পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৪৭-[8] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (হাবশার তথা আবিসিনিয়ার রাজা) নাজাশীএর মৃত্যুর পর আমরা একে অপরের বলাবলি করতাম, তাঁর কবরে সর্বদা আলো দেখা যাচ্ছে। (আবূ দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

عَن عَائِشَة قَالَتْ: لَمَّا مَاتَ النَّجَاشِيُّ كُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّهُ لَا يَزَالُ يُرَى عَلَى قَبْرِهِ نُورٌ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

اسنادہ حسن ، رواہ ابوداؤد (2523)

عن عاىشة قالت: لما مات النجاشي كنا نتحدث انه لا يزال يرى على قبره نور. رواه ابو داود اسنادہ حسن ، رواہ ابوداؤد (2523)

ব্যাখ্যা: বর্তমান আফ্রিকার ইথিওপিয়াই ইসলামের ইতিহাসে হাবশাহ্ রাষ্ট্র নামে প্রসিদ্ধ। সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের উপাধি ছিল নাজাশী। নাজাশী দ্বারা সেই বাদশাহ উদ্দেশ্য যিনি নবী (সা.) -এর নুবুওয়্যাত প্রাপ্তির সময় স্বীয় দেশের ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি ইতোপূর্বে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী ছিলেন। অতঃপর রাসূল (সা.) -এর ওপর ঈমান এনে খাঁটি মুসলিম হয়ে যান। তিনি ইসলাম ও মুসলিমদের অনেক সহায়তা করেছিলেন। তিনি রাসূল (সা.) -এর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। হাবশায় তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে রাসূল (সা.) খুবই ব্যথিত হন এবং সাহাবায়ে কিরামকে নিয়ে তিনি মদীনায় গায়িবানা জানাযাহ্ আদায় করেন। তাঁর মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থার কথা মা আয়িশাহ্ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, মদীনাতে এ কথা ছাড়িয়ে পড়েছিল যে, বাদশাহ নাজ্জাশীর কবরে সর্বদা নূর দেখা যাচ্ছে। কেননা যেসব সাহাবী মদীনায় যাওয়া আসা করতেন তারা সেখানে তাঁর কবর দেখে মদীনায় এসে এ সংবাদ দিয়েছিলেন। আর যেহেতু সকল লোকের একটি মিথ্যা কথার উপর একমত হওয়া সম্ভব ছিল না, তাই এ কথা খবরে মুতাওয়াতিরের পর্যায়ের। তবে কথা হলো, নূর দেখা যাচ্ছে দ্বারা উদ্দেশ্য কী? এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে তো মনে হচ্ছে, বাদশাহ নাজ্জাশীর কবরে নূর এমনভাবে স্বচক্ষে পরিদৃষ্ট হচ্ছিল যেমন প্রদীপ, চাঁদ ও সূর্যের আলো পরিদৃষ্ট হয়। তথাপি এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, নূর পরিদৃষ্ট হওয়া মূলত ঐ উজ্বলতা, সতেজতা ও অন্তরের প্রশান্তির ব্যাখ্যা যা উক্ত কবর যিয়ারতকারী অনুভব করে। (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৪৮-[৫] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) -এর মৃত্যুর পর সাহাবীগণ যখন তাঁকে গোসল দেয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন তাঁরা বললেন, আমরা কি অন্যান্য মৃতের ন্যায় রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর গায়ের জামা খুলে গোসল দেব? নাকি তাঁর ওপর নিজ জামাকাপড় রেখে গোসল দেব? এ ব্যাপারে যখন মতবিরোধ চরমে উঠল, তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁদের ওপর নিদ্রা চাপিয়ে দিলেন। ফলে তাঁদের মধ্যে এমন একজন লোকও বাকি ছিল না, যার থুতনি নিজের বুকের সাথে গিয়ে লাগেনি। অতঃপর ঘরের এক পার্শ্বে হতে জনৈক উক্তিকারী বলে উঠলেন, তোমরা নবী (সা.) -কে নিজ জামাকাপড় পরিহিত অবস্থায় গোসল দাও। সে উক্তিকারীকে লোকেরা তাকে চিনতে পারেননি। অতঃপর তারা উঠে নবী (সা.) -কে জামাসহ গোসল দিলেন। তাঁরা জামার উপর দিয়ে পানি ঢেলে দিলেন এবং জামা দ্বারা শরীরে মলে দিলেন। (বায়হাক্বী’র দালায়িলুন্ নুবুওয়্যাহ্ গ্রন্থে)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

وَعَنْهَا قَالَتْ: لَمَّا أَرَادُوا غُسْلَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا: لَا نَدْرِي أَنُجَرِّدُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ ثِيَابه كَمَا تجرد مَوْتَانَا أَمْ نُغَسِّلُهُ وَعَلَيْهِ ثِيَابُهُ؟ فَلَمَّا اخْتَلَفُوا أَلْقَى اللَّهُ عَلَيْهِمُ النَّوْمَ حَتَّى مَا مِنْهُمْ رجل إِلَّا وذقته فِي صَدْرِهِ ثُمَّ كَلَّمَهُمْ مُكَلِّمٌ مِنْ نَاحِيَةِ الْبَيْتِ لَا يَدْرُونَ مَنْ هُوَ؟ اغْسِلُوا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ ثِيَابُهُ فَقَامُوا فَغَسَّلُوهُ وَعَلَيْهِ قَمِيصُهُ يَصُبُّونَ الْمَاءَ فَوْقَ الْقَمِيصِ وَيُدَلِّكُونَهُ بِالْقَمِيصِ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «دَلَائِلِ النُّبُوَّةِ»

اسنادہ حسن ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (7 / 242) [و ابوداؤد (3141) و ابن ماجہ (1464) ببعضہ و احمد (6 / 267 ح 26837)] ۔
(حسن)

وعنها قالت: لما ارادوا غسل النبي صلى الله عليه وسلم قالوا: لا ندري انجرد رسول الله صلى الله عليه وسلم من ثيابه كما تجرد موتانا ام نغسله وعليه ثيابه؟ فلما اختلفوا القى الله عليهم النوم حتى ما منهم رجل الا وذقته في صدره ثم كلمهم مكلم من ناحية البيت لا يدرون من هو؟ اغسلوا النبي صلى الله عليه وسلم وعليه ثيابه فقاموا فغسلوه وعليه قميصه يصبون الماء فوق القميص ويدلكونه بالقميص. رواه البيهقي في «دلاىل النبوة» اسنادہ حسن ، رواہ البیھقی فی دلاىل النبوۃ (7 / 242) [و ابوداؤد (3141) و ابن ماجہ (1464) ببعضہ و احمد (6 / 267 ح 26837)] ۔ (حسن)

ব্যাখ্যা: ইবনুল হুমাম (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূল (সা.) - যে কাপড় পরিধান করা অবস্থায় মারা যান তাকে সেই কাপড়েই গোসল করানো হয়েছিল। তাহলে গোসল করানোর পরে ভিজা কাপড় থাকা অবস্থায় কিভাবে তাকে কাফন পরানো হয়েছিল? আমি বলছি তাকে ভিজা কাপড় থাকা অবস্থায় কাফনের কাপড় পরানো হয়নি। এ হাদীস থেকে এটা বুঝা যায় না। বরং সতর ঢাকা অবস্থায় তার থেকে গোসলের কাপড় সরিয়ে তারপর তার কাফনের কাপড় পরানো হয়েছিল। আল্লাহ তা'আলা ভালো জানেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৪৯-[৬] ইবনুল মুনকাদির (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মুক্ত দাস সাফীনাহ্ (রাঃ) রোম এলাকায় মুসলিম সেনাদল হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, অথবা শত্রুরা তাঁকে বন্দি করে ফেলেছিল। অতঃপর তিনি পালিয়ে সেনাদলের খোঁজাখুজি করতে লাগলেন। এমন সময় হঠাৎ তিনি একটি সিংহের সম্মুখীন হলেন। তখন তিনি সিংহটিকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আবূল হারিস! আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মুক্ত দাস। আর আমার ব্যাপার হলো এই এই (অর্থাৎ কাফিররা আমাকে বন্দি করেছিল। এখন আমি তাদের কবল থেকে ছুটে এসে আমার সেনাদলের পথ হারিয়ে ফেলেছি) এ কথা শুনে সিংহটি (আনুগত্যের ভঙ্গিতে) স্বীয় লেজ নাড়তে নাড়তে তার সামনে অগ্রসর হয়ে পার্শ্বে এসে দাঁড়াল। সিংহটি যখন কোন ভীতিজনক আওয়াজ শুনতে পেত, তখন সেদিকে ছুঁটে যেত। অতঃপর ফিরে এসে সাফীনার পাশে পাশে চলত। অবশেষে তাঁকে সেনাদলের কাছে পৌছিয়ে দিয়ে সিংহটি ফিরে চলে গেল। (শারহুস্ সুন্নাহ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

وَعَنْ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ أَنَّ سَفِينَةَ مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْطَأَ الْجَيْشَ بِأَرْضِ الرُّومِ أَوْ أُسِرَ فَانْطَلَقَ هَارِبًا يَلْتَمِسُ الْجَيْشَ فَإِذَا هُوَ بِالْأَسَدِ. فَقَالَ: يَا أَبَا الْحَارِثِ أَنَا مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ مِنْ أَمْرِي كَيْتَ وَكَيْتَ فَأَقْبَلَ الْأَسَدُ لَهُ بَصْبَصَةٌ حَتَّى قَامَ إِلَى جَنْبِهِ كُلَّمَا سَمِعَ صَوْتًا أَهْوَى إِلَيْهِ ثُمَّ أَقْبَلَ يَمْشِي إِلَى جَنْبِهِ حَتَّى بَلَغَ الْجَيْشَ ثُمَّ رَجَعَ الْأَسَدُ. رَوَاهُ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ»

اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 313 ح 3732) [و صححہ الحاکم (3 / 606) و و افقہ الذھبی] * محمد بن المنکدر لم یثبت سماعہ من سفینۃ رضی اللہ عنہ فالسند معلل

وعن ابن المنكدر ان سفينة مولى رسول الله صلى الله عليه وسلم اخطا الجيش بارض الروم او اسر فانطلق هاربا يلتمس الجيش فاذا هو بالاسد. فقال: يا ابا الحارث انا مولى رسول الله صلى الله عليه وسلم كان من امري كيت وكيت فاقبل الاسد له بصبصة حتى قام الى جنبه كلما سمع صوتا اهوى اليه ثم اقبل يمشي الى جنبه حتى بلغ الجيش ثم رجع الاسد. رواه في «شرح السنة» اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 313 ح 3732) [و صححہ الحاکم (3 / 606) و و افقہ الذھبی] * محمد بن المنکدر لم یثبت سماعہ من سفینۃ رضی اللہ عنہ فالسند معلل

ব্যাখ্যা: সাফীনাহ্ রাসূল (সা.) -এর মুক্তদাস। কথিত আছে যে, তিনি আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ্ এর মুক্তদাস ছিলেন। তিনি তাকে এ শর্তে মুক্ত করেন যে, সে আজীবন নবী (সা.) -এর সেবা করবে। কেউ কেউ বলেন, তার নামটা মতভেদপূর্ণ। কেউ বলেন, তার নাম রবাহ বা মিহরান বা রোমান। সাফীনাহ্ হলো তার উপাধি। কথিত আছে যে, একদিন কোন এক সফরে তিনি নবী (সা.) -এর সাথে ছিলেন, তার সঙ্গীদের মধ্যে কোন এক ব্যক্তি ক্লান্ত হয়ে পড়লে সে তার তলোয়ার, ঢাল ও তীর ইত্যাদিসহ অনেক জিনিস তার মাথায় তুলে দিলে সে তা বহন করে চলল। তাকে দেখে আল্লাহর রাসূল (সা.) কৌতুক করে বললেন, তুমি তো সাফীনাহ্। সাফীনাহ্ অর্থ নৌকা। তখন থেকে তিনি এ নামেই প্রসিদ্ধ হয়ে গেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
অবশেষে যখন তিনি সৈন্যদলের সাথে মিশলেন তখন সিংহ চলে গেল: হাদীসের এ অংশটুকু থেকে গেল বুঝা গেল, যেন সিংহটি তার রাস্তা দেখাচ্ছিল। আর তার সাথিদের কাছে পৌছানোর জন্য নিরাপত্তা দিচ্ছিল। তাই তো এক কবি বলেন –
 ومن تكن برسول الله نصرته ... إن تلقه الأ سد في اجامهاتجمِ
অর্থাৎ- যে ব্যক্তি আল্লাহর রসূলের তথা আল্লাহর দীনের সাহায্য করে, হিংস্র জন্তু দ্বারাও আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৫০-[৭] আবূল জাওযা’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার মদীনাবাসীগণ ভীষণ অনাবৃষ্টির কবলে পতিত হলেন, তখন তাঁরা ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছে এ বিপদের কথা উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন, তোমরা নবী (সা.) -এর কবরে যাও এবং তাঁর হুজরার ছাদের আকাশের দিকে কয়েকটি ছিদ্র করে দাও, যেন তার এবং আকাশের মাঝখানে কোন আড়াল না থাকে। অতঃপর লোকেরা গিয়ে তাই করল। তাতে প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ হলো। এমনকি জমিনে প্রচুর ঘাস জন্মাল এবং উটগুলো খুব মোটাতাজা ও চর্বিদার হয়ে উঠল। এ কারণে লোকেরা সে বছরকে ’আমাল ফাতক (পশুপালের হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার বছর) নামে আখ্যায়িত করল। (দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

وَعَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ قَالَ: قُحِطَ أَهْلُ الْمَدِينَةِ قَحْطًا شَدِيدًا فَشَكَوْا إِلَى عَائِشَةَ فَقَالَتْ: انْظُرُوا قبر النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فاجعلوا مِنْهُ كُوًى إِلَى السَّمَاءِ حَتَّى لَا يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ السَّمَاءِ سَقْفٌ فَفَعَلُوا فَمُطِرُوا مَطَرًا حَتَّى نَبَتَ الْعُشْبُ وَسَمِنَتِ الْإِبِلُ حَتَّى تَفَتَّقَتْ مِنَ الشَّحْمِ فَسُمِّيَ عَامَ الْفَتْقِ. رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 43 ۔ 44 ح 93) * فیہ عمرو بن مالک النکری ، رواہ عن ابی الجوزاء وقال ابن عدی :’’ یحدث عن ابی الجوزاء ھذا ایضًا عن ابن عباس قدر عشرۃ احادیث غیر محفوظۃ ‘‘ (الکامل 1 / 401 ، نسخۃ أخری 2 / 108) و ھذا جرح خاص فالسند ضعیف معلل ۔
(ضَعِيف)

وعن ابي الجوزاء قال: قحط اهل المدينة قحطا شديدا فشكوا الى عاىشة فقالت: انظروا قبر النبي صلى الله عليه وسلم فاجعلوا منه كوى الى السماء حتى لا يكون بينه وبين السماء سقف ففعلوا فمطروا مطرا حتى نبت العشب وسمنت الابل حتى تفتقت من الشحم فسمي عام الفتق. رواه الدارمي اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 43 ۔ 44 ح 93) * فیہ عمرو بن مالک النکری ، رواہ عن ابی الجوزاء وقال ابن عدی :’’ یحدث عن ابی الجوزاء ھذا ایضا عن ابن عباس قدر عشرۃ احادیث غیر محفوظۃ ‘‘ (الکامل 1 / 401 ، نسخۃ أخری 2 / 108) و ھذا جرح خاص فالسند ضعیف معلل ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: যখন মদীনায় অনাবৃষ্টি শুরু হলো তখন লোকজন মা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর কাছে আসলে তিনি তাদেরকে পরামর্শ দিলেন যে, তারা যেন রাসূল (সা.) -এর কবর এর উপর সামান্য ফাকা করে দেয় যাতে করে সরাসরি আসমান দেখা যায়। বৃষ্টি হওয়ার কারণ স্বরূপ বলা হয়েছে যে, রাসূল (সা.) -এর কবর যখন আসমান দেখল তখন সে তা দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। আকাশ কাঁদতে শুরু করল। আকাশ কাঁদার কথা কুরআন দ্বারা স্বীকৃত বিষয়। মহান আল্লাহ বলেন, (فَمَا بَکَتۡ عَلَیۡهِمُ السَّمَآءُ وَ الۡاَرۡضُ) “আসমান জমিন তাদের জন্য কাঁদেনি”- (সূরাহ আদ দুখান ৪৪: ২৯)।
এখানে কাফিরদের অবস্থার কথা বলা হয়েছে। এর বিপরীত অবস্থা হলো ঈমানদারদের জন্য আসমান ও জমিন কাঁদে।
কথিত আছে যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর জীবদ্দশায় তো লোকেরা রাসূল (সা.) -এর পবিত্র সত্তা হতে বৃষ্টির প্রার্থনাকারী হত এখন যেহেতু রাসূল (সা.) -এর মৃত্যু হয়ে গেছে তাই মা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন যে, কবরের উপর থেকে ছাদ খুলে দেয়া হোক যাতে আল্লাহর রহমত প্রবল হোক এবং ফলশ্রুতিতে পানি বর্ষিত হয়। যেন তিনি বাহ্যিক দৃষ্টিতে কবরকে বৃষ্টি প্রার্থনার মাধ্যম বানিয়েছেন। তবে রাসূল (সা.) -এর কবর উন্মোচনের কারণে তার কবর আর আসমানের মধ্যে কোন ধরনের পর্দা নেই। এর কারণ হলো উক্ত বৃষ্টি প্রার্থনাকে অধিক ফলদায়ক করা এবং দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের অস্থিরতাকে প্রকাশ করা। আর আকাশ তো দু'আর কিবলাহ এবং অভাবীদের খাদ্যের জায়গা। মহান আল্লাহ বলেন, (وَ فِی السَّمَآءِ رِزۡقُکُمۡ وَ مَا تُوۡعَدُوۡنَ) “আর আসমানে তোমাদের রিযক বা খাদ্য আছে”- (সূরাহ আয যা-রিয়া-ত: ২২)। (মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক্ শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ১৮৪-১৮৫ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূল জাওযা' (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৫১-[৮] সা’ঈদ ইবনু ’আবদুল আযীয (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাররাহ’র ফিতনার সময় তিন দিন তিন রাত নবী (সা.) -এর মাসজিদে সালাতের আযানও হয়নি এবং ইকামাতও দেয়া হয়নি। সে সময় (প্রসিদ্ধ তাবিঈ) সা’ঈদ ইবনুল মুসাইয়াব (রহিমাহুল্লাহ) মসজিদে নাবাবীর ভিতরে আটকা পড়েছিলেন এবং তিনি সালাতের সময় ঠিক করতেন কেবলমাত্র নবী (সা.) -এর কবরের ভিতর হতে নির্গত একটি গুনগুন শব্দ দ্বারা, যা তিনি শুনতে পেতেন। (দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

وَعَن سعيد بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ قَالَ: لَمَّا كَانَ أَيَّامُ الْحَرَّةِ لَمْ يُؤَذَّنْ فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثًا وَلَمْ يُقَمْ وَلَمْ يَبْرَحْ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ الْمَسْجِدَ وَكَانَ لَا يَعْرِفُ وَقْتَ الصَّلَاةِ إِلَّا بِهَمْهَمَةٍ يَسْمَعُهَا مِنْ قَبْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ الدَّارمِيّ

اسنادہ ضعیف * فیہ سعید بن عبد العزیز : لم یثبت سماعہ من سعید بن المسیب رحمہ اللہ ۔
(ضَعِيف)

وعن سعيد بن عبد العزيز قال: لما كان ايام الحرة لم يوذن في مسجد النبي صلى الله عليه وسلم ثلاثا ولم يقم ولم يبرح سعيد بن المسيب المسجد وكان لا يعرف وقت الصلاة الا بهمهمة يسمعها من قبر النبي صلى الله عليه وسلم. رواه الدارمي اسنادہ ضعیف * فیہ سعید بن عبد العزیز : لم یثبت سماعہ من سعید بن المسیب رحمہ اللہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: “হাররার দিন”- ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটা ইসলামের ইতিহাসে একটি প্রসিদ্ধ দিন। ইয়াযীদ ইবনু মু'আবিয়াহ্-এর সিরিয়া থেকে আগত সেনাবাহিনী মদীনায় হামলা করেছিল মদীনায় থাকা সাহাবী ও তাবিঈদেরকে হত্যা করার জন্য। তাঁর সেনাপতি ছিল মুসলিম ইবনু ‘উয়াইনাহ আল মুরুরী। আর এ ঘটনা ঘটেছিল হিজরী ৬৩ সনের যিলহজ্জ মাসে। এ ঘটনার পরপরই ইয়াযীদ মারা গিয়েছিল। এ ঘটনাটি ঘটেছিল মদীনার হাররাহ্ এলাকায় যেখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালো অনেক পাথর ছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা

৫৯৫২-[৯] আবূ খলদাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূল ’আলিয়াহ্-কে প্রশ্ন করলাম, আনাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে কোন হাদীস শুনেছেন কি? তিনি বললেন, তিনি তো দশটি বছর তাঁর সেবা করেছেন। নবী (সা.) তাঁর জন্য দু’আ করেছেন। তার একটি বাগান ছিল, তাতে বছরে দু’বার ফল আসত এবং তাতে এমন কিছু ফল ছিল, যা হতে মিশক কস্তুরীর ঘ্রাণ আসত। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং তিনি বলেন, এ হাদীসটি হাসান গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)

وَعَنْ أَبِي خَلْدَةَ قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي الْعَالِيَةِ: سَمِعَ أَنَسٌ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: خَدَمَهُ عَشْرَ سِنِينَ وَدَعَا لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ لَهُ بُسْتَانٌ يَحْمِلُ فِي كُلِّ سَنَةٍ الْفَاكِهَةَ مَرَّتَيْنِ وَكَانَ فِيهَا رَيْحَانٌ يَجِيءُ مِنْهُ رِيحُ الْمِسْكِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3833) و اخطا من ضعفہ

وعن ابي خلدة قال: قلت لابي العالية: سمع انس من النبي صلى الله عليه وسلم؟ قال: خدمه عشر سنين ودعا له النبي صلى الله عليه وسلم وكان له بستان يحمل في كل سنة الفاكهة مرتين وكان فيها ريحان يجيء منه ريح المسك. رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3833) و اخطا من ضعفہ

ব্যাখ্যা: আবূ খলদাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) আনাস লাজ-এর ব্যাপারে আবূল ‘আলিয়াহ্ (রহিমাহুল্লাহ) থেকে যে প্রশ্ন করেছেন তার উদ্দেশ্য ছিল যে, আনাস (রাঃ) যে সকল হাদীস বর্ণনা করেন, তিনি কি রাসূল (সা.) থেকে কোন মাধ্যম ছাড়া সরাসরি শুনেছেন, নাকি এগুলো মুরসাল বর্ণনা? এ প্রশ্ন হতে পরোক্ষভাবে এ কথা বুঝা যায় যে, রাসূল (সা.)-এর মৃত্যুর পর কিছু মানুষ আনাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে সন্দেহ সংশয় প্রকাশ করে। আবূল ‘আলিয়াহ্ যিনি বয়োজৈষ্ঠ তাবিঈ ছিলেন তিনি তার জবাব সরাসরি না দিয়ে বরং তিনি ঐ কথার সংবাদ দিলেন যাতে আনাস (রাঃ)-এর মান-মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)- দশ বছর বয়সে মতান্তরে আট বছর বয়সে নবী (সা.) -এর খিদমাতে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি একাধারে দশ বছর নবী (সা.) -এর খিদমাত করেছিলেন। আর তার আন্তরিকতাপূর্ণ খিদমাতে খুশি হয়ে নবী (সা.) তাঁর হায়াত ও সম্পদে বরকতের জন্য দু'আ করেছিলেন। ঐ দু'আর বরকতে তিনি ১০৩ বছর হায়াত পেয়েছিলেন।
আর আল্লাহ তাঁর সন্তানে এত বরকত দান করেছিলেন যে তা একশ’ জনে পৌছেছিল। তার মধ্যে ছেলে ছিল ৭৩ জন আর মেয়ে ২৭ জন। তাঁর সম্পদে বরকতের অবস্থা ছিল এই যে, অন্যদের বাগানে ফসল ফলত বছরে একবার, আর তাঁর বাগানে বছরে দু'বার ফসল আসত। তাঁর উচ্চ মান-মর্যাদার পরিমাপ এভাবেই করা যায় যে, তার বাগানের ফুল হতে মিশক আম্বরের সুঘ্রাণ আসত। এতএব সুস্পষ্ট হয়ে গেল যে, যে মহান ব্যক্তি এমন সম্মানের অধিকারী ছিলেন, যিনি দীর্ঘ সময় রসূলে কারীম (সা.) -এর খিদমাতের সৌভাগ্য লাভ করার পর তিনি তাঁর (রাসূল (সা.) -এর) থেকে সরাসরি হাদীস কিভাবে না শুনে থাকবেন এবং ঐ সকল হাদীস কিভাবে বর্ণনা না করে থাকবেন! (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ১৮৬ পৃষ্ঠা; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবু খালদা (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে