পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الأَلْبَابِ
অর্থাৎ, বল, যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? বুদ্ধিমান লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে। (সূরা যুমার ৯)
(৩০২৯) আবূ মাসঊদ উক্ববাহ ইবনে আমর বাদরী আনসারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জামাআতের ইমামতি ঐ ব্যক্তি করবে, যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল কুরআন পড়তে জানে। যদি তারা পড়াতে সমান হয়, তাহলে তাদের মধ্যে যে সুন্নাহ (হাদীস) বেশী জানে সে (ইমামতি করবে)। অতঃপর তারা যদি সুন্নাহতে সমান হয়, তাহলে তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে হিজরতকারী। যদি হিজরতে সমান হয়, তাহলে তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ (ইমামতি করবে)। আর কোন ব্যক্তি যেন কোন ব্যক্তির নেতৃত্বস্থলে ইমামতি না করে এবং গৃহে তার বিশেষ আসনে তার বিনা অনুমতিতে না বসে।
অন্য এক বর্ণনায় ’বয়োজ্যেষ্ঠ’র পরিবর্তে ’সর্বাগ্রে ইসলাম গ্রহণকারী’ শব্দ রয়েছে।
আর এক বর্ণনায় আছে, জামাআতের ইমামতি করবে, যে তাদের মধ্যে বেশী ভালো কুরআন পড়তে পারে, যার ক্বিরাআত বেশী ভালো, অতঃপর ক্বিরাআতে সবাই সমান হলে সে ইমামতি করবে, যে তাদের মধ্যে আগে হিজরত করেছে। হিজরতে সবাই সমান হলে সে ইমামতি করবে, যে তাদের মধ্যে বয়সে বড়। (মুসলিম ১৫৬১-১৫৬৬)
وَعَنْ أَبِـيْ مَسعُودٍ عُقبَةَ بنِ عَمرٍو البَدرِي الأَنصَارِي قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَؤُمُّ القَوْمَ أقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ الله فَإنْ كَانُوا في القِراءَةِ سَوَاءً فأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ فَإنْ كَانُوا في السُّنَّةِ سَوَاءً فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإنْ كَانُوا في الهِجْرَةِ سَوَاءً فَأَقْدَمُهُمْ سِنّاً وَلاَ يَؤُمّنَّ الرَّجُلُ الرَّجُلَ في سُلْطَانِهِ وَلاَ يَقْعُدْ في بَيْتِهِ عَلَى تَكْرِمَتِهِ إلاَّ بِإذْنهِ رواه مسلم
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ فَأقْدَمُهُمْ سِلْماً بَدَلَ سِنّاً : أيْ إسْلاماً
وَفِي رِوَايَةٍ يَؤُمُّ القَومَ أقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللهِ وَأقْدَمُهُمْ قِراءةً فَإنْ كَانَتْ قِرَاءتُهُمْ سَوَاءً فَيَؤُمُّهُمْ أقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإنْ كَانُوا في الهِجْرَةِ سَواء فَليَؤُمُّهُمْ أكْبَرُهُمْ سِنّاً
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩০) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামায শুরু করার সময় আমাদের (বাজুর উপরি অংশে) কাঁধ ছুঁয়ে বলতেন, তোমরা সোজা হয়ে দাঁড়াও এবং বিভিন্নরূপে দাঁড়ায়ো না, (নতুবা) তোমাদের অন্তরসমূহ বিভিন্ন হয়ে যাবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত ও বুদ্ধিমান, তারাই যেন আমার নিকটে (প্রথম কাতারে আমার পশ্চাতে) থাকে। অতঃপর যারা বয়স ও বুদ্ধিতে তাদের নিকটবর্তী তারা। অতঃপর তাদের যারা নিকটবর্তী তারা।
وَعَنهُ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا في الصَّلاةِ وَيَقُولُ اسْتَوُوا وَلاَ تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ لِيَلِني مِنْكُمْ أُولُوا الأحْلاَمِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩১) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধিমান তারা যেন আমার নিকটে দাঁড়ায়। অতঃপর যারা (উভয় ব্যাপারে) তাদের নিকটবর্তী। এরূপ তিনি তিন বার বললেন। (অতঃপর তিনি বললেন,) ’’আর তোমরা (মসজিদে) বাজারের ন্যায় হৈচৈ করা হতে দূরে থাকো।
وَعنْ عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لِيَلِني مِنْكُمْ أُولُوا الأحْلاَمِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثَلاثاً وَإيَّاكُمْ وَهَيْشَاتِ الأسْوَاق رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩২) আবূ ইয়াহয়্যা মতান্তরে আবূ মুহাম্মাদ সাহল ইবনে আবূ হাসমা আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে সাহল এবং মুহাইয়িস্বাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) খায়বার রওয়ানা হলেন। সে সময় (সেখানকার ইয়াহুদী এবং মুসলিমের মধ্যে) সন্ধি ছিল। (খায়বার পৌঁছে স্ব স্ব প্রয়োজনে) তাঁরা পরস্পর পৃথক হয়ে গেলেন। অতঃপর মুহাইয়িস্বাহ আব্দুল্লাহ ইবনে সাহলের নিকট এলেন, যখন তিনি আহত হয়ে রক্তাক্ত দেহে তড়পাচ্ছিলেন। সুতরাং মুহাইয়িস্বাহ তাঁকে (তাঁর মৃত্যুর পর) সেখানেই সমাধিস্থ করলেন। তারপর তিনি মদীনা এলেন।
(মৃত্যু সংবাদ পেয়ে মৃতের ভাই) আব্দুর রহমান ইবনে সাহল এবং মাসউদের দুই ছেলে মুহাইয়িস্বাহ ও হুওয়াইয়িস্বাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলেন। আব্দুর রহমান কথা বলতে গেলেন। তা দেখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বয়োজ্যে’কে কথা বলতে দাও, বয়োজ্যেষ্ঠকে কথা বলতে দাও। আর ওঁদের মধ্যে আব্দুর রহমান বয়সে ছোট ছিলেন। ফলে তিনি চুপ হয়ে গেলেন এবং তাঁরা দু’জন কথা বললেন। (সব ঘটনা শোনার পর) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি কসম খাচ্ছ এবং (নিজ ভাইয়ের) হত্যাকারী থেকে অধিকার চাচ্ছ? অতঃপর তিনি সম্পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করলেন।
وَعَنْ أَبِـيْ يَحيَى وَقِيلَ : أَبِـيْ مُحَمَّدٍ سَهلِ بنِ أَبِـيْ حَثْمَةَ الأنصَارِي قَالَ : انطَلَقَ عَبدُ اللهِ ابنُ سهْلٍ وَمُحَيِّصَةُ بنُ مَسْعُودٍ إِلَى خَيْبَرَ وَهِيَ يَومَئذٍ صُلْحٌ فَتَفَرَّقَا فَأتَى مُحَيِّصَةُ إِلَى عبدِ اللهِ بنِ سَهلٍ وَهُوَ يَتشَحَّطُ في دَمِهِ قَتِيلاً فَدَفَنَهُ ثُمَّ قَدِمَ المَدِينَةَ فَانْطَلَقَ عَبدُ الرَّحمَانِ بنُ سَهلٍ وَمُحَيِّصَةُ وحُوَيِّصَةُ ابْنَا مَسْعُودٍ إِلَى النَّبيِّ ﷺ فَذَهَبَ عَبدُ الرَّحمَانِ يَتَكَلَّمُ فَقَالَ كَبِّرْ كَبِِّرْ وَهُوَ أحْدَثُ القَوم فَسَكَتَ فَتَكَلَّمَا فَقَالَ أتَحْلِفُونَ وتَسْتَحِقُّونَ قَاتِلَكُمْ ؟ وذكر تمام الحديث مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৩) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি নিজেকে স্বপ্নে দাঁতন করতে দেখলাম। অতঃপর দু’জন লোক এল, একজন অপরজনের চেয়ে বড় ছিল। আমি ছোটজনকে দাঁতনটি দিলাম, তারপর আমাকে বলা হল, ’বড়জনকে দাও।’ সুতরাং আমি তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ লোকটিকে (দাঁতন) দিলাম।
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ أرَانِي فِي المَنَامِ أتَسَوَّكُ بِسِوَاكٍ فَجَاءَنِي رَجُلاَنِ أحَدُهُما أَكبَرُ مِنَ الآخَرِ فَنَاوَلْتُ السِّوَاكَ الأصْغَرَ فَقِيلَ لِي : كَبِّرْ فَدَفَعْتهُ إِلَى الأكْبَرِ مِنْهُمَا رواه مسلم مسنداً والبخاري تعليقاً
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৪) জাবের (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদগণের দু’জনকে একটি কবরে একত্র করে জিজ্ঞেস করছিলেন, এদের মধ্যে কুরআন হিফয কার বেশী আছে? সুতরাং দু’জনের কোন একজনের দিকে ইশারা করা হলে প্রথমে তাঁকে বগলী কবরে রাখছিলেন।
وَعَنِ جَابِرٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُد يَعْنِي في القَبْرِ ثُمَّ يَقُولُ أيُّهُمَا أكْثَرُ أخذاً للقُرآنِ ؟ فَإذَا أُشيرَ لَهُ إِلَى أحَدِهِمَا قَدَّمَهُ في اللَّحْدِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৫) আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাকা চুলওয়ালা বয়স্ক মুসলিমের, কুরআন বাহক (হাফিয ও আলিম)-এর, যে কুরআনের ব্যাপারে অতিরঞ্জন ও অবজ্ঞাকারী নয় এবং ন্যায়পরায়ণ বাদশাহর সম্মান করা এক প্রকার আল্লাহ তাআলাকে সম্মান করা।
وَعَنِ أَبِـيْ مُوسَى قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إنَّ مِنْ إجْلالِ اللهِ تَعَالَى : إكْرَامَ ذِي الشَّيْبَةِ المُسْلِمِ وَحَامِلِ القُرآنِ غَيْرِ الغَالِي فِيهِ وَالجَافِي عَنْهُ وَإكْرَامَ ذِي السُّلْطَانِ المُقْسِط حديث حسن رواه أَبُو داود
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৬) আমর ইবনে শুআইব (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি (শুআইব) তাঁর (আমরের) দাদা (আব্দুল্লাহর ইবনে আমর) (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং আমাদের বড়দের সম্মান জানে না। (তিরমিযী ১৯২০)
আবূ দাঊদের বর্ণনায় আছেঃ আমাদের বড়দের অধিকার জানে না। (আবূ দাঊদ ৪৯৪৫)
وَعَنِ عَمرِو بنِ شُعَيبٍ عَن أبِيهِ عَن جَدِّهِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرنَا وَيَعْرِفْ شَرَفَ كَبيرِنَا حديث صحيح رواه أَبُو داود والترمذي وَقَالَ الترمذي حديث حسن صحيح وَفي رِوَايَةِ أبي دَاوُد حَقَّ كَبيرِنَا
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৭) উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে ব্যক্তি আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদের বড়দেরকে সম্মান দেয় না, ছোটদেরকে স্নেহ করে না এবং আলেমের অধিকার চেনে না।
عَنِ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَيْسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ لَمْ يُجِلَّ كَبِيرَنَا وَيَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيَعْرِفْ لِعَالِمِنَا حَقَّهُ
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৮) ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন যে, উয়াইনাহ ইবনে হিস্ন এলেন এবং তাঁর ভাতিজা হুর্র ইবনে কাইসের কাছে অবস্থান করলেন। এই (হুর্র) উমার (রাঃ) এর খেলাফত কালে ঐ লোকগুলির মধ্যে একজন ছিলেন যাদেরকে তিনি তাঁর নিকটে রাখতেন। আর কুরআন-বিশারদগণ বয়স্ক হন অথবা যুবক দল তাঁরা উমার (রাঃ) এর সভাষদ ও পরামর্শদাতা ছিলেন। উয়াইনাহ তাঁর ভাতিজাকে বললেন, ’হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! এই খলীফার কাছে তোমার বিশেষ সম্মান রয়েছে। তাই তুমি আমার জন্যে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চাও।’ ফলে তিনি অনুমতি চাইলেন। সুতরাং উমার তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর যখন উয়াইনাহ ভিতরে প্রবেশ করলেন, তখন উমার (রাঃ) কে বললেন, ’হে ইবনে খাত্ত্বাব! আল্লাহর কসম!
আপনি আমাদেরকে পর্যাপ্ত দান দেন না এবং আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করেন না!’ (এ কথা শুনে) উমার (রাঃ) রেগে গেলেন। এমনকি তাকে মারতে উদ্যত হলেন। তখন হুর্র তাঁকে বললেন, ’হে আমীরুল মু’মেনীন! আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে বলেন, ’’তুমি ক্ষমাশীলতার পথ অবলম্বন কর। ভাল কাজের আদেশ প্রদান কর এবং মূর্খদিগকে পরিহার করে চল।’’ (সূরা আল আ’রাফ ১৯৮) আর এ এক মূর্খ।’ আল্লাহর কসম! যখন তিনি (হুর্র) এই আয়াত পাঠ করলেন, তখন উমার (রাঃ) একটুকুও আগে বাড়লেন না। আর তিনি আল্লাহর কিতাবের কাছে (অর্থাৎ, তাঁর নির্দেশ শুনে) থেমে যেতেন।
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا قَالَ : قَدِمَ عُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنٍ فَنَزَلَ عَلَى ابْنِ أخِيهِ الحُرِّ بنِ قَيسٍ، وَكَانَ مِنَ النَّفَرِ الَّذِينَ يُدْنِيهِمْ عُمَرُ وَكَانَ القُرَّاءُ أصْحَابَ مَجْلِس عُمَرَ وَمُشاوَرَتِهِ كُهُولاً كانُوا أَوْ شُبَّاناً فَقَالَ عُيَيْنَةُ لابْنِ أخيهِ : يَا ابْنَ أخِي لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هٰذَا الأمِيرِ فَاسْتَأذِنْ لِي عَلَيهِ، فاسْتَأذَن فَأذِنَ لَهُ عُمَرُ فَلَمَّا دَخَلَ قَالَ: هِي يَا ابنَ الخَطَّابِ، فَواللهِ مَا تُعْطِينَا الْجَزْلَ وَلا تَحْكُمُ فِينَا بالعَدْلِ। فَغَضِبَ عُمَرُ حَتّٰـى هَمَّ أنْ يُوقِعَ بِهِ فَقَالَ لَهُ الحُرُّ : يَا أميرَ المُؤْمِنينَ إنَّ الله تَعَالَى قَالَ لِنَبيِّهِ ﷺ خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ الأعراف : وَإنَّ هٰذَا مِنَ الجَاهِلِينَ واللهِ مَا جَاوَزَهاَ عُمَرُ حِينَ تَلاَهَا وكَانَ وَقَّافاً عِنْدَ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৩৯) আবূ সাঈদ সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কিশোর ছিলাম। আমি তাঁর কথাগুলি মুখস্থ ক’রে নিতাম। কিন্তু আমাকে বর্ণনা করতে একটাই জিনিস বাধা সৃষ্টি করত যে, সেখানে আমার চেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ উপস্থিত থাকত।
وَعَنِ أَبِـيْ سَعِيدٍ سَمُرَةَ بنِ جُندُبٍ قَالَ : لَقَد كُنتُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ ﷺ غُلاماً فَكُنْتُ أحْفَظُ عَنْهُ فَمَا يَمْنَعُنِي مِنَ القَوْلِ إلاَّ أنَّ هَاهُنَا رِجَالاً هُمْ أسَنُّ مِنِّي مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৪০) আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, একদা আমি জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী (রাঃ) এর সাথে সফরে বের হলাম। (আমার চেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও) তিনি আমার খিদমত করতেন। সুতরাং আমি তাঁকে বললাম, ’আপনি এমন করবেন না।’ তিনি বললেন, ’আমি আনসারগণকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে (অনেক) কিছু করতে দেখেছি। তাই আমি শপথ করেছি যে, তাঁদের মধ্যে যাঁরই সঙ্গী হব, তাঁরই খিদমত করব।
وَعَنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : خَرَجتُ مَعَ جَرِيرِ بنِ عَبدِ اللهِ البَجَليّ في سَفَرٍ فَكَانَ يَخْدُمُني فَقُلْتُ لَهُ : لاَ تَفْعَل فَقَالَ : إِنِّي قَدْ رَأيْتُ الأنْصَارَ تَصْنَعُ بِرَسُولِ اللهِ ﷺ شَيئاً آلَيْتُ عَلَى نَفسِي أنْ لاَ أصْحَبَ أحَداً مِنْهُمْ إلاَّ خَدَمْتُهُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ উলামা, বয়স্ক ও সম্মানী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করা, তাঁদেরকে অন্যান্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া, তাঁদের উচ্চ আসন দেওয়া এবং তাঁদের মর্যাদা প্রকাশ করার বিবরণ
(৩০৪১) সাহল বিন সা’দ সায়েদী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু পানীয় আনা হলে তিনি কিছু পান করলেন। (অতঃপর সাহাবাগণকে দেওয়ার ইচ্ছা করলেন।) তাঁর ডানে ছিল একটি কিশোর এবং বামে ছিল বৃদ্ধরা। তিনি কিশোরটিকে বললেন, তুমি কি অনুমতি দাও যে, এই পানীয় আমি ওদেরকে দিই? কিশোরটি বলল, ’আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিকট থেকে পাওয়া ভাগ আমি অন্য কাউকে আগে দিতে চাই না।’ সুতরাং তিনি তা তার হাতেই ধরিয়ে দিলেন।
عَنِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِىِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ أُتِىَ بِشَرَابٍ فَشَرِبَ مِنْهُ وَعَنْ يَمِينِهِ غُلاَمٌ وَعَنْ يَسَارِهِ أَشْيَاخٌ فَقَالَ لِلْغُلاَمِ أَتَأْذَنُ لِى أَنْ أُعْطِىَ هَؤُلاَءِ فَقَالَ الْغُلاَمُ لاَ وَاللهِ لاَ أُوثِرُ بِنَصِيبِى مِنْكَ أَحَدًا قَالَ فَتَلَّهُ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِى يَدِهِ