পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮১-[১০] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত, وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ অর্থাৎ ’’যেসব লোক সোনা-রূপা জমা করে রাখে’’- (সূরাহ্ আত্ তওবা্ ৯: ৩৪) আয়াতের শেষ পর্যন্ত নাযিল হল তখন সাহাবীগণ চিন্তিত হয়ে পড়ল। ’উমার (রাঃ) বলেন, আমি তোমাদের এ দুশ্চিন্তা নিরসন করে দিচ্ছি। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলেন। তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর নবী! এ আয়াত তো আপনার সাথীদের জন্য ভারি বোঝা হয়েছে। (এ কথা শুনে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা (সকল ব্যয় নির্বাহের পর) অবশিষ্ট মাল পবিত্র করার ব্যবস্থা স্বরূপ তোমাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন। আল্লাহ তা’আলা এজন্যই ওয়ারিস ঠিক করে দিয়েছেন। এরপর তিনি এ বাক্য উল্লেখ করলেন, যেন তোমাদের পরবর্তীরা যাতে এ মালের মালিক হয়ে যায়। ’আব্বাস (রাঃ)বলেন, এ কথা শুনে ’উমার (রাঃ) ’আল্ল-হু আকবার’ বলে উঠলেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’উমার (রাঃ) কে বললেন, আমি কি তোমাকে মানুষের সবচেয়ে উত্তম গচ্ছিত বস্তু সম্পর্কে অবহিত করব না? তা হলো চরিত্রবান স্ত্রী। স্বামী যখন তার প্রতি দৃষ্টিপাত করবে খুশী হয়ে যাবে, তাকে কোন হুকুম করলে পালন করবে, সে ঘরে না থাকলে তার ধন-সম্পদের সুরক্ষা করবে। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ (وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ)
كَبُرَ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ. فَقَالَ عُمَرُ أَنَا أُفَرِّجُ عَنْكُمْ فَانْطَلَقَ. فَقَالَ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ قد كبر على أَصْحَابك هَذِه الْآيَة. فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ لم يفْرض الزَّكَاة إِلَّا ليطيب بهَا مَا بَقِيَ مِنْ أَمْوَالِكُمْ وَإِنَّمَا فَرَضَ الْمَوَارِيثَ وَذكر كلمة لتَكون لمن بعدكم» قَالَ فَكَبَّرَ عُمَرُ. ثُمَّ قَالَ لَهُ: «أَلَا أُخْبِرُكَ بِخَيْرِ مَا يَكْنِزُ الْمَرْءُ الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ إِذَا نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ وَإِذَا أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ وَإِذَا غَابَ عَنْهَا حفظته» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ যখন সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্-র যাকাত সম্পর্কে ৩৪ নং আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ হে আল্লাহর নাবী! এ আয়াতটি মুসলিমদের ওপর খুবই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের সম্পদ পবিত্র করার জন্য ফরয করেছেন। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ উত্তম ধনভান্ডার হলো সতীনারী যে স্বামীর আনুগত্য করে।
ক্বাযী ‘আয়ায বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন, যে মালের যাকাত আদায় করলে তা জমা করা/গচ্ছিত রাখায় কোন সমস্যা নেই এবং দেখলেন যে, তারা এতে খুশি হয়েছেন তখন তার থেকে বিরত রাখার এর চেয়ে অধিক উত্তম এবং স্থায়ী বিষয়ের সংবাদ দিলেন। আর তা হল একজন সত্বী সুন্দরী রমণী। কারণ স্বর্ণ/অর্থ সম্পদ মানুষের সাথে কিছু সময়ের জন্য থাকে কিন্তু একজন রমণী তার দুনিয়ার জীবনের সাথী যার দিকে দৃষ্টিপাত করলে সে তোমাকে আনন্দিত করে, প্রয়োজনের সময় তুমি তার মাধ্যমে তোমার যৌনবৃত্তি পূর্ণ কর, কোন গোপন বিষয়ে তার সাথে পরামর্শ করলে সে তোমার গোপনীয়তা সংরক্ষণ করে, প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তার সাহায্য চাইলে সে তোমার আনুগত্য করে। যখন তুমি তার থেকে অনুপস্থিত থাকো তখন সে তোমার সম্পদ সংরক্ষণ করে পরিবারের যত্ন নেয়। আর এত কিছু না হলেও সে তোমার একটি সন্তান জন্ম দেয় যে জীবতাবস্থায় তোমার সহকারী এবং মৃত্যুর পরে তোমার খলীফা হবে। অতএব, তার অনেক ফযীলত রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮২-[১১] জাবির (রাঃ) ইবনু ’আতীক (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কাছে একটি ছোট কাফিলা (যাকাত আদায়কারী প্রশাসক) আসবেন। এরা লোকদের কাছে অযাচিত বিবেচিত হবে। তাই যখন তারা তোমাদের কাছে আসবে তখন স্বাগত জানাবে। তাদের কাছে যাকাতের মাল এনে জমা করবে। যদি তারা যাকাত উসূলে ইনসাফ করে তা তাদের উপকার করবে। আর যদি যুলম করে তাহলে তার পরিণাম ভোগ করবে। তোমরা যাকাত উসূলকারীদেরকে সন্তুষ্ট রাখবে। তোমাদের সকল সম্পদের যাকাত আদায় করাই হবে তাদের সন্তুষ্টির কারণ। যাকাত আদায়কারীদের উচিত হবে তোমাদের জন্য দু’আ করা। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
عَن جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَيَأْتِيكُمْ رُكَيْبٌ مُبَغَّضُونَ فَإِذا جاؤكم فَرَحِّبُوا بِهِمْ وَخَلُّوا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ مَا يَبْتَغُونَ فَإِنْ عَدَلُوا فَلِأَنْفُسِهِمْ وَإِنْ ظَلَمُوا فَعَلَيْهِمْ وَأَرْضُوهُمْ فَإِنَّ تَمَامَ زَكَاتِكُمْ رِضَاهُمْ وَلْيَدْعُوا لَكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসের অর্থ হল, কিছু যাকাত আদায়কারীদের চরিত্র ভাল হবে না। তারা অহংকারী হবে। তাদের সাথে তোমরা ভাল ব্যবহার করবে। তাদের প্রয়োজন মিটাতে সাহায্য করবে। তারা ইনসাফ করলে তাদেরই কল্যাণ। আর যুলম করলে তাদের ওপর পাপ বর্তাবে। তোমরা যাকাত প্রদান করে তাদেরকে খুশি করে বিদায় দিবে, যাতে তারা তোমাদের জন্য দু‘আ করে।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৩-[১২] জারীর ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) গ্রাম্য ’আরবদের কিছু লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলেন। তারা জানান যে, যাকাত আদায়কারী কিছু লোক তাদের কাছে যায় এবং তারা তাদের ওপর যুলম করে। (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদেরকে খুশী রাখো। তোমাদের সাথে যুলম করলেও তাদের খুশী করো। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
عَن جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: جَاءَ نَاسٌ يَعْنِي مِنَ الْأَعْرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: إِنَّ نَاسًا مِنَ المصدقين يَأْتُونَا فيظلمونا قَالَ: فَقَالَ: «أَرْضُوا مُصَدِّقِيكُمْ وَإِنْ ظُلِمْتُمْ» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকেও বুঝা যায় যে, যাকাত আদায়কারীগণ যদি মালদারদের উপর যুলম করে তবুও তাদের সাথে ভাল আচরণ করতে হবে। কারণ তাদের সন্তুষ্টির উপর যাকাত আদায়ের পূর্ণতা বহন করে। আর তাদের যুলমের জন্য তারাই দায়ী হবে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ‘‘তোমরা তোমাদের যাকাত আদায়কারীদের সন্তুষ্ট করবে যদিও তোমরা অত্যারিত হত’’ এর অর্থ যদি তোমাদের বিশ্বাস এটি হয় যে, তোমরা সম্পদের ভালবাসার কারণে অত্যাচারিত। তাঁর উদ্দেশ্য এটি নয় যে, তোমরা বাস্তবিক অত্যাচারিত হলেও তাদেরকে সন্তুষ্ট করা আবশ্যক বরং উদ্দেশ্য হল তাদেরকে সন্তুষ্ট করা মুস্তাহাব যদি তারা বাস্তবিক অত্যাচারিত হয়। যেহেতু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাদের সন্তুষ্টিই তোমাদের যাকাতে পূর্ণতা।
আল্লামা সিনদী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানেন যে, যাকাত আদায়কারী কর্মচারীগণ অত্যাচার করবে না। কিন্তু সম্পদের মালিকগণ সম্পদের প্রতি আসক্তির কারণে সম্পদ গ্রহণ করাকে যুলম মনে করে। ফলে তাদের যা বলার বলেছেন। ফলে এ হাদীসে যাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের অত্যাচারের স্বীকৃতি, মানুষের সেই অত্যাচারের উপর ধৈর্যধারণ করতে হবে এ বিষয়ের স্বীকৃতি কিংবা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ যাকাতের অতিরিক্ত যাকাত দিতে হবে এ ধরনের কোন বিষয় নেই।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৪-[১৩] বাশীর ইবনুল খাসাসিয়্যাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সবিনয়ে জানালাম যে, যাকাত আদায়কারীরা যাকাতের ব্যাপারে আমাদের উপর বাড়াবাড়ি করে। (এ অবস্থায়) পরিমাণের চেয়ে যে মাল তারা বেশী নেয়, আমরা কি তা গোপন রাখতে পারি? তিনি বললেন, না। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَنْ بَشِيرِ بْنِ الْخَصَاصِيَّةِ قَالَ: قُلْنَا: أَنَّ أَهْلَ الصَّدَقَةِ يَعْتَدُونَ عَلَيْنَا أَفَنَكْتُمُ مِنْ أَمْوَالِنَا بِقَدْرِ مَا يَعْتَدُونَ؟ قَالَ: «لَا» رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: যাকাত আদায়কারীরা যদি সীমালঙ্ঘন করে তবুও যাকাতের মাল গোপন করা ঠিক নয়। অর্থাৎ যদি আমরা জানতে পারি যে, তারা পাঁচটি উটে দু’টি ছাগল নিবে। অথচ তাদের হক হলো একটি ছাগল। সুতরাং আমাদের দশটি উট থাকলে পাঁচটি উট গোপন করব। মোটকথা এরূপ জায়িয নয়। কারণ কিচু মাল গোপন করা আমানাতের খিয়ানাত করা। আর খিয়ানাত হল একটি মিথ্যা এবং চক্রান্তমূলক কর্ম যা হারাম। তাই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের অনুমতি দেননি।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৫-[১৪] রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে প্রশাসক যথাযথভাবে যাকাত উসূল করে সে গাযীর মতো যতক্ষণ না সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে। (আবূ দাঊদ ও (তিরমিযী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَن رَافع بن خديح قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْعَامِلُ عَلَى الصَّدَقَةِ بِالْحَقِّ كَالْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى بَيْتِهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীস থেকে প্রমাণ হয় যে, হকভাবে যাকাত আদায় করা জিহাদে শরীক হওয়ার ন্যায় নেকীর কাজ। যতক্ষণ না ঐ যাকাত আদায়কারী স্বীয় বাড়ীতে ফিরে আসে ততক্ষণ সে নেকী পেতেই থাকে। যেমনিভাবে জিহাদকারীর ব্যাপারে প্রমাণ আছে।
হকভাবে যাকাত আদায় করার অর্থ হলো, নিষ্ঠা এবং সাওয়াবের আশায় সে কর্ম করা অথবা আদায়কৃত যাকাতের মালের মধ্যে খিয়ানাত না করা, সম্পদের মালিকদের উপর অত্যাচার না করা কম বেশি সম্পদ গ্রহণের মাধ্যমে।
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় তিরমিযীর ভাষ্যকার ইবনুল আরাবী (রহঃ) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মহান দাতা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুজাহিদের বাহন প্রস্ত্তত করে দিল সে জিহাদে অংশগ্রহণকারীর সমান নেকীর অধিকারী হল, আর যে উত্তম ভাবে মুজাহিদের পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণ করল সেও মুজাহিদের সমপরিমাণ নেকী পেল। আর সদাক্বাহ্/যাকাত সংগ্রাহক মুজাহিদের প্রতিনিধি। কেননা সে আল্লাহর রাস্তায় মাল একত্রিত করে। অতএব সে তার কর্মে ও নিয়্যাতে গাজী।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই মাদানীয় কিছু লোক রয়েছে যারা (মদীনায় অবস্থান করেও) জিহাদের উদ্দেশে তোমরা সেখানেই গিয়েছে তোমাদের সাথে থেকেছে। কারণ ওযর তাদেরকে বন্দী করে রেখেছে। এটি যদি এদের অবস্থা হয় তাহলে যে ব্যক্তিকে গাজীর কাজ, তার প্রতিনিধিত্ব এবং সে আল্লাহর পথে যে মাল খরচ করে তার একত্রিতকরণ জিহাদের যাওয়া থেকে বিরত রাখে তার বিষয়টি কেমন হতে পারে। জিহাদ করা যেমন আবশ্যক তেমনি যাকাতের সম্পদ সংগ্রহ করাও আবশ্যক। এক্ষেত্রে তারা দু’জন নিয়্যাত এবং কর্মে পরস্পরের অংশীদার। তাই নেকীর ক্ষেত্রেও উভয়ে সমান হবে।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৬-[১৫] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যাকাত উসূলকারীর কাছে চতুষ্পদ পশুকে টেনে আনবে না। কিংবা চতুষ্পদ পশুর মালিকগণও দূরে সরে থাকবে না। এসব পশুর যাকাত তাদের অবস্থানে বসেই উসূল করবে। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا جَلَبَ وَلَا جَنَبَ وَلَا تُؤْخَذُ صَدَقَاتُهُمْ إِلَّا فِي دُورِهِمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: যাকাত আদায়কারী যেন যাকাত আদায় করার সময় এক স্থানে বসে না থাকে। বরং লোকদের বাড়ী বাড়ী যেয়ে যাকাত আদায় করে। আবার মালওয়ালারা তাদের জানোয়ার (ছাগল, গরু ও উট) দূরে না নিয়ে গিয়ে আপন গৃহে অবস্থান করবে। যাতে যাকাত আদায়কারীদের কষ্ট না হয়। মোটকথা যাকাত সংগ্রাহক মানুষের গৃহে গিয়ে যাকাত সংগ্রহ করবে এবং যাকাত আদায়ের কাজে একে অপরকে সাহায্য করবে।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৭-[১৬] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন ধন-সম্পদ লাভ করবে, এক বছর অতিবাহিত হবার আগে এ ধন-সম্পদের উপর তাকে যাকাত দিতে হবে না। (তিরমিযী; একদল লোক বলেছেন, এ হাদীসটির সানাদ ইবনু ’উমার (রাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত নয়।)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ اسْتَفَادَ مَالًا فَلَا زَكَاة فِيهِ حَتَّى يحول عيه الْحَوْلُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَذَكَرَ جَمَاعَةٌ أَنَّهُمْ وَقَفُوهُ على ابْن عمر
ব্যাখ্যা: ইবনু মালিক বলেনঃ এ হাদীস হতে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি কোন মাল অর্জন করল আর তার নিকট ঐ মালেরই নিসাব পরিমাণ মাল আছে, যেমন- তার ৮০টি ছাগল আছে। যার উপর ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে। অতঃপর তার আরো ৪১টি ছাগল জমা হলো ক্রয়ের মাধ্যমে হোক বা ওয়ারিসী সূত্রে হোক, তাহলে পরের ৪১টি ছাগলের উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না যতক্ষণ না ক্রয়ের সময় বা ওয়ারিসী সূত্রে পাওয়ার সময় থেকে একটি বৎসর পূর্ণ হবে। আর এটি ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদের মত।
পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও ইমাম মালিক-এর নিকট পরের মাল আগের মালের হিসাবের সঙ্গে একই হিসেবে গণ্য হবে। যেমন- বাচ্চা মায়ের অনুগামী হয়। সুতরাং এক বৎসর পূর্ণ হলে ৮০টির উপর ২টি ছাগল ওয়াজিব হবে। আর এটি আহলে হাদীসদের অভিমত। কারণ এক প্রকারের মাল হলে পরের মাল আগের মালের সাথে যোগ করতে হবে।
কোন বস্ত্তর বৃদ্ধি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। হয় লভ্যাংশের মাধ্যমে তার বৃদ্ধি ঘটবে অথবা প্রাপ্ত কোন উপঢৌকন, মীরাসের সম্পত্তি এবং যাকাত দেয়া হয় না এমন ক্রয়কৃত মালের মাধ্যমে বৃদ্ধি ঘটবে। অথবা চতুষ্পদ জন্তুর প্রসবকৃত বাচ্চার মাধ্যমে বৃদ্ধি ঘটবে। বর্ধিত এই সম্পত্তিগুলো মূল মালের সাথে মিলানো এবং তার গণনার ক্ষেত্রে ‘আলিমদের মাঝে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়েছে।
লভ্যাংশের মাধ্যমে বর্ধিত সম্পত্তির ক্ষেত্রে হুকুম হলো যদি মূল মাল নিসাব পরিমাণ হয় তাহলে লভ্যাংশের মাধ্যমে বর্ধিত মালকে মূল মালের সাথে মিলিয়ে তার বছর অনুপাতে যাকাত দিতে হবে। (অর্থাৎ কারো নিকট পাঁচলক্ষ টাকা থেকে বছর শুরু হল, অতঃপর সাত মাস পর পঞ্চাশ হাজার টাকা লভ্যাংশ তার সাথে যোগ হল। তাই বছর শেষে সব টাকা হিসাব করে একসাথে যাকাত দিতে হবে। লভ্যাংশের মাধ্যমে বর্ধিত টাকার জন্য নতুনভাবে বছর গণনা করা যাবে না) আর যদি মূল মাল নিসাব পরিমাণ না হয় তাহলে লভ্যাংশের মাধ্যমে বর্ধিত মালের কোন যাকাত দেয়া লাগবে না।
চতুষ্পদ জন্তুর প্রসবকৃত বাচ্চার মাধ্যমে বর্ধিত হুকুম লভ্যাংশেল মাধ্যমে বর্ধিত হুকুমের ন্যায়।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৮-[১৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) এক বছর পরিপূর্ণ হবার আগে নিজের যাকাত দিতে পারা যাবে কিনা ’আব্বাস (রাঃ)তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে অনুমতি দিলেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ الْعَبَّاسَ سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي تَعْجِيل صَدَقَة قَبْلَ أَنْ تَحِلَّ: فَرَخَّصَ لَهُ فِي ذَلِكَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ
ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীস প্রমাণ করে যে, বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগে যাকাত আদায় করা জায়িয। এটি ইমাম শাফি‘ঈ, ইমাম আহমাদ ও ইমাম আবূ হানীফার মত। আর এটিই আহলে হাদীসদের মত। তবে ইমাম মালিক-এর নিকট জায়িয নয়।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৯-[১৮] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদিন) লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সাবধান! যে ব্যক্তি কোন ইয়াতীমের অভিভাবক হবে, (আর সে ইয়াতীমের যাকাত দেবার মতো ধন-সম্পদ হবে) সে যেন এ ধন-সম্পদকে ফেলে না রেখে ব্যবসায়ে খাটায়। কারণ ব্যবসা করা ছাড়া মাল আটকে রাখলে যাকাত দিতে দিতে তা শেষ হয়ে যাবে। (তিরমিযী; তিনি বলেন, এ হাদীসের সানাদের ব্যাপারে কথা আছে। কারণ এর একজন বর্ণনাকারী দুর্বল।)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ النَّاسَ فَقَالَ: «أَلَا مَنْ وَلِيَ يَتِيمًا لَهُ مَالٌ فَلْيَتَّجِرْ فِيهِ وَلَا يَتْرُكْهُ حَتَّى تَأْكُلَهُ الصَّدَقَةُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: فِي إِسْنَادِهِ مقَال: لِأَن الْمثنى بن الصَّباح ضَعِيف
ব্যাখ্যা: শিশুর সম্পদে যাকাত ওয়াজিব কিনা এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আহমাদ (রহঃ)-এর মতে শিশুর সম্পদে যাকাত ওয়াজিব যা এ হাদীস থেকে প্রতীয়মান। ইমাম আবু হানীফার মতে, শিশুর সম্পদে যাকাত ওয়াজিব নয়। যদিও তার মতে শিশুর ফসল ফলফলাদিতে উশর আবশ্যক এবং তার সদাক্বাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। তার দলীল হল তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে একজন হল শিশু যতক্ষণ সে প্রাপ্ত বয়সে না পৌঁছে।
ইবনু কুদামাহ্ (রহঃ) বলেন, শিশু এবং পাগলের সম্পদে যাকাত আবশ্যক। যেহেতু তাদের মাঝে স্বাধীনতা, ইসলাম এবং পূর্ণ মালিকানা এ তিনটি শর্তই বিদ্যমান। এটিই সাহাবীদের মধ্যে ‘আলী, ইবনু ‘উমার, ‘আয়িশাহ্, হাসান, ‘উমার এবং জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) আর অন্যদের মধ্যে জাবির ইবনু জায়দ, ইবনু সীরিন, ‘আত্বা, মুজাহিদ, রবী‘আহ্, মালিক, শাফি‘ঈ (রহঃ) সহ আরো অনেকের অভিমত। যদিও এক্ষেত্রে ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) হতে সামান্য ভিন্নমত বর্ণিত হয়েছে কিন্তু সে আসারের সানাদ বিশুদ্ধ নয়। এ বিষয়ে তিরমিযীর ভাষ্যকার ‘আবদুর রহমান মুবারকপূরী বলেন, কোন একজন সাহাবী থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে এ কথা বর্ণিত হয়নি যে, শিশুর মালে যাকাত আবশ্যক নয়।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৯০-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর আবূ বকর সিদ্দীক্ব (রাঃ)খলীফাহ্ হন তখন ’আরাবের কিছু লোক যাকাত প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানায়। (আবূ বকর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুনে) ’উমার (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি কিভাবে যুদ্ধ করবেন? অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, মানুষ যে পর্যন্ত ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই- এ কথার) ঘোষণা না দিবে ততক্ষণ তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে ব্যক্তি ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’’ বলল সে নিজের ধন-সম্পদ ও জীবন আমার থেকে নিরাপদ করে নিলো। তবে ইসলামের কারণে হলে ভিন্ন কথা। আর এর হিসাব আল্লাহর কাছে। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম যে ব্যক্তি সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করবে, আমি অবশ্য অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। কারণ নিঃসন্দেহে যাকাত সম্পদের হক। আল্লাহর কসম! তারা (যাকাত অস্বীকারকারীরা) যদি আমাকে একটি ছাগলের বাচ্চাও দিতে অস্বীকার করে যা তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় দিত, তাহলেও আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। (তখন) ’উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! যুদ্ধের এ সিদ্ধান্ত আল্লাহর তরফ থেকে আবূ বকর-এর অন্তর্চক্ষু খুলে দেয়া ছাড়া আর কিছু বলে আমি মনে করি না। (বুখারী, মুসলিম)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِى
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ: يَا أَبَا بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ فَمَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلَّا بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ على الله . قَالَ أَبُو بَكْرٍ: وَاللَّهِ لَأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللَّهِ لَوْ مَنَعُونِي عَنَاقًا كَانُوا يُؤَدُّونَهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهَا. قَالَ عُمَرُ: فَوَاللَّهِ مَا هُوَ إِلَّا أَن رَأَيْت أَن قد شرح الله صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাতের পর মুসায়লামাহ্-এর অনুসারী ইয়ামামাহবাসী ও অন্যকিছু সংখ্যক ‘আরবরা মুরতাদ হয়ে যায়। তখন আবূ বাকর সিদ্দীক্ব (রহঃ) সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ-এর নেতৃত্বে। অবশেষে মুসায়লামাহ্-কে হত্যা করা হয়। অপর একটি দল যাকাত দিতে অস্বীকার করে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। আর এদের সংখ্যা ছিল অনেক। ফাতহুল বারীতে উল্লেখ হয়েছে যে, ক্বাযী ‘আয়ায (রহঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পর মুরতাদরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল মূর্তিপূজা আরম্ভ করে। আরেকদল মুসায়লামাহ্ ও আসওয়াদ আল আনাসীর অনুসরণ করে। ৩য় দলটি ইসলামের উপর থাকে কিন্তু যাকাত দিতে অস্বীকার করে। তারা যাকাতের বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগের সাথে নির্দিষ্ট বলে তা‘বীল করে। আবূ বাকর (রাঃ) তাদের সাথে প্রথমেই যুদ্ধ করেননি বরং তাদেরকে তাদের ভুলপথ হতে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে যাকাত দিতে বলেছেন। এরপরও যখন তারা তা অস্বীকার করে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নিয়েছে তখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছেন।