৩৪৯২

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯২-[৭] আবূ বকর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ’আমর ইবনু হাযম তাঁর পিতার মাধ্যমে তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। (তিনি বলেন,) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামান অধিবাসীদের নিকট লিখে পাঠান। (তাতে লেখা ছিল) যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অনৈতিকভাবে কোনো মু’মিনকে হত্যা করে, তা তার হাতের (কর্ম ফলের) প্রাপ্য কিসাস; তবে যদি নিহত ব্যক্তির অভিভাবকগণ অন্য কিছুতে রাজি হয়ে যায়। আর তাতে এটাও লেখা ছিল যে, নারী প্রতিশোধস্বরূপ পুরুষকে হত্যা করা যাবে। তাতে এটাও ছিল যে, প্রাণের রক্তপণ হলো একশত উট। আর যদি কেউ স্বর্ণ দ্বারা রক্তপণ আদায় করতে চায়, তবে একহাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিতে হবে। আর যদি কারো নাক মূল হতে কেটে ফেলা হয়, তার রক্তপণ হলো একশত উট। সমস্ত দাঁতের বিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় ঠোঁটের বিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় অণ্ডকোষেরবিনিময়ে পরিপূর্ণ রক্তপণ, লিঙ্গ কাটলেও পরিপূর্ণ রক্তপণ, মেরুদণ্ড ভেঙ্গে ফেললে পরিপূর্ণ রক্তপণ, উভয় চোখ ফুড়িয়ে দিলে বা উপড়ে ফেললে পরিপূর্ণ রক্তপণ ওয়াজিব হবে। তবে এক পা কেটে ফেললে অর্ধেক রক্তপণ। আর মস্তকের খুলিতে আঘাত করলে এবং পেটের ভিতরাংশে আঘাত হানলেও এক-তৃতীয়াংশ রক্তপণ দিতে হবে। আর যদি কোনো আঘাতের দরুন হাড্ডি স্থানচ্যুত হয়ে যায়, তাহলে পনেরোটি উট রক্তপণ ওয়াজিব হবে। আর হাত ও পায়ের প্রতিটি আঙ্গুলের রক্তপণ হলো দশটি উট এবং প্রতিটি দাঁতের রক্তপণ পাঁচটি উট ওয়াজিব হবে। (নাসায়ী ও দারিমী)[1]

আর ইমাম মালিক-এর বর্ণনায় আছে, এক চোখের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট এবং পায়ের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট এবং এক হাতের রক্তপণ হলো পঞ্চাশটি উট। আর এমনভাবে আঘাত করা, যার দরুন হাড্ডি বহিঃপ্রকাশ হয়ে যায়, তার জন্য পাঁচটি উট ওয়াজিব হবে।

وَعَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَتَبَ إِلَى أَهْلِ الْيَمَنِ وَكَانَ فِي كِتَابِهِ: «أَنَّ مَنِ اعْتَبَطَ مُؤْمِنًا قَتْلًا فَإِنَّهُ قَوَدُ يَدِهِ إِلَّا أَنْ يَرْضَى أَوْلِيَاءُ الْمَقْتُولِ» وَفِيهِ: «أَنَّ الرَّجُلَ يُقْتَلُ بِالْمَرْأَةِ» وَفِيهِ: «فِي النَّفْسِ الدِّيَةُ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ وَعَلَى أَهْلِ الذَّهَبِ أَلْفُ دِينَارٍ وَفِي الْأَنْفِ إِذَا أُوعِبَ جَدْعُهُ الدِّيَةُ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ وَفِي الْأَسْنَانِ الدِّيَةُ وَفِي الشفتين الدِّيَة وَفِي البيضين الدِّيةُ وَفِي الذَّكرِ الدِّيةُ وَفِي الصُّلبِ الدِّيَةُ وَفِي الْعَيْنَيْنِ الدِّيَةُ وَفِي الرِّجْلِ الْوَاحِدَةِ نِصْفُ الدِّيَةِ وَفِي الْمَأْمُومَةِ ثُلُثُ الدِّيَةِ وَفِي الجائفَةِ ثلث الدِّيَة وَفِي المنقلة خمس عشر مِنَ الْإِبِلِ وَفِي كُلِّ أُصْبُعٍ مِنْ أَصَابِعِ الْيَدِ وَالرِّجْلِ عَشْرٌ مِنَ الْإِبِلِ وَفِي السِّنِّ خَمْسٌ مِنَ الْإِبِلِ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي رِوَايَةِ مَالِكٍ: «وَفِي الْعَيْنِ خَمْسُونَ وَفِي الْيَدِ خَمْسُونَ وَفِي الرِّجْلِ خَمْسُونَ وَفِي الْمُوضِحَةِ خَمْسٌ»

ব্যাখ্যা: দীর্ঘ এ হাদীসের আলোকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, মানব দেহের যে সকল অঙ্গের সাথে বিশেষ ধরনের উপকার অথবা যার সাথে মানবের সৌন্দর্য জড়িত রয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করলে তার জন্য মর্যাদা অনুযায়ী দিয়াত ওয়াজিব হবে। মূলতঃ মানব দেহ হলো অতি মর্যাদাসম্পন্ন। তাই তার সামান্য অংশও নষ্ট করলে কোনো সময় বলা হয়ে থাকে পুরো দেহটাই নষ্ট করে ফেলেছে। এরই প্রেক্ষিতে ‘উমার এমন একটি আঘাতের জন্য, যার দরুন আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির বোধশক্তি, শ্রবণশক্তি, বাকশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়েছিল, ফলে আঘাতকারীর ওপর চারটি দিয়াত ওয়াজিব করেছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহেন্ নাসায়ী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ৪৮৬৮; শারহে মুয়াত্ত্বা মালিক ৮ম খন্ড, হাঃ ১৫০১)