১৪১৭

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত

১৪১৭-[১৭] ’উমারাহ্ ইবনু রুওয়াইবাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বিশর ইবনু মারওয়ান-কে মিম্বরের উপরে দু’হাত উঠিয়ে জুমু’আর খুতবাহ্ দিতে দেখে বললেন, আল্লাহ তার এ হাত দু’টিকে ধ্বংস করুন। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভাষণ পেশ করার সময় দেখেছি, তিনি তাঁর হাত এর অধিক উঁচুতে উঠাতেন না। এ কথা বলে ’উমারাহ্ তর্জনী উঠিয়ে (রসূলের হাত উঁচুতে উঠাবার) পরিমাণের দিকে ইঙ্গিত দিলেন। (মুসলিম)[1]

وَعَن عمَارَة بن رويبة: أَنَّهُ رَأَى بِشْرَ بْنَ مَرْوَانَ عَلَى الْمِنْبَرِ رَافِعًا يَدَيْهِ فَقَالَ: قَبَّحَ اللَّهُ هَاتَيْنِ الْيَدَيْنِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا يَزِيدُ عَلَى أَنْ يَقُولَ بِيَدِهِ هَكَذَا وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ المسبحة. رَوَاهُ مُسلم

وعن عمارة بن رويبة: انه راى بشر بن مروان على المنبر رافعا يديه فقال: قبح الله هاتين اليدين لقد رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم ما يزيد على ان يقول بيده هكذا واشار باصبعه المسبحة. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আহমাদের (৪র্থ খন্ড, ১৩৬ পৃঃ) বর্ণনায় রয়েছে, হুসায়ন বলেনঃ আমি ‘উমারাহ্ ও বিশর-এর পাশেই ছিলাম তিনি আমাদের খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন, যখন দু‘আ করলেন, তখন দু’হাত উত্তোলন করলেন। আত্ তিরমিযী’র শব্দে রয়েছে- (فرفع يديه في الدعاء) অর্থাৎ দু‘আ করতে তিনি দু’হাত উত্তোলন করলেন। বায়হাক্বীও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন, আবূ দাঊদের শব্দে রয়েছেঃ ‘উমারাহ্ ইবনু রুওয়াইবাহ্ বিশর ইবনু মারওয়ান (রহঃ)-কে জুমু‘আয় দু‘আ করা অবস্থায় দেখেছেন। উল্লেখিত দু’হাত উত্তোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে ‘উলামাগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। বায়হাক্বী, নাবাবী ও শাওকানী ‘‘রফ্‘উল ইয়াদায়ন’’ বলতে দু‘আ করার সময়কে বুঝিয়েছেনঃ নাবাবী তার ব্যাখ্যায় বলেছেন খুত্বায় দু‘আর সময় হাত উত্তোলন না করাই সুন্নাত এবং এটাই ইমাম মালিক (রহঃ) ও অন্যান্যদের মত। তবে কতিপয় মালিকীগণ এটাকে বৈধ মনে করেন, কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় যখন পানি প্রার্থনার দু‘আ করতেন তখন দু’হাত উত্তোলন করতেন। এর জবাবে ১ম মতের অনুসারীগণ বলেনঃ এ হাত উত্তোলন ছিল বিশেষ কারণবশতঃ (তা হলো বৃষ্টি চাওয়া)। ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) ‘উমারাহ্ (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীস ও সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস, তিনি (সাহল ইবনু সা‘দ) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিম্বার কিংবা অন্য কথাও কখনো দু‘আ করার সময় হাত উত্তোলন করতে দেখিনি। কিন্তু আমি তাকে অনুরূপ দেখেছি। তিনি শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন এবং মধ্যমা অঙ্গুলি বৃদ্ধা অঙ্গুলি দ্বারা গুটিয়ে নিলেন। এখান থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় দু‘আ করতেন।

বায়হাক্বী (রহঃ) এ দু’টি হাদীস বর্ণনা করার পর বলেনঃ উভয় হাদীসের উদ্দেশ্য খুতবায় দু‘আ সাব্যস্ত করা। তবে খুতবায় দু‘আ অবস্থায় হাত না উঠানোই সুন্নাত। শুধু শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারাই যথেষ্ট। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’হাত প্রসারিত করলেন ও দু‘আ করলেন, এটি ছিল জুমু‘আর খুতবায় পানি চাওয়ার ক্ষেত্রে।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টির প্রার্থনা ছাড়া কথাও কোন দু‘আতে হাত উঠতেন না। আর যুহরীর বর্ণনায় রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিনে যখন খুতবাহ্ দিতেন তখন দু‘আ করতেন এবং শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করতেন এবং লোকজন ‘আমীন’ বলতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)