পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৫-[১৫] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দিতেন। এরপর তিনি বসতেন। আবার তিনি দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় খুতবাহ্ দিতেন। যে ব্যক্তি তোমাকে বলবে, তিনি বসা অবস্থায় খুতবাহ্ দিয়েছেন, সে মিথ্যাবাদী। আল্লাহর শপথ করে বলছি! আমি তাঁর সাথে দু’হাজারেরও বেশী সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছি (তাঁকে বসে বসে খুতবাহ্ দিতে কোন দিন দেখিনি)। (মুসলিম)[1]

عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ قَائِمًا ثُمَّ يَجْلِسُ ثُمَّ يَقُومُ فَيَخْطُبُ قَائِمًا فَمَنْ نَبَّأَكَ أَنَّهُ كَانَ يَخْطُبُ جَالِسًا فَقَدْ كَذَبَ فَقَدَ وَالله صليت مَعَه أَكثر من ألفي صَلَاة. رَوَاهُ مُسلم

عن جابر بن سمرة قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم يخطب قاىما ثم يجلس ثم يقوم فيخطب قاىما فمن نباك انه كان يخطب جالسا فقد كذب فقد والله صليت معه اكثر من الفي صلاة. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (صَلَّيْتُ مَعَه أََكْثَرَ مِنْ أَلْفَيْ صَلَاةٍ) অর্থাৎ জুমু‘আহ্ এবং জুমু‘আহ্ ছাড়া, অথবা এর দ্বারা আধিক্য উদ্দেশ্য, নির্ধারিত সীমা উদ্দেশ্য নয়। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় মাত্র ১০ বছর অবস্থান করেছেন, আর মদীনায় আগমনের প্রথম জুমু‘আহ্ থেকে তিনি ২ হাজার জুমু‘আহ্ আদায় করেননি বরং মোটামোটি ৫০০ জুমু‘আর মতো আদায় করেছেন। (অর্থাৎ ১ বছর = ৫২ জুমু‘আহ্, আর ১০ বছর = ৫২ × ১০ = ৫২০ জুমু‘আহ্)।

আলোচ্য হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সর্বদা দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দেয়ার উপর প্রমাণ করে। আর এর দ্বারা ইমাম শাফি‘ঈ ও মালিক (রহঃ) দলীল গ্রহণ করেছেন। কেননা তাদের মতে দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দেয়া ওয়াজিব।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৬-[১৬] কা’ব ইবনু উজরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি মসজিদে হাজির হলেন। তখন ’আবদুর রহমান ইবনু উম্মুল হাকাম বসে বসে খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন। কা’ব বললেন, এ খবীসের দিকে তাকাও। সে বসে বসে খুতবাহ্ দিচ্ছে। অথচ আল্লাহ তা’আলা বলেন, ’’যখন তারা বাণিজ্য কাফেলা অথবা খেল-তামাশা দেখে, তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে চলে যায়’’- (সূরাহ্ আল জুমু’আহ্ ৬২: ১১)। (মুসলিম)[1]

وَعَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ: أَنَّهُ دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أُمِّ الْحَكَمِ يَخْطُبُ قَاعِدًا فَقَالَ: انْظُرُوا إِلَى هَذَا الْخَبِيثِ يَخْطُبُ قَاعِدًا وَقد قَالَ الله تَعَالَى: (وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوك قَائِما)
رَوَاهُ مُسلم

وعن كعب بن عجرة: انه دخل المسجد وعبد الرحمن بن ام الحكم يخطب قاعدا فقال: انظروا الى هذا الخبيث يخطب قاعدا وقد قال الله تعالى: (واذا راوا تجارة او لهوا انفضوا اليها وتركوك قاىما) رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ রাবীর কথা (وَقَدْ قَالَ اللهُ تَعَالى) ‘‘অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন’’ অস্বীকৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে নির্ধারিত অবস্থা, অর্থাৎ কিভাবে বসে খুতবাহ্ দিবে? অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দিয়েছেন, তার দলীল হলো আল্লাহ তা‘আলার কথাঃ ‘‘তারা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় ছেড়ে দিলো’’- (সূরাহ্ আল জুমু‘আহ্ ৬২ : ১১)।

বিষয়টা হলো যে, মদীনাহ বাসীদের অভাব অনটন ও ক্ষুধা পৌঁছে যায়। অতঃপর সিরিয়া থেকে একদল বণিক মদীনায় আগমন করে, আর তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন, অতঃপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খুতবায় দাঁড়ানো অবস্থায় রেখেই বণিকদের নিকট কেনাকাটার জন্য গেল। অপরদিকে খুব অল্প সংখ্যক ব্যক্তি তার সাথে অবশিষ্ট ছিল। তারা ছিলেন মাত্র ১২ জন তার মধ্যে আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) ছিলেন। সহীহ মুসলিমেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছেঃ এ আয়াত দ্বারা তার দলীল গ্রহণ করার দিক হলো যে, আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দিতেন এবং আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ’’- (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩ : ২১)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেনঃ ‘‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ করো’’- (সূরাহ্ আল হাশর ৫৯ : ৭) এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা- ‘‘সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করো যেরূপ আমাকে সালাত আদায় করতে দেখেছ।’’ সুতরাং খুতবাহ্ (খুৎবা) দাড়িয়েই দিতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৭-[১৭] ’উমারাহ্ ইবনু রুওয়াইবাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বিশর ইবনু মারওয়ান-কে মিম্বরের উপরে দু’হাত উঠিয়ে জুমু’আর খুতবাহ্ দিতে দেখে বললেন, আল্লাহ তার এ হাত দু’টিকে ধ্বংস করুন। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভাষণ পেশ করার সময় দেখেছি, তিনি তাঁর হাত এর অধিক উঁচুতে উঠাতেন না। এ কথা বলে ’উমারাহ্ তর্জনী উঠিয়ে (রসূলের হাত উঁচুতে উঠাবার) পরিমাণের দিকে ইঙ্গিত দিলেন। (মুসলিম)[1]

وَعَن عمَارَة بن رويبة: أَنَّهُ رَأَى بِشْرَ بْنَ مَرْوَانَ عَلَى الْمِنْبَرِ رَافِعًا يَدَيْهِ فَقَالَ: قَبَّحَ اللَّهُ هَاتَيْنِ الْيَدَيْنِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا يَزِيدُ عَلَى أَنْ يَقُولَ بِيَدِهِ هَكَذَا وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ المسبحة. رَوَاهُ مُسلم

وعن عمارة بن رويبة: انه راى بشر بن مروان على المنبر رافعا يديه فقال: قبح الله هاتين اليدين لقد رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم ما يزيد على ان يقول بيده هكذا واشار باصبعه المسبحة. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আহমাদের (৪র্থ খন্ড, ১৩৬ পৃঃ) বর্ণনায় রয়েছে, হুসায়ন বলেনঃ আমি ‘উমারাহ্ ও বিশর-এর পাশেই ছিলাম তিনি আমাদের খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন, যখন দু‘আ করলেন, তখন দু’হাত উত্তোলন করলেন। আত্ তিরমিযী’র শব্দে রয়েছে- (فرفع يديه في الدعاء) অর্থাৎ দু‘আ করতে তিনি দু’হাত উত্তোলন করলেন। বায়হাক্বীও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন, আবূ দাঊদের শব্দে রয়েছেঃ ‘উমারাহ্ ইবনু রুওয়াইবাহ্ বিশর ইবনু মারওয়ান (রহঃ)-কে জুমু‘আয় দু‘আ করা অবস্থায় দেখেছেন। উল্লেখিত দু’হাত উত্তোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে ‘উলামাগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। বায়হাক্বী, নাবাবী ও শাওকানী ‘‘রফ্‘উল ইয়াদায়ন’’ বলতে দু‘আ করার সময়কে বুঝিয়েছেনঃ নাবাবী তার ব্যাখ্যায় বলেছেন খুত্বায় দু‘আর সময় হাত উত্তোলন না করাই সুন্নাত এবং এটাই ইমাম মালিক (রহঃ) ও অন্যান্যদের মত। তবে কতিপয় মালিকীগণ এটাকে বৈধ মনে করেন, কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় যখন পানি প্রার্থনার দু‘আ করতেন তখন দু’হাত উত্তোলন করতেন। এর জবাবে ১ম মতের অনুসারীগণ বলেনঃ এ হাত উত্তোলন ছিল বিশেষ কারণবশতঃ (তা হলো বৃষ্টি চাওয়া)। ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) ‘উমারাহ্ (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীস ও সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস, তিনি (সাহল ইবনু সা‘দ) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিম্বার কিংবা অন্য কথাও কখনো দু‘আ করার সময় হাত উত্তোলন করতে দেখিনি। কিন্তু আমি তাকে অনুরূপ দেখেছি। তিনি শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন এবং মধ্যমা অঙ্গুলি বৃদ্ধা অঙ্গুলি দ্বারা গুটিয়ে নিলেন। এখান থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় দু‘আ করতেন।

বায়হাক্বী (রহঃ) এ দু’টি হাদীস বর্ণনা করার পর বলেনঃ উভয় হাদীসের উদ্দেশ্য খুতবায় দু‘আ সাব্যস্ত করা। তবে খুতবায় দু‘আ অবস্থায় হাত না উঠানোই সুন্নাত। শুধু শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারাই যথেষ্ট। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’হাত প্রসারিত করলেন ও দু‘আ করলেন, এটি ছিল জুমু‘আর খুতবায় পানি চাওয়ার ক্ষেত্রে।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টির প্রার্থনা ছাড়া কথাও কোন দু‘আতে হাত উঠতেন না। আর যুহরীর বর্ণনায় রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিনে যখন খুতবাহ্ দিতেন তখন দু‘আ করতেন এবং শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করতেন এবং লোকজন ‘আমীন’ বলতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৮-[১৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুমু’আর সালাতের দিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে উঠে বসে বললেন, তোমরা বসো। ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) এ নির্দেশ শুনে মসজিদের দরজায় বসে পড়লেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখলেন এবং বললেন, হে ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ! এগিয়ে এসো। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: لَمَّا اسْتَوَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ: «اجْلِسُوا» فَسَمِعَ ذَلِكَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَجَلَسَ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ فَرَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «تَعَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن جابر قال: لما استوى رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم الجمعة على المنبر قال: «اجلسوا» فسمع ذلك ابن مسعود فجلس على باب المسجد فراه رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: «تعال يا عبد الله بن مسعود» رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: এ হাদীস খতীবের মিম্বারের উপর প্রয়োজনীয় কথা বলার বৈধতার দলীল। আবূ দাঊদ (রহঃ) অধ্যায় সাজিয়েছেনঃ (اَلإِمَامُ يُكَلِّمُ الرَّجُلَ فِىْ خُطْبَتِه) ইমাম তার খুতবায় কোন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। বায়হাক্বী তার সুনানের ৩য় খন্ডের ২১৭ পৃষ্ঠা অনুরূপ বর্ণনা করেছেন এবং এটাকেই শক্তিশালী করছে মসজিদে প্রবেশকারী লোকটির ঘটনা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তাহ্ইয়্যাতুল মাসজিদ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেনঃ মৌলিক বিষয় হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত উপবিষ্ট ব্যক্তিদের একজনকে সালাতের জন্য দাঁড়াতে দেখলেন এবং তাকে বসার নির্দেশ দিলেন। কারণ ইমাম মিম্বারে উপর বসার পর (মসজিদে) উপবিষ্ট ব্যক্তির উপর সর্বসম্মতিক্রমে (নফল সালাত আদায় করা) হারাম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৯-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (ইমামের সাথে) জুমু’আর (সালাতের) এক রাক্’আত পেয়েছে, সে যেন এর সাথে দ্বিতীয় রাক্’আত যোগ করে। আর যার দু’ রাক্’আতই ছুটে গেছে, সে যেন চার রাক্’আত আদায় করে; অথবা বলেছেন, সে যেন যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়। (দারাকুত্বনী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «من أدْرك من الْجُمُعَة رَكْعَة فَليصل إِلَيْهَا أُخْرَى وَمَنْ فَاتَتْهُ الرَّكْعَتَانِ فَلْيُصَلِّ أَرْبَعًا» أَو قَالَ: «الظّهْر» . رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من ادرك من الجمعة ركعة فليصل اليها اخرى ومن فاتته الركعتان فليصل اربعا» او قال: «الظهر» . رواه الدارقطني

ব্যাখ্যা: কেউ বলেছেন অত্র হাদীসে রাক্‘আত দ্বারা রুকু’ উদ্দেশ্য। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেনঃ সালাত (ফউত) ছুটে যাওয়ার অর্থ হলোঃ দ্বিতীয় রাক্‘আতের রুকু’র পরে ইমামকে পাওয়া। জুমু‘আর দু’ রাক্‘আত অন্য সকল সালাতের মধ্যে পার্থক্য হলোঃ জুমু‘আর সালাতটা ২ রাক্‘আতে পরিপূর্ণ এবং তা বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য জামা‘আত শর্ত। কাজেই পূর্ণ রাক্‘আত না পাওয়া গেলে জুমু‘আহ্ পাওয়া যাবে না। এ হাদীস দ্বারা ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) তাদের মত অনুযায়ী দলীল গ্রহণ করেছেন যে, যার জুমু‘আর সালাতে দ্বিতীয় রাক্‘আতের রুকু’ ছুটে যাবে এবং সিজদা কিংবা তাশাহুদে প্রবেশ করবে অর্থাৎ ইমামের সাথে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) কিংবা তাশাহুদ পেলে, যুহরের চার রাক্‘আত আদায় করতে হবে। তার জন্য জুমু‘আর দু’ রাক্‘আতের উপর সংক্ষেপ করা যাবে না। কিন্তু এ হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করা মাওকূফ এ কারণে যে, হাদীসে রাক্‘আত দ্বারা রুকু’ উদ্দেশ্য এবং দারাকুত্বনী ও বায়হাক্বীর বর্ণনা দ্বারাও তার জন্য দলীল গ্রহণ করা যায়।

(مَنْ أَدْرَكَ مِنَ الْجُمُعَةِ رَكْعَةً) অর্থাৎ যে জুমু‘আর এক রাক্‘আত ইমামের সাথে পাবে সে অন্য রাক্‘আত আদায় করবে। আর যদি তাদেরকে (জামা‘আত) বসাবস্থায় পায় তবে চার রাক্‘আত যুহর আদায় করে নিবে। কিন্তু এ হাদীসের সানাদে সালিহ ইবনু আবী আল আখজার আল বসরী নামক রাবী রয়েছে, ইবনু মা‘ঈন, আহমাদ, বুখারী, নাসায়ী, ইয়াহ্ইয়া ইবনু আল ক্বাত্তান, আবূ যুর‘আহ্, আবূ হাতিম, ইবনু ‘আদী এবং আল-আজলী (রহঃ) প্রমুখগণ তাকে য‘ঈফ বলেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে