছেন।
হাকিম এবং ত্বহাবীও এ ব্যাপারে চুপ থেকেছেন। অচিরেই এ হাদীসটি ‘জানাযার সাথে চলা এবং তার উপর সালাত আদায় করা’ এ অধ্যায়ের শেষে আসছে। শাওকানী ‘‘নায়লুল আওতার’’-এ বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বারের উপর উঁচু হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত না হলে আবূ মাস্‘ঊদের হাদীসে নিষেধাজ্ঞার বাহ্যিক দিকটি হারাম সাব্যস্ত হত। মাসজিদ ও অন্যান্য স্থানে পায়া সমপরিমাণ বা তার অপেক্ষা কম বা বেশি উঁচুতে দাঁড়ানোর মাঝে পার্থক্য না করে ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সাব্যস্ত হল।
আর তা আবূ মাস্‘ঊদ-এর মারফূ' হুকমী উক্তির কারণে বা সুস্পষ্ট মারফূ' উক্তির কারণে। মিম্বারের উপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার যে হাদীস রয়েছে সে সম্পর্কে বলা হয়েছে; রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য করেছিলেন যেমন এর উপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ‘যাতে তোমরা আমার সালাতের অনুসরণ করতে পার’ প্রমাণ বহন করছে।
এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা হচ্ছে ইমাম যখন মুক্তাদীদেরকে শিক্ষা দেয়ার ইচ্ছে করবে তখন মুক্তাদী অপেক্ষা ইমামের উঁচু স্থানে দাঁড়ানো জায়িয। ইবনু দাক্বীক্ব আল ঈদ এ ব্যাপারে তথা সাহল বিন সা‘দ-এর আগত হাদীসের ব্যাপারে বলেন, হাদীসটি ঐ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা করছে যে, ইমাম যখন শিক্ষা দেয়ার ইচ্ছে করবে তখন ইমামের মুক্তাদীদের অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা জায়িয। তবে এ ধরনের উদ্দেশ্য ছাড়া ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করার ব্যাপারে বলা তা মাকরূহ। ইবনু দাক্বীক্ব আল ঈদ বলেন, শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া যে ব্যক্তি মুক্তাদী অপেক্ষা ইমামের উঁচু স্থানে দাঁড়ানোকে জায়িয বলার ইচ্ছে করবে তার কথা গ্রহণ করা যাবে না এবং গ্রহণযোগ্য বর্ণনার বিপরীতে ক্বিয়াস করাও ঠিক হবে না আর ক্বিয়াস এভাবে যে, উসূলের ক্ষেত্রে নিয়ম আছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কিছু থেকে নিষেধ করবেন তখন সে বিষয়টি বাহ্যিক দৃষ্টিতে নিষেধাজ্ঞাকে অন্তর্ভুক্ত করবে। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এমন কাজ করা যা পূর্বের নিষেধাজ্ঞার বিপরীত। এক্ষেত্রে বুঝাতে হবে তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য নির্দিষ্ট, অন্যান্যাদের জন্য নয়।
শাওকানী ‘‘সায়লুল জারাব’’-এ বলেন, এ দু’টি হাদীসে ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে দলীল রয়েছে। তবে মিম্বারের উপর রসূলের সালাত আদায়ের হাদীস থাকার কারণে নিষেধাজ্ঞাটি নাহ্ইয়ি তানযিহী তথা সতর্কতাজনিত নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা রাখছে। তবে যে ব্যক্তি বলবে নিশ্চয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশে করেছেন যেমন হাদীসের শেষে তা উল্লেখ হয়েছে তাহলে তা নাহ্ইয়ি তানযীহির ফায়দা দিবে না। কেননা কোন ইমামের পক্ষে শিক্ষা দেয়ার নিমিত্তে মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা বৈধ হবে না যদি তা অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈধ না হয় এবং মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস এমন উক্তি করাও বিশুদ্ধ হবে না।
আমরা এ বিতর্কে কতক বিদ্বান লোকদের প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ একটি স্বয়ংসম্পন্ন পুস্তিকা লিখেছি। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, আমি বলব, ইবনু হাযম এ বিষয়টিকে কোন ধরনের মাকরূহ মনে না করে স্বাভাবিকভাবে একে জায়িয মনে করেন। যেমন তিনি মুহাল্লা গ্রন্থে ৪র্থ খন্ডে ৮৪ পৃষ্ঠাতে সাহল-এর হাদীসকে দলীল গ্রহণপূর্বক এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আর তা শাফি‘ঈ এবং আবূ সুলায়মানের উক্তি এবং আমাদের উক্তির মতো উক্তি করেন আহমাদ বিন হাম্বাল, লায়স বিন সা‘দ, ইমাম বুখারী ও অন্যান্যগণ।
তবে আমার কাছে প্রাধান্যতর উক্তি, ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানো নিষেধ। পক্ষান্তরে সাহল-এর হাদীসে উঁচু স্থানে রসূলের সালাত আদায় করা মূলত শিক্ষা দেয়ার জন্য। অর্থাৎ রসূলের সালাত কারো কাছে যেন গোপন না থাকে সেজন্য এ হাদীস থেকে ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানো নিষেধ। পক্ষান্তরে সাহল-এর হাদীসে উঁচু স্থানে রসূলের সালাত আদায় করা মূলত শিক্ষা দেয়ার জন্য। অর্থাৎ রসূলের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কারো কাছে যেন গোপন না থাকে সেজন্য। এ হাদীস থেকে ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়ানো সাব্যস্ত হয় না। আল্লাহই সর্বজ্ঞাত।
পরিচ্ছেদঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান
১১১৩-[৮] সাহল ইবনু সা’দ আস্ সা’ইদী (রাঃ)হতে বর্ণিত। একদিন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বার কিসের তৈরি ছিল? তিনি বললেন, জঙ্গলের ঝাউ কাঠের তৈরি ছিল। সেটাকে অমুক মহিলার স্বাধীন করা গোলাম অমুকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যে তৈরি করেছিলেন। সেটা তৈরি হয়ে গেলে, মসজিদে রাখা হলো। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দাঁড়ালেন। ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হয়ে সালাতের জন্য তাকবীর তাহরীমা বাঁধলেন। সকলে তার পেছনে দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বারের উপর হতেই ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করলেন। রুকূ’ করলেন। অন্যান্য লোকও তাঁর পেছনে রুকূ’ করলেন। অতঃপর তিনি রুকূ’ হতে মাথা উত্তোলন করলেন। এরপরে মিম্বার থেকে পা নামিয়ে জমিনে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। এরপর পুনরায় তিনি মিম্বারে উঠলেন। কুরআন পড়লেন। রুকূ’ করলেন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করলেন, তারপর পেছনে সরে আসলেন এমনকি জমিনে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। [এ ভাষা বুখারী (রহঃ)-এর একক; আবার বুখারী মুসলিমের মিলিত বিবরণটা এরূপ। এ হাদীসের বর্ণনাকারী হাদীসের শেষে এ উক্তি পেশ করলেন। যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হতে অবসর হলেন, তখন বললেন, ’’আমি এজন্যে এ ’আমল করেছি, তোমরা যেন আমার অনুকরণ করো। আমার সালাতের পরিস্থিতি, এর বিধানাবলী জানতে পার।][1]
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهُ سُئِلَ: مِنْ أَيِّ شَيْءٍ الْمِنْبَرُ؟ فَقَالَ: هُوَ مِنْ أَثْلِ الْغَابَةِ عَمِلَهُ فُلَانٌ مَوْلَى فُلَانَةَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ عُمِلَ وَوُضِعَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ وَكَبَّرَ وَقَامَ النَّاسُ خَلْفَهُ فَقَرَأَ وَرَكَعَ وَرَكَعَ النَّاسُ خَلْفَهُ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرَى فَسَجَدَ عَلَى الْأَرْضِ ثُمَّ عَادَ إِلَى الْمِنْبَرِ ثُمَّ قَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرِي حَتَّى سجد بِالْأَرْضِ. هَذَا لفظ البُخَارِيّ وَفِي الْمُتَّفَقِ عَلَيْهِ نَحْوُهُ وَقَالَ فِي آخِرِهِ: فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا صَنَعْتُ هَذَا لِتَأْتَمُّوا بِي وَلِتَعْلَمُوا صَلَاتي»
ব্যাখ্যা: উল্লেখিত হাদীস দ্বারা ইমাম বুখারী মিম্বার ও কাঠের উপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা জায়িয এ ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করেছেন। হাফিয বলেন, তাতে ইমাম ও মুক্তাদী উঁচু নীচু স্থানে ভিন্ন হয়ে দাঁড়ানো জায়িয হওয়ার ব্যাপারে দলীল রয়েছে। এ ব্যাপারে ইমাম বুখারী তাঁর শায়খ ‘আলী ইবনু মাদানী-এর সূত্রে আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) হতে ঘটনাতে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। ইবনু দাক্বীক্ব আল ‘ঈদ এর এ ব্যাপারে একটি আলোচনা রয়েছে। তাতে সালাতে অল্প কাজ করা জায়িয হওয়ার ব্যাপারে দলীল রয়েছে।
তবে তাতে ঐ ব্যক্তিদের ওপর সমস্যা রয়েছে যারা বেশি কাজকে তিন পদক্ষেপ দ্বারা সীমাবদ্ধ করেছেন; কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বার ছিল তিন স্তর বিশিষ্ট। আর রসূলের সালাত ছিল উঁচু স্তরের উপর। মোট কথা হাদীসের শেষে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি দ্বারা বুঝা যায় মিম্বারের উপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত আদায় করা থেকে হিকমাত হচ্ছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিনের উপর সালাত আদায় করলে সালাত যাদের না দেখার আশংকা রয়েছে তারাও যেন মিম্বারের উপর থেকে দেখতে পায়।
আরও বুঝা যায়, ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাতের শিক্ষা দেয়ার জন্য সালাত আদায় করা ইমামের জন্য জায়িয।
পরিচ্ছেদঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান
১১১৪-[৯] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কামরায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর লোকেরা কামরার বাইরে হতে তাঁর সাথে সালাতের ইকতেদা করলেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ رِضَى اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حُجْرَتِهِ وَالنَّاسُ يَأْتَمُّونَ بِهِ مِنْ وَرَاءِ الْحُجْرَةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হুজরাহ্ এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে মতানৈক্য করা হয়েছে, অতঃপর অধিকাংশ মতভেদকারী বলেন, হুজরাহ্ দ্বারা ঐ স্থান উদ্দেশ্য যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান মাসে ই‘তিকাফের উদ্দেশে চাটাই দ্বারা মসজিদে গ্রহণ করেছিলেন। কারো মতে, হুজরাহ্ দ্বারা ঘরের হুজরাহ্ উদ্দেশ্য। যেমন বুখারী ‘আবদাহ্-এর হাদীস কর্তৃক ইয়াহ্ইয়া বিন সা‘ঈ আল আনসারী থেকে তিনি ‘আমারাহ্ থেকে তিনি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হুজরাতে (কক্ষে) রাতে সালাত আদায় করতেন। এমতাবস্থায় হুজরার দেয়াল ছিল খাটো; তখন মানুষ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখে রসূলের সালাতের অনুসরণ করতে লাগল। হাফিয বলেন, হুজরার ক্ষেত্রে বাহ্যিক দিক হচ্ছে; রসূলের ঘরের হুজরাহ্ উদ্দেশ্য। হুজরার দেয়ালের উল্লেখের উপরই প্রমাণ বহন করছে।
এর অপেক্ষা আরও স্পষ্ট যা আবূ নু‘আয়মে (كَانَ يُصَلِّيْ فِيْ حُجْرَةِ مِنْ حُجَرِ أَزْوَاجِه) অর্থাৎ ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের কক্ষে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন।’’ এ শব্দ দ্বারা ইয়াহ্ইয়া বিন সা‘ঈদ কর্তৃক হাম্মাদ বিন যায়দ-এর বর্ণনা। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাটাই কর্তৃক মসজিদে সে হুজরাহ্ গ্রহণ করেছিলেন, যেমন ইমাম বুখারী ও অন্যান্যগণ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কর্তৃক আবূ সালামাহ্-এর হাদীসে থেকে যা বর্ণনা করেছেন তা হচ্ছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি চাটাই ছিল যা দিনের বেলাতে বিছাতেন, রাত্রিতে তা হুজরাহ্ হিসেবে গ্রহণ করতেন, অতঃপর মানুষ তার কাছে এসে কাতারবন্দী হয়েছিল।
হাফিয বলেন, ইমাম বুখারীর বর্ণনা থেকে উদ্দেশ্য হল এ বর্ণনার পূর্বের বর্ণনাতে উল্লেখিত হুজরাহ্ থেকে কি উদ্দেশ্য তা বর্ণনা করা। ‘আয়নী বলেন, ইমাম বুখারীর বর্ণনা থেকে উদ্দেশ্য হচ্ছে এ হাদীসের পূর্বের হাদীসে উল্লেখিত হুজরাহ্ থেকে উদ্দেশ্য বর্ণনা করা। আর কতক হাদীস কতক হাদীসের ব্যাখ্যা করে প্রত্যেক স্থান যার উপর সীমাবদ্ধ বা স্থির হয়ে থাকে তাকে হুজরাহ্ বলা হয়।
যায়দ বিন সাবিত এর হাদীসে আছে যা ইমাম বুখারী ‘আয়িশার বিগত হওয়া হাদীসের পর বর্ণনা করেছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানে চাটাই দিয়ে হুজরাহ্ (রুম/কক্ষ) তৈরি করে তাতে কয়েক রাত্রি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন, অতঃপর তাঁর সাহাবীগণ তাঁর সালাতের অনুকরণ করেছেন, তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সাহাবীগণ সম্পর্কে অবস্থান জানালেন তখন সে তারাবীহ সালাত সেখানে আদায় করা থেকে অবসর নিতে শুরু করলেন। আবূ দাঊদ, আহমাদ এবং ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কর্তৃক আবূ সালামাহ্-এর বর্ণনাতে আছে, নিশ্চয় ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তাঁর ঘরের দরজার কাছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সে চাটাইটি স্থাপন করেছিল।
হাফিয বলেন, হাদীসকে বিভিন্নতার দিকে ঘুরিয়ে দেয়া অথবা দেয়ালের ক্ষেত্রে বা হুজরাকে ‘আয়িশার দিকে সম্বন্ধ করার ক্ষেত্রে রূপক অর্থের দিকে ঘুরিয়ে দেয়া যেতে পারে। যায়দ বিন সাবিত-এর হাদীসের উল্লেখের পর ‘আয়নী বলেন, এক বর্ণনাতে এসেছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে চাটাই/চামড়াকে হুজরাহ্ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এক বর্ণনাতে আছে, তিনি আমার কক্ষে সালাত আদায় করলেন, যা ‘উমরাহ্ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, এক বর্ণনাতে আছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ করলেন তখন আমি তাঁর জন্য চাটাই স্থাপন করলে তিনি তার উপর সালাত আদায় করলেন। সম্ভবত এ সকল বর্ণনা বিভিন্ন সময় ঘটেছে।
‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, আমি বলবঃ আমার কাছে অগ্রাধিকারপূর্ণ হচ্ছে- বিষয়টিকে বিভিন্নতার দিকে ঘুরিয়ে দেয়া। উল্লেখিত হাদীসে এসেছে মানুষেরা হুজরার পেছন থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের অনুসরণ করেছিলেন এতে ঐ ব্যাপারে দলীল আছে যে, ইমাম ও মুক্তাদীদের মাঝে আড়াল হওয়া সালাত বিশুদ্ধ হওয়াতে প্রতিবন্ধক না। কেননা বর্ণনার দাবি নিশ্চয় সাহাবীগণ তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুকরণ করত এমতাবস্থায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরাহ্/কক্ষের ভিতরে ও তারা হুজরার বাইরে থাকতো। ইমাম আবূ দাঊদ এ ব্যাপারে একটি অধ্যায় বেঁধেছেন তা হচ্ছে মুক্তাদী ইমামের অনুসরণ করবে এ অবস্থায় মুক্তাদী ও ইমাম উভয়ের মাঝে দেয়াল থাকা। ইমাম বুখারী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কর্তৃক ‘উমরাহ্ ও আবূ সালামাহ্ এর দু’ বর্ণনা এবং যায়দ বিন সাবিত-এর হাদীসের উপর একটি অধ্যায় বেঁধেছেন তা হচ্ছে যখন ইমাম ও সম্প্রদায়ের মাঝে (সালাতাবস্থায়) প্রাচীর বা পর্দা থাকবে। তাতে তিনি হাসান-এর কথা উল্লেখ করেছেনঃ তুমি ও তোমার ইমাম সালাত আদায় করা অবস্থায় উভয়ের মাঝে নদী থাকলেও কোন সমস্যা নেই।
আরও উল্লেখ করেছেন আবূ মিযলাজ-এর কথা (প্রসিদ্ধ তাবি‘ঈ লাহিক্ব বিন হুমায়দ) তা হচ্ছে মুক্তাদী যখন ইমামের তাকবীর শুনবে তখন সে ইমামের অনুকরণ করবে যদিও উভয়ের মাঝে পথ বা প্রাচীর থাকে। ‘আয়নী বলেন, ‘এতে কোন ক্ষতি হবে না’- কথাটুকু গোপন আছে। এ ব্যাপারে মাসআলাটি মতানৈক্যপূর্ণ। তবে অধ্যায়ে এমন কিছু নেই যা উল্লেখিত মাসআলা জায়িয হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ বহন করে। এটা মালিকীদের মাযহাবও বটে। যা আনাস (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ), ইবনু সীরীন ও সালিম হতে বর্ণিত।
‘উরওয়াহ্ ইমামের ইকতেদা করতেন এমতাবস্থায় তিনি তার গৃহে থাকতেন, তার মাঝে ও মসজিদের মাঝে পথ থাকত। মালিক বলেন, মুক্তাদী ও ইমামের মাঝে পথ বা ছোট নদী রেখে সালাত আদায় করাতে কোন সমস্যা নেই। এমনিভাবে কাছাকাছি অবস্থানকারী নৌযানসমূহ; এ নৌযানগুলোর কোন একটিতে ইমাম অন্যগুলোতে মুক্তাদী অবস্থান করে সালাত আদায় করলে মুক্তাদীদের সালাত জায়িয হবে। তবে একটি দল এটা মাকরূহ মনে করেন। ‘উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা হয়েছে, যখন ইমাম ও মুক্তাদীর মাঝে পথ, প্রাচীর বা কোন নদী থাকবে তখন মুক্তাদী ইমামের সাথে আছে বলে ধরা হবে না।
শা‘বী ও ইব্রাহীম ইমাম ও মুক্তাদীর মাঝে পথ থাকা মাকরূহ মনে করেন। আবূ হানীফাহ্ বলেন, ইমাম ও মুক্তাদীর মাঝে পথ থাকলে ইকতেদা বৈধ হবে না তবে কাতারগুলোর মাঝে সম্পৃক্ততা থাকলে জায়িয। এ ব্যাপারে উক্তি করেছেন লায়স, আওযারী ও আশহব। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, আমি বলবঃ হানাফীদের মাযহাব হচ্ছে ইমাম ও মুক্তাদীর মাঝে পথ থাকলেও ইমামের অনুকরণ জায়িয হবে তবে ৩টি শর্তসাপেক্ষেঃ
১। ইমামের অবস্থা মুক্তাদীর কাছে সংশয়পূর্ণ বা এলোমেলো না হওয়া।
২। ইমাম ও মুক্তাদীর স্থান আলাদা না হওয়া; মাসজিদ এক স্থানের হুকুমে।
৩। এটা দ্বিতীয়টির পরিপূরক তথা একই ধরনের স্থানে ইমাম মুক্তাদী থাকলে ইমামের অনুকরণ করতে মুক্তাদীদের কোন কিছু বাধা দিবে না।
উল্লেখিত হাদীসগুলো সম্পর্কে হানাফীগণ উত্তর দিয়েছেন যে, সে হাদীসগুলোতে এমন কোন কিছু পাওয়া যাবে না যা এ শর্তসমূহের বিরোধিতা করে কেননা মাসজিদ সম্পূর্ণ এক স্থান। আর এক স্থানে দেয়ালের আড়াল সৃষ্টি হওয়ার সময় শুধু ইমামের অবস্থান পরিবর্তন জেনে এমনকি যদি আওয়াজ শুনার মাধ্যমেও হয় তথাপি তার অনুসরণ করা জায়িয। এটাই উদ্দেশ্য।
দর্শন করার প্রয়োজন নেই। কাতারসমূহ যখন পরস্পর কাছাকাছি হবে না তখন মাঠের ক্ষেত্রে তিন কাতার সমপরিমাণ দূরত্বকে বিবেচনা করা হবে। যদি ইমাম মুক্তাদীর মাঝে কোন পথ বা নদী থাকে যাতে নৌকা চলাচল করে তাহলে এ ধরনের ক্ষেত্রে তারা (হানাফীগণ) ইমামের (সালাত) অনুকরণ করা সাধারণভাবে বারণ করেছেন। তারা ইমাম মুক্তাদীর অবস্থান স্থলকে আলাদা স্থান হিসেবে গণ্য করেছেন। তারা এ ব্যাপারে ‘উমার (রাঃ)-এর ঐ আসারের মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করেছেন ‘আয়নী যা বিনা সানাদে উল্লেখ করেছেন।
ইবনু হাজার বলেন, ‘আত্বা এবং অন্যান্যগণ যা বলেছেন হাদীসে তার কোন দলীল নেই যে, ইমামের অনুকরণ বিশুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে ইমামের অবস্থান পরিবর্তন ‘আমলকে অবলোকন করা, এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা হচ্ছে যদি ইমামের ইকতেদা বিশুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে মুক্তাদী কর্তৃক তাঁর ‘আমল অবলোকন করাকে যথেষ্ট মনে করা হয় তাহলে যে ব্যাপারে নির্দেশ করা হয়েছে ও জামা‘আতবদ্ধ হওয়ার দিকে আহবান করা হয়েছে সে চেষ্টা বাতিল হয়ে যাবে। প্রত্যেক ব্যক্তি মসজিদে ইমাম রেখে নিজ ঘর ও বাজার থেকে ইমামের সালাতের অনুকরণ করবে তা কিতাব সুন্নাহর বিপরীত।
সুতরাং বিভিন্ন হাদীসে যা ব্যাখ্যা করা হল তার আলোকে ইমাম ও মুক্তাদীর স্থান একই হওয়া শর্ত। কেননা পারিভাষিকভাবে ইমামের ইকতেদা থেকে উদ্দেশ্য সকলের একই স্থানে একত্রিত হওয়া। যেমনিভাবে বিগত যুগগুলোতে জামা‘আতের উপর প্রতিশ্রুত ছিল এবং অনুকরণ সংরক্ষণার্থে এর উপরই ‘ইবাদাতের নির্ভরতা ছিল। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় মতটি গ্রহণ করলে হুজরাহ্ দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ হুজরাহ্ যেমন মতামত পেশকারীগণ বলেছেন তা এমন স্থান যা ইতিকাফের উদ্দেশে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাটাই কর্তৃক মসজিদে গ্রহণ করেছিলেন এ মতটিকে সহীহ হাদীস সমর্থন করেছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাটাই কর্তৃক হুজরাহ্ গ্রহণ করে সেখানে কয়েক রাত্রি সালাত আদায় করলেন।