৩৩৯

পরিচ্ছেদঃ উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্ত্ততে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য

(৩৩৯) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সেই আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! আমি ক্ষুধার জ্বালায় মাটিতে কলিজা (পেট) লাগাতাম এবং পেটে পাথর বাঁধতাম। একদিন লোকেরা যে রাস্তায় বের হয়, সে রাস্তায় বসে গেলাম। কিছুক্ষণ পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অতিক্রম করা কালীন সময়ে দেখে মুচকি হাসলেন এবং আমার চেহারার অবস্থা ও মনের কথা বুঝে ফেলে বললেন, আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, আমার পিছন ধর। সুতরাং তিনি চলতে লাগলেন এবং আমি তাঁর অনুসরণ করতে লাগলাম। তিনি (নিজ ঘরে) প্রবেশ করলেন। অতঃপর তিনি আমার জন্য অনুমতি চাইলেন। তারা আমার জন্য অনুমতি দিলে আমি প্রবেশ করলাম।

ঘরে এক পিয়ালা দুধ (দেখতে) পেলেন। তিনি বললেন, এ দুধ কোত্থেকে এল? তারা বলল, ’আপনার জন্য অমুক লোক বা মহিলা উপঢৌকন পাঠিয়েছে।’ তিনি বললেন, আবূ হির্র! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, আহলে সুফফাদের ডেকে আন। তাঁরা ইসলামের মেহমান ছিলেন, তাঁদের কোন আশ্রয় ছিল না। ছিল না কোন পরিবার ও ধন-সম্পদ বা অন্য কিছু। (সাদকাহ ও হাদিয়াতে তাঁদের জীবন কাটত।) তাঁর নিকট কোন সাদকাহ এলে তিনি সবটুকুই তাঁদের নিকট পাঠিয়ে দিতেন। তা থেকে তিনি কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর কোন হাদিয়া বা উপঢৌকন এলেও তাঁদের নিকট পাঠাতেন। কিন্তু তা থেকে কিছু গ্রহণ করতেন এবং তাঁদেরকে তাতে শরীক করতেন।

(তিনি যখন তাঁদেরকে ডাকতে বললেন,) তখন আমাকে খারাপ লাগল। আমি (মনে মনে) বললাম, ’এই টুকু দুধে আহলে সূফফাদের কী হবে? আমিই তো বেশী হকদার যে, এই দুধ পান করে একটু শক্তিশালী হতাম। কিন্তু যখন তাঁরা আসবেন এবং তিনি আমাকে আদেশ করলে আমি তাঁদেরকে দুধ পরিবেশন করব। তারপর আমার ভাগে এই দুধের কতটুকুই বা জুটবে!’ অথচ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কথা মান্য করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ও ছিল না। সুতরাং আমি তাঁদের নিকট এসে তাঁদেরকে ডাকলাম। তাঁরা এসে প্রবেশ অনুমতি নিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করলেন।

তিনি বললেন, আবূ হির্র্! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, পিয়ালা নাও এবং ওদেরকে দাও। সুতরাং আমি পিয়ালাটি নিয়ে এক একজনকে দিতে লাগলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তি সহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। এইভাবে পরিশেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে উপস্থিত হলাম। সে পর্যন্ত তাঁদের সবাই পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে গেছেন।

অতঃপর তিনি পিয়ালাটি নিয়ে নিজের হাতে রাখলেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, আবূ হির্র্! আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, এখন বাকী আমি আর তুমি। আমি বললাম, ’ঠিকই বলেছেন হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, বসো এবং পান কর। আমি বসে পান করলাম। তিনি আবার বললেন, পান কর। সুতরাং আমি আবার পান করলাম। অতঃপর তিনি আমাকে পান করার কথা বলতেই থাকলেন। পরিশেষে আমি বললাম, ’না। (আর পারব না।) সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, এর জন্য আমার পেটে আর কোন জায়গা নেই!’ অতঃপর তিনি বললেন, কই আমাকে দেখাও। সুতরাং আমি তাঁকে পিয়ালা দিলে তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং ’বিসমিল্লাহ’ বলে অবশিষ্ট দুধ পান করলেন।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : وَاللهِ الَّذِي لاَ إِلهَ إِلاَّ هُوَ إنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الجُوعِ وَإنْ كُنْتُ لأَشُدُّ الحَجَرَ عَلَى بَطنِي مِنَ الْجُوعِ وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوماً عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ مِنْهُ فَمَرَّ بِي النَِّبيُّ ﷺ فَتَبَسَّمَ حِيْنَ رَآنِي وَعَرَفَ مَا فِي وَجْهِي وَمَا فِي نَفْسِي ثُمَّ قَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْحَقْ وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ فَدَخَلَ فَاسْتَأذَنَ فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ فَوَجَدَ لَبَنَاً في قَدَحٍ فَقَالَ مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ ؟ قَالُوْا : أهْدَاهُ لَكَ فُلانٌ – أَو فُلانَةٌ – قَالَ أَبَا هِرٍّ قُلتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْحَقْ إِلَى أهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ لِي قَالَ : وَأهْلُ الصُّفَّةِ أضْيَافُ الإِسْلاَمِ لاَ يَأوُونَ علَى أهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَلاَ عَلَى أحَدٍ وَكَانَ إِذَا أتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إلَيْهِمْ وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئاً وَإِذَا أتَتْهُ هَدِيَّةٌ أرْسَلَ إلَيْهِمْ وَأصَابَ مِنْهَا وأشْرَكَهُمْ فِيهَا فَسَاءَنِي ذَلِكَ فَقُلْتُ : وَمَا هَذَا اللَّبَنُ في أهْلِ الصُّفَّةِ كُنْتُ أحَقُّ أنْ أُصِيبَ مِنْ هَذَا اللَّبَنِ شَرْبَةً أتَقَوَّى بِهَا فَإذَا جَاءُوا وَأمَرَنِي فَكُنْتُ أنَا أُعْطِيهِمْ وَمَا عَسَى أنْ يَبْلُغَنِي مِنْ هَذَا اللَّبَنِ وَلَمْ يَكُنْ مِنْ طَاعَةِ اللهِ وَطَاعَةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ بُدٌّ فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ فَأقْبَلُوا وَاسْتَأذَنُوا فَأَذِنَ لَهُمْ وَأخَذُوا مَجَالِسَهُمْ مِنَ الْبَيْتِ قَالَ يَا أَبَا هِرٍّ قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ خُذْ فَأعْطِهِمْ قَالَ : فَأخَذْتُ القَدَحَ فَجَعَلْتُ أُعْطِيهِ الرَّجُل فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبيِّ ﷺ وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ فَأخَذَ الْقَدَحَ فَوَضَعَهُ عَلَى يَدِهِ فَنَظَرَ إليَّ فَتَبَسَّمَ فَقَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ بَقيتُ أنَا وَأنْتَ قُلْتُ : صَدَقْتَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ اقْعُدْ فَاشْرَبْ فَقَعَدْتُ فَشَرِبْتُ فَقَالَ اشْرَبْ فَشَرِبْتُ فَمَا زَالَ يَقُولُ اشْرَبْ حَتَّى قُلْتُ: لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ لاَ أجِدُ لَهُ مَسْلكاً قَالَ فَأرِنِي فَأعْطَيْتُهُ الْقَدَحَ فَحَمِدَ الله تَعَالَى وَسَمَّى وَشَرِبَ الفَضْلَةَ رواه البخاري

وعن ابي هريرة قال : والله الذي لا اله الا هو ان كنت لاعتمد بكبدي على الارض من الجوع وان كنت لاشد الحجر على بطني من الجوع ولقد قعدت يوما على طريقهم الذي يخرجون منه فمر بي النبي ﷺ فتبسم حين راني وعرف ما في وجهي وما في نفسي ثم قال ابا هر قلت : لبيك يا رسول الله قال الحق ومضى فاتبعته فدخل فاستاذن فاذن لي فدخلت فوجد لبنا في قدح فقال من اين هذا اللبن ؟ قالوا : اهداه لك فلان – او فلانة – قال ابا هر قلت : لبيك يا رسول الله قال الحق الى اهل الصفة فادعهم لي قال : واهل الصفة اضياف الاسلام لا ياوون على اهل ولا مال ولا على احد وكان اذا اتته صدقة بعث بها اليهم ولم يتناول منها شيىا واذا اتته هدية ارسل اليهم واصاب منها واشركهم فيها فساءني ذلك فقلت : وما هذا اللبن في اهل الصفة كنت احق ان اصيب من هذا اللبن شربة اتقوى بها فاذا جاءوا وامرني فكنت انا اعطيهم وما عسى ان يبلغني من هذا اللبن ولم يكن من طاعة الله وطاعة رسول الله ﷺ بد فاتيتهم فدعوتهم فاقبلوا واستاذنوا فاذن لهم واخذوا مجالسهم من البيت قال يا ابا هر قلت: لبيك يا رسول الله قال خذ فاعطهم قال : فاخذت القدح فجعلت اعطيه الرجل فيشرب حتى يروى ثم يرد علي القدح فاعطيه الرجل فيشرب حتى يروى ثم يرد علي القدح فاعطيه الرجل فيشرب حتى يروى ثم يرد علي القدح حتى انتهيت الى النبي ﷺ وقد روي القوم كلهم فاخذ القدح فوضعه على يده فنظر الي فتبسم فقال ابا هر قلت : لبيك يا رسول الله قال بقيت انا وانت قلت : صدقت يا رسول الله قال اقعد فاشرب فقعدت فشربت فقال اشرب فشربت فما زال يقول اشرب حتى قلت: لا والذي بعثك بالحق لا اجد له مسلكا قال فارني فاعطيته القدح فحمد الله تعالى وسمى وشرب الفضلة رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী