পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৭৭-[১৯] ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ইরশাদ করতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ যুহরের পূর্বে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর চার রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ), তাহাজ্জুদের চার রাক্’আত সালাত আদায় করার সমান। আর এ সময় সকল জিনিস আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতার ঘোষণা করে। তারপর তিনি (কুরআনের আয়াত) পড়লেন, ’’সকল জিনিসের ছায়া ডান দিক ও বাম দিক হতে আল্লাহ তা’আলার জন্যে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে ঝুঁকে থাকে। আর এরা সবই বিনয়ী’’- (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬: ৪৮)। (তিরমিযী, বায়হাক্বী ফী শু’আবুল ঈমান)[1]
عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: أَرْبَعُ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ بَعْدَ الزَّوَالِ تُحْسَبُ بِمِثْلِهِنَّ فِي صَلَاةِ السَّحَرِ. وَمَا مِنْ شَيْءٍ إِلَّا وَهُوَ يُسَبِّحُ اللَّهَ تِلْكَ السَّاعَةَ ثُمَّ قَرَأَ: (يَتَفَيَّأُ ظِلَالُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالشَّمَائِلِ سُجَّدًا لَهُ وهم داخرون)
رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان
ব্যাখ্যা: (تُحْسَبُ بِمِثْلِهِنَّ فِي صَلَاةِ السَّحَرِ) শেষ রাতের অর্থাৎ তাহাজ্জুদের অনুরূপ সংখ্যক সালাতের মর্যাদার সমান গণ্য করা হয়। কোন কোন মাশায়েখ বলেন, এর হিকমাত এই যে, এ দু’টি সময় রহমাত নাযিল হওয়ার সময়। দিনের অর্ধকালে সূর্য ঢলার পর আকাশের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং ‘ইবাদাত কবূল করা হয়। রাতের অর্ধকাল অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত রহমাত নাযিল হয়। অতএব এ দু’টি সময়ে রহমাত নাযিল হওয়ার মধ্যে যেমন সামঞ্জস্য রয়েছে। অনুরূপ এ দু’সময়ের সালাতের মধ্যেও সামঞ্জস্য রয়েছে। ফলে উভয় সময়ই একটি আরেকটির সমমর্যাদার। তাই এ দু’ওয়াক্তের সালাতও সমমর্যাদার অধিকারী।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৭৮-[২০] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট (অর্থাৎ হুজরায়) কোন দিন ’আসরের পরে দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা ছেড়ে দেননি। (বুখারী, মুসলিম)
বুখারীর এক সানাদের ভাষা হলো, তিনি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেছেনঃ ঐ আল্লাহর শপথ! যিনি রসূলের রূহপাক কবজ করেছেন। তিনি তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত এ দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ছেড়ে দেননি।[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: مَا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ عِنْدِي قطّ
وَفِي رِوَايَةٍ لِلْبُخَارِيِّ قَالَتْ: وَالَّذِي ذَهَبَ بِهِ مَا تَركهمَا حَتَّى لَقِي الله
ব্যাখ্যা: আমার নিকটে এসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ‘আসরের পরে দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করেননি অর্থাৎ ‘আবদুল ক্বায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল আগমনের বৎসর যখন। তিনি ব্যস্ততার কারণে যুহরের পরে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করতে না পারার ফলে ‘আসরের সালাত আদায় করার পর তা আদায় করেন তখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এ সালাত তিনি আর পরিত্যাগ করেননি বরং তা অব্যাহতভাবে আদায় করতে থাকেন। যেমনটি পূর্বে উম্মু সালামার হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
নাসায়ীতে উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘরে মাত্র একবার ‘আসরের পর দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করেছেন। নাসায়ীতে আরেক বর্ণনায় রয়েছে, আমি তাকে এর আগে ও পরে এ দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করতে দেখিনি। হাফিয ইবনু হাজার বলেন, এ হাদীস ও উম্মু সালামার হাদীসের মধ্যে সমন্বয় এই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সালাত স্বীয় ঘরে (‘আয়িশার নিকট) ব্যতীত আদায় করেননি। এজন্যই ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) তা অবহিত ছিলেন না। আর ইমাম শাওকানী সমন্বয় করেছেন এভাবে যে, এ দু’ রাক্‘আত সালাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে আদায় না করে ঘরে আদায় করেছেন ফলে অন্যরা তা অবহিত ছিলেন না।
যারা বলেন ‘আসরের পর নফল সালাত ক্বাযা আদায় করা যায় এ হাদীসটি তাদের দলীল। আর যারা বলেন, ‘আসরের পর তা ক্বাযা করা যায় না তারা বলেন, এটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস। তবে এর জবাবে বলা হয় যে, অব্যাহতভাবে তা আদায় করাটা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস। ক্বাযা আদায় করা তাঁর জন্য খাস নয় বরং তা সবার জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৭৯-[২১] মুখতার ইবনু ফুলফুল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন। আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে প্রশ্ন করেছিলাম, ’আসরের পর নফল সালাতের ব্যাপারে। তিনি (উত্তরে) বললেন। ’উমার (রাঃ) ’আসরের পর নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীদের হাতের উপর প্রহার করতেন। আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর মাগরিবের সালাতের (ফরযের) পূর্বে দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতাম। (এ কথা শুনে) আমি আনাস (রাঃ) কে প্রশ্ন করলাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও কি এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদায় করতে দেখতেন। কিন্তু আদায় করতে বলতেন না। আবার বাধাও দিতেন না। (মুসলিম)[1]
وَعَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ قَالَ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنِ التَّطَوُّعِ بَعْدَ الْعَصْرِ فَقَالَ: كَانَ عُمَرُ يَضْرِبُ الْأَيْدِيَ عَلَى صَلَاةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ وَكُنَّا نُصْلِي عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ غُرُوبِ الشَّمْس قبل صَلَاةِ الْمَغْرِبِ فَقُلْتُ لَهُ: أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيهِمَا؟ قَالَ: كَانَ يَرَانَا نُصَلِّيهِمَا فَلَمْ يَأْمُرْنَا وَلَمْ يَنْهَنَا. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: যারা ‘আসরের সালাতের জন্য ইহরাম বাঁধতেন ‘উমার (রাঃ) তাদের হাতে প্রহার করতেন। অর্থাৎ ‘উমার (রাঃ) ‘আসরের ফরয সালাত আদায় করার পর নফল সালাত আদায় করতে বাধা প্রদান করতেন। এ রকম আরো অনেক হাদীস রয়েছে যাতে ‘উমার (রাঃ) কর্তৃক ‘আসরের পর সালাত আদায়কারীদের প্রহার করার কথা সাব্যস্ত আছে। আর হাদীসগুলো প্রমাণ করে যে, ‘আসরের পর নফল সালাত আদায় করা বৈধ নয়।
(كَانَ يَرَانَا نُصَلِّيهِمَا فَلَمْ يَأْمُرْنَا وَلَمْ يَنْهَنَا) তিনি আমাদেরকে (মাগরিবের আযানের পর) এ দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখতেন কিন্তু তিনি আমাদের তা আদায় করার আদেশ দিতেন না অর্থাৎ যিনি তা আদায় না করতেন তাকে তা আদায় করার আদেশ দিতেন না। আর তিনি আমাদেরকে নিষেধও করতেন না। অর্থাৎ যিনি তা আদায় করতেন তাকে তা আদায় করা থেকে বিরত থাকতে বলতেন না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ নিষেধ না করা প্রমাণ করে যে, মাগরিবের আযানের পর দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করা মাকরূহ নয়। বরং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করা সম্পর্কিত হাদীস প্রথম পরিচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮০-[২২] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মদীনায় ছিলাম। (এ সময়ে অবস্থা এমন ছিল যে, মুয়াযযিন মাগরিবের আযান দিলে (কোন কোন সাহাবা (সাহাবা) ও তাবি’ঈ) মসজিদের খুঁটির দিকে দৌড়াতেন আর দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে আরম্ভ করতেন। এমনকি কোন মুসাফির লোক মসজিদে এসে অনেক লোককে একা একা সালাত আদায় করতে দেখে মনে করতেন (ফরয) সালাত বুঝি সমাপ্ত হয়ে গেছে। আর লোকেরা এখন সুন্নাত পড়ছে। (মুসলিম)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كُنَّا بِالْمَدِينَةِ فَإِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ لِصَلَاةِ الْمَغْرِبِ ابْتَدَرُوا السَّوَارِيَ فَرَكَعُوا رَكْعَتَيْنِ حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ الْغَرِيبَ لَيَدْخُلُ الْمَسْجِدَ فَيَحْسَبُ أَنَّ الصَّلَاةَ قَدْ صُلِّيَتْ مِنْ كَثْرَةِ مَنْ يُصَلِّيهمَا. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: ইমাম কুরতুবী বলেন, এ হাদীসের প্রকাশমান শিক্ষা এই যে, মাগরিবের আযানের পর মাগরিবের ফরয সালাতের পূর্বে দুই রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা এমন একটি বিষয় যা আদায় করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের অনুমতি দিয়েছেন। ফলে তারা তা আদায় করেছেন এবং তা আদায় করতে দ্রুত ধাবমান হতেন। অতএব তা মুস্তাহাব হওয়ার প্রমাণ বহন করে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা আদায় না করাটা মুস্তাহাব না হওয়া বুঝায় না বরং তা নিয়মিত সুন্নাত নয় তাই বুঝায়।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮১-[২৩] মারসাদ ইবনু ’আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার ’উক্ববাহ্ আল জুহানী (রাঃ)-এর নিকট হাযির হয়ে বললাম। আমি কি আপনাকে আবূ তামীম আদ্ দারীর (তাবি’ঈ) একটি বিস্ময়কর ঘটনা শুনাব না? তিনি (আবূ তামীম আদ্ দারী) মাগরিবের সালাতের পূর্বে দু’ রাক্’আত নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেন। তখন ’উক্ববাহ্ বললেন, এ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) তো আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় আদায় করতাম। তখন তিনি বললেন, তাহলে এ সালাত এখন আদায় করতে আপনাদেরকে বাধা দিচ্ছে কে? জবাবে তিনি বললেন (দুনিয়ার) কর্মব্যস্ততায়। (বুখারী)[1]
وَعَن مرْثَد بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: أَتَيْتُ عُقْبَةَ الْجُهَنِيَّ فَقُلْتُ: أَلَا أُعَجِّبُكَ مِنْ أَبِي تَمِيمٍ يَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ؟ فَقَالَ عُقْبَةُ: إِنَّا كُنَّا نَفْعَلُهُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قُلْتُ: فَمَا يَمْنَعُكَ الْآنَ؟ قَالَ: الشّغل. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: (كُنَّا نَفْعَلُه عَلى عَهْدِ رَسُولِ اللّهِ ﷺ) আমরা তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আদায় করতাম। অর্থাৎ তাঁর সময়ে তাঁর উপস্থিতিতে আমরা এ দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করতাম। এ হাদীসটি মাগরিবের পূর্বে দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা বিধিসম্মত হওয়ার একটি দলীল। এ হাদীস আবূ বাকর ইবনুল ‘আরাবীর এ দাবীকে প্রত্যাখ্যান করে যে, সাহাবীদের পরে আর কেউ এ সালাত আদায় করতেন না। কেননা আবূ তামীম ‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক প্রখ্যাত তাবি‘ঈ। যিনি তার উপনাম আবূ তামীম হিসেবেই প্রসিদ্ধ। তিনি এ দু’ রাক্‘আত আদায় করতেন।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮২-[২৪] কা’ব ইবনু ’উজরাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আনসার গোত্র) বানী ’আবদুল আশহাল-এর মসজিদে আসলেন এবং এখানে মাগরিবের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। সালাত সমাপ্ত করার পর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু মানুষকে নফল সালাত আদায় করতে দেখলেন। তিনি বললেন এসব (নফল) সালাত বাড়িতে পড়ার জন্যে। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক সূত্রে পাওয়া যায়, লোকেরা ফরয সালাত আদায় করার পর নফল সালাত আদায়ের জন্যে দাঁড়ালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’এসব সালাত তোমাদের বাড়ীতে আদায় করা উচিত’।)[1]
وَعَن كَعْب بن عجْرَة قَالَ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَى مَسْجِدَ بَنِي عَبْدِ الْأَشْهَلِ فَصَلَّى فِيهِ الْمَغْرِبَ فَلَمَّا قَضَوْا صَلَاتَهُمْ رَآهُمْ يُسَبِّحُونَ بَعْدَهَا فَقَالَ: «هَذِهِ صَلَاةُ الْبُيُوتِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيِّ وَالنَّسَائِيِّ قَامَ نَاسٌ يَتَنَفَّلُونَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكُمْ بِهَذِهِ الصَّلَاة فِي الْبيُوت»
ব্যাখ্যা: هذِه صَلَاةُ الْبُيُوْتِ এটি তো বাড়ীর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)। অর্থাৎ এ সালাত বাড়ীতে আদায় করাই উত্তম মসজিদে আদায় করার চাইতে। আলী ক্বারী বলেন, এ সালাত বাড়ীতে আদায় করা তার জন্য উত্তম যিনি ফরয সালাত করার পর বাড়ীতে চলে যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন। যিনি ফরয সালাতের পর বাড়ীতে না যেয়ে মসজিদে অবস্থান করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি মসজিদেই তা আদায় করবেন। আর সর্বসম্মতিক্রমে তা মাকরূহ নয়।
عَلَيْكُمْ بِهَذِهِ الصَّلَاة فِي الْبيُوت তোমাদের উচিত এ সালাত ঘরে আদায় করা এতে উত্তম ও আফযাল কাজের প্রতি দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তা ঘরে আদায় করা ওয়াজিব নয়।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮৩-[২৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের সালাতের শেষে (সুন্নাতের) দু’ রাক্’আত সালাতে এত বড় ক্বিরাআত (কিরআত) পড়তেন যে, লোকেরা তাদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করে (বাড়ী) চলে যেতেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُطِيلُ الْقِرَاءَةَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ حَتَّى يَتَفَرَّقَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (يُطِيلُ الْقِرَاءَةَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের ফরয সালাতের পর দু’ রাক্‘আত সালাতে ক্বিরাআত (কিরআত) দীর্ঘ করতেন। অর্থাৎ কখনো কখনো এরূপ করতেন। কেননা ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ সালাতে সূরাহ্ কাফিরূন ও সূরাহ্ ইখলাস পাঠ করতেন। অতএব বুঝা গেল যে, এ দীর্ঘ করা সার্বক্ষণিক নয়।
(حَتّى يَتَفَرَّقَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ) এমনকি মসজিদের লোকজন তাদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করে চলে যেতেন। এতে বুঝা যায় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সালাত মসজিদেও আদায় করতেন। অর্থাৎ এ সালাত মসজিদে আদায় করাও বৈধতা বুঝানোর জন্য তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো কখনো এ সালাত মসজিদেই আদায় করতেন।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮৪-[২৬] মাকহূল (রহঃ) এ হাদীসটির বর্ণনা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যে লোক মাগরিবের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার পর কথাবার্তা বলার আগে দু’ রাক্’আত। আর এক বর্ণনায় আছে, চার রাক্’আত সালাত আদায় করবে, তার সালাত ’ইল্লীয়্যিনে পৌঁছে দেয়া হয়। (হাদীসটি মুরসাল)[1]
وَعَنْ مَكْحُولٍ يَبْلُغُ بِهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ قَبْلَ أَنْ يَتَكَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ وَفِي رِوَايَةٍ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ رُفِعَتْ صَلَاتُهُ فِي عِلِّيِّينَ» . مُرْسلا
ব্যাখ্যা: (مَنْ صَلّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ قَبْلَ أَنْ يَتَكَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ) যে ব্যক্তি মাগরিবের ফরয সালাত আদায় করার পর দুনিয়াবী কোন কথাবার্তা না বলে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করে, অর্থাৎ মাগরিবের পরবর্তী সুন্নাত মুয়াক্কাদাহ্ দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করে।
(وَفِي رِوَايَةٍ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ) অন্য বর্ণনায় চার রাক্‘আতের কথা উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে দুই রাক্‘আত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্ আর দুই রাক্‘আত নফল সালাত আদায় করে তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কবূল করা হয় এবং তার মর্যাদাও অনেক। হাদীসটি মুরসাল। কেননা মাকহূল তাবি‘ঈ। তিনি হাদীস বর্ণনায় কোন সাহাবীর উল্লেখ করেননি। ইবনু হাজার বলেন, এ রকম মুরসাল কোন ক্ষতির কারণ নয়। কেননা মুরসাল হাদীসের হুকুম সেই য‘ঈফ হাদীসের মতো যার দুর্বলতা খুব বেশি মারাত্মক নয়। ফাযীলাতের ক্ষেত্রে এরূপ দুর্বল ও মুরসাল হাদীস ‘আমলযোগ্য।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮৫-[২৭] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) থেকেও এভাবে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু তাঁর বিবরণে এ শব্দগুলোও আছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করতেনঃ তোমরা মাগরিবের পরে দু’ রাক্’আত (সুন্নাত) দ্রুত পড়ে নাও। এজন্য যে, এ দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)ও ফরয সালাতের সঙ্গে উপরে (অর্থাৎ ’ইল্লীয়্যিনে) পৌঁছে দেয়া হয়। এ উভয় হাদীসই রযীন বর্ণনা করেছেন, বায়হাক্বীর শু’আবুল ঈমানেও এমনই বর্ণিত আছে।[1]
وَعَن حُذَيْفَة نَحْوَهُ وَزَادَ فَكَانَ يَقُولُ: «عَجِّلُوا الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ فَإِنَّهُمَا تُرْفَعَانِ مَعَ الْمَكْتُوبَةِ» رَوَاهُمَا رَزِينٌ وَرَوَى الْبَيْهَقِيُّ الزِّيَادَةَ عَنْهُ نَحْوَهَا فِي شُعَبِ الْإِيمَان
ব্যাখ্যা: (عَجِّلُوا الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ) তোমরা মাগরিবের পর দু’ রাক্‘আত সুন্নাত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দ্রুত আদায় কর। এ দ্রুত বলতে বিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি সালাতে প্রবেশ করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। অথবা দ্রুত বলতে সালাতে ক্বিরাআত (কিরআত) খাটো করে সালাত সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। আবার এ দু’টোও উদ্দেশ্য হতে পারে। মুহাম্মাদ ইবনু নাসর বলেন, এ হাদীসটি বিশুদ্ধ নয়।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮৬-[২৮] ’আমর ইবনু ’আত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নাফি’ ইবনু যুবায়র (রহঃ) তাঁকে সায়িব (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। তিনি যেন ঐসব জিনিস তাঁকে প্রশ্ন করেন যেসব জিনিস তাকে সালাতে আদায় করতে দেখে মু’আবিয়াহ্ তা করতে বারণ করেছেন। [তাই ’আমর (রহঃ) সায়িব (রাঃ)-এর নিকট গেলেন এবং তার থেকে এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলেন।] তিনি বললেন, হ্যাঁ, একবার আমি ’আমীরে মু’আবিয়ার সঙ্গে মাক্সূরায় জুমু’আর সালাত আদায় করেছি। ইমাম সালাম ফিরাবার পর আমি (ফরয পড়ার স্থানেই) দাঁড়িয়ে গেলাম ও সুন্নাত সালাত আদায় করতে শুরু করলাম। (’আমীরে মু’আবিয়াহ্ সালাত শেষ করে নিজের বাড়ীতে চলে গেলেন)। যাওয়ার সময় তিনি এক লোককে, আমাকে বলার জন্যে বলে পাঠালেন যে, ঐ সময় (জুমু’আহ্ আদায়ের সময়) তুমি যা করেছ ভবিষ্যতে তুমি যেন তা না করো। যখন তুমি জুমু’আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন ফরয সালাতকে আর কোন সালাতের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলবে না, যে পর্যন্ত না তুমি কোন কথাবার্তা বলো অথবা (মাসজিদ থেকে) বের হয়ে যাও। কারণ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন, আমরা যেন এক সালাতকে আর সালাতের সঙ্গে মিশিয়ে না ফেলি, যতক্ষণ পর্যন্ত না কথাবার্তা বলি অথবা মাসজিদ থেকে বের হয়ে না যাই। (মুসলিম)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ قَالَ: إِنَّ نَافِعَ بْنَ جُبَيْرٍ أَرْسَلَهُ إِلَى السَّائِبِ يَسْأَلُهُ عَنْ شَيْءٍ رَآهُ مِنْهُ مُعَاوِيَةُ فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ: نَعَمْ صَلَّيْتُ مَعَهُ الْجُمُعَةَ فِي الْمَقْصُورَةِ فَلَمَّا سَلَّمَ الْإِمَامُ قُمْتُ فِي مَقَامِي فَصَلَّيْتُ فَلَمَّا دَخَلَ أَرْسَلَ إِلَيَّ فَقَالَ: لَا تَعُدْ لِمَا فَعَلْتَ إِذَا صَلَّيْتَ الْجُمُعَةَ فَلَا تَصِلْهَا بِصَلَاةٍ حَتَّى تكلم أوتخرج فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَنَا بِذَلِكَ أَنْ لَا نُوصِلَ بِصَلَاةٍ حَتَّى نتكلم أَو نخرج. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (لَا تَعُدْ لِمَا فَعَلْتَ) তুমি যা করেছ পুনরায় আর তা করবে না। অর্থাৎ যেখানে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছ সেখান থেকে সরে না গিয়ে অথবা অন্যের সাথে কথাবার্তা না বলে সেখানে সুন্নাত সালাত আদায় করবে না। (إِذَا صَلَّيْتَ الْجُمُعَةَ) যখন জুমু‘আর সালাত আদায় কর। এখানে জুমু‘আর উল্লেখ একটি উদাহরণ অন্যান্য ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও জুমু‘আর সালাতের মতই।
হাদীসের শিক্ষাঃ ফরয সালাত আদায় করার পর সে স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র সুন্নাত ও নফল সালাত আদায় করা মুস্তাহাব। সর্বোত্তম হল ঘরে গিয়ে তা আদায় করা। আর মসজিদে তা আদায় করলে ফরয সালাত আদায়ের স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র তা আদায় করা।
(حَتّى تَكَلَّمَ) যতক্ষণ কথা না বলবে। এ থেকে জানা যায় যে ফরয ও নফল সালাতের মাঝে কথা বলার মাধ্যমেও দু’সালাতের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো যায়। তবে স্থান পরিবর্তন করা অধিক উত্তম।
পরিচ্ছেদঃ ৩০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৮৭-[২৯] ’আত্বা থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) যখন মক্কায় জুমু’আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন (তখন জুমু’আর ফরয সালাত শেষ হবার পর) একটু সামনে এগিয়ে যেতেন এবং দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতেন। এরপর আবার সামনে এগিয়ে যেতেন ও চার রাক্’আত সালাত আদায় করতেন। আর তিনি যখন মদীনাতে ছিলেন, জুমু’আর সালাতের ফরয আদায় করে নিজের বাড়ীতে চলে যেতেন। ঘরে দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতেন, মসজিদে (ফরয সালাত ব্যতীত কোন) সালাত আদায় করতেন না। এর কারণ সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করতেন।
আবূ দাঊদ, আর তিরমিযীর বর্ণনার ভাষা হলো, ’আত্বা বললেন, আমি ইবনু ’উমার (রাঃ) কে দেখেছি যে, তিনি জুমু’আর পরে দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করে আবার চার রাক্’আত আদায় করতেন।[1]
وَعَنْ عَطَاءٍ قَالَ: كَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا صَلَّى الْجُمُعَةَ بِمَكَّةَ تَقَدَّمَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَتَقَدَّمُ فَيُصَلِّي أَرْبَعًا وَإِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ صَلَّى الْجُمُعَةَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَلَمْ يُصَلِّ فِي الْمَسْجِدِ فَقِيلَ لَهُ. فَقَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَفْعَله)
رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَفِي رِوَايَةِ التِّرْمِذِيِّ قَالَ: (رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ صَلَّى بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ ثمَّ صلى بعد ذَلِك أَرْبعا)
ব্যাখ্যা: (كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ يَفْعَله) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করতেন। তার অনুসরণে আমিও তাই করি। এ হাদীসের প্রকাশমান অর্থ এই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর পরে সুন্নাত সালাতে মক্কায় এবং মদীনাতে পার্থক্য করতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কাতে জুমু‘আর পরে মসজিদে ছয় রাক্‘আত সুন্নাত আদায় করতেন। আর মদীনাতে জুমু‘আর পরে । তিনি মসজিদে সালাত আদায় না করে স্বীয় ঘরে গিয়ে দুই রাক্‘আত সুন্নাত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর পরে ছয় রাক্‘আত সালাত আদায় করেছেন মর্মে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। তবে ইবনু ‘উমার (রাঃ) কর্তৃক তা আদায় করা সাব্যস্ত আছে। আর ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি তাকে এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ইমাম শাওকানী বলেন, জুমু‘আর পরবর্তী সুন্নাত বাড়ীতে আদায় করা উত্তম নাকি মসজিদে আদায় করা উত্তম এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফি‘ঈ, মালিক ও আহমাদ (রহঃ)-এর মতে তা বাড়ীতে আদায় করা উত্তম। এর স্বপক্ষে তারা এ হাদীস প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করেছেন ‘‘ফরয সালাত ব্যতীত অন্যান্য সালাত বাড়ীতে আদায় করা উত্তম’’।