পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪০-[৮] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাদাকা প্রদানে উৎসাহ দিতেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকলাঙ্গ করতে নিষেধ করতেন। (আবূ দাঊদ)[1]
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحُثُّنَا عَلَى الصَّدَقَةِ وَيَنْهَانَا عَنِ الْمُثْلَةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: খত্ত্বাবী বলেনঃ الْمُثْلى তথা অঙ্গচ্ছেদন বা অঙ্গবিকৃতি হলো মৃত্যুর পূর্বে বা পরে নিহত ব্যক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছেদন করে অথবা আকৃতির বিকৃতি করে শাস্তি প্রদান করা। যেমন নাক কর্তন করা, কান কেটে ফেলা অথবা চোখ উপড়ে ফেলা অথবা এরূপ কোনো অঙ্গহানি করা। এই নিষেধ যখন কাফির মুসলিম নিহত ব্যক্তির অঙ্গ বিকৃতি না করে তখন প্রযোজ্য। আর যদি অঙ্গচ্ছেদন করা হয় তবে কাফিরের অঙ্গচ্ছেদন করা জায়িয। সে কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উরায়নাহ্ গোত্রের লোকেদের হাত ও পা কেটেছিলেন এবং তাদের চোখকে উপড়ে ফেলেছিলেন। কেননা তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রাখালদের অনুরূপ শাস্তি দিয়েছিল।
তেমনিভাবে মুসলিমের কেউ যখন নিহত ব্যক্তির অঙ্গ বিকৃতি করে এবং হত্যার পূর্বে শাস্তি দেয় তখন মুসলিমের মাঝে ক্বিসাসের হুকুম জায়িয। কেননা সেও অনুরূপ শাস্তির যোগ্য। আর এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوْا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدٰى عَلَيْكُمْ
‘‘কাজেই যে কেউ তোমাদের প্রতি কঠোর আচরণ করে, তবে তোমরাও তাদের প্রতি কঠোর আচরণ কর যেমনি কঠোরতা সে তোমাদের প্রতি করেছে। (সূরা আল বাকারা ২ : ১৯৪) (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৬৪)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪১-[৯] ইমাম নাসায়ী (রহঃ) হাদীসটি আনাস হতে বর্ণনা করেছেন।[1]
وَرَوَاهُ النَّسَائِيّ عَن أنس
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪২-[১০] ’আব্দুর রহমান ইবনু ’আব্দুল্লাহ তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইস্তিঞ্জায় গেলেন। আর এ সময় আমরা দু’টি বাচ্চাসহ একটি ’হুম্মারাহ্’ (লাল ঠোঁট বিশিষ্ট ছোট পাখি) দেখতে পেয়ে তার বাচ্চা দু’টি ধরে আনলাম। অতঃপর হুম্মারাহ্ পাখিটি এসে তার দুই ডানা মাটির উপর চাপড়াতে লাগল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে এরূপ অবস্থাদৃষ্টে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাচ্চাগুলো এনে কে ব্যথিত করেছে? তার বাচ্চাগুলো তাকে ফেরত দিয়ে দাও। অতঃপর আমরা পিঁপড়ার একটি বসতি জ্বালিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এটি কে জ্বালিয়েছে? বললাম, আমরা। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, অগ্নির মালিক ছাড়া আগুন দিয়ে শাস্তির অধিকার কারো নেই। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَانْطَلَقَ لِحَاجَتِهِ فَرَأَيْنَا حُمْرَةً مَعَهَا فَرْخَانِ فَأَخَذْنَا فَرْخَيْهَا فَجَاءَتِ الْحُمْرَةُ فَجَعَلَتْ تَفْرُشُ فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «مَنْ فَجَعَ هَذِهِ بِوَلَدِهَا؟ رُدُّوا وَلَدَهَا إِلَيْهَا» . وَرَأَى قَرْيَةَ نَمْلٍ قَدْ حَرَّقْنَاهَا قَالَ: «مَنْ حَرَّقَ هَذِهِ؟» فَقُلْنَا: نَحْنُ قَالَ: «إِنَّهُ لَا يَنْبَغِي أَنْ يُعَذِّبَ بِالنَّارِ إِلاَّ ربُّ النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা : حُمَّرَةٌ ‘হা’ বর্ণে পেশ যোগে ‘মীম’ বর্ণে তাশদীদ অথবা সুকুন যোগে এর অর্থ طائر صغير অর্থাৎ চড়ুয়ের মতো ছোট পাখি।
تَفْرُشُ শব্দের অর্থ পাখা ঝাপটানো পাখিটির দু’টি বাচ্চাকে সাহাবীগণ নিয়ে আসলে বাচ্চাদের মা পাখিটা উভয়ের উপরে পাখা ঝাপটিয়ে উড়তে থাকে। ছায়া দান করতে থাকে।
খত্ত্বাবী বলেনঃ এ হাদীসে ভীমরুল বা বোলতার ঘরকে পোড়ানো মাকরূহ-এর প্রমাণ রয়েছে।
আর পিপড়ার ক্ষেত্রে অজুহাত আরো কম। কারণ পোড়ানো ছাড়া এর ক্ষতি থেকে কখনো রক্ষা পাওয়া যায়। পিপড়া দুই প্রকার : (১) ক্ষতিকারী কষ্টদায়ক পিপড়া। দুর্ব্যবহারকারী পিপড়াকে প্রতিরোধ করা জায়িয। (২) যেই পিপড়াতে কোনো ক্ষতি নেই অর্থাৎ ক্ষতিকর কষ্টদায়ক পিপড়া নয়, এগুলোর পা লম্বা লম্বা হয়। এগুলো হত্যা করা বৈধ নয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৭২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৩-[১১] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)হতে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতি শীঘ্রই আমার উম্মাতের মধ্যে মতানৈক্য ও দলাদলি সৃষ্টি হবে। তন্মধ্যে একদল এরূপ হবে যে, তারা খুব সদাচরণ করবে কিন্তু তাদের ’আমল খারাপ হবে। তারা কুরআন মাজীদ পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করতে পারবে না। অতঃপর তারা দীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেভাবে তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তারা দীনের দিকে ফিরে আসবে না, যেভাবে নিক্ষিপ্ত তীর ধনুকের দিকে ফিরে আসে না। তারা মানুষ এবং পশু-প্রাণীর মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম। এমতাবস্থায় সুসংবাদ ঐ সকল লোকেদের জন্য যারা তাদেরকে হত্যা করবে (গাজী হবে) এবং তারা যাকে হত্যা করবে (শহীদ হবে)। তারা আল্লাহর কিতাবের দিকে লোকেদেরকে আহবান করবে। অথচ তাদের কোনো কিছুই আমাদের সুন্নাত অনুযায়ী হবে না। অতএব যে ব্যক্তি তাদের সাথে যুদ্ধ করবে সে আল্লাহ তা’আলার সবচেয়ে প্রিয়ভাজন হবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! তাদের পরিচয়-নমুনা কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মাথা মুন্ডানো। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي اخْتِلَافٌ وَفُرْقَةٌ قَوْمٌ يُحسِنونَ القيلَ ويُسيئونَ الفِعلَ يقرؤون الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُروقَ السَّهمِ فِي الرَّمِيَّةِ لَا يَرْجِعُونَ حَتَّى يَرْتَدَّ السَّهْمُ عَلَى فُوقِهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ طُوبَى لِمَنْ قَتَلَهُمْ وَقَتَلُوهُ يَدْعُونَ إِلَى كِتَابِ اللَّهِ وَلَيْسُوا منَّا فِي شيءٍ مَنْ قاتلَهم كَانَ أَوْلَى بِاللَّهِ مِنْهُمْ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا سِيمَاهُمْ؟ قَالَ: «التَّحْلِيقُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ) এর অর্থ তাদের কুরআন অথবা ক্বিরাআত অর্থাৎ কণ্ঠ ও হরফের মাখরাজ থেকে তাদের ক্বিরাআতের প্রভাব অন্তরে অতিক্রম করবে না। অথবা এর অর্থ হলো তাদের ক্বিরাআত আল্লাহর নিকট উঠবে না এবং আল্লাহ কবুল করবেন না। এরা মানুষের মাঝে এবং জন্তুর মাঝে সর্বনিকৃষ্ট। কেউ বলেনঃ خَلْقِ ও الْخَلِيقَةِ শব্দদ্বয়ের অর্থ অভিন্ন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সমস্ত সৃষ্টজীব। এদেরকে হত্যাকারী এবং এদের হাতে শহীদ হওয়া সৌভাগ্য।
ইমাম নববী বলেনঃ এ হাদীস দ্বারা কেউ দলীল গ্রহণ করেছেন যে, মাথা মুন্ডানো মাকরূহ। কিন্তু এখানে সেই ধরনের কোনো নিদর্শন নেই। বস্তুতঃ এটা তাদের চিহ্ন বিশেষ। আর চিহ্ন কখনো হারাম হয় আবার কখবো মুবাহ হয়। যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ آيَتهمْ رَجُل أَسْوَد إِحْدٰى عَضُدَيْهِ مِثْل ثَدْي الْمَرْأَة ‘‘তাদের নিদর্শন হলো কালো লোক, তার এক বাহু মহিলাদের স্তনের বুটির মতো’’। বুঝা গেলো এটা হারাম নয়।
উপরোক্ত সুনানে আবূ দাঊদে বর্ণিত হয়েছে-
أَنَّ رَسُول اللّٰه ﷺ رَأَى صَبِيًّا قَدْ حُلِقَ بَعْض رَأْسه، وَقَالَ : احْلِقُوهُ كُلَّه، أَوِ اتْرُكُوهُ كُلَّه
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বালককে মাথার কিছু অংশ মুন্ডানো দেখলেন এবং বললেন, তুমি মাথার সম্পূর্ণটা হয় মুড়িয়ে ফেলো অথবা পূর্ণটায় ছেড়ে দাও। এই হাদীসটি মাথা মুন্ডানো বৈধ হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ। এখানে কোনো ব্যাখ্যার দরকার নেই।
বিদ্বানগণ বলেন- মাথা মুন্ডানো সব সময় জায়িয। কিন্তু মাথায় চুল থাকাকালীন তৈল মাখা এবং কেশবিন্যাস করা কষ্টসাধ্য হলে মাথা মুন্ডানো মুস্তাহাব। আর যদি কষ্টকর না হয় তবে মাথা না মুন্ডানো মুস্তাহাব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৭৫২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৪-[১২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আন্না মুহাম্মাদার্ রসূলুল্লা-হ’ (অর্থাৎ- আল্লাহ তা’আলা ছাড়া সত্যি কোনো মা’বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল)- এ কথার সাক্ষ্য দেয়, তাকে তিনটি কাজের যে কোনো একটি কাজ ব্যতীত খুন করা হালাল নয়। ১- বিবাহ করার পর যিনা করলে পাথর নিক্ষেপে তাকে হত্যা করা। ২- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে, তাকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। ৩- অনৈতিকভাবে কাউকে হত্যা করলে তার বিনিময়ে তাকে হত্যা করা হবে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ إِلَّا بِإِحْدَى ثَلَاثٍ زِنا بعدَ إِحْصانٍ فإِنَّهُ يُرجَمُ ورجلٌ خرَجَ مُحارِباً للَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّهُ يُقْتَلُ أَوْ يُصْلَبُ أَوْ يُنْفَى مِنَ الْأَرْضِ أَوْ يَقْتُلُ نَفْسًا فَيُقْتَلُ بِهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (مُحارِبًا لِلّٰهِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ডাকাত ও রাষ্ট্রদ্রোহী। (يُقْتَلُ) শব্দটিকে কারী শর্তারোপ করেছেন অর্থাৎ «إِنْ قَتَلَ نَفْسًا بِلَا أَخْذ مَال» যদি সে মাল না নিয়ে কাউকে হত্যা করে তাহলে তাকে হত্যা করা হবে। এর উপর ভিত্তি করে «أو» হরফটি «تفصيل» তথা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার হবে। আর যখন «أو» হরফটি تخير তথা বেছে নেয়ার স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার হবে তখন শর্তযুক্ত করার প্রয়োজন নেই। যেমন এটা ইবনু ‘আব্বাস ও অন্যদের মাযহাব।
ইমাম মালিক বলেনঃ তাকে জীবিতাবস্থায় ক্রুশ বিদ্ধ করতে হবে এবং মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্ধ করতে থাকবে। ইমাম শাফি‘ঈ ও তার অনুসারীবৃন্দ বলেন যে, যদি হত্যা করে ও সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবে তাকে শূলে চড়াতে হবে ও হত্যা করতে হবে যাতে সেটা অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা হয়ে যায়।
আর নির্বাসন দেয়ার ব্যাপারে ইমাম শাফি‘ঈর মত হলো, সে একদেশ থেকে অন্যদেশ সদা পালিয়ে যেতে থাকবে। আবার কেউ বলেন- তার তাওবাহ্ যাহির না হওয়া পর্যন্ত সে নির্বাসনে আটক থাকবে।
কারী বলেনঃ আমাদের বিশুদ্ধ মত হলো যদি সে ভয় দেখানোয় না বেড়ে যায় তবে তাকে আটক রাখতে হবে। যা গৃহীত আল্লাহর বাণী থেকে- إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللهَ وَرَسُولَه
‘‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।’’ (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৩৩)
আর স্পষ্ট হলো «أَوْ يُنْفٰى مِنْ الْأَرْض» এর পূর্বে «أَوْ تُقْطَع يَده وَرِجْله مِنْ خِلَاف» বলা। যাতে হাদীসটি আয়াতের সামঞ্জস্যের অধিকারী হয়। সম্ভবত এই বিলুপ্তিটা রাবীর ভুলবশতঃ অথবা সংক্ষিপ্তকরণের জন্য ঘটে গেছে। আমরা আলোচনায় যা স্পষ্ট করলাম তা হলো আয়াত ও হাদীসে «أو» হরফটি «تفصيل» (বিশ্লেষণের) জন্য ব্যবহার হয়েছে। আবার কেউ বলেছেন এটা تخير তথা বেছে নেয়ার স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার হয়েছে। আর ইমাম প্রত্যেক ছিনতাইকারীর জন্য চার শাস্তির মাঝে বাছাই করে নিবেন।
ইবনু জারীর বর্ণনা করেন যে, এ মতটি ইবনু ‘আব্বাস, সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যাব, মুজাহিদ, ‘আত্বা, হাসান বাসরী, নাসায়ী ও যহ্হাক (রহঃ)-এর। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৪৫)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৫-[১৩] ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ বলেছেন যে, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে রাতে সফরে ছিলেন। (এক রাতে) তাদের মাঝে একজন ঘুমিয়ে পড়ল। অতঃপর ঘুমন্ত লোকটি জেগে দেখে, এক ব্যক্তি একটি রশি হাতে নিয়ে তার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এমতাবস্থায় ঘুমন্ত লোকটি ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোনো মুসলিমের পক্ষে জায়িয নয় যে, সে অন্য কোনো মুসলিমকে ভীতি প্রদর্শন করবে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُمْ كَانُوا يَسِيرُونَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَانْطَلَقَ بَعْضُهُمْ إِلَى حَبْلٍ مَعَه فَأَخذه فَفَزعَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُرَوِّعَ مُسْلِمًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হাদীসটিকে কোনো লেখক (بَاب الرَّجُل يُرَوِّع الرَّجُل وَمَنْ أَخَذَ الشَّيْء عَلَى الْمِزَاح) অর্থাৎ ‘‘কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যক্তিকে ভীতি প্রদর্শন করা এবং ঠাট্টা-মশকরা করা’’ নামক শিরোনামের অধীনে নিয়ে এসেছেন। আর ইমাম আবূ দাঊদ (باب من يأخذ الشىئ من مزاح) অর্থাৎ ‘‘কোন ব্যক্তির ঠাট্টা-মশকরা করা’’ নামক শিরোনামের অধীনে নিয়ে এসেছেন।
فَزَعَ শব্দের অর্থ অভিধানে রয়েছে, الفرق و الذعر অর্থাৎ ভয় দেখানো। এর বহুবচন الفزاع।
ঠাট্টা-মশকরা করা নিষেধ এজন্য যে, তাতে কোনো উপকার নেই। বরং এটা কখনো সাময়িক সুখ লাভের সাথীর নিকটে রাগ বা ক্রোধের কারণ অথবা কষ্টের কারণে পরিণত হয়।
মুনাবী বলেন- যদি ঠাট্টা বা মশকরাকারী কষ্টদায়ক মশকরা করে তবুও হারাম। (‘আওনুল মা‘বূদ ১৩তম খন্ড, হাঃ ৪৯৯৪)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৬-[১৪] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জিয্ইয়ার (করের) মাধ্যমে জমিন কিনে নিল (গ্রহণ করল), সে যেন তার হিজরতকে ফিরিয়ে দিতে চাইল। আর যে কোনো কাফিরের অপমান-অপদস্থের দায়িত্ব স্বীয় ঘাড়ে নিয়ে নিল, সে ইসলামকে তার পিঠের জন্য কর্তৃত্বশীল বানাল। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَخَذَ أَرْضًا بِجِزْيَتِهَا فَقَدِ اسْتَقَالَ هِجْرَتَهُ وَمَنْ نَزَعَ صَغَارَ كَافِرٍ مِنْ عُنُقِهِ فَجَعَلَهُ فِي عُنُقِهِ فَقَدْ وَلّى الإِسلامَ ظهرَه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হাদীসে جزية বলতে ভূমিকে বুঝানো হয়েছে। কারণ ভূমিকর যুক্ত থাকে করযুক্ত জমিনের সাথে। খত্ত্বাবী বলেনঃ হাদীস প্রমাণ করে যে, যখন মুসলিম করযুক্ত জমিন কোনো কাফিরের নিকট থেকে ক্রয় করে তখন তার ওপর থেকে ভূমিকর বাতিল হয় না।
যুক্তিবাদীদের মতও এটাই। তবে তাদের মতো করযুক্ত জমির উৎপাদিত ফসলে উশর দিতে হবে না। তারা বলে ‘উশ্র ও কর একত্রিত হতে পারে না। সাধারণ সব ‘আলিমের মত হলো জমির উৎপাদিত ফসল পাঁচ ওয়াসাক পরিমাণ হলে ‘উশর ওয়াজিব।
ইমাম শাফি‘ঈ-এর নিকট خراج তথা কর দুই ধরনের- (১) جزية [জিয্ইয়াহ্] তথা কর, (২) ভাড়া। অতএব যখন কোনো ভূখণ্ড সন্ধির মাধ্যমে এই শর্তে বিজয় হয় যে, ভাড়া জমিটা তার মালিকের নিকট থাকবে। তখন এর জন্য যে, কর নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা جزية (জিয্ইয়াহ্) বা কররূপে গণ্য হবে। যা তাদের মাথা পিছু হারে নেয়া হবে। তাদের মধ্যে যে ইসলাম গ্রহণ করবে তার ওপর অর্পিত ভূমিকর বাদ হয়ে যাবে। যেমন প্রত্যেকের জিয্ইয়াহ্ রহিত হয়ে যায়। আর তাকে জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের উশর দিতে হবে। আর যদি বিজয় এরূপ হয় যে, জমিগুলো মুসলিমদের জন্য। তারা প্রতি বছর জমির জন্য কিছু প্রদান করবে। আর জমি মুসলিমদের জন্যই থাকবে। এক্ষেত্রে যা কিছু তাদের নিকট থেকে নেয়া হবে তা ভাড়া হিসেবে গণ্য হবে। চাই সে ইসলাম গ্রহণ করুক বা কাফির হয়ে থাকুক, উভয় সমান। তার ওপর শর্তানুযায়ী বিধান প্রযোজ্য হবে। আর এদের কেউ কোনো জমি বিক্রয় করলে তা বাতিল হবে। কারণ সে এমন বস্তু বিক্রয় করেছে যার সে মালিক নয়।
শায়খ ‘আল্লামা আরদাবীলী তাঁর ‘মাসাবীহ’-এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘‘আল আযহার’’ নামক গ্রন্থে বলেন, যিম্মি বা অন্য কারো নিকট থেকে করযুক্ত জমি ক্রয় করার ব্যাপারে এই হাদীসে নিষেধ রয়েছে। কারণ এতে অপমান-লাঞ্ছনা রয়েছে। আর মু’মিন সম্মানিত। মু’মিন অপমানিত-লাঞ্ছিত হয় না। ইসলাম হলো শক্তিশালী ও সম্ভ্রান্ত আর কুফ্র হলো লাঞ্ছিত ও অপদস্ত। যখন মুসলিম লাঞ্ছনাকে বেছে নিবে তখন সে যেন ইসলামী রীতিকে তার পিঠের উপর নেতৃত্ব দান করবে। বিদ্বানগণ বলেন, করযুক্ত জমি বা খেরাজী জমি কয়েক ধরনের- (১) ইমাম কোনো শহরকে বলপূর্বক বিজয় করবে আর তা বিজয়ীদের মাঝে মূল্যের বিনিময়ে প্রদান করবেন এবং মুসলিমদের জন্য ওয়াকফ করে দিবেন, তবে এর উপর কর নির্ধারণ করবে না। যেমন ‘উমার ইরাকের আবাদী জমির ক্ষেত্রে করেছিলেন।
(২) ইমাম কোনো শহরকে এই চুক্তিতে বিজয় করবেন যে, তথাকার জমি আমাদের জন্য থাকবে এবং কাফিরেরা কর পরিশোধ করে বসবাস করবে। এই করকে বলা হয় ভাড়া, যা তাদের ইসলাম গ্রহণে বাতিল হবে না।
(৩) ইমাম কোনো শহরকে এই চুক্তিতে বিজয় করেন যে, জমি মালিকের নিকটে থাকবে আর তারা কর দিয়ে বসবাস করবে। এই করকে جزية (জিয্ইয়াহ্) বলা হয়, যা ইসলাম গ্রহণ করলে রহিত হয়ে যায়। ‘আলিমদের মতে এই প্রকারটি হচ্ছে হাদীসের ব্যাখ্যা। হিদায়াহ্ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে যে, সঠিক কথা হলো- নিশ্চয় সাহাবীগণ (রাঃ) খিরাজী জমি ক্রয় করলে তারা জমির কর আদায় করতো। বায়হাক্বী বলেন, ইবনু মাস্‘ঊদ, খাববাব বিন আর্ত, হুসায়ন বিন ‘আলী এবং শুবাইহ প্রমুখ -এর খিরাজী জমি ছিল। ‘উতবাহ্ বিন ফারকাদ আস্ সুলামী একবার ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব -কে বললেন- আমি আবাদী জমি ক্রয় করেছি। ‘উমার বললেনঃ জমির পূর্বের মালিক যেমন করতো তু্মি তাই করো।
বাহজুল মালিক গোত্রের এক মহিলা ইসলাম গ্রহণ করলে ‘উমার তাকে চিঠি লিখে পাঠিয়ে বললেনঃ যদি সে তার জমি নিতে চায় এবং জমি কর প্রদান করে তবে তোমরা তাকে তার জমিতে ছেড়ে দাও। অন্যথায় মুসলিমদেরকে প্রদান করো।
ইবনু আবী শায়বাতে বর্ণিত আছে, বাহজুল মালিকের অধিবাসীদের জমিদারগণকে ‘উমার বললেন, তাদের জমি তাদেরকে কর দেয়ার শর্তে দিয়ে দাও।
ইবনু আবূ শায়বাহ্, ‘উমার ও ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তারা বলেন- যখন কেউ ইসলাম কবুল করে তার জিয্ইয়াহ্ মাফ করে দিবো কিন্তু তার জমির কর গ্রহণ করবো।
একদা ‘আলী -এর যুগে এক জমিদার ইসলাম গ্রহণ করলে বললেন- যদি তুমি তোমার জমিতে বসবাস করতে চাও তাহলে মাথাপিছু কর রহিত করে দিলাম। আর তোমার জমির কর গ্রহণ করবো। আর যদি তুমি তা ছেড়ে দাও তাহলে আমরা এর অধিক হকদার। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৮০)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৭-[১৫] জারীর ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খস্’আম সম্প্রদায়ের মুকাবিলায় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী পাঠালেন। অতঃপর উক্ত সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক লোক আত্মরক্ষার জন্য সাজদারত হলো, কিন্তু দ্রুতবেগে তাদেরকে হত্যা করা হলো। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত ব্যক্তির উত্তারাধিকারীদেরকে অর্ধেক দিয়াত (রক্তপণ) পরিশোধ করার জন্য হুকুম দিয়ে বললেন, যে সকল মুসলিমরা মুশরিকদের মাঝে বসবাস করে, আমার ওপর তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। সাহাবীগণ জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসূল, এরূপ কেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেননা তাদের উচিত ছিল অনতিদূরে অবস্থান করা, যাতে একে অপরের আগুন পর্যন্ত দৃষ্টিপাত না হয়। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً إِلَى خَثْعَمَ فَاعْتَصَمَ نَاسٌ مِنْهُمْ بِالسُّجُودِ فَأَسْرَعَ فِيهِمُ الْقَتْلَ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ لَهُمْ بِنِصْفِ الْعَقْلِ وَقَالَ: «أَنَا بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ؟ قَالَ: «لَا تَتَرَاءَى نَارَاهُمَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: খত্ত্বাবী বলেনঃ তাদের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানতে পারলেন তখন তাদের ওপর অর্ধ দিয়াত দিতে বলেন। এর কারণ ‘‘ফাতহুল ওয়াদূদ’’-এ উল্লেখ আছে যে, এর কারণ হলো তারা নিজেদেরকে কাফিরদের মাঝে রাখার জন্য নিজেরা সহযোগিতা করেছে। এরা যেন এমন লোকের মতো যারা নিজের কর্মের কারণে অথবা অন্যের কারণে ধ্বংস হয়। তাই তাদের অপরাধের অংশ বাদ হয়ে গেছে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে উল্লেখ আছে- মুসলিমদেরকে মুশরিকদের বাসস্থান থেকে দূরে থাকা জরুরী ওয়াজিব।
আর এমন স্থানে অবতরণ না করে যেখানে তাদের গৃহে অগ্নি প্রজ্জ্বলন করলে মুশরিকদের চিহ্ন আরো স্পষ্ট হয়। কিন্তু সে মুসলিমের সাথে রাত্রে অবতরণ করবে। এই হাদীসটির দ্বারা হিজরতের জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে।
تَرَاءَى শব্দটি বাবে تفاعل থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো কেউ কাউকে দেখা। تَرَاءَى-কে نار-এর সাথে সম্বন্ধ করা হয়েছে। এটা ‘আরবদের রূপক কথা। এর অর্থ হচ্ছে মুখোমুখী থাকা। نَارَاهُمَا تَخْتَلِفَانِ অর্থাৎ এটা আহবান করে আল্লাহর দিকে আর এটা আহবান করে শায়ত্বনের দিকে।
খত্ত্বাবী বলেনঃ এর তিন ধরনের অর্থ আছে- ১. কেউ বলেন, এর অর্থ হলো দু’টির বিধান সমান নয়।
২. কেউ বলেন, এর অর্থ আল্লাহ দারুল ইসলাম ও দারুল কুফ্রকে আলাদা করেছেন। সুতরাং কাফিরদের এলাকায় মুসলিমদের বসবাস করা জায়িয নয়।
৩. কেউ বলেন, এর অর্থ হলো মুসলিম যেন মুশরিকের আদর্শ-বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যম--ত না হয়। আর তাদের চরিত্র ও আকার-আকৃতির সাথে মিলে না যায়।
হাফিয শামসুদ্দীন ইবনুল কইয়্যিম (রহ.) বলেনঃ «لَا تَتَرَاءَى نَارَاهُمَا» বাক্যটি সাবলীল যথার্থ বিশুদ্ধ যাতে সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্থ নিহিত থাকে। তিনি বলেন, হাদীসের অর্থ আগুন হলো কোনো গোত্রের অবতরণের চিহ্ন স্বরূপ। এটা তাদের দিকে আহবান করে। অতএব মুশরিকদের আগুন শায়ত্বনের পথে এবং জাহান্নামের আগুনের প্রতি আহবান করে। কেননা তা আল্লাহর অবাধ্যতার জন্য জ্বালানো হয়েছে। আর মু’মিনের আগুন আল্লাহর প্রতি, তার আনুগত্যের প্রতি ও দীনের সম্মানের প্রতি। এই যখন অবস্থা তখন দুই আগুন কিভাবে একই হয়।
সুনানে নাসায়ীতে রয়েছে- «لَا يَقْبَلُ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ مُشْرِكٍ بَعْدَمَا أَسْلَمَ عَمَلًا، أَوْ يُفَارِقَ الْمُشْرِكِينَ إِلَى الْمُسْلِمِينَ» অর্থাৎ ‘‘কোনো মুশরিক ইসলাম গ্রহণ করার পর মুশরিকদের পরিত্যাগ করে মুসলিমের নিকটে না আসা পর্যন্ত আল্লাহ কোন ‘আমল কবুল করেন না।’’ আবূ দাঊদে সামুরাহ্ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করে, যে ব্যক্তি মুশরিকের সাথে মিলেমিশে বসবাস করে সে তাদের মতই। আবূ দাঊদ-এর মারাসীলে উল্লেখ আছে।
মাকহূল (রহঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, তোমরা সন্তানদেরকে শত্রুর পাশে রেখো না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৪২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৮-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঈমান কোনো লোককে হত্যার প্রতিবন্ধকরূপে কাজ করে। সুতরাং কোনো মু’মিন যেন কোনো লোককে আকস্মিকভাবে হত্যা না করে বসে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْإِيمَانُ قَيَّدَ الْفَتْكَ لَا يفتِكُ مُؤمنٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: মাজমা‘ ও নিহায়াহ্ গ্রন্থে লেখক বলেনঃ الْفَتْكَ বলা হয়, কোনো ব্যক্তি তার সাথীর নিকটে আসে, যে অসতর্ক অতঃপর সে তার ওপর আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে। তিনি সেখানে বলেন, ঈমান মু’মিনকে অসতর্ক করা থেকে বিরত রাখে যেমন বন্ধন স্বাধীনতাকে রহিত করে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থাকারে বলেনঃ الْفَتْكَ বলা হয় কোনো লোক তার গর্তে থাকা অসতর্ক বন্ধুর ওপর হামলা করে হত্যা করে। আর বিশ্বাসঘাতকতা তাকে ধোঁকায় ফেলে, অতঃপর গোপন স্থানে হত্যা করে।
‘আওনুল মা‘বূদ গ্রন্থকার বলেনঃ হাদীসের অর্থ হলো নিশ্চয় ঈমান আকস্মিক আক্রমণের শিকার তথা যাকে নিরাপত্তা দেয়ার পর বিশ্বাসঘাতকতাবশতঃ হত্যা করা হয় তাকে রক্ষা করে, যেমন বন্ধন স্বাধীনতাকে বাধা দেয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৭৬৬)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৯-[১৭] জারীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো গোলাম যখন শির্কের দিকে পালিয়ে যায়, তখন তাকে হত্যা করা অপরিহার্য হয়ে যায়। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ جَرِيرٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا أَبَقَ الْعَبْدُ إِلَى الشِّرْكِ فقد حلَّ دَمه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: যখন দাস দারুল হার্ব তথা অমুসলিম রাজ্যে পলায়ন করে তখন তাকে হত্যা করলে দিয়াত দিতে হবে না। আর যদি মুরতাদ হয়ে পালিয়ে যায় তবে সে আরো বেশি হত্যার যোগ্য হয়ে যায়।
‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ এ বিধান যে মুরতাদ নয় তার ক্ষেত্রেও। আর সে দারুল ইসলাম ছেড়ে মুশরিকদের পাশে যাওয়ার কারণে তার রক্তমূল্য বৃথা যাবে।
মুনযিরী বলেনঃ এ ব্যাপারে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে- «أَيّمَا عَبْد أَبَقَ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّة» যে কোনো দাস পলায়ন করে তার ওপর থেকে দায়-দায়িত্ব উঠে যায়। অন্য বর্ণনায় আছে, «إِذَا أَبَقَ الْعَبْد لَمْ تُقْبَل لَه صَلَاة» অর্থাৎ যখন দাস পলায়ন করে তখন তার সালাত কবুল হয় না।
আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে, «إِذَا أَبَقَ مِنْ مَوَالِيه الْعَبْد لَمْ تُقْبَل لَه صَلَاة وَإِنْ مَاتَ مَاتَ كَافِرًا» যখন দাস তার মুনীবের নিকট থেকে পালিয়ে যায় তখন তার সালাত গ্রহণ করা হয় না আর যদি সে মারা যায় তবে সে কাফির অবস্থায় মারা যাবে।
অন্য বর্ণনায় আছে পলায়নকারী দাস তার মালিকের নিকটে ফিরে না আসা পর্যন্ত তার সালাত কবুল হয় না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৫২)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৫০-[১৮] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী রমণী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালমন্দ করত এবং তাঁর দোষ-ত্রুটি সন্ধান করে তাঁকে দোষারোপ করত। এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি তার গলা চেপে ধরে মেরে ফেলল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হত্যা ক্ষমা করে দিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ يَهُودِيَّةً كَانَتْ تَشْتِمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقَعُ فِيهِ فَخَنَقَهَا رَجُلٌ حَتَّى مَاتَتْ فَأَبْطَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَمَهَا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হাদীসের মধ্যে এ কথা প্রমাণ হয় যে, যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দিবে সে হত্যার যোগ্য।
মুনযির বর্ণনা করেন যে, যে ব্যক্তি স্পষ্টভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দিবে তাকে হত্যা করা ওয়াজিব মর্মে মতানৈক্য হয়েছে।
খত্ত্বাবী বলেনঃ কোনো মুসলিম রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দিলে তাকে হত্যা করা ওয়াজিব- এ বিষয়ে ভিন্নমত আমি জানি না।
ইবনু বাত্ত্বাল বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালাগালিকারী ব্যক্তির ব্যাপারে ‘আলিমদের মতভেদ রয়েছে।
ইবনুল কইয়িম মালিক থেকে বর্ণনা করেন, সন্ধি বা চুক্তিতে আবদ্ধ যিম্মি, যেমন ইয়াহূদী ব্যক্তি গালি দিলে তাকে হত্যা করতে হবে। কিন্তু সে যদি ইসলাম গ্রহণ করে তবে নয়। আর মুসলিম হলে তাকে তাওবাহ্ করতে বলা ছাড়াই হত্যা করতে হবে।
ইয়াহূদী এবং অনুরূপদের ব্যাপারে ইবনুল মুনযির, লায়স, শাফি‘ঈ, আহমাদ, ইসহক, আওযা‘ঈ ও মালিক থেকে বর্ণনা করেন, মুসলিম ব্যক্তি গালি দিলে সে মুরতাদ। তাকে তাওবাহ্ করতে বলতে হবে। কুফীদের মতে গালাগালিকারী ব্যক্তি যদি যিম্মী হয় তবে তাকে অপমানিত করতে হবে। আর মুসলিম হলে মুরতাদ হয়ে যাবে। ‘ইয়ায এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেন যে, যাদের মাধ্যমে এরূপ আচরণ হয়েছে তাদেরকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি স্পষ্ট প্রমাণ না থাকায় অথবা বন্ধুত্ব স্থাপনের স্বার্থে ছেড়ে দিয়েছেন?
মালিকী মাযহাবের কেউ বর্ণনা করেন যে, যেই ইয়াহূদীরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ‘‘আস্সা-মু ‘আলাইকা’’ বলতো তাদের ব্যাপারে স্পষ্ট প্রমাণ না থাকায় তাদেরকে হত্যা করেননি। আর তারা এর স্বীকৃতি দেয়নি, ফলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় জ্ঞানে তাদের ফায়সালা করেননি। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৫৪)
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৫১-[১৯] জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাদুকরের শার্’ঈ শাস্তি হলো তাকে তরবারি দিয়ে হত্যা করা। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ جُنْدُبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «حَدُّ السَّاحِرِ ضَرْبُهُ بِالسَّيْفِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: যারা বলে যাদুকরের দণ্ড হলো, হত্যা তারা এ হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে।
‘আল্লামা নববী শারহে মুসলিমে বলেনঃ যাদু করা হারাম এটা সর্বসম্মতিক্রমে কবীরা গুনাহ। তিনি বলেন, যাদু কখনো কুফরী পর্যায়ে পৌঁছে আবার আবার কখনো কুফরী হয় না বরং তা বড় গুনাহ। যদি তাতে কুফরী কালাম বা কুফরী কাজ থাকে তাহলে কাফির হবে অন্যথায় কাফির হবে না। আর যাদু শিক্ষা গ্রহণ এবং শিক্ষাদান উভয়ই হারাম। আমাদের মতে যাদুকারীকে হত্যা করা যাবে না। যদি সে তাওবাহ্ করে তবে তার তাওবাহ্ কবুলযোগ্য।
ইমাম মালিক বলেনঃ যাদুর কারণে যাদুকর কাফির। তাকে তাওবাহ্ করতে বলা যাবে না ও তার তাওবাহ্ কবুলযোগ্য নয়। বরং তাকে হত্যা করা ওয়াজিব।
যিনদীক-এর তাওবাহ্ কবুলকে কেন্দ্র করে এই মাসআলাটি মতভেদপূর্ণ হয়েছে। ইমাম মালিক-এর মতে যাদুকর কাফির। অথচ আমাদের নিকটে কাফির নয়। আমাদের মতে মুনাফিক ও যিনদীক-এর তাওবাহ্ গ্রহণ করা হয়।
কাযী ‘ইয়ায ইমাম মালিক ও আহমাদ বিন হাম্বল-এর নিকট থেকে বর্ণনা করেন যে, সাহাবী ও তাবি‘ঈদের একটি জামা‘আত থেকে বর্ণিত আছে, আমাদের সাথীগণ বলেনঃ যখন যাদুকর তার যাদু দ্বারা কোনো মানুষকে হত্যা করে অথবা সে স্বীকার করে যে, সে তার যাদুতে মারা গেছে অথবা সে অধিকাংশ সময় যাদু দ্বারা হত্যা করে থাকে তখন তার ওপর ক্বিসাসের বিধান প্রযোজ্য। আর যদি যাদুকর মারা যায় কিন্তু সে কখনো হত্যা করে আবার কখনো হত্যা করে না তখন তার ওপর কিসাস প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে দিয়াত ও কাফফারা ওয়াজিব। এই দিয়াত বা রক্তমূল্য বর্তাবে তার সম্পদের উপর। নিহতের রক্তমূল্য দানকারীর ওপর নয়। কেননা রক্তমূল্য দানকারী অপরাধীর স্বীকৃত প্রমাণিত কর্মের ক্ষেত্রে উদ্ধুদ্ধ করেনি।
আমাদের সাথীগণ বলেন- প্রমাণের ভিত্তিতে যাদুর দ্বারা হত্যা কল্পনা বা ধারণা করা যাবে না। মূলত যাদুকরের স্বীকৃতির মাধ্যমে এটা ধারণা করা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা ভালো জানেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪৬০)