পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেনঃ যাকাত ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। এটা শারী’আতের একটি শক্তিশালী বিষয়। যে ব্যক্তি যাকাতের ফারযিয়্যাতকে অমান্য করবে সে কাফির হয়ে যাবে। যাকাতের লাগবী অর্থ বৃদ্ধি, বারাকাত ও পবিত্র করা। যাকাত আদায় করলে মাল বৃদ্ধি পায় ও মাল পবিত্র হয়। আর যাকাত আদায়কারী গুনাহ থেকে পবিত্র হয়। আর যাকাতের শার’ঈ অর্থ হলো নিসাব পূর্ণ সম্পদে এক বৎসর অতিবাহিত হলে তা ফকীর, মিসকীন ও অন্যান্যদের মাঝে নির্ধারিত পন্থায় আদায় করা। অতঃপর যাকাতের রুকন, কারণ হিকমাত ও শর্ত রয়েছে। তা ফরয হওয়ার কারণ হলো মালের মালিক হওয়া। যাকাতের শর্ত হলো (মালের ক্ষেত্রে) নিসাব পরিমাণ হওয়া, বৎসর পূর্ণ হওয়া এবং (ব্যক্তির ক্ষেত্রে) বালেগ ও স্বাধীন হওয়া। হিকমাত হলো দুনিয়ার কর্তব্য পালন হওয়া এবং আখিরাতের সাওয়াব ও দরজা অর্জন হওয়া। আর গুনাহ হতে পবিত্র হওয়া এবং কৃপণতার দায় থেকে বাঁচা।

প্রকাশ থাকে যে, অধিকাংশ ’উলামাদের মতে যাকাত হিজরতের পর ফরয হয়। তারা দ্বিতীয় হিজরীতে ফরয হওয়ার মত ব্যক্ত করেন। কেউ কেউ বলেন, হিজরতের পূর্বে ফরয হয়েছে।


১৭৭২-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠাবার সময় বললেন, মু’আয! তুমি আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও খৃস্টান) নিকট যাচ্ছো। প্রথমতঃ তাদেরকে এ লক্ষ্যে দীনের প্রতি আহবান করবে, এক আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল। যদি তারা এটা মেনে নেয় তাহলে তাদের সামনে এই ঘোষণা দেবে যে, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তাদের ওপর দিনরাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয করেছেন। তারা এটা মেনে নিলে তাদেরকে জানাবে, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন। তাদের ধনীদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করে তাদের গরীবদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। যদি তারা এ হুকুমের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তাহলে তুমি (তাদের) ভাল ভাল মাল গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে, মাযলূমের ফরিয়াদ হতে বাঁচার চেষ্টা করবে। কেননা মাযলূমের ফরিয়াদ আর আল্লাহ তা’আলার মধ্যে কোন আড়াল থাকে না। (বুখারী, মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ: «إِنَّك تَأتي قوما من أهل الْكتاب. فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ. فَإِنْ هُمْ أطاعوا لذَلِك. فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ. فَإِنْ هم أطاعوا لذَلِك فأعلمهم أَن الله قد فرض عَلَيْهِم صَدَقَة تُؤْخَذ من أغنيائهم فَترد فِي فُقَرَائِهِمْ. فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ. فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَين الله حجاب»

عن ابن عباس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم بعث معاذا الى اليمن فقال: «انك تاتي قوما من اهل الكتاب. فادعهم الى شهادة ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله. فان هم اطاعوا لذلك. فاعلمهم ان الله قد فرض عليهم خمس صلوات في اليوم والليلة. فان هم اطاعوا لذلك فاعلمهم ان الله قد فرض عليهم صدقة توخذ من اغنياىهم فترد في فقراىهم. فان هم اطاعوا لذلك. فاياك وكراىم اموالهم واتق دعوة المظلوم فانه ليس بينها وبين الله حجاب»

ব্যাখ্যা : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবনু জাবালকে ইয়ামানে বিদায়ী হাজ্জের (হজ্জের/হজের) পূর্বে ১০ হিঃ প্রেরণ করেন। ইবনু ‘আবদুল বার (রহঃ) তার ‘‘ইসতিয়াব’’ গ্রন্থে বলেছেন, তিনি মু‘আযকে ইয়ামানের জুনদ প্রদেশে ক্বাযীরূপে এ দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেন যে, তিনি মানুষদেরকে কুরআন, ইসলামের নিদর্শনাবলী শিক্ষা দিবেন এবং যাকাত আদায়কারীদের থেকে যাকাত গ্রহণ করবেন। আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ ব্যক্তির মাঝে ইয়ামানের দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। তারা হলেন খালিদ বিন সা‘ঈদকে ‘সান্আ’র, মুহাজির বিন আবী উমাইয়্যাহ্-কে ‘কিনদার’, যিয়াদ বিন লাবিদকে ‘হাযরা মাওত’-এর, মু‘আযকে ‘জুনদ’-এর আর আবূ মূসাকে ‘যুবায়দ’, যুম্‘আহ্ আদন ও সাহিল’-এর দায়িত্ব। ইবনু হাজার বলেন, জুনদ-এ অদ্যাবধি মু‘আয-এর একটি প্রসিদ্ধ মাসজিদ রয়েছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আযকে মানুষদের সর্বপ্রথম শাহাদাতাইনের দিকে দা‘ওয়াত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ তা হলো দীনের মৌলিক বিষয় যা ব্যতীত দীনের অন্যান্য বিষয় শুদ্ধ হবে না।

অতএব যদি কারো ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, সে নাস্তিক তাহলে তাকে উভয়টির শাহাদাহ্ দিতে হবে। আর যদি আস্তিক হয় তাহলে তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রিসালাতের শাহাদাহ্ দিয়ে উভয়টির মাঝে সমন্বয় করতে হবে। সেখানে আহলে কিতাবরা বসবাস করত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে প্রথমে তাওহীদের দিকে আহবান করতে বলেন। এটি গ্রহণ করলে তারপর দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে বলেন। অতঃপর তাদেরকে যাকাত ফারযের (ফরযের/ফরজের) কথা অবহিত করতে বলেন। আর যাকাত আদায়ের সময় যুলম করতে নিষেধ করেন। কারণ মাযলূমের দু‘আ তাড়াতাড়ি আল্লাহর কাছে কবূল হয়। যদিও সে পাপী হয়, কেননা তার  পাপ তার নিজের উপর বর্তাবে।

শাহাদাতায়নের ব্যতীত শারী‘আতের অন্যান্য বিধানগুলোর ক্ষেত্রে কাফিররাও সম্বন্ধিত কিনা এ ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। এ হাদীসের আলোকে কেউ কেউ বলেছেন, তারা অন্যান্য বিধানের ক্ষেত্রে সম্বন্ধিত নয়। কারণ এখানে প্রথমত তাদের শুধুমাত্র ঈমানের দিকে দাওয়াতের নির্দেশ এসেছে। অতপর ঈমান গ্রহণ করলে অন্যান্য বিধানের দিকে দা‘ওয়াতের নির্দেশ এসেছে। তবে অধিকাংশদের মতে, তারা বিশ্বাস স্থাপন এবং কার্যে প্রতিফলন উভয় দিক থেকে শরীয়াতের বিভিন্ন বিধানের ক্ষেত্রে সম্বন্ধিত। হাদীসে বলা হয়েছে, ধনীদের থেকে যাকাতের মাল গ্রহণ করে তা তাদের দরিদ্রের মাঝে বিতরণ করবে ‘‘এ উক্তির আলোকে উলামাগণ মতবিরোধ করেছেন যে, এক এলাকার যাকাতের সম্পদ অন্য এলাকায়/দেশে স্থানান্তর করা যাবে কি না? এ হাদীসের আলোকে কেউ কেউ বলেছেন, স্থানান্তর করা যাবে না। যেহেতু হাদীসে ইয়ামানবাসীদের উদ্দেশে এটি বলা হয়েছে যে, তাদের যারা ধনী তাদের থেকে নিয়ে সে এলাকার দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করবে। আবূ হানীফা, ইমাম বুখারীসহ আরো অনেকের মতে স্থানান্তর করা যাবে। ইমাম মালেক, শাফেয়ী এবং আব্দুর রহমান মুবারকপুরীর মতে তা স্থানান্তর করা যাবে না। তবে যদি সে এলাকা যাকাত গ্রহণ করার মত কেউ না থাকে। কিংবা স্থানান্তর করাতে অধিক কল্যাণ নিহিত থাকে তাহলে করা যাবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৩-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সোনা রূপার (নিসাব পরিমাণ) মালিক হবে অথচ তার হক (যাকাত) আদায় করবে না তার জন্য কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন (তা দিয়ে) আগুনের পাত বানানো হবে। এগুলোকে জাহান্নামের আগুনে এমনভাবে গরম করা হবে যেন তা আগুনেরই পাত। সে পাত দিয়ে তার পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। তারপর এ পাত পৃথক করা হবে। আবার আগুনে উত্তপ্ত করে তার শরীরে লাগানো হবে। আর লাগানোর সময়ের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। (এ অবস্থা চলবে) বান্দার (জান্নাত জাহান্নামের) ফায়সালা হওয়া পর্যন্ত।

তারপর তাকে নেয়া হবে জান্নাত অথবা জাহান্নামে। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! উটের বিষয়টি (যাকাত না দেবার পরিণাম) কি? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উটের মালিক যদি এর হক (যাকাত) আদায় না করে- যেদিন উটকে পানি খাওয়ানো হবে সেদিন তাকে দুহানোও তার একটা হক- কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তিকে সমতল ভূমিতে উটের সামনে মুখের উপর উপুড় করে। তার সবগুলো উট গুণে গুণে (আনা হবে) মোটা তাজা একটি বাচ্চাও কম হবে না। এসব উট মালিককে নিজেদের পায়ের নীচে ফেলে পিষতে থাকবে, দাঁত দিয়ে কামড়াবে। এ উটগুলো চলে গেলে, আবার আর একদল উট আসবে। যেদিন এমন ঘটবে, সে দিনের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এমনকি বান্দার হিসাব-নিকাশ শেষ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামের দিকে অগ্রসর হবে।

সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের যাকাত আদায় না করলে (মালিকদের) কি অবস্থা হবে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি গরু-ছাগলের মালিক হয়ে এর হক (যাকাত) আদায় করে না কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তাকে সমতল ভূমিতে উপুড় করে ফেলা হবে। তার সব গরু ও ছাগলকে (ওখানে আনা হবে) একটুও কম-বেশি হবে না। গরু-ছাগলের শিং বাঁকা কিংবা ভঙ্গ হবে না। শিং ছাড়াও কোনটা হবে না। এসব গরু ছাগল শিং দিয়ে মালিককে গুতো মারতে থাকবে, খুর দিয়ে পিষবে। এভাবে একদলের পর আর একদল আসবে। এ সময়ের মেয়াদও হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এর মধ্যে বান্দার হিসাব-নিকাশ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামে তার গন্তব্য দেখতে পাবে।

সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার অবস্থা কি হবে? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঘোড়া তিন প্রকারের। প্রথমতঃ যা মানুষের জন্য গুনাহের কারণ হয়। দ্বিতীয়তঃ যা মানুষের জন্য পর্দা। আর তৃতীয়তঃ মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ।

গুনাহের কারণ ঘোড়া হলো ঐ মালিকের, যেগুলোকে সে মুসলিমদের ওপর তার গৌরব, অহংকার ও শৌর্যবীর্য দেখাবার জন্য পালন করে। আর যেগুলো মালিক-এর জন্য পর্দা হবে, সেগুলো ঐ ঘোড়া, যে সবের ঘোড়ার মালিক আল্লাহর পথে লালন পালন করে। সেগুলোর পিঠ ও গর্দানের ব্যাপারে আল্লাহর হক ভুলে যায় না। মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ ঘোড়া ব্যক্তির যে মালিক আল্লাহর পথের মুসলিমদের জন্য তা’ পালে। এদেরকে সবুজ মাঠে রাখে। এসব ঘোড়া যখন আসে ও চারণ ভূমিতে সবুজ ঘাস খায়, তখন ওই (ঘাসের সংখ্যার সমান) সাওয়াব তার মালিক-এর জন্য লিখা হয়। এমনকি এদের গোবর ও পেশাবের পরিমাণও তার জন্য সাওয়াব হিসেবে লিখা হয়। সেই ঘোড়া রশি ছিঁড়ে যদি এক বা দু’টি ময়দান দৌড়ে ফিরে, তখন আল্লাহ তা’আলা এদের কদমের চিহ্ন ও গোবরের (যা দৌড়াবার সময় করে) সমান সাওয়াব তার জন্য লিখে দেন। এসব ঘোড়াকে পানি পান করাবার জন্য নদীর কাছে নেয়া হয়, আর এরা নদী হতে পানি পান করে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা ঘোড়াগুলোর পান করা পানির পরিমাণ সাওয়াব ওই ব্যক্তির জন্য লিখে দেন। যদি মালিক-এর পানি পান করাবার ইচ্ছা নাও থাকে। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! গাধার ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি বললেন গাধার ব্যাপারে আমার ওপর কোন হুকুম নাযিল হয়নি। সকল নেক কাজের ব্যাপারে এ আয়াতটিই যথেষ্ট ’’যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ নেক ’আমল করবে তা সে দেখতে পাবে। আর যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ বদ ’আমল করবে তাও সে দেখতে পাবে’’- (সূরাহ্ আয্ যিলযাল ৯৯: ৭-৮)। (মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ صَاحِبِ ذَهَبٍ وَلَا فِضَّةٍ لَا يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ صُفِّحَتْ لَهُ صَفَائِحُ مِنْ نَارٍ فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ وجبينه وظهره كلما بردت أُعِيدَتْ لَهُ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَالْإِبِلُ؟ قَالَ: «وَلَا صَاحِبُ إِبِلٍ لَا يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا وَمِنْ حَقِّهَا حَلْبُهَا يَوْمَ وِرْدِهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ أَوْفَرَ مَا كَانَت لَا يفقد مِنْهَا فصيلا وَاحِدًا تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا وَتَعَضُّهُ بِأَفْوَاهِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أولاها رد عَلَيْهِ أخراها فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّار» قيل: يَا رَسُول الله فَالْبَقَرُ وَالْغَنَمُ؟ قَالَ: «وَلَا صَاحِبُ بَقْرٍ وَلَا غَنَمٍ لَا يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ لَا يَفْقِدُ مِنْهَا شَيْئًا لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ وَلَا جَلْحَاءُ وَلَا عَضْبَاءُ تَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَظْلَافِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُولَاهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ فَيُرَى سَبِيلُهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ» . قِيلَ: يَا رَسُول الله فالخيل؟ قَالَ: الْخَيل ثَلَاثَةٌ: هِيَ لِرَجُلٍ وِزْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ سِتْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ. فَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ وِزْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا رِيَاءً وَفَخْرًا وَنِوَاءً عَلَى أَهْلِ الْإِسْلَامِ فَهِيَ لَهُ وِزْرٌ. وَأَمَّا الَّتِي لَهُ سِتْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ لَمْ يَنْسَ حَقَّ اللَّهِ فِي ظُهُورِهَا وَلَا رِقَابِهَا فَهِيَ لَهُ سِتْرٌ. وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبِيلِ الله لأهل الْإِسْلَام فِي مرج أَو رَوْضَة فَمَا أَكَلَتْ مِنْ ذَلِكَ الْمَرْجِ أَوِ الرَّوْضَةِ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا كُتِبَ لَهُ عَدَدَ مَا أَكَلَتْ حَسَنَاتٌ وَكُتِبَ لَهُ عَدَدَ أَرْوَاثِهَا وَأَبْوَالِهَا حَسَنَاتٌ وَلَا تَقْطَعُ طِوَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ إِلَّا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ عَدَدَ آثَارِهَا وأوراثها حَسَنَاتٍ وَلَا مَرَّ بِهَا صَاحِبُهَا عَلَى نَهْرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلَا يُرِيدُ أَنْ يَسْقِيَهَا إِلَّا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ عَدَدَ مَا شَرِبَتْ حَسَنَاتٍ قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَالْحُمُرُ؟ قَالَ: مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ فِي الْحُمُرِ شَيْءٌ إِلَّا هَذِهِ الْآيَةُ الْفَاذَّةُ الْجَامِعَةُ (فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ)
الزلزلة. رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما من صاحب ذهب ولا فضة لا يودي منها حقها الا اذا كان يوم القيامة صفحت له صفاىح من نار فاحمي عليها في نار جهنم فيكوى بها جنبه وجبينه وظهره كلما بردت اعيدت له في يوم كان مقداره خمسين الف سنة حتى يقضى بين العباد فيرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار» قيل: يا رسول الله فالابل؟ قال: «ولا صاحب ابل لا يودي منها حقها ومن حقها حلبها يوم وردها الا اذا كان يوم القيامة بطح لها بقاع قرقر اوفر ما كانت لا يفقد منها فصيلا واحدا تطوه باخفافها وتعضه بافواهها كلما مر عليه اولاها رد عليه اخراها في يوم كان مقداره خمسين الف سنة حتى يقضى بين العباد فيرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار» قيل: يا رسول الله فالبقر والغنم؟ قال: «ولا صاحب بقر ولا غنم لا يودي منها حقها الا اذا كان يوم القيامة بطح لها بقاع قرقر لا يفقد منها شيىا ليس فيها عقصاء ولا جلحاء ولا عضباء تنطحه بقرونها وتطوه باظلافها كلما مر عليه اولاها رد عليه اخراها في يوم كان مقداره خمسين الف سنة حتى يقضى بين العباد فيرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار» . قيل: يا رسول الله فالخيل؟ قال: الخيل ثلاثة: هي لرجل وزر وهي لرجل ستر وهي لرجل اجر. فاما التي هي له وزر فرجل ربطها رياء وفخرا ونواء على اهل الاسلام فهي له وزر. واما التي له ستر فرجل ربطها في سبيل الله ثم لم ينس حق الله في ظهورها ولا رقابها فهي له ستر. واما التي هي له اجر فرجل ربطها في سبيل الله لاهل الاسلام في مرج او روضة فما اكلت من ذلك المرج او الروضة من شيء الا كتب له عدد ما اكلت حسنات وكتب له عدد ارواثها وابوالها حسنات ولا تقطع طولها فاستنت شرفا او شرفين الا كتب الله له عدد اثارها واوراثها حسنات ولا مر بها صاحبها على نهر فشربت منه ولا يريد ان يسقيها الا كتب الله له عدد ما شربت حسنات قيل: يا رسول الله فالحمر؟ قال: ما انزل علي في الحمر شيء الا هذه الاية الفاذة الجامعة (فمن يعمل مثقال ذرة خيرا يره ومن يعمل مثقال ذرة شرا يره) الزلزلة. رواه مسلم

ব্যাখ্যা : উক্ত হাদীস হতে প্রমাণ হয় যে, স্বর্ণ ও রূপা যাকাত আদায় না করে জমা করে রাখলে, উক্ত মাল জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে মালিক-এর ললাটে, পার্শ্বদেশসমূহ এবং পৃষ্ঠদেশসমূহে দাগ দেয়া হবে। অন্যান্য অঙ্গ থেকে এ তিনটি অঙ্গকে উল্লেখ করার কারণ হল, চেহারায় দাগ দিলে অধিক কদর্য দেখায় আর পার্শ্বদেশ এবং পিঠে দাগ দিলে অধিক ব্যথা অনুভূত হয়। আবার কেউ কেউ বলেছেন, কারণ একজন ভিক্ষুক কোন কৃপণের নিকট চাইলে সর্বপ্রথম তার চেহারায় বিরক্তি, অপছন্দের ভাব পরিস্ফুটিত হয়, তার কপালে ভাজ পড়ে। আবার তাই চাইলে তার থেকে পার্শ্বদেশ পরিবর্তন করে। পুনরায় চাইতে গেলে সে তাকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়। এজন্য এ তিনটি অঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্-এ ৩৪ ও ৩৫ নং আয়াতে এরই বর্ণনা করা হয়েছে। আয়াতের অর্থঃ ‘‘হে মু’মিনগণ! অধিকাংশ ‘আলিম ও ধর্মযাজকগণ মানুষের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে। আর তারা আল্লাহর রাস্তা হতে (মানুষকে) বাধা দেয়।

যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে আর তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, (হে নাবী!) আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক এক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।

যেদিন জাহান্নামের আগুনে ঐগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর তা দ্বারা তাদের ললাটসমূহে, পার্শ্বদেশসমূহ এবং পৃষ্ঠদেশসমূহে দাগ দেয়া হবে, (আর বলা হবে) এটা হচ্ছে ওটাই যা তোমরা নিজেদের জন্যে সঞ্চয় করে রেখেছিলে, সুতরাং এখন নিজেদের সঞ্চয়ের স্বাদ গ্রহণ করো।’

এভাবে ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) পর্যন্ত তার ‘আযাব হতে থাকবে। অতঃপর হয় তার রাস্তা জান্নাত না হয় জাহান্নাম। এভাবে অন্য মালেও একই হুকুম জারি হবে।

হাদীসে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিনকে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান বলা হয়েছে যা মূলত কাফিরদের ওপর। আর পাপীদের ওপর তাদের পাপানুপাতে দীর্ঘায়িত হবে। কিন্তু পরিপূর্ণ মু’মিনদের জন্য দিনটি ফাজরের (ফজরের) দুই রাক্‘আত সালাতের মতো দীর্ঘ মনে হবে। অর্থাৎ তাদের জন্য নির্দিষ্ট দিনটি কঠিন হবে না যেমনটি কাফিরদের জন্য।

আলওয়ালী আল ‘ইরাক্বী বলেন, مَرَجٌ হল উদ্ভিদ বা ঘাস বিশিষ্ট সেই প্রশস্ত ভূখন্ড যেখানে চতুষ্পদ জন্তু চরে বেড়ায় ইচ্ছামত যাতায়াত করতে পারে। আর رَوْضَةٌ (বাগান) হল অধিক পানি বিশিষ্ট স্থান যেখানে পর্যাপ্ত পানি থাকায় গোলাপ ফুলসহ আরো নানা ধরনের উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়। উভয়টির মাঝে পার্থক্য হল মারাজকে চতুষ্পদ জন্তু চরার জন্য প্রস্ত্তত করা হয় আর رَوْضَةٌ কে মানুষের বিনোদনের জন্য প্রস্ত্তত করা হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৪-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন, অথচ সে ঐ ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করেনি, সে ধন-সম্পদকে কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন টাকমাথা সাপে পরিণত হবে। এ সাপের দু’ চোখের উপর দু’টি কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ বিষাক্ত সাপ)। এরপর ঐ সাপ গলার মালা হয়ে ব্যক্তির দু’ চোয়াল আঁকড়ে ধরে বলবে, আমিই তোমার সম্পদ, আমি তোমার সংরক্ষিত ধন-সম্পদ। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ’’যারা কৃপণতা করে, তারা যেন মনে না করে এটা তাদের জন্য উত্তম বরং তা তাদের জন্য মন্দ। কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন অচিরেই যা নিয়ে তারা কৃপণতা করছে তা তাদের গলার বেড়ী করে পরিয়ে দেয়া হবে’’- (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (বুখারী)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذ بِلِهْزِمَتَيْهِ - يَعْنِي بشدقيه - يَقُولُ: أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ . ثُمَّ تَلَا هَذِه الْآيَة: (وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ من فَضله)
إِلَى آخر الْآيَة. رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من اتاه الله مالا فلم يود زكاته مثل له ماله شجاعا اقرع له زبيبتان يطوقه يوم القيامة ياخذ بلهزمتيه - يعني بشدقيه - يقول: انا مالك انا كنزك . ثم تلا هذه الاية: (ولا يحسبن الذين يبخلون بما اتاهم الله من فضله) الى اخر الاية. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: যাদের আল্লাহ তা‘আলা সম্পদ দিয়েছেন অথচ যাকাত আদায় করে না, ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিবস উক্ত সম্পদ বিষধর সাপে পরিণত হবে। সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান-এর ১৮০ নং আয়াতে এরই অর্থ বহন করে। বাদর (বদর) আদ দিমামীনী বলেন, شُجَاعٌ হল পুরুষ সর্প। কেউ কেউ বলেছেন, শুজা' মরুভূমির এমন সাপ যা লেজের ওপর দন্ডায়মান হয়ে অশ্বারোহী এবং পদাতিক ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। আবার কখনো কখনো তা অশ্বারোহীর মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। উক্ত সাপের মাথায় টাক পড়া থাকবে বয়স দীর্ঘ হওয়ার কারণে। কেউ বলেন, তার মাথায় চুল থাকবে না। আর চরম বিষের কারণে মাথার চামড়া বিলীন হয়ে যাবে। তার মাথায় দু’টি নোকতা থাকবে যা মালিকের গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হবে। সে তাকে আঁকড়ে ধরে বলবে, ‘‘আমি তোমার মাল। এ কথা বলার উপকারিতা হল তার অনুশোচনা এবং শাস্তি বৃদ্ধি করা, যেহেতু যে বিষয়ের যে কল্যাণের আশা করত তা তার নিকট অকল্যাণ হিসেবে এসেছে। তাই তার অনুশোচনা, চিন্তা বৃদ্ধি পাবে।

মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে, সে সাপ থেকে পলায়নরত অবস্থায় যেখানেই যাবে সেখানেই সাপ তার পিছু নিবে। অবশেষে যখন সে দেখবে যে সাপ তার পিছু ছাড়বে না তখন সে তার মুখে হাত প্রবেশ করাবে। ফলে সাপ তার হাতকে চাবাবে যেমনটি উট চাবায়। আর ইবনু হিব্বান-এর বর্ণনায় রয়েছে, হাত থেকে শুরু করে শরীর চিবাবে।

সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান এর ১৮০ নং এবং সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্-এর ৩৪ নং আয়াতের মাঝে কোন প্রকার বৈপরীত্য নেই, কারণ এটি খুব করে সম্ভব যে আল্লাহ তার কিছু প্রকারের সম্পদকে বেড়ি বানিয়ে গলায় পরাবেন আর কয়েক প্রকার দিকে দাগ দিবেন। অথবা একবার এই প্রকারের শান্তিত দিবেন আর একবার সেই প্রকারের শাস্তি দিবেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৫-[৪] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির উট, গরু ও ছাগল থাকবে, আর সে এসবের হক (যাকাত) আদায় করবে না। কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন এসব জন্তু খুব তরতাজা মোটাসোটা করে আনা হবে এবং তারা তাদের পা দিয়ে তাকে পিষবে। তাদের শিং দিয়ে গুতোবে। শেষ দলটি পিষে চলে যাবার পর আবার প্রথম দলটি আসবে হিসাব-নিকাশ হওয়া পর্যন্ত (এভাবে চলতে থাকবে)। (বুখারী, মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا مِنْ رَجُلٍ يَكُونُ لَهُ إِبِلٌ أَوْ بَقَرٌ أَوْ غَنَمٌ لَا يُؤَدِّي حَقَّهَا إِلَّا أَتَى بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أعظم مَا يكون وَأَسْمَنَهُ تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا وَتَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا كُلَّمَا جَازَتْ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُولَاهَا حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاس»

عن ابي ذر رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «ما من رجل يكون له ابل او بقر او غنم لا يودي حقها الا اتى بها يوم القيامة اعظم ما يكون واسمنه تطوه باخفافها وتنطحه بقرونها كلما جازت اخراها ردت عليه اولاها حتى يقضى بين الناس»

ব্যাখ্যা: যে ব্যক্তির গরু বা ছাগল আছে যার যাকাত আদায় করে না তা নিয়ে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিবসে বেশী বড় ও মোটা হয়ে তার মালিক-কে পায়ের খুর দিয়ে আঘাত করতে থাকবে। যখন অতিক্রম শেষ হবে তখন আবারো প্রথম হতে খুরের আঘাত আরম্ভ করা হবে।

এরূপ শাস্তি ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিবস বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে। خُفٌّ (খুফ) বলা হয় উটের খুরকে। ظِلْفٌ (যিলফ) বলা হয় গরু, ছাগল এবং হরিণের খুরকে। حَافِرٌ (হা-ফির) বলা হয় ঘোড়া, গাধা এবং খচ্চরের খুরকে। قُرْنٌ (কুরন) বলা হয় গরু এবং ছাগলের খুরকে। আর মানুষের পায়ের পাতাকে বলা হয় قَدَمٌ (ক্বাদাম)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৬-[৫] জারীর ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যাকাত আদায়কারী যখন তোমাদের নিকট যাকাত আদায় করতে আসে তখন যেন তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে (যাকাত উসূল করে) ফিরে যায়। আর তোমরাও যেন সন্তুষ্ট ও খুশী থাকো। (মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِذا أَتَاكُمُ الْمُصَدِّقُ فَلْيَصْدُرْ عَنْكُمْ وَهُوَ عَنْكُمْ رَاضٍ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جرير بن عبد الله قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اذا اتاكم المصدق فليصدر عنكم وهو عنكم راض» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীস হতে প্রমাণ হয় যে, যাকাত আদায়কারীকে যাকাত আদায় করার ব্যাপারে পূর্ণ সাহায্য করতে হবে ও তার সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। যাতে সে তাদের কাছ থেকে সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যায়। আর আবূ দাঊদ-এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল! যদিও আদায়কারীরা যুলম করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, যদিও তারা যুলম করে তবুও তাদেরকে খুশি করে বিদায় দাও।

ক্বাযী ‘আয়ায বলেন, মূলত রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাধ্যমে নেতার আনুগত্য এবং তার বিরোধিতা না করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, হাদীসের উদ্দেশ্য হল, সৌভাগ্যের ওয়াসিয়্যাত করা, নেতার আনুগত্য করা, তার প্রতি সদ্ব্যবহার করা, মুসলিমদের ঐক্য ধরে রাখা এবং তাদের পারস্পরিক বিষয়ের সংশোধন করা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৭-[৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন ক্বওম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তাদের যাকাত নিয়ে এলে তিনি বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা স-ল্লি ’আলা- আ-লি ফুলা-ন’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! অমুকের ওপর রহমত বর্ষণ করো)। আমার পিতাও যখন তার নিকট যাকাত নিয়ে এলেন তিনি বললেন, ’’আল্ল-হুম্মা সল্লি ’আলা- আ-লি আবী আওফা’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আবূ আওফা ও তার বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করো)। (বুখারী, মুসলিম)[1]

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, যখন কোন ব্যক্তি তার নিজের যাকাত নিয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসতেন, তিনি বলতেন, اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ ’’হে আল্লাহ! এ ব্যক্তির ওপর রহমত বর্ষণ করো।’’

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ عَبْدُ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَتَاهُ قَوْمٌ بِصَدَقَتِهِمْ قَالَ: «اللَّهُمَّ صلى على آل فلَان» . فَأَتَاهُ أبي بِصَدَقَتِهِ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ صلى الله على آل أبي أوفى»
وَفِي رِوَايَة: إِذا أَتَى الرجل النَّبِي بِصَدَقَتِهِ قَالَ: «اللَّهُمَّ صلي عَلَيْهِ»

وعن عبد الله بن ابي اوفى رضي الله عنهما قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا اتاه قوم بصدقتهم قال: «اللهم صلى على ال فلان» . فاتاه ابي بصدقته فقال: «اللهم صلى الله على ال ابي اوفى» وفي رواية: اذا اتى الرجل النبي بصدقته قال: «اللهم صلي عليه»

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কোন ক্বওম বা ব্যক্তি যাকাত বা সদাক্বাহ্ (সাদাকা) নিয়ে এলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের জন্য দু‘আ করতেন। যেমন- বর্ণিত হাদীসে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবূ আওফা-এর পরিবারের জন্য দু‘আ করেছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু‘আ করতেন সূরাহ্ আত্ তাওবার ১০৩ নং আয়াতের উপর ‘আমল করার জন্য সেখানে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘তুমি তাদের মাল হতে যাকাত গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য দু‘আ কর। কেননা তোমার দু‘আ তাদের অন্তরের প্রশান্তি।’’

হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, সদাক্বার মাল গ্রহীতার জন্য মুস্তাহাব হল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দাতার জন্য দু‘আ করা। আহলে যাহের সহ আরো অনেক সূরা আত্ তাওবার ১০৩ নং আয়াতের আলোকে বলেছেন যে দু‘আ করা ওয়াজিব। তবে এ আবশ্যকতাটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য নির্দিষ্ট।

হাদীস থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে, নাবীগণ ব্যতীত স্বতন্ত্রভাবে অন্য কোন ব্যক্তির صلاة (সালাত) শব্দের মাধ্যমে দু‘আ করা বৈধ এবং সদাক্বাহ্ (সাদাকা) গ্রহীতা সদাক্বাদাতার জন্য এ দু‘আ করতে পারে। এটি ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর অভিমত। তাদের ভাষ্যমতে এখানে صلاة দ্বারা উদ্দেশ্য দু‘আ, বারাকাত কামনা, সম্মান বা মর্যাদা কামনা নয়। ইমাম বুখারী (রহঃ) ও সাধারণভাবে তা বৈধ বলে মনে করেন। আর ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেন, নাবী-রসূলগণ ব্যতীত অন্য কারো জন্য স্বতন্ত্রভাবে সালাত আদায় করা বৈধ নয় তবে তাবি‘ঈন বা নাবী-রসূলগণের পরে সকলের উপরে কারো নাম আসলে সেক্ষেত্রে তাদের সালাত আদায় করা জায়িয।

ইমাম ইবনুল ক্বইয়্যূম (রহঃ) বলেন, পছন্দনীয় অভিমত হল, নাবীগণ ফেরেশতাগণ, নাবী-পত্নীগণ, নাবী-বংশধর, সন্তান-সন্ততি এবং আনুগত্যশীল ব্যক্তিদের ওপর সাধারণভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা যায়। আর নাবীগণ ব্যতীত অন্য কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা অপছন্দনীয়। বিষয়টির সারাংশ হল আল্লাহ এবং আল্লারহ রাসূলের ক্ষেত্রে যে কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য صلاة শব্দের মাধ্যমে দু‘আ করা বৈধ। যেমনটি বিভিন্ন হাদীসে এসেছে। আর আল্লাহ এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রভাবে কারো জন্য صلاة শব্দের মাধ্যমে দু‘আ করা বৈধ নয়। তবে তাব্‘আন (অনুসৃত) জায়িয।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৮-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত আদায়ের জন্য ’উমার (রাঃ)-কে পাঠালেন। কেউ এসে খবর দিলো যে, ইবনু জামিল, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ আর ’আব্বাস (রাঃ)যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে। (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইবনু জামিল এজন্য যাকাত দিতে অস্বীকার করেছেন যে, (প্রথম দিকে) গরীব ছিল। এরপর আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাকে সম্পদশালী করেছেন। আর খালিদ ইবনু ওয়ালীদ-এর ব্যাপার হলো, তোমরা তার ওপর যুলম্ করছ। সে তো তার যুদ্ধসামগ্রী আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দিয়েছে (কাজেই তোমরা তার শুধু এ বছরই নয় বরং) এ রকম (আগামী বছর)ও। এরপর থাকে ’আব্বাস-এর বিষয়। তার এ বছরের যাকাত এবং এর সমপরিমাণ আমার দায়িত্বে। অতঃপর তিনি বললেন, হে ’উমার! তুমি কি জানো না কোন ব্যক্তির চাচা তার পিতার মতই। (বুখারী, মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَن أَبِي هُرَيْرَةَ. قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُمَرَ عَلَى الصَّدَقَةِ. فَقِيلَ: مَنَعَ ابْنُ جَمِيلٍ وَخَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ وَالْعَبَّاسُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا يَنْقِمُ ابْنُ جَمِيلٍ إِلَّا أَنَّهُ كَانَ فَقِيرًا فَأَغْنَاهُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ. وَأَمَّا خَالِدٌ فَإِنَّكُمْ تَظْلِمُونَ خَالِدًا. قَدِ احْتَبَسَ أَدْرَاعَهُ وَأَعْتُدَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ. وَأَمَّا الْعَبَّاسُ فَهِيَ عَلَيَّ. وَمِثْلُهَا مَعَهَا» . ثُمَّ قَالَ: «يَا عُمَرُ أَمَا شَعَرْتَ أَن عَم الرجل صنوا أَبِيه؟»

عن ابي هريرة. قال: بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم عمر على الصدقة. فقيل: منع ابن جميل وخالد بن الوليد والعباس. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما ينقم ابن جميل الا انه كان فقيرا فاغناه الله ورسوله. واما خالد فانكم تظلمون خالدا. قد احتبس ادراعه واعتده في سبيل الله. واما العباس فهي علي. ومثلها معها» . ثم قال: «يا عمر اما شعرت ان عم الرجل صنوا ابيه؟»

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমার (রাঃ)-কে  আমেল হিসেবে ফরয যাকাত আদায় করতে পাঠান। তাঁকে বলা হলো যে, ইবনু জামিল, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ এবং ‘আব্বাস যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করেছেন। অথচ তারা সাহাবী।

ইবনু জামিল-এর ক্ষেত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সে গরীব ছিল পরে আল্লাহ তাকে ধনী বানিয়েছেন ফলে এর প্রতিশোধ গ্রহণকল্পে সে যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু এটি প্রতিশোধ গ্রহণ করার মত কোন বিষয় নয়। অথবা সে মূলত কোন প্রকার অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেনি। তাই তার উচিত আল্লাহ তা‘আলা তাকে যা দিয়েছেন তার যাকাত দেয়া এবং নি‘আমাতের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন না করা।

খালিদ-এর ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘সে তার বর্মসমূহ এবং যুদ্ধাস্ত্রগুলো আল্লাহর পথে জমা করে রেখেছে।’’ কয়েকভাবে এ উক্তির ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

প্রথমতঃ যাকাত আদায়কারীগণ খালিদ-এর জমাকৃত বর্ম এবং যুদ্ধাস্ত্রের অর্থের যাকাত চাইলে এই ধারণায় যে তা ব্যবসার জন্য গচ্ছিত আছে যাতে যাকাত আবশ্যক। কিন্তু খালিদ তাদের বললেন, এতে তো যাকাত আবশ্যক নয়। তাই তারা এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি বললেন, তোমরাতো তার প্রতি অবিচার করেছো। কারণ সে তো তা জমা করে আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দিয়েছে। ফলে তাতে যাকাত আবশ্যক হয় না।

দ্বিতীয়তঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ-এর পক্ষ থেকে ওজর পেশ করেছেন এবং প্রত্যুত্তর করেছেন যে, খালিদ-এর ওপর যাকাত আবশ্যক হলে সে তা দিতে অস্বীকার করবে না। কেননা সে তো আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তার বর্ম এবং অস্ত্রগুলো আল্লাহর পথে জমা দিয়ে দিয়েছে যা তার প্রতি আবশ্যক ছিল না।

ফলে কিভাবে সে ফরয সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদানে অস্বীকৃতি জানাবে।

আর ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, ‘‘তার যাকাতের জামিন আমি এবং তার সাথে তার সমপরিমাণ এর অর্থ কয়েকটি হতে পারে।’’

প্রথমতঃ ‘আব্বাস (রাঃ)-এর প্রয়োজনের তাকিদে তিনি তার দু’ বছরের যাকাত বিলম্বিত করে নিজে তা আদায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। যেমনটি আবূ ‘উবায়দাহ্ বলেছেন।

দ্বিতীয়তঃ ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বর্তমান এবং আগামী দু’ বছরের অগ্রিম সদাক্বাহ্/যাকাত প্রদান করেছেন। ফলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘আব্বাস-এর দুই বছরের সদাক্বাহ্ (সাদাকা) যা আমার কাছে রয়েছে আমি তা দিয়ে দিব।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৯-[৮] আবূ হুমায়দ আস্ সা’ইদী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আযদ গোত্রের ইবনুল লুত্বিয়াহ্ নামক ব্যক্তিকে যাকাত আদায় করার জন্য কর্মকর্তা নিযুক্ত করলেন। সে (যাকাত উসূল করে) মদীনায় ফিরে এসে (মুসলিমদের নিকট) বলতে লাগল, এ পরিমাণ সম্পদ তোমাদের (যাকাত হিসেবে উসূল হয়েছে, তোমরা এর হকদার)। আর এ পরিমাণ সম্পদ তুহফা হিসেবে আমাকে দেয়া হয়েছে (এটা আমার হক)। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এসব কথা শুনে) লোকদের উদ্দেশে হামদ ও সানা পড়ে খুতবাহ্ দিলেন। তিনি (খুতবায়) বললেন, তোমাদের কিছু লোককে আমি ওসব কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছি যেসব কাজের জন্য আল্লাহ আমাকে হাকিম বানিয়েছেন। এখন তোমাদের এক ব্যক্তি এসে বলছে, এটা (যাকাত) তোমাদের জন্য, আর এটা হাদিয়্যাহ্। এ হাদিয়্যাহ্ আমাকে দেয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞেস করো, সে ব্যক্তি তার পিতা অথবা মাতার বাড়ীতে বসে রইল না কেন? তখন সে দেখতো (তুহফা দানকারীরা) তাকে তার বাড়ীতেই তুহফা পৌঁছে দিয়ে যেত কিনা?

ঐ মহান সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন। তোমাদের যে ব্যক্তি যে কোন জিনিস তদ্রূপ করবে তা কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তার গর্দানের উপর বহন করে নিয়ে আসবে। যদি তা উট হয় তাহলে তার আওয়াজ উটের আওয়াজ হবে। যদি তা গরু হয় তাহলে তার আওয়াজ গরুর আওয়াজ হবে। যদি তা বকরী হয় তাহলে বকরীর আওয়াজ হবে। (অর্থাৎ দুনিয়ায় কোন জিনিস অন্যায়ভাবে গ্রহণ করলে, তা কিয়ামতের দিন তার ঘাড়ে সওয়ার হয়ে কথা বলতে থাকবে)। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দু’ হাত এতো উপরে উঠালেন যে, আমরা তার বগলের নীচের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমি মানুষের কাছে কি তা পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি (তোমার কথা) কি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি? (বুখারী, মুসলিম)[1]

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী, ’’তাকে জিজ্ঞেস করো, সে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার বাড়ীতে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখত তুহফা তার বাড়ীতে পৌঁছে দিয়ে যায় কিনা?’’ এ সম্পর্কে খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, এ বাণী এ কথারই দলীল যে, কোন হারাম কাজের জন্য যে জিনিসকে উপায় বা ওয়াসিলা বানানো হয় সে উপায়ে বা ওয়াসিলাও হারাম। আরো বলা যায়, কোন একটি ব্যাপারকে অন্য কোন ব্যাপারের সাথে (যেমন- বেচাকেনা, বিয়ে-শাদী ইত্যাদি) সম্পর্কিত করলে দেখতে হবে, সে ব্যাপারগুলোর কোন পৃথক পৃথক হুকুম এদের এক সাথে সম্পর্কিত হুকুমের সদৃশ কি-না। হলে তা জায়িয। আর না হলে না জায়িয। (শারহুস্ সুন্নাহ্)

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَن أبي حميد السَّاعِدِيّ: اسْتَعْمَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا مِنَ الأزد يُقَال لَهُ ابْن اللتبية الأتبية عَلَى الصَّدَقَةِ فَلَمَّا قَدِمَ قَالَ: هَذَا لَكُمْ وَهَذَا أُهْدِيَ لِي فَخَطَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأثْنى عَلَيْهِ وَقَالَ: أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَسْتَعْمِلُ رِجَالًا مِنْكُمْ عَلَى أُمُور مِمَّا ولاني الله فَيَأْتِي أحدكُم فَيَقُول: هَذَا لكم وَهَذَا هَدِيَّةٌ أُهْدِيَتْ لِي فَهَلَّا جَلَسَ فِي بَيْتِ أَبِيهِ أَوْ بَيْتِ أُمِّهِ فَيَنْظُرُ أَيُهْدَى لَهُ أَمْ لَا؟ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يَأْخُذُ أَحَدٌ مِنْهُ شَيْئًا إِلَّا جَاءَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَحْمِلُهُ عَلَى رَقَبَتِهِ إِنْ كَانَ بَعِيرًا لَهُ رُغَاءٌ أَوْ بَقْرًا لَهُ خُوَارٌ أَوْ شَاة تَيْعر ثمَّ رفع يَدَيْهِ حَتَّى رَأينَا عفرتي إِبِطَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَل بلغت» . . قَالَ الْخَطَّابِيُّ: وَفِي قَوْلِهِ: «هَلَّا جَلَسَ فِي بَيْتِ أُمِّهِ أَوْ أَبِيهِ فَيَنْظُرُ أَيُهْدَى إِلَيْهِ أَمْ لَا؟» دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ كُلَّ أَمْرٍ يُتَذَرَّعُ بِهِ إِلَى مَحْظُورٍ فَهُوَ مَحْظُورٌ وَكُلُّ دخل فِي الْعُقُودِ يُنْظَرُ هَلْ يَكُونُ حُكْمُهُ عِنْدَ الِانْفِرَادِ كَحُكْمِهِ عِنْدَ الِاقْتِرَانِ أَمْ لَا؟ هَكَذَا فِي شرح السّنة

عن ابي حميد الساعدي: استعمل النبي صلى الله عليه وسلم رجلا من الازد يقال له ابن اللتبية الاتبية على الصدقة فلما قدم قال: هذا لكم وهذا اهدي لي فخطب النبي صلى الله عليه وسلم فحمد الله واثنى عليه وقال: اما بعد فاني استعمل رجالا منكم على امور مما ولاني الله فياتي احدكم فيقول: هذا لكم وهذا هدية اهديت لي فهلا جلس في بيت ابيه او بيت امه فينظر ايهدى له ام لا؟ والذي نفسي بيده لا ياخذ احد منه شيىا الا جاء به يوم القيامة يحمله على رقبته ان كان بعيرا له رغاء او بقرا له خوار او شاة تيعر ثم رفع يديه حتى راينا عفرتي ابطيه ثم قال: «اللهم هل بلغت اللهم هل بلغت» . . قال الخطابي: وفي قوله: «هلا جلس في بيت امه او ابيه فينظر ايهدى اليه ام لا؟» دليل على ان كل امر يتذرع به الى محظور فهو محظور وكل دخل في العقود ينظر هل يكون حكمه عند الانفراد كحكمه عند الاقتران ام لا؟ هكذا في شرح السنة

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীস হতে বুঝা যায় যে, যাকাত আদায় করার সময় কোন প্রকার হাদিয়্যাহ্ গ্রহণ করা জায়িয নয়। প্রকৃতপক্ষে এ হুকুম সকল লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যারা এরূপ হাদিয়্যাহ্ বা ঘুষ গ্রহণ করবে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিনে উক্ত হাদিয়্যার মাল কাঁধে করে বহন করবে। উক্ত লোকটি কে ছিলেন তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, ইয়ামানের আযদ গোত্রের। আবার কেউ কেউ বলেন, আসাদ গোত্রের। কোন কোন বর্ণনায় আছে, বানী আসাদ। কেউ কেউ বলেন, উক্ত গোত্রের নাম আযদও বলা হয় এবং আসাদও বলা হয়। কেউ কেউ বলেন, তার নাম ইবনু লুতবিয়্যাহ্। হাফিয ইবনু হাজার বলেন যে, আমি তার নাম সম্পর্কে অবহিত হয়নি।

এ হাদীস থেকে কতগুলো উপকারিতা পাওয়া যায়। যথাঃ ১. ইমাম নাবাবী বলেন, হাদীস থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, যাকাত আদায়কারীদের গ্রহণকৃত উপঢৌকন হারাম এবং তা আমানাতের খিয়ানত।

২.  যাকাত আদায়কারী আমানতদার ব্যক্তিকে আত্মসমালোচনা করতে হবে। কেননা এটি তার আমানাতকে সঠিক ভাবে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

৩. যাকাত আদায়কারীদেরকে প্রদত্ত উপঢৌকনসমূহ বায়তুল মালের অন্তর্ভুক্ত হবে। যাকাত আদায়কারী তার স্বত্বাধিকারী হবে না যদি না নেতা সন্তুষ্ট চিত্তে তা তাকে দেন।

৪. কোন ব্যক্তি পক্ষপাতমূলকভাবে কোন সম্পদ গ্রহণের জন্য যে সব পথ অবলম্বন করে তা বাতিল।

৫. যে ব্যক্তি কোন ব্যাখ্যা জানতে পারবে যা কেউ গ্রহণ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাহলে তার ভুলটি মানুষদের মাঝে বর্ণনা করে দিবে, যাতে তারা এর দ্বারা প্রতারিত হওয়া থেকে সতর্ক হতে পারে।

৬. ভুলকারীকে ধমক/শাসন করা বৈধ এবং নেতৃত্ব, আমানাত রক্ষার ক্ষেত্রে উত্তম ব্যক্তির বিদ্যমানে তার চেয়ে নিচু স্তরের লোক নিয়োগ দেয়া বৈধ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৮০-[৯] ’আদী ইবনু ’উমায়রাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের কাউকে কোন কাজের জন্য (যাকাত ইত্যাদি উসূল করার জন্য) নিয়োগ করলে, সে যদি একটি সূঁচ সমান অথবা এর চেয়ে ছোট বড় কোন জিনিস গোপন করে তা খিয়ানাত হবে। কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তা (লাঞ্ছনা সহকারে) আনা হবে। (মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ عَدِيِّ بْنِ عُمَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ اسْتَعْمَلْنَاهُ مِنْكُم على عمل فَكَتَمَنَا مِخْيَطًا فَمَا فَوْقَهُ كَانَ غُلُولًا يَأْتِي بِهِ يَوْم الْقِيَامَة» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عدي بن عميرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من استعملناه منكم على عمل فكتمنا مخيطا فما فوقه كان غلولا ياتي به يوم القيامة» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: যাকাত আদায়কারীদের উচিত হবে যে, আদায়কৃত সকল মাল ছোট হোক আর বড় হোক আদায় করে দিবে। যদি কিছু গোপন করে তবে তা হবে খিয়ানাত ও হারাম।

অত্র হাদীসে যাকাত আদায়কারীদের আমানাত রক্ষার উপর উৎসাহিত করা হয়েছে এবং নগণ্য বস্ত্ত হলেও তার খিয়ানাত করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে। আর মুসলিমরা সকলেই একমত যে, আমানাতের খিয়ানাত করা হারাম যা কাবীরা গুনাহও বটে। আর কেউ যদি তা করে তাহলে তাকে তা ফেরত দিতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৯ পর্যন্ত, সর্বমোট ৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে