পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
এবং উক্ত মজলিসে অংশগ্রহণ করা উত্তম আর বিনা ওজরে তা ছেড়ে চলে যাওয়া নিষেধ।
আল্লাহ বলেছেন,
واصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُريدُوْنَ وَجْهَهُ وَلاَ تَعْدُ عَيْناكَ عَنْهُمْ
অর্থাৎ, তুমি নিজেকে তাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখ, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে থাকে এবং তুমি তাদের নিকট হতে স্বীয় দৃষ্টি ফিরায়ো না। (সূরা কাহফ ২৮)
(৩৬৯১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’নিশ্চয় আল্লাহর কিছু ফিরিশতা আছেন, যাঁরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে-ফিরে আহলে যিকর খুঁজতে থাকেন। অতঃপর যখন কোন সম্প্রদায়কে আল্লাহর যিকররত অবস্থায় পেয়ে যান, তখন তাঁরা একে অপরকে আহবান ক’রে বলতে থাকেন, ’এস তোমাদের প্রয়োজনের দিকে।’ সুতরাং তাঁরা (সেখানে উপস্থিত হয়ে) তাদেরকে নিজেদের ডানা দ্বারা নিচের আসমান পর্যন্ত বেষ্টিত ক’রে ফেলেন। অতঃপর তাঁদেরকে তাঁদের প্রতিপালক জানা সত্ত্বেও তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ’আমার বান্দারা কী বলছে?’ ফিরিশতারা বলেন, ’তারা আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছে, আপনার মহত্ত্ব বর্ণনা করছে, আপনার প্রশংসা ও গৌরব বয়ান করছে।’ আল্লাহ বলেন, ’তারা কি আমাকে দেখেছে?’ ফিরিশতারা বলেন, ’জী না, আল্লাহর কসম! তারা আপনাকে দেখেনি।’ আল্লাহ বলেন, ’কী হত, যদি তারা আমাকে দেখত?’ ফিরিশতারা বলেন, ’যদি তারা আপনাকে দেখত, তাহলে আরো বেশী বেশী ইবাদত, গৌরব বর্ণনা ও তসবীহ করত।’ আল্লাহ বলেন, ’কী চায় তারা?’ ফিরিশতারা বলেন, ’তারা আপনার কাছে বেহেশত্ চায়।’ আল্লাহ বলেন, ’তারা কি বেহেশত দেখেছে?’
ফিরিশতারা বলেন, ’জী না, আল্লাহর কসম! হে প্রতিপালক! তারা তা দেখেনি।’ আল্লাহ বলেন, ’কী হত, যদি তারা তা দেখত?’ ফিরিশতারা বলেন, ’তারা তা দেখলে তার জন্য আরো বেশী আগ্রহান্বিত হত। আরো বেশী বেশী তা প্রার্থনা করত। তাদের চাহিদা আরো বড় হত।’ আল্লাহ বলেন, ’তারা কী থেকে পানাহ চায়?’ ফিরিশতারা বলেন, ’তারা দোযখ থেকে পানাহ চায়।’ আল্লাহ বলেন, ’তারা কি দোযখ দেখেছে?’ ফিরিশতারা বলেন, ’জী না, আল্লাহর কসম! হে প্রতিপালক! তারা তা দেখেনি।’ আল্লাহ বলেন, ’কী হত, যদি তারা তা দেখত?’ ফিরিশতারা বলেন, ’তারা তা দেখলে বেশী বেশী করে তা হতে পলায়ন করত। বেশী বেশী ভয় করত।’ তখন আল্লাহ বলেন, ’আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি তাদেরকে মাফ করে দিলাম।’ ফিরিশতাদের মধ্য থেকে একজন বলেন, ’কিন্তু ওদের মধ্যে অমুক ওদের দলভুক্ত নয়। সে আসলে নিজের কোন প্রয়োজনে সেখানে এসেছে।’ আল্লাহ বলেন, ’(আমি তাকেও মাফ করে দিলাম! কারণ,) তারা হল এমন সম্প্রদায়, যাদের সাথে যে বসে সেও বঞ্চিত (হতভাগা) থাকে না।