পরিচ্ছেদঃ বান্দাকে আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শনাবলী, এমন নিদর্শন অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং তা অর্জন করার জন্য প্রয়াসী হওয়ার বিবরণ

আল্লাহ তাআলা বলেন,

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُـحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِـيْ يُـحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ

অর্থাৎ, বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান ৩১) তিনি আরো বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا مَنْ يُّرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِيْنِهِ فَسَوْفَ يَأْتِـيَ اللهُ بِقَوْمٍ يُـحِبُّهُمْ وَيُـحِبُّوْنَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِيْنَ يـُجَاهِدُوْنَ فِـي سَبِيْلِ اللهِ وَلَا يَـخَافُوْنَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذٰلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَّشَاءُ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ ধর্ম হতে ফিরে গেলে আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনয়ন করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে, তারা হবে বিশ্বাসীদের প্রতি কোমল ও অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দায় ভয় করবে না, এ আল্লাহর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন। বস্তুতঃ আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়। (সূরা মায়েদাহ-৫: ৫৪)


(৩৫৭৭) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা বলেন, ’’যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সাথে শত্রুতা করবে, তার বিরুদ্ধে আমার যুদ্ধের ঘোষণা রইল। আমার বান্দা যে সমস্ত জিনিস দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে, তার মধ্যে আমার নিকট প্রিয়তম জিনিস হল তা, যা আমি তার উপর ফরয করেছি। (অর্থাৎ ফরযের দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করা আমার নিকটে বেশী পছন্দনীয়।) আর আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে, পরিশেষে আমি তাকে ভালবাসতে লাগি। অতঃপর যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার ঐ কান হয়ে যাই, যার দ্বারা সে শোনে, তার ঐ চোখ হয়ে যাই, যার দ্বারা সে দেখে, তার ঐ হাত হয়ে যাই, যার দ্বারা সে ধরে এবং তার ঐ পা হয়ে যাই, যার দ্বারা সে চলে। আর সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তাহলে আমি তাকে দিই এবং সে যদি আমার আশ্রয় চায়, তাহলে আমি অবশ্যই তাকে আশ্রয় দিই। (বুখারী ৬৫০২)

عَنْ أَبـِيْ هُرَيرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ تَعَالٰـى قَالَ : مَنْ عَادٰى لِـيْ وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْـحَرْبِ وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بشَيءٍ أَحَبَّ إلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقرَّبُ إلَيَّ بالنَّوافِلِ حَتّٰـى أُحِبَّهُ فَإذَا أَحبَبتُهُ كُنْتُ سَمعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ ويَدَهُ الَّتي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشي بِهَا، وَإنْ سَأَلَنِيْ أعْطَيْتُهُ، وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيْذَنَّهُ رواه البخاري

عن ابـي هريرة قال: قال رسول الله ﷺ ان الله تعالـى قال : من عادى لـي وليا فقد اذنته بالـحرب وما تقرب الي عبدي بشيء احب الي مما افترضت عليه وما يزال عبدي يتقرب الي بالنوافل حتـى احبه فاذا احببته كنت سمعه الذي يسمع به وبصره الذي يبصر به ويده التي يبطش بها، ورجله التي يمشي بها، وان سالني اعطيته، ولىن استعاذني لاعيذنه رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ বান্দাকে আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শনাবলী, এমন নিদর্শন অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং তা অর্জন করার জন্য প্রয়াসী হওয়ার বিবরণ

(৩৫৭৮) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন তিনি জিবরীলকে ডেকে বলেন, ’নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুককে ভালবাসেন, অতএব তুমিও তাকে ভালবাস।’ সুতরাং জিবরীলও তাকে ভালবাসতে লাগেন। অতঃপর তিনি আকাশবাসীদের মধ্যে ঘোষণা ক’রে দেন যে, ’আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালবাসেন। কাজেই তোমরাও তাকে ভালবাসো।’ তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালবাসতে লাগে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণযোগ্য করার ব্যবস্থা ক’রে দেওয়া হয়। (বুখারী ৩২০৯, মুসলিম ৬৮৭৩)

মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ’’আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন তিনি জিবরীলকে ডেকে বলেন, ’নিশ্চয়ই আমি অমুককে ভালবাসি, অতএব তুমিও তাকে ভালবাস।’ তখন জিবরীলও তাকে ভালবাসতে লাগেন। অতঃপর তিনি আকাশবাসীদের মধ্যে ঘোষণা ক’রে দেন যে, ’আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালবাসেন। কাজেই তোমরাও তাকে ভালবাসো।’ তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালবাসতে লাগে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণযোগ্য করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

আর আল্লাহ তাআলা যখন কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন, তখন তিনি জিবরীলকে ডেকে বলেন, ’আমি অমুককে ঘৃণা করি, অতএব তুমিও তাকে ঘৃণা কর।’ তখন জিবরীল তাকে ঘৃণা করতে লাগেন। অতঃপর তিনি আকাশবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, ’আল্লাহ অমুক বান্দাকে ঘৃণা করেন। কাজেই তোমরাও তাকে ঘৃণা কর।’ তখন আকাশবাসীরাও তাকে ঘৃণা করতে লাগে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে ঘৃণ্য করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

