১১১৩

পরিচ্ছেদঃ ২৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান

১১১৩-[৮] সাহল ইবনু সা’দ আস্ সা’ইদী (রাঃ)হতে বর্ণিত। একদিন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বার কিসের তৈরি ছিল? তিনি বললেন, জঙ্গলের ঝাউ কাঠের তৈরি ছিল। সেটাকে অমুক মহিলার স্বাধীন করা গোলাম অমুকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যে তৈরি করেছিলেন। সেটা তৈরি হয়ে গেলে, মসজিদে রাখা হলো। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দাঁড়ালেন। ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হয়ে সালাতের জন্য তাকবীর তাহরীমা বাঁধলেন। সকলে তার পেছনে দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বারের উপর হতেই ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করলেন। রুকূ’ করলেন। অন্যান্য লোকও তাঁর পেছনে রুকূ’ করলেন। অতঃপর তিনি রুকূ’ হতে মাথা উত্তোলন করলেন। এরপরে মিম্বার থেকে পা নামিয়ে জমিনে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। এরপর পুনরায় তিনি মিম্বারে উঠলেন। কুরআন পড়লেন। রুকূ’ করলেন রুকূ’ থেকে মাথা উত্তোলন করলেন, তারপর পেছনে সরে আসলেন এমনকি জমিনে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। [এ ভাষা বুখারী (রহঃ)-এর একক; আবার বুখারী মুসলিমের মিলিত বিবরণটা এরূপ। এ হাদীসের বর্ণনাকারী হাদীসের শেষে এ উক্তি পেশ করলেন। যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হতে অবসর হলেন, তখন বললেন, ’’আমি এজন্যে এ ’আমল করেছি, তোমরা যেন আমার অনুকরণ করো। আমার সালাতের পরিস্থিতি, এর বিধানাবলী জানতে পার।][1]

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهُ سُئِلَ: مِنْ أَيِّ شَيْءٍ الْمِنْبَرُ؟ فَقَالَ: هُوَ مِنْ أَثْلِ الْغَابَةِ عَمِلَهُ فُلَانٌ مَوْلَى فُلَانَةَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ عُمِلَ وَوُضِعَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ وَكَبَّرَ وَقَامَ النَّاسُ خَلْفَهُ فَقَرَأَ وَرَكَعَ وَرَكَعَ النَّاسُ خَلْفَهُ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرَى فَسَجَدَ عَلَى الْأَرْضِ ثُمَّ عَادَ إِلَى الْمِنْبَرِ ثُمَّ قَرَأَ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرِي حَتَّى سجد بِالْأَرْضِ. هَذَا لفظ البُخَارِيّ وَفِي الْمُتَّفَقِ عَلَيْهِ نَحْوُهُ وَقَالَ فِي آخِرِهِ: فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا صَنَعْتُ هَذَا لِتَأْتَمُّوا بِي وَلِتَعْلَمُوا صَلَاتي»

وعن سهل بن سعد الساعدي انه سىل: من اي شيء المنبر؟ فقال: هو من اثل الغابة عمله فلان مولى فلانة لرسول الله صلى الله عليه وسلم وقام عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم حين عمل ووضع فاستقبل القبلة وكبر وقام الناس خلفه فقرا وركع وركع الناس خلفه ثم رفع راسه ثم رجع القهقرى فسجد على الارض ثم عاد الى المنبر ثم قرا ثم ركع ثم رفع راسه ثم رجع القهقري حتى سجد بالارض. هذا لفظ البخاري وفي المتفق عليه نحوه وقال في اخره: فلما فرغ اقبل على الناس فقال: «ايها الناس انما صنعت هذا لتاتموا بي ولتعلموا صلاتي»

ব্যাখ্যা: উল্লেখিত হাদীস দ্বারা ইমাম বুখারী মিম্বার ও কাঠের উপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা জায়িয এ ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করেছেন। হাফিয বলেন, তাতে ইমাম ও মুক্তাদী উঁচু নীচু স্থানে ভিন্ন হয়ে দাঁড়ানো জায়িয হওয়ার ব্যাপারে দলীল রয়েছে। এ ব্যাপারে ইমাম বুখারী তাঁর শায়খ ‘আলী ইবনু মাদানী-এর সূত্রে আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) হতে ঘটনাতে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। ইবনু দাক্বীক্ব আল ‘ঈদ এর এ ব্যাপারে একটি আলোচনা রয়েছে। তাতে সালাতে অল্প কাজ করা জায়িয হওয়ার ব্যাপারে দলীল রয়েছে।

তবে তাতে ঐ ব্যক্তিদের ওপর সমস্যা রয়েছে যারা বেশি কাজকে তিন পদক্ষেপ দ্বারা সীমাবদ্ধ করেছেন; কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বার ছিল তিন স্তর বিশিষ্ট। আর রসূলের সালাত ছিল উঁচু স্তরের উপর। মোট কথা হাদীসের শেষে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি দ্বারা বুঝা যায় মিম্বারের উপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত আদায় করা থেকে হিকমাত হচ্ছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিনের উপর সালাত আদায় করলে সালাত যাদের না দেখার আশংকা রয়েছে তারাও যেন মিম্বারের উপর থেকে দেখতে পায়।

আরও বুঝা যায়, ইমাম মুক্তাদী অপেক্ষা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সালাতের শিক্ষা দেয়ার জন্য সালাত আদায় করা ইমামের জন্য জায়িয।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)