৪৩০

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ

’আল্লামা কুসত্বুলানী (রহঃ)-এর ভাষ্য মতেঃ غَيْنٌ বর্ণে ফাতাহ যোগে غَسْلٌ শব্দটি মাসদার। এর অর্থ কোন কিছু ধৌত করা এবং গোসল করা। غَيْنٌ বর্ণে কাসরাহ্ যোগে غِسْلٌ শব্দের অর্থ বরইপাতা, খিত্বমী ঘাস ইত্যাদির নাম যেসব বস্ত্তর দ্বারা ধৌত করা হয়। আর غَيْنٌ বর্ণে যম্মাযোগে غُسْلٌ শব্দের অর্থ পানি যা দ্বারা গোসল করা হয়। প্রথম দু’ক্ষেত্রে غَسْلٌ এর অর্থ কোন কিছুর উপর পানি ঢেলে দেয়া। তবে গোসলে শরীর ঘষে পরিষ্কার করা বা ঘর্ষণ করার বিধান নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। মালিকীগণ গোসলে ঘর্ষণের শর্তারোপ করেছে। তাদের মতে যাতে ঘর্ষণ নেই তাকে গোসল বলা হবে না বরং তা হলো পানি ঢেলে দেয়া বা বাহিয়ে দেয়া। কিছু হানাফীদের মতে গোসলের ক্ষেত্রে ঘর্ষণটি আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্তব্য। ভাষ্যকার বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ’’তোমরা চুল ধৌত করো এবং চামড়া পরিষ্কার করো’’ দ্বারা ঘর্ষণের আবশ্যকতার বিষয়টি অনুমিত হয়। কারণ ঘর্ষণ ব্যতীত শুধু পানি ঢালার মাধ্যমে শরীর পরিষ্কার হয় না। অধিকন্তু গোসলের বিধানের ক্ষেত্রে ঘর্ষণ একটি উপযোগী বিষয়। কারণ গোসল হলো প্রতিপালকের সামনে দন্ডায়মানের উদ্দেশে বাহ্যিক অঙ্গসমূহের অবস্থা সুন্দর করা যা ঘর্ষণ ব্যতীত পূর্ণতা লাভ করে না।


৪৩০-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ স্ত্রীলোকের চার শাখার (দুই হাত দুই পা) মাঝখানে বসে সঙ্গমে রত হয় তখন তার ওপর গোসল করা ফরয হয়ে যায়, যদিও বীর্যপাত না হয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْغُسْلِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذا جلس بَيْنَ شُعَبِهَا الْأَرْبَعِ ثُمَّ جَهَدَهَا فَقَدْ وَجَبَ الْغسْل وَإِن لم ينزل»

عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اذا جلس بين شعبها الاربع ثم جهدها فقد وجب الغسل وان لم ينزل»

ব্যাখ্যা: قوله (إِذَا جَلَسَ أَحَدُكُمْ بَيْنَ شُعَبِهَا الْأَرْبَعِ) ‘‘তোমাদের কেউ স্ত্রীলোকের দু’হাত ও দু’পায়ের মাঝে বসবে, তার সঙ্গে কিছু করার চেষ্টা করবে’’, অর্থাৎ- সহবাস করবে। আবূ দাঊদের বর্ণনা রয়েছে, পুরুষের লজ্জাস্থানের সঙ্গে স্ত্রীলোকের লজ্জাস্থান মিলানো।

যারা এরূপ করবে তাদের উভয়ের ওপর গোসল করা ওয়াজিব হবে বীর্য বের হোক বা না হোক। গোসল ওয়াজিব হওয়ার জন্য বীর্য বের হওয়া শর্ত করা হয়নি। পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের অংশ (সুপারি) স্ত্রীলিঙ্গের ভিতর অদৃশ্য হয়ে যাওয়াতে গোসল ওয়াজিব হবে।

চার খলীফা, সাহাবীগণের অধিকাংশ, তাবি‘ঈন ও তাদের পরবর্তীদের মত হলো শুধু সঙ্গমেই গোসল করা অত্যাবশ্যক হবে। যদিও বীর্য বের না হোক এটাই সঠিক মত। এ বিষয়ে সহীহুল বুখারীর হাদীসের উপর সাহাবীগণের ইজমা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة)