পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা
১৫০-[১১] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে হিদায়াত ও ’ইলম দিয়ে পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো জমিনে মুষলধারে বৃষ্টি, যা কোন ভূখণ্ডে পড়েছে। সে ভূখণ্ডের একাংশ উৎকৃষ্ট, যা বৃষ্টিকে চুষে নিয়েছে এবং প্রচুর উদ্ভিদ, গাছ-গাছালি ও ঘাস জন্ম দিয়েছে। আর অপর অংশ ছিল কঠিন ও গভীর, যা পানি (শোষণ না করে) আটকিয়ে রেখেছে। যার দ্বারা মানুষের উপকার সাধন করেছে। লোকেরা তা পান করেছে, অন্যকে পান করিয়েছে এবং তার দ্বারা ক্ষেত-খামারে কৃষি কাজ করেছে। আর কিছু বৃষ্টি ভূমির সমতল ও কঠিন জায়গায় পড়েছে, যা পানি আটকিয়ে রাখেনি বা শোষণ করেনি অথবা গাছপালা জন্মায়নি। এটা হলো সে ব্যক্তির উদাহরণ যে আল্লাহর দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছে এবং যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন এটা তার কল্যাণ সাধন করেছে- সে তা শিক্ষা করেছে ও (মানুষকে) শিক্ষা দিয়েছে। আর সে ব্যক্তির উদাহরণ, যে এর দিকে মাথা তুলেও তাকায়নি এবং আল্লাহর যে হিদায়াত দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়েছে তা কবূলও করেনি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْإِعْتِصَامِ بِالْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ
وَعَنْ أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ مِنَ الْهُدَى وَالْعلم كَمثل الْغَيْث الْكثير أصَاب أَرضًا فَكَانَ مِنْهَا نقية قَبِلَتِ الْمَاءَ فَأَنْبَتَتِ الْكَلَأَ وَالْعُشْبَ الْكَثِيرَ وَكَانَتْ مِنْهَا أَجَادِبُ أَمْسَكَتِ الْمَاءَ فَنَفَعَ اللَّهُ بِهَا النَّاس فَشَرِبُوا وَسقوا وزرعوا وأصابت مِنْهَا طَائِفَةً أُخْرَى إِنَّمَا هِيَ قِيعَانٌ لَا تُمْسِكُ مَاءً وَلَا تُنْبِتُ كَلَأً فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ فَقُهَ فِي دِينِ اللَّهِ وَنَفَعَهُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ فَعَلِمَ وَعَلَّمَ وَمَثَلُ مَنْ لَمْ يَرْفَعْ بِذَلِكَ رَأْسًا وَلَمْ يَقْبَلْ هُدَى اللَّهِ الَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ»
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা ওয়াহীর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যে ‘ইলম দান করেছেন তাকে আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অতঃপর বৃষ্টি বর্ষণের দিক থেকে জমিনকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন। এক প্রকারের জমিন হলো উপকারী, আর অন্য প্রকার যার মাঝে কোন উপকার নেই। অনুরূপভাবে মানুষকে ‘ইলম এর দিক থেকে দু‘ প্রকারে ভাগ করা হয়েছে।
মুজতাহিদ ব্যক্তি হলো উত্তম জমিনের মতো, যে জমিন বৃষ্টির পানি গ্রহণ করতঃ উদ্ভিদ ও ঘাস জন্মায়। আর ‘ইলম-এর সংরক্ষণকারী ও বর্ণনাকারী যে মুজতাহিদের স্তরে পৌঁছেনি, তার উদাহরণ ঐ জমিনের ন্যায় যে পানিকে আটকিয়ে রাখলো, অতঃপর আল্লাহ ঐ পানির দ্বারা মানুষের উপকার সাধন করলেন। অতঃপর অন্যকে পান করালো এবং তা দিয়ে চাষাবাদ করলো।
যে ব্যক্তি অহংকারবশত ‘ইলমের প্রতি দৃষ্টিপাত করলো না, তার দৃষ্টান্ত ঐ জমিনের ন্যায় যে জমিন বৃষ্টির পানি আটকিয়ে রাখতে না পেরে ঘাস এবং উদ্ভিদ কিছুই জন্মায় না এবং কোন উপকারও করে না।