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إنَّ للهِ تَعَالٰـى مَلائِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمَاً يَذْكُرُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ تَنَادَوْا : هَلُمُّوا إِلَى حَاجَتِكُمْ فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِم إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَسْألُهُمْ رَبُّهُمْ وَهُوَ أعْلَم : مَا يَقُولُ عِبَادي؟ قَالَ : يَقُولُون يُسَبِّحُونَكَ وَيُكبِّرُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ ويُمَجِّدُونَكَ فيَقُولُ : هَلْ رَأَوْنِي ؟ فيَقُولُونَ : لاَ وَاللهِ مَا رَأَوْكَ فَيَقُولُ : كَيْفَ لَوْ رَأَوْنِي قَالَ : يَقُولُونَ : لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيداً وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحاً فَيَقُولُ : فَمَاذَا يَسْأَلُونَ ؟ قَالَ : يَقُولُونَ: يَسْأَلُونَكَ الجَنَّةَ قَالَ : يَقُولُ : وَهَل رَأَوْهَا ؟ قَالَ : يَقُولُونَ : لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا قَالَ : يَقُولُ : فَكَيفَ لَوْ رَأَوْهَا ؟ قَالَ : يَقُولُونَ : لَوْ أَنَّهُمْ رَأوْهَا كَانُوا أَشَدَّ عَلَيْهَا حِرْصاً وَأَشَدَّ لَهَا طَلَباً، وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً قَالَ : فَمِمَّ يَتَعَوَّذُونَ ؟ قَالَ : يَقُولُون : يَتَعَوَّذُونَ مِنَ النَّارِ ؛ قَالَ : فيَقُولُ: وَهَلْ رَأَوْهَا ؟ قَالَ : يَقُولُونَ : لاَ وَاللهِ مَا رَأَوْهَا فيَقُولُ : كَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا قَالَ : يَقُولُونَ : لَوْ رَأوْهَا كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَاراً وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً قَالَ : فيَقُولُ : فَأُشْهِدُكُمْ أنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُم قَالَ : يَقُولُ مَلَكٌ مِنَ المَلاَئِكَةِ : فِيهِمْ فُلاَنٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ قَالَ : هُمُ الجُلَسَاءُ لاَ يَشْقَى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯২) মুসলিমের আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অবশ্যই আল্লাহর অতিরিক্তি কিছু ভ্রাম্যমান ফিরিশতা আছেন, যাঁরা যিকরের মজলিস খুঁজতে থাকেন। অতঃপর যখন কোন এমন মজলিস পেয়ে যান, যাতে আল্লাহর যিকর হয়, তখন তাঁরা সেখানে বসে যান। তাঁরা পরস্পরকে ডানা দিয়ে ঢেকে নেন। পরিশেষে তাঁদের ও নিচের আসমানের মধ্যবর্তী জায়গা পরিপূর্ণ ক’রে দেন। অতঃপর লোকেরা মজলিস ত্যাগ করলে তাঁরা আসমানে উঠেন। তখন আল্লাহ আযযা অজাল্ল অধিক জানা সত্ত্বেও তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ’তোমরা কোথা থেকে এলে?’ তাঁরা বলেন, ’আমরা পৃথিবী থেকে আপনার এমন কতকগুলি বান্দার নিকট থেকে এলাম, যারা আপনার তাসবীহ, তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদ পড়ে এবং আপনার নিকট প্রার্থনা করে।’ তিনি বলেন, ’তারা আমার নিকট কী প্রার্থনা করে?’
তাঁরা বলেন, ’তারা আপনার নিকট আপনার জান্নাত প্রার্থনা করে।’ তিনি বলেন, ’তারা কি আমার জান্নাত দেখেছে?’ তাঁরা বলেন, ’না, হে প্রতিপালক!’ তিনি বলেন, ’কেমন হত, যদি তারা আমার জান্নাত দেখত?’ তাঁরা বলেন, ’তারা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে।’ তিনি বলেন, ’তারা আমার নিকট কি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে?’ তাঁরা বলেন, ’আপনার জাহান্নাম থেকে, হে প্রতিপালক!’ তিনি বলেন, ’তারা কি আমার জাহান্নাম দেখেছে?’ তাঁরা বলেন, ’না।’ তিনি বলেন, ’কেমন হত, যদি তারা আমার জাহান্নাম দেখত?’ তাঁরা বলেন, ’আর তারা আপনার নিকট ক্ষমা চায়।’ তিনি বলেন, ’আমি তাদেরকে ক্ষমা ক’রে দিলাম, তারা যা প্রার্থনা করে তা দান করলাম এবং যা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তা থেকে আশ্রয় দিলাম।’ তাঁরা বলেন, ’হে প্রতিপালক! ওদের মধ্যে অমুক পাপী বান্দা এমনি পার হতে গিয়ে তাদের সাথে বসে গিয়েছিল।’ তিনি বলেন, ’আমি তাকেও ক্ষমা ক’রে দিলাম! কারণ তারা সেই সম্প্রদায়, তাদের সাথে যে বসে সেও বঞ্চিত হয় না।’
وَفِي رِوَايَةِ لِمُسلِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ للهِ مَلاَئِكَةً سَيَّارَةً فُضُلاً يَتَتَبُّعُونَ مَجَالِسَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوا مَجْلِساً فِيهِ ذِكْرٌ قَعَدُوا مَعَهُمْ وَحَفَّ بَعْضُهُمْ بَعْضاً بِأَجْنِحَتِهِمْ حَتّٰـى يَمْلَؤُوا مَا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَإِذَا تَفَرَّقُوا عَرَجُوا وَصَعدُوا إِلَى السَّمَاءِ فَيَسْأَلُهُمْ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَهُوَ أَعْلَمُ : مِنْ أَيْنَ جِئْتُمْ ؟ فَيَقُولُونَ : جِئْنَا مِنْ عِنْدِ عِبَادٍ لَكَ فِي الأَرْضِ : يُسَبِّحُونَكَ وَيُكبِّرُونَكَ وَيُهَلِّلُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيَسْألُونَكَ قَالَ : وَمَاذَا يَسْألُونِي ؟ قَالُوا : يَسْألُونَكَ جَنَّتَكَ قَالَ : وَهَلْ رَأَوْا جَنَّتِي؟ قَالُوا : لاَ أَيْ رَبِّ قَالَ : فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْا جَنَّتِي؟ قَالُوا : وَيَستَجِيرُونَكَ قَالَ : وَمِمَّ يَسْتَجِيرُونِي؟ قَالُوا : مِنْ نَارِكَ يَا رَبِّ قَالَ: وَهَلْ رَأوْا نَارِي؟ قَالُوا : لاَ قَالَ : فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْا نَارِي قَالُوا : وَيَسْتَغفِرُونَكَ؟ فيَقُولُ: قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ وَأَعْطَيْتُهُمْ مَا سَأَلُوا وَأَجَرْتُهُمْ مِمَّا اسْتَجَارُوا قَالَ : فيَقُولُونَ : رَبِّ فِيهِمْ فُلاَنٌ عَبْدٌ خَطَّاءٌ إنَّمَا مَرَّ فَجَلَسَ مَعَهُمْ فيَقُولُ : وَلهُ غَفَرْتُ هُمُ القَومُ لاَ يَشْقَى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখনই কোন সম্প্রদায় আল্লাহ আযযা অজাল্লার যিক্রে রত হয়, তখনই তাদেরকে ফিরিশতাবর্গ ঢেকে নেন, তাদেরকে রহমত আচ্ছন্ন করে নেয়, তাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ হয় এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী ফিরিশতাবর্গের কাছে তাদের কথা আলোচনা করেন।
وَعَنهُ وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالاَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لاَ يَقْعُدُ قَومٌ يَذْكُرُوْنَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ حَفَّتْهُمُ المَلائِكَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ ؛ وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৪) আবূ ওয়াক্বেদ হারেস ইবনে আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে কিছু লোকও ছিল। ইতিমধ্যে তিনজন লোক আগমন করল। তাদের মধ্যে দু’জন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে উপস্থিত হল এবং একজন চলে গেল। নবাগত দু’জন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশে দাঁড়িয়ে রইল। তাদের একজন সভার মধ্যে ফাঁক দেখে সেখানে বসে পড়ল। আর অপরজন সভার পিছনে বসে গেল। আর তৃতীয় ব্যক্তি পিঠ ঘুরিয়ে প্রস্থান করল। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবসর পেলেন, তখন বললেন, ’’তোমাদেরকে তিন ব্যক্তি সম্পর্কে বলব না কি? তাদের একজন তো আল্লাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণ করল, ফলে আল্লাহ তাকে আশ্রয় দান করলেন। আর দ্বিতীয়জন সে (সভার মধ্যে ঢুকে বসতে) লজ্জাবোধ করল, বিধায় আল্লাহও তাঁর ব্যাপারে লজ্জাশীলতা প্রয়োগ (ক’রে তাকে রহম) করলেন। আর তৃতীয়জন মুখ ফিরিয়ে নিল, বিধায় আল্লাহও তার দিক থেকে বিমুখ হয়ে গেলেন।
وَعَنْ أَبِي وَاقِدٍ الحَارِثِ بنِ عَوفٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ بَيْنَمَا هُوَ جَالِسٌ فِي المَسْجِدِ وَالنَّاسُ مَعَهُ، إِذْ أَقْبَلَ ثَلاثَةُ نَفَرٍ، فَأَقْبَلَ اثْنَانِ إِلٰـى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ وَذَهَبَ وَاحِدٌ فَوَقَفَا عَلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَأَمَّا أَحَدُهُمَا فَرَأَى فُرْجَةً فِي الحَلْقَةِ فَجَلَسَ فِيهَا وَأَمَّا الآخَرُ فَجَلَسَ خَلْفَهُمْ وَأَمَّا الثَّالِثُ فَأَدْبَرَ ذَاهِباً فَلَمَّا فَرَغَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قَالَ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ عَنِ النَّفَرِ الثَّلاَثَةِ :أَمَّا أَحَدُهُمْ فَأَوَى إِلَى اللهِ فآوَاهُ اللهُ إِلَيْهِ وَأَمَّا الآخَرُ فَاسْتَحْيَى فَاسْتَحْيَى اللهُ مِنْهُ وَأَمَّا الآخَرُ فَأَعْرَضَ فَأَعْرَضَ اللهُ عَنْهُ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৫) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুআবিয়াহ (রাঃ) একবার মসজিদে (কিছু লোকের) এক হালকায় (গোল বৈঠকে) এসে বললেন, ’তোমরা এখানে কী উদ্দেশ্যে বসেছ?’ তারা বলল, ’আল্লাহর যিকর করার উদ্দেশ্যে বসেছি।’ তিনি বললেন, ’আল্লাহর কসম! তোমরা একমাত্র ঐ উদ্দেশ্যেই বসেছ?’ তারা জবাব দিল, ’(হ্যাঁ,) আমরা একমাত্র ঐ উদ্দেশ্যেই বসেছি।’ তিনি বললেন, ’শোন! তোমাদেরকে (মিথ্যাবাদী) অপবাদ আরোপ ক’রে কসম করাইনি। (মনে রাখবে) কোন ব্যক্তি এমন নেই, যে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আমার সমমর্যাদা লাভ করেছে এবং আমার থেকে কম হাদীস বর্ণনা করেছে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার) স্বীয় সহচরদের এক হালকায় উপস্থিত হয়ে তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা এখানে কী উদ্দেশ্যে বসেছ?
তাঁরা জবাব দিলেন, ’উদ্দেশ্য এই যে, আমরা আল্লাহর যিকর করব এবং তাঁর প্রশংসা করব যে, তিনি আমাদেরকে ইসলামের পথ দেখিয়েছেন ও তার মাধ্যমে আমাদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন।’ এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’আল্লাহর কসম! তোমরা একমাত্র এই উদ্দেশ্যেই এখানে বসেছ?’’ তাঁরা বললেন, ’আল্লাহর কসম! আমরা কেবল এই উদ্দেশ্যেই বসেছি।’ তিনি বললেন, শোন! আমি তোমাদেরকে এ জন্য কসম করাইনি যে, আমি তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী ভেবে অপবাদ আরোপ করছি। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার এই যে, জিবরীল আমার কাছে এসে বললেন, ’আল্লাহ তোমাদেরকে নিয়ে ফিরিশতাদের সামনে গর্ব করছেন!
وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي قَالَ: خَرَجَ مُعَاوِيَةَ عَلَى حَلْقَةٍ فِي المَسْجِدِ فَقَالَ : مَا أَجْلَسَكُمْ؟ قَالُوا : جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللهَ قَالَ: آللهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ، قَالَ :أَمَّا إِنِّي لَمْ اسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ وَمَا كَانَ أَحَدٌ بِمَنْزِلَتِي مِنْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَقَلَّ عَنْهُ حَدِيثاً مِنِّي : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ خَرَجَ عَلَى حَلْقَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ مَا أَجْلَسَكُمْ ؟ قَالُوا : جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللهَ وَنَحْمَدُهُ عَلَى مَا هَدَانَا لِلإِسْلاَمِ ؛ وَمَنَّ بِهِ عَلَيْنَا قَالَ اللهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ ؟ قَالُوا : وَاللهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ قَالَ أَمَا إنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ وَلَكِنَّهُ أَتَانِي جِبرِيلُ فَأَخْبَرَنِي أَنَّ الله يُبَاهِي بِكُمُ المَلاَئِكَةَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৬)আনাস বিন মালিক (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে পড়ে, অতঃপর সূর্যোদয় অবধি বসে আল্লাহর যিকর করে তারপর দুই রাকআত নামায পড়ে, সেই ব্যক্তির একটি হজ্জ ও উমরার সওয়াব লাভ হয়।’ বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ।’ অর্থাৎ কোন অসম্পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব নয় বরং পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللهَ حَتّٰـى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَـهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৭) আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসমাঈলের বংশধরের চারটি মানুষকে দাসত্বমুক্ত করা অপেক্ষা ফজরের নামাযের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত যিকরকারী দলের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক প্রিয়। অনুরূপ চারটি জীবন দাসত্বমুক্ত করার চেয়ে আসরের নামাযের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যিকরকারী সম্প্রদায়ের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللهَ تَعَالٰـى مِنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ حَتّٰـى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ وَلأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللهَ مِنْ صَلاَةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৮)আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এমন মজলিসে বসে, যেখানে সে আল্লাহর যিকর করে না (এর জন্য) আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর পরিতাপ ও কমি আসবে। আর যে ব্যক্তি এমন জায়গায় শয়ন করে, যেখানে সে আল্লাহর যিকর করে না (এর জন্য) আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর পরিতাপ ও কমি আসবে।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ أَنَّهُ قَالَ مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ فِيْهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لاَ يَذْكُرُ اللهَ فِيهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً
পরিচ্ছেদঃ যিকরের মজলিসের ফযীলত
(৩৬৯৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে কোনও সম্প্রদায় কোন মজলিস থেকে আল্লাহ যিকর না করেই উঠে গেল, তারা যেন মৃত গাধার মত কোন কিছু হতে উঠে গেল। আর তাদের জন্য রয়েছে কমি ও পরিতাপ।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ قَوْمٍ يَقُومُونَ مِنْ مَجْلِسٍ لاَ يَذْكُرُونَ اللهَ فِيهِ إِلاَّ قَامُوا عَنْ مِثْلِ جِيْفَةِ حِمَارٍ وَكَانَ لَهُمْ حَسْرَةً