পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫২-[৯] আবূ খলদাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূল ’আলিয়াহ্-কে প্রশ্ন করলাম, আনাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে কোন হাদীস শুনেছেন কি? তিনি বললেন, তিনি তো দশটি বছর তাঁর সেবা করেছেন। নবী (সা.) তাঁর জন্য দু’আ করেছেন। তার একটি বাগান ছিল, তাতে বছরে দু’বার ফল আসত এবং তাতে এমন কিছু ফল ছিল, যা হতে মিশক কস্তুরীর ঘ্রাণ আসত। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং তিনি বলেন, এ হাদীসটি হাসান গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ ( بَاب الكرامات)
وَعَنْ أَبِي خَلْدَةَ قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي الْعَالِيَةِ: سَمِعَ أَنَسٌ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: خَدَمَهُ عَشْرَ سِنِينَ وَدَعَا لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ لَهُ بُسْتَانٌ يَحْمِلُ فِي كُلِّ سَنَةٍ الْفَاكِهَةَ مَرَّتَيْنِ وَكَانَ فِيهَا رَيْحَانٌ يَجِيءُ مِنْهُ رِيحُ الْمِسْكِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3833) و اخطا من ضعفہ
ব্যাখ্যা: আবূ খলদাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) আনাস লাজ-এর ব্যাপারে আবূল ‘আলিয়াহ্ (রহিমাহুল্লাহ) থেকে যে প্রশ্ন করেছেন তার উদ্দেশ্য ছিল যে, আনাস (রাঃ) যে সকল হাদীস বর্ণনা করেন, তিনি কি রাসূল (সা.) থেকে কোন মাধ্যম ছাড়া সরাসরি শুনেছেন, নাকি এগুলো মুরসাল বর্ণনা? এ প্রশ্ন হতে পরোক্ষভাবে এ কথা বুঝা যায় যে, রাসূল (সা.)-এর মৃত্যুর পর কিছু মানুষ আনাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে সন্দেহ সংশয় প্রকাশ করে। আবূল ‘আলিয়াহ্ যিনি বয়োজৈষ্ঠ তাবিঈ ছিলেন তিনি তার জবাব সরাসরি না দিয়ে বরং তিনি ঐ কথার সংবাদ দিলেন যাতে আনাস (রাঃ)-এর মান-মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ)- দশ বছর বয়সে মতান্তরে আট বছর বয়সে নবী (সা.) -এর খিদমাতে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি একাধারে দশ বছর নবী (সা.) -এর খিদমাত করেছিলেন। আর তার আন্তরিকতাপূর্ণ খিদমাতে খুশি হয়ে নবী (সা.) তাঁর হায়াত ও সম্পদে বরকতের জন্য দু'আ করেছিলেন। ঐ দু'আর বরকতে তিনি ১০৩ বছর হায়াত পেয়েছিলেন।
আর আল্লাহ তাঁর সন্তানে এত বরকত দান করেছিলেন যে তা একশ’ জনে পৌছেছিল। তার মধ্যে ছেলে ছিল ৭৩ জন আর মেয়ে ২৭ জন। তাঁর সম্পদে বরকতের অবস্থা ছিল এই যে, অন্যদের বাগানে ফসল ফলত বছরে একবার, আর তাঁর বাগানে বছরে দু'বার ফসল আসত। তাঁর উচ্চ মান-মর্যাদার পরিমাপ এভাবেই করা যায় যে, তার বাগানের ফুল হতে মিশক আম্বরের সুঘ্রাণ আসত। এতএব সুস্পষ্ট হয়ে গেল যে, যে মহান ব্যক্তি এমন সম্মানের অধিকারী ছিলেন, যিনি দীর্ঘ সময় রসূলে কারীম (সা.) -এর খিদমাতের সৌভাগ্য লাভ করার পর তিনি তাঁর (রাসূল (সা.) -এর) থেকে সরাসরি হাদীস কিভাবে না শুনে থাকবেন এবং ঐ সকল হাদীস কিভাবে বর্ণনা না করে থাকবেন! (মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ১৮৬ পৃষ্ঠা; মিরকাতুল মাফাতীহ)