পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা
৫০১৪-[১২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ যার (রাঃ)-কে বললেনঃ হে আবূ যার! ঈমানের কোন্ শাখাটি অধিক মজবুত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রসূলই অধিক অবগত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পরস্পর সখ্যতা স্থাপন করা এবং শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ঘৃণা করা। (বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমান’’)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي ذَرٍّ: «يَا أَبَا ذَرٍّ أَيُّ عُرَى الْإِيمَانِ أَوْثَقُ؟» قَالَ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «الْمُوَالَاةُ فِي اللَّهِ وَالْحُبُّ فِي اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
ব্যাখ্যাঃ (أَيُّ عُرَى الْإِيمَانِ أَوْثَقُ؟) এখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আবূ যার -কে প্রশ্ন করার হিকমাত সম্ভবত প্রশ্নের উত্তরের প্রতি তার খেয়াল বা মনোযোগ বৃদ্ধি করা। এর সঠিক উত্তর কি হবে সে যেন সেটা ভালোভাবে মনে রাখতে পারে সেজন্য তাকে সজাগ ও সচেতন করার। আর এ প্রশ্ন করাটা তার উত্তরের গুরুত্ব বুঝানের জন্যেও হয়ে থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(وَالْحُبُّ فِي اللهِ) অর্থাৎ আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা। যদিও সে ভালোবাসা একজনের পক্ষ থেকে হোক না কেন। যেমন আমরা কোন আল্লাহর এক বান্দাকে ভালোবাসি যদিও তিনি আমাদেরকে না দেখেন বা আমরাও তাকে না দেখি।
(وَالْبُغْضُ فِي اللهِ) অর্থাৎ আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে যারা তার দীনের বিরোধিতা করে তাদের সাথে শত্রুতা রাখা। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেনঃ
لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللهَ وَرَسُولَه وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ
‘‘আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোন দল তুমি পাবে না যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতাকারীদেরকে ভালোবাসে- হোক না এই বিরোধীরা তাদের পিতা অথবা পুত্র অথবা তাদের ভাই অথবা তাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠী। আল্লাহ এদের অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল করে দিয়েছেন, আর নিজের পক্ষ থেকে রূহ দিয়ে তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন...।’’ (সূরাহ্ আল মুজাদালাহ্ ৫৮ : ২২)
ত্ববারানীতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে একটি হাদীস এ রকম (মারফূ‘ সূত্রে) বর্ণনা করেছেন,
أَوْثَقُ عُرَى الْإِيمَانِ الْمُوَالَاةُ فِي اللهِ، وَالْمُعَادَاةُ فِي اللهِ، وَالْحُبُّ فِي اللّٰهِ، وَالْبُغْضُ فِي اللّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ
ঈমানের অধিক মজবুত শাখাটি হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পরস্পর শত্রুতা স্থাপন করা এবং শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ঘৃণা করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)