পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮০-[৩৫] ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) সাহল ইবনু হুনায়ফ ও ক্বায়স ইবনু সা’দ (রাঃ) ক্বাদিসিয়্যাহ্ নামক স্থানে বসেছিলেন। এ সময়ে তাদের পাশ দিয়ে একটি জানাযাহ্ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তা দেখে তারা উভয়েই দাঁড়িয়ে গেলেন। তাদের (দাঁড়াতে দেখে) বলা হলো, এ জানাযাহ্ জমিনবাসীর অর্থাৎ যিম্মির। তখন উভয় সাহাবী বললেন, (তাতে কি হয়েছে? এভাবে একদিন) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে দিয়েও একটি জানাযাহ্ যাচ্ছিল। তা দেখে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাঁকেও বলা হয়েছিল, ’এটা একজন ইয়াহূদীর জানাযা।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, সে কি মানুষ নয়? (বুখারী, মুসলিম)[1]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ: كَانَ ابْن حنيف وَقيس ابْن سَعْدٍ قَاعِدَيْنِ بِالْقَادِسِيَّةِ فَمُرَّ عَلَيْهِمَا بِجَنَازَةٍ فَقَامَا فَقيل لَهما: إِنَّهَا مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ أَيْ مِنْ أَهْلِ الذِّمَّةِ فَقَالَا: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّتْ بِهِ جَنَازَةٌ فَقَامَ فَقِيلَ لَهُ: إِنَّهَا جَنَازَة يَهُودِيّ. فَقَالَ: «أليست نفسا؟»

عن عبد الرحمن بن ابي ليلى قال: كان ابن حنيف وقيس ابن سعد قاعدين بالقادسية فمر عليهما بجنازة فقاما فقيل لهما: انها من اهل الارض اي من اهل الذمة فقالا: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم مرت به جنازة فقام فقيل له: انها جنازة يهودي. فقال: «اليست نفسا؟»

ব্যাখ্যা: জানাযাহ্ দর্শনে দাঁড়ানো মুস্তাহাব, এতে মুসলিম অমুসলিম সকল লাশের ক্ষেত্রেই এ বিধান প্রযোজ্য। এ বিষয়ে আলোচনা ইতিপূর্বে হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮১-[৩৬] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন জানাযার সাথে গেলে যতক্ষণ পর্যন্ত তা’ কবরে রাখা না হত ততক্ষণ বসতেন না। একবার এক ইয়াহূদী ’আলিম রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে এসে আরয করল, ’হে মুহাম্মাদ! আমরাও এরূপ করি।’ অর্থাৎ মুর্দা কবরে রাখার আগে বসি না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর থেকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (জানাযাহ্ কবরে রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন না) বসে যেতেন। তিনি বলতেন, তোমরা ইয়াহুদীদের বিপরীত করবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ; ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি গরীব। বিশর ইবনু রাফি’ বর্ণনাকারী হিসেবে শক্তিশালী নয়।)[1]

وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا تَبِعَ جَنَازَةً لَمْ يَقْعُدْ حَتَّى تُوضَعَ فِي اللَّحْدِ فَعَرَضَ لَهُ حَبْرٌ مِنَ الْيَهُودِ فَقَالَ لَهُ: إِنَّا هَكَذَا نضع يَا مُحَمَّدُ قَالَ: فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «خَالِفُوهُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَبِشْرُ بْنُ رَافِعٍ الرَّاوِي لَيْسَ بِالْقَوِيّ

وعن عبادة بن الصامت قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا تبع جنازة لم يقعد حتى توضع في اللحد فعرض له حبر من اليهود فقال له: انا هكذا نضع يا محمد قال: فجلس رسول الله صلى الله عليه وسلم وقال: «خالفوهم» . رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب وبشر بن رافع الراوي ليس بالقوي

ব্যাখ্যা: ইয়াহূদীগণ ক্ববরে লাশ না রাখা পর্যন্ত অনুগামীরা বসে না, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তাই করতেন। অতঃপর ইয়াহূদী ‘আলিমের কাছে যখন এ তথ্য জানতে পারলেন তখন তিনি বসে পড়লেন এবং বললেন, তোমরা তাদের বিপরীত করো।

এ হাদীস দ্বারা জানাযাহ্ দেখে দন্ডায়মান হওয়ার হাদীসটি মানসূখ হওয়ার দাবী সঠিক নয়। কেননা এ হাদীসটি য‘ঈফ, আর কোন য‘ঈফ হাদীস কোন সহীহ হাদীসকে মানসূখ করতে পারে না। এর বিস্তারিত আলোচনা আগে হয়ে গেছে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮২-[৩৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (প্রথম দিকে) আমাদেরকে জানাযাহ্ দেখলে দাঁড়িয়ে যেতে বলেছেন। (পরে) তিনি নিজে বসে থাকতেন। আমাদেরকেও বসে থাকতে নির্দেশ দেন। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَنَا بِالْقِيَامِ فِي الْجَنَازَةِ ثُمَّ جَلَسَ بَعْدَ ذَلِكَ وَأَمَرَنَا بِالْجُلُوسِ. رَوَاهُ أَحْمد

وعن علي قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم امرنا بالقيام في الجنازة ثم جلس بعد ذلك وامرنا بالجلوس. رواه احمد

ব্যাখ্যা: জানাযাহ্ দেখে দাঁড়ানোর নির্দেশটি মুস্তাহাব অর্থে, ওয়াজিব অর্থে নয়। এটা খাটিয়া মাটিতে রাখা পর্যন্ত হতে পারে আবার লাশ ক্ববরে রাখা পর্যন্তও হতে পারে। প্রথম অনুচ্ছেদে আবূ সা‘ঈদ-এর হাদীসে এর বিবরণ চলে গেছে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৩-[৩৮] মুহাম্মাদ ইবনু সিরীন (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার একটি জানাযাহ্ হাসান ইবনু ’আলী ও ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিল। (জানাযাহ্ দেখে) হাসান দাঁড়িয়ে গেলেন। কিন্তু ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) দাঁড়ালেন না। হাসান (ইবনু ’আব্বাসকে দাঁড়াননি দেখে) বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি একজন ইয়াহূদীর লাশ দেখে দাঁড়িয়ে যাননি? ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ দাঁড়িয়েছিলেন, (প্রথম দিকে) শেষ দিকে আর দাঁড়াননি। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ قَالَ: إِنَّ جَنَازَةً مَرَّتْ بِالْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ فَقَامَ الْحَسَنُ وَلَمْ يَقُمِ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ الْحَسَنُ: أَلَيْسَ قَدْ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِجَنَازَةِ يَهُودِيٍّ؟ قَالَ: نَعَمْ ثُمَّ جلس. رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن محمد بن سيرين قال: ان جنازة مرت بالحسن بن علي وابن عباس فقام الحسن ولم يقم ابن عباس فقال الحسن: اليس قد قام رسول الله صلى الله عليه وسلم لجنازة يهودي؟ قال: نعم ثم جلس. رواه النساىي

ব্যাখ্যা: জানাযাহ্ দেখে দাঁড়ানো এবং বসে থাকা দু’টোই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। তবে বসে থাকাটা পরবর্তী কর্ম। তাই বলে এটা নাসিখ হয়ে দাঁড়ানোর বিধানকে মানসূখ বা রহিত করেছে এমনটিও নয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিজের বসা এবং বসার নির্দেশ ছিল বায়ানে জাওয়ায ও ‘ইবাহাতমূলক, সর্বোপরি এটা ছিল সহজীকরণ, সুতরাং এ বিষয়ের কোন দিককেই ওয়াজিব জ্ঞান করা ঠিক নয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৪-[৩৯] জা’ফার ইবনু মুহাম্মাদ তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন, একবার হাসান ইবনু ’আলী (রাঃ) (এক জায়গায়) বসেছিলেন। তাঁর সম্মুখ দিয়ে একটি জানাযাহ্ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকেরা (এ সময়) দাঁড়িয়ে গেল। তা অতিক্রম করে না যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকল। তা দেখে হাসান বললেন, (একবার) একটি ইয়াহূদীর লাশ যাচ্ছিল আর সে সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাস্তার পাশে বসেছিলেন। ইয়াহুদীর লাশ তাঁর মাথা ছাড়িয়ে যাক তা তিনি অপছন্দ করলেন। তাই দাঁড়িয়ে গেলেন। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ الْحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ كَانَ جَالِسًا فَمُرَّ عَلَيْهِ بِجَنَازَةٍ فَقَامَ النَّاسُ حَتَّى جَاوَزَتِ الْجَنَازَةُ فَقَالَ الْحَسَنُ: إِنَّمَا مُرَّ بِجَنَازَةِ يَهُودِيٍّ وَكَانَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى طَرِيقِهَا جَالِسا وَكره أَن تعلوا رَأسه جَنَازَة يَهُودِيّ فَقَامَ. رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن جعفر بن محمد عن ابيه ان الحسن بن علي كان جالسا فمر عليه بجنازة فقام الناس حتى جاوزت الجنازة فقال الحسن: انما مر بجنازة يهودي وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم على طريقها جالسا وكره ان تعلوا راسه جنازة يهودي فقام. رواه النساىي

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের ভিত্তিতে দাঁড়ানো নিষেধ এমনটি নয়, এও বলা যাবে না যে, বসেই থাকতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ইতিপূর্বে হয়ে গেছে। মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের সানাদ য‘ঈফ, সুতরাং তা পূর্বের সহীহ হাদীসের মোকাবেলা করতে পারে না। এ বিষয়ে আর কোন নতুন আলোচনারও প্রয়োজন নেই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৫-[৪০] আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কাছ দিয়ে কোন ইয়াহুদী, নাসারা অথবা মুসলিমের লাশ অতিবাহিত হতে দেখলে দাঁড়িয়ে যাবে। তোমাদের এ দাঁড়ানো লাশের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য নয়। বরং লাশের সাথে যেসব মালাক (ফেরেশতা) থাকেন তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ أَبِي مُوسَى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا مَرَّتْ بِكَ جَنَازَةُ يَهُودِيٍّ أَوْ نَصْرَانِيٍّ أَوْ مُسْلِمٍ فَقُومُوا لَهَا فَلَسْتُمْ لَهَا تَقُومُونَ إِنَّمَا تَقُومُونَ لِمَنْ مَعهَا من الْمَلَائِكَة» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن ابي موسى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «اذا مرت بك جنازة يهودي او نصراني او مسلم فقوموا لها فلستم لها تقومون انما تقومون لمن معها من الملاىكة» . رواه احمد

ব্যাখ্যা: জানাযাহ্ দর্শনে দাঁড়ানোর নির্দেশটি হলো মালাকের সম্মানে, লাশের সম্মানে নয়। আর দাঁড়ানো হলো মুস্তাহাব ওয়াজিব নয়। দাঁড়ানোর নির্দেশ হলো বাহ্যিক দৃষ্টিতে আর নিষেধটি হলো হাকীকাতের দৃষ্টিতে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৬-[৪১] আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছ দিয়ে একটি জানাযাহ্ যাচ্ছিল। তা দেখে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। সাহাবীগণ আরয করলেন, এটা তো একজন ইয়াহূদীর জানাযাহ্ (একে দেখে দাঁড়াবার কারণ কি?) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, জানাযার সম্মানে দাঁড়াইনি। তাদের সম্মানে দাঁড়িয়েছি যারা জানাযার সাথে আছেন (অর্থাৎ ফেরেশতা)। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ جَنَازَةً مَرَّتْ بِرَسُولِ اللَّهِ فَقَامَ فَقِيلَ: إِنَّهَا جَنَازَةُ يَهُودِيٍّ فَقَالَ: «إِنَّمَا قُمْت للْمَلَائكَة» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن انس ان جنازة مرت برسول الله فقام فقيل: انها جنازة يهودي فقال: «انما قمت للملاىكة» . رواه النساىي

ব্যাখ্যা: পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৭-[৪২] মালিক ইবনু হুবায়রাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কোন মুসলিমের মৃত্যু ঘটলে তিন সারি বিশিষ্ট জামা’আত দ্বারা জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় সম্পন্ন করা গেলে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য (জান্নাত ও মাগফিরাত) ওয়াজিব করে দেন। এ কারণে মালিক ইবনু হুবায়রাহ্ জানাযার সালাতে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা কম দেখলে এ হাদীস অনুযায়ী তাদেরকে তিন সারিতে দাঁড় করাতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

আর ইমাম তিরমিযীর একক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছেন, মালিক ইবনু হুবায়রাহ্ যখন জানাযার সালাত আদায় করতেন, আর (উপস্থিত) মানুষের সংখ্যা কম দেখতেন, তখন তাদের তিন কাতারে বিন্যস্ত করে দিতেন। আর বলতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির জানাযার সালাত তিন সারি লোকে পড়ে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দেন। ইবনু মাজাহও এরূপ বর্ণনা করেছেন।

وَعَنْ مَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ فَيُصَلِّي عَلَيْهِ ثَلَاثَةُ صُفُوفٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلَّا أَوْجَبَ» . فَكَانَ مَالِكٌ إِذَا اسْتَقَلَّ أَهْلَ الْجَنَازَةِ جَزَّأَهُمْ ثَلَاثَةَ صُفُوفٍ لِهَذَا الْحَدِيثِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيِّ: قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ هُبَيْرَةَ إِذَا صَلَّى الْجِنَازَة فَتَقَالَّ النَّاسَ عَلَيْهَا جَزَّأَهُمْ ثَلَاثَةَ أَجْزَاءٍ ثُمَّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى عَلَيْهِ ثَلَاثَةُ صُفُوفٍ أَوْجَبَ» . وروى ابْن مَاجَه نَحوه

وعن مالك بن هبيرة قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «ما من مسلم يموت فيصلي عليه ثلاثة صفوف من المسلمين الا اوجب» . فكان مالك اذا استقل اهل الجنازة جزاهم ثلاثة صفوف لهذا الحديث. رواه ابو داود وفي رواية الترمذي: قال كان مالك بن هبيرة اذا صلى الجنازة فتقال الناس عليها جزاهم ثلاثة اجزاء ثم قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من صلى عليه ثلاثة صفوف اوجب» . وروى ابن ماجه نحوه

ব্যাখ্যা: তিন কাতার মুসল্লী কারো জানাযাহ্ আদায় করলে তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। এ ওয়াজিব বলতে মাগফিরাত তথা আল্লাহর ক্ষমা ওয়াজিব হয়ে যায়, অথবা জান্নাত ওয়াজিব হয়। অথবা জান্নাত এবং ক্ষমা উভয়টিই ওয়াজিব হয়ে যায়। কোন কোন বর্ণনায় জান্নাত শব্দই ব্যবহার করা হয়েছে। ক্ষমা ওয়াজিব হলে সেটা হবে এমন ক্ষমা যা জান্নাতকে ওয়াজিব করে দেয়। সুতরাং কোন বর্ণনা কোন বর্ণনার বিরোধী নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৮-[৪৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযার সালাতে এ দু’আ পড়তেন,

’’আল্ল-হুম্মা আনতা রব্বুহা-, ওয়া আনতা খলাক্বতাহা-, ওয়া আনতা হাদায়তাহা- ইলাল ইসলা-ম ওয়া আনতা ক্ববাযতা রূহাহা-, ওয়া আনতা আ’লামু বিসিররিহা- ওয়া ’আলা- নিয়াতিহা-, জি’না- শুফা’আ- আ ফাগফির লাহূ’’

(অর্থাৎ হে আল্লাহ! এ [জানাযার] ব্যক্তির তুমিই ’রব’। তুমিই তাকে সৃষ্টি করেছ, তুমিই তাকে ইসলামে দীক্ষিত করেছ, তুমিই তার রূহ কবয করেছ তুমিই তার গোপন ও প্রকাশ্য [সব কিছু] জানো। আমরা তার জন্য তোমার কাছে সুপারিশ করতে এসেছি, তুমি তাকে মাফ করে দাও।)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصَّلَاةِ عَلَى الْجَنَازَةِ: اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبُّهَا وَأَنْتَ خَلَقْتَهَا وَأَنْتَ هَدَيْتَهَا إِلَى الْإِسْلَامِ وَأَنْتَ قَبَضْتَ رُوحَهَا وَأَنْتَ أَعْلَمُ بِسِرِّهَا وَعَلَانِيَتِهَا جِئْنَا شُفَعَاءَ فَاغْفِرْ لَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم في الصلاة على الجنازة: اللهم انت ربها وانت خلقتها وانت هديتها الى الاسلام وانت قبضت روحها وانت اعلم بسرها وعلانيتها جىنا شفعاء فاغفر له. رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: মাইয়্যিতের জন্য দু‘আয় এভাবে বাক্য ব্যবহার করে ইনিয়ে বিনিয়ে দু‘আ করা বৈধ এবং তা করা উচিত।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৮৯-[৪৪] সা’ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর পেছনে এমন একটি বালকের জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলাম, যে কক্ষনো কোন গুনাহের কাজ করেনি। আমি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে তার জন্য দু’আ করতে শুনলাম, ’’আল্ল-হুম্মা আ’ইযহু মিন ’আযা-বিল কবরি’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি এ ছেলেটিকে কবর ’আযাব থেকে রক্ষা করো)। (মালিক)[1]

وَعَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ قَالَ: صَلَّيْتُ وَرَاءَ أَبِي هُرَيْرَةَ عَلَى صَبِيٍّ لَمْ يَعْمَلْ خَطِيئَةً قَطُّ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: اللَّهُمَّ أَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْر. رَوَاهُ مَالك

وعن سعيد بن المسيب قال: صليت وراء ابي هريرة على صبي لم يعمل خطيىة قط فسمعته يقول: اللهم اعذه من عذاب القبر. رواه مالك

ব্যাখ্যা: শিশুর জানাযাহ্ আদায় করাও ওয়াজিব। তার জন্যও দু‘আ করতে হবে। ক্ববরে শিশুকে প্রশ্ন করা হবে কিনা? এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন প্রশ্ন করা হবে, কেউ বলেছেন হবে না। একদল এ ব্যাপারে নিরবতা অবলম্বন করেছেন। এ ব্যাপারে কোন নস বা প্রামাণ্য দলীল নেই।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) শিশুর জন্য ক্ববরের ‘আযাব থেকে আশ্রয় চেয়েছেন। তিনি সম্ভবতঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ক্ববরের ‘আযাবের হাদীস শুনেই এ দু‘আ করেছিলেন, আর হাদীসটি ছোট বড় সকলের ব্যাপারে ‘আমল ছিল। কেউ বলেছেন, এখানে ‘আযাব দ্বারা শাস্তি উদ্দেশ্য নয় বরং চিন্তা, বিভীষিকা ও ভয়ানক অবস্থা উদ্দেশ্য। অথবা সচরাচর বড়দের জানাযায় বলার অভ্যাসগত কারণেই শিশুর জন্যও সে দু‘আই পাঠ করেছেন। অথবা তিনি ভেবেছিলেন, এটা হয়তো বড় মানুষ হবে।

হানাফীদের মতে শিশুর জন্য মাগফিরাতের দু‘আ করা বৈধ নয়। তাই বড়দের জন্য পঠিতব্য কোন দু‘আ শিশুর জানাযায় পাঠ করা যাবে না। বরং শিশুর জন্য পঠিতব্য দু‘আঃ

اللهم اجعله لنا فرطاً الخ পাঠ করেই সীমাবদ্ধ রাখবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৯০-[৪৫] ইমাম বুখারী (রহঃ) তা’লীক্ব পদ্ধতিতে (অর্থাৎ সহীহুল বুখারীর তরজমাতুল বাবে সানাদ ছাড়া, এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন), হাসান (রহঃ) বাচ্চার জানাযার সালাতে (প্রথম তাকবীরের পর) সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ পড়তেন। (আর তৃতীয় তাকবীরে) এ দু’আ পড়তেন, ’’আল্ল-হুম্মাজ্ ’আলহু লানা- সালাফান ওয়া ফারাত্বান ওয়া যুখরান ওয়া আজরান’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! এ ছেলেটিকে (কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন) আমাদের অগ্রবর্তী ব্যবস্থাপক, রক্ষিত ভান্ডার ও সাওয়াবের কারণ বানাও)।[1]

وَعَنِ الْبُخَارِيِّ تَعْلِيقًا قَالَ: يَقْرَأُ الْحَسَنُ عَلَى الطِّفْلِ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَيَقُولُ: اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سلفا وفرطا وذخرا وَأَجرا

وعن البخاري تعليقا قال: يقرا الحسن على الطفل فاتحة الكتاب ويقول: اللهم اجعله لنا سلفا وفرطا وذخرا واجرا

ব্যাখ্যা: ‘‘হাসান (রহঃ) পড়েছেন’’, এখানে হাসান বলতে হাসান বসরী (রহঃ); অনেকে হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) যিনি সাহাবী, (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাতী)-কে ধারণা করেন, সেটা সঠিক নয়।

তিনি শিশুর জানাযাতেও প্রথম তাকবীর দিয়ে সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ পাঠ করেছেন। সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ শেষে দ্বিতীয় তাকবীর দিয়ে দরূদ পড়ার পর তৃতীয় তাকবীর দিয়ে পাঠ করেছেন

اَللّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَفَرَطًا وُذُخُرًا وَأَجْرًا

জানাযার নামাযে সূরাহ্ আল ফা-তিহাহ্ পাঠের বিস্তারিত আলোচনা ১৬৬৮ নং হাদীসে হয়ে গেছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৯১-[৪৬] জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (অপূর্ণাঙ্গ) বাচ্চাদের জন্য না জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে হবে, না তাকে কারো ওয়ারিস বানানো যাবে। আর না তার কোন ওয়ারিস হবে। যদি সে জন্মের সময় কোন শব্দ করে না থাকে। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; কিন্তু ইবনু মাজাহوَلَا يُوْرَثُ [অর্থাৎ তারও কেউ উত্তারাধিকারী হবে না] শব্দ উল্লেখ করেননি।)[1]

وَعَنْ جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الطِّفْلُ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِ وَلَا يَرِثُ وَلَا يُوَرَّثُ حَتَّى يَسْتَهِلَّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ إِلَّا أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ: «وَلَا يُورث»

وعن جابر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الطفل لا يصلى عليه ولا يرث ولا يورث حتى يستهل» . رواه الترمذي وابن ماجه الا انه لم يذكر: «ولا يورث»

ব্যাখ্যা: শিশু যদি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর চিৎকার বা কান্না না করে তাহলে তার জানাযাহ্ আদায় করতে হবে না এবং সে কোন সম্পদের ওয়ারিসও হবে না এবং ওয়ারিস বানাবেও না। পূর্বে ১৬৬৭ নং হাদীসের ব্যাখ্যায় এ ব্যাপারে কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়েছে। কান্না, নড়াচড়া ইত্যাদি তার জীবনের প্রমাণ ও নিদর্শন। এ প্রমাণ না মিললে তার জানাযাহ্ আদায় করতে হবে না। ইতিপূর্বে ১৬৫৩ নং হাদীসের ব্যাখ্যায় দেখা গেছে পড়তে হবে। সুতরাং এখানেও ইমামদের সংক্ষিপ্ত মতামত তুলে ধরা হলোঃ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ), ইবনু সীরীন, ইবনুল মুসাইয়্যিব প্রমুখ সাহাবী ও তাবি‘ঈ বলেন, চিৎকার না দিলেও জানাযাহ্ আদায় করতে হবে। ইমাম আহমাদ ইসহাক্ব প্রমুখ ইমামগণ চার মাস দশদিন বয়সের শিশুদের জানাযাহ্ পড়ানোর পক্ষপাতি, কারণ এ সময়ে শিশুর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার ঘটে।

আর যদি নড়া-চড়া ও চিৎকার করে অর্থাৎ প্রাণের নিদর্শন মেলে তবে সে ওয়ারিস হবে।

পক্ষান্তরে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, আওযা‘ঈ প্রমুখ ইমামগণ শিশু চিৎকার না করলে তার জানাযায় পক্ষপাতি নন এবং মিরাসের অধিকারী স্বীকার করেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals

পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা

১৬৯২-[৪৭] আবূ মাস্’ঊদ আল্ আনসারী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমামকে কোন কিছুর উপর (একা) ও মুক্তাদীগণ নীচে দাঁড়িয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে নিষেধ করেছেন। (দারাকুত্বনী, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَقُومَ الْإِمَامُ فَوْقَ شَيْءٍ وَالنَّاسُ خَلْفَهُ يَعْنِي أَسْفَلَ مِنْهُ. رَوَاهُ الدراقطني وَأَبُو دَاوُد

وعن ابي مسعود الانصاري قال: نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يقوم الامام فوق شيء والناس خلفه يعني اسفل منه. رواه الدراقطني وابو داود

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীস থেকে যে বিষয়টি জানা যায় তা হচ্ছে, জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হোক অথবা ফরয সালাত হোক কিংবা অন্যান্য যে সকল সালাত জামা‘আতে আদায় করতে হয়, এ সকল সালাতে মুক্তাদীদের জায়গার সমতল জায়গায় ইমাম দাঁড়াবেন। মুক্তাদীরা নিচে থাকবে আর ইমাম উঁচু জায়গায় দাঁড়াবেন এমনটি যেন না হয়। মুক্তাদীদের স্থান থেকে ইমামের স্থান উঁচু করাকে মাকরূহ বলা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز) 5. Funerals
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে