পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৩-[৩৫] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ’আয্‌যা ওয়াজাল্লা পাঁচটি বিষয়ে তাঁর সৃষ্টজীবের জন্য চূড়ান্তভাবে (তাক্বদীরে) লিখে দিয়ে নির্ধারিত করে রেখেছেনঃ (১) তার আয়ুষ্কাল (জীবনকাল), (২) তার ’আমল (কর্ম), (৩) তার অবস্থান বা মৃত্যুস্থান, (৪) তার চলাফেরা (গতিবিধি) এবং (৫) এবং তার রিয্‌ক্ব (রিজিক/রিযিক) (জীবিকা)। (আহমাদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

عَن أبي الدرداد قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ فَرَغَ إِلَى كُلِّ عَبْدٍ مِنْ خَلْقِهِ مِنْ خَمْسٍ: مِنْ أَجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَمَضْجَعِهِ وَأَثَرِهِ وَرِزْقِهِ . رَوَاهُ أَحْمَدُ

عن ابي الدرداد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ان الله عز وجل فرغ الى كل عبد من خلقه من خمس: من اجله وعمله ومضجعه واثره ورزقه . رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Abud Darda' reported God’s messenger as saying, “God has preordained five things for every man He has created:
his period of life, his action, his lying down, his moving about, and his provision.”

Ahmad transmitted it.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৪-[৩৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাক্বদীর বিষয়ে আলোচনা করবে, কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। অপরদিকে যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে কোন আলোচনা করবে না, তাকে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হবে না। (ইবনু মাজাহ্)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ تَكَلَّمَ فِي شَيْءٍ مِنَ الْقَدَرِ سُئِلَ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيهِ لم يسْأَل عَنهُ» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «من تكلم في شيء من القدر سىل عنه يوم القيامة ومن لم يتكلم فيه لم يسال عنه» . رواه ابن ماجه

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


‘A’isha said that she heard God’s messenger say, “He who discusses any aspect of God’s decree will be questioned about it on the day of resurrection, but he who does not discuss it will not be questioned about it.”

Ibn Majah transmitted it.

ব্যাখ্যা: (مَنْ تَكَـلَّمَ فِيْ شَيْءٍ مِنْ الْقَدَرِ) এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, এখানে فِيْ شَيْءٍ বলা হয়েছে فِيْ الْقَدَرِ বলা হয়নি। এর কারণ হলো, যাতে করে স্বল্পের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞার প্রতি জোর দেয়া যায়। অর্থাৎ- যে কেউ তাক্বদীরের একটি ক্ষুদ্র বিষয়েও আলোচনা করবে এর জন্য তাকে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। অতএব যদি কেউ বেশী করে তাহলে তো কোন কথাই নেই।

(يُسْأَلْ عَنْهُ) ধমকের সাথে বলা হয়েছে অথবা এখানে সাধারণভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে এটাও বলা যায়।

‘আল্লামা আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, অন্যান্য যাবতীয় কথা এবং কাজের মতো তাক্বদীরের বিষয়ে কথা বললেও তাকে জিজ্ঞাসিত হতে হবে এবং এজন্য তাকে উপযুক্ত বিনিময় দেয়া হবে।

(لَمْ يُسْأَلْ عَنْهُ) ‘তাকে জিজ্ঞেস করা হবে না’ এর অর্থ হলো তাকে এ কথা বলা হবে না তুমি তাক্বদীরের বিষয়ে কেন কথা বললে না? অতএব এ বিষয়ে কথা বলার চেয়ে না বলাই তার জন্য উত্তম হলো।

অতএব কোন ব্যক্তি তাক্বদীরের প্রতি যখন ঈমান রাখলো আর সে বিষয়ে বেশী বেশী আলোচনা না করলো তার ওপরে এই অভিযোগ আসবে না যে, সে কেন তাক্বদীরের বিষয়ে ব্যুৎপত্তি তথা গভীর জ্ঞান লাভ করেনি কেননা এ বিষয়ে সে আদিষ্ট নয়। এজন্যই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ ব্যাপারেই কি তোমরা আদিষ্ট হয়েছ? এবং তিনি আরো বলেছেন, ‘‘যখন তাক্বদীরের আলোচনা করা হয় তখন তোমরা তা থেকে বিরত থাকো।’’


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৫-[৩৭] ইবনু আদ্ দায়লামী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছে আমি তাকে বললাম, তাক্বদীর সম্পর্কে আমার মনে একটি সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। তাই আপনি আমাকে কিছু হাদীস শুনান যাতে আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার মন থেকে (তাক্বদীর সম্পর্কে) এসব সন্দেহ-সংশয় দূরীভূত হয়। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা যদি সমস্ত আকাশবাসী ও দুনিয়াবাসীকে শাস্তি দিতে ইচ্ছা করেন, তবে তা দিতে পারেন। এতে আল্লাহ যালিম বলে সাব্যস্ত হবেন না। পক্ষান্তরে তিনি যদি তাঁর সৃষ্টজীবের সকলের প্রতিই রহমত করেন, তবে তাঁর এ রহমত তাদের জন্য সকল ’আমল হতে উত্তম হবে। সুতরাং তুমি যদি উহুদ পাহাড়সম স্বর্ণও আল্লাহর পথে দান কর, তোমার থেকে তিনি তা গ্রহণ করবেন না, যে পর্যন্ত তুমি তাক্বদীরে বিশ্বাস না করবে এবং যা তোমার ভাগ্যে ঘটেছে তা তোমার কাছ থেকে কক্ষনো দূরে চলে যাবে না- এ কথাও তুমি বিশ্বাস না করবে, আর যা এড়িয়ে গেছে তা কক্ষনো তোমার নিকট আর আসবে না- এ বিশ্বাস স্থাপন করা ব্যতীত যদি তোমার মৃত্যু হয় তবে অবশ্যই তুমি জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

ইবনু আদ্ দায়লামী বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর এ বর্ণনা শুনে আমি সাহাবী ’আবদুল্লাহ ইবন মাস্’ঊদ (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও আমাকে এ কথাই প্রত্যুত্তর করলেন। তিনি বলেন, তারপর হুযায়ফাহ্ ইবনু ইয়ামান (রাঃ)-এর নিকট যেয়েও জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও আমাকে একই প্রত্যুত্তর করলেন। এরপর যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর কাছে আসলাম। তিনি স্বয়ং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম করেই আমাকে একই ধরনের কথা বললেন। (আহমাদ, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنِ ابْنِ الدَّيْلَمِيِّ قَالَ: أَتَيْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ فَقُلْتُ لَهُ: قَدْ وَقَعَ فِي نَفْسِي شَيْء من الْقدر فَحَدثني بِشَيْء لَعَلَّ الله أَن يذهبه من قلبِي قَالَ لَو أَن الله عَذَّبَ أَهْلَ سَمَاوَاتِهِ وأَهْلَ أَرْضِهِ عَذَّبَهُمْ وَهُوَ غَيْرُ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ كَانَتْ رَحْمَتُهُ خَيْرًا لَهُمْ مِنْ أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ أَنْفَقْتَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَلَوْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا لَدَخَلْتَ النَّارَ قَالَ ثُمَّ أَتَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ قَالَ ثُمَّ أَتَيْتُ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ فَقَالَ مثل ذَلِك قَالَ ثُمَّ أَتَيْتُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ فَحَدَّثَنِي عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ ذَلِكَ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن ابن الديلمي قال: اتيت ابي بن كعب فقلت له: قد وقع في نفسي شيء من القدر فحدثني بشيء لعل الله ان يذهبه من قلبي قال لو ان الله عذب اهل سماواته واهل ارضه عذبهم وهو غير ظالم لهم ولو رحمهم كانت رحمته خيرا لهم من اعمالهم ولو انفقت مثل احد ذهبا في سبيل الله ما قبله الله منك حتى تومن بالقدر وتعلم ان ما اصابك لم يكن ليخطىك وان ما اخطاك لم يكن ليصيبك ولو مت على غير هذا لدخلت النار قال ثم اتيت عبد الله بن مسعود فقال مثل ذلك قال ثم اتيت حذيفة بن اليمان فقال مثل ذلك قال ثم اتيت زيد بن ثابت فحدثني عن النبي صلى الله عليه وسلم مثل ذلك. رواه احمد وابو داود وابن ماجه

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Ibn ad-Dailami said:
I went to Ubayy b. Ka‘b and said to him, “I am confused about the divine decree, so tell me something by means of which God may remove the confusion from my mind.” He replied, “Were God to punish everyone in the heavens and the earth He would do so without being unjust to them, and were He to show mercy to them His mercy would be much better than their actions merited. Were you to spend in support of God’s cause an amount of gold equivalent to Uhud, God would not accept it from you till you believed in the divine decree and knew that what has come to you could not miss you and that what has missed you could not come to you. Were you to die believing anything else you would enter hell.” He said: I then went to ‘Abdallah b. Mas'ud and he said something to the same effect. I next went to Hudhaifa b. al-Yaman and he said something to the same effect. I next went to Zaid b. Thabit and he told me something from the Prophet to the same effect.

Ahmad, Abu Dawud and Ibn Majah transmitted it.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৬-[৩৮] নাফি’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, অমুক লোক আপনাকে সালাম দিয়েছে। উত্তরে ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেন, আমি শুনেছি, সে নাকি দীনের মধ্যে নতুন মত তৈরি করেছে (অর্থাৎ- তাক্বদীরের প্রতি অবিশ্বাস করছে)। যদি প্রকৃতপক্ষে সে দীনের মধ্যে নতুন কিছু তৈরি করে থাকে, তাহলে আমার পক্ষ হতে তাকে কোন সালাম পৌঁছাবে না। কেননা আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমার উম্মাতের অথবা এ উম্মাতের মধ্যে জমিনে ধ্বসে যাওয়া, চেহারা বিকৃত রূপ ধারণ করা, শিলা পাথর বর্ষণের মতো আল্লাহর কঠিন ’আযাব পতিত হবে, তাদের ওপর যারা তাক্বদীরের প্রতি অস্বীকারকারী হবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্; ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

عَن نَافِع أَن ابْن عمر جَاءَهُ رجل فَقَالَ إِنَّ فُلَانًا يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلَامَ فَقَالَ لَهُ إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّهُ قَدْ أَحْدَثَ فَإِنْ كَانَ قَدْ أَحْدَثَ فَلَا تُقْرِئْهُ مِنِّي السَّلَامَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول يكون فِي هَذِه الْأمة أَو فِي أمتِي الشَّك مِنْهُ خَسْفٌ أَوْ مَسْخٌ أَوْ قَذْفٌ فِي أَهْلِ الْقَدَرِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ

عن نافع ان ابن عمر جاءه رجل فقال ان فلانا يقرا عليك السلام فقال له انه بلغني انه قد احدث فان كان قد احدث فلا تقرىه مني السلام فاني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول يكون في هذه الامة او في امتي الشك منه خسف او مسخ او قذف في اهل القدر. رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح غريب

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Nafi' told how a man came to Ibn ‘Umar with a message that so and so sent him a greeting. He replied that he had heard he had introduced an innovation and that if that were so, he was not to convey his greeting to him, for he had heard God’s messenger say, “Among my people,” or “among this people the believers in freewill will be swallowed up and metamorphosed or pelted.”

Tirmidhi, Abu Dawud, and Ibn Majah transmitted it, and Tirmidhi said this is a hasan sahih gharib tradition.

ব্যাখ্যা: (بَلَغَنِيْ أَنَّهٗ قَدْ أَحْدَثَ) অর্থাৎ- আমার কাছে পৌঁছেছে যে, সে বিদ্‘আত চালু করেছে তাক্বদীরের বিষয়ে।

(فَلَا تُقْرِئْهُ مِنِّي السَّلَامَ) ‘আল্লামা ত্বীবী বলেন, এটা সালাম না গ্রহণ করার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুল্লা ‘আলী কারী  (রহঃ) বলেন, এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রকাশমান কথা হচ্ছে, আমার পক্ষে থেকে তার সালামের উত্তর পাঠিও না কারণ সে তার বিদ্‘আতের কারণে সালামের উত্তর পাবার অনুপযুক্ত হয়ে গেছে যদিও সে এখন পর্যন্ত কাফির হয়ে যায়নি।

হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, আমার পক্ষ থেকে তার কাছে সালাম পাঠাইও না। কেননা, নিশ্চয় আমরা আদিষ্ট হয়েছি বিদ্‘আতীদেরকে বর্জন করতে। এর প্রেক্ষিতে ‘উলামায়ি কিরাম বলে থাকেন, ফাসিক্বী, বিদ্‘আতীর সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব নয়। এটা সুন্নাতও নয়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ নাফি‘ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৭-[৩৯] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট খদীজাহ্ (রাঃ)তাঁর (পূর্ব-স্বামীর) দু’টি সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, যারা জাহিলিয়্যাতের যুগে মারা গেছে (তারা কোথায় জান্নাতী, না জাহান্নামী)। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা উভয়ে জাহান্নামী। ’আলী (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (যখন সন্তানদের জাহান্নামী হওয়ার ব্যাপারে বর্ণনা দেন তখন) খাদীজাহ্ (রাঃ)-এর চেহারায় বিষণ্ণ ও অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করে বললেন, তুমি যদি তাদের অবস্থান বা অবস্থা দেখতে, তবে তুমি নিশ্চয়ই তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতে। অতঃপর খাদীজাহ্ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে আপনার ঔরসে আমার যেসব সন্তান জন্মগ্রহণ করে মারা গেছে (ক্বাসিম ও ’আবদুল্লাহ (রাঃ), তাদের কী হবে)? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা জান্নাতে অবস্থান করছে। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মু’মিনগণ ও তাদের সন্তান-সন্ততিরা জান্নাতে এবং মুশরিক ও তাদের সন্তানাদিরা জাহান্নামে যাবে। তারপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কুরআনের) আয়াত করলেন (অনুবাদঃ) ’’যারা ঈমান এনেছে আর তাদের সন্তানরা যারা তাদের অনুসরণ করেছে, [আমি তাদের সন্তানদেরকে (জান্নাতে) ওদের সাথে রাখবো]’’- (সূরাহ্ আত্ তূর ৫২: ২১)। (আহমাদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

عَن عَليّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَأَلت خَدِيجَة النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ وَلَدَيْنِ مَاتَا لَهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هُمَا فِي النَّارِ قَالَ فَلَمَّا رأى الْكَرَاهِيَة فِي وَجْهِهَا قَالَ لَوْ رَأَيْتِ مَكَانَهُمَا لَأَبْغَضْتِهِمَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَلَدِي مِنْكَ قَالَ فِي الْجنَّة قَالَ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الْمُؤْمِنِينَ وَأَوْلَادَهُمْ فِي الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمُشْرِكِينَ وَأَوْلَادَهُمْ فِي النَّارِ ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُمْ بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذرياتهم)

عن علي رضي الله عنه قال سالت خديجة النبي صلى الله عليه وسلم عن ولدين ماتا لها في الجاهلية فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: هما في النار قال فلما راى الكراهية في وجهها قال لو رايت مكانهما لابغضتهما قالت يا رسول الله فولدي منك قال في الجنة قال ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان المومنين واولادهم في الجنة وان المشركين واولادهم في النار ثم قرا رسول الله صلى الله عليه وسلم (والذين امنوا واتبعتهم ذريتهم بايمان الحقنا بهم ذرياتهم)

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


‘Ali said that Khadija asked the Prophet about two children of hers who had died in the pre-Islamic period and God’s messenger replied, “They are in hell.” Then when he saw her look of disapproval he said, “If you saw their position you would hate them.” She asked, “Messenger of God, what about my son whom I had from you?” He replied, “He is in paradise.” Then God’s messenger said, “The believers and their children are in paradise and the polytheists and their children are in hell.” Then God’s messenger recited, “Those who believe and whose offspring have followed them.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: (سَأَلَتْ خَدِيْجَةُ) তিনি হচ্ছেন খদীজাহ্ বিনতু খুওয়াইলিদ বিন আসাদ বিন ‘আবদুল ‘উযযা বিন কুসাই আল্ কুরাশিয়াহ্ (রাঃ)। তিনি আবূ হালাহ বিন যুবায়র-এর স্ত্রী ছিলেন। অতঃপর তাকে ‘আতীক্ব বিন ‘আয়িয বিবাহ করে, অতঃপর তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহ করেন সে সময় তার বয়স হয়েছিল ৪০ বছর আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ২৫ বছর। এটাই ছিল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রথম বিবাহ এবং তিনি বেঁচে থাকতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর কাউকে বিবাহ করেননি। তিনিই হলেন সর্বপ্রথম ঈমান আনয়নকারিণী। আর কেউ কেউ বলেছেন, মহিলাদের মধ্যে প্রথম ঈমান আনয়নকারিণী। নুবূওয়্যাতের পূর্বে তাকে ত্বাহিরাহ্ নামে ডাকা হতো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সব সন্তানই তাঁর গর্ভের একমাত্র ইবরাহীম ছাড়া। কেননা তিনি হলেন মারিয়াতুল কিবতিয়া (রাঃ)-এর গর্ভে। হিজরতের পাঁচ বছর পূর্বে মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৮-[৪০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করলেন, তখন তাঁর পিঠের উপর হাত বুলালেন। এতে তাঁর পিঠ হতে তাঁর সমস্ত সন্তান জীবন্ত বেরিয়ে পড়ল যা ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) অবধি তিনি সৃষ্টি করবেন। তন্মধ্যে প্রত্যেকের দুই চোখের মধ্যস্থলে নূরের চমক ছিল। অতঃপর সকলকে আদম (আঃ)-এর সামনে পেশ করলেন। (এদেরকে দেখে) আদম (আঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে রব! এরা কারা? (প্রত্যুত্তরে) রব বললেন, এরা সব তোমার সন্তান। এমন সময় আদম (আঃ) তাঁদের একজনকে দেখলেন, তাকে তার খুব ভালো লাগলো। তাঁরও দুই চোখের মধ্যস্থলে নূরের চমক ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে রব! এ ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, (তোমার সন্তান) দাঊদ (আঃ)। তিনি [আদম (আঃ)] বললেন, হে প্রভু! তাঁর বয়স কত নির্ধারণ করেছেন? তিনি বললেন, ষাট বছর। তিনি [আদম (আঃ)] বলেন, হে প্রভু! (অনুগ্রহ করে) আমার বয়স থেকে তাঁকে চল্লিশ বছর দান করুন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আদম (আঃ)-এর বয়স ফুরিয়ে গেলে এবং ঐ চল্লিশ বছর বাকী থাকতে মালাকুল মাওত এসে তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন। আদম (আঃ) তাঁকে বললেন, এখনো তো আমার বয়স চল্লিশ বছর বাকী আছে। মালাকুল মাওত বললেন, আপনি কি আপনার বয়সের চল্লিশ বছর আপনার সন্তান দাঊদ (আঃ)-কে দান করেননি? আদম (আঃ) তা অস্বীকার করলেন। তাই তাঁর সন্তানরাও অস্বীকার করেন। অতঃপর আদম (আঃ) (তার ওয়া’দা) ভুলে গিয়েছিলেন। তিনি নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেললেন। তাই তাঁর সন্তানরাও ভুলে যায়। আদম (আঃ)-এর ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছিল, আর এ কারণেই এই ত্রুটি-বিচ্যুতি সন্তানদের দ্বারাও হয়ে থাকে। (তিরমিযী)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدم مسح ظَهره فَسقط من ظَهْرِهِ كُلُّ نَسَمَةٍ هُوَ خَالِقُهَا مِنْ ذُرِّيَّتِهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَجَعَلَ بَيْنَ عَيْنَيْ كُلِّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ وَبِيصًا مِنْ نُورٍ ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى آدَمَ فَقَالَ أَيْ رَبِّ مَنْ هَؤُلَاءِ قَالَ هَؤُلَاءِ ذُرِّيَّتُكَ فَرَأَى رَجُلًا مِنْهُمْ فَأَعْجَبَهُ وَبِيصُ مَا بَين عَيْنَيْهِ فَقَالَ أَي رب من هَذَا فَقَالَ هَذَا رجل من آخر الْأُمَم من ذريتك يُقَال لَهُ دَاوُدُ فَقَالَ رَبِّ كَمْ جَعَلْتَ عُمُرَهُ قَالَ سِتِّينَ سنة قَالَ أَي رب زده من عمري أَرْبَعِينَ سنة فَلَمَّا قضي عمر آدم جَاءَهُ ملك الْمَوْت فَقَالَ أَوَلَمْ يَبْقَ مِنْ عُمُرِي أَرْبَعُونَ سَنَةً قَالَ أولم تعطها ابْنك دَاوُد قَالَ فَجحد آدم فَجحدت ذُريَّته وَنسي آدم فنسيت ذُريَّته وخطئ آدم فخطئت ذُريَّته» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لما خلق الله ادم مسح ظهره فسقط من ظهره كل نسمة هو خالقها من ذريته الى يوم القيامة وجعل بين عيني كل انسان منهم وبيصا من نور ثم عرضهم على ادم فقال اي رب من هولاء قال هولاء ذريتك فراى رجلا منهم فاعجبه وبيص ما بين عينيه فقال اي رب من هذا فقال هذا رجل من اخر الامم من ذريتك يقال له داود فقال رب كم جعلت عمره قال ستين سنة قال اي رب زده من عمري اربعين سنة فلما قضي عمر ادم جاءه ملك الموت فقال اولم يبق من عمري اربعون سنة قال اولم تعطها ابنك داود قال فجحد ادم فجحدت ذريته ونسي ادم فنسيت ذريته وخطى ادم فخطىت ذريته» . رواه الترمذي

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Abu Huraira reported God’s messenger as saying, “When God created Adam He wiped his back and every soul of his offspring He was to create up to the day of resurrection fell from his back. He put on the forehead of everyone of them a flash of light, then presented them to Adam who asked, ‘My Lord, who are these?’ He replied, ‘Your offspring.' On seeing one of them and being charmed by the flash on his forehead he asked, ‘My Lord, who is this?’ He replied, ‘David.’ He asked, ‘My Lord, how long a term of life hast Thou appointed him?” He replied, ‘Sixty years.’ He said, ‘My Lord, give him an extra forty years out of my term of life.’” God’s messenger said, “When Adam’s period of life all but forty years had come to an end the angel of death came to him. Adam said, ‘Are there not forty years of my life remaining?’ He replied, ‘Did you not give them to your son David?' Adam denied it and his offspring denied; Adam forgot and ate of the tree and his offspring forgot; and Adam sinned and his offspring sinned.”

Tirmidhi transmitted it.

ব্যাখ্যা: (وَجَعَلَ بَيْنَ عَيْنَيْ كُلِّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ وَبِيصًا مِنْ نُورٍ) ‘‘প্রত্যেকের দু’ চোখের মাঝে নূরের চমক ছিল।’’ এতে জানা যায় যে, বারযাখে প্রত্যেক আদম সন্তান মানব আকৃতিতেই ছিল যদিও তাদের আকৃতি ছিল ছোট পিপিলিকাতুল্য।

(زِدْهُ مِنْ عُمْرِي أَرْبَعِينَ سَنَةً) ‘‘আমার বয়স থেকে তাঁকে চল্লিশ বছর বাড়িয়ে দিন।’’ অর্থাৎ- আপনি আমাকে যে বয়স দান করেছেন সে বয়স থেকে আমার বয়স চল্লিশ বছর কমিয়ে ঐ বয়স তাকে দিয়ে দিন।

(فَجَحَدَ اۤدَمُ) ‘‘আদম (আঃ) অস্বীকার করলো।’’ অর্থাৎ- মালাকুল মাওত যখন তার প্রাণ সংহার করার জন্যে এলেন তখন তার বয়স আরো চল্লিশ বছর বাকী রয়েছে বলে দাবী করলো এবং তিনি যে তার বয়স থেকে চল্লিশ বছর তার সন্তান দাঊদ (আঃ)-কে দান করেছেন তা অস্বীকার করলো এজন্য যে, তিনি যে তার বয়স থেকে চল্লিশ বছর দান করে দিয়েছেন মালাকুল মাওত উপস্থিত হওয়ার সময় তা তার স্মরণ ছিল না। কেননা ঐ দান ছিল আলমে বারযাখে, আর প্রাণ সংহারের ঘটনা ছিল ইহজগতে।

(فَجَحَدَتْ ذُرِّيَّتُه) ‘‘পরে তার সন্তানেরাও অস্বীকার করেছে’’। কেননা সন্তান পিতারই অংশ। তাই পিতার মধ্যে যে গুণাবলী থাকে ঐ গুণাবলী সন্তানের মধ্যেও থাকে। তাই আদম যেমন ভুলে গিয়ে অস্বীকার করেছিল তেমনি তার সন্তানেরাও ভুলে গিয়ে অস্বীকার করে বসে।

অত্র হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে যে, আদম সন্তান সৃষ্টিগতভাবেই ভুলে যাওয়া, ভুল করা, অস্বীকার করার মাধ্যমেই সৃজিত হয়েছে। তবে আল্লাহ যাকে হিফাযাত করেছেন সে বাদে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১৯-[৪১] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সৃষ্টির প্রাক্কালে আল্লাহ তা’আলা যখন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করলেন তখন তাঁর ডান কাঁধের উপর তাঁর হাত মারলেন। এতে ক্ষুদ্র পিঁপড়ার দলের ন্যায় সুন্দর ঝকঝকে একদল আদম সন্তান বেরিয়ে আসলো। তিনি আবার তাঁর বাম কাঁধের উপর হাত মারলেন এবং কয়লার ন্যায় কালো অপর একদল আদম সন্তান বেরিয়ে আসলো। তারপর আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)-এর ডান দিকের সন্তানদের ইঙ্গিত করে বললেন, এ দল জান্নাতী। এতে আমি কারো পরোয়া করি না। অতঃপর আবার তিনি বাম দিকের আদম সন্তানদের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, এ দল জাহান্নামী। এ সম্পর্কেও আমি কারো কোন পরোয়া করি না। (আহমাদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ حِينَ خَلَقَهُ فَضَرَبَ كَتِفَهُ الْيُمْنَى فَأَخْرَجَ ذُرِّيَّةً بَيْضَاءَ كَأَنَّهُمُ الذَّرُّ وَضَرَبَ كَتِفَهُ الْيُسْرَى فَأَخْرَجَ ذُرِّيَّةً سَوْدَاءَ كَأَنَّهُمُ الْحُمَمُ فَقَالَ لِلَّذِي فِي يَمِينِهِ إِلَى الْجَنَّةِ وَلَا أُبَالِي وَقَالَ للَّذي فِي كَفه الْيُسْرَى إِلَى النَّارِ وَلَا أُبَالِي» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

وعن ابي الدرداء عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «خلق الله ادم حين خلقه فضرب كتفه اليمنى فاخرج ذرية بيضاء كانهم الذر وضرب كتفه اليسرى فاخرج ذرية سوداء كانهم الحمم فقال للذي في يمينه الى الجنة ولا ابالي وقال للذي في كفه اليسرى الى النار ولا ابالي» . رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Abud Darda' reported God’s messenger as saying, “God created Adam when He created him and struck his right shoulder and brought forth his offspring white like small ants. And he struck his left shoulder and brought forth his offspring black as though they were charcoal. Then He said to the party on his right side, ‘To paradise, and I do not care’ and He said to the party in his left shoulder, ‘To hell, and I do not care’.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: (كَأَنَّهُمْ الذَّرّ) ذر হচ্ছে ছোট পিপিলিকা। (كَأَنَّهُمْ الْحُمَمُ) حُمَمٌ কয়লা।

(قَالَ لِلَّذِي فِي يَمِينِه) ডান দিক থেকে যে, মু’মিনের সন্তানদের বের করলেন তাদেরকে বললেন।

হাদীসখানা তাক্বদীরের প্রতি ঈমানের প্রমাণবাহী। কারণ, এগুলো হলো আল্লাহ তা‘আলার আগাম ‘ইলমের প্রতিফলন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১২০-[৪২] আবূ নাযরাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণের মধ্যে আবূ ’আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে তাঁর সঙ্গী-সাথীগণ (মৃত্যুশয্যায়) দেখতে আসলেন। তিনি তখন ক্রন্দনরত অবস্থায় ছিলেন। তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কান্নাকাটি করছেন কেন? আপনাকে কি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেননি যে, তোমার গোঁফ খাটো করবে। আর সব সময় এভাবে গোঁফকে খাটো রাখবে, যে পর্যন্ত আমার সাথে (জান্নাতে) দেখা না হবে। তিনি বললেন, হাঁ। তবে আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথাও বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ তা’আলা স্বীয় ডান হাতে এক মুঠি (লোক) নিয়ে বলেছেন, এরা এর (জান্নাতের) জন্য এবং অপর (এক বাম) হাতের তালুতে এক মুঠি (লোক) নিয়ে বললেন, এরা এর (জাহান্নামের) জন্য। আর এ ব্যাপারে আমি কারো কোন পরোয়া করি না। এ কথা বলে তিনি [’আবদুল্লাহ (রাঃ)] বললেন, আমি জানি না, কোন হাতের মুঠির মধ্যে আমি আছি। (আহমাদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَن أبي نَضرة أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَالُ لَهُ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ دَخَلَ عَلَيْهِ أَصْحَابُهُ يَعُودُونَهُ وَهُوَ يَبْكِي فَقَالُوا لَهُ مَا يُبْكِيكَ أَلَمْ يَقُلْ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُذْ مِنْ شَارِبِكَ ثُمَّ أَقِرَّهُ حَتَّى تَلْقَانِي قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَبَضَ بِيَمِينِهِ قَبْضَةً وَأُخْرَى بِالْيَدِ الْأُخْرَى وَقَالَ هَذِهِ لِهَذِهِ وَهَذِه لهَذِهِ وَلَا أُبَالِي فَلَا أَدْرِي فِي أَيِّ الْقَبْضَتَيْنِ أَنَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

وعن ابي نضرة ان رجلا من اصحاب النبي صلى الله عليه وسلم يقال له ابو عبد الله دخل عليه اصحابه يعودونه وهو يبكي فقالوا له ما يبكيك الم يقل لك رسول الله صلى الله عليه وسلم خذ من شاربك ثم اقره حتى تلقاني قال بلى ولكني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «ان الله عز وجل قبض بيمينه قبضة واخرى باليد الاخرى وقال هذه لهذه وهذه لهذه ولا ابالي فلا ادري في اي القبضتين انا» . رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Abu Nadra told how a companion of the Prophet called Abu ‘Abdallah was visited by his friends who found him weeping. They asked him what made him weep, and whether God’s messenger had not told him to clip some of his moustache and keep it like that till he met him. He replied, “Yes, but I heard God’s messenger say that God took a handful in His right hand and another in His left saying, ‘This is for this, and that is for that, and I do not care;’ and I do not know in which of the two handfuls I am.”

Ahmad transmitted it.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ নাযরাহ্ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১২১-[৪৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ’আরাফার মাঠের সন্নিকটে না’মান নামে এক জায়গায় আদম (আঃ)-এর মেরুদণ্ড হতে তাঁর সন্তানদের বের করে শপথ গ্রহণ করিয়েছিলেন। তিনি আদম (আঃ)-এর মেরুদণ্ড হতে তাঁর প্রত্যেক সন্তানকে বের করেছিলেন। এ সকলকে পিঁপড়ার মতো আদম (আঃ)-এর সামনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ তাদের সম্মুখপানে কথা বলেছিলেন- ’’আমি কি তোমাদের ’প্রভু’ নই? আদম সন্তানরা উত্তর দিয়েছিল, হ্যাঁ, অবশ্যই আপনি আমাদের ’প্রতিপালক’। এতে আমরা সাক্ষী থাকলাম যাতে তোমরা কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন এ কথা বলতে না পারো, আমরা জানতাম না কিংবা তোমরা এ কথাও বলতে না পারো, আমাদের পিতৃ-পুরুষগণ আমাদের পূর্বে মুশরিক হয়ে গিয়েছিল। আর আমরা তাদের পরবর্তী বংশধর। তুমি কি বাতিলধর্মীরা (পিতৃ-পুরুষগণ) যা করেছে সে ’আমলের কারণে আমাদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে দিবে’’- (সূরাহ্ আ’রাফ ১৭২-১৭৩)। (আহমাদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَخذ الله الْمِيثَاق من ظهر آدم بنعمان يَعْنِي عَرَفَة فَأخْرج من صلبه كل ذُرِّيَّة ذَرَاهَا فَنَثَرَهُمْ بَيْنَ يَدَيْهِ كَالذَّرِّ ثُمَّ كَلَّمَهُمْ قِبَلًا قَالَ: (أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غافلين أَوْ تَقُولُوا إِنَّمَا أَشْرَكَ آبَاؤُنَا مِنْ قَبْلُ وَكُنَّا ذُرِّيَّةً مِنْ بَعْدِهِمْ أَفَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ المبطلون)
رَوَاهُ أَحْمد

وعن ابن عباس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: اخذ الله الميثاق من ظهر ادم بنعمان يعني عرفة فاخرج من صلبه كل ذرية ذراها فنثرهم بين يديه كالذر ثم كلمهم قبلا قال: (الست بربكم قالوا بلى شهدنا ان تقولوا يوم القيامة انا كنا عن هذا غافلين او تقولوا انما اشرك اباونا من قبل وكنا ذرية من بعدهم افتهلكنا بما فعل المبطلون) رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Ibn ‘Abbas reported the Prophet as saying:
God made the covenant from Adam’s back in Na‘man, i.e. ‘Arafa, and brought forth from his loins all his offspring whom He created and scattered before Him like small ants. He then spoke to them face to face saying, “Am I not your Lord?’ They replied, “Yes, we testify this.” [It was] lest you should say on the day of resurrection, “We were neglectful of this,” or should say, “Our fathers were polytheists before us and we were an offspring after them. Wilt Thou destroy us for what the workers of vanity did?” *

Ahmad transmitted it.

* Quran, 7:172-173

ব্যাখ্যা: (فَنَثَرَهُمْ بَيْنَ يَدَيْهِ كَالذَّرِّ) ‘‘অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর সন্তানদেরকে তাঁর সামনে পিপিলিকার মতো ছড়িয়ে দিলেন।’’ অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর পিঠ থেকে তার সন্তানদেরকে বের করলেন পিপিলিকার মতো ছোট আকারে এবং তাদেরকে আদম (আঃ)-এর সামনে উপস্থাপন করলেন।

(ثُمَّ كَلَّمَهُمْ قُبُلًا) ‘‘অতঃপর তাদের সাথে কথা বলেছিলেন সামনাসামনি’’। অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা সরাসরি তাদের সামনে উপস্থিত হয়ে কথা বলেছিলেন। এ কথার বিনিময় পর্দার অন্তরাল থেকে ছিল না এবং মালাকের (ফেরেশতার) মাধ্যমেও ছিল না।

(أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ؟) ‘‘আমি কি তোমাদের প্রভু নই?’’

(قَالُوا بَلى) ‘‘তারা বললঃ হ্যাঁ।’’ অর্থাৎ- হ্যাঁ, আপনিই আমাদের প্রভু, আপনি ব্যতীত অন্য কেউ আমাদের প্রভু নন।

প্রকৃতপক্ষে অর্থ হলো, নিজের তাওহীদের স্বীকৃতি দেয়ার পরেও এর মাধ্যমে তারা যেন যুক্তি স্থাপন না করতে পারে, এজন্যই আল্লাহ তা‘আলা ঐ স্বীকারোক্তি নিয়েছিলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১২২-[৪৪] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে মহামহিম আল্লাহর বাণী বর্ণিত। তিনি এ আয়াতের ’’তোমাদের রব যখন বানী আদমের মেরুদণ্ড থেকে তাদের সন্তানদের বের করলেন’’- (সূরাহ্ আ’রাফ ৭: ১৭২-১৭৩) এর তাফসীরে বলেন, আল্লাহ তা’আলা আদম সন্তানদের একত্রিত করলেন। তাদেরকে বিভিন্ন রকম করে গড়ার মনস্থ করলেন, এরপর তাদের আকার-আকৃতি দান করলেন। তারপর কথা বলার শক্তি দিলেন। এবার তারা কথা বলতে লাগলো। অতঃপর তাদের কাছ থেকে ওয়া’দা-অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন এবং তাদের নিজের সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন, ’আমি কি তোমাদের রব নই’? আদম সন্তানগণ বলল, হ্যাঁ, (নিশ্চয়ই আপনি আমাদের রব)।

তারপর আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমি তোমাদের এ কথার উপর সাত আসমান ও সাত জমিনকে তোমাদের সম্মুখে সাক্ষী করছি এবং তোমাদের পিতা আদমকেও সাক্ষী বানাচ্ছি। তোমরা যেন কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন এ কথা বলার সুযোগ না পাও যে, আমরা তো এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। তাই এখন তোমরা ভালো করে জেনে নাও, আমি ছাড়া তোমাদের কোন মা’বূদ নেই এবং আমি ছাড়া তোমাদের কোন প্রতিপালকও নেই। সুতরাং (সাবধান) আমার সাথে কাউকে শরীক করো না। আমি শীঘ্রই তোমাদের কাছে আমার রসূলগণকে প্রেরণ করবো, যারা তোমাদেরকে আমার ওয়া’দা-অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দিবেন। অতঃপর তোমাদের ওপর আমি আমার কিতাবসমূহ নাযিল করবো।

তখন এ কথা শুনে আদম সন্তান বলল, আমরা এ কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই তুমি আমাদের রব ও আমাদের ইলাহ। তুমি ছাড়া আমাদের কোন রব নেই এবং তুমি ছাড়া আমাদের কোন ইলাহ নেই। বস্তুত আদম সন্তানদের সকলে এ কথা স্বীকার করে নিল। আদম (আঃ)-কে তাদের ওপর উঠিয়ে ধরা হলো। তিনি সকলকে প্রত্যক্ষ করলেন। তিনি দেখলেন, তাঁর সন্তানদের মধ্যে ধনী-দরিদ্রও আছে, সুন্দর-অসুন্দরও আছে। (এটা দেখে) তিনি বললেন, হে রব! তুমি তোমার বান্দাদের সকলকে যদি এক সমান করে বানাতে? আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমি চাই আমার বান্দারা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতার মধ্যে থাকুক।

এরপর আদম (আঃ) নবীদেরকে দেখলেন, তারা সকলেই যেন চেরাগের ন্যায়- তাদের ওপর আলো ঝলমল করছিল। তাদের কাছ থেকে বিশেষ করে নুবূওয়্যাতের ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনের বিশেষ শপথও নেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলছেন (অনুবাদঃ) ’’আমি নবীদের নিকট হতে যখন তাদের ওয়া’দা অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম এবং আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, নূহ (আঃ), ইবরাহীম (আঃ), মূসা (আঃ), ’ঈসা (আঃ) ইবনু মারইয়াম (আঃ) হতেও (অঙ্গীকার ও ওয়া’দা) নেয়া হয়েছে’’- (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩: ৭)। তিনি [উবাই (রাঃ)] বলেন, এ রূহদের মধ্যে ’ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) এর রূহ্ (আত্মা)-ও ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা এ রূহকেই মারইয়াম (আঃ) এর প্রতি প্রেরণ করেছেন। উবাই বলেছেন, এ রূহ মারইয়াম (আঃ)-এর মুখ দিয়ে (তাঁর পেটে) প্রবেশ করেছে।[1] (আহমাদ)

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

عَن أبي بن كَعْب فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ (وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورهمْ ذرياتهم وأشهدهم على أنفسهم)
الْآيَة قَالَ جمعهم فجعلهم أرواحا ثُمَّ صَوَّرَهُمْ فَاسْتَنْطَقَهُمْ فَتَكَلَّمُوا ثُمَّ أَخَذَ عَلَيْهِمُ الْعَهْدَ وَالْمِيثَاقَ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالَ فَإِنِّي أشهد عَلَيْكُم السَّمَوَات السَّبْعَ وَالْأَرَضِينَ السَّبْعَ وَأُشْهِدُ عَلَيْكُمْ أَبَاكُمْ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَام أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَمْ نَعْلَمْ بِهَذَا اعْلَمُوا أَنَّهُ لَا إِلَهَ غَيْرِي وَلَا رَبَّ غَيْرِي فَلَا تُشْرِكُوا بِي شَيْئا وَإِنِّي سَأُرْسِلُ إِلَيْكُمْ رُسُلِي يُذَكِّرُونَكُمْ عَهْدِي وَمِيثَاقِي وَأُنْزِلُ عَلَيْكُمْ كُتُبِي قَالُوا شَهِدْنَا بِأَنَّكَ رَبُّنَا وَإِلَهُنَا لَا رب لَنَا غَيْرُكَ فَأَقَرُّوا بِذَلِكَ وَرُفِعَ عَلَيْهِمْ آدَمُ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ فَرَأَى الْغَنِيَّ وَالْفَقِيرَ وَحَسَنَ الصُّورَةِ وَدُونَ ذَلِكَ فَقَالَ رَبِّ لَوْلَا سَوَّيْتَ بَيْنَ عِبَادِكَ قَالَ إِنِّي أَحْبَبْتُ أَنْ أَشْكُرَ وَرَأَى الْأَنْبِيَاءَ فِيهِمْ مِثْلَ السُّرُجِ عَلَيْهِمُ النُّورُ خُصُّوا بِمِيثَاقٍ آخَرَ فِي الرِّسَالَةِ وَالنُّبُوَّةِ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى (وَإِذ أَخذنَا من النَّبِيين ميثاقهم)
إِلَى قَوْله (عِيسَى ابْن مَرْيَم)
كَانَ فِي تِلْكَ الْأَرْوَاحِ فَأَرْسَلَهُ إِلَى مَرْيَمَ فَحُدِّثَ عَنْ أُبَيٍّ أَنَّهُ دَخَلَ مِنْ فِيهَا. رَوَاهُ أَحْمد

عن ابي بن كعب في قول الله عز وجل (واذ اخذ ربك من بني ادم من ظهورهم ذرياتهم واشهدهم على انفسهم) الاية قال جمعهم فجعلهم ارواحا ثم صورهم فاستنطقهم فتكلموا ثم اخذ عليهم العهد والميثاق واشهدهم على انفسهم الست بربكم قال فاني اشهد عليكم السموات السبع والارضين السبع واشهد عليكم اباكم ادم عليه السلام ان تقولوا يوم القيامة لم نعلم بهذا اعلموا انه لا اله غيري ولا رب غيري فلا تشركوا بي شيىا واني سارسل اليكم رسلي يذكرونكم عهدي وميثاقي وانزل عليكم كتبي قالوا شهدنا بانك ربنا والهنا لا رب لنا غيرك فاقروا بذلك ورفع عليهم ادم ينظر اليهم فراى الغني والفقير وحسن الصورة ودون ذلك فقال رب لولا سويت بين عبادك قال اني احببت ان اشكر وراى الانبياء فيهم مثل السرج عليهم النور خصوا بميثاق اخر في الرسالة والنبوة وهو قوله تعالى (واذ اخذنا من النبيين ميثاقهم) الى قوله (عيسى ابن مريم) كان في تلك الارواح فارسله الى مريم فحدث عن ابي انه دخل من فيها. رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


On God’s words, “When your Lord took from the children of Adam from their backs their offspring,” * Ubayy b. Ka‘b said:
He gathered them and put them in pairs. Thereafter He fashioned them and endowed them with speech, and they spoke. He then made an agreement and covenant with them, calling them to witness regarding themselves, [saying] “Am I not your Lord?” They replied, “Yes.” He said, “I call the seven heavens and the seven earths to witness regarding you, and I call your father Adam to witness regarding you, lest you should say on the day of resurrection, ‘We did not know of this.’ Know that there is no god other than me and no lord other than me, and do not associate anything with me. I shall send to you my messengers to call to your remembrance my agreement and my covenant, and I shall send down my books to you. They replied, “We testify that Thou art our Lord and our God; we have no other lord and no other god but Thee.” So they confirmed that. Adam was raised above them and looked at them, and seeing the rich and the poor, the beautiful and those not so beautiful, he asked, “My Lord, why didst Thou not make Thy servants equal?” He replied, “I wanted to be thanked.” He also saw among them the prophets like lamps with light in them. They had another -special covenant concerning their mission and prophetic office, viz. His words, “And when we took from the prophets their covenant... Jesus son-of Mary.” ** He was among those spirits and He sent him to Mary. Ubayy is quoted as saying that he entered by her mouth.

Ahmad transmitted it.

* ibid.
** Quran, 33:7.


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১২৩-[৪৫] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসেছিলাম এবং দুনিয়াতে যা কিছু সংঘটিত হচ্ছে- এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা যখন শুনবে যে, কোন পাহাড় তার নিজের জায়গা থেকে সরে গেছে তাতে তোমরা বিশ্বাস করতে পারো। কিন্তু যখন শুনবে যে, কোন মানুষের (সৃষ্টিগত) স্বভাব-চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করবে না। কেননা মানুষ সেদিকেই প্রত্যাবর্তন করবে যার উপর তার সৃষ্টি হয়েছে।[1] (আহমাদ)

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَتَذَاكَرُ مَا يَكُونُ إِذْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
إِذَا سَمِعْتُمْ بِجَبَلٍ زَالَ عَن مَكَانَهُ فصدقوا وَإِذَا سَمِعْتُمْ بِرَجُلٍ تَغَيَّرَ عَنْ خُلُقِهِ فَلَا تصدقوا بِهِ وَإنَّهُ يَصِيرُ إِلَى مَا جُبِلَ عَلَيْهِ . رَوَاهُ أَحْمَدُ

وعن ابي الدرداء قال بينما نحن عند رسول الله صلى الله عليه وسلم نتذاكر ما يكون اذ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا سمعتم بجبل زال عن مكانه فصدقوا واذا سمعتم برجل تغير عن خلقه فلا تصدقوا به وانه يصير الى ما جبل عليه . رواه احمد

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Abud Darda’ said:
While we were with God’s messenger discussing what would come to pass God’s messenger said, “When you hear that a mountain has moved from its place believe it; but when you hear that a man's nature has changed do not believe it, for he will remain true to his inborn disposition.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: হাদীসের মর্মার্থ হলো কাজগুলো তার ভাগ্যে যা লিখা আছে তাই হবে। বুদ্ধিমত্তা হতে পারে, অপারগতা হতে পারে। অতএব তোমরা যখন শুনতে পাবে যে, কোন বুদ্ধিমান বোকা অথবা কোন বোকা বুদ্ধিমান হয়েছে তা সত্যায়ন করবে না। পাহাড় একস্থান থেকে অপরস্থানে সরে যাওয়া সম্ভব, তবে মানুষের চরিত্র যেটা তাক্বদীরে লিপিবদ্ধ তা পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়।

‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী  (রহঃ) বলেন, হাদীস মতে প্রকৃত চরিত্র পরিবর্তন হওয়া অসম্ভব। তবে গুণগতভাবে পরিবর্তন আসা সম্ভব বরং এটা করতে বান্দা আদিষ্ট, এটাকে আত্মসংশোধনী বা পরিমার্জন বলা হয়। এমনটাই আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন,

 قَدْ اَفْلَحَ مَنْ تَزَكّى

‘‘যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করলো সে সফল হলো।’’ (সূরাহ্ আল আ‘লা- ৮৭ঃ ১৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১২৪-[৪৬] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি যে বিষ মিশানো ছাগলের মাংস (গোসত/গোস্ত) খেয়েছিলেন, তার বিষক্রিয়ার কারণে প্রতি বছরই আপনি এত কষ্ট অনুভব করছেন। তিনি বললেন, প্রতি বছরই আমার যে যন্ত্রণা বা অসুখ হয়, এটা আমার (নির্ধারিত) তাক্বদীরে লিপিবদ্ধ হয়েছিল, অথচ তখন আদম (আঃ) ভূগর্ভেই ছিলেন।[1] (ইবনু মাজাহ্)

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثالث

وَعَن أم سَلمَة يَا رَسُول الله لَا يزَال يصيبك كُلِّ عَامٍ وَجَعٌ مِنَ الشَّاةِ الْمَسْمُومَةِ الَّتِي أَكَلْتَ قَالَ: «مَا أَصَابَنِي شَيْءٌ مِنْهَا إِلَّا وَهُوَ مَكْتُوبٌ عَلَيَّ وَآدَمُ فِي طِينَتِهِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

وعن ام سلمة يا رسول الله لا يزال يصيبك كل عام وجع من الشاة المسمومة التي اكلت قال: «ما اصابني شيء منها الا وهو مكتوب علي وادم في طينته» . رواه ابن ماجه

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 3


Umm Salama said, “Messenger of God, you continue to be afflicted annually with pain from the poisoned sheep you ate.” He replied, “I am afflicted by nothing due to it which was not decreed for me while Adam was still a lump of clay.”

Ibn Majah transmitted it.


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে