পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
অর্থাৎ, মু’মিনদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে অবনমিত রাখ। (সূরা হিজর ৮৮)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ وَلا تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا
অর্থাৎ, তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহবান করে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না। (সূরা কাহফ ২৮)
তিনি আরো বলেন,
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلا تَقْهَرْ وَأَمَّا السَّائِلَ فَلا تَنْهَرْ
অর্থাৎ, অতএব তুমি পিতৃহীনের প্রতি কঠোর হয়ো না এবং ভিক্ষুককে ধমক দিয়ো না। (সূরা য্বুহা ৯-১০)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ فَذٰلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ وَلا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ
অর্থাৎ, তুমি কি দেখেছ তাকে, যে (দ্বীন বা) কর্মফলকে মিথ্যা মনে করে থাকে? সে তো ঐ ব্যক্তি, যে পিতৃহীনকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়। এবং সে অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না। (সূরা মাউন ১-৩)
(৩০৪২) সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা ছ’জন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। ইতিমধ্যে মুশরিকরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, ’এদেরকে (আপনার মজলিস থেকে) তাড়িয়ে দিন, যেন এরা আমাদের ব্যাপারে দুঃসাহসী হতে না পারে।’ (সা’দ বলেন,) আমি, ইবনে মাসউদ, হুযাইল গোত্রের এক ব্যক্তি, বিলাল এবং আরও দু’জন ছিলেন, যাদের নাম আমি করছি না। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্তরে আল্লাহ যা ইচ্ছা করলেন তাই ঘটল। সুতরাং তিনি মনে মনে (তাঁদেরকে তাড়ানোর) কথা ভাবলেন। যার জন্য আল্লাহ এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন, ’’যারা তাদের প্রতিপালককে প্রাতে ও সন্ধ্যায় তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ডাকে, তাদেরকে তুমি বিতাড়িত করো না।’’ (সূরা আনআম ৫২)।
وَعَنِ سَعدِ بنِ أَبِـيْ وَقَّاصٍ قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبيِّ ﷺ سِتَّةَ نَفَرٍ فَقَالَ المُشْرِكُونَ لِلنَّبيِّ ﷺ اُطْرُدْ هَؤُلاَءِ لاَ يَجْتَرِئُونَ عَلَيْنَا وَكُنْتُ أنَا وَابْنُ مَسْعُودٍ وَرَجُلٌ مِنْ هُذَيْلٍ وَبِلالٌ وَرَجُلاَنِ لَسْتُ أُسَمِّيهِمَا فَوَقَعَ في نَفسِ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَا شَاءَ اللهُ أنْ يَقَعَ فَحَدَّثَ نَفسَهُ فَأنْزَلَ اللهُ تَعَالَى : وَلا تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৩) বায়আতে রিযওয়ানে অংশগ্রহণকারীদের একজন (সাহাবী) আবূ হুবাইরাহ আইয ইবনে আমর মুযানী (রাঃ) বলেন, (হুদাইবিয়ার সন্ধি ও বায়আতের পর) আবূ সুফিয়ান (কাফের অবস্থায়) সালমান, সুহাইব ও বিলালের নিকট এল। সেখানে আরো কিছু সাহাবা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা (আবূ সুফিয়ানের প্রতি ইঙ্গিত করে) বললেন, ’আল্লাহর তরবারিগুলো আল্লাহর শত্রুর হক আদায় করেনি।’ (এ কথা শুনে) আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ’তোমরা এ কথা কুরাইশের বয়োবৃদ্ধ ও তাদের নেতার সম্পর্কে বলছ?’ অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলেন এবং (এর) সংবাদ দিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবু বাকর! সম্ভবতঃ তুমি তাদেরকে (অর্থাৎ সালমান, সুহাইব ও বেলালকে) অসন্তুষ্ট করেছ। তুমি যদি তাদেরকে অসন্তুষ্ট করেছ, তাহলে তুমি আসলে তোমার প্রতিপালককে অসন্তুষ্ট করেছ। সুতরাং আবূ বকর তাঁদের নিকট এসে বললেন, ’ভাইয়েরা! আমি কি তোমাদেরকে অসন্তুষ্ট করেছি?’ তাঁরা বললেন, ’না। আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুক ভাইজান!
وَعَنِ أَبِـيْ هُبَيرَة عَائِذِ بنِ عَمرٍو المُزَنِي وَهُوَ مِنْ أهْلِ بَيعَةِ الرِّضْوَانِ أنَّ أبَا سُفْيَانَ أتَى عَلَى سَلْمَانَ وَصُهَيْبٍ وَبلاَلٍ في نَفَرٍ فَقَالَوا : مَا أخَذَتْ سُيُوفُ اللهِ مِنْ عَدُوِّ الله مَأْخَذَهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أتَقُولُون هٰذَا لِشَيْخِ قُرَيْشٍ وَسَيدِهِمْ ؟ فَأتَى النَّبيَّ ﷺ فَأخْبَرهُ فَقَالَ يَا أَبَا بَكْرٍ لَعلَّكَ أغْضَبتَهُمْ ؟ لَئِنْ كُنْتَ أغْضَبْتَهُمْ لَقَدْ أغْضَبتَ رَبَّكَ فَأَتَاهُمْ فَقَالَ : يَا إخْوَتَاهُ أغْضَبْتُكُمْ؟ قَالَوا : لاَ يَغْفِرُ اللهُ لَكَ يَا أُخَيَّ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৪) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি ও এতীমের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে (পাশাপাশি) থাকব। এ কথা বলার সময় তিনি (তাঁর) তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে উভয়ের মাঝে একটু ফাঁক রেখে ইশারা করে দেখালেন।
وَعنِ سَهْلِ بنِ سَعدٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَنَا وَكَافلُ اليَتِيمِ في الجَنَّةِ هَكَذا وَأَشارَ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৫) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমি এবং নিজের অথবা অপরের অনাথ (এতীমের) তত্ত্বাবধায়ক জান্নাতে (পাশাপাশি) থাকব। আর বিধবা ও দুঃস্থ মানুষকে দেখাশুনাকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।
وعَنْ عَائِشَةَ قَالَت قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ أَنَا وَكَافِلُ اليَتِيمِ لَهُ أوْ لِغَيْرِهِ في الجَنّةِ والسَّاعِي عَلَى الْأَرْمَلَةِ والمِسْكِينِ كالمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللهِ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৬) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিজের অথবা অপরের অনাথ (এতীমের) তত্ত্বাবধায়ক; আমি এবং সে জান্নাতে এ দু’টির মত (পাশাপাশি) বাস করব। বর্ণনাকারী মালিক বিন আনাস তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলের দিকে ইঙ্গিত করলেন।
وَعَن أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ كَافلُ اليَتيِم لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ في الجَنَّةِ وَأَشَارَ الرَّاوِي وَهُوَ مَالِكُ بْنُ أنَسٍ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৭) উক্ত সাহাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’বিধবা ও মিসকীনদের অভাব দূর করায় চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।’’ (হাদীসের বর্ণনাকারী বলেন,) আমি ধারণা করছি যে, তিনি এ কথাও বললেন, সে ঐ নফল নামায আদায়কারীর মত যে ক্লান্ত হয় না এবং ঐ রোযা পালনকারীর মত যে রোযা ছাড়ে না।
وَعَنهُ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالمِسْكِينِ كَالمُجَاهِدِ في سَبيلِ اللهِ وَأحسَبُهُ قَالَ وَكالقَائِمِ الَّذِي لاَ يَفْتُرُ وَكَالصَّائِمِ الَّذِي لاَ يُفْطِرُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৮) উক্ত সাহাবী থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’মিসকীন সে নয়, যাকে একটি খেজুর এবং দু’টি খেজুর এবং এক গ্রাস বা’ দুগ্রাস (অন্ন) ফিরিয়ে দেয়। বরং মিসকীন তো ঐ ব্যক্তি, যে (অভাব থাকা সত্ত্বেও) চাওয়া থেকে দূরে থাকে।’’ (বুখারী ৪৫৩৯, মুসলিম ২৪৪১)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’মিসকীন সে নয়, যে এক অথবা দু টুকরা খেজুর কিংবা এক অথবা দু মুঠো খানা পেয়ে বিদায় হয়ে যায়। কিন্তু মিসকীন হল সেই ব্যক্তি, যে প্রয়োজন মোতাবেক যথেষ্ট রুযীর মালিক নয় এবং সাধারণতঃ লোকে তাকে অভাবী বলে চিনতেও পারে না; যাতে তাকে দান করা যায়। আর সে নিজে উঠে লোকের কাছে চায়ও না।’’ (বুখারী ১৪৭৯, মুসলিম ২৪৪০) (অর্থাৎ, পেটে খিদে রেখে মুখে লাজ করে।)
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَيْسَ المِسْكينُ الَّذِي تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ وَلا اللُّقْمَةُ وَاللُّقْمَتَانِ إِنَّمَا المِسكِينُ الَّذِي يَتَعَفَّفُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وَفي رِوَايَةٍ في الصَّحِيحَينِ لَيْسَ المِسكِينُ الَّذِي يَطُوفُ عَلَى النَّاسِ تَرُدُّهُ اللُّقْمَةُ واللُّقْمَتانِ وَالتَّمْرَةُ والتَّمْرَتَانِ وَلَكِنَّ المِسْكِينَ الَّذِي لاَ يَجِدُ غنىً يُغْنِيه وَلاَ يُفْطَنُ بِهِ فَيُتَصَدَّقَ عَلَيهِ وَلاَ يَقُومُ فَيَسْأَلُ النَّاسَ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৪৯) উক্ত রাবী (রাঃ) হতেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সবচেয়ে নিকৃষ্ট খাবার ঐ অলীমার খাবার, যাতে যে (স্বয়ং) আসে তাকে (অর্থাৎ, মিসকীনকে) বাধা দেওয়া হয় এবং যাকে আহবান করা হয় সে (অর্থাৎ, ধনী) আসতে অস্বীকার করে। আর যে ব্যক্তি দাওয়াত গ্রহণ করল না, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করল। (মুসলিম ৩৫৯৮)
বুখারী-মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে যে, আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলতেন, ’অলীমার খাবার নিকৃষ্টতম খাবার, যাতে বিত্তশালীদেরকে ডাকা হয় এবং দরিদ্রদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’ (বুখারী ৫১৭৭, মুসলিম ৩৫৯৪)
وَعَنهُ عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ شَرُّ الطَّعَامِ طَعَامُ الوَلِيمَةِ يُمْنَعُهَا مَنْ يَأتِيهَا وَيُدْعَى إِلَيْهَا مَنْ يَأْبَاهَا وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّعْوَةَ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُوْلَهُ رواه مسلم
وَفي رِوَايَةٍ في الصَّحِيحَينِ : عَنْ أَبِـيْ هُرَيرَةَ مِن قَولِهِ بئْسَ الطَّعَامُ طَعَامُ الوَلِيمَةِ يُدْعَى إِلَيْهَا الأغْنِيَاءُ ويُتْرَكُ الفُقَراءُ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫০) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন তাদের সাবালিকা হওয়া অবধি করবে, কিয়ামতের দিন আমি এবং সে এ দু’টি আঙ্গুলের মত পাশাপাশি আসব। অতঃপর তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলি মিলিত ক’রে (দেখালেন)।
وَعَنِ أَنَسٍ عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْن حَتّٰـى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ القِيَامَةِ أنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ وضَمَّ أصَابِعَهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫১) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মহিলা তার দু’টি মেয়ে সঙ্গে নিয়ে আমার নিকট ভিক্ষা চাইল। অতঃপর সে আমার নিকট একটি খুরমা ব্যতীত কিছুই পেল না। সুতরাং আমি তা তাকে দিয়ে দিলাম। মহিলাটি তার দু’মেয়েকে খুরমাটি ভাগ ক’রে দিল এবং সে নিজে তা থেকে কিছুই খেল না, অতঃপর সে উঠে বের হয়ে গেল। ইতিমধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন। আমি তাঁকে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন, যাকে এই কন্যা সন্তান দিয়ে কোন পরীক্ষায় ফেলা হয়, তারপর যদি সে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে, তাহলে এ কন্যারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে অন্তরাল হবে।
وَعَنعَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : دَخَلَتْ عَلَيَّ امْرَأةٌ وَمَعَهَا ابنَتَانِ لَهَا تَسْأَلُ فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيئاً غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحدَةٍ فَأعْطَيْتُهَا إيَّاهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْها ولَمْ تَأكُلْ مِنْهَا ثُمَّ قَامَتْ فَخَرجَتْ فَدَخَلَ النَّبيُّ ﷺ عَلَينَا فَأخْبَرْتُهُ فَقَالَ مَنِ ابْتُليَ مِنْ هذِهِ البَنَاتِ بِشَيءٍ فَأحْسَنَ إلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ سِتراً مِنَ النَّارِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫২) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মিসকীন মহিলা তার দু’টি কন্যাকে (কোলে) বহন করে আমার কাছে এল। আমি তাকে তিনটি খুরমা দিলাম। অতঃপর সে তার কন্যা দু’টিকে একটি একটি করে খুরমা দিল এবং সে নিজে খাবার জন্য একটি খুরমা মুখণ্ডপর্যন্ত তুলল। কিন্তু তার কন্যা দু’টি সেটিও খেতে চাইল। সুতরাং মহিলাটি যে খেজুরটি নিজে খেতে ইচ্ছা করেছিল, সেটিকে দু’ভাগে ভাগ ক’রে তাদের মধ্যে বন্টন ক’রে দিল। সুতরাং তার (এ) অবস্থা আমাকে মুগ্ধ করল। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট মহিলাটির ঘটনা বর্ণনা করলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজিব ক’রে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত ক’রে দিয়েছেন।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : جَاءَتني مِسْكينةٌ تَحْمِلُ ابْنَتَيْنِ لَهَا فَأطْعَمْتُها ثَلاَثَ تَمرَات فَأعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا تَمْرَةً وَرَفَعتْ إِلَى فِيها تَمْرَةً لِتَأكُلها فَاسْتَطعَمَتهَا ابْنَتَاهَا فَشَقَّتِ التَّمْرَةَ الَّتي كَانَتْ تُريدُ أنْ تَأكُلَهَا بَيْنَهُمَا فَأعجَبَنِي شَأنُهَا فَذَكَرْتُ الَّذِي صَنَعَتْ لِرَسُولِ الله ﷺ فَقَالَ إنَّ الله قَدْ أوْجَبَ لَهَا بِهَا الجَنَّةَ أَوْ أعتَقَهَا بِهَا مِنَ النَّارِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫৩) আবূ শুরাইহ্ খুওয়াইলিদ ইবনে আমর খুযায়ী (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’হে আল্লাহ! আমি লোকদেরকে দুই শ্রেণীর দুর্বল মানুষের অধিকার সম্বন্ধে পাপাচারিতার ভীতিপ্রদর্শন করছি; এতীম ও নারী।’’ (আহমাদ ৯৬৬৬, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ৩৬৭৮, ইবনে হিব্বান, হাকেম, সিলসিলাহ সহীহাহ ১০১৫)
وَعَن أَبِـيْ شُرَيحٍ خُوَيْلِدِ بنِ عَمرٍو الخُزَاعِيِّ قَالَ : قَالَ النَّبِـيُّ ﷺ اَللّٰهُمَّ إنِّي أُحَرِّجُ حَقَّ الضَّعِيفَينِ : اليَتِيم وَالمَرْأةِ حديث حسن رواه النسائي بإسناد جيد
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫৪) মুসআব ইবনে সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) (তাঁর পিতা) সা’দ ধারণা করলেন যে, তার চেয়ে নিম্নশ্রেণীর লোকের উপর তাঁর মর্যাদা রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদেরকে দুর্বলদের কারণেই সাহায্য করা হয় এবং রুযী দেওয়া হয়।
وَعَنْ مُصعَبِ بنِ سَعدِ بنِ أَبِـيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ: رَأى سَعدٌ أنَّ لَهُ فَضْلاً عَلَى مَنْ دُونَهُ، فَقَالَ النَّبِـيُّ ﷺ هَلْ تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ إلاَّ بِضُعَفَائِكُمْ رواه البخاري هكذا مُرسلاً، فَإِنَّ مُصعَبَ بنَ سَعدَ تَابِعِيٌّ، وَرَوَاهُ الحَافِظ أَبُو بَكرٍ البَرقَاني في صَحِيحِهِ مُتَّصِلاً عَن مُصعَبٍ، عَنْ أَبِيهِ
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫৫) আবূ দারদা উআইমির (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমার জন্য তোমরা দুর্বলদেরকে খুঁজে আনো, কেননা তোমাদের দুর্বলদের কারণেই তোমাদেরকে সাহায্য করা হয় এবং রুযী দেওয়া হয়।
وَعَن أَبِـيْ الدَّردَاءِ عُوَيمِرٍ قَالَ : سَمِعتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ ابْغُونِي الضُّعَفَاءَ فَإنَّمَا تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ بِضُعَفَائِكُمْ رواه أَبُو داود بإسناد جيد
পরিচ্ছেদঃ অনাথ-এতীম, কন্যা-সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাদের প্রতি দয়া ও তাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
(৩০৫৬) আবূ দারদা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে নিজ হৃদয় কঠিন হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করল। তিনি বললেন, তুমি কি চাও, তোমার হৃদয় নরম হোক এবং তোমার প্রয়োজন পূরণ হোক? এতীমের প্রতি দয়া প্রদর্শন কর, তার মাথায় (সস্নেহে) হাত বুলাও, তাকে তোমার নিজের খাবার খাওয়াও, তাহলে তোমার হৃদয় নরম হবে এবং তোমার প্রয়োজন পূরণ হবে।
وعَنْ أَبِيْ الدَرْدَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ يَشْكوْ قِسْوَةٌ قَلْبُهُ قَالَ أتُحِبُّ أنْ يَلِينَ قَلْبُكَ وتُدْرِكَ حاجَتَكَ ارْحَمِ اليَتِيمَ وامْسَحْ رَأسَهُ وأطْعِمْهُ مِنْ طَعامِكَ يَلِنْ قَلْبُكَ وتُدْرِكْ حاجَتَكَ