কসম সূর্যের ও তার কিরণের। আল-বায়ান
শপথ সূর্যের ও তার (উজ্জ্বল) কিরণের, তাইসিরুল
শপথ সূর্যের যখন সে আচ্ছন্ন করে, মুজিবুর রহমান
By the sun and its brightness Sahih International
১. শপথ সূর্যের এবং তার কিরণের(১),
(১) এখানে ضحى শব্দটি شمس এর বিশেষণ। এ শব্দের কয়েকটি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হলো দিন, দিনের প্রথমভাগ। [মুয়াসসার, তাবারী] এর আরেকটি অর্থ হতে পারে, তা হলো, আর শপথ সূর্যের কিরণ বা আলোর। [সা’দী, জালালাইন]
তাফসীরে জাকারিয়া১ । শপথ সূর্যের এবং তার (দিনের প্রথম ভাগের) কিরণের। [1]
[1] চাশতের সময় অথবা সূর্যের কিরণের কসম। অথবা ‘য্বুহা’ বলতে দিনকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, সূর্য এবং দিনের কসম।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম চাঁদের, যখন তা সূর্যের অনুগামী হয়। আল-বায়ান
শপথ চাঁদের যখন তা সূর্যের পিছনে আসে, তাইসিরুল
শপথ চন্দ্রের যখন ওটা সূর্যের পর আবির্ভুত হয়। মুজিবুর রহমান
And [by] the moon when it follows it Sahih International
২. শপথ চাঁদের, যখন তা সূর্যের পর আবির্ভূত হয়(১),
(১) অর্থাৎ শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের অনুসরণ করে, সূর্যের পর আসে। এর অর্থ এই হতে পারে যে, যখন চন্দ্র সূর্যাস্তের পরপরেই উদিত হয়। মাসের মধ্যভাগে এরূপ হয়। তখন চন্দ্র প্রায় পরিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। [কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া২। শপথ চন্দ্রের, যখন তা সূর্যের পর আবির্ভূত হয়। [1]
[1] অর্থাৎ, যখন সূর্যাস্তের পরে পরেই চন্দ্র উদয় হয়। যেমন, মাসের প্রথম পক্ষে হয়ে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম দিবসের, যখন তা সূর্যকে প্রকাশ করে। আল-বায়ান
শপথ দিনের যখন তা সূর্যকে উদ্ভাসিত করে, তাইসিরুল
শপথ দিনের, যখন ওটা ওকে প্রকাশ করে। মুজিবুর রহমান
And [by] the day when it displays it Sahih International
৩. শপথ দিনের, যখন সে সূর্যকে প্রকাশ করে(১),
(১) এখানে جَلَّاهَا এর সর্বনাম দ্বারা সূর্যও উদ্দেশ্য হতে পারে, আবার অন্ধকার বা আঁধার দূর করাও বোঝানো যেতে পারে। অর্থাৎ শপথ দিবসের, যখন তা সূর্যকে প্রকাশ করে। অথবা যখন তা অন্ধকারকে আলোকিত করে দুনিয়াকে প্রকাশ করে। [কুরতুবী] এর তৃতীয় অর্থ হতে পারে, শপথ সূর্যের, যখন তা পৃথিবীকে প্রকাশিত করে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৩। শপথ দিবসের, যখন তা সূর্যকে প্রকাশ করে। [1]
[1] অথবা অন্ধকারকে দূরীভূত করে। ‘অন্ধকার’ শব্দের উল্লেখ তো পূর্বে নেই; তবে বাগধারার ইঙ্গিতে তা বোঝা যায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম রাতের, যখন তা সূর্যকে ঢেকে দেয়। আল-বায়ান
শপথ রাতের যখন তা সূর্যকে ঢেকে নেয়, তাইসিরুল
শপথ রাতের, যখন ওটা ওকে আচ্ছাদিত করে। মুজিবুর রহমান
And [by] the night when it covers it Sahih International
৪. শপথ রাতের, যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে(১),
(১) অর্থাৎ শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে। এর অর্থ, সূর্যের কিরণকে ঢেকে দেয়। এর আরেকটি অর্থ হতে পারে, আর তা হলো, শপথ রাত্রির, যখন তা পৃথিবীকে আচ্ছাদিত করে; ফলে পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। [কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া৪। শপথ রজনীর, যখন তা সূর্যকে আচ্ছাদিত করে। [1]
[1] অর্থাৎ, সূর্যকে আছন্ন করে ফেলে এবং চতুর্দিকে অন্ধকার ছেয়ে আসে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম আসমানের এবং যিনি তা বানিয়েছেন। আল-বায়ান
শপথ আসমানের আর সেটা যিনি বানিয়েছেন তাঁর, তাইসিরুল
শপথ আকাশের এবং যিনি ওটা নির্মাণ করেছেন তাঁর। মুজিবুর রহমান
And [by] the sky and He who constructed it Sahih International
৫. শপথ আসমানের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন তাঁর(১),
(১) অর্থাৎ শপথ আকাশের ও যিনি তা নির্মাণ করেছেন তাঁর। এ-অর্থানুসারে ما কে من এর অর্থে নিতে হবে। [তাবারী] আয়াতের আরেক অর্থ হচ্ছে, শপথ আকাশের এবং তা নির্মাণের। এ অবস্থায় ما কে مصدرية এর অর্থে নিতে হবে। [কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া৫। শপথ আকাশের এবং তার নির্মাণ কৌশলের। [1]
[1] অথবা সেই সত্তার কসম, যিনি তা নির্মাণ করেছেন। এ অর্থে ما শব্দ مَن শব্দের অর্থে ব্যবহার হয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম যমীনের এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন। আল-বায়ান
শপথ যমীনের আর সেটা যিনি বিছিয়েছেন তাঁর, তাইসিরুল
শপথ পৃথিবীর এবং যিনি ওকে বিস্তৃত করেছেন তাঁর। মুজিবুর রহমান
And [by] the earth and He who spread it Sahih International
৬. শপথ জমিনের এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন তার(১),
(১) এর এক অর্থ শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তাকে বিস্তৃত করেছেন। অপর অর্থ হচ্ছে, শপথ পৃথিবীর এবং একে বিস্তৃত করার। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া৬। শপথ পৃথিবীর এবং তার বিস্তীর্ণতার। [1]
[1] অথবা যিনি তাকে বিস্তীর্ণ করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানকসম নাফ্সের এবং যিনি তা সুসম করেছেন। আল-বায়ান
শপথ প্রাণের আর তাঁর যিনি তা সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন, তাইসিরুল
শপথ মানুষের এবং তাঁর, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন। মুজিবুর রহমান
And [by] the soul and He who proportioned it Sahih International
৭. শপথ নফসের(১) এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন তার(২),
(১) এখানে মূলে نفس শব্দটি বলা হয়েছে। নাফস শব্দটি দ্বারা যেকোনো প্রাণীর নাফস বা আত্মা উদ্দেশ্য হতে পারে, আবার জবাবদিহি করতে বাধ্য মানুষের নফসও উদ্দেশ্য হতে পারে। [সা’দী]
(২) এখানেও দু' রকম অর্থ হতে পারে। একটি হলো, শপথ নফসের এবং তার, যিনি সেটাকে সুবিন্যস্ত করেছেন। আরেকটি হলো, শপথ মানুষের প্রাণের এবং তা সুবিন্যস্ত করার। এখানে سَوَّاهَا মানে হচ্ছে, নাফসকে তিনি সুপরিকল্পিতভাবে ও সুবিন্যস্তভাবে তৈরি করেছেন। [কুরতুবী] এছাড়া “সুবিন্যস্ত করার” মধ্যে এ অর্থও রয়েছে যে, তাকে জন্মগতভাবে সহজ সরল প্রকৃতির উপর সৃষ্টি করেছেন। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৭। শপথ আত্মার এবং তার সুঠাম গঠনের। [1]
[1] অথবা যিনি তাকে সুঠাম বানিয়েছেন। তাকে সুঠাম বানিয়েছেন অর্থ হল তাকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপযুক্ত বানিয়েছেন। তাকে বিশ্রী বা বেঢঙ্গের বানাননি।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর তিনি তাকে অবহিত করেছেন তার পাপসমূহ ও তার তাকওয়া সম্পর্কে। আল-বায়ান
অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। তাইসিরুল
অতঃপর তাকে তার অসৎ কাজ ও তার সৎ কার্জের জ্ঞান দান করেছেন, মুজিবুর রহমান
And inspired it [with discernment of] its wickedness and its righteousness, Sahih International
৮. তারপর তাকে তার সৎকাজের এবং তার অসৎ-কাজের জ্ঞান দান করেছেন(১)—
(১) এর অর্থ, আল্লাহ তার নফসের মধ্যে নেকি ও গুনাহ উভয়টি স্পষ্ট করেছেন এবং চিনিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রত্যেক নফসেরই ভালো ও মন্দ কাজ করার কথা রেখে দিয়েছেন; এবং যা তাকদীরে লেখা রয়েছে তা সহজ করে দিয়েছেন। [ইবন কাসীর] একথাটিই অন্যত্র এভাবে বলা হয়েছে, “আর আমরা ভালো ও মন্দ উভয় পথ তার জন্য সুস্পষ্ট করে রেখে দিয়েছি।” [সূরা আল-বালাদ: ১০] আবার কোথাও বলা হয়েছে, “আমরা তাদেরকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি, চাইলে তারা কৃতজ্ঞ হতে পারে আবার চাইলে হতে পারে অস্বীকারকারী।” [সূরা আল-ইনসান: ৩] একথাটিই অন্যত্র বলা হয়েছে এভাবে, “অবশ্যই আমি শপথ করছি নাফস আল-লাওয়ামার” [সূরা আল-কিয়ামাহ: ২] সুতরাং মানুষের মধ্যে একটি নাফিসে লাওয়ামাহ্ (বিবেক) আছে। সে অসৎকাজ করলে তাকে তিরস্কার করে। আরও এসেছে, “আর প্রত্যেক ব্যক্তি সে যতই ওজর পেশ করুক না কেন সে কি তা সে খুব ভালো করেই জানে।” [সূরা আল-কিয়ামাহ: ১৪–১৫]
এই তাফসীর অনুযায়ী এরূপ প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই যে, মানুষের সৃষ্টির মধ্যেই যখন পাপ ও ইবাদত নিহিত আছে, তখন সে তা করতে বাধ্য। এর জন্যে সে কোন সওয়াব অথবা আযাবের যোগ্য হবে না। একটি হাদীস থেকে এই তাফসীর গৃহীত হয়েছে। তাকদীর সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জওয়াবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলোচ্য আয়াত তেলাওয়াত করেন। [মুসলিম: ২৬৫০, মুসনাদে আহমাদ: ৪/৪৩৮] এ থেকে বোঝা যায় যে, আল্লাহ তা'আলা মানুষের মধ্যে গোনাহ ও ইবাদতের যোগ্যতা গচ্ছিত রেখেছেন, কিন্তু তাকে কোন একটি করতে বাধ্য করেননি; বরং তাকে উভয়ের মধ্য থেকে যে কোন একটি করার ক্ষমতা দান করেছেন। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দো’আ করতেন, (اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا) অর্থাৎ “হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক।” [মুসলিম: ২৭২২]
তাকওয়া যেভাবে ইলহাম হয়, তেমনিভাবে আল্লাহ তা'আলা কোন কোন মানুষের পাপের কারণে তাদের অন্তরে পাপেরও ইলহাম করেন। [উসাইমীন: তাফসীর জুয আম্মা] যদি আল্লাহ কারও প্রতি সদয় হন তবে তাকে ভাল কাজের প্রতি ইলহাম করেন। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজ করতে সমর্থ হয় সে যেন আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে। আর যদি সে খারাপ কাজ করে তবে তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা উচিত। আল্লাহ কেন তাকে দিয়ে এটা করালেন, বা এ গোনাহ তার দ্বারা কেন হতে দিলেন, এ ধরনের যুক্তি দাঁড় করানোর মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়েই রাখা যায়, কোন সমাধানে পৌছা যাবে না। কারণ; রহমতের তিনিই মালিক; তিনি যদি তার রহমত কারও প্রতি উজাড় করে দেন। তবে সেটা তার মালিকানা থেকে তিনি খরচ করলেন পক্ষান্তরে যদি তিনি তার রহমত কাউকে না দেন তবে কারও এ ব্যাপারে কোন আপত্তি তোলার অধিকার নেই।
যদি আপত্তি না তোলে তাওবাহ করে নিজের কোন ক্রটির প্রতি দিক নির্দেশ করে আল্লাহ্র দিকে ফিরে আসে তবে হয়ত আল্লাহ্ তাকে পরবর্তীতে সঠিক পথের দিশা দিবেন এবং তাঁর রহমত দিয়ে ঢেকে দিবেন এবং তাকওয়ার অধিকারী করবেন। ঐ ব্যক্তির ধ্বংস অনিবার্য যে আল্লাহর কর্মকাণ্ডে আপত্তি তোলতে আমল পরিত্যাগ করে তাকদীরের দোষ দিয়ে বসে থাকে। হ্যাঁ, যদি কোন বিপদাপদ এসে যায় তখন শুধুমাত্র আল্লাহর তাকদীরে সস্তুষ্টি প্রকাশের খাতিরে তাকদীরের কথা বলে শোকরিয়া আদায় করতে হবে। পক্ষান্তরে গোনাহের সময় কোনভাবেই তাকদীরের দোহাই দেয়া যাবে না। বরং নিজের দোষ স্বীকার করে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে ভবিষ্যতের জন্য তাওফীক কামনা করতে হবে। এজন্যই বলা হয় যে, “গোনাহের সময় তাকদীরের দোহাই দেয়া যাবে না, তবে বিপদাপদের সময় তাকদীরের দোহাই দেয়া যাবে।” [দেখুন: উসাইমীন, আল-কাওলুল মুফীদ শারহু কিতাবুত তাওহীদঃ ২/৩৯৬–৪০২]
তাফসীরে জাকারিয়া৮। অতঃপর তাকে তার অসৎকর্মও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। [1]
[1] ‘জ্ঞানদান করা’র এক অর্থ এই যে, তিনি তাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং তাকে আম্বিয়াগণ ও আসমানী কিতাব দ্বারা ভাল-মন্দ চিনিয়ে দিয়েছেন। অথবা এর অর্থ যে, তার মস্তিষ্ক ও প্রকৃতিতে ভাল-মন্দ, নেকী-বদীর অনুভূতি প্রদান করেছেন। যাতে সে নেকীর পথ অবলম্বন করে এবং বদীর পথ হতে দূরে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিঃসন্দেহে সে সফলকাম হয়েছে, যে তাকে পরিশুদ্ধ করেছে। আল-বায়ান
সেই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পবিত্র করেছে। তাইসিরুল
সে’ই সফলকাম হবে যে নিজেকে পবিত্র করবে। মুজিবুর রহমান
He has succeeded who purifies it, Sahih International
৯. সে-ই সফলকাম হয়েছে, যে নিজেকে পবিত্র করেছে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৯। সে সফলকাম হবে, যে তাকে পরিশুদ্ধ করবে। [1]
[1] অর্থাৎ, যে আত্মাকে শিরক, অবাধ্যতা থেকে এবং চারিত্রিক অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করবে, সে পরকালে সফলতা ও মুক্তি লাভ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানএবং সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা (নাফস)-কে কলুষিত করেছে। আল-বায়ান
সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে। তাইসিরুল
এবং সে’ই ব্যর্থ মনোরথ হবে যে নিজেকে কলুষাচ্ছন্ন করবে। মুজিবুর রহমান
And he has failed who instills it [with corruption]. Sahih International
১০. আর সে-ই ব্যর্থ হয়েছে, যে নিজেকে কলুষিত করেছে।(১)
(১) পূর্বোক্ত শপথগুলোর জওয়াবে এ আয়াতগুলোয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমে বলা হয়েছে, (قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا) এখানে, زَكَّاهَا শব্দটি تزكية থেকে। এর প্রকৃত অর্থ পরিশুদ্ধতা; বৃদ্ধি বা উন্নতি। বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি নিজের নফস্ ও প্রবৃত্তিকে দুস্কৃতি থেকে পাক-পবিত্র করে, তাকে সৎকাজ ও নেকির মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ ও উন্নত করে পবিত্রতা অর্জন করে, সে সফলকাম হয়েছে। এর মোকাবেলায় বলা হয়েছে, دَسَّاهَا এর শব্দমূল হচ্ছে تَدْسِيْسٌ। যার মানে হচ্ছে দাবিয়ে দেয়া, লুকিয়ে ফেলা; পথভ্রষ্ট করা। পূর্বাপর সম্পর্কের ভিত্তিতে এর অর্থও এখানে সুস্পষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ সেই ব্যক্তিই ব্যৰ্থ, যে নিজের নাফসকে নেকী ও সৎকর্মের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ ও উন্নত করার পরিবর্তে দাবিয়ে দেয়, তাকে বিভ্রান্ত করে অসৎপ্রবণতার দিকে নিয়ে যায়। [ফাতহুল কাদীর] কোন কোন মুফাসসির আয়াত দুটির আরেকটি অর্থ করেছেন, সে ব্যক্তি সফলকাম হয়; যাকে আল্লাহ পরিশুদ্ধ করেন এবং সে ব্যক্তি ব্যৰ্থ, যাকে আল্লাহ তা'আলা গোনাহে ডুবিয়ে দেন। [ইবন কাসীর, তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া১০। এবং সে ব্যর্থ হবে, যে তাকে কলুষিত করবে। [1]
[1] অর্থাৎ, আত্মাকে যে কলুষিত ও ভ্রষ্ট করবে, সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। دسّ শব্দটি تَدسِيس শব্দ হতে উৎপত্তি হয়েছে। যার অর্থ হল, এক বস্তুকে অন্য বস্তুতে লুকিয়ে ফেলা। সুতরাং এখানে دساها এর অর্থ হল, যে নিজের আত্মাকে লুকিয়ে ফেলল এবং অনর্থক ছেড়ে দিল এবং তাকে আল্লাহর আনুগত্য এবং নেক আমল দ্বারা প্রকাশ করল না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান