হাদীস সম্ভার ৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮১৯

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَهُ وَلَا تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيْدُ زِينَةَ الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا

অর্থাৎ, তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহবান করে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা ক’রে তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না। (সূরা কাহফ ২৮)


(৩৮১৯) হারেসাহ ইবনে অহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমি তোমাদেরকে জান্নাতীদের সম্পর্কে অবহিত করব না কি? (তারা হল) প্রত্যেক দুর্বল ব্যক্তি এবং এমন ব্যক্তি যাকে দুর্বল মনে করা হয়। সে যদি আল্লাহর নামে কসম খায়, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা ক’রে দেন। আমি তোমাদেরকে জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করব না কি? (তারা হল) প্রত্যেক রূঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় দাম্ভিক ব্যক্তি।

وَعَنْ حَارِثَةَ بْنِ وَهْبٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الجَنَّةِ ؟ كُلُّ ضَعِيْفٍ مُتَضَعَّف لَوْ أقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ؟ كُلُّ عُتُلٍّ جَوّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن حارثة بن وهب قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول الا اخبركم باهل الجنة ؟ كل ضعيف متضعف لو اقسم على الله لابره الا اخبركم باهل النار؟ كل عتل جواظ مستكبر متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২০

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২০) ইয়ায বিন হিমার মুজাশিয়ী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আর জান্নাতী হল তিন প্রকার ব্যক্তি; ন্যায়পরায়ণ দানশীল তাওফীকপ্রাপ্ত শাসক, দয়াবান এবং প্রত্যেক আত্মীয় তথা মুসলিমের প্রতি কোমল-হৃদয়। আর (অশ্লীলতা ও যাঞ্চা) থেকে পবিত্র সন্তানবান ব্যক্তি।

عَنْ عِيَاضِ بْنِ حِمَارٍ الْمُجَاشِعِىِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ وَأَهْلُ الْجَنَّةِ ثَلاَثَةٌ ذُو سُلْطَانٍ مُقْسِطٌ مُتَصَدِّقٌ مُوَفَّقٌ وَرَجُلٌ رَحِيمٌ رَقِيقُ الْقَلْبِ لِكُلِّ ذِى قُرْبَى وَمُسْلِمٍ وَعَفِيفٌ مُتَعَفِّفٌ ذُو عِيَالٍ

عن عياض بن حمار المجاشعى ان رسول الله ﷺ قال واهل الجنة ثلاثة ذو سلطان مقسط متصدق موفق ورجل رحيم رقيق القلب لكل ذى قربى ومسلم وعفيف متعفف ذو عيال

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২১

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২১) আবু আব্বাস সাহল ইবনে সা’দ সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে পার হয়ে গেল, তখন তিনি তাঁর নিকট উপবিষ্ট একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কি?’’ সে বলল, ’এ ব্যক্তি তো এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক। আল্লাহর কসম! সে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে এবং কারো জন্য সুপারিশ করলে তা কবুল করা হবে।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আর এক ব্যক্তি পার হয়ে গেল। তিনি ঐ (উপবিষ্ট) লোকটিকে বললেন, এ লোকটির ব্যাপারে তোমার অভিমত কি? সে বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! এ তো একজন গরীব মুসলিম। সে এমন ব্যক্তি যে, সে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না, কারো জন্য সুপারিশ করলে তা কবুল করা হবে না এবং সে কোন কথা বললে, তার কথা শ্রবণযোগ্য হবে না।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ ব্যক্তি দুনিয়া ভর্তি ঐরূপ লোকদের চাইতে বহু উত্তম।

وَعَنْ أَبِي عَبَّاسٍ سَهلِ بنِ سَعدٍ السَّاعِدِيِّ قَالَ : مَرَّ رَجُلٌ عَلَى النَّبيّ ﷺ فَقَالَ لِرَجُلٍ عِنْدَهُ جَالِسٌ مَا رَأيُكَ في هٰذَا ؟ فَقَالَ : رَجُلٌ مِنْ أشْرَافِ النَّاسِ هٰذَا واللهِ حَرِيٌّ إنْ خَطَبَ أنْ يُنْكَحَ وَإنْ شَفَعَ أنْ يُشَفَّعَ فَسَكَتَ رسولُ اللهِ ﷺ ثُمَّ مَرَّ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ لَهُ رَسُوْلُ الله ﷺ مَا رَأيُكَ في هٰذَا ؟ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ الله هٰذَا رَجُلٌ مِنْ فُقَراءِ المُسْلِمِينَ هٰذَا حَرِيٌّ إنْ خَطَبَ أنْ لا يُنْكَحَ وَإنْ شَفَعَ أنْ لاَ يُشَفَّعَ وَإنْ قَالَ أنْ لاَ يُسْمَعَ لِقَولِهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ هٰذَا خَيْرٌ مِنْ مِلءِ الأرْضِ مِثْلَ هٰذَا مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي عباس سهل بن سعد الساعدي قال : مر رجل على النبي ﷺ فقال لرجل عنده جالس ما رايك في هذا ؟ فقال : رجل من اشراف الناس هذا والله حري ان خطب ان ينكح وان شفع ان يشفع فسكت رسول الله ﷺ ثم مر رجل اخر فقال له رسول الله ﷺ ما رايك في هذا ؟ فقال : يا رسول الله هذا رجل من فقراء المسلمين هذا حري ان خطب ان لا ينكح وان شفع ان لا يشفع وان قال ان لا يسمع لقوله فقال رسول الله ﷺ هذا خير من ملء الارض مثل هذا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাহল বিন সা'দ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২২

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২২) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবাদ হল। জাহান্নাম বলল, ’আমার মধ্যে উদ্ধত ও অহংকারী লোকেরা থাকবে।’ আর জান্নাত বলল, ’দুর্বল ও দরিদ্র ব্যক্তিরা আমার ভিতরে বসবাস করবে।’ অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাদের মধ্যে ফায়সালা করলেন যে, ’তুমি জান্নাত আমার রহমত, তোমার দ্বারা আমি যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করব। এবং তুমি জাহান্নাম আমার শাস্তি, তোমার দ্বারা আমি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেব। আর তোমাদের উভয়কেই পরিপূর্ণ করা আমার দায়িত্ব।

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدرِي عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ احْتَجَّتِ الجَنَّةُ والنَّارُ فَقَالتِ النَّارُ : فِيَّ الجَبَّارُونَ وَالمُتَكَبِّرُونَ وَقَالتِ الجَنَّةُ : فِيَّ ضُعَفَاءُ النَّاسِ وَمَسَاكِينُهُمْ فَقَضَى اللهُ بَيْنَهُمَا : إنَّكِ الجَنَّةُ رَحْمَتِي أرْحَمُ بِكِ مَنْ أشَاءُ وَإنَّكِ النَّارُ عَذَابِي أُعَذِّبُ بِكِ مَنْ أشَاءُ وَلِكلَيْكُمَا عَلَيَّ مِلْؤُهَا رواه مسلم

وعن ابي سعيد الخدري عن النبي ﷺ قال احتجت الجنة والنار فقالت النار : في الجبارون والمتكبرون وقالت الجنة : في ضعفاء الناس ومساكينهم فقضى الله بينهما : انك الجنة رحمتي ارحم بك من اشاء وانك النار عذابي اعذب بك من اشاء ولكليكما علي ملوها رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৩

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৩)আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন মোটা-তাজা বৃহৎ মানুষ আসবে, আল্লাহর কাছে তার মশার ডানার সমানও ওজন হবে না।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَن رَسُولِ الله ﷺ قَالَ إنَّهُ لَيَأتِي الرَّجُلُ السَّمِينُ العَظِيمُ يَوْمَ القِيَامَةِ لاَ يَزِنُ عِنْدَ اللهِ جَناحَ بَعُوضَةٍ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي هريرة عن رسول الله ﷺ قال انه لياتي الرجل السمين العظيم يوم القيامة لا يزن عند الله جناح بعوضة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৪

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৪) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, কালোবর্ণের একজন মহিলা অথবা যুবক মসজিদ ঝাড়ু দিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (একদিন) দেখতে পেলেন না। সুতরাং তিনি তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সাহাবীগণ বললেন, ’সে মারা গেছে।’ তিনি বললেন, তোমরা আমাকে সংবাদ দিলে না কেন? তাঁরা যেন তার ব্যাপারটাকে নগণ্য ভেবেছিলেন। তিনি বললেন, আমাকে তার কবরটা দেখিয়ে দাও। সুতরাং তাঁরা তার কবরটি দেখিয়ে দিলেন এবং তিনি তার উপর জানাযা পড়লেন। অতঃপর তিনি বললেন, নিশ্চয় এ কবরসমূহ কবরবাসীদের জন্য অন্ধকারময়। আর আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য আমার জানাযা পড়ার কারণে তা আলোময় করে দেন।

وَعَنهُ : أَنَّ امْرَأَةً سَوْدَاءَ كَانَتْ تَقُمُّ المَسْجِدَ أَوْ شَابّاً فَفَقَدَهَا أَوْ فَقَدَهُ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَسَأَلَ عَنْهَا أو عَنهُ فَقَالُوا : مَاتَ قَالَ أَفَلا كُنْتُمْ آذَنْتُمُونِي فَكَأنَّهُمْ صَغَّرُوا أمْرَهَا أَوْ أمْرهُ، فَقَالَ دُلُّونِي عَلَى قَبْرِهِ فَدَلُّوهُ فَصَلَّى عَلَيْهَا ثُمَّ قَالَ إنَّ هذِهِ القُبُورَ مَمْلُوءةٌ ظُلْمَةً عَلَى أهْلِهَا وَإنَّ اللهَ تَعَالٰـى يُنَوِّرُهَا لَهُمْ بِصَلاَتِي عَلَيْهِمْ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعنه : ان امراة سوداء كانت تقم المسجد او شابا ففقدها او فقده رسول الله ﷺ فسال عنها او عنه فقالوا : مات قال افلا كنتم اذنتموني فكانهم صغروا امرها او امره، فقال دلوني على قبره فدلوه فصلى عليها ثم قال ان هذه القبور مملوءة ظلمة على اهلها وان الله تعالـى ينورها لهم بصلاتي عليهم متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৫

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৫) উক্ত রাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বহু এমন লোকও আছে যার মাথা উষ্কখুষ্ক ধুলোভরা, যাদেরকে দরজা থেকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। (কিন্তু সে আল্লাহর নিকট এত প্রিয় যে,) সে যদি আল্লাহর উপর কসম খায়, তাহলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দেন।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ رُبَّ أشْعَثَ أغبَرَ مَدْفُوعٍ بِالأبْوابِ لَوْ أقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ رواه مسلم

وعنه قال : قال رسول الله ﷺ رب اشعث اغبر مدفوع بالابواب لو اقسم على الله لابره رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৬

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৬) উসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম। অতঃপর দেখলাম যারা জান্নাতে প্রবেশ করেছে তাদের অধিকাংশ গরীব-মিসকীন মানুষ। আর ধনবানদেরকে (তখনও হিসাবের জন্য) আটকে রাখা হয়েছে। পক্ষান্তরে (অন্যান্য) জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আর আমি জাহান্নামের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখলাম যে, যারা তাতে প্রবেশ করেছে তাদের বেশীর ভাগই নারীর দল।

وَعَن أُسَامَةَ عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ قُمْتُ عَلَى بَابِ الجَنَّةِ فَإِذَا عَامَّةُ مَنْ دَخَلَهَا المَسَاكِينُ وَأصْحَابُ الجَدِّ مَحْبُوسُونَ غَيْرَ أنَّ أصْحَابَ النَّارِ قَدْ أُمِرَ بِهِمْ إِلَى النَّارِ وَقُمْتُ عَلَى بَابِ النَّارِ فَإِذَا عَامَّةُ مَنْ دَخَلَهَا النِّسَاءُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن اسامة عن النبي ﷺ قال قمت على باب الجنة فاذا عامة من دخلها المساكين واصحاب الجد محبوسون غير ان اصحاب النار قد امر بهم الى النار وقمت على باب النار فاذا عامة من دخلها النساء متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৭

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৭) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (নবজাত শিশুদের মধ্যে) দোলনায় তিনজনই মাত্র কথা বলেছে; মারয়্যামের পুত্র ঈসা, আর (বনী ইস্রাঈলের) জুরাইজের (পবিত্রতার সাক্ষী) শিশু। জুরাইজ ইবাদতগুযার মানুষ ছিল এবং সে একটি উপাসনালয় (আশ্রম) বানিয়েছিল। একদা সে সেখানে নামায পড়ছিল। এমন সময় তার মা তার নিকট এসে তাকে ডাকলে সে (মনে মনে) বলল, ’হে প্রভু! আমার মা ও আমার নামায (দুটিই গুরুত্বপূর্ণ; কোনটিকে প্রাধান্য দিই, তার সুমতি দাও)।’

সুতরাং সে নামাযে মশগুল থাকল। আর তার মা ফিরে গেল। পরবর্তী দিনে সে নামাযে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় আবার তার মা এসে ডাক দিল, ’জুরাইজ!’ সে (মনে মনে) বলল, ’হে প্রভু! আমার মা ও আমার নামায (এখন কী করি?)’ সুতরাং সে নামাযে মশগুল থাকল। তার পরবর্তী দিনে সে নামাযে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় আবার তার মা এসে ডাক দিল, ’জুরাইজ!’ সে (মনে মনে) বলল, ’হে প্রভু! আমার মা ও আমার নামায (এখন কী করি?)’ সুতরাং সে নামাযে মশগুল থাকল। তখন (তিন তিন দিন সাড়া না পেয়ে তার মা তাকে বদ্দুআ দিয়ে) বলল, ’হে আল্লাহ! বেশ্যাদের মুখ না দেখা পর্যন্ত তুমি ওর মরণ দিও না।’

বনী ইসরাঈল জুরাইজ ও তার ইবাদতের কথা চর্চা করতে লাগল। এক মহিলা ছিল, যার দৃষ্টান্তমূলক রূপসৌন্দর্য ছিল। সে বলল, ’তোমরা চাইলে আমি ওকে ফিতনায় ফেলতে পারি।’ সুতরাং সে নিজেকে তার কাছে পেশ করল। কিন্তু জুরাইজ তার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করল না। পরিশেষে সে এক রাখালের কাছে এল, যে জুরাইজের আশ্রমে আশ্রয় নিত। সে দেহ সমর্পণ করলে রাখাল তার সাথে ব্যভিচার করল এবং বেশ্যা তাতে গর্ভবতী হয়ে গেল। অতঃপর সে যখন সন্তান ভূমিষ্ঠ করল, তখন (লোকেদের জিজ্ঞাসার উত্তরে) বলল, ’এটি জুরাইজের সন্তান।’ সুতরাং লোকেরা জুরাইজের কাছে এসে তাকে আশ্রম হতে বেরিয়ে আসতে বলল। (সে বেরিয়ে এলে) তারা তার আশ্রম ভেঙ্গে দিল এবং তাকে মারতে লাগল। জুরাইজ বলল, ’কি ব্যাপার তোমাদের? (এ শাস্তি কিসের?)’ লোকেরা বলল, ’তুমি এই বেশ্যার সাথে ব্যভিচার করেছ এবং তার ফলে সে সন্তান জন্ম দিয়েছে।’

সে বলল, ’সন্তানটি কোথায়?’ অতঃপর লোকেরা শিশুটিকে নিয়ে এলে সে বলল, ’আমাকে নামায পড়তে দাও।’ সুতরাং সে নামায পড়ে শিশুটির কাছে এসে তার পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞাসা করল, ’ওহে শিশু! তোমার পিতা কে?’ সে জবাব দিল, ’অমুক রাখাল।’ অতএব লোকেরা (তাদের ভুল বুঝে এবং এই অলৌকিক ঘটনা দেখে) জুরাইজের কাছে এসে তাকে চুমা দিতে ও (বরকত নিতে) স্পর্শ করতে লাগল। তারা বলল, ’আমরা তোমার আশ্রমকে স্বর্ণ দিয়ে বানিয়ে দেব।’ সে বলল, ’না, মাটি দিয়েই তৈরী করে দাও, যেমন পূর্বে ছিল।’ সুতরাং তারা তাই করল।

(তৃতীয় শিশুর ঘটনা হচ্ছে বনী ইস্রাঈলের) এক শিশু তার মায়ের দুধ পান করছিল। এমন সময় তার পাশ দিয়ে উৎকৃষ্ট সওয়ারীতে আরোহী এক সুদর্শন পুরুষ চলে গেল। তার মা দু’আ ক’রে বলল, ’হে আল্লাহ! আমার ছেলেটিকে ওর মত করো।’ শিশুটি তখনি মায়ের দুধ ছেড়ে দিয়ে সেই আরোহীর দিকে ফিরে তাকিয়ে বলল, ’হে আল্লাহ আমাকে ওর মত করো না।’ তারপর মায়ের দুধের দিকে ফিরে দুধ চুষতে লাগল। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের তর্জনী আঙ্গুলকে নিজ মুখে চুষে শিশুটির দুধ পান দেখাতে লাগলেন। আমি যেন তা এখনো দেখতে পাচ্ছি। পুনরায় (তাদের) পাশ দিয়ে একটি দাসীকে লোকেরা মারতে মারতে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা বলছিল, ’তুই ব্যভিচার করেছিস, চুরি করেছিস!’ আর দাসীটি বলছিল, ’হাসবিয়াল্লাহু অনি’মাল অকীল।’ (আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।) তা দেখে মহিলাটি দু’আ করল, ’হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে ওর মত করো না।’

ছেলেটি সাথে সাথে মায়ের দুধ ছেড়ে দাসীটির দিকে তাকিয়ে বলল, ’হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওর মত করো।’ অতঃপর মাবেটায় কথোপকথন করল। মা বলল, ’একটি সুন্দর আকৃতির লোক পার হলে আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে ওর মত করো। তখন তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওর মত করো না। আবার ওরা ঐ দাসীকে নিয়ে পার হলে আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে ওর মত করো না। কিন্তু তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওর মত করো! (এর কারণ কি?)’ শিশুটি বলল, ’(তুমি বাহির দেখে বলেছ, আর আমি ভিতর দেখে বলেছি।) ঐ লোকটি স্বৈরাচারী, তাই আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওর মত করো না। আর ঐ দাসীটির জন্য ওরা বলছে, তুই ব্যভিচার করেছিস, চুরি করেছিস, অথচ ও এ সব কিছুই করেনি। তাই আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওর মত করো।’

