পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَيَخِرُّونَ لِلأَذْقَانِ يَبْكُونَ وَيَزيدُهُمْ خُشُوعاً
অর্থাৎ, তারা কাঁদতে কাঁদতে ভূমিতে লুটিয়ে (সিজদা) দেয় এবং এ (কুরআন) তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে। (সূরা বানী ইস্রাঈল ১০৯ আয়াত)। তিনি আরো বলেন,
أَفَمِنْ هذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ وَتَضْحَكُونَ وَلا تَبْكُونَ
অর্থাৎ, তোমরা কি এই কথায় বিস্ময়বোধ করছ? এবং হাসি-ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছ না? (সূরা নাজম ৫৯-৬০ আয়াত)
(৩৫৯) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি আমার সামনে কুরআন তিলাঅত কর। উত্তরে আমি আরজ করলাম, ’আমি আপনার সামনে তিলাঅত করব, অথচ তা আপনার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে?’ তিনি বললেন, আমি অন্যের কাছ থেকে তা শুনতে ভালবাসি। অতএব আমি সূরা ’নিসা’ তিলাঅত করলাম। পরিশেষে যখন আমি এ আয়াতে এসে পৌঁছলাম; যার অর্থ, ’তখন তাদের কী অবস্থা হবে, যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী (নবী) উপস্থিত করব এবং তোমাকেও তাদের সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব?’ তখন তিনি আমাকে বললেন, যথেষ্ট, এবার থাম। আমি তাকিয়ে দেখলাম, তাঁর চক্ষু দু’টি থেকে অশ্রুধারা প্রবাহিত হচ্ছে।
وَعَن ابنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : قَالَ لِي النَّبيُّ ﷺ اِقْرَأْ عَليَّ القُرْآنَ قُلتُ : يَا رَسُولَ اللهِ أَقرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ قَالَ إِنِّي أُحِبُّ أَنْ أسْمَعَهُ مِنْ غَيرِي فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُورَةَ النِّسَاءِ حَتَّى جِئْتُ إِلى هذِهِ الآيَةِ فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هؤُلاءِ شَهيداً - قَالَ حَسْبُكَ الآنَ فَالَتَفَتُّ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬০) আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা এমন ভাষণ দিলেন যে, ওর মত (ভাষণ) কখনোও শুনিনি। (তাতে) তিনি বললেন, যা আমি জানি তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা কম হাসতে এবং অধিক কাঁদতে। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ তাঁদের চেহারা ঢেকে নিলেন এবং তাদের বিলাপের রোল আসতে লাগল।
وَعَن أَنَسٍ قَالَ : خَطَبَ رَسُولُ اللهِ ﷺ خُطبَةً مَا سَمِعْتُ مِثلَهَا قَطُّ فَقَالَ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ لَضحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيتُمْ كَثِيراً فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَجُوهَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬১) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করেছে, যতক্ষণ না (দোহনকৃত) দুধ বাঁটে ফিরে যাবে। (অর্থাৎ দু’টোই অসম্ভব)। আর আল্লাহর রাস্তার ধুলো ও জাহান্নামের ধোঁয়া একত্রিত হবে না।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللهِ حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ في الضَّرْعِ وَلاَ يَجْتَمِعُ غُبَارٌ في سَبِيلِ اللهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ رواه الترمذي وقال حديثٌ حَسنٌ صحيحٌ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬২) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুটি চক্ষুকে দোযখের আগুন স্পর্শ করবে না; প্রথম হল সেই চক্ষু যা আল্লাহর ভয়ে কাঁদে। আর দ্বিতীয় হল সেই চক্ষু যা আল্লাহর পথে (জিহাদে) পাহারায় রাত্রিযাপন করে।
عَن ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: عَيْنَانِ لاَ تَمَسُّهُمَا النَّارُ عَيْنٌ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ وَعَيْنٌ بَاتَتْ تَحْرُسُ فِى سَبِيلِ اللَّه
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৩) আবূ রাইহানা কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই চক্ষুর জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেওয়া হয়েছে, (এক) যে চক্ষু আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বিসর্জন করেছে এবং (দুই) যে চক্ষু আল্লাহর পথে (জিহাদে) পাহারা দিয়ে রাত্রি জাগরণ করেছে।
عَنْ أَبيْ ريحانة قال قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ حُرِّمَتْ النَّارُ عَلَى عَيْنٍ دَمَعَتْ أَوْ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ وَحُرِّمَتْ النَّارُ عَلَى عَيْنٍ سَهِرَتْ فِي سَبِيلِ اللَّه
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৪) বাহয বিন হাকীম তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর (বাহযের) দাদা থেকে বর্ণনা করে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির চক্ষু জাহান্নাম দর্শন করবে না। (এক) যে চক্ষু আল্লাহর পথে (জিহাদে) পাহারা দিয়ে রাত্রি যাপন করেছে, (দুই) যে চক্ষু আল্লাহর ভয়ে কেঁদেছে এবং (তিন) যে চক্ষু আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু দর্শন করা থেকে বিরত থেকেছে।
عَن بهز بن حكيم عَنْ أَبيْ ه عَن جده قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ثَلاَثَةٌ لاَ تَرَى أَعيُنهُم النَّارُ عَينٌ حَرَسَت فِي سَبيلِ الله وَعَينٌ بَكَت مِن خَشيَة الله وَعَينٌ غَضَّت عَن مَحَارِمِ الله
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৫) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না; (তারা হল,) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (রাষ্ট্রনেতা), সেই যুবক যার যৌবন আল্লাহ তা’আলার ইবাদতে অতিবাহিত হয়, সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।) সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করে; যারা এই ভালবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন (তাদের মৃত্যু) হয়। সেই ব্যক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী (ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, কিন্তু সে বলে, ’আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ সেই ব্যক্তি যে দান করে গোপন করে; এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না। আর সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে পানি বয়ে যায়।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺسَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ : إمَامٌ عَادِلٌ وَشَابٌّ نَشَأ في عِبَادَةِ الله تَعَالَى وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابّا في اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيهِ وتَفَرَّقَا عَلَيهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ مَنصَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ : إنِّي أخَافُ الله وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ الله خَالِياً فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৬) আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখীর (রাঃ) বলেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি নামায পড়ছিলেন এবং তাঁর বুক থেকে উনানে স্থিত হাঁড়ির (ফুটন্ত পানির) মত কান্নার অক্টফুট রোল শোনা যাচ্ছিল।
وَعَن عَبْدِ اللهِ بْنِ الشِّخِّيرِ قَالَ : أَتَيتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّي وَلِجَوْفِهِ أَزِيزٌ كَأَزِيزِ المِرْجَلِ مِنَ البُكَاءِ حديث صحيح رواه أَبو داود والترمذي في الشمائل بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৭) আনাস (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ)-কে বললেন, আল্লাহ আমাকে আদেশ করলেন যে, আমি তোমাকে ’সূরা লাম য়্যাকুনিল্লাযীনা কাফারু’ পড়ে শুনাই। কা’ব বললেন, ’(আল্লাহ কি) আমার নাম নিয়েছেন?’ তিনি বললেন, হ্যাঁ। সুতরাং উবাই (খুশীতে) কেঁদে ফেললেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে, উবাই কাঁদতে লাগলেন।
وَعَن أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لأُبَي بنِ كَعبٍ إنَّ الله - عَزَّ وَجَلَّ - أَمَرَنِي أَنْ أقْرَأَ عَلَيْكَ لَمْ يَكُنِ الَّذِينَ كَفَروا - قَالَ : وَسَمَّانِي ؟ قَالَ نَعَمْ فَبَكَى أُبَيٌّ متفقٌ عَلَيْهِ وَفِي رِوَايَةٍ : فَجَعَلَ أُبَيٌّ يَبْكِي
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৮) আনাস (রাঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনাবসানের পর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) উমার (রাঃ) কে বললেন, চলুন, আমরা উম্মে আইমানের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই, যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে যেতেন। সুতরাং যখন তাঁরা উম্মে আইমানের কাছে পৌঁছলেন, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। অতঃপর তাঁরা তাঁকে বললেন, তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কি জানো না যে, আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য (দুনিয়া থেকে) অধিক উত্তম?
তিনি উত্তর দিলেন, আমি এ জন্য কান্না করছি না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা অধিকতর উত্তম, সে কথা আমি জানি না। কিন্তু আমি এ জন্য কাঁদছি যে, আসমান হতে ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেল। উম্মে আইমান (তাঁর এ দুঃখজনক কথা দ্বারা) ঐ দু’জনকে কাঁদতে বাধ্য করলেন। ফলে তাঁরাও তাঁর সাথে কাঁদতে লাগলেন।
وَعَن أَنَسٍ قَالَ : قَالَ أَبُو بَكرٍ لِعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا بَعْدَ وَفَاةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ : انْطَلِقْ بِنَا إِلَى أُمِّ أيْمَنَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا نَزُورُهَا كَمَا كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَزُورُهَا فَلَمَّا انْتَهَيَا إِلَيْهَا بَكَتْ فَقَالاَ لَهَا : مَا يُبْكِيكِ ؟ أمَا تَعْلَمِينَ أنَّ مَا عَندَ اللهِ خَيْرٌ لرَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَتْ : مَا أبْكِي أَنْ لاَ أَكُونَ أَعْلَمُ أنَّ مَا عَندَ الله تَعَالَى خَيْرٌ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ وَلَكِنْ أبكي أنَّ الوَحْيَ قدِ انْقَطَعَ مِنَ السَّماءِ فَهَيَّجَتْهُمَا عَلَى البُكَاءِ فَجَعَلا يَبْكِيَانِ مَعَهَا رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৬৯) ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, যখন (মরণ রোগে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কষ্ট বেড়ে গেল, তখন তাঁকে (জামাআত সহকারে) নামায পড়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, তোমরা আবূ বকরকে নামায পড়াতে বল। আয়েশা (রাঃ) বললেন, আবূ বকর নরম মনের মানুষ, কুরআন পড়লেই তিনি কান্না সামলাতে পারেন না। কিন্তু পুনরায় তিনি বললেন, তাকে নামায পড়াতে বল।
আয়েশা থেকে অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, আমি বললাম, আবূ বকর যখন আপনার জায়গায় দাঁড়াবেন, তখন তিনি কান্নার কারণে লোকেদেরকে (কুরআন) শুনাতে পারবেন না।
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : لَمَّا اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللهِ ﷺ وَجَعُهُ قِيلَ لَهُ فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ فَقَالَت عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنهَا : إنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ إِذَا قَرَأَ القُرْآنَ غَلَبَهُ البُكَاءُ فَقَالَ مُرُوهُ فَليُصَلِّ
وَفِي رِوَايَةٍ عَن عَائِشَةٍَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَت : قُلتُ : إنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ مَقَامَكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭০) ইব্রাহীম ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদিন আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) এর কাছে খাবার আনা হল, তখন তাঁর রোযা ছিল। তিনি বললেন, মুসআব ইবনে উমাইর (রাঃ) শহীদ হলেন। আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে ভাল লোক। (অথচ) তাঁকে কাফন দেওয়ার মত এমন একটি চাদর ভিন্ন অন্য কিছু পাওয়া গেল না, যা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা দু’টি বের হয়ে যাচ্ছিল এবং পা দু’টি ঢাকলে মাথা বের হয়ে যাচ্ছিল! তারপর আমাদের জন্য পৃথিবীর যে প্রাচুর্য দেওয়া হল, তা হল। অথবা তিনি বললেন, আমাদেরকে পার্থিব সম্পদ যা দেওয়া হল, তা হল। আমাদের আশংকা হয় যে, আমাদের সৎকর্মের (বিনিময়) আমাদের জন্য ত্বরান্বিত করা হয়েছে। অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন, এমনকি খাবারও পরিহার করলেন।
وَعَن إِبرَاهِيمَ بنِ عَبدِ الرَّحمَانِ بنِ عَوفٍ : أَنَّ عَبدَ الرَّحمَانِ بنَ عَوفٍ أُتِيَ بِطَعَامٍ وَكَانَ صَائِماً فَقَالَ : قُتِلَ مُصْعَبُ بنُ عُمَيْرٍ وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّي فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مَا يُكَفَّنُ فِيهِ إِلاَّ بُرْدَةٌ إِنْ غُطِّيَ بِهَا رَأسُهُ بَدَتْ رِجْلاهُ وَإنْ غُطِّيَ بِهَا رِجْلاَهُ بَدَا رَأسُهُ ثُمَّ بُسِطَ لَنَا مِنَ الدُّنْيَا مَا بُسِطَ - أَو قَالَ : أُعْطِينَا مِنَ الدُّنْيَا مَا أُعْطِينَا – قَدْ خَشِينا أنْ تَكُونَ حَسَنَاتُنَا عُجِّلَتْ لَنَا ثُمَّ جَعَلَ يَبكِي حَتَّى تَرَكَ الطَّعَامَ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭১) আবূ উমামাহ সুদাই ইবনে আজলান বাহেলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট দু’টি বিন্দু এবং দু’টি চিহ্ন অপেক্ষা কোন বস্তু প্রিয় নয়। (এক) ঐ অশ্রুবিন্দু, যা আল্লাহর ভয়ে বের হয়। আর (দুই) ঐ রক্তবিন্দু, যা আল্লাহর পথে বহিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দু’টি চিহ্ন হলঃ (এক) ঐ চিহ্ন যা আল্লাহর পথে (জিহাদ করে) হয়। আর (দুই) আল্লাহর কোন ফরয কাজ আদায় করে যে চিহ্ন (দাগ) পড়ে।
এ বিষয়ে আরো হাদীস রয়েছে। তার মধ্যে একটি ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রাঃ) এর হাদীস, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এমন মর্মস্পর্শী বক্তৃতা শুনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হল এবং চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে গেল।
وَعَنْ أَبيْ أُمَامَة صُدَيِّ بنِ عَجلاَنَ البَاهِلِي عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَيْسَ شَيْءٌ أحَبَّ إِلَى اللهِ تَعَالَى مِنْ قَطْرَتَيْنِ وَأثَرَيْنِ : قَطَرَةُ دُمُوعٍ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ وَقَطَرَةُ دَمٍ تُهَرَاقُ في سَبيلِ اللهِ وَأَمَّا الأَثَرَانِ : فَأَثَرٌ فِي سَبيلِ اللهِ تَعَالَى وَأَثَرٌ فِي فَرِيضَةٍ مِنْ فَرَائِضِ الله تَعَالَى رواه الترمذي وقال حديثٌ حسنٌ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭২) আবু হুরাইরা (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা বেশী বেশী হেসো না। কারণ, বেশী হাসার ফলে হৃদয় মারা যায়।
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ( لاَ تُكثِرُوا الضَّحِكَ فَإنَّ كَثرَة الضَّحِكَ تُمِيتُ القَلب)
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৩) বারা’ বিন আযেব (রাঃ) বলেন, একদা আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ তিনি একদল লোক দেখতে পেয়ে বললেন, কী ব্যাপারে ওরা জমায়েত হয়েছে? কেউ বলল, একজনের কবর খোঁড়ার জন্য জমায়েত হয়েছে। একথা শুনে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘাবড়ে উঠলেন। তিনি তড়িঘড়ি সঙ্গীদের ত্যাগ করে কবরের নিকট পৌঁছে হাঁটু গেড়ে বসে গেলেন। তিনি কি করছেন তা দেখার জন্য আমি তাঁর সামনে খাড়া হলাম। দেখলাম, তিনি কাঁদছেন। পরিশেষে তিনি এত কাঁদলেন যে, তার চোখের পানিতে মাটি পর্যন্ত ভিজে গেল। অতঃপর তিনি আমাদের দিকে মুখ তুলে বললেন, হে আমার ভাই সকল! এমন দিনের জন্য তোমরা প্রস্তুতি নাও।
عَن الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِذْ بَصُرَ بِجَمَاعَةٍ فَقَالَ عَلَامَ اجْتَمَعَ عَلَيْهِ هَؤُلَاءِ قِيلَ عَلَى قَبْرٍ يَحْفِرُونَهُ قَالَ فَفَزِعَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَبَدَرَ بَيْنَ يَدَيْ أَصْحَابِهِ مُسْرِعًا حَتَّى انْتَهَى إِلَى الْقَبْرِ فَجَثَا عَلَيْهِ قَالَ فَاسْتَقْبَلْتُهُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ لِأَنْظُرَ مَا يَصْنَعُ فَبَكَى حَتَّى بَلَّ الثَّرَى مِنْ دُمُوعِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا قَالَ أَيْ إِخْوَانِي لِمِثْلِ الْيَوْمِ فَأَعِدُّوا
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৪) উসমান (রাঃ) এর স্বাধীনকৃত দাস হানি বলেন, উসমান বিন আফফান (রাঃ) যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন, তখন এত কাঁদা কাঁদতেন যে, চোখের পানিতে তাঁর দাড়ি ভিজে যেত। কেউ তাঁকে বলল, জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনাকালে আপনি তো কাঁদেন না, আর এই কবর দেখে এত কাঁদছেন? উত্তরে তিনি বললেন, যেহেতু আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পরকালের (পথের) মঞ্জিলসমূহের প্রথম মঞ্জিল হল কবর। সুতরাং যে ব্যক্তি এ মঞ্জিলে নিরাপত্তা লাভ করে তার জন্য পরবর্তী মঞ্জিলসমূহ অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে যায়। আর যদি সে এখানে নিরাপত্তা লাভ না করতে পারে তবে তার পরবর্তী মঞ্জিলগুলো আরো কঠিনতর হয়।
আর তিনি একথাও বলেছেন যে, আমি যত দৃশ্যই দেখেছি, সে সবের চেয়ে অধিক বিভীষিকাময় হল কবর!
عَن هَانِىءٍ مَوْلَى عُثْمَانَ قَالَ : كَانَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ إِذَا وَفَفَ عَلَى قَبْرٍ يَبْكِي حَتَّى يَبُلَّ لِحْيَتَهُ فَقِيلَ لَهُ : تَذْكُرُ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ وَلاَ تَبْكِي وَتَبْكِي مِنْ هَذَا ؟ قَالَ : إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ الْقَبْرَ أَوَّلُ مَنَازِلِ الآخِرَةِ فَإِنْ نَجَا مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ أَيْسَرُ مِنْهُ وَإِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ أَشَدُّ منْهُ قَالَ : وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا رَأَيْتُ مَنْظَرًا قَطُّ إِلاَّ وَالْقَبْرُ أَفْظَعُ مِنْهُ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৫) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে বসে (তাঁর ভাষণে) বললেন, আল্লাহ এক বান্দাকে দুনিয়া ও তাঁর কাছে যা আছে তার মাঝে এখতিয়ার দিয়েছেন। বান্দা তাঁর কাছে যা আছে, তা এখতিয়ার ক’রে নিয়েছে। এ কথা শুনে আবূ বকর (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন। আমি মনে মনে বললাম, এ বৃদ্ধ কাঁদছেন কেন? আল্লাহ তো এক বান্দাকে দুনিয়া ও তাঁর কাছে যা আছে তার মাঝে এখতিয়ার দিয়েছেন। আর বান্দা তাঁর কাছে যা আছে, তা এখতিয়ার করে নিয়েছে। (তাতে কাঁদার কী আছে?) কিন্তু আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সেই বান্দা। আর আবু বাকর ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী।
عَن أَبِى سَعِيدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ عَبْدٌ خَيَّرَهُ اللهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ زَهْرَةَ الدُّنْيَا وَبَيْنَ مَا عَندَهُ فَاخْتَارَ مَا عَندَهُ فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ وَبَكَى فَقَالَ فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا قَالَ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ الْمُخَيَّرُ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ أَعْلَمَنَا بِهِ
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি আম্মাকে ইসলামের দাওয়াত দিতাম, যখন তিনি মুশরিকা ছিলেন। একদিন দাওয়াত দিলে আম্মা রেগে উঠে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্বন্ধে অপ্রিয় কথা শুনালেন। আমি কেঁদে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার আম্মাকে ইসলামের দাওয়াত দিতাম, তিনি আমার দাওয়াত অগ্রাহ্য করতেন। আজ আমি তাঁকে দাওয়াত দিলে তিনি আমাকে আপনার ব্যাপারে অপ্রিয় কথা শুনিয়ে দিলেন। সুতরাং আপনি তাঁর জন্য দু’আ করুন, যাতে আল্লাহ আবূ হুরাইরার আম্মাকে হিদায়াত করেন। অতএব আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করে বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আবূ হুরাইরার আম্মাকে হিদায়াত কর।
অতঃপর আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’আর মাঝে সুসংবাদ নিয়ে বাসায় ফিরে গিয়ে দেখলাম, দরজা বন্ধ আছে। আম্মা আমার পায়ের শব্দ শুনতে পেয়ে বললেন, আবূ হুরাইরা থামো! আমি শুনতে পেলাম, পানি পড়ার শব্দ হচ্ছে। সুতরাং তিনি গোসল করে জামা পরে মাথায় ওড়না না নিয়েই দরজা খুললেন। অতঃপর বললেন, ’আবূ হুরাইরা! আশহাদু আল লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অআশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ।’ সুতরাং আমি কাল বিলম্ব না করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে গিয়ে খুশীতে কাঁদতে কাঁদতে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! সুসংবাদ নিন, আল্লাহ আপনার দু’আ কবুল করেছেন এবং আবূ হুরাইরার আম্মাকে হিদায়াত করেছেন! এ খবর শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং উত্তম কথা বললেন।
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ :كُنْتُ أَدْعُو أُمِّى إِلَى الإِسْلاَمِ وَهِىَ مُشْرِكَةٌ فَدَعَوْتُهَا يَوْمًا فَأَسْمَعَتْنِى فِى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا أَكْرَهُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أَبْكِى قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّى كُنْتُ أَدْعُو أُمِّى إِلَى الإِسْلاَمِ فَتَأْبَى عَلَىَّ فَدَعَوْتُهَا الْيَوْمَ فَأَسْمَعَتْنِى فِيكَ مَا أَكْرَهُ فَادْعُ اللهَ أَنْ يَهْدِىَ أُمَّ أَبِى هُرَيْرَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَللّٰهُمَّ اهْدِ أُمَّ أَبِى هُرَيْرَةَ فَخَرَجْتُ مُسْتَبْشِرًا بِدَعْوَةِ نَبِىِّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا جِئْتُ فَصِرْتُ إِلَى الْبَابِ فَإِذَا هُوَ مُجَافٌ فَسَمِعَتْ أُمِّى خَشْفَ قَدَمَىَّ فَقَالَتْ مَكَانَكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ وَسَمِعْتُ خَضْخَضَةَ الْمَاءِ قَالَ - فَاغْتَسَلَتْ وَلَبِسَتْ دِرْعَهَا وَعَجِلَتْ عَن خِمَارِهَا فَفَتَحَتِ الْبَابَ ثُمَّ قَالَتْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ قَالَ - فَرَجَعْتُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَيْتُهُ وَأَنَا أَبْكِى مِنَ الْفَرَحِ قَالَ - قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَبْشِرْ قَدِ اسْتَجَابَ اللهُ دَعْوَتَكَ وَهَدَى أُمَّ أَبِى هُرَيْرَةَ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ خَيْرًا
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে বললেন, দেখলাম, আমি জান্নাতে প্রবেশ করেছি। মহলের এক পাশে একটি মহিলা ওযূ করছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, মহলটি কার? বলল, এটি উমার বিন খাত্তাবের। সুতরাং আমি তার ঈর্ষার কথা স্মরণ করে পিছু ফিরে প্রস্থান করলাম। এ কথা শুনে উমার (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনার প্রতিও কি ঈর্ষা করব? হে আল্লাহর রসূল!
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي فِي الْجَنَّةِ فَإِذَا امْرَأَةٌ تَوَضَّأُ إِلَى جَنْبِ قَصْرٍ فَقُلْتُ لِمَنْ هَذَا الْقَصْرُ قَالُوْا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَذَكَرْتُ غَيْرَتَكَ فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا فَبَكَى عُمَرُ حِينَ سَمِعَ ذَلِكَ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ أَعَلَيْكَ بِأَبِي أَنْتَ أَغَارُ يَا رَسُولَ اللهِ؟
পরিচ্ছেদঃ কান্না করার হাদীসসমূহ
(৩৭৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু বাকরের ধন-সম্পদ যেভাবে আমাকে উপকৃত করেছে, অন্য কোন ধন-সম্পদ তা করেনি। এ কথা শুনে আবূ বকর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, আমি ও আমার ধন-সম্পদ তো আপনার জন্যই হে আল্লাহর রসূল![১]
এ কথা শুনে উমার (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, ’আমার আব্বা তোমার জন্য কুরবান হোক হে আবু বাকর! যে কোন কল্যাণে আমি তোমার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছি, তাতেই তুমি প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছ![২]
[২] উসুদুল গাবাহ প্রমুখ।
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا نَفَعَنى مَالٌ قَطُّ مَا نَفَعَنى مَالُ أَبِى بَكْرٍ فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: وَهَلْ أَنَا وَمَالِى إِلاَّ لَكَ يَا رَسُولَ اللهِ