পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবরের ‘আযাব
এখানে কবর দ্বারা উদ্দেশ হচ্ছে ’’আলামুল বারযাখ’’। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ اِلى يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ
অর্থাৎ- ’’পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত তারা বারযাখে থাকবে।’’ (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩: ১০০)
আর বারযাখ হচ্ছে দুনিয়া ও আখিরাতের মাঝের এক পৃথিবী। এখানে কবর দ্বারা মৃত্যু বরণকারী লাশকে দাফন করার গর্ত উদ্দেশ্য নয়। কেননা, অনেক মৃত ব্যক্তি আছে। যেমন, পানিতে ডুবে যে মৃত্যুবরণ করেছে অথবা আগুনে পুড়ে অথবা প্রাণী তাকে খেয়ে ফেলেছে এগুলোকে দাফন করা হয় না অথচ এদেরকেও শাস্তি দেয়া হয় এবং নি’আমাতও দান করা হয়।
এখানেإثبات عذاب القبر বলে শুধুমাত্র শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে দু’টি কারণে। এক- গুরুত্বারোপ করা। দুই- শাস্তি যাদেরকে দেয়া হবে সেই কাফির বেঈমানদের সংখ্যা বেশী।
১২৫-[১] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমকে যখন কবরে জিজ্ঞেস করা হয় তখন সে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই এবং নিঃসন্দেহে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল। ’’যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনে অটল ও অবিচল রাখেন’’- (সূরাহ্ ইবরাহীম ১৪: ২৭)। আল্লাহর এ বাণীর অর্থ হলো এটাই।
অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’ইউসাব্বিতুল্লা-হুল্লাযীনা আ-মানূ বিল ক্বওলিস্ সা-বিতি’’- এ আয়াত কবরের ’আযাব সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। কবরে মৃতকে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমার রব কে? সে বলে, আমার রব মহান আল্লাহ তা’আলা। আর আমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।[1] (বুখারী, মুসলিম)
بَابُ اِثْبَاتِ عَذَابِ الْقَبْرِ
عَن الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْمُسْلِمُ إِذَا سُئِلَ فِي الْقَبْرِ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ (يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَة)
وَفِي رِوَايَةٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: (يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِت)
نَزَلَتْ فِي عَذَابِ الْقَبْرِ يُقَالُ لَهُ: مَنْ رَبك؟ فَيَقُول: رَبِّي الله ونبيي مُحَمَّد
Chapter: Confirmation of the Punishment in the Grave - Section 1
Al-Bara’ b. ‘Azib reported the Prophet as saying, “When a Muslim is questioned in the grave he testifies that there is no god but God and that Muhammad is God’s messenger.” That is verified by God’s words, “God establishes those who believe with the word that stands firm in this world and the next.” * In a version the Prophet said:
“God establishes those who believe with the word which stands firm” was revealed concerning the punishment in the grave. One will be asked who his Lord is and will reply that his Lord is God and his prophet is Muhammad.
(Bukhari and Muslim.)
* Quran, 14:27.
ব্যাখ্যা: (قَالَ الْمُسْلِمُ) কোন বর্ণনায় الْمُؤْمِنُ এর উল্লেখ পাওয়া যায় এবং এর দ্বারা উদ্দেশ্য جنس তথা জাতি। তা পুরুষ মহিলা উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করবে। অথবা এমন হতে পারে যে, মহিলার হুকুম বুঝা যাবে পুরুষের অনুসারিণী হওয়ার দিক দিয়ে। এখানে কবরের কথা উল্লেখ করে নির্দিষ্ট করার কারণ হচ্ছে সাধারণত কবরেই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।
অথবা এটা প্রত্যেক ব্যক্তির থাকার স্থানের নামও কবর হতে পারে, এখানে যার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে সে বিষয়গুলো অনুল্লেখিত আছে, সেগুলো হলো তার রব তার নাবী এবং তার ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে যেমনটা অন্য হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায়।
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবরের ‘আযাব
১২৬-[২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বান্দাকে যখন কবরে রেখে তার সঙ্গীগণ (আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব) সেখান থেকে চলে আসে, আর তখনও সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায়। তার নিকট (কবরে) দু’জন মালাক (ফেরেশতা) পৌঁছেন এবং তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করেন, তুমি দুনিয়াতে এই ব্যক্তির (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) ব্যাপারে কী জান? এ প্রশ্নের উত্তরে মু’মিন বান্দা বলে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল। তখন তাকে বলা হয়, ঐ দেখে নাও, তোমার ঠিকানা জাহান্নাম কিরূপ (জঘন্য) ছিল। তারপর আল্লাহ তা’আলা তোমার সে ঠিকানা (জাহান্নামকে) জান্নাতের সাথে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তখন সে বান্দা দু’টি ঠিকানা (জান্নাত-জাহান্নাম) একই সঙ্গে থাকবে। কিন্তু মুনাফিক্ব ও কাফিরকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, দুনিয়াতে এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে তুমি কী ধারণা পোষণ করতে? তখন সে উত্তর দেয়, আমি বলতে পারি না (প্রকৃত সত্য কী ছিল)। মানুষ যা বলতো আমিও তাই বলতাম। তখন তাঁকে বলা হয়, তুমি বিবেক-বুদ্ধি দিয়েও বুঝতে চেষ্টা করনি এবং (আল্লাহর কুরআন) পড়েও জানতে চেষ্টা করনি। এ কথা বলে তাকে লোহার হাতুড়ি দিয়ে কঠিনভাবে মারতে থাকে, এতে সে তখন উচ্চস্বরে চিৎকার করতে থাকে। এ চীৎকারের শব্দ (পৃথিবীর) জিন আর মানুষ ছাড়া নিকটস্থ সকলেই শুনতে পায়। (মুত্তাফাকুন ’আলায়হি, শব্দসমূহ বুখারীর)[1]
بَابُ اِثْبَاتِ عَذَابِ الْقَبْرِ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنه حَدثهمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ فَيَقُولَانِ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ فَيَقُولُ أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ فَيُقَالُ لَهُ انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الْجنَّة فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا قَالَ قَتَادَة وَذكر لنا أَنه يفسح لَهُ فِي قَبره ثمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيث أنس قَالَ وَأَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ لَا أَدْرِي كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ فَيُقَالُ لَا دَرَيْتَ وَلَا تَلَيْتَ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثقلَيْن» وَلَفظه للْبُخَارِيّ
Chapter: Confirmation of the Punishment in the Grave - Section 1
Anas reported God’s messenger as saying, “When a man is placed in his grave and his friends leave him, he hears the beat of their sandals. Then two angels come to him and, having made him sit up, they say, ‘What was your opinion of this man, of Muhammad?’ The believer replies, ‘I testify that he is God’s servant and messenger.’ He is then told to look at his abode in hell for which God has substituted for him an abode in paradise, and he sees them both. The hypocrite and infidel are asked, ‘What was your opinion of this man?’ and reply, ‘I do not know; I held the opinion others held.’ They will retort, ‘You neither knew nor did you follow [the believers].’ He will then be given a blow with iron hammers and will utter a shout which will be heard by all who are near him, with the exception of men and jinn.”
(Bukhari and Muslim. The wording is Bukhari’s.)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবরের ‘আযাব
১২৭-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মারা যায়, (কবরে) তাকে সকাল-সন্ধ্যায় তার (ভবিষ্যৎ) অবস্থান দেখানো হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তার অবস্থান জান্নাত আর যদি জাহান্নামী হয় তবে তার অবস্থান জাহান্নাম দেখানো হয়। আর তাকে বলা হয়, এটাই তোমার প্রকৃত অবস্থান। অতঃপর কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে উঠিয়ে সেখানে প্রেরণ করবেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ اِثْبَاتِ عَذَابِ الْقَبْرِ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا مَاتَ عُرِضَ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ إِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ فَيُقَالُ هَذَا مَقْعَدُكَ حَتَّى يَبْعَثك الله يَوْم الْقِيَامَة»
Chapter: Confirmation of the Punishment in the Grave - Section 1
‘Abdallah b. ‘Umar reported God’s messenger as saying, “When one of you dies, his abode among the inhabitants of paradise will be shown him morning and evening if he is to be one of them; but if he is to be one of the inhabitants of hell, his abode among them will be shown him. He will be told that this is his abode to which God will finally raise him on the day of resurrection.”
(Bukhari and Muslim.)
ব্যাখ্যা: তার নিকট তার রূহ ফিরিয়ে দেয়া হয় যাতে করে তার সাথে কথা বলা যায় এবং সে অনুধাবন করতে পারে।
প্রশ্ন হলো, প্রতিনিয়তই কি তার নিকট তার রূহ ফিরিয়ে দেয়া হয়, নাকি একবারই দেয়া হয়।
‘একবারই দেয়া হয়’ এ মতটিই বেশী গ্রহণযোগ্য, আনাস (রাঃ)-এর হাদীসের কারণে এবং অপরাপর কিছু হাদীছ রয়েছে যা তাই প্রমাণ করে।
সকাল-সন্ধ্যা দিনের দুই প্রান্তে অথবা উদ্দেশ্য সার্বক্ষণিকের জন্যও হতে পারে। রূহের সামনে তার আসল ঠিকানা পেশ করা এবং মু’মিনকে নি‘আমাত এবং কাফিরকে শাস্তি প্রদান করার মাধ্যমে প্রমাণ হয় কবরের শাস্তি সাব্যস্ত এবং শরীরের মতো রূহ শেষ হয়ে যায় না। কেননা কোন জিনিস পেশ করা জীবিত ছাড়া অসম্ভব। তাহলে বুঝা গেল রূহ শেষ হয় না।
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবরের ‘আযাব
১২৮-[৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ইয়াহুদী নারী তাঁর কাছে এলো। সে কবরের ’আযাব প্রসঙ্গে কথা উঠাল এবং বলল, হে ’আয়িশাহ্! আল্লাহ তা’আলা তোমাকে কবরের ’আযাব থেকে মুক্তি দিন। অতঃপর ’আয়িশাহ্ (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কবরের ’আযাবের সত্যতা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হাঁ, কবরের ’আযাব সত্য। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি কক্ষনো এমন দেখিনি যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন অথচ কবরের ’আযাব হতে আল্লাহর নিকট মুক্তির দু’আ করেননি। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ اِثْبَاتِ عَذَابِ الْقَبْرِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ يَهُودِيَّةً دَخَلَتْ عَلَيْهَا فَذَكَرَتْ عَذَابَ الْقَبْرِ فَقَالَتْ لَهَا أَعَاذَكِ اللَّهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ فَسَأَلَتْ عَائِشَةُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَذَابِ الْقَبْرِ فَقَالَ: «نَعَمْ عَذَابُ الْقَبْر قَالَت عَائِشَة رَضِي الله عَنْهَا فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بعد صلى صَلَاة إِلَّا تعوذ من عَذَاب الْقَبْر»
Chapter: Confirmation of the Punishment in the Grave - Section 1
‘A’isha told of a Jewess who visited her and mentioned the punishment in the grave adding, “May God preserve you from the punishment of the grave!” ‘A’isha asked God’s messenger about the subject and he said, “Yes, the punishment in the grave is real.” ‘A’isha said, “After that I never saw God’s messenger observing a prayer without seeking God’s protection from the punishment in the grave.”
(Bukhari and Muslim.)
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইয়াহূদীরাও কবরের শাস্তিকে স্বীকার করে এবং তা সত্য বলে মানে।
উল্লেখিত রিওয়ায়াতগুলোর সমাধান হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে ইয়াহূদীকে সমর্থন করেন তার কাছে ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার আগে। তারপরে তিনি ওয়াহী অবতীর্ণ হলে জানিয়ে দেন এবং সকলকে কবরের ‘আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনার আদেশ দেন। (আল্লাহ ভালো জানেন)
পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - কবরের ‘আযাব
১২৯-[৫] যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানী নাজ্জার গোত্রের একটি বাগানে তাঁর একটি খচ্চরের উপর আরোহী ছিলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে ছিলাম। হঠাৎ খচ্চরটি লাফিয়ে উঠল এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রায় মাটিতে ফেলে দেবার উপক্রম করল। দেখা গেল, সামনে পাঁচ-ছয়টি কবর রয়েছে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ কবরবাসীদের কে চেনে? এক ব্যক্তি বললো, আমি! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কবে মারা গেছে? সে বললো, শির্কের যুগে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ উম্মাত তথা কবরবাসীরা তাদের কবরে পরীক্ষায় পড়েছে (শাস্তির কবলে পড়েছে)। তোমরা মানুষকে ভয়ে কবর দেয়া ছেড়ে দিবে (এ আশংকা না থাকলে) আমি আল্লাহর কাছে দু’আ করতাম, তিনি যেন তোমাদেরকেও কবরের ’আযাব শুনান, যে কবরের ’আযাব আমি শুনতে পাচ্ছি।
অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা সকলে জাহান্নামের ’আযাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। সকলে একত্রে বললেন, আমরা জাহান্নামের ’আযাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা কবরের ’আযাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। তারা সকলে একত্রে বললেন, আমরা কবরের ’আযাব হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা সকলে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ফিতনাহ্ (ফিতনা) হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। তখন সকলে একত্রে বললেন, আমরা সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ফিতনাহ্ (ফিতনা) হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা দাজ্জালের সকল ফিতনাহ্ (ফিতনা) হতে আশ্রয় চাও। সকলে বললেন, আমরা দাজ্জালের ফিতনাহ্ (ফিতনা) হতেও আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। (মুসলিম)[1]
بَابُ اِثْبَاتِ عَذَابِ الْقَبْرِ
عَن زيد بن ثَابت قَالَ بَيْنَمَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَائِطٍ لِبَنِي النَّجَّارِ عَلَى بَغْلَةٍ لَهُ وَنَحْنُ مَعَهُ إِذْ حَادَتْ بِهِ فَكَادَتْ تُلْقِيهِ وَإِذَا أَقْبُرُ سِتَّةٍ أَو خَمْسَة أَو أَرْبَعَة قَالَ كَذَا كَانَ يَقُول الْجريرِي فَقَالَ: «من يعرف أَصْحَاب هَذِه الأقبر فَقَالَ رجل أَنا قَالَ فَمَتَى مَاتَ هَؤُلَاءِ قَالَ مَاتُوا فِي الْإِشْرَاك فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ الْأُمَّةَ تُبْتَلَى فِي قُبُورِهَا فَلَوْلَا أَنْ لَا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَاب النَّار فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّه من عَذَاب الْقَبْر قَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنَ الْفِتَنِ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الْفِتَنِ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ قَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
Chapter: Confirmation of the Punishment in the Grave - Section 1
Zaid b. Thabit said:
While we were accompanying God’s messenger who was riding a she-mule in a garden belonging to the B. an-Najjar, the animal shied and almost unseated him. It happened that there were five or six graves there, so he asked if anyone knew who were buried in them. A man replied that he did, and on being asked when they died said it was in the period when the people were polytheists. The Prophet then said, “These people are being afflicted in their graves, and were it not that you would cease to bury, I would ask God to let you hear the punishment in the grave which I am hearing.” Then he turned facing us and said, “Seek refuge in God from the punishment of the fire.” They said, “We seek refuge in God from the punishment of the fire.” He said, “Seek refuge in God from the punishment in the grave.” They said, “We seek refuge in God from the punishment in the grave.” He said, “Seek refuge in God from trials both open and secret.” They said, “We seek refuge in God from trials both open and secret.” He said, “Seek refuge in God from the trial of ad-Dajjal!” They said, “We seek refuge in God from the trial of ad-Dajjal.”
Muslim transmitted it.
ব্যাখ্যা: (حَادَتْ) ঝুঁকে গেল এবং ভেঙ্গে যেতে চাইল কবরবাসীদের শাস্তির আওয়াজ শুনে। চতুস্পদ জন্তু যে কবরের ‘আযাব শুনতে পায় তা সহীহ ভিত্তিতে প্রমাণিত। যেমন, আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত ইমাম আহমাদের হাদীসঃ মানব-দানব বাদে সকলেই কবরের শাস্তি শুনতে পায়।