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ لَمْ يَتَكَلَّمْ في المَهْدِ إلاَّ ثَلاثَةٌ : عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَصَاحِبُ جُرَيْجٍ وَكَانَ جُرَيْجٌ رَجُلاً عَابِداً فَاتَّخَذَ صَوْمَعَةً فَكَانَ فِيهَا فَأَتَتْهُ أُمُّهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ : يَا جُرَيْجُ فَقَالَ : يَا رَبِّ أُمِّي وَصَلاتِي فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاتِهِ فَانْصَرَفَتْ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الغَدِ أتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ : يَا جُرَيْجُ فَقَالَ : أيْ رَبِّ أمِّي وَصَلاتِي فَأقْبَلَ عَلَى صَلاتِهِ فَلَمَّا كَانَ مِنْ الغَدِ أتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ : يَا جُرَيْجُ فَقَالَ : أيْ رَبِّ أمِّي وَصَلاتِي فَأقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ فَقَالَتْ : اَللّٰهُمَّ لاَ تُمِتْهُ حَتّٰـى يَنْظُرَ إِلَى وُجُوهِ المُومِسَاتِ فَتَذَاكَرَ بَنُو إسْرائِيل جُرَيْجاً وَعِبَادَتَهُ وَكَانَتِ امْرَأةٌ بَغِيٌّ يُتَمَثَّلُ بحُسْنِهَا فَقَالَتْ : إنْ شِئْتُمْ لأَفْتِنَنَّهُ فَتَعَرَّضَتْ لَهُ فَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَيْهَا فَأتَتْ رَاعِياً كَانَ يَأوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ فَأَمْكَنَتْهُ مِنْ نَفْسِهَا فَوقَعَ عَلَيْهَا فَحَمَلَتْ فَلَمَّا وَلَدَتْ قَالَتْ : هُوَ مِنْ جُريج فَأتَوْهُ فَاسْتَنْزَلُوهُ وَهَدَمُوا صَوْمَعَتَهُ وَجَعَلُوا يَضْرِبُونَهُ فَقَالَ : مَا شَأنُكُمْ ؟ قَالُوا : زَنَيْتَ بهذِهِ البَغِيِّ فَوَلَدَتْ مِنْكَ قَالَ : أيْنَ الصَّبيُّ ؟ فَجَاؤُوا بِهِ فَقَالَ : دَعُوني حَتّٰـى أصَلِّي فَصَلَّى فَلَمَّا انْصَرفَ أتَى الصَّبيَّ فَطَعنَ في بَطْنِهِ وَقالَ : يَا غُلامُ مَنْ أبُوكَ ؟ قَالَ : فُلانٌ الرَّاعِي فَأَقْبَلُوا عَلَى جُرَيْجٍ يُقَبِّلُونَهُ وَيَتَمَسَّحُونَ بِهِ وَقَالُوا : نَبْنِي لَكَ صَوْمَعَتَكَ مِنْ ذَهَب قَالَ : لاَ أعِيدُوهَا مِنْ طِينٍ كَمَا كَانَتْ فَفَعلُوا وبَينَا صَبِيٌّ يَرْضَعُ منْ أُمِّهِ فَمَرَّ رَجُلٌ رَاكِبٌ عَلَى دَابَّةٍ فَارِهَةٍ وَشَارَةٍ حَسَنَةٍ فَقَالَتْ أُمُّهُ : اَللّٰهُمَّ اجْعَل ابْنِي مِثْلَ هٰذَا فَتَرَكَ الثَّدْيَ وَأقْبَلَ إِلَيْهِ فَنَظَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ ثُمَّ أقْبَلَ عَلَى ثَدْيه فَجَعَلَ يَرتَضِعُ فَكَأنِّي أنْظُرُ إِلَى رَسُول الله ﷺ وَهُوَ يَحْكِي ارْتضَاعَهُ بِأصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ في فِيه فَجَعَلَ يَمُصُّهَا قَالَ وَمَرُّوا بِجَارِيَةٍ وَهُم يَضْرِبُونَهَا ويَقُولُونَ : زَنَيْتِ سَرَقْتِ وَهِيَ تَقُولُ : حَسْبِيَ اللهُ ونِعْمَ الوَكِيلُ فَقَالَتْ أمُّهُ : اَللّٰهُمَّ لاَ تَجْعَل ابْنِي مِثْلَهَا فَتَركَ الرَّضَاعَ ونَظَرَ إِلَيْهَا فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ اجْعَلْنِي مثْلَهَا فَهُنَالِكَ تَرَاجَعَا الحَديثَ، فَقَالَتْ : مَرَّ رَجُلٌ حَسَنُ إِلٰهَيْئَةِ فَقُلْتُ : اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ ابْنِي مِثْلَهُ فَقُلْتَ : اَللّٰهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ وَمَرُّوا بهذِهِ الأمَةِ وَهُمْ يَضْرِبُونَهَا وَيَقُولُونَ : زَنَيْتِ سَرَقْتِ فقلتُ : اَللّٰهُمَّ لاَ تَجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهَا فَقُلْتَ : اَللّٰهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا قَالَ : إنَّ ذلك الرَّجُل كَانَ جَبَّاراً فَقُلْتُ : اَللّٰهُمَّ لا تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ وَإنَّ هذِهِ يَقُولُونَ : زَنَيْتِ وَلَمْ تَزْنِ وَسَرقْتِ وَلَمْ تَسْرِقْ فَقُلْتُ : اَللّٰهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال لم يتكلم في المهد الا ثلاثة : عيسى ابن مريم وصاحب جريج وكان جريج رجلا عابدا فاتخذ صومعة فكان فيها فاتته امه وهو يصلي فقالت : يا جريج فقال : يا رب امي وصلاتي فاقبل على صلاته فانصرفت فلما كان من الغد اتته وهو يصلي فقالت : يا جريج فقال : اي رب امي وصلاتي فاقبل على صلاته فلما كان من الغد اتته وهو يصلي فقالت : يا جريج فقال : اي رب امي وصلاتي فاقبل على صلاته فقالت : اللهم لا تمته حتـى ينظر الى وجوه المومسات فتذاكر بنو اسراىيل جريجا وعبادته وكانت امراة بغي يتمثل بحسنها فقالت : ان شىتم لافتننه فتعرضت له فلم يلتفت اليها فاتت راعيا كان ياوي الى صومعته فامكنته من نفسها فوقع عليها فحملت فلما ولدت قالت : هو من جريج فاتوه فاستنزلوه وهدموا صومعته وجعلوا يضربونه فقال : ما شانكم ؟ قالوا : زنيت بهذه البغي فولدت منك قال : اين الصبي ؟ فجاووا به فقال : دعوني حتـى اصلي فصلى فلما انصرف اتى الصبي فطعن في بطنه وقال : يا غلام من ابوك ؟ قال : فلان الراعي فاقبلوا على جريج يقبلونه ويتمسحون به وقالوا : نبني لك صومعتك من ذهب قال : لا اعيدوها من طين كما كانت ففعلوا وبينا صبي يرضع من امه فمر رجل راكب على دابة فارهة وشارة حسنة فقالت امه : اللهم اجعل ابني مثل هذا فترك الثدي واقبل اليه فنظر اليه فقال : اللهم لا تجعلني مثله ثم اقبل على ثديه فجعل يرتضع فكاني انظر الى رسول الله ﷺ وهو يحكي ارتضاعه باصبعه السبابة في فيه فجعل يمصها قال ومروا بجارية وهم يضربونها ويقولون : زنيت سرقت وهي تقول : حسبي الله ونعم الوكيل فقالت امه : اللهم لا تجعل ابني مثلها فترك الرضاع ونظر اليها فقال : اللهم اجعلني مثلها فهنالك تراجعا الحديث، فقالت : مر رجل حسن الهيىة فقلت : اللهم اجعل ابني مثله فقلت : اللهم لا تجعلني مثله ومروا بهذه الامة وهم يضربونها ويقولون : زنيت سرقت فقلت : اللهم لا تجعل ابني مثلها فقلت : اللهم اجعلني مثلها قال : ان ذلك الرجل كان جبارا فقلت : اللهم لا تجعلني مثله وان هذه يقولون : زنيت ولم تزن وسرقت ولم تسرق فقلت : اللهم اجعلني مثلها متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৮

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৮) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ধ্বংস হোক দীনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম ও উত্তম পোশাকের গোলাম (দুনিয়াদার)! যদি তাকে দেওয়া হয়, তাহলে সে সন্তুষ্ট হয়। আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। সে ধ্বংস হোক, লাঞ্ছিত হোক! তার পায়ে কাঁটা বিঁধলে তা বের করতে না পারুক। ঐ বান্দার জন্য সুসংবাদ যে আল্লাহর পথে নিজের ঘোড়ার লাগাম ধরে প্রস্তুত আছে। যার মাথার কেশ আলুথালু, যার পদযুগল ধূলিমলিন। তাকে পাহারার কাজে নিযুক্ত করলে, পাহারার কাজে নিযুক্ত থাকে। আর তাকে সৈন্যদলের পশ্চাতে (দেখাশোনার কাজে) নিয়োজিত করলে, সৈন্যদলের পশ্চাতে থাকে। যদি সে কারো সাক্ষাতের অনুমতি চায়, তাহলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয় না এবং কারো জন্য সুপারিশ করলে, তার সুপারিশ গ্রহণ করা হয় না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ وَعَبْدُ الْخَمِيصَةِ إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ وَإِنْ لَمْ يُعْطَ سَخِطَ تَعِسَ وَانْتَكَسَ وَإِذَا شِيكَ فَلَا انْتَقَشَ طُوبَى لِعَبْدٍ آخِذٍ بِعِنَانِ فَرَسِهِ فِي سَبِيلِ اللهِ أَشْعَثَ رَأْسُهُ مُغْبَرَّةٍ قَدَمَاهُ إِنْ كَانَ فِي الْحِرَاسَةِ كَانَ فِي الْحِرَاسَةِ وَإِنْ كَانَ فِي السَّاقَةِ كَانَ فِي السَّاقَةِ إِنْ اسْتَأْذَنَ لَمْ يُؤْذَنْ لَهُ وَإِنْ شَفَعَ لَمْ يُشَفَّعْ

عن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال تعس عبد الدينار وعبد الدرهم وعبد الخميصة ان اعطي رضي وان لم يعط سخط تعس وانتكس واذا شيك فلا انتقش طوبى لعبد اخذ بعنان فرسه في سبيل الله اشعث راسه مغبرة قدماه ان كان في الحراسة كان في الحراسة وان كان في الساقة كان في الساقة ان استاذن لم يوذن له وان شفع لم يشفع

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮২৯

পরিচ্ছেদঃ দুর্বল, গরীব ও খ্যাতিহীন মুসলিমদের মাহাত্ম্য

(৩৮২৯) উম্মে দারদা (রাঃ) বলেন, আমি আবূদ দারদাকে বললাম, ’কী ব্যাপার তুমিও কেন অমুক অমুকের মতো করে (দুনিয়া বা সম্পদ) তলব করো না?’ তখন তিনি উত্তরে বললেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, অবশ্যই তোমাদের পশ্চাতে এমন সংকটময় গিরি রয়েছে যা (পার্থিব সম্পদের বোঝায়) ভারী লোকেরা অতিক্রম করতে পারবে না। তাই আমি ঐ গিরি অতিক্রম করার জন্য হালকা থাকতে চাই।

عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ : قُلْتُ لَهُ مَا لَكَ لاَ تَطْلُبُ مَا يَطْلُبُ فَلاَنٌ وَفُلاَنٌ؟ قَالَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يَقُولُ : ’’إِنَّ وَرَاءَكُمْ عَقَبَةً كَؤُوداً لاَ يَجُوزُهَا الْمُثْقِلُونَ فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَتَخَفَّفَ لِتِلْكَ الْعَقَبَة

عن ام الدرداء عن ابي الدرداء رضي الله عنهما قالت : قلت له ما لك لا تطلب ما يطلب فلان وفلان؟ قال اني سمعت رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول : ’’ان وراءكم عقبة كوودا لا يجوزها المثقلون فانا احب ان اتخفف لتلك العقبة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩০

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ’আমি বড়ই ক্ষুধার্ত।’ তিনি তাঁর কোন এক স্ত্রীর কাছে লোক পাঠালে তিনি বললেন, ’যে সত্তা আপনাকে সত্য দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাঁর শপথ! আমার কাছে পানি ছাড়া কিছুই নেই।’ তিনি অন্য এক স্ত্রীর কাছে লোক পাঠালে তিনিও একই কথা বললেন। এইভাবে সকল স্ত্রী এই কথাই বললেন যে, ’সেই সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, আমার নিকট পানি ছাড়া অন্য কিছুই নেই।’ তখন তিনি বললেন, ’’আজ রাতে লোকটির মেহমানদারী কে করবে? আল্লাহ তার প্রতি রহম করবেন।’’ এক আনসারী ব্যক্তি উঠে বলল, ’হে আল্লাহর রাসূল! আমি (এর মেহমানদারী করব)।’ অতঃপর সে লোকটিকে নিয়ে স্বীয় বাড়ীর দিকে রওনা দিল এবং তার স্ত্রীকে বলল, ’তোমার কাছে কিছু আছে কি?’ সে বলল, ’না। কেবল বাচ্চাদের জন্য সামান্য কিছু খাবার আছে।’

সাহাবী বললেন, ’তাদের (বাচ্চাদের) কিছু দিয়ে ভুলিয়ে রাখ।’ (অপর এক বর্ণনায় এসেছে যে, ’বাচ্চাদের ভুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দাও।) আর যখন মেহমান প্রবেশ করবে, তখন তুমি আলোটা কমিয়ে দেবে। তুমি তাকে দেখাবে যে, আমরাও আহার করছি। তারপর সে যখন খাওয়ার শুরু করবে, তখন তুমি আলোর কাছে গিয়ে সেটাকে একেবারে নিভিয়ে দেবে।’ বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাঁরা বসেই রইলেন, আর মেহমান খেতে লাগল। সকাল বেলা তিনি (আনসারী) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলে তিনি বললেন, ’’আজ রাতে মেহমানের সাথে তোমাদের দু’জনের আচরণে আল্লাহ হেসেছেন অথবা বিস্মিত হয়েছেন এবং তিনি এই আয়াত নাযিল করেছেন, ’নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তারা (অন্যদেরকে) নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়। আর যাদেরকে নিজ আত্মার কার্পণ্য হতে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলকাম।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ ﷺ فَبَعَثَ إِلَى نِسَائِهِ فَقُلْنَ مَا مَعَنَا إِلَّا الْمَاءُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ يَضُمُّ أَوْ يُضِيفُ هٰذَا فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ أَنَا فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ أَكْرِمِي ضَيْفَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَتْ مَا عِنْدَنَا إِلَّا قُوتُ صِبْيَانِي فَقَالَ هَيِّئِي طَعَامَكِ وَأَصْبِحِي سِرَاجَكِ وَنَوِّمِي صِبْيَانَكِ إِذَا أَرَادُوا عَشَاءً فَهَيَّأَتْ طَعَامَهَا وَأَصْبَحَتْ سِرَاجَهَا وَنَوَّمَتْ صِبْيَانَهَا ثُمَّ قَامَتْ كَأَنَّهَا تُصْلِحُ سِرَاجَهَا فَأَطْفَأَتْهُ فَجَعَلَا يُرِيَانِهِ أَنَّهُمَا يَأْكُلَانِ فَبَاتَا طَاوِيَيْنِ فَلَمَّا أَصْبَحَ غَدَا إِلٰـى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقَالَ ضَحِكَ اللهُ اللَّيْلَةَ أَوْ عَجِبَ مِنْ فَعَالِكُمَا فَأَنْزَلَ اللهُ وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمْ الْمُفْلِحُونَ

عن ابي هريرة رضي الله عنه ان رجلا اتى النبي ﷺ فبعث الى نساىه فقلن ما معنا الا الماء فقال رسول الله ﷺ من يضم او يضيف هذا فقال رجل من الانصار انا فانطلق به الى امراته فقال اكرمي ضيف رسول الله ﷺ فقالت ما عندنا الا قوت صبياني فقال هيىي طعامك واصبحي سراجك ونومي صبيانك اذا ارادوا عشاء فهيات طعامها واصبحت سراجها ونومت صبيانها ثم قامت كانها تصلح سراجها فاطفاته فجعلا يريانه انهما ياكلان فباتا طاويين فلما اصبح غدا الـى رسول الله ﷺ فقال ضحك الله الليلة او عجب من فعالكما فانزل الله ويوثرون على انفسهم ولو كان بهم خصاصة ومن يوق شح نفسه فاولىك هم المفلحون

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩১

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, ’আমি সত্তর জন আসহাবে সুফ্ফা দেখেছি, তাঁদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কেউ ছিল না যাঁর পূর্ণ কোন চাদর ছিল। কারোর হয় লুঙ্গি কিংবা ছোট চাদর থাকত যেটাকে তাঁরা গলায় বেঁধে রাখতেন। তার কোনটা কারো হাঁটুর অর্ধেক পর্যন্ত এবং কোনটা গোড়ালী পর্যন্ত পৌঁছত। আর সে হাত দিয়ে সেটি ধরে রাখতেন, পাছে তাঁর লজ্জাস্থান দেখা যায়—এই আশঙ্কায়।’

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ رَأَيْتُ سَبْعِينَ مِنْ أَصْحَابِ الصُّفَّةِ مَا مِنْهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ رِدَاءٌ إِمَّا إِزَارٌ وَإِمَّا كِسَاءٌ قَدْ رَبَطُوا فِي أَعْنَاقِهِمْ فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْنِ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الْكَعْبَيْنِ فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَرَاهِيَةَ أَنْ تُرَى عَوْرَتُهُ

عن ابي هريرة قال رايت سبعين من اصحاب الصفة ما منهم رجل عليه رداء اما ازار واما كساء قد ربطوا في اعناقهم فمنها ما يبلغ نصف الساقين ومنها ما يبلغ الكعبين فيجمعه بيده كراهية ان ترى عورته

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩২

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩২)আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বীক্ব বলেন, আমি আবূ হুরাইরা (রাঃ) এর সাথে মদীনায় এক বছর ছিলাম। একদা যখন আমরা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)র হুজরার কাছে ছিলাম, তিনি (আবূ হুরাইরা) আমাকে বললেন, আমরা এমনও অবস্থার সম্মুখীন হয়েছি যে, কয়েকটি ছেঁড়া-ফাটা চাদর ব্যতীত আমাদের কাছে অন্য কোন কাপড়ই থাকত না। আর আমাদের কারো কারো উপর দিয়ে এমন কয়েক দিন অতিবাহিত হয়ে যেত যে, সে তার পিঠ সোজা রাখার জন্য কোন খাদ্য পেত না। এমন কি আমাদের কেউ কেউ তার পিঠকে সোজা রাখার জন্য পাথর নিয়ে কাপড় দিয়ে পেটের নিম্নাংশকে বেঁধে রাখত।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيقٍ قَالَ أَقَمْتُ بِالْمَدِينَةِ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ سَنَةً فَقَالَ لِي ذَاتَ يَوْمٍ وَنَحْنُ عِنْدَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا لَنَا ثِيَابٌ إِلَّا الْبِرَادُ الْمُفَتَّقَةُ وَإِنَّهُ لَيَأْتِي عَلَى أَحَدِنَا الْأَيَّامُ مَا يَجِدُ طَعَامًا يُقِيمُ بِهِ صُلْبَهُ حَتّٰـى إِنْ كَانَ أَحَدُنَا لَيَأْخُذُ الْحَجَرَ فَيَشُدُّهُ عَلَى أَخْمَصِ بَطْنِهِ ثُمَّ يَشُدُّهُ بِثَوْبِهِ لِيُقِيمَ بِهِ صُلْبَهُ

عن عبد الله بن شقيق قال اقمت بالمدينة مع ابي هريرة سنة فقال لي ذات يوم ونحن عند حجرة عاىشة لقد رايتنا وما لنا ثياب الا البراد المفتقة وانه لياتي على احدنا الايام ما يجد طعاما يقيم به صلبه حتـى ان كان احدنا لياخذ الحجر فيشده على اخمص بطنه ثم يشده بثوبه ليقيم به صلبه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৩

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, ’আমি পেট পুরে কিছু খাওয়ার জন্য সব সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পড়ে থাকতাম। আর তখন আমার খাওয়ার জন্য রুটি ছিল না। পরার জন্য নতুন কাপড় ছিল না এবং খেদমতের জন্য কোন দাস-দাসীও ছিল না। পেটে পাথর বেঁধে পড়ে থাকতাম এবং মানুষের নিকট আয়াত তেলাঅত করার আবেদন করতাম অথচ তা আমিই তেলাঅত করতে জানি, যেন তারা আমাকে তাদের বাড়ী নিয়ে যায় এবং কিছু খাওয়ায়। (আমার ন্যায়) গরীব-মিসকীনদের জন্য জা’ফর ইবনে আবূ তালেব (রাঃ) ছিলেন সর্বোত্তম ব্যক্তি। তিনি আমাদেরকে সাথে নিয়ে যেতেন এবং তাঁর ঘরে যা থাকত, তা আমাদেরকে খাওয়াতেন। এমনকি কোন কোন সময় তিনি আমাদের সামনে (ঘি ও মধু রাখার) খালি পাত্রটাই নিয়ে আসতেন আর আমরা তা ভেঙ্গে চাটতাম।’

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ كُنْتُ أَلْزَمُ النَّبِيَّ ﷺ لِشِبَعِ بَطْنِي حِينَ لَا آكُلُ الْخَمِيرَ وَلَا أَلْبَسُ الْحَرِيرَ (الحبير) وَلَا يَخْدُمُنِي فُلَانٌ وَلَا فُلَانَةُ وَأُلْصِقُ بَطْنِي بِالْحَصْبَاءِ وَأَسْتَقْرِئُ الرَّجُلَ الْآيَةَ وَهِيَ مَعِي كَيْ يَنْقَلِبَ بِي فَيُطْعِمَنِي وَخَيْرُ النَّاسِ لِلْمَسَاكِينِ جَعْفَرُ بْنُ أَبِي طَالِبٍ يَنْقَلِبُ بِنَا فَيُطْعِمُنَا مَا كَانَ فِي بَيْتِهِ حَتّٰـى إِنْ كَانَ لَيُخْرِجُ إِلَيْنَا الْعُكَّةَ لَيْسَ فِيهَا شَيْءٌ فَنَشْتَقُّهَا فَنَلْعَقُ مَا فِيهَا

عن ابي هريرة قال كنت الزم النبي ﷺ لشبع بطني حين لا اكل الخمير ولا البس الحرير (الحبير) ولا يخدمني فلان ولا فلانة والصق بطني بالحصباء واستقرى الرجل الاية وهي معي كي ينقلب بي فيطعمني وخير الناس للمساكين جعفر بن ابي طالب ينقلب بنا فيطعمنا ما كان في بيته حتـى ان كان ليخرج الينا العكة ليس فيها شيء فنشتقها فنلعق ما فيها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৪

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩৪) মুহাম্মাদ বলেন, একদা আমরা আবূ হুরাইরা (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি লাল রঙের দু’টি সুতীর কাপড় পরেছিলেন। তিনি তার একটির দ্বারা স্বীয় নাক পরিষ্কার করলেন এবং বললেন, ’বাহ! বাহ! আবূ হুরাইরা আজ সুতির কাপড়ে নাক পরিষ্কার করছে। অথচ অতীতে আমি নিজেকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বার এবং আয়েশা (রাঃ) এর হুজরার মধ্যবর্তী স্থানে বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকতাম। লোকেরা আমাকে পাগল মনে করে আমার ঘাড়ের উপর পা রাখত। অথচ আমি পাগল ছিলাম না, বরং ক্ষুধার তাড়নায় (আমি এমনিভাবে বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকতাম।)’

عَنْ مُحَمَّدٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَلَيْهِ ثَوْبَانِ مُمَشَّقَانِ مِنْ كَتَّانٍ فَتَمَخَّطَ فَقَالَ بَخْ بَخْ أَبُو هُرَيْرَةَ يَتَمَخَّطُ فِي الْكَتَّانِ لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَإِنِّي لَأَخِرُّ فِيمَا بَيْنَ مِنْبَرِ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ مَغْشِيًّا عَلَيَّ فَيَجِيءُ الْجَائِي فَيَضَعْ رِجْلَهُ عَلَى عُنُقِي وَيُرَى أَنِّي مَجْنُونٌ وَمَا بِي مِنْ جُنُونٍ مَا بِي إِلَّا الْجُوعُ

عن محمد قال كنا عند ابي هريرة وعليه ثوبان ممشقان من كتان فتمخط فقال بخ بخ ابو هريرة يتمخط في الكتان لقد رايتني واني لاخر فيما بين منبر رسول الله ﷺ الى حجرة عاىشة مغشيا علي فيجيء الجاىي فيضع رجله على عنقي ويرى اني مجنون وما بي من جنون ما بي الا الجوع

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইবনু সীরীন (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৫

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩৫) সা’দ ইবনে আবূ অক্কাস (রাঃ) বলেন, আমরা যখন আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করেছি, তখন অবস্থা এমন ছিল যে, এই হুবলা এবং বাবলা বৃক্ষর পাতা ব্যতিরেকে আমাদের নিকট খাবার মত কোন কিছুই থাকত না। ফলে আমাদের এক একজন ছাগলের মত মল ত্যাগ করত।

عَنْ سَعْدٍ قَالَ: وَرَأَيْتُنَا نَغْزُو وَمَا لَنَا طَعَامٌ إِلَّا وَرَقُ الْحُبْلَةِ وَهٰذَا السَّمُرُ وَإِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ

عن سعد قال: ورايتنا نغزو وما لنا طعام الا ورق الحبلة وهذا السمر وان احدنا ليضع كما تضع الشاة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৬

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩৬) ফাযালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন লোকেদের নামায পড়াতেন, তখন কিছু লোক ক্ষুধার কারণে (দুর্বলতায়) পড়ে যেতেন, আর তাঁরা ছিলেন আহলে সুফফাহ। এমনকি মরুবাসী বেদুঈনরা বলত, ’এরা পাগল।’ একদা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায সেরে তাদের দিকে মুখ ফিরালেন, তখন বললেন, ’’তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা এর চাইতেও অভাব ও দারিদ্র্য পছন্দ করতে।

وعن فَضَالَةَ بنِ عُبَيدٍ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ إِذَا صَلَّى بِالنَّاسِ يَخِرُّ رِجَالٌ مِنْ قَامَتِهِمْ في الصَّلاةِ مِنَ الخَصَاصَةِ ـ وَهُمْ أصْحَابُ الصُّفَّةِ ـ حَتّٰـى يَقُولَ الأعْرَابُ : هؤُلاَء مَجَانِينٌ فَإذَا صلَّى رَسُول اللهِ ﷺ انْصَرَفَ إلَيْهِمْ فَقَالَ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا لَكُمْ عِنْدَ اللهِ تَعَالٰـى لأَحْبَبْتُمْ أنْ تَزْدَادُوا فَاقَةً وَحَاجَةً رَوَاهُ التِّرْمِذِي وقال حديث صحيح

وعن فضالة بن عبيد ان رسول الله ﷺ كان اذا صلى بالناس يخر رجال من قامتهم في الصلاة من الخصاصة ـ وهم اصحاب الصفة ـ حتـى يقول الاعراب : هولاء مجانين فاذا صلى رسول الله ﷺ انصرف اليهم فقال لو تعلمون ما لكم عند الله تعالـى لاحببتم ان تزدادوا فاقة وحاجة رواه الترمذي وقال حديث صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৭

পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণের অভাবের-জীবন

(৩৮৩৭) ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম, ইতিমধ্যে এক আনসারী এলেন এবং তাঁকে সালাম দিলেন। অতঃপর আনসারী ফিরে যেতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারের ভাই! আমার ভাই সা’দ ইবনে উবাদাহ কেমন আছে? তিনি বললেন, ’ভাল আছে।’ তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে (অসুস্থ সা’দকে) দেখতে যাবে? সুতরাং তিনি উঠে দাড়ালেন এবং আমরাও উঠে দাঁড়ালাম। আমরা দশের কিছু বেশী ছিলাম। আমাদের দেহে জুতো, মোজা, টুপী এবং জামা কিছুই ছিল না। আমরা ঐ পাথুরে যমিনে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম, এমনকি শেষ পর্যন্ত আমরা সা’দ (রাঃ) এর নিকট পৌঁছে গেলাম। তার গৃহবাসীরা তাঁর নিকট থেকে সরে গেল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ তাঁর নিকটবর্তী হলেন।

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ : كُنَّا جُلُوساً مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ ثُمَّ أدْبَرَ الأَنْصَاريُّ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَا أخَا الأنْصَارِ كَيْفَ أخِي سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ ؟ فَقَالَ : صَالِحٌ فَقَالَ رَسُول اللهِ ﷺ مَنْ يَعُودُهُ مِنْكُمْ ؟ فَقَامَ وَقُمْنَا مَعَهُ، وَنَحْنُ بضْعَةَ عَشَرَ، مَا عَلَيْنَا نِعَالٌ، وَلاَ خِفَافٌ، وَلاَ قَلاَنِسُ، وَلاَ قُمُصٌ، نَمْشِي في تِلك السِّبَاخِ، حَتّٰـى جِئْنَاهُ، فَاسْتَأْخَرَ قَوْمُهُ مِنْ حَوْلِه حَتّٰـى دَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَأصْحَابُهُ الَّذِينَ مَعَهُ رواه مسلم

وعن ابن عمر رضي الله عنهما، قال : كنا جلوسا مع رسول الله ﷺ اذ جاء رجل من الانصار فسلم عليه ثم ادبر الانصاري فقال رسول الله ﷺ يا اخا الانصار كيف اخي سعد بن عبادة ؟ فقال : صالح فقال رسول الله ﷺ من يعوده منكم ؟ فقام وقمنا معه، ونحن بضعة عشر، ما علينا نعال، ولا خفاف، ولا قلانس، ولا قمص، نمشي في تلك السباخ، حتـى جىناه، فاستاخر قومه من حوله حتـى دنا رسول الله ﷺ واصحابه الذين معه رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
৩৮৩৮

পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ

(৩৮৩৮) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আরাফাতে ভাষণ দিচ্ছিলেন। অতঃপর যখন সূর্য পাহাড়ের মাথায় এসে অস্তের কাছাকাছি হল, তখন তিনি বললেন,

أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَمْ يَبْقَ مِنْ دُنْيَاكُمْ فِيمَا مَضَى مِنْهَا إِلَّا كَمَا بَقِيَ مِنْ يَوْمِكُمْ هٰذَا فِيمَا مَضَى مِنْهُ

হে লোক সকল! দুনিয়ার সময় যতটুকু পার হয়ে গেছে, তার মোকাবেলায় কেবল ততটুকু অবশিষ্ট আছে, তোমাদের আজকের দিনের সময় পার হওয়ার মোকাবেলায় যতটুকু অবশিষ্ট আছে।

-

-

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 পরের পাতা »