পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৫৯-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হওয়াটা বুঝতাম তাকবীর শোনার মাধ্যমে। (মুত্তাফাকুন ’আলায়হি)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كُنْتُ أَعْرِفُ انْقِضَاءَ صَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم بِالتَّكْبِيرِ
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আল্ল-হু আকবার’ ধ্বনি শ্রবণ করে তাঁর সালাত শেষ হওয়া এবং তা থেকে অবসর হওয়া বুঝতে পারতাম। বুখারী ও মুসলিম ইুবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে এও বর্ণনা করেছেন যে ‘‘ফরয সালাত শেষ করার পর উচ্চৈঃস্বরে যিকর পাঠ’’ রসূলু্ল্লাহ (রাঃ)-এর যুগে প্রচলিত ছিল। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আরো বলেনঃ যিকর বা তাকবীর শুনে আমি লোকজনের সালাত শেষ হওয়া বুঝতে পারতাম। এ থেকে বুঝা যায় যে, লোকজন সালাত শেষে উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর ও যিকর পাঠ করতেন। অতএব হাদীসটি প্রমাণ করে যে, ফরয সালাতের পরে উচ্চৈঃস্বরে ‘আল্ল-হু আকবার’ বলা এবং অন্যান্য যিকর করা মুসতাহাব। এ হাদীস থেকে এটাও বুঝা যায় যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বয়সে ছোট হওয়ার কারণে তখন নিয়মিত জামা‘আতে উপস্থিত হতেন না তাই তিনি লোকজনের তাকবীর ধ্বনি ও তাদের যিকিরের (জিকিরের) আওয়াজ শুনে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সমাপ্তির বিষয়ে অবহিত হতেন।
ইমাম নাবাবী বলেনঃ এ হাদীসটি ঐসব সালাফীদের দলীল যারা বলেন যে, ফরয সালাতের পরে উচুঁস্বরে ‘আল্ল-হু আকবার’ বলা এবং যিকর আযকার পাঠ করা মুস্তাহাব। আর পরবর্তী যুগের যারা এটাকে মুস্তাহাব বলেন তাদের অন্যতম হলেন ইবনু হাযম। ‘আল্লামা মুবারকপূরী বলেনঃ যারা ফরয সালাতের পর উচুঁস্বরে তাকবীর বলা ও যিকর-আযকার পাঠ করা মুসতাহাব মনে করেন তাদের অভিমত আমার দৃষ্টিতে অধিক গ্রহণযোগ্য যদিও চার ইমাম ও তাদের অনুসারীগণ এতে একমত পোষণ করেন না। কেননা সঠিক তা-ই যার ব্যাপারে দলীল প্রমাণ পাওয়া যায়। কোন ব্যক্তির অভিমত ও দাবী দলীল ব্যতীত সঠিক হতে পারে না। তবে হ্যাঁ এ উঁচুস্বরের ক্ষেত্রে বেশী বাড়াবাড়ি করা যাবে না এবং সীমাতিরিক্ত উঁচু আওয়াজ করা যাবে না কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমরা তোমাদের প্রতি সদয় হও।’’
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬০-[২] উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের সালাম ফিরাবার পর শুধু এ দু’আটি শেষ করার পরিমাণ সময় অপেক্ষা করতেন, ’’আল্ল-হুম্মা আন্তাস সালা-ম, ওয়া মিনকাস্ সালা-ম, তাবা-রকতা ইয়া- যালজালা-লি ওয়াল ইকর-ম’’ (অর্থা- হে আল্লাহ! তুমিই শান্তির আঁধার। তোমার পক্ষ থেকেই শান্তি। তুমি বারাকাতময় হে মহামহিম ও মহা সম্মানিত)। (মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ لَمْ يَقْعُدْ إِلَّا مِقْدَارَ مَا يَقُولُ: «اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجلَال وَالْإِكْرَام» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (لَمْ يَقْعُدْ) ‘‘তিনি বসতেন না’’ অর্থাৎ তিনি উল্লেখিত দু‘আ পাঠের অধিক সময় ক্বিবলামুখী হয়ে বসে থাকতেন না। তিনি উক্ত দু‘আ পাঠ শেষ করে ডানদিকে অথবা বামদিকে অথবা মুক্তাদীগণের দিকে ফিরে বসতেন। সিন্দী বলেনঃ হাদীসের প্রকাশমান অর্থ হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের অবস্থায় উক্ত দু‘আ পাঠের অধিক সময় বসে থাকতেন না। দু‘আ পাঠ শেষে তিনি ক্বিবলার দিক হতে ফিরে বসতেন। কেননা হাদীসে বর্ণিত আছে যে, তিনি ফাজরের (ফজরের) সালাতের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে থাকতেন। অতএব এ হাদীস দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে, সালাত আদায়কারী ব্যক্তি সালামের পর হাদীসে বর্ণিত দু‘আসমূহ পাঠ না করে আগে সুন্নাত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে অতঃপর দু‘আ পড়বে যেমনটি কিছু ‘আলিম বলে থাকেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬১-[৩] সাওবান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের সালাম ফিরানোর পর তিনবার ’’আস্তাগফিরুল্ল-হ’’ বলতেন, তারপর এ দু’আ পড়তেনঃ ’’আল্ল-হুম্মা আন্তাস সালা-ম, ওয়া মিনকাস্ সালা-ম, তাবা-রকতা ইয়া- যালজালা-লি ওয়াল ইকর-ম’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমিই শান্তির আঁধার। তোমার পক্ষ থেকেই শান্তি। তুমি বারাকাতময় হে মহামহিম ও মহা সম্মানিত)। (মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنْ ثَوْبَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا انْصَرَفَ مِنْ صَلَاتِهِ اسْتَغْفَرَ ثَلَاثًا وَقَالَ: «اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجلَال وَالْإِكْرَام» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (إِذَا انْصَرَفَ) উক্ত انْصَرَفَ দ্বারা উদ্দেশ্য সালাম ফিরানো। অর্থাৎ সালাম ফিরানোর পর اسْتَغْفَرَ পাঠ করবে। ওয়ালীদ (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম আওযা‘ঈ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে ইস্তিগ্ফার পাঠ করবে? তিনি বললেনঃ ‘‘আস্তাগফিরুল্ল-হ’’ বলবে। সালাতের পর ইস্তিগফার পাঠ করা এ কথার ইঙ্গিত বহন করে যে, বান্দা তার প্রভুর ‘ইবাদাতরত অবস্থায় তার মনে যে ওয়াস্ওয়াসার সৃষ্টি হয় এতে সে তার প্রভুর পূর্ণ হক আদায় করতে সমর্থ হয় না, তাই তার জন্য ইস্তিগফারের বিধান রয়েছে যাতে এর দ্বারা সে তার প্রভুর ‘ইবাদাতের ত্রুটি হতে মুক্তি পেতে পারে।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬২-[৪] মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ফরয সালাতের পরে এ দু’আ পড়তেনঃ ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, আল্ল-হুম্মা লা- মা-নি’আ লিমা- আ’ত্বয়তা, ওয়ালা- মু’ত্বিয়া লিমা- মানা’তা, ওয়ালা- ইয়ানফা’উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু’’ (অর্থাৎ আল্লাহ ভিন্ন কোন উপাস্য নেই। তিনি অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই! রাজত্ব একমাত্র তারই এবং সব প্রশংসা একমাত্র তাঁর জন্যে। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করো, কেউ নেই তা ফিরাবার। আর যা তুমি দান করতে বারণ করো, কেউ নেই তা দান করার। ধনবানকে ধন-সম্পদে পারবে না কোন উপকার করতে আপনার আক্রোশ-এর সামনে)। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَانَ يَقُولُ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْك الْجد»
ব্যাখ্যা: (دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ) ‘‘প্রত্যেক ফরয সালাতের পরে’’ অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ফরয সালাতের পরে উক্ত দু‘আ পাঠ করতেন।
শিক্ষণীয় দিকঃ
১) প্রত্যেক ফরয সালাতের পরে উক্ত দু‘আ পাঠ করা মুস্তাহাব। কেননা এতে একত্ববাদের বাক্যসমূহ সন্নিবেশিত হয়েছে।
২) কাউকে কিছু দেয়া বা না দেয়া এর পূর্ণ ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতেই ন্যাস্ত।
৩) অত্র হাদীস হতে এ দু‘আটি মাত্র একবার পাঠ করার বিষয় বর্ণিত হয়েছে। নাসায়ীর বর্ণনায় আছে যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধুমাত্র এ দু‘আটি প্রথমে তিনবার পাঠ করতেন। অতঃপর অন্যান্য দু‘আ পাঠ করতেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৩-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালাতের সালাম ফিরানোর পর উচ্চকণ্ঠে বলতেন,
’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা- না’বুদু ইল্লা- ঈয়্যাহু, লাহুন্ নি’মাতু, ওয়ালাহুল ফাযলু, ওয়ালাহুস্ সানা-উল হাসানু, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দীন, ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন’’
(অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই, তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা মাত্রই তাঁর এবং তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাশীল। কোন অন্যায় ও অনিষ্ট হতে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় নেই এবং কোন সৎ কাজ করারও ক্ষমতা নেই একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই, আমরা একমাত্র তাঁরই ’ইবাদাত করি, যাবতীয় নি’আমাত ও অনুগ্রহ একমাত্র তাঁরই পক্ষ থেকে এবং উত্তম প্রশংসাও তাঁর। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই। আমরা তাঁর দেয়া জীবন বিধান একমাত্র তাঁর জন্য একনিষ্ঠভাবে মান্য করি, যদিও কাফিরদের নিকট তা অপ্রীতিকর।)। (মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَن عبد الله بن الزبير قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ مِنْ صَلَاتِهِ يَقُولُ بِصَوْتِهِ الْأَعْلَى: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّه لَا إِلَه إِلَّا الله لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدّين وَلَو كره الْكَافِرُونَ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (إِذَا سَلَّمَ) ‘‘যখন সালাম ফিরাবে’’ হাদীসের এ অংশ প্রতীয়মান হয় যে, অত্র হাদীসে বর্ণিত দু‘আটি সালাম ফিরানোর পর অন্যান্য দু‘আর পূর্বেই পাঠ করতে হবে। এটি ইতোপূর্বে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) ও সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস বিরোধী নয়। বরং এর মর্মার্থ হলো কখনো সালামের পর এ দু‘আটি পড়বে। আবার কখনো ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) ও সাওবান (রাঃ) বর্ণিত দু‘আ পাঠ করবে সকল দু‘আ এক সাথে পাঠ করা উদ্দেশ্য নয়। এটাও বলা হয়ে থাকে যে, হাদীসগুলোতে বর্ণিত সকল দু‘আ একই সময়ে পাঠ করা যায়। কেননা হতে পারে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ সকল দু‘আই পাঠ করেছেন। বর্ণনাকারীদের মধ্যে যিনি যতটুকু শুনেছেন তিনি তা-ই বর্ণনা করেছেন। তবে শেষোক্ত মতটি হাদীসের প্রকাশ্য অর্থ থেকে অনেক দূরে।
হাদীসটি এটাও প্রমাণ করে যে, এ দু‘আটি সালামের পর একবার পাঠ করবে একাধিকবার নয়। কেননা হাদীসে তা একাধিক পাঠ করার কথা উল্লেখ নেই।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৪-[৬] সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তার সন্তানদেরকে দু’আর এ কালিমাগুলো শিক্ষা দিতেন ও বলতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পর এ কালিমাগুলো দ্বারা আল্লাহর নিকটে আশ্রয় চাইতেনঃ
’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল জুবনি, ওয়া আ’ঊযুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন আরযালিল ’উমুরি, ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিদ্ দুন্ইয়া- ওয়া ’আযা-বিল কবরি’’
(অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি কাপুরুষতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। বখিলী থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। নিষ্কর্মা জীবন থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। দুনিয়ার ফিতনাহ্ (ফিতনা) ও কবরের শাস্তি থেকে তোমার নিকটে আশ্রয় চাই)। (বুখারী)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَن سعد أَن كَانَ يُعَلِّمُ بَنِيهِ هَؤُلَاءِ الْكَلِمَاتِ وَيَقُولُ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَعَوَّذُ بِهِنَّ دُبُرَ الصَّلَاةِ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْن وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَاب الْقَبْر» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: (دُبُرَ الصَّلَاةِ) সালাতের পরে। আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) যখন সাধারণভাবে উল্লেখ করা হয় তখন তা দ্বারা ফরয সালাত উদ্দেশ্য হয়।
(أَرْذَلِ الْعُمُرِ) নিকৃষ্ট জীবন অর্থাৎ মানুষের যখন প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য শক্তি কমে যায় ফলে শিশুর মত অবুঝ ও দুর্বল হয়ে পড়ে - আর তা বৃদ্ধাবস্থা - এবং ফরয ‘ইবাদাতসমূহ আদায়ে অক্ষম। এমনকি স্বয়ং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতেও অক্ষম হয়ে যায় এবং অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে। যার ফলে সে মৃত্যু কামনা করে। এমতাবস্থায় যদি তার নিজের পরিবার না থাকে তাহলে তার বিপদ চরমে পৌঁছে।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৫-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দরিদ্র মুহাজিরগণ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হয়ে আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ধন-সম্পদশালী লোকজন সম্মানে ও স্থায়ী নি’আমাতের ব্যাপারে আমাদের থেকে অনেক অগ্রগামী। তিনি বললেন, এটা কিভাবে? তারা বললেন, আমরা যেমন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করি তারাও আমাদের মতই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে, আমাদের মতো সওম পালন করে। তবে তারা দান-সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করে। আমরা তা করতে পারি না। তারা গোলাম মুক্ত করে, আমরা গোলাম মুক্ত করতে পারি না। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদেরকে কি আমি এমন কিছু শিখাব না যার দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রগামীদের মর্যাদায় পৌঁছতে পারবে এবং তোমাদের পশ্চাদ্গামীদের চেয়ে আগে যেতে পারবে, কেউ তোমাদের চেয়ে বেশী উত্তম হতে পারবে না, তারা ছাড়া যারা তোমাদের মতো ’আমল করবে? গরীব লোকেরা বললেন, বলুন হে আল্লাহর রসূল!
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা প্রতি সালাতের পর ’সুবহা-নাল্ল-হ’, আল্ল-হু আকবার’ আলহামদু লিল্লা-হ’ তেত্রিশবার করে পড়বে। রাবী আবূ সালিহ বলেন, পরে সে গরীব মুহাজিরগণ রসূলের দরবারে ফিরে এসে বললেন, আমাদের ধনী লোকেরা আমাদের ’আমলের কথা শুনে তারাও তদ্রূপ ’আমল করছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা আল্লাহ তা’আলার করুণা, যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। (বুখারী, মুসলিম; আবূ সালিহ-এর কথা শুধু মুসলিমেই বর্ণিত। বুখারীর অন্য বর্ণনায় তেত্রিশবারের স্থানে প্রতি সালাতের পর দশবার করে ’সুবহা-নাল্ল-হ’, ’আলহামদু লিল্লা-হ’ ’আল্ল-হু আকবার’ পাঠ করার কথা পাওয়া যায়।)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: (إِنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ أَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: قَدْ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالدَّرَجَاتِ الْعُلَى وَالنَّعِيمِ الْمُقِيمِ فَقَالَ وَمَا ذَاكَ قَالُوا يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ وَلَا نَتَصَدَّقُ وَيُعْتِقُونَ وَلَا نُعْتِقُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفَلَا أُعَلِّمُكُمْ شَيْئًا تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ وَلَا يَكُونُ أَحَدٌ أَفْضَلَ مِنْكُمْ إِلَّا مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ» قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: «تُسَبِّحُونَ وَتُكَبِّرُونَ وَتَحْمَدُونَ دُبُرَ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ مَرَّةً» . قَالَ أَبُو صَالِحٍ: فَرَجَعَ فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا سَمِعَ إِخْوَانُنَا أَهْلُ الْأَمْوَالِ بِمَا فَعَلْنَا فَفَعَلُوا مِثْلَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ذَلِك فضل الله يؤته من يَشَاء» . وَلَيْسَ قَوْلُ أَبِي صَالِحٍ إِلَى آخِرِهِ إِلَّا عِنْدَ مُسْلِمٍ وَفِي رِوَايَةٍ لِلْبُخَارِيِّ: «تُسَبِّحُونَ فِي دُبُرَ كُلِّ صَلَاةٍ عَشْرًا وَتَحْمَدُونَ عَشْرًا وَتُكَبِّرُونَ عشرا» . بدل ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ
ব্যাখ্যা: (وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ وَلَا نَتَصَدَّقُ وَيُعْتِقُونَ وَلَا نُعْتِقُ) তারা দান করে আমারা দান করতে পারি না, তারা গোলাম আযাদ করে কিন্তু আমারা গোলাম আযাদ করতে পারি না। কেননা এ দু’টি ‘ইবাদাত করতে মালের প্রয়োজন অথচ আমাদের মাল নেই। কাজেই মালী (আর্থিক) ‘ইবাদাতের কারণে তারা আমাদের চেয়ে অধিক মর্যাদার অধিকারী।
(تَسْبِقُونَ بِه مَنْ بَعْدَكُمْ )তোমরা এর দ্বারা তোমাদের পরবর্তীদের অগ্রগামী হবে। অর্থাৎ তোমরা তোমাদের মতো ঐ সকল লোকদের অগ্রগামী হবে যারা এই নির্দিষ্ট যিকর পাঠ করে না। অর্থাৎ তোমরা মর্যাদায় তাদের চেয়ে অগ্রগামী হবে।
(تُكَبِّرُونَ وَتَحْمَدُونَ) অত্র বর্ণনায় তাহমীদের পূর্বে তাকবীরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বর্ণিত বলা হয়েছে, تكبر، وتحمد، وتسبح আর ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর বর্ণনাতে এরূপ আছে। তবে অধিকাংশ হাদীসে রয়েছে, تسبحون، وتحمدون، وتكبرون অর্থাৎ আগে তাসবীহ তারপর তাহমীদ সবশেষে তাকবীর। বর্ণনায় এ মতভেদ থেকে বুঝা যায় যে, এ যিকর পাঠের জন্য নির্দিষ্ট কোন ধারাবাহিকতা নেই। তবে অধিকাংশ হাদীসে যে ধারাবাহিকতা বর্ণিত হয়েছে তা অনুসরণ করা উত্তম।
বুখারীর বর্ণনাতে রয়েছে, (خلف كل صلاة) প্রত্যেক সালাতের পরে। এ থেকে জানা যায় যে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হলেই উক্ত যিকর পাঠ করতে হবে কোন প্রকার বিলম্ব না করে। যদি সালাত শেষে এ যিকর পাঠ করতে বিলম্ব করে আর তা যদি এত অল্প হয় যে তা এ যিকর পাঠ হতে বিমুখ এরূপ বুঝায় না, অথবা ভুলে যাওয়ার কারণে অথবা হাদীসে বর্ণিত অন্য কোন যিকিরে ব্যাস্ত থাকার কারণে বিলম্ব হয় তাতে কোন ক্ষতি নেই। প্রত্যেক সালাতের পরে এ বাক্য দ্বারা ফরয নফল সকল সালাতই বুঝায়। তবে কা‘ব ইবনু ‘উজরাহ্ বর্ণিত হাদীসে তা ফরয সালাতের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
বুখারীর এক বর্ণনায় উল্লিখিত যিকর তেত্রিশবার করে এর স্থলে দশবার করে পাঠ করার কথা উল্লেখ আছে। ইমাম বাগাভী শারহুস্ সুন্নাহ্ নামক গ্রন্থে এর সামঞ্জস্য করেছেন এভাবে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথাগুলো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যায় বর্ণিত হয়েছে। প্রথমে তিনি দশবারের কথা বলেছেন, এরপর এগারবার, পরবর্তীতে তেত্রিশবারের কথা বলেছেন। অথবা এ বিষয়ে ইখতিয়ার রয়েছে যে কোন সংখ্যা গ্রহণ করার অথবা অবস্থাভদে তা কমবেশী পাঠ করার কথা বলা হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৬-[৮] কা’ব ইবনু ’উজরাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতি ফরয সালাতের পর পাঠ করার মতো কিছু কালিমাহ্ আছে যেগুলো পাঠকারী বা ’আমলকারী বঞ্চিত হয় না। সে কালিমাগুলো হলোঃ ’সুবহা-নাল্ল-হ’ তেত্রিশবার, ’আলহামদু লিল্লাহ’ তেত্রিশবার ও ’আল্ল-হু আকবার’ চৌত্রিশবার করে পড়া। (মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مُعَقِّبَاتٌ لَا يَخِيبُ قَائِلُهُنَّ أَوْ فَاعِلُهُنَّ دُبُرَ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوبَة: ثَلَاث وَثَلَاثُونَ تَسْبِيحَة ثَلَاث وَثَلَاثُونَ تَحْمِيدَةً وَأَرْبَعٌ وَثَلَاثُونَ تَكْبِيرَةً . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যা: (مُعَقِّبَاتٌ) হাদীসে বর্ণিত ওয়াযীফাকে মু‘আক্বক্বিবা-ত নামকরণ করার কারণ এই যে, এগুলো একটির পর আরেকটি পাঠ করা হয়। অথবা এগুলো সালাতের পর পাঠ করা হয় বলে তাকে মু‘আক্বক্বিবা-ত বলা হয়। আর পূর্বে কিছু উল্লেখের পর যা উল্লেখ করা হয় তাকেই মু‘আক্বক্বিব বলা হয়।
এর পাঠকারী বঞ্চিত হয় না। অর্থাৎ এগুলো যেভাবেই পাঠ করা হোক যদিও পাঠকারী গাফিল হয় তবুও তিনি সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন না।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৭-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে লোক প্রত্যেক সালাতের শেষে ’সুবহা-নাল্ল-হ’ তেত্রিশবার, ’আলহামদু লিল্লা-হ’ তেত্রিশবার এবং ’আল্ল-হু আকবার’ তেত্রিশবার পড়বে, যার মোট সংখ্যা হবে নিরানব্বই বার, একশত পূর্ণ করার জন্যে একবার ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর’’ (অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন উপাস্য নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমগ্র রাজত্ব একমাত্র তাঁরই ও সকল প্রকারের প্রশংসা তাঁরই জন্য এবং তিনি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান।) পাঠ করবে, তাহলে তার সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে, যদি তা সাগরের ফেনারাশির সমানও হয়। (মুসলিম)[1]
بَابُ الذِّكْرِ بَعْدَ الصَّلَاةِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ سَبَّحَ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَحَمَدَ اللَّهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَكَبَّرَ اللَّهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ فَتِلْكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ وَقَالَ تَمَامَ الْمِائَةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (تَمَامَ الْمِائَةِ) অর্থাৎ যা দ্বারা একশত সংখ্যা পূর্ণ হয়। অত্র হাদীসে বর্ণিত দু‘আ لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه..... যা একশত সংখ্যা পূর্ণকারী বলা হয়েছে তা ঐ সমস্ত বর্ণনার বিপরীত যাতে বলা হয়েছে তাকবীর ৩৪ বার পাঠ করবে যাতে একশত সংখ্যা পূর্ণ হয়। ইমাম নাবাবী বলেনঃ এ দুই বর্ণনার মাঝে সমাধান এই যে, তাকবীর ৩৪ বার বলার পরে لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه..... দু‘আটিও পাঠ করবে। অন্যরা বলেন বরং এখানে সমাধান এই যে, কোন সময় তাকবীর ৩৪ বার পাঠ করবে। আবার কোন সময় لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه..... পাঠ করবে।
(غُفِرَتْ خَطَايَاهُ) তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। এতে সগীরাহ্ গুনাহ উদ্দেশ্য। আলী ক্বারী বলেনঃ কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ ক্ষমা করার সম্ভাবনাও রয়েছে।