পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১১-[৯] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ যারা আমার সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশে পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার উদ্দেশে সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে আমার গুণগান করে, আমার উদ্দেশে পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমারই ভালোবাসা অর্জনের জন্য নিজেদের সম্পদ পরস্পরের মধ্যে ব্যয় করে, তাদেরকে ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়। (মালিক)[1]

আর তিরমিযীর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, ’’আমার মহত্ব ও সম্মানের খাতিরে যারা পরস্পর মহববত করে, তাদের জন্য পরকালে বিরাট নূরের মিনার হবে, যা দেখে নবী ও শাহীদগণ ঈর্ষা করবেন’’।

وَعَن مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: وَجَبَتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ وَالْمُتَجَالِسِينَ فِيَّ وَالْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ وَالْمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ . رَوَاهُ مَالِكٌ. وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيَّ قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: الْمُتَحَابُّونَ فِي جَلَالِي لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاء

وعن معاذ بن جبل قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: قال الله تعالى: وجبت محبتي للمتحابين في والمتجالسين في والمتزاورين في والمتباذلين في . رواه مالك. وفي رواية الترمذي قال: يقول الله تعالى: المتحابون في جلالي لهم منابر من نور يغبطهم النبيون والشهداء

ব্যাখ্যাঃ (لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ) যারা একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পরস্পর ভালোবাসার সেতু বন্ধনে আবদ্ধ হবে, তাদের এ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভালোবাসার মাঝে কোন স্বার্থসিদ্ধির ফন্দি আসবে না, থাকবে না কোন কু-মতলব, তাহলে এ নিঃস্বার্থ ভালোবাসার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জান্নাতে অনুপ্রবেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

(الْمُتَجَالِسِينَ فِيَّ) যারা আল্লাহর দীনকে দুনিয়ায় প্রচার-প্রসার করার জন্য পরস্পর একত্রিত হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে এবং মহান আল্লাহর একত্ববাদ, তার শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব ও গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করে পরস্পর দীনী শিক্ষা করে তাদের জন্যও আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

(الْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ) হাদীসে কুদসীতে মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘যারা আমার সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর সাক্ষাৎ করল, তাদের জন্য আমার ভালোবাসা ওয়াজিব হয়ে গেছে, অর্থাৎ আমি তাদেরকে আমার জান্নাতে প্রবেশ করাব’’। এখানে সাক্ষাৎ করা অর্থ হলো মুসলিম ভাইয়ের খোঁজ-খবর নেয়া, তাঁর বিপদে-আপদে সাহায্য করা, সর্বদা তার কল্যাণ কামনা করা ইত্যাদি।

(الْمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ) যারা নিজেদের ধন-সম্পদকে পরস্পরের মধ্যে ব্যয় করে, একজন অন্যজনের আর্থিক অসুবিধা সমাধান করে, ঋণ পরিশোধ করে, আর এসব সহযোগিতার পিছনে যদি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য থাকে তবে আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে থাকতে দিবেন তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে।

(الْمُتَحَابُّونَ فِي جَلَالِي) মহান আল্লাহ বলেনঃ আমার বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ ও আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শনকল্পে যারা পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করে অর্থাৎ আমার দীনের স্বার্থে এবং আমার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে এ সম্পর্ক গড়ে তোলে, তাদেরকে ভালোবাসা আমার জন্য আবশ্যক হয়ে যায়।

[সম্পাদক]

(يَغْبِطُهُمُ النَّبِىُّونَ وَالشُّهَدَاء) মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ গিবত্বাহ্ বলা হয়, নি‘আমাতের অধিকারী ব্যক্তির নি‘আমাতের ধ্বংস কামনা না করে নিজেও তদ্রূপ নি‘আমাত লাভের আশা করাকে। এটা হিংসার বিপরীত কারণ হিংসা জন্যের নি‘আমাত চলে যাওয়া কামনা করা হয়।

কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ প্রতিটি মানুষ তার ‘ইলম ও ‘আমল অনুযায়ী সম্মান ও মর্যাদা লাভ করবে, যার মধ্যে গুণ নেই সে তার মর্যাদা লাভ করবে না। কারও মধ্যে যদি একটা গুণ না থাকে তবে সে অন্যের মধ্যে সেই গুণ থাকার কারণে তার পুরস্কার দেখে ঈর্ষা করবে। সে কামনা করবে যদি তার মধ্যেও এ মর্যাদা থাকত তবে ভালো হত। সেও এ সম্মানের অধিকারী হত। আর এ কারণেই বলা হয়েছে- (يَغْبِطُهُمُ النَّبِىُّونَ وَالشُّهَدَاء) কেননা নবী ও শাহীদগণ সবচেয়ে উঁচু স্তরের মর্যাদাবান, কারণ তারা সৃষ্টিকুলকে দা‘ওয়াত দিয়েছেন সত্য/হক প্রকাশ করেছেন, দীনকে সমুন্নত করেছেন, সাধারণ ও বিশেষ লোকেদেরকে সঠিক পথের রাস্তা দেখিয়েছেন। এছাড়াও তারা মহাসফলতা লাভ করেছেন। সাধারণ মানুষগুলো নবীদের মতো এরূপ গুরু দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় না ও দায়িত্ব পালনে সক্ষমও হয় না। এ সত্ত্বেও যখন তারা তাদেরকে কিয়ামতের দিনে তাদের স্থানে, তাদের নিকটবর্তী ও মহান আল্লাহর নিকট তাদের মর্যাদা লক্ষ্য করবে, তারা বলবে তারাও যদি এদের মতো গুণে গুণান্বিত হত তবে তারা দ্বিগুণ কল্যাণ লাভ করতে পারত। তারা দু‘টি সফলতা লাভ করতে পারত। এও বলা হয়েছে যে, নবী-রসূলগণ ও শাহীদগণ এসব মর্যাদার জন্য খুশি হবেন। মনে হবে যেন তারাও এরূপ মর্যাদা ও মতবার প্রত্যাশা করেন। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩৯০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১২-[১০] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার বান্দাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে যে, তাঁরা নবীও নন, শাহীদও নন; কিন্তু কিয়ামতের দিন নবীগণ ও শাহীদগণ আল্লাহ তা’আলার কাছে তাঁদের মর্যাদা দেখে ঈর্ষা করবেন। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা কারা? আমাদেরকে বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাঁরা সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহ তা’আলার ক্বুরআনের খাতিরে একে অপরকে ভালোবাসে, তাদের মধ্যে কোন নিকট আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই, তাঁদের পরস্পরের মধ্যে ধন-সম্পদের লেনদেনের সম্পর্কও নেই। আল্লাহর কসম! তাদের মুখমণ্ডলে উজ্জ্বল হবে অথবা তাঁরা স্বয়ং আলোকবর্তিকা হবে। তারা সে সময় ভীত-সন্ত্রস্ত হবে না, যখন সকল মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হবে; তাঁরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না, যখন সকল মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ অর্থাৎ- ’’সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুগণের কোন ভয় নেই। তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবে না’’- (সূরাহ্ ইউনুস ১০ : ৬২)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عُمَرَ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءٍ وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الأنبياءُ والشهداءُ يومَ القيامةِ بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللَّهِ» . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ؟ قَالَ: «هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللَّهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلَا أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا فَوَاللَّهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ لَعَلَى نُورٍ لَا يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلَا يَحْزَنُونَ إِذَا حَزَنَ النَّاسُ» وَقَرَأَ الْآيَةَ: (أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُم يحزنونَ)
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان من عباد الله لاناسا ما هم بانبياء ولا شهداء يغبطهم الانبياء والشهداء يوم القيامة بمكانهم من الله» . قالوا: يا رسول الله تخبرنا من هم؟ قال: «هم قوم تحابوا بروح الله على غير ارحام بينهم ولا اموال يتعاطونها فوالله ان وجوههم لنور وانهم لعلى نور لا يخافون اذا خاف الناس ولا يحزنون اذا حزن الناس» وقرا الاية: (الا ان اولياء الله لا خوف عليهم ولا هم يحزنون) رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ) অর্থাৎ যাদের পূর্ণ ঈমান আছে এবং যারা ইখলাসের সাথে সৎকাজ করে।

(تَحَابُّوا بِرُوحِ اللهِ) অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহর ‘‘রূহ’’-এর জন্য একে অপরকে ভালোবাসবে। আর এ সমস্ত লোকেদের মর্যাদা হাশরের মাঠে এত উঁচু হবে যে, নবী ও রসূলগণ পর্যন্ত তা দেখে ঈর্ষান্বিত হবেন। এখানে رُوحِ  শব্দের ব্যাখ্যায় নিম্নরূপ অভিমত।

رُوحِ শব্দের ব্যাখ্যায় নিম্নরূপ অভিমত পাওয়া যায়। رُوحِ এর (ر) অক্ষরকে পেশ এবং যবর উভয় ক্বিরাআতে পড়া যায়। পেশযোগে এর অর্থ- এমন বস্তু, যা দ্বারা সৃষ্টবস্তু জীবিত থাকে। অর্থাৎ রূহ বা আত্মা। আর এটা দ্বারা পবিত্র কুরআন উদ্দেশ্য। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, وَكَذٰلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا ‘‘এভাবে (উল্লেখিত ৩টি উপায়েই) আমার নির্দেশের মূল শিক্ষাকে তোমার কাছে আমি ওয়াহীযোগে প্রেরণ করেছি...’’- (সূরাহ্ আশ্ শূরা ৪২ : ৫২)। এখানে رُوحِ শব্দ দ্বারা মহাগ্রন্থ আল কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। এ নামকরণের কারণ হলো, কুরআন যেমন আত্মাকে সজীব রাখে, অনুরূপভাবে রূহ ও শরীরকে উজ্জীবিত রাখে। এ অবস্থায় হাদীসাংশের অর্থ হবে, তারা কুরআনের অনুসরণে, ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে এবং মুসলিম বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য পরস্পর ভালোবাসার সূত্রে আবদ্ধ হয়। অথবা رُوحِ শব্দের অর্থ- মুহববাত বা ভালোবাসা। যেমন প্রিয়জনকে বলা হয় أنت روح ‘‘তুমি আমার প্রাণ’’। অর্থাৎ আমার প্রাণের ন্যায়। তখন এর অর্থ হবে, মহান আল্লাহর উদ্দেশেই পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসার একই সূত্রে প্রথিত হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(وَإِنَّهُمْ لَعَلَى نُورٍ) অর্থাৎ কিয়ামতের দিন তারা নূরের বা আলোকসজ্জাবিশিষ্ট মিম্বারের উপর থাকবে। যেমনটি অন্য একটি হাদীসেও বর্ণিত হয়েছে। কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এখানে তাদের মর্যাদা তাদেরকে সম্মান্বিত করা হবে যেমনিভাবে দুনিয়াতে তাদেরকে সম্মান করে উঁচুস্থানে বসার ব্যবস্থা করা হতো ঠিক সেভাবে। তাদের সেদিন আনন্দের উপর আনন্দ হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৩-[১১] আর [ইমাম বাগাবী (রহিমাহুল্লাহ)] ’’শারহুস্ সুন্নাহ্’’ গ্রন্থে আবূ মালিক (রহিমাহুল্লাহ) থেকে মাসাবীহর শব্দে কিছু অতিরিক্ত শব্দযোগে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে শু’আবুল ঈমানেও।

وَرَوَاهُ فِي
شَرْحِ السُّنَّةِ
عَنْ أَبِي مَالِكٍ بِلَفْظِ «الْمَصَابِيحِ» مَعَ زَوَائِدَ وَكَذَا فِي «شُعَبِ الْإِيمَان»

ورواه في شرح السنة عن ابي مالك بلفظ «المصابيح» مع زواىد وكذا في «شعب الايمان»

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৪-[১২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ যার (রাঃ)-কে বললেনঃ হে আবূ যার! ঈমানের কোন্ শাখাটি অধিক মজবুত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রসূলই অধিক অবগত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পরস্পর সখ্যতা স্থাপন করা এবং শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ঘৃণা করা। (বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমান’’)[1]

وَعَنِ ابْنِ
عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي ذَرٍّ: «يَا أَبَا ذَرٍّ أَيُّ عُرَى الْإِيمَانِ أَوْثَقُ؟» قَالَ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «الْمُوَالَاةُ فِي اللَّهِ وَالْحُبُّ فِي اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»

وعن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لابي ذر: «يا ابا ذر اي عرى الايمان اوثق؟» قال: الله ورسوله اعلم. قال: «الموالاة في الله والحب في الله والبغض في الله» . رواه البيهقي في «شعب الايمان»

ব্যাখ্যাঃ (أَيُّ عُرَى الْإِيمَانِ أَوْثَقُ؟) এখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আবূ যার -কে প্রশ্ন করার হিকমাত সম্ভবত প্রশ্নের উত্তরের প্রতি তার খেয়াল বা মনোযোগ বৃদ্ধি করা। এর সঠিক উত্তর কি হবে সে যেন সেটা ভালোভাবে মনে রাখতে পারে সেজন্য তাকে সজাগ ও সচেতন করার। আর এ প্রশ্ন করাটা তার উত্তরের গুরুত্ব বুঝানের জন্যেও হয়ে থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(وَالْحُبُّ فِي اللهِ) অর্থাৎ আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা। যদিও সে ভালোবাসা একজনের পক্ষ থেকে হোক না কেন। যেমন আমরা কোন আল্লাহর এক বান্দাকে ভালোবাসি যদিও তিনি আমাদেরকে না দেখেন বা আমরাও তাকে না দেখি।

(وَالْبُغْضُ فِي اللهِ) অর্থাৎ আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে যারা তার দীনের বিরোধিতা করে তাদের সাথে শত্রুতা রাখা। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেনঃ

لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللهَ وَرَسُولَه وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ

‘‘আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোন দল তুমি পাবে না যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতাকারীদেরকে ভালোবাসে- হোক না এই বিরোধীরা তাদের পিতা অথবা পুত্র অথবা তাদের ভাই অথবা তাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠী। আল্লাহ এদের অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল করে দিয়েছেন, আর নিজের পক্ষ থেকে রূহ দিয়ে তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন...।’’ (সূরাহ্ আল মুজাদালাহ্ ৫৮ : ২২)

ত্ববারানীতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে একটি হাদীস এ রকম (মারফূ‘ সূত্রে) বর্ণনা করেছেন,

أَوْثَقُ عُرَى الْإِيمَانِ الْمُوَالَاةُ فِي اللهِ، وَالْمُعَادَاةُ فِي اللهِ، وَالْحُبُّ فِي اللّٰهِ، وَالْبُغْضُ فِي اللّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ

ঈমানের অধিক মজবুত শাখাটি হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পরস্পর শত্রুতা স্থাপন করা এবং শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ঘৃণা করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৫-[১৩] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন মুসলিম তার কোন ভাইয়ের রোগ দেখতে যায় অথবা সাক্ষাৎ করতে যায়, তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, তোমার জীবন সুখের হলো, তোমার চলন উত্তম হলো এবং তুমি জান্নাতে একটি ইমারত বানিয়ে নিলে। [তিরমিযী; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি গরীব][1]

وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا عَادَ الْمُسْلِمُ أَخَاهُ أَوْ زَارَهُ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: طِبْتَ وَطَابَ مَمْشَاكَ وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الْجَنَّةِ مَنْزِلًا . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث غَرِيب

وعن ابي هريرة ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: اذا عاد المسلم اخاه او زاره قال الله تعالى: طبت وطاب ممشاك وتبوات من الجنة منزلا . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যাঃ (إِذَا عَادَ الْمُسْلِمُ أَخَاهُ) অর্থাৎ যখন কোন মুসলিম তার অপর কোন মুসলিম ভাইকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গেল। তার সেবা করল, তার খোঁজ-খবর নিল।

(طِبْتَ وَطَابَ مَمْشَاكَ) যখন কোন মুসলিম তার কোন মুসলিম ভাইয়ের পরিচর্যা করতে যায় অথবা কোন সুস্থ ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করতে যায়, তখন মহান আল্লাহ বলেন, তোমার জন্য ইহকাল ও পরকালে অফুরন্ত কল্যাণ রয়েছে। ইহকালীল জীবনের সে ব্যক্তি যেমন আত্মতৃপ্তি ও শান্তি লাভ করবে ঠিক তেমনিভাবে সে পরকলের জীবনেও জান্নাত লাভে ধন্য হবে। তার মনের সকল কামনা-বাসনা সেখানে পূর্ণ হবে। طِبْتَ দ্বারা সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আর তার পার্থিব জীবনের প্রত্যেকটি পদচিহ্ন হবে পরকালীন সাফল্যময় জীবনের কারণস্বরূপ অর্থাৎ তার হাঁটা-চলা উত্তম কাজের জন্যই হবে, যার ফলে সে পরকালে দীর্ঘস্থায়ী সুখসময় জীবনের অধিকারী হবে।

(وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الْجَنَّةِ مَنْزِلًا) অর্থাৎ তুমি জান্নাতের মধ্যে অনেক বড় মর্তবা বা সম্মান লাভ করলে। কেননা কোন মু’মিনের অন্তরে প্রশান্তি সৃষ্টি করা মানুষ ও জিনের যত রকমের ‘ইবাদাত রয়েছে তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ ‘ইবাদাত। বিশেষ করে রোগীর দেখাশুনা করা ফার্য়ে কিফায়াহ্ আর এর মধ্যে অনেক উপদেশ ও সতর্কতা, শিক্ষণীয় বিষয় আছে সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য, তা হলো সুস্থ ব্যক্তি তার সুস্থতার ও জীবনের নি‘আমাত ভালোভাবে বুঝতে পারে। আর বেশি বেশি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে পারে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৬-[১৪] মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইকে ভালোবাসে, সে যেন তাকে খবর দিয়ে দেয় যে, সে তাকে ভালোবাসে। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

وَعَن
الْمِقْدَام بن معديكرب عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذا أحب الرجل أَخَاهُ فليخبره أَنه أحبه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن المقدام بن معديكرب عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اذا احب الرجل اخاه فليخبره انه احبه» . رواه ابو داود والترمذي

ব্যাখ্যাঃ (فَلْيُخْبِرْهُ أَنَّه يُحِبُّه) যদি কোন মুসলিম অন্য কোন মুসলিমকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসে, অত্যন্ত আপন মনে করে, তবে তাকে তা জানিয়ে দিবে। হয়ত বা সে জানার পর তার হৃদয়ের মণিকোঠায় এ ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হবে। সেও তাকে ভালোবাসবে। এতে একে অপরের সহযোগিতায় তারা এগিয়ে আসবে, এ দুনিয়া হতে বিশৃঙ্খলা, অন্যায়-অত্যাচার কমে যাবে। সমাজে বন্ধুত্ব-ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। মুসলিম সমাজ থেকে জুলুম-নির্যাতন, হিংসা-বিদ্বেষ দূর হবে। পরস্পরের মাঝে লেনদেন, আদান-প্রদান ও দা‘ওয়াত বৃদ্ধি পাবে। সমাজে তৈরি হবে এক জান্নাতী সেতুবন্ধন। এতে সমাজ থেকে মু’মিনদের মধ্য থেকে ইখতিলাফ দূর হবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩৯১; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

এ হাদীসটি অন্য একটি বর্ণনায় এভাবে এসেছে যে, আবূ যার  হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ إِذَا أَحَبَّ أَحَدُكُمْ صَاحِبَهُ فَلْيَأْتِه فِي مَنْزِلِهِ فَلْيُخْبِرْهُ أَنَّهٗ يُحِبُّهُ لِلّٰهِ ‘‘যখন তোমাদের কেউ তার সাথীকে ভালোবাসে তখন সে যেন তার বাড়ীতে আসে এবং তাকে সে কথা জানিয়ে দেয়।’’ (আল জামিউস্ সগীর হাঃ ৩৫৮)

হাদীসটির শিক্ষণীয় : অত্র হাদীসে তার বাড়ীতে যেতে বলা হয়েছে, তার বাড়ীতে গেলে তার জন্য বাড়ীওয়ালার অন্তরেও ভালোবাসা জন্মাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই এ হাদীস থেকে আমরা জানতে পারলাম কাউকে ভালোবাসলে তাকে কিভাবে জানাতে হবে। রাস্তা-ঘাটে যেখানে-সেখানে জানিয়ে দেয়া সুন্নাত বিরোধী। বরং সুন্নাত হলো তার বাড়িতে গিয়ে বসে সুন্দরভাবে তাকে জানিয়ে দেয়া। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মিকদাম (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৭-[১৫] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট দিয়ে গমন করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তখন লোকজন ছিল। তাঁর কাছে উপস্থিত লোকেদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি এ ব্যক্তিকে আল্লাহরই উদ্দেশে ভালোবাসি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি তাকে এ কথা জানিয়েছ? লোকটি বলল : না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ উঠো এবং তাকে জানিয়ে দাও। তখন লোকটি উঠে তার নিকট গেল এবং তাকে জানিয়ে দিলো। তখন লোকটি জবাবে বলল, তোমাকে সে সত্তা ভালোবাসবেন, যাঁর সন্তুষ্টির জন্য তুমি আমাকে ভালোবেসেছ।

রাবী [আনাস (রাঃ)] বলেনঃ অতঃপর লোকটি ফিরে এলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন। তখন লোকটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাই জানাল, যা গমনকারী বলেছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির সাথে থাকবে, যাকে তুমি ভালোবাসো। আর তুমি তোমার নিয়্যাতের বিনিময় পাবে। [ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) এ হাদীসটি ’’শু’আবুল ঈমানে’’ বর্ণনা করেছেন।][1]

وَعَنْ
أَنَسٍ قَالَ: مَرَّ رَجُلٌ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعِنْدَهُ نَاسٌ. فَقَالَ رَجُلٌ ممَّنْ عِنْده: إِني لأحب هَذَا فِي اللَّهِ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْلَمْتَهُ؟» قَالَ: لَا. قَالَ: «قُمْ إِلَيْهِ فَأَعْلِمْهُ» . فَقَامَ إِلَيْهِ فَأَعْلَمَهُ فَقَالَ: أَحَبَّكَ الَّذِي أَحْبَبْتَنِي لَهُ. قَالَ: ثُمَّ رَجَعَ. فَسَأَلَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِمَا قَالَ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكَ مَا احْتَسَبْتَ» رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» . وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيِّ: «الْمَرْءُ مَعَ من أحبَّ ولَه مَا اكْتسب»

وعن انس قال: مر رجل بالنبي صلى الله عليه وسلم وعنده ناس. فقال رجل ممن عنده: اني لاحب هذا في الله. فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «اعلمته؟» قال: لا. قال: «قم اليه فاعلمه» . فقام اليه فاعلمه فقال: احبك الذي احببتني له. قال: ثم رجع. فساله النبي صلى الله عليه وسلم فاخبره بما قال. فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «انت مع من احببت ولك ما احتسبت» رواه البيهقي في «شعب الايمان» . وفي رواية الترمذي: «المرء مع من احب وله ما اكتسب»

ব্যাখ্যাঃ (الْمَرْءُ مَعَ من أحبَّ) অর্থাৎ হাশরের মাঠে তুমি তার সাথে থাকবে যাকে তুমি ভালোবাস। এর কারণ হলো মানব জাতি অনুকরণপ্রিয়। যে যাকে ভালোবাসে তার নীতি, আদর্শ অনুসরণ করে ও তা জীবনে বাস্তবায়ন করে। সে জন্য কিয়ামতের দিনেও সে তার বন্ধু হবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَالرَّسُولَ فَأُولٰئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ ‘‘আর যারা রসূলের অনুসরণ করেন তারা (কিয়ামতের দিন) তাদের সাথে থাকবে যাদেরকে আল্লাহ অনুগ্রহ (নি‘আমাত) দান করেছেন’’- (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ৬৯)।

অত্র হাদীসটি দ্বারা বাহ্যিকভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, তোমরা নেক ও সৎ বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব কর, তাহলে তোমরা কিয়ামতের দিন তাদের সাথে থাকতে পারবে। যেমনটি অন্য একটি হাদীসে এসেছে- الْمَرْءُ عَلٰى دِينِ خَلِيلِه ‘‘ব্যক্তি (মানুষ) তার বন্ধুর ধর্মের উপর থাকে’’- (আবূ দাঊদ হাঃ ৪৮৩৩)। বাহ্যিকভাবে হাদীসটির মধ্যে উৎসাহ ও ভীতি এবং সতর্ক ও সাবধনতা রয়েছে।

(وَلَكَ مَا احْتَسَبْتَ) মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অর্থাৎ সৎ নিয়্যাত দ্বারা যা অর্জন করেছ তার প্রতিদান। আর الاحتساب (আল ইহতিসাব) বলা হয় সাওয়াব বা প্রতিদান কামনা করাকে। احتساب শব্দের অর্থ হলো কোন বস্তুকে হিসাব বা গণনার মধ্যে রাখা। আর পরিভাষায় মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন কাজ করাকে إحْتِسَابُ بِالْعَمَل বলে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩৮৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৮-[১৬] আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, মু’মিন ব্যতীত অন্য কাউকে বন্ধু বানাবে না এবং তোমার খাদ্য আল্লাহভীরু লোক ছাড়া যেন অন্য কেউ না খায়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]

وَعَن
أبي سعيد أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا تُصَاحِبْ إِلَّا مُؤْمِنًا وَلَا يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلَّا تَقِيٌّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ والدارمي

وعن ابي سعيد انه سمع النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «لا تصاحب الا مومنا ولا ياكل طعامك الا تقي» . رواه الترمذي وابو داود والدارمي

ব্যাখ্যাঃ (لَا تُصَاحِبْ إِلَّا مُؤْمِنًا) অর্থাৎ পূর্ণ ঈমানদার ছাড়া তুমি কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে না। কারো সাথে চলবে না। এ কথার উদ্দেশ্য হলো তুমি কোন কাফির বা মুনাফিকের সাথে বন্ধুত্ব রাখবে না। কেননা তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখলে দীনের ক্ষতি হয়। তারা মুসলিমের দীনের ক্ষতি করে, বিশেষ করে মুনাফিক ব্যক্তি দীনের ক্ষতি সাধনে মারাত্মক ভূমিকা রাখে। অত্র হাদীসে মু’মিন দ্বারা মুসলিম জাতি উদ্দেশ্য।

(وَلَا يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلَّا تَقِيٌّ) অর্থাৎ আল্লাহভীরু তাকওয়াবান লোক ব্যতীত তোমার খাবার যেন কেউ না খায়। আল্লাহভীরুকে ছাড়া তুমি কাউকে খেতে দিবে না। যাতে সে তোমার খাবার খেয়ে যে শক্তি যোগায় তা যেন আল্লাহর ‘ইবাদাতে ব্যয় করতে পারে। পক্ষান্তরে কোন কাফির বা মুনাফিক তোমার দেয়া খাবার খেয়ে যেন শক্তি যুগিয়ে তা আল্লাহর অবাধ্যতার কাজে ব্যয় না করতে পারে। অত্র হাদীসে মুত্তাক্বীকে খাবার খাওয়ানোর কথা বললেও বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় যে, যিনি খাবার খাওয়াবেন তাকেও মুত্তাক্বী হওয়ার নির্দেশ প্রদান করছে। কারণ মুত্তাক্বী ব্যক্তির বন্ধুত্ব মুত্তাক্বী ছাড়া অন্য কারো সাথে হতে পারে না। আরো একটি বিষয় হাদীসটি হতে বুঝা যায় তা হলো, মুত্তাক্বী ছাড়া কাউকে খাবার খাওয়াবে না। এটা দা‘ওয়াত খাওয়ানো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রয়োজনের খাবারের জন্য প্রযোজ্য নয়। এ দিকে ইঙ্গিত করে মহান আল্লাহ বলেন, وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلٰى حُبِّه# مِسْكِينًا وَّيَتِيمًا وَّأَسِيرًا ‘‘তারা আল্লাহ ভালোবাসায় অভাবগ্রস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে’’- (সূরাহ্ ইনসান ৭৬ : ৮)। এ আয়াতটি প্রমাণ করে যে, বন্দী হয়ে যারা আসত তারা সবাই ছিল কাফির, মু’মিন নয়। অথচ প্রয়োজনের কারণে তাদের খাবার খাওয়ানোকে আল্লাহ প্রশংসা করেছেন। এখান থেকে বুঝা গেল, অমুসলিমরা অভাবী হলে তাদেরকে খাওয়ানো দোষের কিছু নয়। কিন্তু অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব হারাম।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অত্র হাদীসটিতে মুত্তাক্বী ব্যক্তি ছাড়া অন্যকে খাবার খাওয়াতে নিষেধ করা হয়নি বরং হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তুমি সেই খাবার থেকে দূরে থাকবে যা মুক্তাক্বী ব্যক্তি হারাম হওয়ার ভয়ে না খায়। অর্থাৎ তুমি হারাম খাবার খাওয়াবে না যা মুত্তাক্বীরা খায় না। আর মুত্তাক্বীরা যাদের থেকে দূরে থাকে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে না। এর অর্থ হলো- لَا تُصَاحِبْ إِلَّا مُطِيْعًا وَلَا تُخَالِلْ إِلَّا تَقِيًّا তুমি অনুগত বান্দা ব্যতীত কারো সাথে বন্ধত্ব করো না, আর তুমি মুত্তাক্বী ব্যতীত কারো সাথে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব করো না।

(তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩৯৫; ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৮২৪; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১৯-[১৭] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে উঠে। সুতরাং তার বন্ধু নির্বাচনের সময় এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত, সে কাকে বন্ধু নির্বাচন করছে। (তিরমিযী, আহমাদ ও বায়হাক্বী)[1]

ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গরীব। আর ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর বর্ণনাসূত্র সহীহ।

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمَرْءُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلْ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ. وَقَالَ النَّوَوِيُّ: إِسْنَادُهُ صَحِيحٌ

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «المرء على دين خليله فلينظر احدكم من يخالل» . رواه احمد والترمذي وابو داود والبيهقي في «شعب الايمان» وقال الترمذي: هذا حديث حسن غريب. وقال النووي: اسناده صحيح

ব্যাখ্যাঃ (الْمَرْءُ عَلٰى دِينِ خَلِيلِه) অর্থাৎ বেশির ভাগ সময়ে মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠে। আদর্শের মিল ছাড়া কখনও প্রকৃত বন্ধুত্ব হতে পারে না। বন্ধুত্ব করার সময় লোকটিকে দেখে নিতে হবে। যদি সে ফাসিক, পাপী এবং দুনিয়াদার হয়, তবে তার সাথে বন্ধুত্ব করবে না। কারণ তার মধ্যেও সেই স্বভাব প্রসারিত হতে পারে।

(فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلْ) এর অর্থ হল। কারো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করার পূর্বে লক্ষ্য করতে হবে, কার সাথে বন্ধুত্ব করা হচ্ছে। সে কিরূপ লোক। তার চরিত্র কিরূপ, সে কি ‘আক্বীদাহ্ বিশ্বাস করে। অর্থাৎ এসব দিক বিবেচনা করে ও দেখেশুনে বন্ধুত্ব করা উচিত। কারণ মহান আল্লাহ বলেন, يٰاَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ ‘‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত হও’’- (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১১৯)। ইমাম গাযালী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ লোভী ব্যক্তির সাথে উঠাবসা করলে নিজের লোভও বৃদ্ধি পায়। আর দুনিয়াবিমুখ ব্যক্তির সাথে চলাফেরা করলে দুনিয়ার প্রতি নিজের আকর্ষণ কমে আখিরাতের কথা বেশি মনে হয়। এর কারণ হলো কারো অনুসরণ করাটা নিজের জ্ঞানকে সেদিকেই নিয়ে যায়। অনুসরণকারী তার অনুসরণীয় ব্যক্তির প্রতি ভক্তির কারণে নিজের চিন্তাশক্তিকে হারিয়ে ফেলে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০২০-[১৮] ইয়াযীদ ইবনু না’আমাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন মানুষ কোন মানুষের সাথে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করে, সে যেন তার নাম, তার পিতার নাম এবং কোন্ গোত্রে জন্মলাভ করেছে তা জিজ্ঞেস করে নেয়। কেননা এটা বন্ধুত্বকে সুদৃঢ় করে। (তিরমিযী)[1]

وَعَن
يزِيد بن نَعامة قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا آخَى الرَّجُلُ الرَّجُلَ فَلْيَسْأَلْهُ عَنِ اسْمِهِ وَاسْمِ أَبِيهِ وَمِمَّنْ هُوَ؟ فَإِنَّهُ أَوْصَلُ للمودَّة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن يزيد بن نعامة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اذا اخى الرجل الرجل فليساله عن اسمه واسم ابيه وممن هو؟ فانه اوصل للمودة» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যাঃ (إِذَا آخَى الرَّجُلُ الرَّجُلَ) অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তি কোন মু’মিন ব্যক্তিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বন্ধু হিসেবে ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলবে। এ ভ্রাতৃত্ব হবে দীনের ভ্রাতৃত্ব, যা রক্তের সম্পর্কের চেয়ে মজবুত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(فَإِنَّهٗ أَوْصَلُ للمودَّة) যখন কোন ব্যক্তি কারো সাথে বন্ধুত্ব সূত্রে আবদ্ধ হতে চায় অথবা কাউকে হৃদয়ের অতি আপন বানাতে চায়, তাহলে তার উচিত হবে সেই ব্যক্তির জীবনবৃত্তান্ত অবহিত হওয়া এবং তার পূর্ণ পরিচয় অবগত থাকা। এতে একে অপরের সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়াতে পারবে এবং পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব আরো মজবুত ও দৃঢ় হবে। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে