পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ آمِنِينَ وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِمْ مِنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَىٰ سُرُرٍ مُتَقَابِلِينَ لَا يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُمْ مِنْهَا بِمُخْرَجِينَ

অর্থাৎ, নিশ্চয় পরহেযগাররা বাস করবে উদ্যান ও প্রস্রবণসমূহে। (তাদেরকে বলা হবে,) তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে তাতে প্রবেশ কর। আমি তাদের অন্তরে যে ঈর্ষা থাকবে তা দূর করে দেব; তারা ভ্রাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে আসনে অবস্থান করবে। সেথায় তাদেরকে অবসাদ স্পর্শ করবে না এবং তারা সেথা হতে বহিষ্কৃতও হবে না। (সূরা হিজর ৪৫-৪৮)

তিনি আরো বলেন,

يَا عِبَادِ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ وَلَا أَنْتُمْ تَحْزَنُونَ - الَّذِينَ آمَنُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا مُسْلِمِينَ - ادْخُلُوا الْجَنَّةَ أَنْتُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ تُحْبَرُونَ - يُطَافُ عَلَيْهِمْ بِصِحَافٍ مِنْ ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنْفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ وَأَنْتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ - وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ - لَكُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ كَثِيرَةٌ مِنْهَا تَأْكُلُونَ

অর্থাৎ, হে আমার বান্দাগণ! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না। যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিলে এবং আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) ছিলে। তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিণীগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর। স্বর্ণের থালা ও পান পাত্র নিয়ে ওদের মাঝে ফিরানো হবে, সেখানে রয়েছে এমন সমস্ত কিছু, যা মন চায় এবং যাতে নয়ন তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা চিরকাল থাকবে। এটিই জান্নাত, তোমরা তোমাদের কর্মের ফলস্বরূপ যার অধিকারী হয়েছ। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে। (সূরা যুখরুফ ৬৮-৭৩)

তিনি অন্য জায়গায় বলেন,

اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ مَقَامٍ اَمِیْنٍ فِیْ جَنّٰتٍ وَّعُیُوْنٍ یَّلْبَسُوْنَ مِنْ سُنْدُسٍ وَّاِسْتَبْرَقٍ مُّتَقٰبِلِیْنَ ككَذَٰلِكَ وَزَوَّجْنَاهُمْ بِحُورٍ عِينٍ يَدْعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَاكِهَةٍ آمِنِينَ لَا یَذُوْقُوْنَ فِیْ الْمَوْتَ اِلَّا الْمَوْتَةَ الْاُوْلٰی وَوَقَاهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكَ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ

অর্থাৎ, নিশ্চয় সাবধানীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে- বাগানসমূহে ও ঝরনারাজিতে, ওরা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং মুখোমুখি হয়ে বসবে। এরূপই ঘটবে ওদের; আর আয়তলোচনা হুরদের সাথে তাদের বিবাহ দেব। সেখানে তারা নিশ্চিন্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে। (ইহকালে) প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। আর তিনি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন। (এ প্রতিদান) তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহস্বরূপ। এটিই তো মহাসাফল্য। (সূরা দুখান ৫১-৫৭)

আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন,

اِنَّ الْاَبْرَارَ لَفِیْ نَعِیْمٍ عَلَی الْاَرَآئِكِ یَنْظُرُوْنَ تَعْرِفُ فِیْ وُجُوْھِھِمْ نَضْرَةَ النَّعِیْمِ یُسْقَوْنَ مِنْ رَّحِیْقٍ مَّخْتُوْمٍ خِتٰمُهٗ مِسْكٌ وَفِیْ ذٰلِكَ فَلْیَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُوْنَ وَمِزَاجُهٗ مِنْ تَسْنِیْمٍ عَیْنًا یَّشْرَبُ بِھَا الْمُقَرَّبُوْنَ

অর্থাৎ, পুণ্যবানগণ তো থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দ্যে। তারা সুসজ্জিত আসনে বসে দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবে। তাদেরকে মোহর আঁটা বিশুদ্ধ মদিরা হতে পান করানো হবে। এর মোহর হচ্ছে কস্ত্তরীর। আর তা লাভের জন্যই প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতা করুক। এর মিশ্রণ হবে তাসনীমের (পানির)। এটা একটি প্রস্রবণ, যা হতে নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পান করবে। (সূরা মুত্বাফিফীন ২২-২৮)

এ মর্মে আরো বহু আয়াত বিদ্যমান।

(৩৮৭৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’আল্লাহ যখন জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্টি করলেন, তখন জিবরীলকে জান্নাতের দিকে পাঠিয়ে বললেন, ’যাও, জান্নাত এবং তার অধিবাসীদের জন্য প্রস্তুতকৃত সামগ্রী দর্শন কর।’ সুতরাং তিনি গেলেন এবং দর্শন ক’রে ফিরে এসে বললেন, ’আপনার সম্মানের কসম! যে কেউ এর কথা শুনবে, সে এতে প্রবেশ করতে চাইবে।’ অতঃপর আল্লাহ জান্নাতকে কষ্টসাধ্য কর্মসমূহ দিয়ে ঘিরে দিতে আদেশ করলেন। তারপর আবার তাঁকে বললেন, ’যাও, জান্নাত এবং তার অধিবাসীদের জন্য প্রস্তুতকৃত সামগ্রী দর্শন কর।’ সুতরাং তিনি গেলেন এবং দর্শন ক’রে ফিরে এসে বললেন, ’আপনার সম্মানের কসম! আমার আশঙ্কা হয় যে, কেউ তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’

অতঃপর আল্লাহ তাঁকে জাহান্নামের দিকে পাঠিয়ে বললেন, ’যাও, জাহান্নাম এবং তার অধিবাসীদের জন্য প্রস্তুতকৃত সামগ্রী দর্শন কর।’ সুতরাং তিনি গেলেন এবং দেখলেন, তার আগুনের এক অংশ অপর অংশের উপর চেপে রয়েছে। অতঃপর তিনি ফিরে এসে বললেন, ’আপনার সম্মানের কসম! যে কেউ এর কথা শুনবে, সে এতে প্রবেশ করতে চাইবে না।’ তারপর জাহান্নামকে মনোলোভা জিনিসসমূহ দিয়ে ঘিরে দিতে আদেশ করলেন এবং পুনরায় তাঁকে বললেন, ’যাও, জাহান্নাম এবং তার অধিবাসীদের জন্য প্রস্তুতকৃত সামগ্রী দর্শন কর।’ সুতরাং তিনি গেলেন এবং দর্শন ক’রে ফিরে এসে বললেন, ’আপনার সম্মানের কসম! আমার আশঙ্কা হয় যে, কেউ পরিত্রাণ পাবে না, সবাই তাতে প্রবেশ করবে।’

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَمَّا خَلَقَ اللهُ الْجَنَّةَ قَالَ لِجِبْرِيلَ : اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا ثُمَّ حَفَّهَا بِالْمَكَارِهِ ثُمَّ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لاَ يَدْخُلَهَا أَحَدٌ قَالَ فَلَمَّا خَلَقَ اللهُ النَّارَ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ فَيَدْخُلُهَا فَحَفَّهَا بِالشَّهَوَاتِ ثُمَّ قَالَ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : أَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لاَ يَبْقَى أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا

عن ابى هريرة ان رسول الله ﷺ قال لما خلق الله الجنة قال لجبريل : اذهب فانظر اليها فذهب فنظر اليها ثم جاء فقال : اى رب وعزتك لا يسمع بها احد الا دخلها ثم حفها بالمكاره ثم قال : يا جبريل اذهب فانظر اليها فذهب فنظر اليها ثم جاء فقال : اى رب وعزتك لقد خشيت ان لا يدخلها احد قال فلما خلق الله النار قال : يا جبريل اذهب فانظر اليها فذهب فنظر اليها ثم جاء فقال : اى رب وعزتك لا يسمع بها احد فيدخلها فحفها بالشهوات ثم قال : يا جبريل اذهب فانظر اليها فذهب فنظر اليها ثم جاء فقال : اى رب وعزتك لقد خشيت ان لا يبقى احد الا دخلها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৭৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমরা বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! জান্নাতের নির্মাণসামগ্রী সম্বন্ধে আমাদেরকে বলুন।’ তিনি বললেন, (তার অট্টালিকার) একটি ইট সোনার, একটি ইট চাঁদির, তার মাঝে সংযোজক হল তীব্র সুগন্ধময় কস্তুরী। তার পাথর-কাঁকর হল মণি-মুক্তা। তার মাটি হল জাফরান। যে তাতে প্রবেশ করবে, সে সুখী হবে এবং কোন কষ্ট পাবে না। চিরস্থায়ী হবে, মৃত্যুবরণ করবে না। তার লেবাসপোশাক পুরাতন হবে না। তার যৌবন নষ্ট হবে না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَخْبِرْنَا عَنْ الْجَنَّةِ مَا بِنَاؤُهَا؟ قَالَ لَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ مِلَاطُهَا الْمِسْكُ الْأَذْفَرُ حَصْبَاؤُهَا الْيَاقُوتُ وَاللُّؤْلُؤُ وَتُرْبَتُهَا الْوَرْسُ وَالزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلُهَا يَخْلُدُ لَا يَمُوتُ وَيَنْعَمُ لَا يَبْأَسُ لَا يَبْلَى شَبَابُهُمْ وَلَا تُخَرَّقُ ثِيَابُهُمْ

عن ابي هريرة قال قلنا يا رسول الله اخبرنا عن الجنة ما بناوها؟ قال لبنة من ذهب ولبنة من فضة ملاطها المسك الاذفر حصباوها الياقوت واللولو وتربتها الورس والزعفران من يدخلها يخلد لا يموت وينعم لا يباس لا يبلى شبابهم ولا تخرق ثيابهم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৭৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (শামের) সাইহান ও জাইহান, (ইরাকের) ফুরাত এবং (মিসরের) নীল প্রত্যেক নদীই জান্নাতের নদ-নদীসমূহের অন্যতম।

وَ عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ سَيْحَانُ وَجَيْحَانُ وَالفُرَاتُ وَالنِّيلُ كُلٌّ مِنْ أَنْهَارِ الجَنَّةِ رواه مسلم

و عن ابى هريرة قال : قال رسول الله ﷺ سيحان وجيحان والفرات والنيل كل من انهار الجنة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৭৯) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতবাসীরা জান্নাতের মধ্যে পানাহার করবে; কিন্তু পেশাব-পায়খানা করবে না, তারা নাক ঝাড়বে না, পেশাবও করবে না। বরং তাদের ঐ খাবার ঢেকুর ও কস্তুরীবৎ সুগন্ধময় ঘাম (হয়ে দেহ থেকে বের হয়ে যাবে)। তাদের মধ্যে তাসবীহ ও তাকবীর পড়ার স্বয়ংক্রিয় শক্তি প্রক্ষিপ্ত হবে, যেমন শ্বাসক্রিয়ার শক্তি স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে।

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَأْكُلُ أَهْلُ الجَنَّةِ فِيهَا وَيَشْرَبُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ وَلاَ يَبُولُونَ وَلكِنْ طَعَامُهُمْ ذٰلِكَ جُشَاءٌ كَرَشْحِ المِسْكِ يُلْهَمُونَ التَّسْبِيحَ وَالتَّكْبِيرَ كَمَا يُلْهَمُونَ النَّفَسَ رواه مسلم

وعن جابر قال : قال رسول الله ﷺ ياكل اهل الجنة فيها ويشربون ولا يتغوطون ولا يمتخطون ولا يبولون ولكن طعامهم ذلك جشاء كرشح المسك يلهمون التسبيح والتكبير كما يلهمون النفس رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮০) আবূ হুরাইরা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ বলেছেন, ’আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন জিনিস প্রস্তুত রেখেছি, যা কোন চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি।’ তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার; যার অর্থ, কেউই জানে না তার জন্য তার কৃতকর্মের বিনিময় স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কী পুরস্কার লুকিয়ে রাখা হয়েছে। (সূরা সিজদা ১৭)

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قَالَ اللهُ تَعَالٰـى : أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ وَاقْرَؤُوا إِنْ شِئْتُمْ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنِ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ متفق عَلَيْهِ

وعن ابي هريرة قال : قال رسول الله ﷺ قال الله تعالـى : اعددت لعبادي الصالحين ما لا عين رات ولا اذن سمعت ولا خطر على قلب بشر واقرووا ان شىتم فلا تعلم نفس ما اخفي لهم من قرة اعين جزاء بما كانوا يعملون متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮১) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে প্রথম প্রবেশকারী দলটির আকৃতি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত হবে। অতঃপর তাদের পরবর্তী দলটি আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় জ্যোতির্ময় হবে। তারা (জান্নাতে) পেশাব করবে না, পায়খানা করবে না, থুথু ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুণী হবে স্বর্ণের। তাদের ঘাম হবে কস্ত্তরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধ কাঠ। তাদের স্ত্রী হবে আয়তলোচনা হুরগণ। তারা সকলেই একটি মানব কাঠামো, আদি পিতা আদমের আকৃতিতে হবে (যাদের উচ্চতা হবে) ষাট হাত পর্যন্ত।

বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে যে, (জান্নাতে) তাদের পাত্র হবে স্বর্ণের, তাদের গায়ের ঘাম হবে কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন দু’জন স্ত্রী থাকবে, যাদের সৌন্দর্যের দরুন মাংস ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের মজ্জা দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না। পারস্পরিক বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর একটি অন্তরের মত হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠে রত থাকবে।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَوَّلُ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ القَمَرِ لَيْلَةَ البَدْرِ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ عَلَى أَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً لاَ يَبُولُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ وَلاَ يَتْفُلُونَ، وَلاَ يَمْتَخِطُونَ أَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ وَرَشْحُهُمُ المِسْكُ وَمَجَامِرُهُمُ الأُلُوَّةُ – عُودُ الطِّيبِ – أَزْوَاجُهُمُ الحُورُ العِيْنُ عَلَى خَلْقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ سِتُّونَ ذِرَاعاً فِي السَّمَاءِ متفق عَلَيْهِ
وَفِي رِوَايَةِ البُخَارِي وَمُسلِمٍ آنِيَتُهُمْ فِيهَا الذَّهَبُ وَرَشْحُهُمُ المِسْكُ وَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ يُرَى مُخُّ سَاقِهِمَا مِنْ وَرَاءِ اللَّحْمِ مِنَ الحُسْنِ لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ، وَلاَ تَبَاغُضَ، قُلُوبُهُمْ قَلْبُ وَاحِدٍ يُسَبِّحُونَ اللهَ بُكْرَةً وَعَشِياً

وعنه قال : قال رسول الله ﷺ اول زمرة يدخلون الجنة على صورة القمر ليلة البدر ثم الذين يلونهم على اشد كوكب دري في السماء اضاءة لا يبولون ولا يتغوطون ولا يتفلون، ولا يمتخطون امشاطهم الذهب ورشحهم المسك ومجامرهم الالوة – عود الطيب – ازواجهم الحور العين على خلق رجل واحد على صورة ابيهم ادم ستون ذراعا في السماء متفق عليه وفي رواية البخاري ومسلم انيتهم فيها الذهب ورشحهم المسك ولكل واحد منهم زوجتان يرى مخ ساقهما من وراء اللحم من الحسن لا اختلاف بينهم، ولا تباغض، قلوبهم قلب واحد يسبحون الله بكرة وعشيا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮২)মুগীরা ইবনে শু’বা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’মূসা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’জান্নাতীদের মধ্যে সবচেয়ে নিম্নমানের জান্নাতী কে হবে?’ আল্লাহ তাআলা উত্তর দিলেন, সে হবে এমন একটি লোক, যে সমস্ত জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করার পর (সর্বশেষে) আসবে। তখন তাকে বলা হবে, ’তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সে বলবে, ’হে প্রভু! আমি কিভাবে (কোথায়) প্রবেশ করব? অথচ সমস্ত লোক নিজ নিজ জায়গা দখল করেছে এবং নিজ নিজ অংশ নিয়ে ফেলেছে।’

তখন তাকে বলা হবে, ’তুমি কি এতে সন্তুষ্ট যে, পৃথিবীর রাজাদের মধ্যে কোন রাজার মত তোমার রাজত্ব হবে?’ সে বলবে, ’প্রভু! আমি এতেই সন্তুষ্ট।’ তারপর আল্লাহ বলবেন, ’তোমার জন্য তাই দেওয়া হল। আর ওর সমতুল্য, ওর সমতুল্য, ওর সমতুল্য, ওর সমতুল্য (অর্থাৎ, ওর চার গুণ রাজত্ব দেওয়া হল)।’ সে পঞ্চমবারে বলবে, ’হে আমার প্রভু! আমি (ওতেই) সন্তুষ্ট।’ তখন আল্লাহ বলবেন, ’তোমার জন্য এটা এবং এর দশগুণ (রাজত্ব তোমাকে দেওয়া হল)। এ ছাড়াও তোমার জন্য রইল সে সব বস্তু, যা তোমার অন্তর কামনা করবে এবং তোমার চক্ষু তৃপ্তি উপভোগ করবে।’ তখন সে বলবে, ’আমি ওতেই সন্তুষ্ট, হে প্রভু!’

(মূসা (আঃ)) বললেন, ’হে আমার প্রতিপালক! আর সর্বোচ্চ স্তরের জান্নাতী কারা হবে?’ আল্লাহ তাআলা বললেন, ’তারা হবে সেই সব বান্দা, যাদেরকে আমি চাই। আমি স্বহস্তে যাদের জন্য সম্মান-বৃক্ষ রোপণ করেছি এবং তার উপর সীলমোহর অংকিত করে দিয়েছি (যাতে তারা ব্যতিরেকে অন্য কেউ তা দেখতে না পায়)। সুতরাং কোন চক্ষু তা দর্শন করেনি, কোন কর্ণ তা শ্রবণ করেনি এবং কোন মানুষের মনে তা কল্পিতও হয়নি।

وَعَنِ المُغِيرَةِ بنِ شُعبَةَ عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ سَأَلَ مُوسَى رَبَّهُ : مَا أَدْنَى أَهْلِ الجَنَّةِ مَنْزِلَةً ؟ قَالَ : هُوَ رَجُلٌ يَجِيءُ بَعْدَ مَا أُدْخِلَ أَهْلُ الجَنَّةِ الجَنَّةَ فَيُقَالُ لَهُ : اُدْخُلِ الجَنَّةَ فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ كَيْفَ وَقَدْ نَزَلَ النَّاسُ مَنَازِلَهُمْ وَأَخَذُوا أَخَذَاتِهِمْ ؟ فَيُقَالُ لَهُ : أَتَرْضَى أَنْ يَكُونَ لَكَ مِثْلُ مُلْكِ مَلِكٍ مِنْ مُلُوكِ الدُّنْيَا ؟ فَيقُولُ : رَضِيْتُ رَبِّ فَيقُولُ : لَكَ ذٰلِكَ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ، فَيقُولُ فِي الخَامِسَةِ رَضِيْتُ رَبِّ، فَيقُولُ : هٰذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ، وَلَكَ مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ، وَلَذَّتْ عَيْنُكَ فَيقُولُ : رَضِيتُ رَبِّ قَالَ : رَبِّ فَأَعْلاَهُمْ مَنْزِلَةً ؟ قالَ : أُولَئِكَ الَّذِينَ أَرَدْتُ ؛ غَرَسْتُ كَرَامَتَهُمْ بِيَدِي وَخَتَمْتُ عَلَيْهَا، فَلَمْ تَرَ عَيْنٌ، وَلَمْ تَسْمَعْ أُذُنٌ، وَلَمْ يَخْطُرْ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ رواه مسلم

وعن المغيرة بن شعبة عن رسول الله ﷺ قال سال موسى ربه : ما ادنى اهل الجنة منزلة ؟ قال : هو رجل يجيء بعد ما ادخل اهل الجنة الجنة فيقال له : ادخل الجنة فيقول: اي رب كيف وقد نزل الناس منازلهم واخذوا اخذاتهم ؟ فيقال له : اترضى ان يكون لك مثل ملك ملك من ملوك الدنيا ؟ فيقول : رضيت رب فيقول : لك ذلك ومثله ومثله ومثله ومثله، فيقول في الخامسة رضيت رب، فيقول : هذا لك وعشرة امثاله، ولك ما اشتهت نفسك، ولذت عينك فيقول : رضيت رب قال : رب فاعلاهم منزلة ؟ قال : اولىك الذين اردت ؛ غرست كرامتهم بيدي وختمت عليها، فلم تر عين، ولم تسمع اذن، ولم يخطر على قلب بشر رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৩) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সর্বশেষে যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তার সম্পর্কে অবশ্যই আমার জানা আছে। এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে (বা বুকে ভর দিয়ে) চলে জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, ’যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সুতরাং সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে সে ফিরে এসে বলবে, ’হে প্রভু! জান্নাত তো পরিপূর্ণ দেখলাম।’ আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, ’যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর।’ তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত তো ভরে গেছে। তাই সে আবার ফিরে এসে বলবে, ’হে প্রভু! জান্নাত তো ভরতি দেখলাম।’

তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল বলবেন, ’যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর সমতুল্য এবং তার দশগুণ (পরিমাণ বিশাল জান্নাত)! অথবা তোমার জন্য পৃথিবীর দশগুণ (পরিমাণ বিশাল জান্নাত রইল)!’ তখন সে বলবে, ’হে প্রভু! তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? অথবা আমার সাথে হাসি-মজাক করছ অথচ তুমি বাদশাহ (হাসি-ঠাট্টা তোমাকে শোভা দেয় না)। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর চোয়ালের দাঁতগুলি প্রকাশিত হয়ে গেল। তিনি বললেন, এ হল সর্বনিম্ন মানের জান্নাতী।

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنِّي لأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجاً مِنْهَا وَآخِرَ أَهْلِ الجَنَّةِ دُخُولاً الجَنَّةَ رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ حَبْواً فَيقُولُ اللهُ - عَزَّ وَجَلَّ - لَهُ : اذْهَبْ فادْخُلِ الجَنَّةَ فَيَأتِيهَا فَيُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهَا مَلأَى فَيَرْجِعُ، فَيقُولُ : يَا رَبِّ وَجَدْتُهَا مَلأَى فَيَقُولُ اللهُ ـ عَزَّ وَجَلَّ ـ لَهُ: اذْهَبْ فَادْخُلِ الجَنَّةَ فَيَأتِيهَا فَيُخيَّلُ إِلَيهِ أنَّها مَلأَى فيَرْجِعُ فَيَقُوْلُ : يَا رَبِّ وَجَدْتُهَا مَلأَى فَيَقُولُ اللهُ ـ عَزَّ وَجَلَّ ـ لَهُ : اذْهَبْ فَادْخُلِ الجَنَّةَ فَإِنَّ لَكَ مِثْلَ الدُّنْيَا وَعَشرَةَ أَمْثَإِلٰهَا ؛ أَوْ إِنَّ لَكَ مِثْلَ عَشرَةِ أَمْثَالِ الدُّنْيَا فَيقُولُ : أَتَسْخَرُ بِي أَوْ تَضْحَكُ بِي وَأنْتَ المَلِكُ ؟ قَالَ : فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ ضَحِكَ حَتّٰـى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ فَكَانَ يَقُوْلُ ذٰلِكَ أَدْنَى أَهْلِ الجَنَّةِ مَنْزِلَةً متفق عليه

وعن ابن مسعود قال : قال رسول الله ﷺ اني لاعلم اخر اهل النار خروجا منها واخر اهل الجنة دخولا الجنة رجل يخرج من النار حبوا فيقول الله - عز وجل - له : اذهب فادخل الجنة فياتيها فيخيل اليه انها ملاى فيرجع، فيقول : يا رب وجدتها ملاى فيقول الله ـ عز وجل ـ له: اذهب فادخل الجنة فياتيها فيخيل اليه انها ملاى فيرجع فيقول : يا رب وجدتها ملاى فيقول الله ـ عز وجل ـ له : اذهب فادخل الجنة فان لك مثل الدنيا وعشرة امثالها ؛ او ان لك مثل عشرة امثال الدنيا فيقول : اتسخر بي او تضحك بي وانت الملك ؟ قال : فلقد رايت رسول الله ﷺ ضحك حتـى بدت نواجذه فكان يقول ذلك ادنى اهل الجنة منزلة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৪) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবার শেষে জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তি পুল-সিরাতে উঠে-পড়ে চলতে থাকবে। জাহান্নামের আগুন তাকে ঝলসে দেবে। অতঃপর পুল পার হয়ে গেলে জাহান্নামকে সে সম্বোধন ক’রে বলবে, ’বরকতময় সেই সত্তা, যিনি আমাকে তোমার কবল থেকে মুক্তি দিয়েছেন এবং এমন কিছু দান করেছেন, যা পূর্বাপর কাউকেই দান করেননি। ইতিমধ্যে তাকে একটি গাছ দেখানো হবে। তখন সে বলবে, ’হে প্রভু! আমাকে ঐ গাছের নিকটবর্তী ক’রে দাও। আমি ওর ছায়া গ্রহণ করব এবং ওর (নিকটবর্তী) পানি পান করব।’

আল্লাহ বলবেন, ’হে আদম-সন্তান! আমি তোমাকে তা দান করলে সম্ভবতঃ আবার অন্য কিছু চেয়ে বসবে।’ সে বলবে, ’না, হে আমার প্রতিপালক! (আমি অন্য কিছু চাইব না।)’ সুতরাং সে তাঁর কাছে অঙ্গীকার করবে যে, সে আর অন্য কিছু চাইবে না। আর তার প্রতিপালক ওযর পেশ করবেন। কারণ তিনি জানেন যে, তার পরেও সে যা দেখবে, তা না চেয়ে ধৈর্য ধরতে পারবে না। সুতরাং তিনি তাকে সেই গাছের নিকটে পৌঁছে দেবেন। সে তার ছায়া গ্রহণ করবে এবং তার পানি পান করবে।

অতঃপর তাকে আরো একটি গাছ দেখানো হবে, যা আগের চাইতে অনেক সুন্দর। তখন সে বলবে, ’হে প্রভু! আমাকে ঐ গাছের নিকটবর্তী ক’রে দাও। আমি ওর ছায়া গ্রহণ করব এবং ওর (নিকটবর্তী) পানি পান করব। আর তোমার কাছে অন্য কিছু চাইব না।’ আল্লাহ বলবেন, ’হে আদম-সন্তান! তুমি কি আমার নিকট এই অঙ্গীকার করনি যে, তুমি অন্য কিছু চাইবে না?’ সে বলবে, ’অবশ্যই। তবে হে প্রভু! আমাকে ঐ গাছের নিকটবর্তী ক’রে দাও। আমি আর অন্য কিছু চাইব না।’ আল্লাহ বলবেন, ’আমি তোমাকে ওর নিকটে পৌঁছে দিলে সম্ভবতঃ আবার অন্য কিছু চেয়ে বসবে।’

সুতরাং সে তাঁর কাছে অঙ্গীকার করবে যে, সে আর অন্য কিছু চাইবে না। আর তার প্রতিপালক আপত্তি পেশ করবেন। কারণ তিনি জানেন যে, তার পরেও সে যা দেখবে, তা না চেয়ে ধৈর্য ধরতে পারবে না। সুতরাং তিনি তাকে সেই গাছের নিকটে পৌঁছে দেবেন। সে তার ছায়া গ্রহণ করবে এবং তার পানি পান করবে।

অতঃপর তাকে আরো একটি গাছ দেখানো হবে, যা আগের দুই গাছের চাইতে বেশি সুন্দর। তখন সে বলবে, ’হে প্রভু! আমাকে ঐ গাছের নিকটবর্তী ক’রে দাও। আমি ওর ছায়া গ্রহণ করব এবং ওর (নিকটবর্তী) পানি পান করব। আর তোমার কাছে অন্য কিছু চাইব না।’ আল্লাহ বলবেন, ’হে আদম-সন্তান! তুমি কি আমার নিকট এই অঙ্গীকার করনি যে, তুমি অন্য কিছু চাইবে না?’ সে বলবে, ’অবশ্যই। তবে হে প্রভু! আমাকে ঐ গাছের নিকটবর্তী ক’রে দাও। আমি আর অন্য কিছু চাইব না।’ আর তার প্রতিপালক আপত্তি পেশ করবেন।

কারণ তিনি জানেন যে, তার পরেও সে যা দেখবে, তা না চেয়ে ধৈর্য ধরতে পারবে না। সুতরাং তিনি তাকে সেই গাছের নিকটে পৌঁছে দেবেন। সেখানে সে জান্নাতীদের কথাবার্তার শব্দ শুনতে পাবে। তখন সে বলবে, ’হে প্রভু! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও!’ আল্লাহ বলবেন, ’হে আদম-সন্তান! কিসে তোমার চাহিদা পূরণ করবে? তুমি কি এতে খুশি হবে যে, আমি তোমাকে দুনিয়া ও তার সাথে তার সমপরিমাণ জায়গা দেব?’ সে বলবে, ’হে প্রভু! তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক হয়ে আমার সাথে ঠাট্টা করছ?’ আল্লাহ বলবেন, ’আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করিনি। বরং আমি যা চাই, তাতে ক্ষমতাবান।’

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ آخِرُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ رَجُلٌ فَهُوَ يَمْشِى مَرَّةً وَيَكْبُو مَرَّةً وَتَسْفَعُهُ النَّارُ مَرَّةً فَإِذَا مَا جَاوَزَهَا الْتَفَتَ إِلَيْهَا فَقَالَ تَبَارَكَ الَّذِى نَجَّانِى مِنْكِ لَقَدْ أَعْطَانِىَ اللهُ شَيْئًا مَا أَعْطَاهُ أَحَدًا مِنَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ فَتُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِى مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ فَلأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا فَيَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا ابْنَ آدَمَ لَعَلِّى إِنْ أَعْطَيْتُكَهَا سَأَلْتَنِى غَيْرَهَا
فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ وَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ هِىَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَى فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِى مِنْ هَذِهِ لأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا وَأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِى أَنْ لاَ تَسْأَلَنِى غَيْرَهَا فَيَقُولُ لَعَلِّى إِنْ أَدْنَيْتُكَ مِنْهَا تَسْأَلُنِى غَيْرَهَا فَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ عِنْدَ بَابِ الْجَنَّةِ هِىَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَيَيْنِ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِى مِنْ هَذِهِ لأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِى أَنْ لاَ تَسْأَلَنِى غَيْرَهَا قَالَ بَلَى يَا رَبِّ هَذِهِ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهَا فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَإِذَا أَدْنَاهُ مِنْهَا فَيَسْمَعُ أَصْوَاتَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْخِلْنِيهَا
فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ مَا يَصْرِينِى مِنْكَ أَيُرْضِيكَ أَنْ أُعْطِيَكَ الدُّنْيَا وَمِثْلَهَا مَعَهَا قَالَ يَا رَبِّ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّى وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَضَحِكَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَقَالَ أَلاَ تَسْأَلُونِّى مِمَّ أَضْحَكُ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ قَالَ هٰكَذَا ضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مِنْ ضِحْكِ رَبِّ الْعَالَمِينَ حِينَ قَالَ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّى وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَيَقُولُ إِنِّى لاَ أَسْتَهْزِئُ مِنْكَ وَلَكِنِّى عَلَى مَا أَشَاءُ قَادِرٌ

عن ابن مسعود ان رسول الله ﷺ قال اخر من يدخل الجنة رجل فهو يمشى مرة ويكبو مرة وتسفعه النار مرة فاذا ما جاوزها التفت اليها فقال تبارك الذى نجانى منك لقد اعطانى الله شيىا ما اعطاه احدا من الاولين والاخرين فترفع له شجرة فيقول اى رب ادننى من هذه الشجرة فلاستظل بظلها واشرب من ماىها فيقول الله عز وجل يا ابن ادم لعلى ان اعطيتكها سالتنى غيرها فيقول لا يا رب ويعاهده ان لا يساله غيرها وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليه فيدنيه منها فيستظل بظلها ويشرب من ماىها ثم ترفع له شجرة هى احسن من الاولى فيقول اى رب ادننى من هذه لاشرب من ماىها واستظل بظلها لا اسالك غيرها فيقول يا ابن ادم الم تعاهدنى ان لا تسالنى غيرها فيقول لعلى ان ادنيتك منها تسالنى غيرها فيعاهده ان لا يساله غيرها وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليه فيدنيه منها فيستظل بظلها ويشرب من ماىها ثم ترفع له شجرة عند باب الجنة هى احسن من الاوليين فيقول اى رب ادننى من هذه لاستظل بظلها واشرب من ماىها لا اسالك غيرها فيقول يا ابن ادم الم تعاهدنى ان لا تسالنى غيرها قال بلى يا رب هذه لا اسالك غيرها وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليها فيدنيه منها فاذا ادناه منها فيسمع اصوات اهل الجنة فيقول اى رب ادخلنيها فيقول يا ابن ادم ما يصرينى منك ايرضيك ان اعطيك الدنيا ومثلها معها قال يا رب اتستهزى منى وانت رب العالمين فضحك ابن مسعود فقال الا تسالونى مم اضحك فقالوا مم تضحك قال هكذا ضحك رسول الله ﷺ فقالوا مم تضحك يا رسول الله قال من ضحك رب العالمين حين قال اتستهزى منى وانت رب العالمين فيقول انى لا استهزى منك ولكنى على ما اشاء قادر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৫) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় জান্নাতে মু’মিনদের জন্য একটি শূন্যগর্ভ মোতির তাঁবু থাকবে, যার দৈর্ঘ্য হবে ষাট মাইল। এর মধ্যে মু’মিনদের জন্য একাধিক স্ত্রী থাকবে। যাদের সকলের সাথে মু’মিন সহবাস করবে। কিন্তু তাদের কেউ কাউকে দেখতে পাবে না। (বুখারী ৩২৪৩, ৪৮৭৯, মুসলিম ৭৩৩৭-৭৩৩৮)

وَعَنْ أَبِيْ مُوسٰى أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ إِنَّ لِلمُؤْمِنِ فِي الجَنَّةِ لَخَيْمَةً مِنْ لُؤْلُؤَةٍ وَاحِدَةٍ مُجَوَّفَةٍ طُولُهَا فِي السَّمَاءِ سِتُّونَ مِيلاً لِلمُؤْمِنِ فِيهَا أَهْلُونَ يَطُوفُ عَلَيْهِمُ المُؤْمِنُ فَلاَ يَرَى بَعْضُهُمْ بَعْضاً متفق عليه

وعن ابي موسى ان النبي ﷺ قال ان للمومن في الجنة لخيمة من لولوة واحدة مجوفة طولها في السماء ستون ميلا للمومن فيها اهلون يطوف عليهم المومن فلا يرى بعضهم بعضا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৬)আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় কোন আরোহী উৎকৃষ্ট, বিশেষভাবে প্রতিপালিত হালকা দেহের দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে একশো বছর চললেও তা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না। (বুখারী ৬৫৫৩, মুসলিম ৭৩১৭)

এটিকেই আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বুখারী-মুসলিম সহীহায়নে বর্ণনা করেছেন যে, একটি সওয়ার (অশ্বারোহী) তার ছায়ায় একশো বছর ব্যাপী চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে না।(বুখারী ৩২৫২, ৪৮৮১, মুসলিম ৭৩১৪)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ فِي الجَنَّةِ شَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ الجَوَادَ المُضَمَّرَ السَّريعَ مِئَةَ سَنَةٍ مَا يَقْطَعُها متفق عليه
وَرَوَيَاهُ فِي الصَّحِيحَينِ أَيضاً مِن رِوَايَةِ أَبِي هُرَيرَةَ قَالَ يَسيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّها مِئَةَ سَنَةٍ مَا يَقْطَعُها

وعن ابي سعيد الخدري عن النبي ﷺ قال ان في الجنة شجرة يسير الراكب الجواد المضمر السريع مىة سنة ما يقطعها متفق عليه وروياه في الصحيحين ايضا من رواية ابي هريرة قال يسير الراكب في ظلها مىة سنة ما يقطعها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৭) উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই জান্নাতীগণ তাদের উপরের বালাখানার অধিবাসীদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিগন্তে উজ্জ্বল অস্তগামী তারকা গভীর দৃষ্টিতে দেখতে পাও। এটি হবে তাদের মর্যাদার ব্যবধানের জন্য। (সাহাবীগণ) বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! এ তো নবীগণের স্থান; তাঁরা ছাড়া অন্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না।’ তিনি বললেন, অবশ্যই, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! সেই লোকরাও (পৌঁছতে পারবে) যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রেখে রসূলগণকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছে।

وَعَنهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ أَهْلَ الجَنَّةِ لَيَتَرَاءَوْنَ أَهْلَ الغُرَفِ مِن فَوْقِهِمْ كَمَا تَرَاءَوْنَ الكَوْكَبَ الدُّرِّيَّ الغَابِرَ فِي الأُفُق مِنَ المَشْرِقِ أَوِ المَغْرِبِ لِتَفَاضُلِ مَا بَيْنَهُمْ قَالُوا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ؛ تِلْكَ مَنَازِلُ الأَنبِيَاءِ لاَ يَبْلُغُها غَيْرُهُمْ قَالَ بَلَى وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ رِجَالٌ آمَنُوا بِاللهِ وَصَدَّقُوا المُرْسَلِينَ متفق عليه

وعنه عن النبي ﷺ قال ان اهل الجنة ليتراءون اهل الغرف من فوقهم كما تراءون الكوكب الدري الغابر في الافق من المشرق او المغرب لتفاضل ما بينهم قالوا : يا رسول الله ؛ تلك منازل الانبياء لا يبلغها غيرهم قال بلى والذي نفسي بيده رجال امنوا بالله وصدقوا المرسلين متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অবশ্যই জান্নাতে একশ’টি দরজা (মর্যাদা) রয়েছে, যা আল্লাহ তাঁর পথে জিহাদকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন; দুটি দরজার মধ্যবর্তী ব্যবধান আসমান ও জমিনের মত। সুতরাং তোমরা (জান্নাত) চাইলে ফিরদাউস চেয়ো। কারণ তা হল জান্নাতের মধ্যভাগ ও জান্নাতের উপরিভাগ। তার উপরে রয়েছে রহমানের আরশ, আর সেখান থেকেই প্রবাহিত হয় জান্নাতের নদীমালা।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ أَعَدَّهَا اللهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِهِ كُلُّ دَرَجَتَيْنِ مَا بَيْنَهُمَا كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللهَ فَسَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الْجَنَّةِ وَأَعْلَى الْجَنَّةِ وَفَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ وَمِنْهُ تَفَجَّرُ أَنْهَارُ الْجَنَّةِ

عن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال ان في الجنة ماىة درجة اعدها الله للمجاهدين في سبيله كل درجتين ما بينهما كما بين السماء والارض فاذا سالتم الله فسلوه الفردوس فانه اوسط الجنة واعلى الجنة وفوقه عرش الرحمن ومنه تفجر انهار الجنة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৮৯) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে ধনুক পরিমাণ স্থান (দুনিয়ার) যেসব বস্তুর উপর সূর্য উদিত কিংবা অস্তমিত হচ্ছে সেসব বস্তু চেয়েও উত্তম।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَقَابُ قَوْسٍ فِي الجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا تَطْلُعُ عَلَيْهِ الشَّمْسُ أَو تَغْرُبُ متفق عليه

وعن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال لقاب قوس في الجنة خير مما تطلع عليه الشمس او تغرب متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯০) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে একটি বাজার হবে, যেখানে জান্নাতীগণ প্রত্যেক শোকরবার আসবে। তখন উত্তর দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হবে, যা তাদের চেহারায় ও কাপড়ে সুগন্ধ ছড়িয়ে দেবে। ফলে তাদের শোভা সৌন্দর্য আরো বেড়ে যাবে। অতঃপর তারা রূপসৌন্দর্যের বৃদ্ধি নিয়ে তাদের স্ত্রীগণের কাছে ফিরবে। তখন তারা তাদেরকে দেখে বলবে, ’আল্লাহর কসম! আপনাদের রূপসৌন্দর্য বেড়ে গেছে!’ তারাও বলে উঠবে, ’আল্লাহর শপথ! আমাদের যাবার পর তোমাদেরও রূপসৌন্দর্য বেড়ে গেছে!

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ فِي الجَنَّةِ لسُوْقاً يَأتُونَهَا كُلَّ جُمُعَةٍ فَتَهُبُّ رِيحُ الشَّمَالِ فَتَحْثُو في وُجُوهِهِم وَثِيَابِهِمْ فَيَزدَادُونَ حُسناً وَجَمَالاً فَيَرْجِعُونَ إلَى أَهْلِيهِمْ وَقَد ازْدَادُوا حُسْناً وَجَمَالاً فَيقُولُ لَهُمْ أَهْلُوهُمْ : وَاللهِ لقدِ ازْدَدْتُمْ حُسْناً وَجَمَالاً فَيقُولُونَ : وَأنْتُمْ وَاللهِ لَقَدِ ازْدَدْتُمْ بَعْدَنَا حُسْناً وَجَمالاً رواه مسلم

وعن انس ان رسول الله ﷺ قال ان في الجنة لسوقا ياتونها كل جمعة فتهب ريح الشمال فتحثو في وجوههم وثيابهم فيزدادون حسنا وجمالا فيرجعون الى اهليهم وقد ازدادوا حسنا وجمالا فيقول لهم اهلوهم : والله لقد ازددتم حسنا وجمالا فيقولون : وانتم والله لقد ازددتم بعدنا حسنا وجمالا رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯১) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতীগণ জান্নাতের বালাখানাগুলিকে এমন গভীরভাবে দেখবে, যেভাবে তোমরা আকাশের তারকা দেখে থাক।

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ أَهْلَ الجَنَّةِ لَيَتَرَاءَوْنَ الغُرَفَ فِي الجَنَّةِ كَمَا تَتَرَاءَوْنَ الكَوكَبَ فِي السَّمَاءِ متفق عليه

وعن سهل بن سعد ان رسول الله ﷺ قال ان اهل الجنة ليتراءون الغرف في الجنة كما تتراءون الكوكب في السماء متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা'দ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯২)উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এমন এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম, যেখানে তিনি জান্নাত সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি তা সমাপ্ত করলেন এবং আলোচনার শেষে বললেন, ’’জান্নাতে এমন নিয়ামত (সুখ-সামগ্রী) বিদ্যমান আছে যা কোন চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং কোন মানুষের মনে তার ধারণার উদ্রেকও হয়নি। তারপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন, যার অর্থ হল, ’তারা শয্যাত্যাগ করে আকাঙ্ক্ষা ও আশংকার সাথে তাদের প্রতিপালককে ডাকে এবং আমি তাদেরকে যে রুযী প্রদান করেছি তা হতে তারা দান করে। কেউই জানে না তার জন্য তার কৃতকর্মের বিনিময় স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কী পুরস্কার লুকিয়ে রাখা হয়েছে। (সূরা সিজদা ১৬-১৭)

وَعَنهُ قَالَ : شَهِدْتُ مِنَ النَّبِيِّ ﷺ مَجْلِساً وَصَفَ فِيهِ الجَنَّةَ حَتّٰـى انْتَهَى ثُمَّ قَالَ فِي آخِرِ حَدِيثِهِ فيهَا مَا لاَ عَينٌ رَأَتْ وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلاَ خَطَرَ عَلى قَلْبِ بَشَرٍ ثُمَّ قَرَأَ : تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ المَضَاجِعِ إِلَى قَولِهِ تَعَالٰـى فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ رواه مسلم

وعنه قال : شهدت من النبي ﷺ مجلسا وصف فيه الجنة حتـى انتهى ثم قال في اخر حديثه فيها ما لا عين رات ولا اذن سمعت ولا خطر على قلب بشر ثم قرا : تتجافى جنوبهم عن المضاجع الى قوله تعالـى فلا تعلم نفس ما اخفي لهم من قرة اعين رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা'দ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা বলছিলেন। তাঁর কাছে এক বেদুঈনও ছিল। তিনি বলতে লাগলেন, ’’জান্নাতে এক ব্যক্তি নিজ প্রতিপালকের নিকট চাষ করার অনুমতি চাইবে। আল্লাহ বলবেন, ’তুমি কি ইচ্ছাসুখে বাস করছ না? (ইচ্ছামত পানাহার করছ না?)’ সে বলবে, ’অবশ্যই। তবে আমি চাষ করতে ভালবাসি।’ সুতরাং সে বীজ বপন করবে। আর নিমেষের মধ্যে চারা অঙ্কুরিত হবে, ফসল পেকে যাবে এবং পাহাড়ের মত জমাও হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলবেন, ’নাও হে আদম সন্তান! তুমি কিছুতেই পরিতৃপ্ত হবে না।’’ এ হাদীস শুনে বেদুঈন বলে উঠল, ’আল্লাহর কসম! ঐ লোক কুরাশী হবে, নচেৎ আনসারী। কারণ চাষী ওরাই। আমরা চাষী নই।’ এ কথা শুনে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেন।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَوْمًا يُحَدِّثُ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اسْتَأْذَنَ رَبَّهُ فِي الزَّرْعِ فَقَالَ لَهُ أَلَسْتَ فِيمَا شِئْتَ قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي أُحِبُّ أَنْ أَزْرَعَ قَالَ فَبَذَرَ فَبَادَرَ الطَّرْفَ نَبَاتُهُ وَاسْتِوَاؤُهُ وَاسْتِحْصَادُهُ فَكَانَ أَمْثَالَ الْجِبَالِ فَيَقُولُ اللهُ دُونَكَ يَا ابْنَ آدَمَ فَإِنَّهُ لَا يُشْبِعُكَ شَيْءٌ فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ وَاللهِ لَا تَجِدُهُ إِلَّا قُرَشِيًّا أَوْ أَنْصَارِيًّا فَإِنَّهُمْ أَصْحَابُ زَرْعٍ وَأَمَّا نَحْنُ فَلَسْنَا بِأَصْحَابِ زَرْعٍ فَضَحِكَ النَّبِيُّ ﷺ

عن ابي هريرة رضي الله عنه ان النبي ﷺ كان يوما يحدث وعنده رجل من اهل البادية ان رجلا من اهل الجنة استاذن ربه في الزرع فقال له الست فيما شىت قال بلى ولكني احب ان ازرع قال فبذر فبادر الطرف نباته واستواوه واستحصاده فكان امثال الجبال فيقول الله دونك يا ابن ادم فانه لا يشبعك شيء فقال الاعرابي والله لا تجده الا قرشيا او انصاريا فانهم اصحاب زرع واما نحن فلسنا باصحاب زرع فضحك النبي ﷺ

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯৪) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে মু’মিন সন্তান কামনা করলে, কিছু সময়ের মধ্যে গর্ভধারণ, জন্মদান ও বয়ঃপ্রাপ্তি হবে--যেমন তার কামনা হবে।

عَنْ أبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيّ قَالَ : قَالَ رَسُول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْمُؤمن إِذا اشْتهَـى الْوَلَد فِي الْجنَّة كَانَ حمله وَوَضعه وسنه فِي سَاعَة كَمَا يَشْتَهِي

عن ابي سعيد الخدري قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم المومن اذا اشتهـى الولد في الجنة كان حمله ووضعه وسنه في ساعة كما يشتهي

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ

পরিচ্ছেদঃ জান্নাতের বিবরণ

(৩৮৯৫) বুরাইদা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করল, ’হে আল্লাহর রসূল! জান্নাতে কি উট আছে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’আল্লাহ যদি তোমাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করেন, তাহলে সেখানে তোমার মন যা চাইবে এবং তোমার চোখ যাতে তৃপ্ত হবে, তোমার জন্য তাই হবে।

عَنْ بُرَيْدَةَ أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلْ فِي الْجَنَّةِ مِنْ إِبِلٍ ؟ قَالَ : إِنْ يُدْخِلْكَ اللهُ الْجَنَّةَ يَكُنْ لَكَ فِيهَا مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ عَيْنُكَ

عن بريدة ان رجلا سال النبي صلى الله عليه وسلم فقال : يا رسول الله هل في الجنة من ابل ؟ قال : ان يدخلك الله الجنة يكن لك فيها ما اشتهت نفسك ولذت عينك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »