পরিচ্ছেদঃ পরকালে ঈমান
(১১২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? তিনি বললেন, তোমরা কি মেঘহীন দিন-দুপুরে সূর্য দেখতে কোন অসুবিধা বোধ কর? তাঁরা বললেন, ’জী না।’ তিনি বললেন, তোমরা কি মেঘহীন রাতে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে কোন অসুবিধা বোধ কর? তাঁরা বললেন, ’জী না।’ তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার জীবন আছে! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে কোন অসুবিধা বোধ করবে না, যেমন ঐ দু’টির একটিকে দেখতে কোন অসুবিধা বোধ কর না।
আল্লাহ বান্দার সাথে সাক্ষাৎ করে বলবেন, ’হে অমুক! তোমাকে কি সম্মানিত করিনি, তোমাকে কি নেতা বানাইনি? তোমাকে কি বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ করিনি? তোমার জন্য কি ঘোড়া ও উটকে বশীভূত ক’রে দিইনি? তোমাকে কি নেতৃত্ব করতে ও ধন-মালে হুকুম চালাতে ছেড়ে দিইনি?’ বান্দা বলবে, ’অবশ্যই।’ আল্লাহ বলবেন, ’তুমি কি ধারণা করতে যে, তুমি আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে?’ বান্দা বলবে, ’না।’ আল্লাহ বলবেন, ’তাহলে আমি তোমাকে ভুলে যাব, যেমন তুমি আমাকে ভুলে ছিলে।’
অতঃপর দ্বিতীয় এক বান্দার সাথে সাক্ষাৎ ক’রে অনুরূপ বলবেন। অতঃপর তৃতীয় এক বান্দার সাথে সাক্ষাৎ ক’রে অনুরূপ বলবেন। সে বলবে, ’হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার প্রতি, তোমার কিতাব ও রসূলসমূহের প্রতি ঈমান এনেছি, নামায পড়েছি, রোযা করেছি, দান-খয়রাত করেছি।’ এই শ্রেণীর সে আরো যথাসাধ্য ভালো কাজের উল্লেখ করবে। আল্লাহ বলবেন, ’সুতরাং থামো এখানে!’ অতঃপর বলবেন, ’এখন তোমার বিরুদ্ধে আমার সাক্ষী খাড়া করব।’ সে তখন মনে মনে চিন্তা করবে, ’আমার বিরুদ্ধে কে সাক্ষি দেবে?’ অতঃপর তার মুখে মোহর লাগিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জাং, মাংস ও হাড়কে বলা হবে, ’কথা বল।’ সুতরাং তার জাং, মাংস ও হাড় তার কৃতকর্মের ব্যাপারে কথা বলবে; যাতে তার কোন ওযর অবশিষ্ট না থাকে। এ হবে মুনাফিক। এ হবে সেই ব্যক্তি, যার প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হবেন।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالُوْا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ هَلْ تُضَارُّونَ فِى رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِى الظَّهِيرَةِ لَيْسَتْ فِى سَحَابَةٍ قَالُوْا لاَ قَالَ فَهَلْ تُضَارُّونَ فِى رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِى سَحَابَةٍ قَالُوْا لاَ قَالَ فَوَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لاَ تُضَارُّونَ فِى رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّونَ فِى رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا قَالَ - فَيَلْقَى الْعَبْدَ فَيَقُولُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُولُ بَلَى قَالَ فَيَقُولُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِىَّ فَيَقُولُ لاَ فَيَقُولُ فَإِنِّى أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِى ثُمَّ يَلْقَى الثَّانِىَ فَيَقُولُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُولُ بَلَى أَىْ رَبِّ فَيَقُولُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِىَّ فَيَقُولُ لاَ فَيَقُولُ فَإِنِّى أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِى ثُمَّ يَلْقَى الثَّالِثَ فَيَقُولُ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ آمَنْتُ بِكَ وَبِكِتَابِكَ وَبِرُسُلِكَ وَصَلَّيْتُ وَصُمْتُ وَتَصَدَّقْتُ وَيُثْنِى بِخَيْرٍ مَا اسْتَطَاعَ فَيَقُولُ هَا هُنَا إِذًا - قَالَ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ الآنَ نَبْعَثُ شَاهِدَنَا عَلَيْكَ وَيَتَفَكَّرُ فِى نَفْسِهِ مَنْ ذَا الَّذِى يَشْهَدُ عَلَىَّ فَيُخْتَمُ عَلَى فِيهِ وَيُقَالُ لِفَخِذِهِ وَلَحْمِهِ وَعِظَامِهِ انْطِقِى فَتَنْطِقُ فَخِذُهُ وَلَحْمُهُ وَعِظَامُهُ بِعَمَلِهِ وَذَلِكَ لِيُعْذِرَ مِنْ نَفْسِهِ وَذَلِكَ الْمُنَافِقُ وَذَلِكَ الَّذِى يَسْخَطُ اللهُ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ পরকালে ঈমান
(১১৩) ইবনে উমার কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন ঈমানদারকে রাব্বুল আলামীনের এত নিকটে নিয়ে আসা হবে যে, আল্লাহ তা’আলা তার উপর নিজ পর্দা রেখে তার পাপসমূহের স্বীকারোক্তি আদায় করে নেবেন। তাকে জিজ্ঞেস করবেন, এই পাপ তুমি জান কি? এই পাপ চিন কি? মু’মিন বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি জানি। অতঃপর যখন সে ভাববে যে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন তিনি বলবেন, আমি পৃথিবীতে তোমার পাপকে গোপন রেখেছি, আর আজ তা তোমার জন্য ক্ষমা করে দিচ্ছি। অতঃপর তাকে তার নেক আমলের আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে।
পক্ষান্তরে কাফের ও মুনাফিকের ব্যাপারে সাক্ষী (ফিরিশতাগণ) বলবেন, এরা ঐ লোক যারা নিজেদের প্রতিপালক সম্বন্ধে মিথ্যা বলেছিল। জেনে রেখো, এমন অত্যাচারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ।
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُدْنَى الْمُؤْمِنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى يَضَعَ عَلَيْهِ كَنَفَهُ فَيُقَرِّرُهُ بِذُنُوبِهِ فَيَقُولُ هَلْ تَعْرِفُ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَعْرِفُ قَالَ فَإِنِّى قَدْ سَتَرْتُهَا عَلَيْكَ فِى الدُّنْيَاوَإِنِّى أَغْفِرُهَا لَكَ الْيَوْمَ فَيُعْطَى صَحِيفَةَ حَسَنَاتِهِ وَأَمَّا الْكُفَّارُ وَالْمُنَافِقُونَ فَيُنَادَى بِهِمْ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى اللهِ