পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯২৯-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ও হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ)হতে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম হলো ওই সদাক্বাহ্ (সাদাকা) যা স্বচ্ছল অবস্থায় দেয়া হয়। আর সদাক্বাহ্/দান শুরু করতে হবে ওই ব্যক্তি হতে যার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তোমার ওপর বাধ্যতামূলক। (বুখারী; ইমাম মুসলিম এ হাদীসটিকে শুধু হাকীম ইবনু হিযাম থেকে বর্ণনা করেছেন।)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَحَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَيْرُ الصَّدَقَةِ مَا كَانَ عَنْ ظَهْرِ غِنًى وأبدأ بِمن تعول» . رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم عَن حَكِيم وَحده
ব্যাখ্যা: সর্বোত্তম সদাক্বাহ্ (সাদাকা)/দান কোনটি তা নিয়ে বেশ মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। কারো মতে, ঐ দান সর্বোত্তম যা দান করার পরও বাকী সম্পদের দ্বারা দানকারীর সার্বিক প্রয়োজন পূরণ হয়। কারো মতে, সর্বোত্তম ঐ দান যা ব্যক্তির প্রয়োজনীয় সম্পদ রেখে তারপর দান করা হয়। অর্থাৎ যে সম্পদ দান করা হচ্ছে সে সম্পদের প্রতি যেন দানকারীর কিংবা দানকারীর ওপর ভরণ-পোষণের নির্ভরশীলদের প্রয়োজন না থাকে। ইমাম আল্ কুরতুবী তার আল্ মুফহাম (المفهم) গ্রন্থে বলেন, সর্বোত্তম দান হলো সেটি যেটি দানকারীর নিজের এবং তার পরিবারের অধিকার পূরণ করে দান করা হয় এবং দানকারীকে যেন দান করার পর অন্য কারো নিকট হাত পাততে না হয়।
অত্র হাদীসে স্বচ্ছলতা (غني) বলতে যা বুঝাচ্ছে তা হলো, এতটুকু সম্পদ ব্যক্তির মালিকানায় থাকা যা দ্বারা তার অত্যাবশ্যকীয় চাহিদাগুলো যেমন- অত্যধিক ক্ষুধার সময় খাদ্য, লজ্জাস্থান ঢাকার মতো কাপড় এবং নিজের দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় বস্ত্ত ইত্যাদি। এমতাবস্থায় এসব প্রয়োজনের উপর অন্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয়া বৈধ নয় বরং হারাম। যদি এ মুহূর্তে ব্যক্তি অন্য কিছুকে অগ্রাধিকার দেয় তাহলে প্রকারন্তরে নিজেকে সে ধ্বংস এবং ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা বৈধ নয়। সকল অবস্থায় ব্যক্তির নিজের অধিকার সংরক্ষণ অগ্রাধিকার পাবে। তবে নিজের প্রয়োজন মিটানোর পর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়া বৈধ হবে।
ব্যক্তির সমস্ত সম্পদ দান করা বৈধ কি-না সে ব্যাপারে ‘আলিমগণ মতানৈক্য করেছেন। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, আমাদের মত হচ্ছে, যে ব্যক্তির ওপর ঋণ নেই এবং তাঁর সঙ্কটকালে বা দরিদ্রাবস্থায় তার ওপর ধৈর্য ধারণ করবে এমন পরিবার রয়েছে সেমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তির জন্য তার সমস্ত সম্পদ দান করা মুস্তাহাব (পছন্দনীয়)। তবে উপর্যুক্ত শর্তাবলী পূরণ না করা হলে এরূপ দান মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। ইমাম তাবারী (রহঃ) ও অন্যরা বলেন, জমহূরের (অধিকাংশ ‘আলিমের) মত হচ্ছে, কোন ব্যক্তি যদি তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থাবস্থায় এবং এমন অবস্থায় থাকে যে, তার ওপর কোন ঋণের বোঝা নেই এমনকি সে দান করার পরবর্তী সময়ে আসন্ন দরিদ্রাবস্থা ও সঙ্কটকালে ধৈর্য ধারণ করতে পারবে এবং তার পরিবারও নেই বা যারা আছে তারা ধৈর্য ধারণ করবে তাহলে উপর্যুক্ত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে তার সমস্ত সম্পদ দান করে দেয়া তার জন্য বৈধ। যদি বর্ণিত শর্তাবলীর একটি শর্তও পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জন্য এরূপ করা মাকরূহ।
কারো কারো মতে, কেউ যদি তার পুরো সম্পদ দান করে দেয় তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। দানকারীকে ফেরত দেয়া হবে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, দানকারী যদি সমস্ত সম্পদ দান করে তাহলে তাকে দানকৃত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ বাদে দুই-তৃতীয়াংশ ফেরত দেয়া হবে। এটি আওযা‘ঈ ও মাকহূল (রহঃ)-এর শর্ত। মাকহূল থেকে অর্ধেকের অতিরিক্ত ফেরত দেয়ারও একটি মত পাওয়া যায়। ইমাম তাবারী বলেন, উপর্যুক্ত মতগুলোর মধ্যে বৈধতার দিক থেকে প্রথম মতটি আমাদের নিকট সঠিক বলে মনে হয়। আর মুস্তাহাব হওয়ার দিক থেকে মোট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দান করার মতটি অধিক গ্রহণযোগ্য। কারণ এ মতটির মাধ্যমে আবূ বাকর (রাঃ) কর্তৃক তার সমস্ত সম্পদ দান করার হাদীস ও কা‘ব ইবনু মালিক-এর হাদীস, যে হাদীসে তাকে উদ্দেশ্য করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, ‘তোমার কিছু সম্পদ তোমার নিকট রাখো। এটাই তোমার জন্য উত্তম, এর মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব।’
অত্র হাদীসের দ্বিতীয়াংশ ‘তুমি দান শুরু করবে তোমার পোষ্যদের দান করার মাধ্যমে’। এর অর্থ হলো, সর্বপ্রথম খরচ বা দান করতে হবে তাদেরকে যাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব দানকারীর ওপর রয়েছে। যদি তাদের দান করার পর অতিরিক্ত কিছু থাকে তাহলে তখন তা অপরিচিতদের মাঝে দান করা যাবে। হাফিয ইবনু হাজার আল্ আসক্বালানী বলেন, এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, অন্যদের দান করার পূর্বে নিজ এবং নিজের পরিবারের ওপর খরচ/দান করতে হবে। এ হাদীস দ্বারা ইসলামী শারী‘আতের একটি মূলনীতি সাব্যস্ত হয় যে, (الابتداء بالأهم فالأهم في الأمور الشرعية) অর্থাৎ শার‘ঈ বিষয়াবলী বা কর্মসমূহের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে হবে, তারপরে তৎপরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩০-[২] আবূ মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম যখন সাওয়াবের প্রত্যাশায় তার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করে, এ খরচ তার জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে গণ্য হয়। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِذا أَنْفَقَ الْمُسْلِمُ نَفَقَةً عَلَى أَهْلِهِ وَهُوَ يَحْتَسِبُهَا كَانَت لَهُ صَدَقَة»
ব্যাখ্যা: হাদীসে খরচের পরিমাণ নির্দিষ্ট না করে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তাতে বুঝা যায়, যে কোন পরিমাণ খরচ করলেই এ হাদীস তাকে শামিল করবে। হাদীসে পরিবার বলতে স্ত্রী-সন্তান এবং নিকটাত্মীয় অথবা শুধু স্ত্রীকে বুঝানো হয়েছে। ‘সাওয়াবের আশায় খরচ করা’র অর্থ হলো আল্লাহ ঐ ব্যক্তির ওপর তার পোষ্যদের জন্য যে খরচ করার বাধ্য-বাধ্যকতা আরোপ করেছেন তা স্মরণ করে আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ পালনের নিয়্যাতে তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশে খরচ করে। হাদীসে বর্ণিত সদাক্বাহ্ (সাদাকা) শব্দটি দ্বারা উদ্দেশ্য সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার আল্ আসক্বালানী বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ‘সাওয়াব’। এ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, কোন ‘আমল দ্বারা সাওয়াব অর্জিত হওয়ার শর্ত হলো, ‘আমলটি করার পূর্বে অবশ্যই নিয়্যাত করতে হবে। আল-মুহাল্লাব বলেন, ‘পরিবারের ওপর খরচ করা ওয়াজিব (আবশ্যক)’। এ কথার উপর ইজমা সাব্যস্ত হয়েছে। হাদীসে শারী‘আত প্রণেতা সদাক্বাহ্ (সাদাকা) শব্দটি এজন্য ব্যবহার করেছেন যে, মানুষ যেন এটা ধারণা না করে যে, পরিবারের ওপর আবশ্যিক খরচে কোন সাওয়াব নেই। মূলত এতেও সাওয়াব রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩১-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক রকম দীনার তাই যা তোমরা আল্লাহর পথে খরচ করো। এক রকম দীনার সেটাই যা তুমি গোলাম আযাদ করার জন্য খরচ করো। এসব দীনারের মধ্যে সাওয়াবের দিক দিয়ে সবচেয়ে মর্যাদাবান হলো যা তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করো। (মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دِينَار أنفقته فِي سَبِيل الله ودينار أنفقته فِي رَقَبَةٍ وَدِينَارٌ تَصَدَّقْتَ بِهِ عَلَى مِسْكِينٍ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ أَعْظَمُهَا أَجْرًا الَّذِي أنفقته على أهلك» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: ‘‘ফী সাবীলিল্লা-হ’’ বা ‘আল্লাহর রাস্তা’ দ্বারা বিশেষভাবে যুদ্ধ-জিহাদ কিংবা ব্যাপকভাবে যে কোন কল্যাণকর কাজকে বুঝানো হয়েছে। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর রাস্তায় বা বন্দি মুক্তি (দাস আযাদ) কিংবা ফকির-মিসকীনদেরকে দান করার চেয়ে নিজ পরিবারের ওপর খরচ করা অধিক ফাযীলাতপূর্ণ। নিজ পরিবারের ওপর খরচ করা সর্বোত্তম।
সাধারণত এর কারণ দু’টি হতে পারে। (এক) নিজ পরিবারের ওপর খরচ করা ফরয। আর ফরয সাধারণত নফলের চেয়ে উত্তম। (দুই) নিজ পরিবারের ওপর খরচ করলে দান করার ও সম্পর্ক রক্ষা করা উভয় সাওয়াবই পাওয়া যায়।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩২-[৪] সাওবান (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম হলো ওই দীনার যা কোন ব্যক্তি পরিবার-পরিজন লালন-পালনের জন্য খরচ করে। উত্তম দীনার হলো তাই যা কোন মানুষ এমন সব পশু পালনে খরচ করে যেগুলো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার জন্য লালিত-পালিত হয়েছে। উত্তম দীনার হলো ওই দীনার যা কোন মানুষ আল্লাহর পথে জিহাদকারী বন্ধুদের জন্য খরচ করে। (মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ ثَوْبَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى دَابَّتِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى أَصْحَابه فِي سَبِيل الله» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: আল্লামা মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেন, ইবনুল মালিক উল্লেখ করেছেন, ‘হাদীসে বর্ণিত তিন প্রকার খাত অন্য যে কোন খাতের চেয়ে বেশি ফাযীলাতপূর্ণ’। তবে হাদীসে বর্ণিত তিনটি খাতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় না। কেননা (وَ) ‘এবং’ শব্দ সাধারণত একত্র বুঝানোর জন্য আসে (কোন বিশেষ মর্যাদা বুঝায় না)। তবে কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক যে ধারাবাহিকতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লিখিত হয়েছে তার মধ্যে গুঢ় রহস্য বা তাৎপর্য রয়েছে। বিশেষ করে যদি বিষয়টি নির্দিষ্ট করা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। যেমন- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জে সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সা‘ঈ প্রথম কোন্ পাহাড় থেকে শুরু করবে তার বিধান বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
إبدؤا بما بدأ الله تعالى: إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللّهِ
অর্থাৎ তোমরা সেখান থেকেই শুরু করো যেখান থেকে আল্লাহ শুরু করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত।’’ (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৫৮)
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩৩-[৫] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আবূ সালামার ছেলেদের জন্য খরচ করাতে আমার কোন সাওয়াব হবে কি? কারণ তারা তো আমারই ছেলে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদের জন্য খরচ করো। তাদের জন্য তুমি যা খরচ করবে তার সাওয়াব পাবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِيَ أَجْرٌ أَنْ أَنْفِقَ عَلَى بَنِي أَبِي سَلَمَةَ؟ إِنَّمَا هُمْ بَنِيَّ فَقَالَ: «أَنَفِقِي عَلَيْهِمْ فَلَكِ أَجْرُ مَا أَنْفَقْتِ عَلَيْهِم»
ব্যাখ্যা: উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পূর্বে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল আসাদ, যিনি আবূ সালামাহ্ নামে পরিচিত তার স্ত্রী ছিলেন। আবূ সালামাহ্ মারা যাওয়ার পর উম্মু সালামাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহ করেন। আবূ সালামার ঘরে উম্মু সালামার সন্তান ছিল পাঁচ জন। তারা হলেন, সালামাহ্, ‘উমার, মুহাম্মাদ, যায়নাব ও দুররা।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩৪-[৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে রমণীগণ! তোমরা দান খয়রাত করো। তা তোমাদের অলংকারাদি হতে। যায়নাব বলেন, (এ কথা শুনে) আমি ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ-এর কাছে এলাম। তাঁকে বললাম, আপনি রিক্তহস্ত মানুষ। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দান সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতে বলেছেন। তাই আপনি তাঁর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে জেনে আসুন (আমি যদি আপনাকে ও আপনার সন্তানদের জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে খরচ করি তাহলে তা আদায় হবে কিনা?) যদি হয়, তাহলে আমি আপনাকেই সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দিয়ে দেব। আর না হলে আপনি ছাড়া অন্য কাউকে দেব। যায়নাব বলেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) (এ কথা শুনে) আমাকে বললেন, ’’তুমিই যাও’’। তাই আমি নিজেই তাঁর কাছে গেলাম। আমি গিয়ে দেখলাম, তাঁর ঘরের দরজায় আনসারের এক মহিলাও দাঁড়িয়ে আছে। আমার ও তার প্রয়োজন একই।
যায়নাব বলেন, যেহেতু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যক্তিত্বের কারণে (তাঁর নিকট যাবার সাহস আমাদের হলো না), তাই বিলাল (রাঃ)আমাদের কাছে এলে আমরা তাঁকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে খবর দিন যে, দু’জন মহিলা দরজায় আপনার কাছ থেকে জানতে চায়, তারা যদি তাদের (গরীব) স্বামী, অথবা তাদের পোষ্য ইয়াতীম সন্তানদেরকে দান-খয়রাত করে তাতে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) আদায় হবে কিনা? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমাদের পরিচয় দেবেন না। সে মতে বিলাল (রাঃ)রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গেলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন।
(এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা কারা? বিলাল (রাঃ)বললেন, একজন আনসার মহিলা, অপরজন যায়নাব। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ যায়নাব? বিলাল বললেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদের স্ত্রী। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদের জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব। এক গুণ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার হক আদায়ের জন্য, আর এক গুণ দান-খয়রাতের জন্য। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ زَيْنَبَ امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَصَدَّقْنَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ» قَالَتْ فَرَجَعْتُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ فَقُلْتُ إِنَّكَ رَجُلٌ خَفِيفُ ذَاتِ الْيَدِ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أَمَرَنَا بِالصَّدَقَةِ فَأْتِهِ فَاسْأَلْهُ فَإِنْ كَانَ ذَلِك يَجْزِي عني وَإِلَّا صرفتها إِلَى غَيْركُمْ قَالَت فَقَالَ لِي عَبْدُ اللَّهِ بَلِ ائْتِيهِ أَنْتِ قَالَتْ فَانْطَلَقْتُ فَإِذَا امْرَأَةٌ مِنَ الْأَنْصَارِ بِبَابِ رَسُولِ الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم حَاجَتي حَاجَتهَا قَالَتْ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قد ألقيت عَلَيْهِ المهابة. فَقَالَت فَخَرَجَ عَلَيْنَا بِلَالٌ فَقُلْنَا لَهُ ائْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ أَنَّ امْرَأتَيْنِ بِالْبَابِ تسألانك أتجزئ الصَّدَقَة عَنْهُمَا على أَزْوَاجِهِمَا وَعَلَى أَيْتَامٍ فِي حُجُورِهِمَا وَلَا تُخْبِرْهُ مَنْ نَحْنُ. قَالَتْ فَدَخَلَ بِلَالٌ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ هما» . فَقَالَ امْرَأَة من الْأَنْصَار وَزَيْنَب فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّ الزَّيَانِبِ» . قَالَ امْرَأَةُ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَهما أَجْرَانِ أجر الْقَرَابَة وَأجر الصَّدَقَة» . وَاللَّفْظ لمُسلم
ব্যাখ্যা: আল্ মাহা-বাহ্ (المهابة) অর্থ হলো ভয়, ভীতি, সম্মান, ভক্তি, শ্রদ্ধা ইত্যাদি। আল্লাহ তা‘আলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন ভয়ের বা শ্রদ্ধার চেহারা বা অবস্থা দিয়েছিলেন যার কারণে মানুষেরা তাকে ভয় করত এবং শ্রদ্ধা করত। এ কারণেই তার নিকট (অনুমতি ছাড়া বা সহসা) প্রবেশের সাহস সাধারণত কেউ দেখাত না। ত্বীবী বলেন, এ কারণেই সাহাবীগণ যখন তাঁর মাজলিসে বসতেন তখন এতটাই নীরব ও সুশৃঙ্খল থাকতেন যেন তাদের মাথার উপর পাখি বসা আছে। নড়াচড়া করলেই উড়ে যাবে। এটা ছিল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি আল্লাহর সম্মানের নিদর্শন।
হাদীসের এক পর্যায়ে ঐ মহিলা দু’জনের সাথে বিলাল (রাঃ)-এর দেখা হলে তারা তাকে বলেছিল যে, সে যেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাদের ব্যাপারটি বলার সময় তারা কারা তা না বলে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিলাল (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাদের পরিচয় বলেছেন। এর কারণ হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকট ঐ দু’ মহিলার পরিচয় জানতে চাইলে বিলাল (রাঃ) তাদের পরিচয় দেন, বিশেষ করে একজনের নাম উল্লেখ করেছেন। ঐ মহিলার নিষেধ করা সত্ত্বেও বিলাল (রাঃ) এ জন্যই বললেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কিছু জানতে চান তা তাকে জানানো আবশ্যক। তাই বিলাল (রাঃ) মহিলাদের অনুরোধ রাখতে পারেননি।
ইমাম শাফি‘ঈ, সাওরী, আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ এবং মালিক ও আহমাদ (রহঃ)-এর একটি মত অনুযায়ী এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নিজ স্বামীকে যাকাত দেয়া স্ত্রীর জন্য বৈধ। ইমাম আবূ হানীফাহ্, মালিক ও আহমাদের এক মত অনুযায়ী এরূপ করা বৈধ নয়। (লেখক বলেন,) আমার মত হচ্ছে স্ত্রী তার স্বামীকে যাকাত দিতে পারে, এটা বৈধ। কারণ যে সকল মুসলিমদের যাকাত দেয়া যায় স্বামীও তাদের অন্তর্ভুক্ত। স্বামীকে যাকাত দিতে নিষেধাজ্ঞাপক কোন আয়াত বা হাদীস নেই। এমনকি কোন ইজমা বা বিশুদ্ধ ক্বিয়াসও নেই। ইমাম আশ্ শাওকানী বলেন, কেউ যদি স্বামীকে যাকাত দেয়া অবৈধ বলে তাহলে তাকে নিষেধাজ্ঞার দলীল পেশ করতে হবে। ‘আলিমগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, স্বামী তার স্ত্রীকে যাকাত দিতে পারবে না। এটা অবৈধ। কেননা স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর ন্যস্ত।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩৫-[৭] উম্মুল মু’মিনীন মায়মূনাহ্ বিনতু হারিস (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি (একবার) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি দাসী আযাদ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন, তুমি যদি এ দাসীটি তোমার মামাকে দিয়ে দিতে, তাহলে বেশী সাওয়াব হত। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ: أَنَّهَا أَعْتَقَتْ وَلِيدَةً فِي زَمَانِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «لَوْ أَعْطَيْتِهَا أخوالك كَانَ أعظم لأجرك»
ব্যাখ্যা: ইবনু বাত্ত্বাল বলেন, এ হাদীসের শিক্ষা হলো, গোলাম আযাদ করার চেয়ে আত্মীয়দের দান করা বেশি ফাযীলাতপূর্ণ। এ হাদীস দ্বারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ও নিকটাত্মীয়দের প্রতি সদাচরণ করার ফাযীলাত বর্ণিত হয়েছে। মায়ের নিকটাত্মীয়দের প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। এ হাদীস দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রী যদি প্রাপ্তবয়স্কা হয় তাহলে স্বামীর অনুমতি ছাড়াই নিজ সম্পদ থেকে দান করা বৈধ।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩৬-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। এ দু’জনের মধ্যে কাকে আমি হাদিয়্যাহ্ (উপহার) দেব? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ দু’জনের যার ঘরের দরজা তোমার বেশী নিকটবর্তী। (বুখারী)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَن عَائِشَة قَالَت: يَا رَسُول الله إِن لِي جَارَيْنِ فَإِلَى أَيِّهِمَا أُهْدِي؟ قَالَ: «إِلَى أقربهما مِنْك بَابا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: যার ঘরে দরজা তোমার অধিক নিকটে তাকে প্রথমে দান করবে। কারণ সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী তার প্রতিবেশীর ঘরে উপহার সামগ্রী বা অন্যান্য কী কী বস্ত্ত ঢোকে তা দেখে। তাছাড়া নিকটতম প্রতিবেশীর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও আসা-যাওয়া, মেলামেশা বেশি ঘটে এবং তারাই প্রতিবেশীর যে কোন প্রয়োজনে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসে। তাই তারাই অপেক্ষাকৃতভাবে বেশি হকদার।
ইবনু আবী জামরাহ্ বলেন, সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশীকে উপহার প্রদান করা মুস্তাহাব। যেহেতু উপহার প্রদানের বিষয়টি ওয়াজিব নয় সেহেতু সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব নয়। (লেখক বলেন,) এ হাদীস দ্বারা এ কথা বুঝানো উদ্দেশ্য নয় যে, সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশীকেই শুধু উপহার দিতে হবে, অন্য কোন প্রতিবেশীকে দেয়া যাবে না। যেমনটি হাদীসের বাহ্যিক অর্থ দ্বারা বুঝা যায়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, নিকটতম প্রতিবেশী সর্বাগ্রে উপহার পাওয়ার অথবা অতিরিক্ত অনুগ্রহ পাওয়ার অধিক উপযোগী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
...الْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ...
অর্থাৎ ‘‘... নিকট প্রতিবেশী ও দূর প্রতিবেশী...-এর সাথে সদ্ব্যবহার করবে।’’ (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ৩৬)
প্রতিবেশী কে? এ প্রশ্নের উত্তরে মতানৈক্য রয়েছে। ‘আলী (রাঃ)-এর মতে, যে ডাক শুনতে পায় সে প্রতিবেশী। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর মতে, প্রতিবেশী হচ্ছে প্রত্যেক দিকে চল্লিশ ঘর পর্যন্ত। ইবনু ওয়াহ্ব ইউনুস থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে বর্ণনা করেন যে, প্রতিবেশী হচ্ছে ডান, বাম, পিছন, সামনে চল্লিশ ঘর। এর দ্বারা এটাও বুঝানো হতে পারে যে, প্রতি দিকে দশ ঘর।
পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা
১৯৩৭-[৯] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন তরকারী রান্না করো, পানি একটু বেশী করে দিও এবং প্রতিবেশীর প্রতি লক্ষ্য রেখ। (মুসলিম)[1]
بَابُ أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً فَأكْثر ماءها وتعاهد جيرانك» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি যখন গোশ্ত (গোশত/গোস্ত/গোসত) রান্না করবে তখন তাতে ঝোল একটু বেশি দিবে এবং প্রতিবেশীকে তা থেকে কিছু ঝোল দিবে। তুমি তোমার পাতিলে কম পানি দিও না। যদি কম পানি দাও তাহলে তুমি তোমার প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করতে পারবে না।