পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৮-[১০] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! কোন্ (সময়ের) দু’আ (আল্লাহর কাছে) বেশী শ্রুতি হয়। তিনি বললেন, শেষ রাতের মধ্যের (দু’আ) এবং ফরয সালাতের শেষের দু’আ। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الدُّعَاءِ أَسْمَعُ؟ قَالَ: «جَوْفُ اللَّيْلِ الآخر ودبر الصَّلَوَات المكتوبات» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: (جَوْفُ اللَّيْلِ الْاخِرِ) হলো রাতের শেষ অর্ধাংশের মধ্যভাগ। হাদীসে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, রাতের শেষ অর্ধাংশের মধ্যভাগ এবং ফরয সালাতের পর দু‘আ কবূলের সময়।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৬৯-[১১] ’উক্ববাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রতি সালাতের শেষে ’’কুল আ’ঊযু বিরাব্বিন্ না-স’’ ও ’’কুল আ’ঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব’’ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন’’। (আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, বায়হাক্বী- দা’ওয়াতুল কাবীর)[1]
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَقْرَأَ بِالْمُعَوِّذَاتِ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ. رَوَاهُ احْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ
ব্যাখ্যা: (الْمُعَوِّذَاتِ) দ্বারা সেই সমস্ত আয়াত উদ্দেশ্য যা শব্দগত বা অর্থগত দিক থেকে আশ্রয় প্রার্থনাকে শামিল করে। ফলে সূরাহ্ ইখলাস এবং সূরাহ্ কাফিরূন এই মু‘আব্বিযাতের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এতে আশ্রয় প্রার্থনার অর্থ বিদ্যমান। এও বলা হয়ে থাকে যে, (الْمُعَوِّذَاتِ) বলতে শুধু সেই শব্দ উদ্দেশ্য যে শব্দ দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭০-[১২] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যারা ফাজ্রের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকে তাদের সঙ্গে আমার বসে থাকা, ইসমা’ঈল (আঃ)-এর সন্তান থেকে চারজনকে দাসত্বমুক্ত করার চেয়ে আমার কাছে অধিক প্রিয়। আর যারা ’আসরের সালাতের শেষে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকে তাদের সঙ্গে আমার বসে থাকা, চারজনকে আযাদ করার চেয়ে আমার কাছে অধিক পছন্দনীয়। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ مِنْ صَلَاةِ الْغَدَاةِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ وَلَأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ مِنْ صَلَاةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَة» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (لَأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللّهَ) এ থেকে বুঝা যায় যে, মনোযোগ সহকারে যিকর শ্রবণ করা যিকর করার স্থলাভিষিক্ত। যিকর শ্রবণকারীর মর্যাদাই যদি এরূপ হয় তাহলে যিকর করার মর্যাদা কি হতে পারে? আর যারা যিকরকারীদের সাথে বসে তারা কখনো ব্যর্থ হয় না। যিকর শব্দটি ‘আম সর্বব্যাপী যা দু‘আ, কুরআন পাঠ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ সবই এর অন্তর্ভুক্ত। আর যার মধ্যে এর অর্থ পাওয়া যায় হুকুমের দিক থেকে তাও এর সাথে সংযুক্ত; যেমনঃ শার‘ঈ ‘ইলমের পাঠদান। হাদীসটি এ কথারও স্পষ্ট দলীল যে, আরবদেরকেও দাস বানানো বৈধ। যদি তা বৈধ না হতো তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ কথা বলতেন না যে, এ কাজ তাদের দাসত্ব হতে মুক্ত করার চাইতে অধিক পছন্দনীয়।
হাদীসের শিক্ষণীয় দিক হল, আল্লাহর যিকর করা দাস মুক্ত করা এবং সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদান করার চাইতে অধিক মর্যাদাপূর্ণ।
পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭১-[১৩] উক্ত রাবী [আনাস (রাঃ)] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি ফাজ্রের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) জামা’আতে আদায় করল, অতঃপর বসে বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর যিকর করতে থাকল, তারপর দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করল, সে একটি পূর্ণ হাজ্জ (হজ/হজ্জ) ও একটি সম্পূর্ণ ’উমরার সমান সাওয়াবপ্রাপ্ত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাটি তিনবার বলেছেন, সম্পূর্ণ হাজ্জ ও সম্পূর্ণ ’উমরার সাওয়াবপ্রাপ্ত হবে। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى الْفَجْرَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ» . قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
ব্যাখ্যা: (ثُمَّ صَلّى رَكْعَتَيْنِ) ত্বীবী (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ সূর্য এক বর্শা পরিমাণ উপরে উঠার পর দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে যাতে মাকরূহ ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। আর এ সালাতকে সালাতুল ইশরাক বলা হয়। আর এটি চাশ্তের (চাশতের) সালাতের প্রারম্ভিকা।