পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
আল্লাহ তাআলা বলেন,
مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ وَالَّذِيْنَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَـمَاءُ بَيْنَهُمْ
অর্থাৎ, মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল; আর তার সহচরগণ অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত অবস্থায় আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করতে দেখবে। তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার চিহ্ন থাকবে, তাওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপই এবং ইঞ্জীলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারা গাছ, যা হতে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর এটা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং দৃঢ়ভাবে কাণ্ডের উপর দাঁড়িয়ে যায়, যা চাষীদেরকে মুগ্ধ করে। এভাবে (আল্লাহ বিশ্বাসীদের সমৃদ্ধি দ্বারা) অবিশ্বাসীদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। ওদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের। (সূরা ফাতহ-৪৮:২৯)
তিনি আরো বলেন,
وَالَّذِيْنَ تَبَوَّأُوا الدَّارَ وَالْإِيْمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُـحِبُّوْنَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ
অর্থাৎ, আর (মুহাজিরদের আগমনের) পূর্বে যারা এ নগরী (মদীনা) তে বসবাস করেছে ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে তারা মুহাজিরদেরকে ভালবাসে। (সূরা হাশর ৯)
(৩৫৬২) আবু উমামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে (কাউকে) ভালোবাসে, আল্লাহর ওয়াস্তে (কাউকে) ঘৃণাবাসে, আল্লাহর ওয়াস্তে (কিছু) প্রদান করে এবং আল্লাহর ওয়াস্তেই (কিছু প্রদান করা হতে) বিরত থাকে সে ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ ঈমান লাভ করেছে।
عَنْ أَبِـىْ أُمَامَةَ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ ﷺ أَنَّهُ قَالَ مَنْ أَحَبَّ للهِ وَأَبْغَضَ للهِ وَأَعْطَى للهِ وَمَنَعَ للهِ فَقَدِ اسْتَكْمَلَ الْإِيْمَانَ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেতে পছন্দ করে, সে ব্যক্তি কেবল সুমহান আল্লাহর উদ্দেশ্যেই অপরকে ভালবাসুক।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ أَنَّهُ قَالَ مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَجِدَ طَعْمَ الْإِيْمَانِ فَلْيُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا للهِ عَزَّ وَجَلَّ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৪) উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’কিছু লোক আছে যারা নবী নয়, শহীদও নয়। অথচ নবী ও শহীদগণ আল্লাহর নিকট তাদের মর্যাদা দেখে ঈর্ষা করবেন। লোকেরা বলল, ’হে আল্লাহর রসূল, আমাদেরকে বলে দিন, তারা কারা?’ তিনি বললেন, ঐ লোক হল তারা, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আপোসে বন্ধুত্ব কায়েম করে; যাদের মাঝে কোন আত্মীয়তার বন্ধন থাকে না এবং থাকে না কোন অর্থের লেনদেন। আল্লাহর কসম! তাদের মুখমণ্ডল হবে জ্যোতির্ময়। তারা নূরের মাঝে অবস্থান করবে। লোকেরা যখন ভীত-সন্ত্রস্ত হবে, তখন তারা কোন ভয় পাবে না এবং লোকেরা যখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে, তখন তাদের কোন দুশ্চিন্তা থাকবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ’সতর্ক হও! নিশ্চয় যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোন ভয় নেই। তারা দুঃখিতও হবে না। যারা মুমিন এবং পরহেযগার। তাদের জন্য ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে রয়েছে সুসংবাদ। আল্লাহর বাক্যাবলীর কোন পরিবর্তন নেই। এটাই হল মহাসাফল্য। (সূরা ইউনুস ৬২-৬৪)
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ ﷺ إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ لأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلاَ شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللهِ تَعَالٰـى قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ قَالَ هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلاَ أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا فَوَاللهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ عَلَى نُورٍ لاَ يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلاَ يَحْزَنُونَ إِذَا حَزِنَ النَّاسُ وَقَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ (أَلاَ إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ)
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৫) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ যার্রকে বলেছেন, ঈমানের সবচাইতে মজবুত হাতল হল, আল্লাহর ওয়াস্তে বন্ধুত্ব স্থাপন করা, আল্লাহর ওয়াস্তে শত্রুতা স্থাপন করা, আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসা রাখা এবং আল্লাহরই ওয়াস্তে ঘৃণা পোষণ করা।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لأَبِي ذَرٍّ أوثَقُ عُرَى الإِيمَانِ الْمُوَالاةُ فِي اللهِ، وَالْمُعَادَاةُ فِي اللهِ، وَالْحُبُّ فِي اللهِ، وَالْبُغْضُ فِي اللهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৬) বারা’ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামের সবচেয়ে মজবুত হাতল এই যে, তুমি আল্লাহর ওয়াস্তে সম্প্রীতি স্থাপন করবে এবং আল্লাহর ওয়াস্তে বিদ্বেষ স্থাপন করবে।
وَعَنِ الْبَرَاءِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَوْثَقُ عُرَى الْإِسْلَامِ : وَالْـحُبُّ فِـي اللهِ وَالْبُغْضُ فِـي اللهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৭) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকে, সে ঈমানের মিষ্টতা লাভ করে থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় হবে; কাউকে ভালোবাসলে কেবল আল্লাহ’র জন্যই ভালবাসবে। আর কুফরী থেকে তাকে আল্লাহর বাঁচানোর পর পুনরায় তাতে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করবে, যেমন সে নিজেকে আগুনে নিক্ষিপ্ত করাকে অপছন্দ করে।
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلاوَةَ الإيمَانِ : أنْ يَكُونَ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سَوَاهُمَا وَأنْ يُحِبّ المَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إلاَّ للهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أنْ يَعُودَ في الكُفْرِ بَعْدَ أنْ أنْقَذَهُ الله مِنْهُ كَمَا يَكْرَهُ أنْ يُقْذَفَ في النَّارِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না; (তারা হল,) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (রাষ্ট্রনেতা), সেই যুবক যার যৌবন আল্লাহ আযযা অজাল্লার ইবাদতে অতিবাহিত হয়, সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।) সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করে; যারা এই ভালবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন (তাদের মৃত্যু) হয়। সেই ব্যক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী (অবৈধ যৌন-মিলনের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, কিন্তু সে বলে, ’আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ সেই ব্যক্তি যে দান ক’রে গোপন করে; এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না। আর সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে পানি বয়ে যায়।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ : إمَامٌ عَادِلٌ وَشَابٌّ نَشَأ في عِبَادَةِ الله - عز وجل - وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابّا في اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيهِ وتَفَرَّقَا عَلَيهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ مَنصَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ : إنِّي أخَافُ الله وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأخْفَاهَا حَتّٰـى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ الله خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৬৯) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন বলবেন, ’আমার মহিমা ও শ্রে’ত্বের জন্য পরস্পরকে যারা ভালবেসেছিল তারা কোথায়? আজকের দিন আমি তাদেরকে আমার ছায়ায় আশ্রয় দেব, যেদিন আমার (আরশের) ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া নেই।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ تَعَالٰـى يَقُوْلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ : أيْنَ المُتَحَابُّوْنَ بِـجَلَالِـيْ ؟ اَلْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلِّـيْ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭০) মুআয (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার মর্যাদার ওয়াস্তে যারা আপোসে ভালবাসা স্থাপন করবে, তাদের (বসার) জন্য হবে নূরের মেম্বর; যা দেখে নবী ও শহীদগণ ঈর্ষা করবেন।
وَعَنْ مُعَاذٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: المُتَحَابُّونَ في جَلالِي لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ رواه الترمذي وَقالَ حديث حسن صحيح
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না; যতক্ষণ না তোমরা মু’মিন হবে। এবং তোমরা মু’মিন হতে পারবে না; যে পর্যন্ত না তোমরা পরস্পরে ভালবাসা রাখবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজ বলে দেব না, যখন তোমরা তা করবে, তখন তোমরা একে অপরকে ভালবাসতে লাগবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রচার কর।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ والَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لاَ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ حَتّٰـى تُؤْمِنُوا، وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتّٰـى تَحَابُّوا أوَلاَ أدُلُّكُمْ عَلٰـى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوْهُ تَـحَابَبْتُمْ ؟ أفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭২) বারা’ ইবনে আযিব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসার সম্পর্কে বলেছেন, তাদেরকে কেবলমাত্র মু’মিনই ভালোবাসে এবং তাদের প্রতি কেবলমাত্র মুনাফিকই বিদ্বেষ রাখে। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালবাসবে, আল্লাহও তাকে ভালবাসবেন। আর যে ব্যক্তি তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখবে, আল্লাহও তার প্রতি বিদ্বেষ রাখবেন।
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا عَنِ النَّبيِّ ﷺ أنَّهُ قَالَ في الأنصَارِ لَا يُـحِبُّهُمْ إِلاَّ مُؤْمِنٌ وَلَا يُبْغِضُهُمْ إلاَّ مُنَافِقٌ مَنْ أحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ الله وَمَنْ أبْغَضَهُمْ أبْغَضَهُ الله مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭৩) আবূ ইদরীস খাওলানী (রঃ) বলেন, আমি দিমাশ্কের মসজিদে প্রবেশ ক’রে এক যুবককে দেখতে পেলাম, তাঁর সামনের দাঁতগুলি খুবই চকচকে এবং তাঁর সঙ্গে কিছু লোকও (বসে) রয়েছে। যখন তারা কোন বিষয়ে মতভেদ করছে, তখন (সিদ্ধান্তের জন্য) তাঁর দিকে রুজু করছে এবং তাঁর মত গ্রহণ করছে। সুতরাং আমি তাঁর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম (যে, ইনি কে)? (আমাকে) বলা হল যে, ’ইনি মুআয বিন জাবাল।’ অতঃপর আগামী কাল আমি আগেভাগেই মসজিদে গেলাম। কিন্তু দেখলাম সেই (যুবকটি) আমার আগেই পৌঁছে গেছেন এবং তাঁকে নামাযরত অবস্থায় পেলাম। সুতরাং তাঁর নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করলাম। অতঃপর আমি তাঁর সামনে এসে তাঁকে সালাম দিলাম।
তারপর বললাম, ’আল্লাহর কসম! আমি আপনাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসি।’ তিনি বললেন, ’আল্লাহর কসম?’ আমি বললাম, ’আল্লাহর কসম।’ পুনরায় তিনি বললেন, ’আল্লাহর কসম?’ আমি বললাম, ’আল্লাহর কসম।’ অতঃপর তিনি আমার চাদরের আঁচল ধরে আমাকে তাঁর দিকে টানলেন, তারপর বললেন, ’সুসংবাদ নাও।’ কারণ, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ’আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যারা পরস্পরের মধ্যে মহববত রাখে, একে অপরের সঙ্গে বসে, একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং একে অপরের জন্য খরচ করে, তাদের জন্য আমার মহববত ও ভালবাসা ওয়াজেব হয়ে যায়।
وَعَنْ أَبِـيْ إِدرِيْسَ الْـخَوْلَانِـيْ رَحِمَهُ اللهُ قَالَ :دخَلْتُ مَسْجِدَ دِمَشْقَ فَإذَا فَتَىً بَرَّاقُ الثَّنَايَا وَإِذَا النَّاسُ مَعَهُ فَإِذَا اخْتَلَفُوا في شَيْءٍ أَسْنَدُوهُ إِلَيْه وَصَدَرُوا عَنْ رَأيِهِ فَسَأَلْتُ عَنْهُ فَقِيلَ : هٰذَا مُعَاذُ بْنُ جَبَل فَلَمَّا كَانَ مِنَ الغَدِ هَجَّرْتُ فَوَجَدْتُهُ قَدْ سَبَقَنِي بالتَّهْجِيرِ ووَجَدْتُهُ يُصَلِّي، فانْتَظَرتُهُ حَتّٰـى قَضَى صَلاتَهُ ثُمَّ جِئْتُهُ مِنْ قِبَلِ وَجْهِهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيهِ ثُمَّ قُلْتُ : وَاللهِ إنّي لأَحِبُّكَ لِلهِ فَقَالَ : آلله ؟ فَقُلْتُ : اللهِ فَقَالَ : آللهِ ؟ فَقُلْتُ : اللهِ فَأخَذَنِي بِحَبْوَةِ رِدَائِي فجبذني إِلَيْهِ، فَقَالَ : أبْشِر فإنِّي سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ قَالَ الله تَعَالٰـى : وَجَبَتْ مَحَبَّتي لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ وَالمُتَجَالِسينَ فِيَّ وَالمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ وَالمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ حديث صحيح رواه مالك في الموطأ بإسناده الصحيح
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭৪) আবূ কারীমা মিকদাদ ইবনে মা’দীকারিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মানুষ তার ভাইকে ভালবাসে, তখন সে যেন তাকে জানিয়ে দেয় যে, সে তাকে ভালবাসে।
وَعَنْ أَبِـيْ كَرِيْمَةَ الْمِقدَادِ بْنِ مَعدِيْكَرِبَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ إِذَا أَحَبَّ الرَّجُلُ أخَاهُ فَليُخْبِرْهُ أَنَّهُ يُحِبُّهُ رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرمِذِي وَقَالَ حديث صحيح
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭৫) মুআয (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে বললেন, হে মুআয! আল্লাহর কসম! নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে ভালবাসি। অতঃপর আমি তোমাকে অসিয়ত করছি, হে মুআয! তুমি প্রত্যেক নামাযের পশ্চাতে এ শব্দগুলি বলা ছাড়বে না, ’আল্লা-হুম্মা আইন্নী আলা যিকরিকা অশুকরিকা অহুসনি ইবা-দাতিক।’ (অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তোমার যিকর করার, তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার এবং উত্তমরূপে তোমার ইবাদত করার ব্যাপারে আমাকে সাহায্য কর।)
وَعَن مُعَاذٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ أَخَذَ بِيَدِهِ وَقَالَ يَا مُعَاذُ وَاللهِ إنِّـيْ لَأُحِبُّكَ ثُمَّ أُوصِيْكَ يَا مُعَاذُ لَا تَدَعَنَّ فِـيْ دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ تَقُوْلُ : اَللّٰهُمَّ أعِنِّي عَلٰى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ حديث صحيح رواه أَبُو داود والنسائي بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে ভালবাসা রাখার মাহাত্ম্য এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান ও যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ভালবাসে তাকে সে ব্যাপারে অবহিত করা ও কী বলে অবহিত করবে তার বিবরণ
(৩৫৭৬) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (বসে) ছিল। অতঃপর এক ব্যক্তি তাঁর পাশ দিয়ে অতিক্রম করল। (যে বসেছিল) সে বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! নিঃসন্দেহে আমি একে ভালবাসি।’ (এ কথা শুনে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি (এ কথা) তাকে জানিয়েছ? সে বলল, ’না।’ তিনি বললেন, তাকে জানিয়ে দাও। সুতরাং সে (দ্রুত) তার পিছনে গিয়ে (তাকে) বলল, ’আমি আল্লাহর ওয়াস্তে তোমাকে ভালবাসি।’ সে বলল, ’যাঁর ওয়াস্তে তুমি আমাকে ভালবাসো, তিনি তোমাকে ভালবাসুন।’
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَجُلًا كَانَ عِنْدَ النَّبيِّ ﷺ فَمَرَّ رَجُلٌ بِهِ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ الله اِنِّـيْ لَأُحِبُّ هٰذَا فَقَالَ لَهُ النَّبيّ ﷺ أأعْلَمْتَهُ ؟ قَالَ : لاَ قَالَ أعْلِمْهُ فَلَحِقَهُ فَقَالَ : إنِّي أُحِبُّكَ في الله فَقَالَ : أَحَبَّكَ الَّذِي أحْبَبْتَنِي لَهُ رواه أَبُو داود بإسناد صحيح