وَعَنهُ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ إِذَا أَحَبَّ اللهُ تَعَالٰـى العَبْدَ نَادَى جِبْريلَ : إنَّ الله تَعَالٰـى يُحِبُّ فُلاناً فَأَحْبِبْهُ فَيُحِبُّهُ جِبريلُ فَيُنَادِي في أَهْلِ السَّمَاءِ : إنَّ اللهَ يُحِبُّ فُلاناً فَأحِبُّوهُ فَيُحِبُّهُ أهْلُ السَّمَاءِ ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ القَبُولُ في الأرْضِ متفق عليه
وَفي رِوَايَةٍ لمسلم : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ تَعَالى إِذَا أَحَبَّ عَبدًا دَعَا جِبرِيلَ فَقَالَ : إنّي أُحِبُّ فُلاَناً فأحْبِبهُ، فَيُحِبُّهُ جِبرِيلُ ثمَّ يُنَادِي في السَّمَاءِ فَيَقُولُ : إنَّ اللهَ يُحِبُّ فُلاَناً فَأَحِبُّوهُ فَيُحِبُّهُ أَهلُ السَّمَاءِ ثمَّ يُوضَعُ لهُ القَبُولُ في الأَرضِ وَإِذَا أبْغَضَ عَبْداً دَعَا جِبْريلَ فَيَقُولُ : إنّي أُبْغِضُ فُلاناً فَأبْغِضْهُ فَيُبغِضُهُ جِبريلُ ثُمَّ يُنَادِي في أَهْلِ السَّماءِ : إنَّ اللهَ يُبْغِضُ فُلاناً فَأبْغِضُوهُ ثُمَّ تُوضَعُ لَهُ البَغْضَاءُ في الأَرْضِ

وعنه عن النبي ﷺ قال اذا احب الله تعالـى العبد نادى جبريل : ان الله تعالـى يحب فلانا فاحببه فيحبه جبريل فينادي في اهل السماء : ان الله يحب فلانا فاحبوه فيحبه اهل السماء ثم يوضع له القبول في الارض متفق عليه وفي رواية لمسلم : قال رسول الله ﷺ ان الله تعالى اذا احب عبدا دعا جبريل فقال : اني احب فلانا فاحببه، فيحبه جبريل ثم ينادي في السماء فيقول : ان الله يحب فلانا فاحبوه فيحبه اهل السماء ثم يوضع له القبول في الارض واذا ابغض عبدا دعا جبريل فيقول : اني ابغض فلانا فابغضه فيبغضه جبريل ثم ينادي في اهل السماء : ان الله يبغض فلانا فابغضوه ثم توضع له البغضاء في الارض

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ বান্দাকে আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শনাবলী, এমন নিদর্শন অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং তা অর্জন করার জন্য প্রয়াসী হওয়ার বিবরণ

(৩৫৭৯) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবীকে একটি মুজাহিদ দলের আমীর ক’রে জিহাদে পাঠালেন। তিনি যখন নামাযে ইমামতি করতেন, তখনই (প্রত্যেক রাকআতে সূরা পড়ার পর) ’ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) দিয়ে (ক্বিরাআত) শেষ করতেন। মুজাহিদগণ সেই অভিযান থেকে প্রত্যাবর্তন ক’রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে বিষয়টি আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা কর, কেন সে এ কাজটি করেছে? সুতরাং তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, ’এই সূরাটিতে পরম করুণাময় (আল্লাহ)র গুণাবলী রয়েছে। এই জন্য সূরাটি তেলাঅত করতে আমি ভালবাসি।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালবাসেন।

وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا : أنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ بَعَثَ رَجُلاً عَلَى سَريَّةٍ فَكَانَ يَقْرَأُ لأَصْحَابِهِ في صَلاَتِهِمْ فَيَخْتِمُ بـ قُل هُوَ الله أَحَدٌ فَلَمَّا رَجَعُوا ذَكَرُوا ذلِكَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ سَلُوهُ لأَيِّ شَيْءٍ يَصْنَعُ ذلِكَ فَسَألُوهُ فَقَالَ : لأَنَّهَا صِفَةُ الرَّحْمانِ فَأَنَا أُحِبُّ أنْ أقْرَأ بِهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أخْبِرُوهُ أنَّ اللهَ تَعَالٰـى يُحِبُّهُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن عاىشة رضي الله عنها : ان رسول الله ﷺ بعث رجلا على سرية فكان يقرا لاصحابه في صلاتهم فيختم بـ قل هو الله احد فلما رجعوا ذكروا ذلك لرسول الله ﷺ فقال سلوه لاي شيء يصنع ذلك فسالوه فقال : لانها صفة الرحمان فانا احب ان اقرا بها فقال رسول الله ﷺ اخبروه ان الله تعالـى يحبه متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ বান্দাকে আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শনাবলী, এমন নিদর্শন অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং তা অর্জন করার জন্য প্রয়াসী হওয়ার বিবরণ

(৩৫৮০) রাফে’ বিন খাদীজ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তাকে দুনিয়াদারী থেকে রক্ষা করেন। যেমন তোমাদের কেউ তার রোগীকে পানি থেকে রক্ষা কর।

عَنْ رَافِعِ بن خَدِيجٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا أَحَبَّ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَبْدًا حَـمَاهُ الدُّنْيَا كَمَا يَظَلُّ أَحَدُكُمْ يَـحْمِـيْ سَقِيْمَهُ الْمَاءَ

عن رافع بن خديج قال : قال رسول الله ﷺ اذا احب الله عز وجل عبدا حـماه الدنيا كما يظل احدكم يـحمـي سقيمه الماء

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে