পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯০-[৫] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জেনে রাখ, স্বেচ্ছায় হত্যার ন্যায় ভুলবশত হত্যা; যেমন- চাবুক অথবা লাঠির দ্বারা হত্যা করা হয়। তার দিয়াত (রক্তপণ) একশত উট, তন্মধ্যে চল্লিশটি হবে গর্ভবতী। (নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَلَا إِنَّ دِيَةَ الْخَطَأِ شِبْهِ الْعَمْدِ مَا كَانَ بِالسَّوْطِ وَالْعَصَا مِائَةٌ مِنَ الإِبلِ: مِنْهَا أربعونَ فِي بطونِها أولادُها . رَوَاهُ النسائيُّ وَابْن مَاجَه والدارمي

عن عبد الله بن عمرو ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: الا ان دية الخطا شبه العمد ما كان بالسوط والعصا ماىة من الابل: منها اربعون في بطونها اولادها . رواه النساىي وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: أَلَا শব্দটি সতর্কতা অর্থে ব্যবহৃত হয়। এ হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, শারী‘আতে অনিচ্ছাকৃত হত্যা বলতে কিছুই নেই। হত্যা তো হত্যাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক। সর্বাবস্থায় দিয়াত ওয়াজিব হবে। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, শিব্হিল ‘আম্দ (ইচ্ছাকৃতের মতে) কোনো হত্যা নেই। বরং হত্যা ইচ্ছাকৃত অথবা ভুলবশত, এই দুই প্রকারই হতে পারে। কিন্তু ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেন, ইবনু ‘উমার ও ‘আলী (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীস (أَنَّ الْقَتْلَ بِالْمُثَقَّلِ شِبْهُ عَمْدٍ لَا يُوجِبُ الْقِصَاصَ) দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন যে, শিবহে ‘আমদ নামেও এক প্রকার হত্যা আছে যার বদলে কিসাস ওয়াজিব হয় না, বরং দিয়াত ওয়াজিব হয়। সাধারণত চাবুক কিংবা লাঠি দ্বারা আঘাত করলে হত্যা করার উদ্দেশ্য থাকে না। কেননা তার আঘাত হালকাই হয়ে থাকে। এতদসত্ত্বেও যদি মরে যায় তবে বলতে হবে যে, অনিচ্ছাকৃত মারা পড়েছে। সুতরাং এ জাতীয় হত্যাকে বলা হয় শিব্হে ‘আম্দ, কিন্তু যদি ভারী বস্তু দ্বারা আঘাত করা হয় তখন বলতে হবে যে, ইচ্ছা করেই মেরেছে আর এ হত্যাকে বলা বলা হয় কতলে ‘আম্দ, এ ক্ষেত্রে কিসাস ওয়াজিব হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৮০৫)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯১-[৬] আর আবূ দাঊদ এবং ইবনু মাজাহ এ হাদীসটি ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর এবং ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। আর আর শারহুস্ সুন্নাহ্-তে মাসাবীহ এর ভাষ্যে ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।[1]

وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُد عَنهُ وَابْن مَاجَه وَعَن ابْن عمر. وَفِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» لَفْظُ «الْمَصَابِيحِ» عَنِ ابْنِ عمر

ورواه ابو داود عنه وابن ماجه وعن ابن عمر. وفي «شرح السنة» لفظ «المصابيح» عن ابن عمر

ব্যাখ্যা : অনিচ্ছাকৃতভাবে চাবুক বা লাঠির আঘাতে মারা গেলে এ ক্ষেত্রে দিয়াত হিসেবে ১০০ উট প্রদান করতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯২-[৭] আবূ বকর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর ইবনু হাযম তাঁর পিতার মাধ্যমে তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। (তিনি বলেন,) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামান অধিবাসীদের নিকট লিখে পাঠান। (তাতে লেখা ছিল) যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অনৈতিকভাবে কোনো মু’মিনকে হত্যা করে, তা তার হাতের (কর্ম ফলের) প্রাপ্য কিসাস; তবে যদি নিহত ব্যক্তির অভিভাবকগণ অন্য কিছুতে রাজি হয়ে যায়। আর তাতে এটাও লেখা ছিল যে, নারী প্রতিশোধস্বরূপ পুরুষকে হত্যা করা যাবে। তাতে এটাও ছিল যে, প্রাণের রক্তপণ হলো একশত উট। আর যদি কেউ স্বর্ণ দ্বারা রক্তপণ আদায় করতে চায়, তবে একহাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিতে হবে। আর যদি কারো নাক মূল হতে কেটে ফেলা হয়, তার রক্তপণ হলো একশত উট। সমস্ত দাঁতের বিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় ঠোঁটের বিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় অণ্ডকোষেরবিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, লিঙ্গ কাটলেও পরিপূর্ণ রক্তপণ, মেরুদণ্ড ভেঙ্গে ফেললে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় চোখ ফুড়িয়ে দিলে বা উপড়ে ফেললে পরিপূর্ণ রক্তপণ ওয়াজিব হবে। তবে এক পা কেটে ফেললে অর্ধেক রক্তপণ। আর মস্তকের খুলিতে আঘাত করলে এবং পেটের ভিতরাংশে আঘাত হানলেও এক-তৃতীয়াংশ রক্তপণ দিতে হবে। আর যদি কোনো আঘাতের দরুন হাড্ডি স্থানচ্যুত হয়ে যায়, তাহলে পনেরোটি উট রক্তপণ ওয়াজিব হবে। আর হাত ও পায়ের প্রতিটি আঙ্গুলের রক্তপণ হলো দশটি উট এবং প্রতিটি দাঁতের রক্তপণ পাঁচটি উট ওয়াজিব হবে। (নাসায়ী ও দারিমী)[1]

আর ইমাম মালিক-এর বর্ণনায় আছে, এক চোখের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট এবং পায়ের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট এবং এক হাতের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট। আর এমনভাবে আঘাত করা, যার দরুন হাড্ডি বহিঃপ্রকাশ হয়ে যায়, তার জন্য পাঁচটি উট ওয়াজিব হবে।

وَعَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَتَبَ إِلَى أَهْلِ الْيَمَنِ وَكَانَ فِي كِتَابِهِ: «أَنَّ مَنِ اعْتَبَطَ مُؤْمِنًا قَتْلًا فَإِنَّهُ قَوَدُ يَدِهِ إِلَّا أَنْ يَرْضَى أَوْلِيَاءُ الْمَقْتُولِ» وَفِيهِ: «أَنَّ الرَّجُلَ يُقْتَلُ بِالْمَرْأَةِ» وَفِيهِ: «فِي النَّفْسِ الدِّيَةُ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ وَعَلَى أَهْلِ الذَّهَبِ أَلْفُ دِينَارٍ وَفِي الْأَنْفِ إِذَا أُوعِبَ جَدْعُهُ الدِّيَةُ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ وَفِي الْأَسْنَانِ الدِّيَةُ وَفِي الشفتين الدِّيَة وَفِي البيضين الدِّيةُ وَفِي الذَّكرِ الدِّيةُ وَفِي الصُّلبِ الدِّيَةُ وَفِي الْعَيْنَيْنِ الدِّيَةُ وَفِي الرِّجْلِ الْوَاحِدَةِ نِصْفُ الدِّيَةِ وَفِي الْمَأْمُومَةِ ثُلُثُ الدِّيَةِ وَفِي الجائفَةِ ثلث الدِّيَة وَفِي المنقلة خمس عشر مِنَ الْإِبِلِ وَفِي كُلِّ أُصْبُعٍ مِنْ أَصَابِعِ الْيَدِ وَالرِّجْلِ عَشْرٌ مِنَ الْإِبِلِ وَفِي السِّنِّ خَمْسٌ مِنَ الْإِبِلِ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي رِوَايَةِ مَالِكٍ: «وَفِي الْعَيْنِ خَمْسُونَ وَفِي الْيَدِ خَمْسُونَ وَفِي الرِّجْلِ خَمْسُونَ وَفِي الْمُوضِحَةِ خَمْسٌ»

وعن ابي بكر بن محمد بن عمرو بن حزم عن ابيه عن جده ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كتب الى اهل اليمن وكان في كتابه: «ان من اعتبط مومنا قتلا فانه قود يده الا ان يرضى اولياء المقتول» وفيه: «ان الرجل يقتل بالمراة» وفيه: «في النفس الدية ماىة من الابل وعلى اهل الذهب الف دينار وفي الانف اذا اوعب جدعه الدية ماىة من الابل وفي الاسنان الدية وفي الشفتين الدية وفي البيضين الدية وفي الذكر الدية وفي الصلب الدية وفي العينين الدية وفي الرجل الواحدة نصف الدية وفي المامومة ثلث الدية وفي الجاىفة ثلث الدية وفي المنقلة خمس عشر من الابل وفي كل اصبع من اصابع اليد والرجل عشر من الابل وفي السن خمس من الابل» . رواه النساىي والدارمي وفي رواية مالك: «وفي العين خمسون وفي اليد خمسون وفي الرجل خمسون وفي الموضحة خمس»

ব্যাখ্যা: দীর্ঘ এ হাদীসের আলোকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, মানব দেহের যে সকল অঙ্গের সাথে বিশেষ ধরনের উপকার অথবা যার সাথে মানবের সৌন্দর্য জড়িত রয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করলে তার জন্য মর্যাদা অনুযায়ী দিয়াত ওয়াজিব হবে। মূলতঃ মানব দেহ হলো অতি মর্যাদাসম্পন্ন। তাই তার সামান্য অংশও নষ্ট করলে কোনো সময় বলা হয়ে থাকে পুরো দেহটাই নষ্ট করে ফেলেছে। এরই প্রেক্ষিতে ‘উমার এমন একটি আঘাতের জন্য, যার দরুন আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির বোধশক্তি, শ্রবণশক্তি, বাকশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়েছিল, ফলে আঘাতকারীর ওপর চারটি দিয়াত ওয়াজিব করেছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৮৬৮; শারহে মুয়াত্ত্বা মালিক ৮ম খন্ড, হাঃ ১৫০১)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৩-[৮] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কারও আঘাতের কারণে ক্ষত তার শরীরের হাড্ডি প্রকাশ হয়, তার জন্য পাঁচটি উট এবং দাঁত ভাঙ্গার ক্ষেত্রে (প্রত্যেকটি দাঁতের জন্য) পাঁচটি উট আদায় করতে হবে। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও দারিমী);[1] আর তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ শুধুমাত্র এ হাদীসের প্রথম অংশটিই বর্ণনা করেছেন)

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَوَاضِحِ خَمْسًا خَمْسًا مِنَ الْإِبِلِ وَفِي الْأَسْنَانِ خَمْسًا خَمْسًا مِنَ الْإِبِلِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ وابنُ مَاجَه الْفَصْل الأول

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال: قضى رسول الله صلى الله عليه وسلم في المواضح خمسا خمسا من الابل وفي الاسنان خمسا خمسا من الابل. رواه ابو داود والنساىي والدارمي وروى الترمذي وابن ماجه الفصل الاول

ব্যাখ্যা: الْمَوَاضِحِ শব্দটি موضحة এর বহুবচন। আর موضحة এমন আঘাতকে বলা হয় যে আয়াতের কারণে শরীরের হাড় প্রকাশ পায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক মুযিহাহ্ আঘাতের দিয়াত (রক্তপণ) স্বরূপ পাঁচটি করে উট এবং প্রতিটি দাঁতের জন্য পাঁচটি করে উট দিতে নির্দেশ দিতেন।
(মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৫৫; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৪-[৯] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাত ও উভয় পায়ের অঙ্গুলিসমূহের রক্তপণ সমপরিমাণ নির্ধারণ করেছেন। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: جَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَابِعَ الْيَدَيْنِ وَالرِّجْلَيْنِ سَوَاء. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن ابن عباس قال: جعل رسول الله صلى الله عليه وسلم اصابع اليدين والرجلين سواء. رواه ابو داود والترمذي

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীস থেকে জানা যায় যে, কিসাস গ্রহণের ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করতে হবে, তবে আঙ্গুলের কিসাস গ্রহণের বেলায় হাত ও পায়ের আঙ্গুলকে সমপর্যায়ের বিবেচনা করা হয়েছে। কিসাস গ্রহণের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত ও পায়ের আঙ্গুলসমূহকে একই পর্যায়ের নির্ধারণ করছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৫১; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৯১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৫-[১০] উক্ত রাবী [ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত অঙ্গুলি (রক্তপণের ক্ষেত্রে) সমপরিমাণ। অনুরূপভাবে সকল দাঁতও সমপরিমাণ এবং সম্মুখের দাঁত ও মাড়ির দাঁতও সমান। এটা ও ওটা (অঙ্গুলি ও দাঁতসমূহ) সমান। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «الأصابعُ سواءٌ والأسنانُ سواءٌ الثَنِيَّةُ وَالضِّرْسُ سَوَاءٌ هَذِهِ وَهَذِهِ سَوَاءٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «الاصابع سواء والاسنان سواء الثنية والضرس سواء هذه وهذه سواء» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ثنية শব্দটি الثنايا শব্দের একবচন, এর অর্থ হচ্ছে সামনের দাঁতগুলো, উপরের দিক থেকে দু’টি এবং নিচের দিক থেকে দু’টি।


الضرس শব্দটি একবচন, এর বহুবচন হলো أَضْرَاس। সানায়া দাঁত বাদ দিয়ে বাকী দাঁতগুলোকে أَضْرَاس বলে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

মুনযিরী বলেনঃ ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। হাত অথবা পায়ের আঙ্গুলের দিয়াত সমান। অর্থাৎ প্রতিটি আঙ্গুলের দিয়াত দশটি করে উট। আর ইবনু মাজাহ-এর বর্ণনায় আছে, দাঁত সবগুলোই সমান। অর্থাৎ সকল প্রকার দাঁতের কিসাস সমান। আর তা হলো ৫টি উট। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৪৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৬-[১১] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর এক খুৎবা দেন। অতঃপর খুৎবায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হে লোক সকল! ইসলামে জোট বা চুক্তি নেই। অবশ্য জাহিলিয়্যাত যুগে যে সকল চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, ইসলাম আবির্ভূত হওয়ায় তা আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করে। অমুসলিমদের মুকাবেলায় মুসলিম একটি হাতস্বরূপ। কোনো একজন মুসলিমও যদি কাউকে আশ্রয় দেয়, তবে সকল মুসলিমের পক্ষ থেকে তা রক্ষা করা অবধারিত। দূরবর্তী সৈন্যদল যদি গনীমাত লাভ করে, সন্নিকটবর্তীগণও তার অধিকারী হবে, অর্থাৎ- যুদ্ধরত সেনারা যা অর্জন করবে, তাদের পশ্চাতে থাকা সেনারাও তার অংশীদার হবে। (জেনে রেখ) কোনো কাফিরের হত্যার বিনিময়ে কোনো মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। একজন কাফিরের রক্তপণ হলো একজন মুসলিমের রক্তপণের অর্ধেক। পশু-প্রাণীর যাকাত নির্দিষ্ট জায়গায় বসে থেকে আদায় করা গ্রহণযোগ্য নয়। আর যাকাতের ভয়ে পলায়নপর হয়ে পশু নিয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে চলে যাওয়াও জায়িয নেই। জনসাধারণের নিজ আবাসস্থলে গিয়েই যাকাত আদায় করতে হবে। অপর এক বর্ণনায় আছে, আশ্রিত নিরাপত্তাপ্রাপ্তির রক্তপণ হলো একজন স্বাধীন মুসলিমের অর্ধেক। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: خَطَبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الفتحِ ثمَّ قَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَا حِلْفَ فِي الْإِسْلَامِ وَمَا كَانَ مِنْ حِلْفٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنَّ الْإِسْلَامَ لَا يَزِيدُهُ إِلَّا شِدَّةً الْمُؤْمِنُونَ يَدٌ عَلَى مَنْ سِوَاهُمْ يُجِيرُ عَلَيْهِمْ أَدْنَاهُمْ وَيَرُدُّ عليهِم أقْصاهم يَردُّ سراياهم على قعيدتِهم لَا يُقْتَلُ مُؤْمِنٌ بِكَافِرٍ دِيَةُ الْكَافِرِ نِصْفُ دِيَةِ الْمُسْلِمِ لَا جَلَبَ وَلَا جَنَبَ وَلَا تُؤْخَذُ صَدَقَاتُهُمْ إِلَّا فِي دُورِهِمْ» . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «دِيَةُ الْمُعَاهِدِ نِصْفُ دِيَةِ الْحُرِّ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال: خطب رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الفتح ثم قال: «ايها الناس انه لا حلف في الاسلام وما كان من حلف في الجاهلية فان الاسلام لا يزيده الا شدة المومنون يد على من سواهم يجير عليهم ادناهم ويرد عليهم اقصاهم يرد سراياهم على قعيدتهم لا يقتل مومن بكافر دية الكافر نصف دية المسلم لا جلب ولا جنب ولا توخذ صدقاتهم الا في دورهم» . وفي رواية قال: «دية المعاهد نصف دية الحر» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত حلف শব্দটির অর্থ হচ্ছে অঙ্গীকার বা চুক্তি।

এখানে যে চুক্তি বা অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে জাহিলী যুগে লোকেরা যেসব চুক্তি করেছে সেগুলো। জাহিলী যুগে লোকেরা যুদ্ধ-বিগ্রহের ক্ষেত্রে একে-অপরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতো যে, তারা ফিতনা-ফ্যাসাদের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করবে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের কাজে সহযোগিতা করতে নিষেধ করলেন। তবে মু’মিনগণ কল্যাণের কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করবে, কারণ তারা সবাই মিলে পরস্পর ভাই ভাই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ ‘‘মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই’’- (সূরা আল হুজুরত ৪৯ : ১০)।
(وَمَا كَانَ مِنْ حِلْفٍ) এ বাক্যটি দ্বারা এই কথাও বুঝানো হয়েছে যে, জাহিলী যুগে যেমন খারাপ কাজের প্রচলন ছিল তেমনি তাদের মধ্যে এ কাজটি বড় প্রচলন ছিল যে, তারা মাযলূমকে সাহায্য করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং এজন্য তারা অঙ্গীকারও করত। এ কাজটিকে ইসলাম আরো জোরদার করেছে।

(وَيَرُدُّ عَلَيْهِمْ أَقْصَاهُمْ يَرُدُّ سَرَايَاهُمْ عَلٰى قَعِيْدَتِهِمْ) এ বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে সকল মুজাহিদ ময়দানে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে গনীমাতের মাল অর্জন করে, সেই গনীমাত কেবল তারাই ভোগ করবে না। বরং তাদের পেছনে যেসব মুজাহিদ রয়েছে তারাও এর অংশ পাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৭-[১২] খিশফ ইবনু মালিক (রহঃ) সূত্রে ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ভুলক্রমে হত্যার রক্তপণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একশত উট নির্ধারণ করেছেন। তন্মধ্যে বিশটি এক বছরপূর্ণ মাদী, বিশটি এক বছরপূর্ণ নর; বিশটি দুই বছরপূর্ণ (বাচ্চা), বিশটি চার বছরের এবং বিশটি গর্ভবতী উট। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

আর সঠিক কথা হলো হাদীসটি মাওকূফ এ কারণে যে, এটি ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ)-এর উক্তি এবং খিশ্ফ একজন অপরিচিত রাবী, অন্য কোনো হাদীসে তার নামোলেস্নখ নেই। আর শারহুস্ সুন্নাহ্-তে বর্ণিত হয়েছে, খায়বারে নিহত লোকের রক্তপণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর যাকাতের উট থেকে একশত উট আদায় করেছেন। আর এ যাকাতের উটের মাঝে এক বছরের কোনো উট ছিল না; বরং দুই বছরের নর উট থাকতে পারে।

وَعَنْ خِشْفِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي دِيَةِ الْخَطَأِ عِشْرِينَ بِنْتَ مَخَاضٍ وَعِشْرِينَ ابْنَ مَخَاضٍ ذُكُورٍ وَعِشْرِينَ بِنْتَ لَبُونٍ وَعِشْرِينَ جَذَعَةً وَعِشْرِينَ حِقَّةً . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالصَّحِيحُ أَنَّهُ مَوْقُوفٌ عَلَى ابْنِ مَسْعُودٍ وَخِشْفٌ مَجْهُولٌ لَا يُعْرَفُ إِلَّا بِهَذَا الْحَدِيثِ وَرُوِيَ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَدَى قَتِيلَ خَيْبَرَ بِمِائَةٍ مِنْ إِبِلِ الصَّدَقَةِ وَلَيْسَ فِي أَسْنَانِ إِبِلِ الصَّدَقَةِ ابْنُ مَخَاضٍ إِنَّمَا فِيهَا ابْنُ لبون

وعن خشف بن مالك عن ابن مسعود قال: قضى رسول الله صلى الله عليه وسلم في دية الخطا عشرين بنت مخاض وعشرين ابن مخاض ذكور وعشرين بنت لبون وعشرين جذعة وعشرين حقة . رواه الترمذي وابو داود والنساىي والصحيح انه موقوف على ابن مسعود وخشف مجهول لا يعرف الا بهذا الحديث وروي في شرح السنة ان النبي صلى الله عليه وسلم ودى قتيل خيبر بماىة من ابل الصدقة وليس في اسنان ابل الصدقة ابن مخاض انما فيها ابن لبون

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, ভুলবশতঃ হত্যার দিয়াত হিসেবে ১০০ উট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই ১০০ উট পাঁচ প্রকারের বিভক্ত:

২০টি বিনতু মাখায (মাদী)

২০টি বিনতু লাবূন (নর)

২০টি ইবনু মাখায (এক বৎসরের নর উট)

২০টি জাযা‘আহ্ (যার বয়স ৪ বৎসর পূর্ণ হয়েছে)

২০টি হিক্কাহ্ (যার বয়স ৩ বৎসর পূর্ণ হয়ে ৪ বৎসরে উপনীত হয়েছে)। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৮৬)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৮-[১৩] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে রক্তপণের মূল্য ছিল আটশত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) অথবা আট হাজার দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা)। আর তখন আহলি কিতাব তথা ইয়াহূদী-নাসারাদের রক্তপণ ছিল মুসলিমের রক্তপণের অর্ধেক। তিনি (’আমর ইবনু শু’আয়ব-এর দাদা) বলেন, এরূপই চলে আসছিল, যখন ’উমার খলীফাহ্ নিযুক্ত হন, তখন তিনি জনগণের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে বলেন, এখন উটের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। রাবী বলেন, তাই ’উমার (পূর্ব নির্ধারিত) রক্তপণের পরিমাণ (পরিবর্তন করার) স্থির করলেন, স্বর্ণের মালিকের ওপর একহাজার দীনার, রৌপ্যের মালিকের ওপর বারো হাজার দিরহাম, গরুর মালিকের উপর দু’শত গাভী, ছাগলের মালিকের ওপর দুই হাজার বকরী ও কাপড়ের মালিকের উপর দু’শত জোড়া কাপড়। রাবী বলেন, নিরাপত্তাপ্রাপ্ত আশ্রিতদের রক্তপণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে যা ছিল ’উমার তা পরিবর্তন না করে তা-ই বহাল রাখলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: كَانَتْ قِيمَةُ الدِّيَةِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَمَانِمِائَةِ دِينَارٍ أَوْ ثَمَانِيَةَ آلَافِ دِرْهَمٍ وَدِيَةُ أَهْلِ الْكِتَابِ يَوْمَئِذٍ النِّصْفُ مِنْ دِيَةِ الْمُسْلِمِينَ قَالَ: فَكَانَ كَذَلِكَ حَتَّى اسْتُخْلِفَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ عَلَى أَهْلِ الذَّهَبِ أَلْفَ دِينَارٍ وَعَلَى أَهْلِ الْوَرِقِ اثْنَيْ عَشَرَ أَلْفًا وَعَلَى أَهْلِ الْبَقَرِ مِائَتَيْ بَقَرَةٍ وَعَلَى أَهْلِ الشَّاءِ أَلْفَيْ شَاةٍ وَعَلَى أَهْلِ الْحُلَلِ مِائَتَيْ حُلَّةٍ قَالَ: وَتَرَكَ دِيَةَ أَهْلِ الذِّمَّةِ لَمْ يَرْفَعْهَا فِيمَا رَفَعَ من الدِّيَة. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال: كانت قيمة الدية على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم ثمانماىة دينار او ثمانية الاف درهم ودية اهل الكتاب يومىذ النصف من دية المسلمين قال: فكان كذلك حتى استخلف عمر رضي الله عنه على اهل الذهب الف دينار وعلى اهل الورق اثني عشر الفا وعلى اهل البقر ماىتي بقرة وعلى اهل الشاء الفي شاة وعلى اهل الحلل ماىتي حلة قال: وترك دية اهل الذمة لم يرفعها فيما رفع من الدية. رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, দিয়াতের মূল্য নির্ধারণের মূল জিনিস হচ্ছে উট। তাই উটের মূল্য কম-বেশি হওয়ার কারণে দিয়াতের মূল্যও কম-বেশি হয়। শামানী বলেন, স্বর্ণের দ্বারা দেয়া দিয়াতের পরিমাণ ১০০০ দীনার আর রৌপ্য হলে তার পরিমাণ হবে ১০,০০০ (দশ হাজার) দিরহাম। আর যদি উট হয় তবে তার সংখ্যা হলো ১০০।

ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ, মালিক ও ইসহক (রহঃ) বলেনঃ দিয়াতের ক্ষেত্রে রৌপ্য মুদ্রার পরিমাণ হবে ১২,০০০। এ ব্যাপারে সুনানে আর্বা‘আতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি হাদীস রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বানী ‘আদী গোত্রের একজন লোক নিহত হয়েছিল, তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিয়াত নির্ধারণ করেছিলেন ১২ হাজার দিরহাম। (আবূ দাঊদ ৪৫৪৬ ৪/৬৭১, তিরমিযী ১৩৮৮ ৪/৬, নাসায়ী ৪৮০৩ ৮/৪৪, ইবনে মাজাহ ২৬২৯ ২/৮৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৯-[১৪] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তপণের পরিমাণ বারো হাজার (রৌপ্যমুদ্রা বা দিরহাম) নির্ধারণ করেছেন। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ جَعَلَ الدِّيَةَ اثْنَيْ عَشَرَ أَلْفًا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ

وعن ابن عباس عن النبي صلى الله عليه وسلم انه جعل الدية اثني عشر الفا. رواه الترمذي وابو داود والنساىي والدارمي

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে (اثْنَىْ عَشَرَ أَلْفًا) তথা ১২ হাজার বলতে ১২ হাজার দিরহাম বুঝানো হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০০-[১৫] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভুলক্রমে হত্যার রক্তপণ গ্রামবাসীদের ওপর নির্ধারণ করেছেন উটের মূল্যের উপর হিসাব করে চারশত স্বর্ণমুদ্রা অথবা তার সমপরিমাণ মূল্যের রৌপ্যমুদ্রা। অতএব যদি উটের মূল্য বৃদ্ধি পেত তখন রক্তপণের মূল্য বর্ধিত করে দিতেন। আর যদি উটের মূল্য হ্রাস পেত তখন রক্তপণের মূল্য কমিয়ে দিতেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে রক্তপণের মূল্য চারশত স্বর্ণমুদ্রা থেকে আটশত স্বর্ণমুদ্রা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেত। আর আটশত স্বর্ণমুদ্রার সমপরিমাণ রৌপ্যমুদ্রা ছিল আট হাজার দিরহাম। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাভীর মালিকের ওপর দুইশত গাভী আর বকরীর মালিকের ওপর দুই হাজার বকরী (রক্তপণস্বরূপ) নির্ধারণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, রক্তপণের ধন-সম্পদ নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের হক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন, মহিলার রক্তপণ তার অভিভাবকগণ ভাগ-বণ্টন অনুপাতে বহন করবে এবং হত্যাকারী কিছুতেই নিহত ব্যক্তির ধন-সম্পদের উত্তরাধিকার হবে না। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَوِّمُ دِيَةَ الْخَطَأِ عَلَى أَهْلِ الْقُرَى أَرْبَعَمِائَةِ دِينَارٍ أَوْ عِدْلَهَا مِنَ الْوَرِقِ وَيُقَوِّمُهَا عَلَى أَثْمَانِ الْإِبِلِ فَإِذَا غَلَتْ رَفَعَ فِي قيمتِها وإِذا هاجَتْ رُخصٌ نَقَصَ مِنْ قِيمَتِهَا وَبَلَغَتْ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا بَيْنَ أَرْبَعِمِائَةِ دِينَارٍ إِلَى ثَمَانِمِائَةِ دِينَارٍ وَعِدْلُهَا مِنَ الْوَرِقِ ثَمَانِيَةُ آلَافِ دِرْهَمٍ قَالَ: وَقَضَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَهْلِ الْبَقَرِ مِائَتَيْ بَقَرَةٍ وَعَلَى أَهْلِ الشَّاءِ أَلْفَيْ شَاةٍ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْعَقْلَ مِيرَاثٌ بَيْنَ وَرَثَةِ الْقَتِيلِ» وَقَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ عَقْلَ الْمَرْأَةِ بَيْنَ عَصَبَتِهَا وَلَا يَرِثُ القاتلُ شَيْئا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقوم دية الخطا على اهل القرى اربعماىة دينار او عدلها من الورق ويقومها على اثمان الابل فاذا غلت رفع في قيمتها واذا هاجت رخص نقص من قيمتها وبلغت على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم ما بين اربعماىة دينار الى ثمانماىة دينار وعدلها من الورق ثمانية الاف درهم قال: وقضى رسول الله صلى الله عليه وسلم على اهل البقر ماىتي بقرة وعلى اهل الشاء الفي شاة وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان العقل ميراث بين ورثة القتيل» وقضى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان عقل المراة بين عصبتها ولا يرث القاتل شيىا. رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, উটের মূল্য বৃদ্ধি পেলে দিয়াতের মূল্যও বৃদ্ধি পেত। যার ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ের দিয়াতের মূল্য চারশ’ দীনার হতে আটশ’ দীনার পর্যন্ত উঠানামা করত। এখানে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে আর তা হলো- কোনো মহিলার অপরাধের কারণে যদি দিয়াত দিতে হয় তবে এর দায়িত্ব বহন করবে তার আবাসাগণ, তারা তাদের নিজ মীরাসের অংশের অনুপাতে তা ভাগ করে নেবে।

এ হাদীসে আরো একটি বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে আর তা হলো দিয়াত নিহত ব্যক্তির মীরাস, তার ওয়ারিসগণ এর অধিকারী হবে। কিন্তু হত্যাকারী যদি নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হয় তাহলে সে দিয়াতের ওয়ারিস তথা নিহত ব্যক্তির ওয়ারিস হতে বঞ্চিত হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০১-[১৬] উক্ত রাবী (’আমর ইবনু শু’আয়ব) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’শিবহিল ’আমদ’’ তথা ইচ্ছার সদৃশ হত্যার রক্তপণও ইচ্ছাকৃত হত্যার রক্তপণের ন্যায় কঠোরতর হবে। তবে হত্যাকারীকে হত্যা করা যাবে না। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهُ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «عَقْلُ شِبْهِ الْعَمْدِ مُغَلَّظٌ مِثْلُ عَقْلِ الْعَمْدِ وَلَا يُقْتَلُ صاحبُه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعنه عن ابيه عن جده ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «عقل شبه العمد مغلظ مثل عقل العمد ولا يقتل صاحبه» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে যে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে তা হলো, ইচ্ছাকৃত হত্যার কারণে যেরূপ দিয়াত বা জরিমানা আসবে, (عَقْلُ شِبْهِ الْعَمْدِ) তথা ইচ্ছাকৃত হত্যা নয় তবে ইচ্ছাকৃত হত্যার অনুরূপ হত্যার ক্ষেত্রেও একই ধরনের দিয়াত বা জরিমানা দিতে হবে। তবে এখানে পার্থক্য হচ্ছে কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলে তার থেকে কিসাস নেয়া হবে, কিন্তু (مِثْلُ عَقْلِ الْعَمْدِ) (ইচ্ছাকৃত হত্যার মতো হত্যা) এর ক্ষেত্রে কিসাস প্রযোজ্য হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০২-[১৭] উক্ত রাবী (’আমর ইবনু শু’আয়ব) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কারও চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষত হলে এবং চোখ যথাস্থানে বহাল থাকলে, এজন্য পূর্ণ রক্তপণের এক-তৃতীয়াংশ আদায় করতে হবে। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]

وَعَنْهُ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْعَيْنِ الْقَائِمَةِ السَّادَّةِ لِمَكَانِهَا بِثُلْثِ الدِّيَةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعنه عن ابيه عن جده قال: قضى رسول الله صلى الله عليه وسلم في العين القاىمة السادة لمكانها بثلث الدية. رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: (الْعَيْنِ الْقَائِمَةِ) এর দ্বারা ঐ চক্ষুকে বুঝানো হয়েছে যা তার নির্দিষ্ট স্থান থেকে উপড়ে যায়নি। বরং স্বস্থানে তা বহাল রয়েছে এবং চেহারার সৌন্দর্যও নষ্ট হয়নি। এক্ষেত্রে বিধান হচ্ছে দিয়াতের এক-তৃতীয়াংশ প্রযোজ্য হবে। ‘মুখতাসারুত্ ত্বীবী’তে রয়েছে, যদি চোখের সম্পূর্ণ জ্যোতি নষ্ট হয়ে যায় তবে পূর্ণ দিয়াত বা জরিমানা দিতে হবে। আর যদি একটি চক্ষু নষ্ট হয়ে যায় তবে অর্ধেক দিয়াত দিতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০৩-[১৮] মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর (রহঃ) আবূ সালামাহ্ (রহঃ) হতে, তিনি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট করার দরুন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গোলাম বা বাঁদী অথবা একটি ঘোড়া বা খচ্চর রক্তপণের নির্দেশ দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) আরও বলেন, হাদীসটি হাম্মাদ ইবনু সালামাহ্ এবং খালিদ ওয়াসিত্বী (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু উভয়ের একজনও ঘোড়া অথবা খচ্চরের কথা বর্ণনা করেননি।

وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الجَنينِ بغُرَّةٍ: عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ أَوْ فَرَسٍ أَوْ بَغْلٍ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَقَالَ: رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَخَالِدٌ الْوَاسِطِيُّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو وَلَمْ يَذْكُرْ: أَوْ فَرَسٍ أَوْ بغل

وعن محمد بن عمرو عن ابي سلمة عن ابي هريرة قال: قضى رسول الله صلى الله عليه وسلم في الجنين بغرة: عبد او امة او فرس او بغل. رواه ابو داود وقال: روى هذا الحديث حماد بن سلمة وخالد الواسطي عن محمد بن عمرو ولم يذكر: او فرس او بغل

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটিতে যে বিধান দেয়া হয়েছে তা হচ্ছে, কারো দ্বারা যদি গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায় তবে তারও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। হাদীসে এ সম্পর্কে غُرَّةٌ শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে মূল্যবান ও সুন্দর জিনিস, ‘আরবরা শব্দটিকে এ অর্থেই ব্যবহার করে থাকে। আর এখানে এর দ্বারা ক্রীতদাস অথবা ক্রীতদাসীকে বুঝানো হয়েছে, তবে হাদীসের মধ্যে ঘোড়া ও খচ্চরের কথা বর্ণিত রয়েছে তা ঊর্ধ্বতন বর্ণনাকারী ‘ঈসা ইবনু ইউনুস কর্তৃক ভুলক্রমে বর্ণিত হয়েছে। এ অংশটি সহীহ নয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৫৬৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০৪-[১৯] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে অথচ সে চিকিৎসাশাস্ত্রে সুপরিচিত নয়। তাহলে সে দোষী সাব্যস্ত হবে। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «من تطيب وَلَمْ يُعْلَمْ مِنْهُ طِبٌّ فَهُوَ ضَامِنٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من تطيب ولم يعلم منه طب فهو ضامن» . رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে যে বিষয়টি জানা যায় তা হচ্ছে, চিকিৎসাবিদ্যা অর্জন না করে কারো চিকিৎসা করা জায়িয নয়। কারণ ভুল চিকিৎসা দিলে রোগীর হিতে বিপরীত হতে পারে। এমনকি রোগী মারাও যেতে পারে। যদি কারো ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে যায় অর্থাৎ ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর ক্ষতি হয় বা মারা যায় তবে যে চিকিৎসা করবে তাকে এর জরিমানা দিতে হবে। এতে কারো দ্বিমত নেই। তবে এক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু হলে কিসাস গ্রহণ করা যাবে না। কারণ রোগীর অনুমতিক্রমে সে চিকিৎসা করেছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৭৫; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৮৪৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৫০৫-[২০] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দরিদ্র গোষ্ঠীর এক বালক ধনী গোষ্ঠীর এক বালকের কান কেটে ফেলে। অতঃপর কান কর্তনকারী বালকটির অভিভাবকগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমরা গরীব ও দুস্থ লোক; তাই তিনি তাদের ওপর কোনো কিছু ধার্য করেননি। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]

وَعَن عِمْران بن حُصَينٍ: أَنَّ غُلَامًا لِأُنَاسٍ فُقَرَاءَ قَطَعَ أُذُنَ غُلَامٍ لِأُنَاسٍ أَغْنِيَاءَ فَأَتَى أَهْلُهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: إِنَّا أُنَاسٌ فُقَرَاءُ فَلَمْ يَجْعَلْ عَلَيْهِمْ شَيْئًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ

وعن عمران بن حصين: ان غلاما لاناس فقراء قطع اذن غلام لاناس اغنياء فاتى اهله النبي صلى الله عليه وسلم فقالوا: انا اناس فقراء فلم يجعل عليهم شيىا. رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, গরীব পরিবারের একটি ছেলে ধনী পরিবারের একটি ছেলের কান কেটে ফেলে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তিনি কিছুই নির্ধারণ করেননি। এ থেকে বুঝা যায় যে, দিয়াত আদায়ের সামর্থ্য নেই এমন কারো ওপর দিয়াত ওয়াজিব হলে তা বায়তুল মাল থেকে পরিশোধ করা হবে। খত্ত্বাবী বলেনঃ ছেলেটি স্বাধীন ছিল কিন্তু এ ঘটনা ভুলক্রমে ঘটেছিল। ইবনুল মালিক ও অন্যান্য ‘উলামাহ্গণ বলেনঃ এ সম্ভাবনাও আছে যে, ছেলেটি দাস ছিল। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৫৮৩; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৭৬৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص) 16. Retaliation
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে