পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৯১-[২০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তোমাদের ধন-সম্পদ বিষধর সাপের রূপ ধারণ করবে। মালিক এর থেকে পালিয়ে থাকবে, আর সে মালিককে খুঁজতে থাকবে। পরিশেষে সে মালিককে পেয়ে যাবে এবং তার আঙ্গুলগুলোকে লুকমা বানিয়ে মুখে পুরবে। (আহমাদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَكُونُ كَنْزُ أَحَدِكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ يَفِرُّ مِنْهُ صَاحِبُهُ وَهُوَ يَطْلُبُهُ حَتَّى يُلْقِمَهُ أَصَابِعه» . رَوَاهُ أَحْمد
ব্যাখ্যা: গচ্ছিত সম্পদ যার যাকাত আদায় করা হয় না তা সাপে পরিণত হবে। আর তার মালিক-এর দু’ গালে ও হাতে দংশন করতে থাকবে, কারণ সে হাত দ্বারা মাল অর্জন করেছিল।
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৯২-[২১] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করবে না, কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন আল্লাহ তা’আলা তার গলায় সাপ লটকিয়ে দেবেন। তারপর তিনি কুরআন থেকে এ অর্থের আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ’’যারা আল্লাহর দেয়া মাল ব্যয়ে কৃপণতা করে, তারা যেন মনে না করে এ কাজ তাদের জন্য কল্যাণকর হয়েছে’’- (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا مِنْ رَجُلٍ لَا يُؤَدِّي زَكَاةَ مَالِهِ إِلَّا جَعَلَ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي عُنُقِهِ شُجَاعًا» ثُمَّ قَرَأَ عَلَيْنَا مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ: (وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يبلخون بِمَا آتَاهُم الله من فَضله)
الْآيَة. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৯৩-[২২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ধন-সম্পদের সাথে যাকাত মিশে যাবে নিশ্চয় তা তাকে ধ্বংস করে ছাড়বে। শাফি’ঈ, বুখারী, হুমায়দী; হুমায়দী বেশী এমন বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম বুখারী বলেছেন, মালের উপর যাকাত ওয়াজিব হবার পর তোমরা যদি তা আদায় না করো তাহলে এ যাকাত সম্পদের সাথে মিশে যায়। তাই হারাম মাল হালাল মালকে ধ্বংস করে দেয়। যেসব সম্মানিত ব্যক্তিগণ এ কথা বলেন যে, যাকাত মূল মালের সাথে সম্পর্কিত। তারা এ হাদীসকে তাদের স্বপক্ষে দলীল মনে করেন। (মুনতাক্বা’)[1]
শু’আবুল ঈমানে ইমাম বায়হাক্বী এ হাদীসটিকে ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল হতে ’আয়িশাহ্ (রাঃ) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করেছেন। বস্তুত ইমাম আহমাদ (রহঃ) এ হাদীসের শব্দ خَالَطَتْ ’’কোন ব্যক্তির যাকাত গ্রহণের’’ ব্যাপারে এ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, কেউ ধনী ও সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও যদি যাকাত গ্রহণ করে। প্রকৃতপক্ষে যাকাত ফকীর-মিসকীন ও অন্যান্যদের হক।
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا خَالَطَتِ الزَّكَاةُ مَالًا قَطُّ إِلَّا أَهْلَكَتْهُ» . رَوَاهُ الشَّافِعِيُّ وَالْبُخَارِيُّ فِي تَارِيخِهِ وَالْحُمَيْدِيُّ وَزَادَ قَالَ: يَكُونُ قَدْ وَجَبَ عَلَيْكَ صَدَقَةٌ فَلَا تُخْرِجْهَا فَيُهْلِكُ الْحَرَامُ الْحَلَالَ. وَقَدِ احْتَجَّ بِهِ من يرى تعلق الزَّكَاةِ بِالْعَيْنِ هَكَذَا فِي الْمُنْتَقَى
وَرَوَى الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ بِإِسْنَادِهِ إِلَى عَائِشَةَ. وَقَالَ أَحْمَدُ فِي «خَالَطَتْ» : تَفْسِيرُهُ أَنَّ الرَّجُلَ يَأْخُذُ الزَّكَاةَ وَهُوَ مُوسِرٌ أَو غَنِي وَإِنَّمَا هِيَ للْفُقَرَاء
ব্যাখ্যা: নিসাব সমপরিমাণ মাল যার হবে যদি সে যাকাত আদায় না করে, তাহলে এর মাধ্যমে যাকাত তার মূল মালের সাথে মিশ্রিত হবে। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় মুনযিরী বলেন, এ হাদীসের ২টি অর্থ হতে পারে একটি হলো- যে মালের যাকাত বের করা হয় না, উক্ত যাকাত মালকে ধ্বংস করে ফেলে। এ হাদীসটিকে ‘উমারের মারফূ' হাদীসের সহায়ক যেখানে এসেছে যে, জলে-স্থলে মাল নষ্ট হয় যাকাত না দেয়ার কারণে। তবে উক্ত হাদীসটি দুর্বল। ২য় অর্থ যে ব্যক্তি যাকাত গ্রহণ করে অথচ সে ধনী, অতঃপর যখন তা নিজের মালের সাথে রাখে তা মালকে নষ্ট করে ফেলে। ইমাম আহমাদ এরূপ ব্যাখ্যা করেছেন। হাদীসে ধ্বংস করার অর্থ হল, তা বিভিন্ন বিপদাপদের মাধ্যমে কমে যাওয়া বা তা পর্যাপ্ত হলেও তার দ্বারা উপকৃত হওয়ার মাধ্যমে বারাকাত হ্রাস পাওয়া। ফলে তা ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্পদের মতই হয়ে পড়ে।