পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪২-[৮] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা ’উমার-এর মুখে এবং তাঁর হৃদয়ে হক কথা রেখে দিয়েছেন। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ جَعَلَ الْحَقَّ عَلَى لِسَانِ عُمَرَ وَقَلْبِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
صحیح ، رواہ الترمذی (3682 وقال : حسن صحیح غریب) ۔
(حسن)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৩-[৯] আর আবূ দাউদে রয়েছে, আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা ’উমারের মুখে হক রেখেছেন, কাজেই তিনি হক কথাই বলে থাকেন।
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ وَضَعَ الْحَقَّ عَلَى لِسَان عمر يَقُول بِهِ»
صحیح ، رواہ ابوداؤد (2962) ۔
(ضَعِيف)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৪-[১০] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এটা অসম্ভব মনে করতাম না যে, মালাক (ফেরেশতা) “উমার (রাঃ)-এর মুখে কথা বলে থাকেন। (বায়হাকী’র দালায়িলুন নুবুওয়্যাহ্ গ্রন্থে)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: مَا كُنَّا نُبْعِدُ أَنَّ السَّكِينَةَ تَنْطِقُ عَلَى لِسَانِ عمر. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «دَلَائِل النُّبُوَّة»
صحیح ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 369 ۔ 370) [و عبداللہ بن احمد (1 / 106 ح 834 و سندہ حسن) و عبد الرزاق (11 / 222 ح 20380) و البغوی فی شرح السنۃ (14 / 86 ح 3877) و للحدیث طرق کثیرۃ عند احمد بن حنبل فی فضائل الصحابۃ (310 ، 522 ، 523 ، 601 ، 614 ، 634 ، 707 ، 711) وغیرہ فالحدیث صحیح] ۔
(صَحِيح)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৫-[১১] ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) (দু’আয়) বলেছেন, “হে আল্লাহ! আবূ জাহল ইবনু হিশাম অথবা ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব দ্বারা তুমি ইসলামকে শক্তিশালী কর। এ দু’আর পরদিন ভোরে ’উমার (রাঃ) নবী (সা.) -এর কছে উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন। এরপর নবী (সা.) মসজিদে (মসজিদুল হারামে) প্রকাশ্যে সালাত আদায় করেছেন। (আহমাদ ও তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَعِزَّ الْإِسْلَامَ بِأَبِي جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ أَوْ بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ» فَأَصْبَحَ عُمَرُ فَغَدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْلَمَ ثُمَّ صَلَّى فِي الْمَسْجِدِ ظَاهرا. رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
ضعیف ، رواہ احمد فی فضائل الصحابۃ (1 / 249 ۔ 250 ح 311) [و الترمذی (3683 وقال : غریب) و سندہ ضعیف] * سندہ ضعیف جدًا ، نضر بن عبد الرحمن الخزاز ابو عمر : متروک ، و روی الترمذی (3681) بسند حسن عن ابن عمر ان رسول اللہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم قال :’’ اللھم اعز الاسکام باحب ھذہ الرجلین الیک : بابی جھل او بعمر بن خطاب ‘‘ وقال :’’ ھذا حدیث حسن صحیح ‘‘ وھو یغنی عنہ ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা: (اللَّهُمَّ أَعِزَّ الْإِسْلَامَ) ইসলামকে শক্তিশালী কর, সাহায্য কর এবং কাফিরদের ওপর বিজয় দান কর। আবদুল্লাহ ইবনু মাস'উদ (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণের পর হতে আমরা সর্বদা মর্যাদাবান ছিলাম। তিনি আরো বলেন, ‘উমার (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণ ছিল সম্মান, তার হিজরত ছিল সাহায্য, শাসন ছিল দয়ার কারণ আল্লাহর শপথ করে বলছি ‘উমার (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণের আগ পর্যন্ত আমরা কা'বায় প্রকাশ্যে সালাত আদায় করতে সক্ষম ছিলাম না। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ৩৬৯০)
(أَوْ بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ) ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অন্যত্রে শুধু 'উমার (রাঃ)-এর কথা বলা হয়েছে আবূ জাহল-এর কথা বলা হয়নি।
ইবনু আসাকির-এর চমৎকার সমাধান দিয়েছেন। তিনি বলেন, নবী (সা.) প্রথমে উভয়ের জন্য দু'আ করেন। পরে যখন ওয়াহী করা হয় যে, আবূ জাহল কখনো ইসলাম গ্রহণ করবে না। তখন শুধু “উমার (রাঃ) এর জন্য দু'আ করেন এবং তা কবুল হয়ে যায়।
দাউদ ইবনু হাসিন ও ইমাম যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যখন ‘উমার (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন তখন জিবরীল আলায়হিস সালাম অবতরণ করে বলেন, 'উমার-এর ইসলাম গ্রহণে আকাশবাসী অত্যন্ত খুশি হয়েছে।
লেখক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “উমার (রাঃ) হলেন কুরায়শী গোত্রের, কুনিয়াত হলো আবূ হাফস্।
তিনি নুবুওয়্যাতের ৬ষ্ঠ অথবা ৫ম বছরে ইসলাম গ্রহণ করেন। চল্লিশ জন পুরুষ ও এগার জন মহিলা ইসলাম গ্রহণের পর আরো বলা হয় তিনি চল্লিশ পূর্ণ করেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৬-[১২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে ডেকে বললেন, হে সর্বোত্তম মানুষ রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর পর। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যদি তুমি আমার সম্পর্কে এ কথা বল, তবে তুমি জেনে রাখ যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ’উমার অপেক্ষা উত্তম কোন লোকের ওপর সূর্য উদিত হয়নি।
[ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ عُمَرُ لِأَبِي بَكْرٍ: يَا خَيْرَ النَّاسِ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: أَمَا إِنَّكَ إِنْ قُلْتَ ذَلِكَ فَلَقَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ عَلَى رَجُلٍ خَيْرٍ مِنْ عُمَرَ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3684) * فیہ عبداللہ الواسطی : ضعیف و شیخہ : مجھول و الحدیث ضعفہ الذھبی جدًا بقولہ :’’ و الحدیث شبہ الموضوع ‘‘ ۔
(بَاطِل)
ব্যাখ্যা: (إِنَّكَ إِنْ قُلْتَ ذَلِكَ) আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, যখন তুমি আমাকে এরূপ কথা বললে এবং সমস্ত মানুষের মধ্যে আমার শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরলে তখন আমিও তোমাকে অনুরূপ প্রতিদান দিব, অর্থাৎ সুসংবাদ দিয়ে যে, আমিও রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি যে, এমন কোন লোকের ওপর সূর্য উদিত হয়নি। যে, সে ‘উমার (রাঃ) থেকে উত্তম হবে।
ইমাম মানাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অচিরেই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ হবেন আগত কিছু সময়ের জন্য। সে সময় হলো খিলাফত অধিষ্ঠিত হওয়া থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, কেননা তখন তিনিই হবেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।
(مَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ عَلَى رَجُلٍ خَيْرٍ مِنْ عُمَرَ) মুল্লা ‘আলী আল ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটা হতে পারে যে, তিনি তার খিলাফতকালে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হবেন। এটাও সম্ভব যে, এখানে শর্ত করা হয়েছে আবূ বাকর (রাঃ)-এর পরে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য ন্যায়পরায়ণতা বা রাজনীতির ক্ষেত্রে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ।
একই সাথে সংবাদ ও অস্বীকার এ ব্যাপারে তিনি কুরআন হতে একটি উদাহরণ পেশ করেছেন। আল্লাহ বলেন, (وَ مَا بِکُمۡ مِّنۡ نِّعۡمَۃٍ فَمِنَ اللّٰهِ) “যে নি'আমাতই তোমরা পেয়েছ তাতো আল্লাহর নিকট হতেই”- (সূরাহ আন্ নাহল ১৬: ৫৩)।
লুম'আতে তিনি বলেন, শ্রেষ্ঠ হওয়ার দিক বিভিন্ন ধরনের ও প্রকারের হয়ে থাকে, আবূ বাকর (রাঃ) এর সাওয়াব বেশি হওয়ার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ; তাই এর অর্থ এই নয় যে, তারা উভয়ে শ্রেষ্ঠ নয় বরং প্রত্যেকে স্ব স্ব স্থানে শ্রেষ্ঠ। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৬৯৩, মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৭-[১৩] ’উকবাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন: আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে ’উমার ইবনুল খত্ত্বাবই হতেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لوكان بَعْدِي نَبِيٌّ لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3686) ۔
(حَسَنٌ)
ব্যাখ্যা: (لوكان بَعْدِي نَبِيٌّ لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ) আলোচ্য হাদীসে ‘উমার (রাঃ) -এর মর্যাদা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যে নবী রাসূলগণের গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন সেদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ৩৬৯৫)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৮-[১৪] বুরয়দাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কোন এক যুদ্ধে বের হলেন, তিনি যখন ফিরে আসলেন, তখন এক হাবশী মেয়ে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি মানৎ করেছিলাম যে, আল্লাহ তা’আলা যদি আপনাকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনেন, তাহলে আমি দফ বাজিয়ে আপনার সামনে গান গাইব। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, যদি তুমি এরূপ মানৎ করেই থাক তবে দফ বাজাতে পার। অন্যথা তা করো না। অতঃপর সে দফ বাজাতে লাগল। ইতোমধ্যে আবূ বকর (রাঃ) সেখানে প্রবেশ করলেন, আর মেয়েটি দফ বাজাতে থাকল। তারপর আসলেন ’আলী (রাঃ), তখনো সে দফ বাজাতে থাকল, অতঃপর ’উসমান (রাঃ) আসলেন, অথচ তখনো সে দফ বাজাতে থাকল, তবে তারপর যখন ’উমার (রাঃ) প্রবেশ করলেন, তখন সে দফ বাজানো বন্ধ করে দিয়ে দফটি স্বীয় নিতম্বের নিচে রেখে দিয়ে তার উপর বসে পড়ল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে ’উমার! শয়তান তোমাকে ভয় করে। আমি বসা ছিলাম, আর মেয়েটি দফ বাজাতে লাগল। এরপর আবূ বকর আসলেন, তারপর ’আলী আসলেন, পরে ’উসমান আসলেন, অথচ সে অবিরাম দফ বাজাচ্ছিল। আর হে ’উমার! তুমি যখন প্রবেশ করলে, তখন সে দফটি ফেলে দেয়। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, এবং তিনি বলেছেন: হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَن بُرَيْدَة قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ مَغَازِيهِ فَلَمَّا انْصَرَفَ جَاءَتْ جَارِيَةٌ سَوْدَاءُ. فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كنتُ نذرت إِن ردك الله سالما أَنْ أَضْرِبَ بَيْنَ يَدَيْكَ بِالدُّفِّ وَأَتَغَنَّى. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ كُنْتِ نَذَرْتِ فَاضْرِبِي وَإِلَّا فَلَا» فَجَعَلَتْ تَضْرِبُ فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ وَهِيَ تَضْرِبُ ثُمَّ دَخَلَ عَلِيٌّ وَهِيَ تَضْرِبُ ثُمَّ دَخَلَ عُثْمَانُ وَهِيَ تَضْرِبُ ثُمَّ دَخَلَ عُمَرُ فَأَلْقَتِ الدُّفَّ تَحْتَ اسْتِهَا ثُمَّ قَعَدَتْ عَلَيْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّيْطَانَ لَيَخَافُ مِنْكَ يَا عُمَرُ إِنِّي كُنْتُ جَالِسًا وَهِيَ تَضْرِبُ فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ وَهِيَ تَضْرِبُ ثُمَّ دَخَلَ عَلِيٌّ وَهِيَ تَضْرِبُ ثُمَّ دَخَلَ عُثْمَانُ وَهِيَ تَضْرِبُ فَلَمَّا دَخَلْتَ أَنْتَ يَا عُمَرُ أَلْقَتِ الدُّفَّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيب
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3690) ۔
(حسن صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (بِالدُّف) এখানে অর্থ হলো যার দ্বারা দফ (এক মুখ খোলা তবলা ধরনের) বাজানো হয়। আর (دف) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যে দফগুলো পূর্বেকার যুগে পাওয়া যেত। যে দফে বাজনা হয় সকলের ঐকমত্যে সেটা (مكروه) বা হারাম।
উক্ত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করা হয় যে, মানৎ দ্বারা নৈকট্য অর্জন হয় তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। নবী (সা.) -এর সামনে আনন্দ করা নৈকট্যের বিষয়। বিশেষ করে যখন যুদ্ধের ময়দান হতে ফিরে আসেন, কেননা যুদ্ধে অনেক বিনাশ হয়ে থাকে। তাছাড়া উক্ত হাদীসকে কেন্দ্র করে দফ বাজানো বৈধ বলা হয় ।
(أَتَغَنَّى) এটা প্রমাণিত যে, ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে মহিলার কণ্ঠে গান শ্রবণ করা বৈধ।
(إِنْ كُنْتِ نَذَرْتِ فَاضْرِبِي وَإِلَّا فَلَا) এখানে সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে যে, দফ বাজানো বৈধ নয় মানৎ ছাড়া অনুরূপভাবে তা বাজানো বৈধ নয় শারী'আত প্রণেতার অনুমতি ব্যতীত যেমন বিবাহের ঘোষণা দেয়ার জন্য দফ বাজানো বৈধ।
আর ইয়ামানের শায়খরা যিকর করা অবস্থায় যে দফ বাজিয়ে থাকেন তা ঘৃণিত কাজসমূহের অন্যতম। আল্লাহ তাঁর দীনের রক্ষক ও সাহায্যকারী। [মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য]
ইমাম তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী (সা.) -এর সামনে দফ বাজানো সম্ভব হয়েছিল ঐ মহিলার মানতের জন্য। অতএব তার মানৎ প্রমাণ করে যে, স্বাভাবিক অবস্থায় মানৎ ছিল তার ওপর আল্লাহর নিআমাতসমূহ হতে একটি নি'আমাত। এ ক্ষেত্রে তার কাজটি রূপান্তরিত হয়ে গেল অনর্থক কাজ হতে ভালোর দিকে এবং মাকরূহ কাজ হতে মুস্তাহাবের দিকে। তার মানৎ পূর্ণের জন্য এটা তিনি অপছন্দ মনে করলেন না। তার মানৎপূর্ণ করা হাসিল হয়েছে, অল্প কয়েকবার দফ পিটানো দ্বারা। এরপর বিষয়টি বেশি হয়ে গেলে মাকরূহ-এর পর্যায়ে চলে গেল, কিন্তু তিনি নিষেধ করা সমিচীন মনে করলেন না। কেননা যদি তিনি (সা.) নিষেধ করতেন তাহলে হারামের পর্যায় চলে যেত, এজন্য তিনি চুপ ছিলেন। আর তিনি (সা.) শ্রেষ্ঠ বিষয়টি প্রশংসা করলেন ‘উমার (রাঃ) আসার কারণে মেয়েটি যে অবস্থায় ছিল অর্থাৎ দফ বাজানো থেকে বিরত থাকা।
মুল্লা আলী আল ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তাঁর নিষেধাজ্ঞা সাধারণ নিষেধ থাকত হারামের পর্যায় যেত না।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীস তার বাহ্যিকের উপর ধরা হবে, কেননা শয়তান যখন তাকে [উমার (রাঃ)] দেখে তখন পলায়ন করে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ৩৬৯৯, মিরকাতুল মাফাতীহ)
(إِنَّ الشَّيْطَانَ لَيَخَافُ مِنْكَ يَا عُمَرُ) এখানে শয়তান দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ কালো মহিলা, কেননা সে হলো মানুষ শয়তান আর সে শয়তানের কাজই করছিল। অথবা শয়তান দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ঐ মহিলার শয়তান যে তাকে খারাপ কর্ম করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তার সে খারাপ কর্ম হলো অতিরিক্ত দফ বাজানো যেটা অনর্থক কর্মের অন্তর্ভুক্ত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৯-[১৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) বসা ছিলেন। এমন মুহূর্তে আমরা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের শোরগোল ও হৈ চৈ শুনতে পেলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) উঠে সেদিকে গেলেন। তিনি (সা.) গিয়ে দেখলেন, এক হাবশী (সুদানী) বালিকা নাচছে আর ছেলেমেয়েরা তাকে ঘিরে তামাশা দেখছে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে ’আয়িশাহ্! এদিকে আসো এবং তামাশা দেখ। [আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন] অতএব আমি গেলাম এবং আমার থুতনি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাঁধের উপর রেখে তাঁর কাঁধ ও মাথার মাঝখান দিয়ে ঐ বালিকাটির নাচ দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরে তিনি (সা.) আমাকে বললেন, তোমার কি তৃপ্তি হয়নি, তোমার কি তৃপ্তি হয়নি? আমি বলতে লাগলাম, না। আমার এই ’না’ বলার কারণ ছিল, দেখি তার অন্তরে আমার স্থান কতটুকু আছে। ঠিক এমন সময় হঠাৎ ’উমার (রাঃ) সেখানে উপস্থিত হলেন। উমার (রাঃ) -কে দেখামাত্রই লোকজন তাঁর কাছ থেকে এদিক-সেদিক সরে পড়ল, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি দেখছি, জিন ও ইনসানের শয়তানগুলো ’উমারের ভয়ে পলায়ন করেছে। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি চলে আসলাম। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب مَنَاقِب عمر)
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا فَسَمِعْنَا لَغَطًا وَصَوْتَ صِبْيَانٍ. فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا حَبَشِيَّةٌ تَزْفِنُ وَالصِّبْيَانُ حَوْلَهَا فَقَالَ: «يَا عَائِشَةُ تَعَالَيْ فَانْظُرِي» فَجِئْتُ فَوَضَعْتُ لَحْيَيَّ عَلَى مَنْكِبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ إِلَيْهَا مَا بَيْنَ الْمَنْكِبِ إِلَى رَأْسِهِ. فَقَالَ لِي: «أَمَا شَبِعْتِ؟ أَمَا شَبِعْتِ؟» فَجَعَلْتُ أَقُولُ: لَا لِأَنْظُرَ مَنْزِلَتِي عِنْدَهُ إِذ طلع عمر قَالَت فَارْفض النَّاس عَنْهَا. قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لأنظر إِلَى شَيَاطِينِ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ قَدْ فَرُّوا مِنْ عُمَرَ» قَالَتْ: فَرَجَعْتُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيب
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3691) ۔
(حسن)