পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪০-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رد»

عن عاىشة قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من احدث في امرنا هذا ما ليس منه فهو رد»

ব্যাখ্যা: যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে নিজের মনগড়া কিছু সংযোজন করবে যার স্বপক্ষে সুস্পষ্ট বা অস্পষ্ট কোন প্রকার দলীল কুরআন ও সুন্নাহ'য় থাকবে না তা প্রত্যাখ্যাত। অর্থাৎ- ঐ বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা মানুষের জন্য একান্তই আবশ্যক। ঐ বিষয়ে তাকলীদ করা এবং তার অনুসরণ করা কোনক্রমেই জায়িয হবে না। এ হাদীসটি ইসলামের মৌলিক নীতিমালার মূল এবং সকল প্রকার বিদ্‘আতকে প্রত্যাখ্যান করার সুস্পষ্ট দলীল। ইমাম নাবাবী বলেছেনঃ অশ্লীল ও অপছন্দকর বিষয়কে বর্জন করার ব্যাপারে এ হাদীসটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করার জন্য হাদীসটির সংরক্ষণ একান্তই প্রয়োজন।

সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, (مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدُّ) অর্থাৎ- যে ব্যক্তি এমন কাজ করলো যা দীনের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং যাতে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুমোদন নেই, তা দীন বহির্ভূত এবং পরিত্যাজ্য।

হাফিয ইবনু হাজার বলেছেনঃ নিষেধকৃত সকল বিষয় বাতিল বলে গণ্য হওয়া এবং বিষয়টির ফলাফল বাস্তবায়ন না হওয়ার উপর হাদীসটি প্রমাণ করে। কেননা নিষেধকৃত বস্ত্রসমূহ দীনের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই তা প্রত্যাখ্যান একান্তই আবশ্যক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪১-[২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতঃপর নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার কিতাব এবং সর্বোত্তম পথ হচ্ছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো দীনে (মনগড়াভাবে) নতুন জিনিস সৃষ্টি করা এবং (এ রকম) সব নতুন সৃষ্টিই গুমরাহী (পথভ্রষ্ট)। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ خَيْرَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَخَيْرَ الْهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الْأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

وعن جابر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اما بعد فان خير الحديث كتاب الله وخير الهدي هدي محمد وشر الامور محدثاتها وكل بدعة ضلالة» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে নব-আবিষ্কৃত বা সংযোজন তথা বিদ্‘আত সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে এমন নতুন সংযোজনের কথা বলা হয়েছে, শারী‘আতে যার কোন ভিত্তি নেই। তবে শারী‘আতে রয়েছে তা বিদ্‘আত নয়। যেমন কুরআনের তাফসীর করা এবং হাদীস লিপিবদ্ধকরণ। ইমাম নাসায়ীর বর্ণনায় রয়েছে, সবচেয়ে সত্য বাণী হলোঃ আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম পথ হলো, মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ। বস্তুসমূহের মধ্যে সবচেয়ে মন্দ হলো নব-আবিষ্কৃত এবং নব-আবিষ্কৃতই হলো বিদ্‘আত, আর সকল বিদ্‘আতই ভ্রষ্ট এবং সকল ভ্রষ্টতাই হলো জাহান্নামী।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪২-[৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার কাছে সবচেয়ে বেশী ঘৃণিত। (১) যে ব্যক্তি মক্কার হারাম এলাকার মধ্যে নিষিদ্ধ ও গুনাহের কাজ করে। (২) যে ব্যক্তি ইসলামে থেকে (ইসলাম-পূর্ব) জাহিলী যুগের নিয়ম-নীতি অনুকরণ করে। (৩) যে ব্যক্তি বিনা অপরাধে শুধু অন্যায়ভাবে (রক্তপাতের উদ্দেশে) কোন লোকের রক্তপাত ঘটায়। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبْغَضُ النَّاسِ إِلَى الله ثَلَاثَة ملحد فِي الْحرم وميتغ فِي الْإِسْلَام سنة الْجَاهِلِيَّة ومطلب دم امرىء بِغَيْر حق ليهريق دَمه» رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ابغض الناس الى الله ثلاثة ملحد في الحرم وميتغ في الاسلام سنة الجاهلية ومطلب دم امرىء بغير حق ليهريق دمه» رواه البخاري

ব্যাখ্যা: হাদীসে বলা হয়েছে, তিন প্রকারের ব্যক্তি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট-

১. ঐ ব্যক্তি, যে (মক্কায়) হারামের ভিতরে আল্লাহদ্রোহিতা তথা অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজ করবে। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেনঃ হাদীসটি দ্বারা বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় যে, হারামের ভিতরে ছোট (সগীরাহ্) গুনাহ্ করা হারামের বাইরে বড় (কাবীরাহ্ (কবিরা)) গুনাহ করার চেয়ে জঘন্য অপরাধ।

২. ঐ ব্যক্তি, যে জাহিলী যুগের বিভিন্ন প্রথা ইসলামে চালু করে যেগুলোকে ইসলাম বর্জন করার নির্দেশ করেছে।

৩. ঐ ব্যক্তি, যে বিনা অপরাধে শুধুমাত্র রক্তপাতের উদ্দেশেই (বিচারকের নিকট) কোন মুসলিমের রক্তের দাবি করে।

হাদীসে এ তিন প্রকারের ব্যক্তিকে খাস করা হয়েছে এজন্য যে, তাদের কৃতকর্মের দ্বারা গুনাহের সঙ্গে আল্লাহদ্রোহিতারা বৃদ্ধি পায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৩-[৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’আমার সকল উম্মাত জান্নাতে যাবে, যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হলো, কে অস্বীকার করবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যারা আমার আনুগত্য স্বীকার করেছে তারা জান্নাতে যাবে। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য হলো সে-ই (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করলো (অতএব সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে)। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى. قِيلَ: وَمَنْ أَبَى؟ قَالَ: مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فقد أَبى رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: كل امتي يدخلون الجنة الا من ابى. قيل: ومن ابى؟ قال: من اطاعني دخل الجنة ومن عصاني فقد ابى رواه البخاري

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ আমার উম্মাতের সকলেই জান্নাতে যাবে। এখানে উম্মাত দ্বারা ঐ সকল উম্মাত হতে পারে যাদের নিকট রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দা‘ওয়াত পৌঁছেছে অথবা যারা তাঁর দা‘ওয়াত কবূল করেছে। অসম্মতি প্রকাশকারীর দ্বারা উদ্দেশ্য হবে নাফরমান ব্যক্তি বা পাপী।

অতএব, হাদীসের মূল বক্তব্য হচ্ছে, কিতাব ও সুন্নাহকে ধারণ করার মাধ্যমে যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনুগত্য করবে সেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি প্রবৃত্তির অনুসরণ করে সিরাতে মুস্তাক্বীম তথা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে সেই জাহান্নামে যাবে। ইমাম বাগাভী (রহঃ) এ হাদীসটিকে ‘‘কিতাব ও সুন্নাতকে আঁকড়িয়ে ধারণ করা’’ পূর্বক অধ্যায়ে নিয়ে আসা এবং তাতে আনুগত্য শব্দটিকে উল্লেখ করা দ্বারা উপরোক্ত ব্যাখ্যার গুরুত্ব বহন করে। কেননা, আনুগত্যশীল ব্যক্তিই কিতাব ও সুন্নাহকে আঁকড়িয়ে ধারণ করে এবং প্রবৃত্তির চাহিদা ও বিদ্‘আতী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৪-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একদল মালাক (ফেরেশতা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলেন। এ সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শুয়েছিলেন। মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) পরস্পরে বলাবলি করলেন, তোমাদের সাথী (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে একটি উদাহরণ রয়েছে। তাঁর সামনেই উদাহরণটি বলো। তখন একজন বললেন, তিনি তো ঘুমিয়ে আছেন। আবার একজন বললেন, তাঁর চোখ ঘুমালেও তাঁর মন সর্বদা জাগ্রত। তাঁর উদাহরণ হলো সে ব্যক্তির ন্যায়, যিনি একটি ঘর বানিয়েছেন। অতঃপর মানুষকে আহার করানোর জন্য দস্তরখান বিছালেন, তারপর মানুষকে ডাকবার জন্য আহবায়ক পাঠালেন। যারা আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিল তারা ঘরে প্রবেশ করলো এবং খাবারও খেল। আর যারা আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিল না, তারা ঘরে প্রবেশ করতে পারলো না আর খাবারও পেল না।

এসব কথা শুনে তারা (মালায়িকাহ্) পরস্পর বললেন, এ কথাটার তাৎপর্য বর্ণনা কর যাতে তিনি কথাটা বুঝতে পারেন। এবারও কেউ বললেন, তিনি তো ঘুমিয়ে। আর কেউ বললেন, তাঁর চোখ ঘুমিয়ে থাকলেও অন্তর জেগে আছে। তারা বললেন, ’ঘরটি’ হলো জান্নাত আর আহবায়ক হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ঘর ও মেহমানদারী প্রস্তুতকারী হলেন আল্লাহ তা’আলা)। সুতরাং যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবাধ্য হলো সে আল্লাহর অবাধ্য হলো। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানুষের মধ্যে (মুসলিম ও কাফিরের) পার্থক্য নির্ধারণকারী মানদন্ড। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

عَن جَابر بن عبد الله يَقُول جَاءَتْ مَلَائِكَةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ نَائِم فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَة وَالْقلب يقظان فَقَالُوا إِنَّ لِصَاحِبِكُمْ هَذَا مَثَلًا فَاضْرِبُوا لَهُ مثلا فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَةٌ وَالْقَلْبَ يَقْظَانُ فَقَالُوا مَثَلُهُ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا وَجَعَلَ فِيهَا مَأْدُبَةً وَبَعَثَ دَاعِيًا فَمَنْ أَجَابَ الدَّاعِيَ دَخَلَ الدَّارَ وَأَكَلَ مِنَ الْمَأْدُبَةِ وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّاعِيَ لَمْ يَدْخُلِ الدَّارَ وَلَمْ يَأْكُلْ مِنَ الْمَأْدُبَةِ فَقَالُوا أَوِّلُوهَا لَهُ يفقهها فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَة وَالْقلب يقظان فَقَالُوا فالدار الْجنَّة والداعي مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَمن أطَاع مُحَمَّدًا صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فقد أطَاع الله وَمن عصى مُحَمَّدًا صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فقد عصى الله وَمُحَمّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فرق بَين النَّاس. رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن جابر بن عبد الله يقول جاءت ملاىكة الى النبي صلى الله عليه وسلم وهو ناىم فقال بعضهم انه ناىم وقال بعضهم ان العين ناىمة والقلب يقظان فقالوا ان لصاحبكم هذا مثلا فاضربوا له مثلا فقال بعضهم انه ناىم وقال بعضهم ان العين ناىمة والقلب يقظان فقالوا مثله كمثل رجل بنى دارا وجعل فيها مادبة وبعث داعيا فمن اجاب الداعي دخل الدار واكل من المادبة ومن لم يجب الداعي لم يدخل الدار ولم ياكل من المادبة فقالوا اولوها له يفقهها فقال بعضهم انه ناىم وقال بعضهم ان العين ناىمة والقلب يقظان فقالوا فالدار الجنة والداعي محمد صلى الله عليه وسلم فمن اطاع محمدا صلى الله عليه وسلم فقد اطاع الله ومن عصى محمدا صلى الله عليه وسلم فقد عصى الله ومحمد صلى الله عليه وسلم فرق بين الناس. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চক্ষু নিদ্রিত হলেও তাঁর অন্তর জাগ্রত। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘুমের অবস্থায় চক্ষু বন্ধ থাকলেও তাঁর অন্তর এবং অনুভূতি শক্তি জাগ্রত থাকে।

হাদীসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য যে দৃষ্টান্ত পেশ করা হয়েছে, এর তাৎপর্য হিসেবে বলা হয়েছেঃ ঘরটি হলো জান্নাত। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে যে, ঘরের মালিক হলেন আল্লাহ, ইসলাম হলো দরজা, ঘরটি হলো জান্নাত এবং আপনি হে মুহাম্মাদ! আহবানকারীর দূত।

ইবনু মাস্‘ঊদ কর্তৃক মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে যে, ঘরটির মালিক হলেন আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীন, ঘরটি হলো ইসলাম। খাবার বা যিয়াফত হলো- জান্নাত এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন আহবানকারী। সুতরাং যে তাঁর অনুসরণ করবে সে জান্নাতী হবে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন আহবানকারী, সুতরাং যে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আনুগত্য করলো, সে যেন আল্লাহরই আনুগত্য করলো। কেননা তিনি হচ্ছেন খাবার ব্যবস্থাপকের পক্ষ থেকে দূত। অতএব, যে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর দা‘ওয়াত গ্রহণ করলো সে যেন খাবার খেলো, অর্থাৎ- জান্নাতে প্রবেশ করলো।

তিরমিযীর অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হে মুহাম্মাদ! আপনি আল্লাহর রসূল! যে আপনার ডাকে সাড়া দিল সে ইসলামে প্রবেশ করলো এবং যে ইসলামে প্রবেশ করলো, সে জান্নাতে প্রবেশ করলো আর যে জান্নাতে প্রবেশ করলো সে জান্নাতী খাবার খেলো। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন মু‘মিন ও কাফির এবং সৎ ও অসৎ ব্যক্তির মাঝে পার্থক্যকারী।

হাদীসে মালায়িকাহ্ কর্তৃক দৃষ্টান্তের মাঝে রয়েছে জাগ্রত শ্রোতামণ্ডলীর জন্য গাফলতি ও অজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসার আহবান। আরো রয়েছে অনুপ্রেরণা কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়িয়ে ধরা এবং বিদ্‘আত ও ভ্রষ্টতা থেকে বিমুখতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৫-[৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা তিন ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ’ইবাদাতের অবস্থা জানার জন্য তাঁর স্ত্রীগণের নিকট এলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ’ইবাদাতের খবর শুনে তারা যেন তাঁর ইবাদাতকে কম মনে করলেন এবং পরস্পর আলাপ করলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা কোথায়, আল্লাহ তা’আলা তাঁর আগের-পরের (গোটা জীবনের) সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। অতঃপর তাদের একজন বললেন, আমি কিন্তু সারা রাত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবো। দ্বিতীয়জন বললেন, আমি দিনে সিয়াম পালন করবো, আর কখনো তা ত্যাগ করবো না। তৃতীয়জন বললেন, আমি নারী থেকে দূরে থাকব, কখনো বিয়ে করবো না। তাদের এ পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পড়লেন এবং বললেন, তোমরা কী এ ধরনের কথাবার্তা বলছিলে? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি, তোমাদের চেয়ে বেশি পরহেয করি। কিন্তু এরপরও আমি কোন দিন সিয়াম পালন করি আবার কোন দিন সিয়াম পালন করা ছেড়ে দেই। রাতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করি আবার ঘুমিয়েও থাকি। আমি বিয়েও করি। সুতরাং এটাই আমার সুন্নাত (পথ), যে ব্যক্তি আমার পথ থেকে বিমুখ হবে সে আমার (উম্মাতের) মধ্যে গণ্য হবে না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُولُ جَاءَ ثَلَاثَة رَهْط إِلَى بيُوت أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا أخبروا كَأَنَّهُمْ تقالوها فَقَالُوا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أحدهم أما أَنا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْل أبدا وَقَالَ آخر أَنا أَصوم الدَّهْر وَلَا أفطر وَقَالَ آخر أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ: «أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللَّهِ إِنِّي لَأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مني»

عن انس بن مالك رضي الله عنه يقول جاء ثلاثة رهط الى بيوت ازواج النبي صلى الله عليه وسلم يسالون عن عبادة النبي صلى الله عليه وسلم فلما اخبروا كانهم تقالوها فقالوا واين نحن من النبي صلى الله عليه وسلم قد غفر له ما تقدم من ذنبه وما تاخر قال احدهم اما انا فاني اصلي الليل ابدا وقال اخر انا اصوم الدهر ولا افطر وقال اخر انا اعتزل النساء فلا اتزوج ابدا فجاء رسول الله صلى الله عليه وسلم اليهم فقال: «انتم الذين قلتم كذا وكذا اما والله اني لاخشاكم لله واتقاكم له لكني اصوم وافطر واصلي وارقد واتزوج النساء فمن رغب عن سنتي فليس مني»

ব্যাখ্যা: হাদীসে বর্ণিত তিনজনের যে প্রতিনিধি আল্লাহর রসূলের স্ত্রীদের নিকট এসেছিলেন, তাঁরা হলেন- ‘আলী, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস এবং ‘উসমান ইবনু মায্‘উন। আবার কেউ বলেছেন, তিনজনের একজন ছিলেনঃ মিক্বদাদ, ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আমর নন। তাঁরা রসূলের ‘ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্য ছিল এই যে, প্রতি দিনে এবং রাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওযীফাহসমূহের পরিমাণ সম্পর্কে জানা যাতে তারা সেভাবে আ‘মাল করতে পারেন। এ সম্পর্কে জানার পর নিজেদের কৃত আ‘মালসমূহকে অত্যন্ত স্বল্প মনে করে তাঁরা যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমর্থন করেননি। কারণ হলো, একজন ভালো মানুষের কর্তব্য হলো, আল্লাহর হক আদায় করার পাশাপাশি মানুষের হকও আদায় করা এবং সার্বিক ব্যাপারে আল্লাহর ওপর ভরসা করা ও তাঁরই নিকট সবকিছু সোপর্দ করা। তাই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার সুন্নাহ হতে বিমুখ হবে সে আমার মিল্লাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ- আমার সুন্নাহকে অস্বীকারকারী হলে সে দীন থেকে খারিজ হয়ে যাবে। আর যদি অবজ্ঞাবশত অথবা কোন প্রকার কৌশল অবলম্বনের দ্বারা আমার সুন্নাহকে এড়িয়ে যায় তাহলে সে আমার তরীকার অন্তর্ভুক্ত হবে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৬-[৭] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কাজ করলেন (অর্থাৎ- সফরে সিয়াম ভঙ্গ করলেন), অন্যদেরকেও তা করার জন্য অনুমতি দিলেন। কিন্তু কতক লোক তা থেকে বিরত থাকল (অর্থাৎ- সিয়াম ভাঙ্গল না)। এ সংবাদ শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুত্‌বাহ্ (খুতবা) দিলেন, হাম্‌দ-সানা পড়ার পর বললেন, লোকদের কী হল? তারা এমন কাজ হতে বিরত থাকছে যা আমি করছি। আল্লাহর কসম! আমি তাঁকে (আল্লাহকে) তাদের চেয়ে অধিক জানি ও তাদের চেয়ে বেশী ভয় করি। (সুতরাং আমি যে কাজ করতে দ্বিধাবোধ করি না, তারা তা করতে ইতস্তত করবে কেন?) (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا فَرَخَّصَ فِيهِ فَتَنَزَّهَ عَنْهُ قَوْمٌ فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَطَبَ فَحَمِدَ اللَّهَ ثُمَّ قَالَ: «مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَتَنَزَّهُونَ عَنِ الشَّيْءِ أَصْنَعُهُ فَوَاللَّهِ إِنِّي لأعلمهم بِاللَّه وأشدهم لَهُ خشيَة»

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: صنع رسول الله صلى الله عليه وسلم شيىا فرخص فيه فتنزه عنه قوم فبلغ ذلك رسول الله صلى الله عليه وسلم فخطب فحمد الله ثم قال: «ما بال اقوام يتنزهون عن الشيء اصنعه فوالله اني لاعلمهم بالله واشدهم له خشية»

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কাজটি করলেন তা’ অন্যদেরও করার জন্য সম্মতি ছিল। বাহ্যিকভাবে যা বুঝা যায় এবং আনাস (রাঃ)-এর হাদীসে উল্লেখও করা হয়েছে, সেই কাজটি ছিল- রাতে ঘুমানো, রমাযান ছাড়া অন্য মাসে দিনে খাওয়া এবং নারীদেরকে বিবাহ করা। আর এ ব্যাপারে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত মুসলিমের বর্ণনায় আছে যে, কাজটি ছিল- রমাযান মাসে বাদ ফাজ্‌র (ফজর) জানাবাতের গোসল করা। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর কসম তাদের চেয়ে আল্লাহ সম্পর্কে আমি বেশি জানি এবং তাদের অপেক্ষা আমি আল্লাহকে বেশি ভয় করি।

এ হাদীস দ্বারা অনুপ্রেরণা দেয়া হয়েছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ করার ব্যাপারে। কারণ কল্যাণ রয়েছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণের মধ্যেই। সেই অনুসরণ ‘‘আযীমাহ্’’ অথবা ‘‘রুখসাহ্’’। প্রতিটি কাজেই শারী‘আতের পরিভাষায় ‘‘আযীমাহ্’’ হলো, যে কাজটি শারী‘আতের বিধানে যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে ‘আমল করা। আর ‘‘রুখসাহ্’’ হলো, কোন কারণে শারী‘আতের কোন কাজ স্বাভাবিকের বিকল্প ব্যবস্থায় করা। যেমনঃ সফরে সালাতকে কসর পড়া। সুতরাং যে বিষয়ে ‘‘রুখসাহ্’’-এর আছে সে বিষয়ে রসূলের অনুসরণের উদ্দেশে ‘‘রুখসাহ্’’-এর উপর আ‘মাল করাই হচ্ছে উত্তম। আবার কোন সময় ঐ ‘‘রুখসাহ্’’ ‘আমল করা গুনাহের কারণও হতে পারে। যেমন মোজার উপর মাসাহ্ না করা। কারণ এর দ্বারা সুন্নাতের প্রতি অবহেলা প্রকাশ পায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৭-[৮] রাফি’ ইবনু খদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সময় মদীনায় (হিজরত করে) আসলেন, সে সময় মদীনার লোকেরা খেজুর গাছে তা’বীর করতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা এরূপ করছ কেন? মদীনাবাসী উত্তর দিল, আমরা বরাবরই এমনি করে আসছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মনে হয় তোমরা এমন না করলেই ভালো হত। তাই মদীনাবাসীরা এ কাজ করা পরিত্যাগ করল। কিন্তু ফসল (এ বছর) কম হলো। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কানে গেলে তিনি বললেন, ’নিশ্চয়ই আমি একজন মানুষ। তাই আমি যখন তোমাদেরকে দীন সম্পর্কে কোন বিষয়ে নির্দেশ দেই, তখন তোমরা অবশ্যই আমার কথা শুনবে। আর আমি যখন নিজের মতানুসারে দুনিয়ার বিষয় সম্পর্কে তোমাদেরকে কিছু বলব তখন মনে করবে, আমি একজন মানুষ (তাই দুনিয়ার ব্যাপারে আমারও ভুল হতে পারে)। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَن رَافع بن خديج قَالَ: قَدِمَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وهم يأبرون النَّخْلَ فَقَالَ: «مَا تَصْنَعُونَ» قَالُوا كُنَّا نَصْنَعُهُ قَالَ «لَعَلَّكُمْ لَوْ لَمْ تَفْعَلُوا كَانَ خَيْرًا» فَتَرَكُوهُ فنفضت قَالَ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: «إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ إِذَا أَمَرْتُكُمْ بِشَيْءٍ مِنْ دِينِكُمْ فَخُذُوا بِهِ وَإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِشَيْءٍ مِنْ رَأْي فَإِنَّمَا أَنا بشر» . رَوَاهُ مُسلم

وعن رافع بن خديج قال: قدم نبي الله صلى الله عليه وسلم وهم يابرون النخل فقال: «ما تصنعون» قالوا كنا نصنعه قال «لعلكم لو لم تفعلوا كان خيرا» فتركوه فنفضت قال فذكروا ذلك له فقال: «انما انا بشر اذا امرتكم بشيء من دينكم فخذوا به واذا امرتكم بشيء من راي فانما انا بشر» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে লোকেরা খেজুর গাছে তা‘বীর করতো। অর্থাৎ- মাদী গাছের কেশরের সঙ্গে নর গাছের কেশরকে লাগিয়ে দিতো। এতে করে গাছের ফলন অনেক বেশি হতো। আর এ কাজটি তারা জাহিলী যুগের অভ্যাস অনুযায়ী করতো। বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জানা না থাকার কারণে বলেছিলেনঃ এ রকম না করলেই ভালো হতো। ত্বলহাহ্ (রাঃ) কর্তৃক মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার ধারণা এই যে, এতে কোন উপকার দেবে না। এ কথা শুনে লোকেরা তা‘বীর করা বন্ধ করে দিলো, কিন্তু এতে যখন ফলন কমে গেল তখন বাগানের মালিকেরা এসে ফলন কমের কথা উল্লেখ করলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমিও একজন মানুষ। গায়িবী ব্যাপারে আমার কোন কিছু জানা নেই। আমি যা বলেছি তা শুধু আমার ধারণা থেকে।

সুতরাং আমি যখন কোন বিষয়ে তোমাদেরকে নির্দেশ করবো যা দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপকারী হবে তা তোমরা গ্রহণ করবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ ‘‘রসূল তোমাদের যা প্রদান করেন তাই তোমরা গ্রহণ করো’’- (সূরাহ্ আল হাশর ৫৯ঃ ৭)। আর দুনিয়াবী বিষয়ে যা নির্দেশ করবো তা সঠিক হতেও পারে, নাও হতে পারে। কারণ এ ব্যাপারে আমি ওয়াহী হতে বলি না। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এবং আনাস (রাঃ) কর্তৃক মুসলিমের বর্ণনায় আছে যে, দুনিয়াবী বিষয়ে তোমরাই আমার চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৮-[৯] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার এবং যে ব্যাপারটি দিয়ে আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন তার উদাহরণ হলো, যেমন- এক ব্যক্তি তার জাতির নিকট এসে বললো, হে আমার জাতি! আমি আমার এ দুই চোখে শত্রু বাহিনী দেখে এসেছি। আমি হচ্ছি তোমাদের একজন নাঙ্গা (নিঃস্বার্থ) সাবধানকারী। অতএব তোমরা শীঘ্রই তোমাদের মুক্তির পথ খোঁজ কর (তাহলে মুক্তি পাবে)। এ কথা শুনে জাতির একদল লোক তার কথা (বিশ্বাস করে) মেনে নিল। রাতেই তারা (শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য) ধীরে-সুস্থে চলে গেল এবং তারা মুক্তি পেল। জাতির অপর একদল তাঁকে মিথ্যুক মনে করলো (তাই ভোর পর্যন্ত নিজেদের স্থানেই রয়ে গেল)। ভোরে অতর্কিতে শত্রু সৈন্য এসে তাদের ওপর আপতিত হলো এবং তাদেরকে সমূলে ধ্বংস ও বিনষ্ট করে দিল। এই হলো সে ব্যক্তির উদাহরণ- যে আমার কথা স্বীকার করেছে, আমি যা এনেছি তার অনুসরণ করেছে। আর সে ব্যক্তির উদাহরণ- যে আমার কথা মানেনি ও আমি যে সত্য নিয়ে (দীন ও শারী’আত) তাদের নিকট এনেছি, তাকে তারা মিথ্যা মনে করেছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا مَثَلِي وَمَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ كَمَثَلِ رَجُلٍ أَتَى قَوْمًا فَقَالَ يَا قَوْمِ إِنِّي رَأَيْتُ الْجَيْشَ بِعَيْنِي وَإِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْعُرْيَانُ فَالنَّجَاءَ النَّجَاءَ فَأَطَاعَهُ طَائِفَةٌ مِنْ قَوْمِهِ فَأَدْلَجُوا فَانْطَلَقُوا عَلَى مَهْلِهِمْ فَنَجَوْا وَكَذَّبَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ فَأَصْبَحُوا مَكَانَهُمْ فَصَبَّحَهُمُ الْجَيْشُ فَأَهْلَكَهُمْ وَاجْتَاحَهُمْ فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ أَطَاعَنِي فَاتَّبَعَ مَا جِئْتُ بِهِ وَمثل من عَصَانِي وَكذب بِمَا جِئْتُ بِهِ مِنَ الْحَقِّ»

وعن ابي موسى قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «انما مثلي ومثل ما بعثني الله به كمثل رجل اتى قوما فقال يا قوم اني رايت الجيش بعيني واني انا النذير العريان فالنجاء النجاء فاطاعه طاىفة من قومه فادلجوا فانطلقوا على مهلهم فنجوا وكذبت طاىفة منهم فاصبحوا مكانهم فصبحهم الجيش فاهلكهم واجتاحهم فذلك مثل من اطاعني فاتبع ما جىت به ومثل من عصاني وكذب بما جىت به من الحق»

ব্যাখ্যা: হাদীসের মধ্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন যে, অচিরেই আসন্ন ‘আযাবের ব্যাপারে তাঁর জাতিকে ভীতি-প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তাঁকে পাঠিয়েছেন, এর দৃষ্টান্ত হিসেবে ঐ ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন যে তার কাওমকে সতর্ক করলো শত্রু সম্পর্কে। আর তাঁর উম্মাতের মধ্যে তাঁর আনুগত্যকারী এবং অস্বীকারকারী উদাহরণ দিয়েছেন ঐ ব্যক্তিকে দিয়ে যে তার কাওমকে সতর্ক করলো, অতঃপর তাকে কেউ বিশ্বাস করলো এবং কেউ মিথ্যারোপ করলো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৪৯-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উদাহরণ হলো সে ব্যক্তির ন্যায় যে আগুন জ্বালাল এবং আগুন যখন তার চারদিক আলোকিত করলো, তখন পতঙ্গসমূহ ও পোকা-মাকড় দলে দলে প্রজ্জ্বলিত আগুনে এসে ঝাঁপ দিয়ে পড়তে লাগলো, আর আগুন প্রজ্জ্বলনকারী সেগুলোকে বাধা দিতে লাগল। কিন্তু তারা বাধা উপেক্ষা করে ঝাঁপিয়ে পড়তেই থাকলো। ঠিক তদ্রূপ আমিও (হে মানবজাতি!) তোমাদেরকে পেছন থেকে তোমাদের কোমর ধরে আগুন হতে (বাঁচাবার জন্য) টানছি। আর তোমরা সে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ছ। ইমাম বুখারী এরূপ বর্ণনা করেছেন।

ইমাম মুসলিমও সামান্য শাব্দিক পরিবর্তনের সাথে এ পর্যন্ত একই রূপ বর্ণনা করেছেন। তবে শেষের দিকে কিছু বাড়িয়ে এরূপ বলেছেন, অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এটাই হলো আমার ও তোমাদের উদাহরণ। আমি কোমর ধরে তোমাদেরকে আগুন থেকে (বাঁচানোর জন্য) টানছি ও বলছি, এসো আমার দিকে, আগুন থেকে দূরে থাক; এসো আমার দিকে, আগুন থেকে দূরে থাক। কিন্তু তোমরা আমাকে পরাস্ত করে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ছ। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِنَّمَا مثلي وَمثل النَّاس كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حوله جَعَلَ الْفَرَاشُ وَهَذِهِ الدَّوَابُّ الَّتِي تَقَعُ فِي النَّار يقعن فِيهَا وَجعل يحجزهن ويغلبنه فيقتحمن فِيهَا فَأَنَا آخِذٌ بِحُجَزِكُمْ عَنِ النَّارِ وَأَنْتُمْ يقتحمون فِيهَا» . هَذِهِ رِوَايَةُ الْبُخَارِيِّ وَلِمُسْلِمٍ نَحْوَهَا وَقَالَ فِي آخرهَا: فَذَلِكَ مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ أَنَا آخِذٌ بِحُجَزِكُمْ عَنِ النَّارِ: هَلُمَّ عَنِ النَّارِ هَلُمَّ عَنِ النَّارِ فَتَغْلِبُونِي تَقَحَّمُونَ فِيهَا

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «انما مثلي ومثل الناس كمثل رجل استوقد نارا فلما اضاءت ما حوله جعل الفراش وهذه الدواب التي تقع في النار يقعن فيها وجعل يحجزهن ويغلبنه فيقتحمن فيها فانا اخذ بحجزكم عن النار وانتم يقتحمون فيها» . هذه رواية البخاري ولمسلم نحوها وقال في اخرها: فذلك مثلي ومثلكم انا اخذ بحجزكم عن النار: هلم عن النار هلم عن النار فتغلبوني تقحمون فيها

ব্যাখ্যা: হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্য (হে মানব সকল) আমি তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে টানছি, এর অর্থ হলো- তিনি মানবমণ্ডলীকে পাপের কাজ থেকে নিষেধ করছেন। যে পাপের কাজ মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হয়।

‘আল্লামা নাবাবী বলেছেনঃ হাদীসের উদ্দেশ্য হচ্ছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাহেল ও কুরআন সুন্নাহর খিলাফকারী লোকেদের পাপ ও প্রবৃত্তির কারণে জাহান্নামে যাওয়া এবং তাদেরকে কথা দ্বারা নিষেধ করা সত্ত্বেও সে কাজে নিপতিত হওয়ার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে তুলনা করেছেন পতঙ্গসমূহের প্রবৃত্তির এবং ভালো-মন্দের পার্থক্য করার অক্ষমতার কারণে দুনিয়ার আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সঙ্গে। কারণ এই যে, এরা নিজেদেরকে ধ্বংস করতে বেশ আগ্রহী, আর এটা হয় তাদের অজ্ঞতার কারণে।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেনঃ

تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلَا تَعْتَدُوْهَا وَمَنْ يَّتَعَدَّ حُدُوْدَ اللّهِ فَأُوْلئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ

‘‘এই হচ্ছে আল্লাহর সীমারেখা, যে আল্লাহর সীমারেখাকে অতিক্রম করবে সে যালিম।’’ (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ঃ ২২৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫০-[১১] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে হিদায়াত ও ’ইলম দিয়ে পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো জমিনে মুষলধারে বৃষ্টি, যা কোন ভূখণ্ডে পড়েছে। সে ভূখণ্ডের একাংশ উৎকৃষ্ট, যা বৃষ্টিকে চুষে নিয়েছে এবং প্রচুর উদ্ভিদ, গাছ-গাছালি ও ঘাস জন্ম দিয়েছে। আর অপর অংশ ছিল কঠিন ও গভীর, যা পানি (শোষণ না করে) আটকিয়ে রেখেছে। যার দ্বারা মানুষের উপকার সাধন করেছে। লোকেরা তা পান করেছে, অন্যকে পান করিয়েছে এবং তার দ্বারা ক্ষেত-খামারে কৃষি কাজ করেছে। আর কিছু বৃষ্টি ভূমির সমতল ও কঠিন জায়গায় পড়েছে, যা পানি আটকিয়ে রাখেনি বা শোষণ করেনি অথবা গাছপালা জন্মায়নি। এটা হলো সে ব্যক্তির উদাহরণ যে আল্লাহর দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছে এবং যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন এটা তার কল্যাণ সাধন করেছে- সে তা শিক্ষা করেছে ও (মানুষকে) শিক্ষা দিয়েছে। আর সে ব্যক্তির উদাহরণ, যে এর দিকে মাথা তুলেও তাকায়নি এবং আল্লাহর যে হিদায়াত দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়েছে তা কবূলও করেনি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ مِنَ الْهُدَى وَالْعلم كَمثل الْغَيْث الْكثير أصَاب أَرضًا فَكَانَ مِنْهَا نقية قَبِلَتِ الْمَاءَ فَأَنْبَتَتِ الْكَلَأَ وَالْعُشْبَ الْكَثِيرَ وَكَانَتْ مِنْهَا أَجَادِبُ أَمْسَكَتِ الْمَاءَ فَنَفَعَ اللَّهُ بِهَا النَّاس فَشَرِبُوا وَسقوا وزرعوا وأصابت مِنْهَا طَائِفَةً أُخْرَى إِنَّمَا هِيَ قِيعَانٌ لَا تُمْسِكُ مَاءً وَلَا تُنْبِتُ كَلَأً فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ فَقُهَ فِي دِينِ اللَّهِ وَنَفَعَهُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ فَعَلِمَ وَعَلَّمَ وَمَثَلُ مَنْ لَمْ يَرْفَعْ بِذَلِكَ رَأْسًا وَلَمْ يَقْبَلْ هُدَى اللَّهِ الَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ»

وعن ابي موسى عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «مثل ما بعثني الله به من الهدى والعلم كمثل الغيث الكثير اصاب ارضا فكان منها نقية قبلت الماء فانبتت الكلا والعشب الكثير وكانت منها اجادب امسكت الماء فنفع الله بها الناس فشربوا وسقوا وزرعوا واصابت منها طاىفة اخرى انما هي قيعان لا تمسك ماء ولا تنبت كلا فذلك مثل من فقه في دين الله ونفعه ما بعثني الله به فعلم وعلم ومثل من لم يرفع بذلك راسا ولم يقبل هدى الله الذي ارسلت به»

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা ওয়াহীর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যে ‘ইলম দান করেছেন তাকে আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অতঃপর বৃষ্টি বর্ষণের দিক থেকে জমিনকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন। এক প্রকারের জমিন হলো উপকারী, আর অন্য প্রকার যার মাঝে কোন উপকার নেই। অনুরূপভাবে মানুষকে ‘ইলম এর দিক থেকে দু‘ প্রকারে ভাগ করা হয়েছে।

মুজতাহিদ ব্যক্তি হলো উত্তম জমিনের মতো, যে জমিন বৃষ্টির পানি গ্রহণ করতঃ উদ্ভিদ ও ঘাস জন্মায়। আর ‘ইলম-এর সংরক্ষণকারী ও বর্ণনাকারী যে মুজতাহিদের স্তরে পৌঁছেনি, তার উদাহরণ ঐ জমিনের ন্যায় যে পানিকে আটকিয়ে রাখলো, অতঃপর আল্লাহ ঐ পানির দ্বারা মানুষের উপকার সাধন করলেন। অতঃপর অন্যকে পান করালো এবং তা দিয়ে চাষাবাদ করলো।

যে ব্যক্তি অহংকারবশত ‘ইলমের প্রতি দৃষ্টিপাত করলো না, তার দৃষ্টান্ত ঐ জমিনের ন্যায় যে জমিন বৃষ্টির পানি আটকিয়ে রাখতে না পেরে ঘাস এবং উদ্ভিদ কিছুই জন্মায় না এবং কোন উপকারও করে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫১-[১২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেন- অর্থাৎ- ’’তিনি তোমার ওপর এ কিতাব নাযিল করেছেন, যার কতক আয়াত মুহকাম’’ হতে ’’আর বোধশক্তি সম্পন্নরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা লাভ করে না’’ পর্যন্ত- (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ৭)।

’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সময় তুমি দেখবে, মুসলিমের বর্ণনায় আছে, ’যখন তোমরা দেখ যে, লোকেরা কুরআনের ’মুতাশাবিহ’ আয়াতের অনুসরণ করছে (তখন মনে করবে), এরাই সে সকল লোক আল্লাহ তা’আলা (বাঁকা হৃদয়ের লোক বলে) যাদের উল্লেখ করেছেন। সুতরাং তাদের থেকে সতর্ক থাকবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَن عَائِشَة قَالَتْ: تَلَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَات محكمات)
وَقَرَأَ إِلَى: (وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ)
قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَإِذَا رَأَيْتَ وَعِنْدَ مُسْلِمٍ: رَأَيْتُمُ الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُولَئِكَ الَّذِينَ سَمَّاهُمُ الله فاحذروهم

وعن عاىشة قالت: تلا رسول الله صلى الله عليه وسلم (هو الذي انزل عليك الكتاب منه ايات محكمات) وقرا الى: (وما يذكر الا اولو الالباب) قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: فاذا رايت وعند مسلم: رايتم الذين يتبعون ما تشابه منه فاولىك الذين سماهم الله فاحذروهم

ব্যাখ্যা: হাদীসে বর্ণিত মুহ্‌কাম এবং মুতাশাবিহ সম্পর্কে হাকিম ইবনু হাজার আল্ আসকালানী বলেছেনঃ কুরআনে বর্ণিত মুহকাম হলো, যার অর্থ সুস্পষ্ট। আর মুতাশাবিহ হলো, যার অর্থ সুস্পষ্ট নয়।

‘আল্লামা নাবাবী বলেছেনঃ এ হাদীস দ্বারা সাধারণ মানুষকে ঐ সকল ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলা-মেশা করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে এবং যারা বিদ্‘আতী আর যারা ফিৎনার উদ্দেশে সমস্যামূলক বিষয়ের অনুসরণ করছে। তবে জানার উদ্দেশে শালীনতা বজায় রেখে কেউ প্রশ্ন করলে তাতে কোন সমস্যা নেই এবং তার উত্তর দেয়াও আবশ্যক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫২-[১৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন দুপুর বেলায় আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে পৌঁছলাম। (’আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন,) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন দু’জন লোকের স্বর শুনলেন। তারা একটি (মুতাশাবিহ) আয়াতের ব্যাপারে তর্কবিতর্ক করছিল (অর্থাৎ- আয়াতের অর্থ নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত ছিল)। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন, তখন তাঁর চেহারায় রাগের ভাব প্রকাশ পাচ্ছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের আগের লোকেরা আল্লাহর কিতাব নিয়ে মতভেদ করার দরুনই ধ্বংস হয়েছে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَن عبد الله بن عَمْرو قَالَ: هَجَّرْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا قَالَ: فَسَمِعَ أَصْوَاتَ رَجُلَيْنِ اخْتَلَفَا فِي آيَةٍ فَخَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْرَفُ فِي وَجْهِهِ الْغَضَبُ فَقَالَ: «إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ باختلافهم فِي الْكتاب» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عبد الله بن عمرو قال: هجرت الى رسول الله صلى الله عليه وسلم يوما قال: فسمع اصوات رجلين اختلفا في اية فخرج علينا رسول الله صلى الله عليه وسلم يعرف في وجهه الغضب فقال: «انما هلك من كان قبلكم باختلافهم في الكتاب» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: হাদীসের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেছেনঃ যে সকল মতানৈক্য কুফর এবং বিদ্‘আতের দিকে ধাবিত করে, যেমন- ইয়াহূদী এবং নাসারাদের মতানৈক্য, তা থেকে মানুষকে সতর্ক করাই হচ্ছে এই হাদীসের মূল উদ্দেশ্য। যেমনঃ কুরআন নিয়ে মতানৈক্য করা। এর যেখানে ইজতিহাদ চলে না অথবা যা মানুষকে সন্দেহ, ফিতনাহ্, ঝগড়া-বিবাদ এবং হিংসা বিদ্বেষে নিপতিত করে, এমন বিষয় থেকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে সঠিক বা কোন ভুল বিষয়কে প্রকাশ করা, হক জিনিসকে প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যায়কে উৎখাত করার জন্য আপোষে আলোচনা করতে নিষেধ নেই এবং এর প্রতি নির্দেশ রয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৩-[১৪] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমদের মধ্যে সে-ই সর্বাপেক্ষা বড় অপরাধী, যে ব্যক্তি এমন কোন বিষয়ে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) প্রশ্ন করেছে, যা মানুষের জন্য পূর্বে হারাম ছিল না, কিন্তু তার প্রশ্ন করার দরুন হারাম হয়ে গেছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «أَن أعظم الْمُسلمين فِي لامسلمين جُرْمًا مَنْ سَأَلَ عَنْ شَيْءٍ لَمْ يُحَرَّمْ على النَّاس فَحرم من أجل مَسْأَلته»

وعن سعد بن ابي وقاص قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان اعظم المسلمين في لامسلمين جرما من سال عن شيء لم يحرم على الناس فحرم من اجل مسالته»

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী এবং তামীমী বলেনঃ এ হাদীসের বিধান ঐ ব্যক্তির ওপর বর্তায়, যে ব্যক্তি অনর্থক বা কষ্ট দেয়ার জন্য প্রয়োজন ব্যতীত কোন বিষয়ে প্রশ্ন করে। তবে দীনের কোন বিষয়ে কোন রকমের বিপদাপদ আরোপিত হলে তা থেকে অব্যাহতির জন্য প্রশ্ন করলে অপরাধ হবে না। যেমনঃ ‘উমার (রাঃ) এবং অন্যান্য ব্যক্তি মদের বিধান সম্পর্কে প্রশ্ন করার পর মদ হারাম করা হয়েছে, যা পূর্বে হালাল ছিল। আর ঐ সময় মদ হারাম হওয়াই ছিল প্রয়োজনের দাবি। কারণ মদপানের ক্ষতি সকল মুসলিমকে এমনভাবে পেয়ে বসেছিল যে, এর প্রভাবে গোটা সমাজ ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছিল।

এখানে দু’টো বিষয় বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য,

১) যে ব্যক্তি এমন কোন ‘আমল করলো যা অন্যের জন্য ক্ষতিকর হবে, তাহলে ‘আমলকারী গুনাহগার হবে।

২) প্রত্যেক বস্ত্তর মূল হচ্ছে বৈধতা, যতক্ষণ না এর বিপরীতে শারী‘আতে কোন বিধান আসবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৪-[১৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শেষ যামানায় এমন মিথ্যুক দাজ্জাল লোক হবে, যারা তোমাদের কাছে এমন সব (মনগড়া) হাদীস নিয়ে উপস্থিত হবে যা তোমরা শুনোনি, তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেননি। অতএব সাবধান! তাদের থেকে দূরে থাকবে, যাতে তারা তোমাদেরকে গুমরাহ করতে বা বিপদে ফেলতে না পারে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلَا آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لَا يُضِلُّونَكُمْ وَلَا يَفْتِنُونَكُمْ» . . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يكون في اخر الزمان دجالون كذابون ياتونكم من الاحاديث بما لم تسمعوا انتم ولا اباوكم فاياكم واياهم لا يضلونكم ولا يفتنونكم» . . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে যাদের সম্পর্কে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্ক করেছেন, তারা সাধারণ মানুষকে বলবে, আমরা ‘আলিম তোমাদেরকে দীনের পথে আহবান করছি। অথচ তারা হবে সম্পূর্ণ মিথ্যুক। তারা অনেক রকমের মিথ্যার দ্বারা মানুষের সঙ্গে কথা বলেও অগ্রহণযোগ্য বিধান। ভ্রান্ত বিশ্বাসের সূচনা করবে। তাই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেছেন যে, তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাকবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৫-[১৬] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলি কিতাবগণ তাওরাত কিতাব হিব্রু ভাষায় পাঠ করতো (এটা ইয়াহুদীদের ভাষা ছিল)। আর মুসলিমদেরকে তা ’আরাবী ভাষায় বুঝাতো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাদের ব্যাপারে সাহাবীগণকে) বললেন, তোমরা আহলি কিতাবদেরকে সমর্থনও করো না, আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। সুতরাং তোমরা তাদের বলবে, ’’আমরা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছি, আর যা আমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে’’- (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২: ১৩৬) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ أهل الْكتاب يقرؤون التَّوْرَاةَ بِالْعِبْرَانِيَّةِ وَيُفَسِّرُونَهَا بِالْعَرَبِيَّةِ لِأَهْلِ الْإِسْلَامِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ وَ (قُولُوا آمنا بِاللَّه وَمَا أنزل إِلَيْنَا» الْآيَة. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: كان اهل الكتاب يقروون التوراة بالعبرانية ويفسرونها بالعربية لاهل الاسلام. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تصدقوا اهل الكتاب ولا تكذبوهم و (قولوا امنا بالله وما انزل الينا» الاية. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: আহলি কিতাবদের সংবাদকে সত্য বা মিথ্যা নিরূপণ করতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করার কারণ এই যে, তাদের কর্তৃক পরিবেশিত সংবাদটি যদি সত্য মিথ্যা ব্যাখ্যা দেয়া হয় অথবা মিথ্যা হলে সত্য মনে করা অবশ্যই সমস্যার কারণ বলে গণ্য হবে।

‘আল্লামা বাগাবী বলেছেনঃ সন্দেহজনিত বা অস্পষ্ট কোন বিষয়ের জায়িয অথবা নাজায়িয হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার সিন্ধান্ত না নেয়ার জন্য এ হাদীসটি মূল নীতিমালামূলক। খালাফগণ এ নীতিমালাই অনুসরণ করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৬-[১৭] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোকের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (সত্যতা যাচাই না করে) তা-ই বলে বেড়ায়। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سمع» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «كفى بالمرء كذبا ان يحدث بكل ما سمع» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: যখন কোন মানুষের স্বাভাবিকভাবে কোন পাপ থাকে না, কিন্ত মানুষের নিকট থেকে যা শুনে এবং যাচাই-বাছাই না করেই তা বলে বেড়ায় ফলে পাপ সংগ্রহ করে। কারণ এই যে, সে অন্যের নিকট থেকে যা শুনে তার সবই সত্য হয় না, মাঝে মিথ্যাও থাকে। তাই যে কোন কথা যাচাই বাছাই না করে শুনামাত্র বর্ণনা না করার জন্য হুঁশিয়ার করা হয়েছে। বিশেষ করে রসূলের হাদীস সম্পর্কে যতক্ষণ পর্যন্ত না নিশ্চিত হবে যে, এটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস, ততক্ষণ পর্যন্ত বর্ণনা করবে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৭-[১৮] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার পূর্বে আল্লাহ তা’আলা এমন কোন নবীকে তাঁর উম্মাতের মধ্যে পাঠাননি, যাঁর উম্মাতের মধ্যে কোন সাহায্যকারী বা সাহাবীর দল ওই উম্মাতে ছিল না। এ তারা সুন্নাতের পথ অনুসরণ করেছে, তার হুকুম-আহকাম মেনে চলেছে। তারপর এমন লোক তাদের স্থলাভিষিক্ত হলো, যারা অন্যদেরকে যা বলতো নিজেরা তা করতো না। আর তারা সে সব কাজ করতো যার আদেশ (শারী’আতে) তাদেরকে দেয়া হয়নি। (আমার উম্মাতের মধ্যেও এমন কতিপয় লোক থাকতে পারে)। তাই যে নিজের হাত দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সে (পূর্ণ) মু’মিন। আর যে মুখের দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। আর যে অন্তর দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে সেও মু’মিন। আর এরপর সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান নেই। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا من نَبِي بَعثه الله فِي أمة قبلي إِلَّا كَانَ لَهُ من أُمَّتِهِ حَوَارِيُّونَ وَأَصْحَابٌ يَأْخُذُونَ بِسُنَّتِهِ وَيَقْتَدُونَ بِأَمْرِهِ ثُمَّ إِنَّهَا تَخْلُفُ مِنْ بَعْدِهِمْ خُلُوفٌ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ وَيَفْعَلُونَ مَا لَا يُؤْمَرُونَ فَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِيَدِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الْإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عبد الله بن مسعود ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ما من نبي بعثه الله في امة قبلي الا كان له من امته حواريون واصحاب ياخذون بسنته ويقتدون بامره ثم انها تخلف من بعدهم خلوف يقولون ما لا يفعلون ويفعلون ما لا يومرون فمن جاهدهم بيده فهو مومن ومن جاهدهم بلسانه فهو مومن ومن جاهدهم بقلبه فهو مومن وليس وراء ذلك من الايمان حبة خردل» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: সোনালী যুগের পরে এমন লোকের আবির্ভাব ঘটবে যাদের মাঝে কল্যাণের কিছু থাকবে না কিংবা ধার্মিকতা ও দীনদারীর ঘাটতি থাকবে। অতঃপর ঈমানের স্তর সম্পর্কে বলতে গিয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবশেষে বলেনঃ যে অন্তর দ্বারা সংগ্রাম করবে সেও মু’মিন। এরপর সরিষাদানা পরিমাণও ঈমান নেই। কারণ হলোঃ যে ব্যক্তি অন্তর দিয়ে সংগ্রাম করবে না, সে মন্দ কাজে সমর্থন করলো। আর মন্দ কাজ সমর্থন করবে যা কুফরীর নামান্তর।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৮-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন লোককে সৎ কাজের দিকে আহবান করবে, তার জন্যও সে পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে যা তার অনুসারীদের জন্য রয়েছে, অথচ তাদের সাওয়াবের কোন অংশ একটুও কমবে না। অনুরূপ যে ব্যক্তি কাউকে গোমরাহীর দিকে আহবান করে তারও সে পরিমাণ গুনাহ হবে, যতটুকু গুনাহ তার অনুসারীদের জন্য হবে। অথচ এটা অনুসারীদের গুনাহকে একটুও কমাবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلَالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الْإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئا» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من دعا الى هدى كان له من الاجر مثل اجور من تبعه لا ينقص ذلك من اجورهم شيىا ومن دعا الى ضلالة كان عليه من الاثم مثل اثام من تبعه لا ينقص ذلك من اثامهم شيىا» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: বান্দার যে কর্মে পুণ্য বা পাপ হওয়াকে আবশ্যক করে না, কিন্তু আল্লাহর বিধান হলো যে কারণে পুণ্য বা পাপ হয় সে কারণটাকে কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেয়া। অর্থাৎ- কোন কাজ সরাসরি করলে যেমন পুণ্য বা পাপ হয়ে থাকে, তা’ করার পেছনে যে কারণ থাকে তা দ্বারাও পুণ্য বা পাপ হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৫৯-[২০] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইসলাম আগন্তুকের (অপরিচিতের) ন্যায় (স্বল্প সংখ্যক লোকের মাধ্যমে অপরিচিত ও নিঃসঙ্গ অবস্থায়) শুরু হয়েছে এবং তা পরিশেষে ঐ অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করবে, যেভাবে শুরু হয়েছে। তাই আগন্তুকের (ঈমানদার লোকদের) জন্য সুসংবাদ। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَدَأَ الْإِسْلَامُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ فَطُوبَى للغرباء» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «بدا الاسلام غريبا وسيعود كما بدا فطوبى للغرباء» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: হাদীসে ইসলামকে তুলনা করা হয়েছে একাকী জীবন-যাপনকারী একজন প্রবাসী ব্যক্তির সঙ্গে যার সাথে তার পরিবারের অন্য কেউ থাকে না। অর্থাৎ- ইসলামের সূচনালগ্নে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম। অনুরূপভাবে ইসলামের মাঝে নানা রকমের ত্রুটি বিচ্যুতি ফিতনাহ্-ফাসাদ ও বিদ্‘আদ অনুপ্রবেশের ফলে এবং ঈমানের ঘাটতির কারণে ইসলাম বিলুপ্ত হতে হতে অতি অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে থাকবে। প্রাথমিক অবস্থায় যেমন ছিল তেমনি সবশেষে আবার সেভাবে পবিত্র স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »