পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
فَخَلَفَ منْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيّاً إِلاَّ مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحاً فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلاَ يُظْلَمُونَ شَيْئاً
অর্থাৎ, তাদের পর এল অপদার্থ পরবর্তীগণ, তারা নামায নষ্ট করল ও প্রবৃত্তিপরায়ণ হল; সুতরাং তারা অচিরেই অমঙ্গল প্রত্যক্ষ করবে। কিন্তু তারা নয় যারা তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে; তারা তো জান্নাতে প্রবেশ করবে; আর তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না। (সূরা মারয়্যাম ৫৯-৬০ আয়াত) তিনি আরো বলেন,
فَخَرَجَ عَلَى قَوْمِهِ في زِينَتِهِ قَالَ الَّذِينَ يُريدُونَ الحَيَاةَ الدُّنْيَا يَا لَيْتَ لَنَا مِثْلَ مَا أُوتِيَ قَارُونُ إنَّهُ لَذُو حَظٍّ عَظِيمٍ وَقَالَ الَّذِينَ أُوتُوا العِلْمَ وَيْلَكُمْ ثَواب اللهِ خَيْرٌ لِمَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحَاً
অর্থাৎ, কারূন তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে জাঁকজমক সহকারে বাহির হল। যারা পার্থিব জীবন কামনা করত তারা বলল, আহা! কারূনকে যা দেওয়া হয়েছে সেরূপ যদি আমাদেরও থাকত; প্রকৃতই সে মহা ভাগ্যবান। আর যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক্ তোমাদের! যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ। আর ধৈর্যশীল ব্যতীত তা অন্য কেউ পায় না। (সূরা কাস্বাস ৭৯-৮০ আয়াত) আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেছেন,
ثُمَّ لًتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَن النَّعِيمِ
অর্থাৎ, এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা সুখ-সম্পদ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে। (সূরা তাকাসুর ৮)
অন্যত্র আল্লাহ তা’আলা বলেন,
مَنْ كَانَ يُريدُ العَاجِلَةَ عَجَّلْنَا لَهُ فِيهَا مَا نَشَاءُ لِمَنْ نُريدُ ثُمَّ جَعَلْنَا لَهُ جَهَنَّمَ يَصْلاَهَا مَذْمُوماً مَدْحُوراً
অর্থাৎ, কেউ পার্থিব সুখ-সম্ভোগ কামনা করলে আমি যাকে যা ইচ্ছা সত্বর দিয়ে থাকি, পরে তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত করি; সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ হতে দূরীকৃত অবস্থায় (সূরা বানী ইস্রাঈল ১৮ আয়াত)
(৩২৮) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিজন তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত ক্রমাগত দু’দিন যবের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খেতে পাননি।
অন্য এক বর্ণনায় আছে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিজন মদীনায় আগমনের পর থেকে তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত ক্রমাগত তিনদিন পর্যন্ত গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খেতে পাননি।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَت : مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ ﷺ مِنْ خُبْزِ شَعِيرٍ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ متفقٌ عَلَيْهِ - وفي رواية : مَا شَبِعَ آلُ محَمّدٍ ﷺ مُنْذُ قَدِمَ المَدِينَةَ مِنْ طَعَامِ البُرِّ ثَلاثَ لَيَالٍ تِبَاعاً حَتَّى قُبِضَ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩২৯) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (একবার) উরওয়াহ (রহঃ) কে বললেন, হে ভগিনীপুত্র! আমরা দু’মাসের মধ্যে তিনবার নয়া চাঁদ দেখতাম। কিন্তু এর মধ্যে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গৃহসমূহে (রান্নার) জন্য আগুন জ্বালানো হত না। উরওয়াহ বললেন, খালা! তাহলে আপনারা কী খেয়ে জীবন কাটাতেন? তিনি বললেন, কালো দু’টো জিনিস দিয়ে। অর্থাৎ, শুকনো খেজুর আর পানিই (আমাদের খাদ্য হত)। অবশ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিবেশী কয়েকজন আনসারী সাহাবীর দুগ্ধবতী উটনী ও ছাগী ছিল। তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য দুধ পাঠাতেন, তখন তিনি আমাদেরকে তা পান করাতেন।
وَعَن عُروَةَ عَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا أنَّهَا كَانَتْ تَقُولُ: وَاللهِ يَا ابْنَ أُخْتِي إنْ كُنَّا نَنْظُرُ إِلَى الهِلاَلِ ثُمَّ الهِلالِ : ثَلاَثَةُ أَهلَّةٍ في شَهْرَيْنِ وَمَا أُوقِدَ فِي أبْيَاتِ رَسُولِ اللهِ ﷺ نَارٌ قُلْتُ : يَا خَالَةُ فَمَا كَانَ يُعِيشُكُمْ ؟ قَالَت : الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالمَاءُ إِلاَّ أنَّهُ قَدْ كَانَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ جِيرَانٌ مِنَ الأَنْصَارِ وكَانَتْ لَهُمْ مَنَائِحُ وَكَانُوا يُرْسِلُونَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ مِنْ ألْبَانِهَا فَيَسْقِينَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩০) আবূ সাঈদ মাক্ববুরী বলেন, একদা আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) একদল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, যাদের সামনে ভুনা বকরী ছিল। তারা তাঁকে (খেতে) ডাকল। তিনি খেতে রাজী হলেন না এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন অথচ তিনি কোন দিন যবের রুটিও পেট পুরে খাননি।
وَعَنْ أَبِيْ سَعِيدٍ الْمَقبُرِيِّ عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّهُ مَرَّ بِقَومٍ بَيْنَ أَيدِيهِمْ شَاةٌ مَصْلِيَّةٌ فَدَعَوْهُ فَأبَى أَنْ يأْكُلَ وَقَالَ : خَرَجَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مِنَ الدُّنْيَا وَلَمْ يَشْبَعْ مِنْ خُبْزِ الشَّعيرِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩১) আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো (টেবিল জাতীয় উঁচু স্থানে) এর উপর খাবার রেখে আহার করেননি এবং তিনি মৃত্যু পর্যন্ত পাতলা (চাপাতি) রুটি খাননি। বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আছে, আর তিনি কখনোও ভুনা (গোটা) বকরী স্বচক্ষে দেখেননি।
-
(বুখারী ৫৪২১)
وَعَن أَنَسٍ قَالَ : لَمْ يَأكُلِ النَّبيُّ ﷺ عَلَى خِوَانٍ حَتَّى مَاتَ وَمَا أكَلَ خُبْزاً مُرَقَّقاً حَتَّى مَاتَ رواه البخاري وفي رواية لَهُ : وَلاَ رَأى شَاةً سَمِيطاً بعَيْنِهِ قَطُّ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩২) নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ) বলেন, উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) (পূর্বেকার তুলনায় বর্তমানে) লোকেরা যে দুনিয়ার (ধন-সম্পদ) অধিক জমা করে ফেলেছে, সে কথা উল্লেখ করে বললেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি, তিনি সারা দিন ক্ষুধায় থাকার ফলে পেটের উপর ঝুঁকে থাকতেন (যেন ক্ষুধার জ্বালা কম অনুভব হয়)। তিনি পেট ভরার জন্য নিকৃষ্ট মানের খুরমাও পেতেন না।
وَعَن النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ: ذَكَرَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ مَا أَصَابَ النَّاسُ مِنَ الدُّنْيَا فَقَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَظَلُّ الْيَوْمَ يَلْتَوِي مَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأ بِهِ بَطْنَهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৩) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখন থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (রসূলরূপে) পাঠিয়েছেন, তখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত (চালুনে চালা) ময়দা দেখেননি। অতঃপর জিজ্ঞাসা করা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কি আপনাদের আটা চালার চালুনি ছিল? তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে (রসূলরূপে) পাঠানোর পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি আটা চালার চালুনি দেখেননি। তাঁকে বলা হল, তাহলে আপনারা আচালা যবের আটা কিভাবে খেতেন? তিনি বললেন, আমরা যব পিষে ফুঁক দিতাম, এতে যা উড়ার উড়ে যেত, আর যা অবশিষ্ট থাকত তা ভিজিয়ে খমীর বানাতাম।
وَعَن سَهلِ بنِ سَعدٍ قَالَ : مَا رَأى رَسُول اللهِ ﷺ النَّقِيَّ مِنْ حِينِ ابْتَعَثَهُ الله تَعَالَى حَتَّى قَبضَهُ الله تَعَالَى فَقِيلَ لَهُ : هَلْ كَانَ لَكُمْ في عَهدِ رَسُول اللهِ ﷺ مَنَاخِلُ ؟ قَالَ : مَا رَأى رَسُول اللهِ ﷺ مُنْخُلاً مِنْ حِينَ ابْتَعَثَهُ اللهُ تَعَالَى حَتَّى قَبَضَهُ اللهُ تَعَالَى فَقِيلَ لَهُ : كَيْفَ كُنْتُمْ تَأكُلُونَ الشَّعِيرَ غَيْرَ مَنْخُولٍ ؟ قَالَ : كُنَّا نَطحَنُهُ وَنَنْفُخُهُ فيَطيرُ مَا طَارَ وَمَا بَقِيَ ثَرَّيْنَاهُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৪) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন একদিন অথবা কোন এক রাতে (ঘর থেকে) বের হলেন, অতঃপর অকস্মাৎ আবূ বকর ও উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এর সঙ্গে তাঁর দেখা হল। তিনি বললেন, এ সময় তোমরা বাড়ী থেকে কেন বের হয়েছ? তাঁরা বললেন, ক্ষুধার তাড়নায় হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে। আমিও সেই কারণে বাড়ি থেকে বের হয়েছি, যে কারণে তোমরা বের হয়েছ। তোমরা ওঠো (এবং আমার সঙ্গে চল)। অতঃপর তাঁরা দু’জনে তাঁর সঙ্গে চলতে লাগলেন। তারপর তিনি এক আনসারীর বাড়ী এলেন। আনসারী সে সময় বাড়ীতে ছিলেন না। যখন তাঁর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলেন তখন অভ্যর্থনা ও স্বাগত জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, অমুক (আনসারী) কোথায়? তিনি বললেন, আমাদের জন্য মিঠা পানি আনতে গেছেন। এর মধ্যে আনসারী এসে গেলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীদ্বয়কে দেখে বললেন, ’আলহামদু লিল্লাহ, আজ আমার (বাড়ীর) চেয়ে সম্মানিত মেহমান কারো (বাড়ীতে) নেই।
অতঃপর তিনি চলে গেলেন এবং খেজুরের একটা কাঁদি আনলেন, যাতে কাঁচা, শুকনো এবং পাকা (টাটকা) খেজুর ছিল। অতঃপর আনসারী বললেন, ’আপনারা খান এবং তিনি নিজে ছুরি ধরলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, দুধালো ছাগল জবাই করো না। অতঃপর তিনি (ছাগল) জবাই করলেন। তাঁরা ছাগলের (মাংস) খেলেন, ঐ খেজুর কাঁদি থেকে খেজুর খেলেন এবং পানি পান করলেন। তারপর তাঁরা যখন (পানাহার করে) পরিতৃপ্ত হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর ও উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! নিশ্চয় তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ক্ষুধা তোমাদেরকে বাড়ী থেকে বের করেছিল, কিন্তু এখন এ নিয়ামত উপভোগ করে নিজেদের (বাড়ী) ফিরে যাচ্ছ।
[উক্ত আনসারীর নাম ছিলঃ আবুল হাইসাম তাইয়িহান; যেমন তিরমিযীতে আছে। আর উক্ত জিজ্ঞাসাবাদ গণনার উদ্দেশ্যে করা হবে, ধমকি বা শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।]
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : خَرَجَ رَسُول اللهِ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ أَوْ لَيْلَةٍ فَإذَا هُوَ بأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا فَقَالَ مَا أَخْرَجَكُمَا مِنْ بُيُوتِكُما هَذِهِ السَّاعَةَ ؟ قَالاَ : الجُوعُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ وَأَنَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأَخْرَجَنِي الَّذِي أَخْرَجَكُما قُومَا فقَامَا مَعَهُ فَأتَى رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ فَإِذَا هُوَ لَيْسَ في بيْتِهِ فَلَمَّا رَأَتْهُ المَرْأَةُ قَالَت : مَرْحَبَاً وَأهلاً فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ ﷺ : أيْنَ فُلاَنُ ؟ قَالَت : ذَهَبَ يَسْتَعْذِبُ لنَا المَاءَ إِذْ جَاءَ الأَنْصَارِيُّ فَنَظَرَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ وَصَاحِبَيْهِ ثُمَّ قَالَ : الحَمْدُ للهِ مَا أَحَدٌ الْيَوْمَ أكْرَمَ أضْيَافاً مِنِّي فَانْطَلَقَ فَجَاءَهُمْ بِعِذْقٍ فِيهِ بُسْرٌ وَتَمْرٌ وَرُطَبٌ فَقَالَ : كُلُوا وَأَخَذَ الْمُدْيَةَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ إيْاكَ وَالْحَلُوبَ فَذَبَحَ لَهُمْ فَأكَلُوا مِنَ الشَّاةِ وَمِنْ ذَلِكَ العِذْقِ وَشَرِبُوا فَلَمَّا أنْ شَبِعُوا وَرَوُوا قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لأَبي بَكْر وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتُسْأَلُنَّ عَن هَذَا النَّعِيمِ يَوْمَ القِيَامَةِ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمُ الْجُوعُ ثُمَّ لَمْ تَرْجِعُوا حَتَّى أصَابَكُمْ هَذَا النَّعِيمُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৫) খালেদ ইবনে উমাইর আদাবী (রাঃ) বলেন, একদা বাসরার গভর্নর উতবাহ ইবনে গাযওয়ান খুতবাহ দিলেন। তিনি (খুতবায় সর্বপ্রথমে) আল্লাহর প্রশংসা করলেন, অতঃপর বললেন, ’আম্মা বাদ! নিশ্চয় দুনিয়া তার ধ্বংসের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে এবং সে মুখ ফিরিয়ে দ্রুতগতিতে পলায়মান আছে। এখন তার (বয়স) পাত্রের তলায় অবশিষ্ট পানীয়র মত বাকী রয়ে গেছে, যা পাত্রের মালিক (সবশেষে) পান করে। (আর তোমরা এ দুনিয়া থেকে এমন (পরকালের) গৃহের দিকে প্রত্যাবর্তন করছ যার ক্ষয় নেই, সুতরাং তোমরা তোমাদের সামনের উত্তম জিনিস নিয়ে প্রত্যাবর্তন কর।
কারণ, আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে, জাহান্নামের উপর কিনারা থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা ওর মধ্যে সত্তর বছর পর্যন্ত পড়তে থাকবে, তবুও তা তার গভীরতায় (শেষ প্রান্তে) পৌঁছতে পারবে না। আল্লাহর কসম! জাহান্নামকে (মানুষ দিয়ে) পরিপূর্ণ করে দেওয়া হবে। তোমরা এটা আশ্চর্য মনে করছ? আর আমাদেরকে এও জানানো হয়েছে যে, জান্নাতের দুয়ারের দু’টি চৌকাঠের মধ্যভাগের দূরত্ব চল্লিশ বছরের পথ। তার উপর এমন এক দিন আসবে যে, তাতে লোকের ভিড়ে পরিপূর্ণ থাকবে।
আমি (ইসলাম প্রচারের শুরুতে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাত জনের মধ্যে একজন ছিলাম। (তখন আমাদের এ অবস্থা ছিল যে,) গাছের পাতা ছাড়া আমাদের অন্য কিছুই খাবার ছিল না। এমনকি (তা খেয়ে) আমাদের কশে ঘা হয়ে গেল। (সে সময়) আমি একখানি চাদর কুড়িয়ে পেলাম, অতঃপর তা আমি দু’টুকরো করে আমার এবং সা’দ ইবনে খালেদের মধ্যে ভাগ করে নিলাম। তারপর আমি তার অর্ধেকটাকে লুঙ্গী বানিয়ে পরলাম এবং সা’দও অর্ধেক লুঙ্গী বানিয়ে পরলেন। কিন্তু আজ আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই কোন না কোন শহরের শাসনকর্তা হয়ে আছে। আর আমি নিজের কাছে বড় এবং আল্লাহর কাছে ছোট হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
وَعَن خَالِدِ بنِ عُمَيْرٍ العَدَوِيِّ قَالَ: خَطَبَنَا عُتْبَةُ بنُ غَزْوَانَ وَكَانَ أمِيراً عَلَى البَصْرَةِ فَحَمِدَ الله وَأثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ الدُّنْيَا قَدْ آذَنَتْ بِصُرْمٍ وَوَلَّتْ حَذَّاءَ وَلَمْ يَبْقَ مِنْهَا إِلاَّ صُبَابَةٌ كَصُبَابَةِ الإنَاءِ يَتَصَابُّهَا صَاحِبُهَا وَإِنَّكُمْ مُنْتَقِلُونَ مِنْهَا إِلَى دَارٍ لاَ زَوَالَ لَهَا فَانْتَقِلُوا بِخَيرِ مَا بِحَضْرَتِكُمْ فَإِنَّهُ قَدْ ذُكِرَ لَنَا أنَّ الحَجَرَ يُلْقَى مِنْ شَفِيرِ جَهَنَّمَ فَيَهْوِي فِيهَا سَبْعِينَ عَاماً لاَ يُدْرِكُ لَهَا قَعْراً وَاللهِ لَتُمْلأَنَّ أَفَعَجِبْتُمْ وَلَقدْ ذُكِرَ لَنَا أنَّ مَا بَيْنَ مِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ مَسيرَةُ أرْبَعِينَ عَاماً وَليَأتِيَنَّ عَلَيْهَا يَوْمٌ وَهُوَ كَظِيظٌ مِنَ الزِّحَامِ وَلَقَدْ رَأيْتُنِي سَابعَ سَبْعَةٍ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الشَّجَرِ حَتَّى قَرِحَتْ أشْدَاقُنَا فَالتَقَطْتُ بُرْدَةً فَشَقَقْتُهَا بَيْنِي وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ فاتَّزَرْتُ بِنِصْفِهَا وَاتَّزَرَ سَعْدٌ بِنِصْفِهَا فَمَا أصْبَحَ اليَوْمَ مِنَّا أحَدٌ إِلاَّ أَصْبَحَ أمِيراً عَلَى مِصرٍ مِنَ الأَمْصَارِ وَإنِّي أعُوذُ بِاللهِ أنْ أكُونَ فِي نَفْسِي عَظِيماً وَعَندَ اللهِ صَغِيراً رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৬) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেন, আয়েশা (রাঃ) আমাদের জন্য একখানি চাদর এবং একখানি মোটা লুঙ্গী বের করে বললেন, এ দু’টি (পরে থাকা অবস্থা) তেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন।
وَعَنْ أَبيْ مُوسَى الأَشعَرِي قَالَ : أخْرَجَتْ لَنَا عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنهَا كِسَاءً وَإزاراً غَلِيظاً قالَتْ : قُبِضَ رَسُولُ اللهِ ﷺ في هَذَيْنِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৭) সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহর পথে তীর নিক্ষেপ করেছি। আমরা যখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে থেকে যুদ্ধ করি, তখন আমাদের অবস্থা এরূপ ছিল যে, হুবলাহ গাছের পাতা ও এই বাবলা ছাড়া আমাদের অন্য কিছুই খাবার ছিল না। এ জন্য আমাদের প্রত্যেকেই ছাগলের লাদির মত মলত্যাগ করতেন; যার একটি আরেকটির সাথে মিশত না।
وَعَن سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ قَالَ : إنِّي لأَوَّلُ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ في سَبِيلِ اللهِ وَلَقَدْ كُنَّا نَغْزُو مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الْحُبْلَةِ وَهذَا السَّمُرُ حَتَّى إنْ كَانَ أحَدُنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ مَا لَهُ خَلْطٌ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৮) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করতেন, ’’হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার-পরিজনের জন্য প্রয়োজনীয় জীবিকা প্রদান কর।’’ (বুখারী ৬৪৬০, মুসলিম ২৪৭৪)
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ رِزْقَ آلِ مُحَمّدٍ قُوتاً متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৩৯) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সেই আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! আমি ক্ষুধার জ্বালায় মাটিতে কলিজা (পেট) লাগাতাম এবং পেটে পাথর বাঁধতাম। একদিন লোকেরা যে রাস্তায় বের হয়, সে রাস্তায় বসে গেলাম। কিছুক্ষণ পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অতিক্রম করা কালীন সময়ে দেখে মুচকি হাসলেন এবং আমার চেহারার অবস্থা ও মনের কথা বুঝে ফেলে বললেন, আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, আমার পিছন ধর। সুতরাং তিনি চলতে লাগলেন এবং আমি তাঁর অনুসরণ করতে লাগলাম। তিনি (নিজ ঘরে) প্রবেশ করলেন। অতঃপর তিনি আমার জন্য অনুমতি চাইলেন। তারা আমার জন্য অনুমতি দিলে আমি প্রবেশ করলাম।
ঘরে এক পিয়ালা দুধ (দেখতে) পেলেন। তিনি বললেন, এ দুধ কোত্থেকে এল? তারা বলল, ’আপনার জন্য অমুক লোক বা মহিলা উপঢৌকন পাঠিয়েছে।’ তিনি বললেন, আবূ হির্র! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, আহলে সুফফাদের ডেকে আন। তাঁরা ইসলামের মেহমান ছিলেন, তাঁদের কোন আশ্রয় ছিল না। ছিল না কোন পরিবার ও ধন-সম্পদ বা অন্য কিছু। (সাদকাহ ও হাদিয়াতে তাঁদের জীবন কাটত।) তাঁর নিকট কোন সাদকাহ এলে তিনি সবটুকুই তাঁদের নিকট পাঠিয়ে দিতেন। তা থেকে তিনি কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর কোন হাদিয়া বা উপঢৌকন এলেও তাঁদের নিকট পাঠাতেন। কিন্তু তা থেকে কিছু গ্রহণ করতেন এবং তাঁদেরকে তাতে শরীক করতেন।
(তিনি যখন তাঁদেরকে ডাকতে বললেন,) তখন আমাকে খারাপ লাগল। আমি (মনে মনে) বললাম, ’এই টুকু দুধে আহলে সূফফাদের কী হবে? আমিই তো বেশী হকদার যে, এই দুধ পান করে একটু শক্তিশালী হতাম। কিন্তু যখন তাঁরা আসবেন এবং তিনি আমাকে আদেশ করলে আমি তাঁদেরকে দুধ পরিবেশন করব। তারপর আমার ভাগে এই দুধের কতটুকুই বা জুটবে!’ অথচ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কথা মান্য করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ও ছিল না। সুতরাং আমি তাঁদের নিকট এসে তাঁদেরকে ডাকলাম। তাঁরা এসে প্রবেশ অনুমতি নিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করলেন।
তিনি বললেন, আবূ হির্র্! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, পিয়ালা নাও এবং ওদেরকে দাও। সুতরাং আমি পিয়ালাটি নিয়ে এক একজনকে দিতে লাগলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। এইভাবে পরিশেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে উপস্থিত হলাম। সে পর্যন্ত তাঁদের সবাই পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে গেছেন।
অতঃপর তিনি পিয়ালাটি নিয়ে নিজের হাতে রাখলেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, আবূ হির্র্! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, এখন বাকী আমি আর তুমি। আমি বললাম, ’ঠিকই বলেছেন হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, বসো এবং পান কর। আমি বসে পান করলাম। তিনি আবার বললেন, পান কর। সুতরাং আমি আবার পান করলাম। অতঃপর তিনি আমাকে পান করার কথা বলতেই থাকলেন। পরিশেষে আমি বললাম, ’না। (আর পারব না।) সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, এর জন্য আমার পেটে আর কোন জায়গা নেই!’ অতঃপর তিনি বললেন, কই আমাকে দেখাও। সুতরাং আমি তাঁকে পিয়ালা দিলে তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং ’বিসমিল্লাহ’ বলে অবশিষ্ট দুধ পান করলেন।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : وَاللهِ الَّذِي لاَ إِلهَ إِلاَّ هُوَ إنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الجُوعِ وَإنْ كُنْتُ لأَشُدُّ الحَجَرَ عَلَى بَطنِي مِنَ الْجُوعِ وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوماً عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ مِنْهُ فَمَرَّ بِي النَِّبيُّ ﷺ فَتَبَسَّمَ حِيْنَ رَآنِي وَعَرَفَ مَا فِي وَجْهِي وَمَا فِي نَفْسِي ثُمَّ قَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْحَقْ وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ فَدَخَلَ فَاسْتَأذَنَ فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ فَوَجَدَ لَبَنَاً في قَدَحٍ فَقَالَ مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ ؟ قَالُوْا : أهْدَاهُ لَكَ فُلانٌ – أَو فُلانَةٌ – قَالَ أَبَا هِرٍّ قُلتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْحَقْ إِلَى أهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ لِي قَالَ : وَأهْلُ الصُّفَّةِ أضْيَافُ الإِسْلاَمِ لاَ يَأوُونَ علَى أهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَلاَ عَلَى أحَدٍ وَكَانَ إِذَا أتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إلَيْهِمْ وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئاً وَإِذَا أتَتْهُ هَدِيَّةٌ أرْسَلَ إلَيْهِمْ وَأصَابَ مِنْهَا وأشْرَكَهُمْ فِيهَا فَسَاءَنِي ذَلِكَ فَقُلْتُ : وَمَا هَذَا اللَّبَنُ في أهْلِ الصُّفَّةِ كُنْتُ أحَقُّ أنْ أُصِيبَ مِنْ هَذَا اللَّبَنِ شَرْبَةً أتَقَوَّى بِهَا فَإذَا جَاءُوا وَأمَرَنِي فَكُنْتُ أنَا أُعْطِيهِمْ وَمَا عَسَى أنْ يَبْلُغَنِي مِنْ هَذَا اللَّبَنِ وَلَمْ يَكُنْ مِنْ طَاعَةِ اللهِ وَطَاعَةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ بُدٌّ فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ فَأقْبَلُوا وَاسْتَأذَنُوا فَأَذِنَ لَهُمْ وَأخَذُوا مَجَالِسَهُمْ مِنَ الْبَيْتِ قَالَ يَا أَبَا هِرٍّ قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ خُذْ فَأعْطِهِمْ قَالَ : فَأخَذْتُ القَدَحَ فَجَعَلْتُ أُعْطِيهِ الرَّجُل فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبيِّ ﷺ وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ فَأخَذَ الْقَدَحَ فَوَضَعَهُ عَلَى يَدِهِ فَنَظَرَ إليَّ فَتَبَسَّمَ فَقَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ بَقيتُ أنَا وَأنْتَ قُلْتُ : صَدَقْتَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ اقْعُدْ فَاشْرَبْ فَقَعَدْتُ فَشَرِبْتُ فَقَالَ اشْرَبْ فَشَرِبْتُ فَمَا زَالَ يَقُولُ اشْرَبْ حَتَّى قُلْتُ: لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ لاَ أجِدُ لَهُ مَسْلكاً قَالَ فَأرِنِي فَأعْطَيْتُهُ الْقَدَحَ فَحَمِدَ الله تَعَالَى وَسَمَّى وَشَرِبَ الفَضْلَةَ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪০) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইন্তেকাল করেন, তখন তাঁর বর্ম ত্রিশ সা’ (প্রায় ৭৫ কেজি) যবের বিনিময়ে এক ইয়াহুদীর নিকট বন্ধক রাখা ছিল।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَت : تُوُفِّي رَسُولُ اللهِ ﷺ وَدِرْعُهُ مَرْهُونَةٌ عَندَ يَهُودِي في ثَلاثِينَ صَاعاً مِنْ شَعِير متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪১) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যবের বিনিময়ে তাঁর বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন। আর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যবের রুটি ও (নষ্ট হওয়া) দুর্গন্ধময় পুরানো চর্বি নিয়ে গেছি। আমি তাঁকে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) বলতে শুনেছি যে, মুহাম্মাদের পরিবারের কাছে কোন সকাল বা সন্ধ্যায় এক সা’ (প্রায় আড়াই কেজি কোন খাদ্যবস্তু) থাকে না। (আনাস (রাঃ) বলেন,) তখন তাঁরা মোট নয় ঘর (পরিবার) ছিলেন।
وَعَن أَنَسٍ قَالَ: رَهَنَ النَّبِيُّ ﷺ دِرْعَهُ بِشَعِيرٍ وَمَشَيْتُ إِلَى النَّبيِّ ﷺ بخُبْزِ شَعِيرٍ وَإهَالَةِ سَنِخَةٍ وَلَقَدْ سَمِعْتُهُ يَقُولُ مَا أصْبَحَ لآلِ مُحَمّدٍ صَاعٌ وَلاَ أمْسَى وَإنَّهُمْ لَتِسْعَةُ أبيَات رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪২) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে কয়েক রাত অনাহারে কাটাতেন এবং পরিবার-পরিজনরা রাতের খাবার পেতেন না। আর তাদের অধিকাংশ রুটি হত যবের।
وَعَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَبِيتُ اللَّيَالِيَ الْمُتَتَابِعَةَ طَاوِياً وَأهْلُهُ لاَ يَجِدُونَ عَشَاءً وَكَانَ أكْثَرُ خُبْزِهِمْ خُبزَ الشَّعيرِ رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪৩) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিছানা চামড়ার তৈরী ছিল এবং তার ভিতরে ছিল খেজুর গাছের ছোবড়া।
عَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَت: كَانَ فِرَاشُ رَسُولِ اللهِ ﷺ مِنْ أُدْمٍ حَشْوُهُ لِيفٌ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪৪) মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ’আমার এ অবস্থা ছিল যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বর এবং আয়েশা (রাঃ) এর কক্ষের মধ্যস্থলে (ক্ষুধার জ্বালায়) বেহুশ হয়ে পড়ে থাকতাম। অতঃপর আগন্তুক আসত এবং আমাকে পাগল মনে করে সে তার পা আমার গর্দানের উপর রাখত, অথচ আমার মধ্যে কোন পাগলামি ছিল না। কেবলমাত্র ক্ষুধা ছিল। (যার তীব্রতায় আমি চৈতন্য হারিয়ে ফেলতাম!)
وَعَن مُحَمَّدِ بنِ سِيرِينَ عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : لَقَدْ رَأيْتُنِي وَإنِّي لأَخِرُّ فِيمَا بَيْنَ مِنْبَرِ رَسُول اللهِ ﷺ إِلَى حُجْرَةِ عائِشَةَ رضي الله عَنها مَغْشِيّاً عَلَيَّ فَيَجِيءُ الجَائِي فَيَضَعُ رِجْلَهُ عَلَى عَنقِي وَيَرَى أنِّي مَجْنُونٌ وَمَا بِي مِنْ جُنُونٍ مَا بِي إِلاَّ الْجُوعُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’আমি সত্তরজন (আহলে সুফফাকে) এই অবস্থায় দেখেছি, তাদের কারো কাছে (গা ঢাকার) জন্য চাদর ছিল না, কারো কাছে লুঙ্গী ছিল এবং কারো কাছে চাদর, (এক সঙ্গে দু’টি বস্ত্রই কারো কাছে ছিল না) তারা তা গর্দানে বেঁধে নিতেন। অতঃপর সেই বস্ত্র কারো পায়ের অর্ধগোছা পর্যন্ত হত এবং কারো পায়ের গাঁট পর্যন্ত। সুতরাং তাঁরা তা হাত দিয়ে জমা করে ধরে রাখতেন, যেন লজ্জাস্থান দেখা না যায়।
وَ عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : لَقَدْ رَأيْتُ سَبعِينَ مِنْ أهْلِ الصُّفَّةِ مَا مِنهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ رِدَاءٌ : إمَّا إزارٌ وَإمَّا كِسَاءٌ قَدْ رَبَطُوا في أعَناقِهِمْ فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْن وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الكَعْبَيْنِ فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَراهِيَةَ أنْ تُرَى عَوْرَتُهُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪৬) ফাযালাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন লোকেদের নামায পড়াতেন, তখন কিছু লোক ক্ষুধার কারণে (দুর্বলতায়) পড়ে যেতেন, আর তাঁরা ছিলেন আহলে সুফফাহ। এমনকি মরুবাসী বেদুঈনরা বলত, ’এরা পাগল।’ একদা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায সেরে তাদের দিকে মুখ ফিরালেন, তখন বললেন, তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা এর চাইতেও অভাব ও দারিদ্র্য পছন্দ করতে।
وعَن فَضَالَةَ بنِ عُبَيدٍ أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ كَانَ إِذَا صَلَّى بِالنَّاسِ يَخِرُّ رِجَالٌ مِنْ قَامَتِهِمْ في الصَّلاةِ مِنَ الخَصَاصَةِ ـ وَهُمْ أصْحَابُ الصُّفَّةِ ـ حَتَّى يَقُولَ الأعْرَابُ : هؤُلاَء مَجَانِينٌ فَإذَا صلَّى رَسُول اللهِ ﷺ انْصَرَفَ إلَيْهِمْ فَقَالَ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا لَكُمْ عَندَ اللهِ تَعَالَى لأَحْبَبْتُمْ أنْ تَزْدَادُوا فَاقَةً وَحَاجَةً رواه الترمذي وقال حديث صحيح
পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য
(৩৪৭) ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম, ইতিমধ্যে এক আনসারী এলেন এবং তাঁকে সালাম দিলেন। অতঃপর আনসারী ফিরে যেতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারের ভাই! আমার ভাই সা’দ ইবনে উবাদাহ কেমন আছে? তিনি বললেন, ’ভাল আছে।’ তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে (অসুস্থ সা’দকে) দেখতে যাবে? সুতরাং তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং আমরাও উঠে দাঁড়ালাম। আমরা দশের কিছু বেশী ছিলাম। আমাদের দেহে জুতো, মোজা, টুপী এবং জামা কিছুই ছিল না। আমরা ঐ পাথুরে যমিনে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম, এমনকি শেষ পর্যন্ত আমরা সা’দ (রাঃ) এর নিকট পৌঁছে গেলাম। তার গৃহবাসীরা তাঁর নিকট থেকে সরে গেল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ তাঁর নিকটবর্তী হলেন।
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كُنَّا جُلُوساً مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ ثُمَّ أدْبَرَ الأَنْصَاريُّ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَا أخَا الأنْصَارِ كَيْفَ أخِي سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ ؟ فَقَالَ : صَالِحٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ يَعُودُهُ مِنْكُمْ؟ فَقَامَ وَقُمْنَا مَعَهُ وَنَحْنُ بضْعَةَ عَشَرَ مَا عَلَيْنَا نِعَالٌ وَلاَ خِفَافٌ وَلاَ قَلاَنِسُ وَلاَ قُمُصٌ نَمْشِي في تِلك السِّبَاخِ حَتَّى جِئْنَاهُ فَاسْتَأْخَرَ قَوْمُهُ مِنْ حَوْلِه حَتَّى دَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأصْحَابُهُ الَّذِينَ مَعَهُ رواه مسلم