পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

’আল্লামা কুসত্বুলানী (রহঃ)-এর ভাষ্য মতেঃ غَيْنٌ বর্ণে ফাতাহ যোগে غَسْلٌ শব্দটি মাসদার। এর অর্থ কোন কিছু ধৌত করা এবং গোসল করা। غَيْنٌ বর্ণে কাসরাহ্ যোগে غِسْلٌ শব্দের অর্থ বরইপাতা, খিত্বমী ঘাস ইত্যাদির নাম যেসব বস্ত্তর দ্বারা ধৌত করা হয়। আর غَيْنٌ বর্ণে যম্মাযোগে غُسْلٌ শব্দের অর্থ পানি যা দ্বারা গোসল করা হয়। প্রথম দু’ক্ষেত্রে غَسْلٌ এর অর্থ কোন কিছুর উপর পানি ঢেলে দেয়া। তবে গোসলে শরীর ঘষে পরিষ্কার করা বা ঘর্ষণ করার বিধান নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। মালিকীগণ গোসলে ঘর্ষণের শর্তারোপ করেছে। তাদের মতে যাতে ঘর্ষণ নেই তাকে গোসল বলা হবে না বরং তা হলো পানি ঢেলে দেয়া বা বাহিয়ে দেয়া। কিছু হানাফীদের মতে গোসলের ক্ষেত্রে ঘর্ষণটি আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্তব্য। ভাষ্যকার বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ’’তোমরা চুল ধৌত করো এবং চামড়া পরিষ্কার করো’’ দ্বারা ঘর্ষণের আবশ্যকতার বিষয়টি অনুমিত হয়। কারণ ঘর্ষণ ব্যতীত শুধু পানি ঢালার মাধ্যমে শরীর পরিষ্কার হয় না। অধিকন্তু গোসলের বিধানের ক্ষেত্রে ঘর্ষণ একটি উপযোগী বিষয়। কারণ গোসল হলো প্রতিপালকের সামনে দন্ডায়মানের উদ্দেশে বাহ্যিক অঙ্গসমূহের অবস্থা সুন্দর করা যা ঘর্ষণ ব্যতীত পূর্ণতা লাভ করে না।


৪৩০-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ স্ত্রীলোকের চার শাখার (দুই হাত দুই পা) মাঝখানে বসে সঙ্গমে রত হয় তখন তার ওপর গোসল করা ফরয হয়ে যায়, যদিও বীর্যপাত না হয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذا جلس بَيْنَ شُعَبِهَا الْأَرْبَعِ ثُمَّ جَهَدَهَا فَقَدْ وَجَبَ الْغسْل وَإِن لم ينزل»

عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اذا جلس بين شعبها الاربع ثم جهدها فقد وجب الغسل وان لم ينزل»

ব্যাখ্যা: قوله (إِذَا جَلَسَ أَحَدُكُمْ بَيْنَ شُعَبِهَا الْأَرْبَعِ) ‘‘তোমাদের কেউ স্ত্রীলোকের দু’হাত ও দু’পায়ের মাঝে বসবে, তার সঙ্গে কিছু করার চেষ্টা করবে’’, অর্থাৎ- সহবাস করবে। আবূ দাঊদের বর্ণনা রয়েছে, পুরুষের লজ্জাস্থানের সঙ্গে স্ত্রীলোকের লজ্জাস্থান মিলানো।

যারা এরূপ করবে তাদের উভয়ের ওপর গোসল করা ওয়াজিব হবে বীর্য বের হোক বা না হোক। গোসল ওয়াজিব হওয়ার জন্য বীর্য বের হওয়া শর্ত করা হয়নি। পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের অংশ (সুপারি) স্ত্রীলিঙ্গের ভিতর অদৃশ্য হয়ে যাওয়াতে গোসল ওয়াজিব হবে।

চার খলীফা, সাহাবীগণের অধিকাংশ, তাবি‘ঈন ও তাদের পরবর্তীদের মত হলো শুধু সঙ্গমেই গোসল করা অত্যাবশ্যক হবে। যদিও বীর্য বের না হোক এটাই সঠিক মত। এ বিষয়ে সহীহুল বুখারীর হাদীসের উপর সাহাবীগণের ইজমা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩১-[২] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পানিতেই পানির প্রয়োজন, অর্থাৎ- বীর্যপাত ছাড়া গোসল ফরয নয়। (মুসলিম)[1]

ইমাম মুহয়্যিইউস্ সুন্নাহ্ বলেন, এ হুকুম রহিত হয়ে গেছে।

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
قَالَ الشَّيْخُ الْإِمَامُ مُحْيِي السّنة C: هَذَا مَنْسُوخ

وعن ابي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «انما الماء من الماء» . رواه مسلم قال الشيخ الامام محيي السنة C: هذا منسوخ

ব্যাখ্যা: আর এ হাদীসটি নির্দেশ করে (حصر)-কে অর্থাৎ- পরিবেষ্টনকে বুঝানো হয়েছে। বীর্য বের না হলে গোসল করতে হবে না এবং গোসল করতে হবে না মর্মে হাদীসটি রহিত বা মানসূখ হয়েছে। এটাকে মুসলিম ‘ইত্ববান ইবনু মালিক-এর রিওয়ায়াতে বর্ণনা করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩২-[৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, ’’পানি পানি হতে’’ এ হুকুম হলো স্বপ্নদোষের জন্য। (তিরমিযী)[1] আমি এ হাদীস বুখারী ও মুসলিমে পাইনি।

بَابُ الْغُسْلِ

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: إِنَّمَا الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ فِي الِاحْتِلَامِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَلَمْ أَجِدْهُ فِي الصَّحِيحَيْنِ

وقال ابن عباس: انما الماء من الماء في الاحتلام. رواه الترمذي ولم اجده في الصحيحين

ব্যাখ্যা: قوله (هذا) অর্থাৎ- আবূ সা‘ঈদ-এর হাদীস রহিত হয়েছে সাহল ইবনু সা‘দ-এর হাদীস দ্বারা এটা বর্ণিত আবূ কা‘ব কর্তৃক ইসলামের প্রথম যুগে অনুমতি ছিল গোসল না করলেও চলবে। অতঃপর পরবর্তীতে গোসল করার আদেশ দেয়া হয়েছে। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরবর্তীতে ধৌত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৩-[৪] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন (আনাস (রাঃ)-এর মা) উম্মু সুলায়ম (রাঃ)বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ তা’আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষের কারণে তার ওপর কি গোসল ফরয হয়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তরে বললেনঃ হাঁ, যদি (ঘুম থেকে জেগে উঠে) বীর্য দেখে। এ উত্তর শুনে উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) (লজ্জায়) স্বীয় মুখ ঢেকে ফেললেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! স্ত্রীলোকেরও আবার স্বপ্নদোষ হয় (পুরুষের ন্যায় বীর্যপাত হয়)। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। কি আশ্চর্য! (তা না হলে) তার সন্তান তার সদৃশ হয় কীভাবে? (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ قَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ فَهَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ من غسل إِذا احْتَلَمت قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِذَا رَأَتِ الْمَاءَ» فَغَطَّتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَجْهَهَا وَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوَتَحْتَلِمُ الْمَرْأَةُ قَالَ: «نعم تربت يَمِينك فَبِمَ يشبهها وَلَدهَا؟»

وعن ام سلمة قالت قالت ام سليم: يا رسول الله ان الله لا يستحيي من الحق فهل على المراة من غسل اذا احتلمت قال النبي صلى الله عليه وسلم «اذا رات الماء» فغطت ام سلمة وجهها وقالت يا رسول الله اوتحتلم المراة قال: «نعم تربت يمينك فبم يشبهها ولدها؟»

ব্যাখ্যা: قوله (قَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ) তার পরিপূর্ণ নাম উম্মু সুলায়ম বিনতু মালহান (আনসারিয়্যাহ্) আনাস ইবনু মালিক-এর মাতা। তার বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ১৪টি, এটার মধ্যে হতে একটি বুখারীতে ও দু’টি মুসলিমে। তিনি মারা যান ‘উসমান (রাঃ)-এর খিলাফাতের সময়।

তার বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেনঃ যখন সে দেখবে নিশ্চয় তার স্বামী তার সাথে স্বপ্নে সহবাস করছে। তাকে কি গোসল করতে হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, হ্যাঁ। যখন সে বীর্য দেখবে। এটাতে প্রমাণ হলো যে, স্বপ্নে স্ত্রীলোকের বীর্য বের হলেও গোসল করা অত্যাবশ্যক হবে। আর এ কারণেই স্ত্রীলোকদের সদৃশ সন্তান হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৪-[৫] কিন্তু ইমাম মুসলিম (রহঃ) উম্মু সুলায়ম (রাঃ)-এর বর্ণনায় এ কথাগুলো বেশী বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাও বলেছেন যে, সাধারণত পুরুষের বীর্য গাঢ় ও সাদা। স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা ও হলদে। উভয়ের বীর্যের মধ্যে যেটিই জয়ী হয়, অর্থাৎ- যে বীর্য আগে গর্ভাশয়ে প্রবেশ করে সন্তান তার সাদৃশ্য হয়।[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَزَادَ مُسْلِمٌ بِرِوَايَةِ أُمِّ سُلَيْمٍ: «أَنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ فَم أَيِّهِمَا عَلَا أَوْ سَبَقَ يَكُونُ مِنْهُ الشَّبَهُ»

وزاد مسلم برواية ام سليم: «ان ماء الرجل غليظ ابيض وماء المراة رقيق اصفر فم ايهما علا او سبق يكون منه الشبه»

ব্যাখ্যা: قوله (وَزَادَ مُسْلِمٌ بِرِوَايَةِ أُمُّ سُلَيْمٍ) ‘‘নিশ্চয়ই পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা হলুদ বর্ণের।’’ কেননা পুরুষের বীর্য কখনো রোগের কারণে পাতলা হয়। আর লাল বর্ণ হয়ে থাকে অত্যধিক সহবাসের কারণে। আবার কখনো স্ত্রীলোকের বীর্য সাদা হয় তার শক্তির শ্রেষ্ঠত্বের কারণে। সাওবান হতে মুসলিমে বর্ণনা রয়েছে পুরুষের বীর্য সাদা, আর মহিলার বীর্য হলুদ বর্ণের।

আর যখন উভয়ের বীর্য কার্যত একত্র হয় পুরুষের বীর্যের প্রাধান্য লাভ করলে আল্লাহর হুকুমে স্ত্রীলোকের বীর্যের সঙ্গে সংমিশ্রণে সন্তান পুরুষ হয়। আর যখন স্ত্রীলোকের বীর্য পুরুষের বীর্যের উপর বৃদ্ধি হয় বা প্রাধান্য লাভ করে তখন আল্লাহর হুকুমে মেয়ে সন্তান হয়।

ছেলে-মেয়ে পিতা-মাতার আকৃতিতে সাদৃশ্যপূর্ণ হয় এটার ছয়টি অবস্থা বা কারণ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৫-[৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতার জন্য ফরয গোসল করার সময় প্রথমে (কব্জি পর্যন্ত) দুই হাত ধুতেন। এরপর সালাতের উযূর মতো উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন। অতঃপর আঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে তা দিয়ে মাথার চুলের গোড়া খিলাল করতেন। অতঃপর মাথার উপর তিন অঞ্জলি পানি ঢালতেন, তারপর শরীরের সর্বাঙ্গ পানি দিয়ে ভিজাতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

কিন্তু ইমাম মুসলিম-এর অপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাত্রে হাত ডুবিয়ে দেয়ার আগে কব্জি পর্যন্ত হাত ধুতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতের তালুতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুতেন, অতঃপর উযূ করতেন।

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَن عَائِشَةُ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَانَ إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ بَدَأَ فَغَسَلَ يَدَيْهِ ثُمَّ يَتَوَضَّأُ كَمَا يَتَوَضَّأُ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ يُدْخِلُ أَصَابِعَهُ فِي الْمَاءِ فَيُخَلِّلْ بِهَا أُصُولَ شَعَرِهِ ثمَّ يصب على رَأسه ثَلَاث غرف بيدَيْهِ ثمَّ يفِيض المَاء على جلده كُله
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: يَبْدَأُ فَيَغْسِلُ يَدَيْهِ قَبْلَ أَنْ يُدْخِلَهُمَا الْإِنَاءَ ثُمَّ يُفْرِغُ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَاله فَيغسل فرجه ثمَّ يتَوَضَّأ

وعن عاىشة زوج النبي صلى الله عليه وسلم ان النبي صلى الله عليه وسلم: كان اذا اغتسل من الجنابة بدا فغسل يديه ثم يتوضا كما يتوضا للصلاة ثم يدخل اصابعه في الماء فيخلل بها اصول شعره ثم يصب على راسه ثلاث غرف بيديه ثم يفيض الماء على جلده كله وفي رواية لمسلم: يبدا فيغسل يديه قبل ان يدخلهما الاناء ثم يفرغ بيمينه على شماله فيغسل فرجه ثم يتوضا

ব্যাখ্যা: قوله (إِذَا اغْتَسَلَ) অর্থাৎ- যখন নাপাকবস্তু ধৌত করার ইচ্ছা করবে। অপবিত্র বস্তু দূর করার জন্য অথবা অপবিত্রতা সংঘটিত হওয়ার কারণে, অতঃপর তার দু’হাত ধৌত করেন, মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে দু’বার অথবা তিনবারের কথা। উভয় হাত ধৌত করেন পরিষ্কার করার জন্য। সম্ভাবনা রয়েছে হস্তদ্বয়ে অপবিত্র বস্তু থাকার।

চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছাতে হবে। ধৌত করার পূর্বে উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  করা স্বাতন্ত্র সুন্নাত। উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করা শুরু করতে হবে দু’হাত ধৌত করার মাধ্যমে, অতঃপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দিবে, অতঃপর বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করবে, অতঃপর উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  করবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৬-[৭] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (আমার খালা উম্মুল মু’মিনীন) মায়মূনাহ্ (রাঃ)বলেছেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোসলের জন্য পানি রাখলাম এবং কাপড় দিয়ে পর্দা করে দিলাম। প্রথমে তিনি দুই হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং কব্জি পর্যন্ত হাত ধুয়ে নিলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে কিছু পানি নিয়ে তা দিয়ে লজ্জাস্থান ধুলেন। তারপর মাটিতে হাত ঘষে তা মুছে নিলেন। তারপর নিয়ম মতো হাত ধুলেন। এরপর মাথার উপর পানি ঢাললেন। সমস্ত শরীর পানি দিয়ে ভিজালেন। তারপর নিজ স্থান হতে একটু সরে গিয়ে পা ধুলেন। আমি (শরীরের পানি মুছে ফেলার জন্য) তাঁকে কাপড় দিলাম। কিন্তু তিনি তা নিলেন না, দুই হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ: وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غُسْلًا فَسَتَرْتُهُ بِثَوْبٍ وَصَبَّ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَهُمَا ثُمَّ صَبَّ بِيَمِينِهِ عَلَى شَمَالِهِ فَغَسَلَ فَرْجَهُ فَضَرَبَ بِيَدِهِ الْأَرْضَ فَمَسَحَهَا ثُمَّ غَسَلَهَا فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ ثُمَّ صَبَّ عَلَى رَأْسِهِ وَأَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ ثُمَّ تَنَحَّى فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ فَنَاوَلْتُهُ ثَوْبًا فَلَمْ يَأْخُذْهُ فَانْطَلق وَهُوَ ينفض يَدَيْهِ. وَلَفظه للْبُخَارِيّ

وعن ابن عباس قال قالت ميمونة: وضعت للنبي صلى الله عليه وسلم غسلا فسترته بثوب وصب على يديه فغسلهما ثم صب بيمينه على شماله فغسل فرجه فضرب بيده الارض فمسحها ثم غسلها فمضمض واستنشق وغسل وجهه وذراعيه ثم صب على راسه وافاض على جسده ثم تنحى فغسل قدميه فناولته ثوبا فلم ياخذه فانطلق وهو ينفض يديه. ولفظه للبخاري

ব্যাখ্যা: قوله (غُسْلًا) অর্থাৎ- এটা গোসল করার পানি। অতঃপর আমি [মায়মূনাহ্ (রাঃ)] কাপড় দিয়ে পর্দা বা আড়াল করি যাতে গোসল করার সময় কেউ তাকে (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) দেখতে না পান।

এটাতে শারী‘আতের বিধান হলো যে, গোসল করার সময় পর্দা করতে হবে যদিও বাড়িতে গোসল করে। তার দু’ কব্জা পর্যন্ত ধৌত করেন। আর তার বাম হাত দ্বারা লজ্জাস্থান ধৌত করেন। অতঃপর স্বীয় বাম হাত জমিনে ঘষেন, হাত থেকে দুর্গন্ধযুক্ত দূর করার জন্য। পরিষ্কারের মধ্যে মুবালাগাহ্ করা উম্মাতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য।

তিনি [মায়মূনাহ্ (রাঃ)] ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে, অপবিত্রতা থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ধৌত করার প্রসঙ্গে বর্ণনা করেছেন। আর এটাতে রয়েছে তিনবার কুলি করার, তিনবার নাকে পানি দেয়ার, তিনবার চেহারা ধৌত করার ও দু’ হাত ধৌত করার ও মাথায় পানি ঢেলে দেয়ার। আর এখানে প্রকাশ হলো যে, তিনি স্বীয় মাথা মাসাহ করেননি। অতঃপর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করেন যেভাবে সালাতের জন্য উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করেন। সম্ভব হলে উভয় হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য করা। অথবা ‘আয়িশার হাদীসকে রূপক হিসেবে ব্যবহার করা। অতঃপর তিনি পাদ্বয় ধৌত করেন মাঝে মধ্যে জলাভূমিতে যদি স্থির বা দন্ডায়মান  না হন, বরং তক্তার উপরে অথবা পাথরের অথবা উঁচু স্থানে।

‘আয়িশাহ্ (রাঃ)ও মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস উযূর শুরু হতে শেষ পর্যন্ত ধৌত করার অবস্থা বর্ণনা করার উপর অন্তর্ভুক্ত। উযূর শুরু পাত্রের মধ্যে হস্তদ্বয় প্রবেশ করার পূর্বে ধৌত করা। অতঃপর লজ্জাস্থান ধৌত করা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৭-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক আনসার মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে হায়যের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। কীভাবে গোসল করতে হবে তিনি তাকে সে ব্যাপারে জানিয়ে দিলেন। তারপর বললেন, মিস্কের সুগন্ধিযুক্ত একখন্ড কাপড় নিয়ে তা দিয়ে ভালোভাবে পাক-পবিত্রতা অর্জন করবে। মহিলাটি বলল, আমি কীভাবে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। সে আবার বললো, আমি তা দ্বারা কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সুবহানাল্লাহ (এটাও বুঝলে না)! তা দ্বারা পবিত্রতা লাভ করবে। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, তখন আমি তাকে আমার দিকে টেনে আনলাম এবং (চুপিসারে) বললাম, রক্তক্ষরণের পর তা দ্বারা (গুপ্তাঙ্গের ভিতরের অংশ) মুছে নিবে (এতে দুর্গন্ধ দূর হবে)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: إِنَّ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَنِ غُسْلِهَا مِنَ الْمَحِيضِ فَأَمَرَهَا كَيْفَ تَغْتَسِل قَالَ: «خُذِي فِرْصَةً مِنْ مَسْكٍ فَتَطَهَّرِي بِهَا» قَالَت كَيفَ أتطهر قَالَ «تطهري بهَا» قَالَت كَيفَ قَالَ «سُبْحَانَ الله تطهري» فاجتبذتها إِلَيّ فَقلت تتبعي بهَا أثر الدَّم

وعن عاىشة قالت: ان امراة من الانصار سالت النبي صلى الله عليه وسلم: عن غسلها من المحيض فامرها كيف تغتسل قال: «خذي فرصة من مسك فتطهري بها» قالت كيف اتطهر قال «تطهري بها» قالت كيف قال «سبحان الله تطهري» فاجتبذتها الي فقلت تتبعي بها اثر الدم

ব্যাখ্যা: قوله (أَنَّ امْرَأَةً) অর্থাৎ- এটার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- আনসারদের একজন মহিলা। কেউ বলেনঃ সে আসমা বিনতু শিকলিল আনসারিয়্যাহ্।

নিশ্চয়ই একজন মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেছেন ঋতু অবস্থায় গোসল করার প্রসঙ্গে। অতঃপর তিনি তাকে আদেশ করেছেন, কিভাবে সে গোসল করবে। তিনি বলেন, মিসকের তুলার টুকরা নাও। অতঃপর এটার মাধ্যমে তুমি পবিত্রতা অর্জন করো। তিনি বলেন, কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এটার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করো। তিনি বলেন, কিভাবে? তিনি বলেন, সুবহানাল্লাহ! পবিত্রতা অর্জন করো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৮-[৯] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি এমন এক মহিলা যে, আমার মাথার চুলের বেণী বেশ শক্ত করে বাঁধি। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরয গোসলের সময় আমি কি তা খুলে ফেলব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, না খুলবে না। তুমি তোমার মাথার উপর তিন অঞ্জলি পানি ঢেলে দিবে। এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট। তারপর তুমি তোমার সর্বাঙ্গে পানি ঢেলে নিবে ও পবিত্রতা অর্জন করবে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ قُلْتُ: يَا رَسُولَ الله إِنِّي امْرَأَة أَشد ضفر رَأْسِي فأنقضه لغسل الْجَنَابَة قَالَ «لَا إِنَّمَا يَكْفِيكِ أَنْ تَحْثِي عَلَى رَأْسِكِ ثَلَاثَ حَثَيَاتٍ ثُمَّ تُفِيضِينَ عَلَيْكِ الْمَاءَ فَتَطْهُرِينَ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ام سلمة قالت قلت: يا رسول الله اني امراة اشد ضفر راسي فانقضه لغسل الجنابة قال «لا انما يكفيك ان تحثي على راسك ثلاث حثيات ثم تفيضين عليك الماء فتطهرين» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: قوله (أَشُدُّ) এ হাদীস নির্দেশ করে এ প্রসঙ্গে যে, অপবিত্রতা থেকে ধৌত করার মাঝে চুলের খোঁপা বা ঝুঁটি খুলে ফেলা স্ত্রীলোকদের ওপর অত্যাবশ্যক নয়। ঋতুবতী মহিলার হায়য ধৌত করার মাঝেও নয় বরং ঋতুবতী মেয়েলোকের জন্য যথেষ্ট সে তার মাথার উপর তিন অঞ্জলি ভরে পানি ঢেলে দিবে।

সাওবান (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ফাতাওয়া জিজ্ঞেস করেছেন। অতঃপর তিনি বলেছেন, পুরুষ ব্যক্তি তার মাথায় (পানি) ছড়িয়ে দিবে তারপর তার স্বীয় মাথা ধৌত করা উচিত। এমনকি চুলের গোড়া পর্যন্ত যেন পানি পৌঁছে দেয়। পক্ষান্তরে স্ত্রীলোকের ওপর অত্যাবশ্যক নয় যে, সে তার মাথার খোঁপা খুলবে। তার তালুদ্বয় দ্বারা তিন চুল্লু পানি মাথায় দিবে। ইবনুল কাইয়ূম বলেন, এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন আবূ দাঊদ ইসমা‘ঈল ইবনু ‘আইয়্যাশ হতে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৩৯-[১০] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন এবং এক সা’ থেকে পাঁচ মুদ্দ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ وَيَغْتَسِلُ بِالصَّاعِ إِلَى خَمْسَةِ أَمْدَادٍ

وعن انس قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم يتوضا بالمد ويغتسل بالصاع الى خمسة امداد

ব্যাখ্যা: قوله (كَانَ النَّبِيُّ ﷺ يَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ وَيَغْتَسِلُ بِالصَّاعِ)

এক صاع (সা') চার মুদ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুদ অনুযায়ী এক মুদ ইরাক্ববাসীদের মাপ অনুযায়ী দু’ রত্বল (رطل) হিজাযবাসীর মাপ অনুযায়ী এক رطل এবং رطل এর তিন ভাগের ১ ভাগ। এক رطل 40 = তোলা। এক رطل صاع (দুই সের ১১ ছটাক) প্রায় আড়াই কেজি।

মূলকথা হলো صاع ৫ মুদের বেশী হবে না এবং ৪ মুদের কম হবে না।

ইমাম মুসলিম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করতেন তিন মুদ অথবা তার নিকটবর্তী মুদ পানি ধারণ ক্ষমতা রাখে এমন পাত্র থেকে গোসল করতেন।

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে, তিনি বলেনঃ আমি ও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করতাম। যে পাত্রকে اَلْفِرَقَ বলা হয়, আর তাতে তিন صَاعً পরিমাণ পানি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ হচ্ছে পানি ব্যবহারে অপচয় করা যাবে না। কমও করা ঠিক হবে না প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

৪৪০-[১১] [মহিলা তাবি’ঈ] মু’আযাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ আমি ও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ও তাঁর মাঝখানে রাখা একটি পাত্র হতে পানি নিয়ে একসাথে (পবিত্রতার) গোসল করতাম। তিনি খুব তাড়াতাড়ি করে আমার আগে পানি উঠিয়ে নিতেন। আর আমি তখন বলতে থাকতাম, আমার জন্য কিছু রাখুন, আমার জন্য কিছু রাখুন। মু’আযাহ্ (রহঃ) বলেন, তখন তারা উভয়ে নাপাক অবস্থায় থাকতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ بيني وَبَينه وَاحِد فَيُبَادِرُنِي حَتَّى أَقُولَ دَعْ لِي دَعْ لِي قَالَت وهما جنبان

وعن عاىشة قالت: كنت اغتسل انا ورسول الله صلى الله عليه وسلم من اناء بيني وبينه واحد فيبادرني حتى اقول دع لي دع لي قالت وهما جنبان

ব্যাখ্যা: স্বামী স্ত্রী অপবিত্রতা অবস্থায় একটা পাত্র হতে পানি নিয়ে গোসল সমাধা করা বৈধ। ত্বহাবী নকল করেছেন, অতঃপর কুরতুবী এবং নাবাবী এ প্রসঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেন। এটাতে আরো প্রমাণিত হয় যে, সামান্য পানি হতে অপবিত্র ব্যক্তি চুল্লু ভরে নেয়া বৈধ। আর এটা পবিত্রতা অর্জনে বাধা দেয় না। এ ব্যাপারে পুরুষ ও মহিলা সমান, পার্থক্য নেই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে