পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَنْ يُعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ عِنْدَ رَبِّه
অর্থাৎ, কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে তার প্রতিপালকের নিকট তার জন্য এটাই উত্তম। (সূরা হাজ্জ্ব ৩০) তিনি আরো বলেন,
وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ
অর্থাৎ, কেউ আল্লাহর (দ্বীনের) প্রতীকসমূহের সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের সংযমশীলতারই বহিঃপ্রকাশ। (সূরা হাজ্জ্ব ৩২)
তিনি আরো বলেন,
وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
অর্থাৎ, বিশ্বাসীদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে অবনমিত রাখ। (হিজর ৮৮)
তিনি আরো বলেন,
مَنْ قَتَلَ نَفْساً بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعاً وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعاً
অর্থাৎ, এ কারণেই বনী ইস্রাঈলের প্রতি এ বিধান দিলাম যে, যে ব্যক্তি নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করার দণ্ডদান উদ্দেশ্য ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারো প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সূরা মায়েদাহ)
(৩০০৯) আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’এক মু’মিন অপর মু’মিনের জন্য অট্টালিকার ন্যায়, যার এক অংশ অন্য অংশকে মজবূত ক’রে রাখে।’’ তারপর তিনি (বুঝাবার জন্য) তাঁর এক হাতের আঙ্গুলগুলিকে অপর হাতের আঙ্গুলগুলির ফাঁকে ঢুকালেন।
وَعَنْ أَبِـيْ مُوسَى قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ المُؤْمِنُ للْمُؤْمِنِ كَالبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضَاً وشبَّكَ بَيْنَ أصَابِعِهِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১০) উক্ত রাবী (রাঃ) হতেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তীর সঙ্গে নিয়ে আমাদের কোন মসজিদ অথবা কোন বাজারের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করবে, তার উচিত হবে, হাতের চেটো দ্বারা তার ফলাকে ধরে নেওয়া। যাতে কোন মুসলিম তার দ্বারা কোন প্রকার কষ্ট না পায়।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ مَنْ مَرَّ في شَيْءٍ مِنْ مَسَاجِدِنا أَوْ أَسْوَاقِنَا وَمَعَهُ نَبْلٌ فَلْيُمْسِكْ أَوْ لِيَقْبِضْ عَلَى نِصَالِهَا بكَفّه ؛ أنْ يُصِيبَ أحَداً مِنَ المُسْلِمِينَ مِنْهَا بِشَيْء مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১১) নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মু’মিনদের আপোসের মধ্যে একে অপরের প্রতি সম্প্রীতি, দয়া ও মায়া-মমতার উদাহরণ (একটি) দেহের মতো। যখন দেহের কোন অঙ্গ পীড়িত হয়, তখন তার জন্য সারা দেহ অনিদ্রা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়।
وَعنْ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ مَثَلُ المُؤْمِنينَ في تَوَادِّهِمْ وتَرَاحُمِهمْ وَتَعَاطُفِهمْ مَثَلُ الجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الجَسَدِ بِالسَّهَرِ والحُمَّى مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১২) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ইবনে আলী (রাঃ) কে চুমু দিলেন। ঐ সময় তাঁর নিকট আক্বরা’ বিন হাবেস বসেছিলেন। আক্বরা’ বললেন, ’আমার দশটি ছেলে আছে, আমি তাদের কাউকেই কোনদিন চুমু দিইনি।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হয় না।
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَبَّلَ النَّبيُّ ﷺ الحَسَنَ بْنَ عَليٍّ رَضِيَ الله عَنهُمَا وَعِنْدَهُ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِس فَقَالَ الأقْرَعُ : إن لِي عَشرَةً مِنَ الوَلَدِ مَا قَبَّلْتُ مِنْهُمْ أحَداً فَنَظَرَ إِلَيْهِ رَسُول الله ﷺ فَقَالَ مَنْ لا يَرْحَمْ لاَ يُرْحَمْ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৩) আয়েশা (রাযিআল্লাহু আনহা) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু বেদুঈন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ’আপনারা কি আপনাদের শিশু-সন্তানদেরকে চুমু দিয়ে থাকেন?’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তারা বলল, ’কিন্তু আল্লাহর কসম! আমরা চুমু দিই না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তর থেকে দয়া উঠিয়ে নেন, তবে আমি কি তার যিম্মেদার হতে পারি?
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : قَدِمَ نَاسٌ مِنَ الأعْرَابِ عَلَى رَسُولِ الله ﷺ فَقَالَوا : أتُقَبِّلُونَ صِبْيَانَكُمْ ؟ فَقَالَ نَعَمْ قَالَوا : لَكِنَّا وَاللهِ مَا نُقَبِّلُ! فَقَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ أَوَ أَمْلِك إنْ كَانَ اللهُ نَزَعَ مِنْ قُلُوبِكُم الرَّحْمَةَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৪) জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করবে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করবেন না।
وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ لاَ يَرْحَمِ النَّاسَ لاَ يَرْحَمْهُ الله مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে নামায পড়ে, তখন সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাদের মাঝে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ লোক থাকে। আর যখন কেউ একাকী নামায পড়ে, তখন সে ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে।
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ أنّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا صَلَّى أحَدُكُمْ للنَّاسِ فَلْيُخَفِّفْ فَإنَّ فِيهِم الضَّعِيفَ وَالسَّقِيمَ وَالكَبيرَ وَإِذَا صَلَّى أحَدُكُمْ لِنَفْسِهِ فَلْيُطَوِّل مَا شَاءَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৬) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো (নফল) আমল করতে পছন্দ করা সত্ত্বেও এই ভয়ে ছেড়ে দিতেন যে, লোকেরা তা আমল করবে এবং তার ফলে তাদের উপর তা ফরয করে দেওয়া হবে।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : إنْ كَانَ رَسُول الله ﷺ لَيَدَعُ العَمَلَ وَهُوَ يُحبُّ أنْ يَعْمَلَ بِهِ؛ خَشْيَةَ أنْ يَعمَلَ بِهِ النَّاسُ فَيُفْرَضَ علَيْهِمْ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৭) আয়েশা (রাঃ) হতেই বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে দয়াপূর্বক ’সওমে বিসাল’ (বিনা ইফতারে একটানা রোযা) রাখতে নিষেধ করেছেন। তাঁরা বললেন, ’’আপনি তো ’সওমে বিসাল’ রাখছেন?’’ তিনি বললেন, ’’আমি তোমাদের মত নই। আমাকে তো আমার প্রতিপালক রাতে পানাহার করান।’’ (বুখারী ১৯৬৪, মুসলিম ২৬২৭)
وَعَنهُا رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : نَهَاهُمُ النَّبيُّ ﷺ عنِ الوِصَالِ رَحمَةً لَهُمْ فَقَالَوا : إنَّكَ تُوَاصِلُ ؟ قَالَ إنّي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ إنِّي أَبِيْتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسقِيني مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৮) আবূ কাতাদাহ্ হারেস ইবনে রিবয়ী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি নামায পড়তে দাঁড়াই এবং আমার ইচ্ছা হয় তা দীর্ঘ করি। অতঃপর আমি শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনি। ফলে আমি তার মায়ের কষ্ট হওয়াটা অপছন্দ মনে ক’রে নামায সংক্ষিপ্ত করি।
وَعَنْ أَبِـيْ قَتادَةَ الحَارِثِ بنِ رِبعِي قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إنِّي لأَقُومُ إِلَى الصَّلاةِ وَأُرِيدُ أَنْ أُطَوِّلَ فِيهَا فَأسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبيِّ فَأَتَجَوَّزَ في صَلاَتِي كَرَاهِيَةً أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمِّهِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০১৯) জুন্দুব ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায (জামাআতে) পড়ল, সে আল্লাহর জামানতে চলে এল। সুতরাং আল্লাহ যেন তোমাদের কাছে তার জামানতের কিছু দাবী না করেন। কারণ, যার কাছেই তিনি তাঁর জামানতের কিছু দাবী করবেন, তাকে পাকড়াও করবেন। অতঃপর তিনি তাকে উপুড় ক’রে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (মুসলিম ১৫২৬)
وَعَنْ جُندُبِ بنِ عَبدِ اللهِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ مَنْ صَلَّى صَلاةَ الصُّبْحِ فَهُوَ في ذِمَّةِ الله فَلاَ يَطْلُبَنَّكُمُ الله مِنْ ذِمَّته بشَيءٍ فَإنَّهُ مَنْ يَطْلُبْهُ منْ ذمَّته بشَيءٍ يُدْركْهُ ثُمَّ يَكُبُّهُ عَلَى وَجْهِهِ في نَارِ جَهَنَّمَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২০) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিম মুসলিমের ভাই, সে তার উপর অত্যাচার করবে না এবং তাকে অত্যাচারীর হাতে ছেড়ে দেবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূর্ণ করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূর্ণ করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের কোন এক বিপদ দূর ক’রে দেবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বহু বিপদের একটি বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে, আল্লাহ কিয়ামতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবেন।
وَعَنْ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ الله عَنهُمَا : أنَّ رَسُوْلَ الله ﷺ قَالَ المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِم لا يَظْلِمهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ مَنْ كَانَ في حَاجَة أخيه كَانَ اللهُ في حَاجَته وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِم كُرْبَةً فَرَّجَ اللهُ عَنْهُ بها كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَومِ القِيَامَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِماً سَتَرَهُ اللهُ يَومَ القِيامَةِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, তাকে মিথ্যা বলবে না (বা মিথ্যাবাদী ভাববে না), তার সাহায্য না ক’রে তাকে অসহায় ছেড়ে দেবে না। এক মুসলিমের মর্যাদা, মাল ও খুন অপর মুসলিমের জন্য হারাম। আল্লাহভীতি এখানে (অন্তরে) রয়েছে। কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করাটাই একটি মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ المُسْلِمُ أخُو المُسْلِمُ لاَ يَخُونُهُ وَلاَ يَكْذِبُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ كُلُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِم حَرَامٌ عِرْضُهُ وَمَالهُ وَدَمُهُ التَّقْوَى هَاهُنَا بحَسْبٍ امْرِىءٍ مِنَ الشَّرِّ أنْ يَحْتقِرَ أخَاهُ المُسْلِم رواه الترمذي وَقَالَ حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২২) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা এক অপরের প্রতি হিংসা করো না, কেনাবেচাতে জিনিসের মূল্য বাড়িয়ে এক অপরকে ধোকা দিয়ো না, এক অপরের প্রতি শত্রুতা রেখো না, এক অপর থেকে (ঘৃণাভরে) মুখ ফিরায়ো না এবং এক অপরের (জিনিস) কেনাবেচার উপর কেনাবেচা করো না। আর হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ভাই-ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করবে না, তাকে তুচ্ছ ভাববে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেবে না। আল্লাহভীতি এখানে রয়েছে। (তিনি নিজ বুকের দিকে ইঙ্গিত করে এ কথা তিনবার বললেন।) কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ ভাবা একটি মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, মাল এবং তার মর্যাদা অপর মুসলিমের উপর হারাম।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْع بَعْض وَكُونُوا عِبَادَ الله إخْوَاناً المُسْلِمُ أخُو المُسْلم : لاَ يَظْلِمُهُ وَلا يَحْقِرُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ التَّقْوَى هاهُنَا - وَيُشِيرُ إِلَى صَدرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتً - بحَسْب امْرئٍ مِنَ الشَّرِّ أنْ يَحقِرَ أخَاهُ المُسْلِمَ كُلُّ المُسْلم عَلَى المُسْلم حَرَامٌ، دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৩) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ (পূর্ণ) মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبيّ ﷺ قَالَ لاَ يُؤمِنُ أحَدُكُمْ حَتّٰـى يُحِبَّ لِأَخِيْهِ مَا يُحِبُّ لنَفْسِهِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৪) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার ভাইকে সাহায্য কর, সে অত্যাচারী হোক অথবা অত্যাচারিত। তিনি (আনাস (রাঃ)) বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! অত্যাচারিতকে সাহায্য করার বিষয়টি তো বুঝলাম; কিন্তু অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব?’ তিনি বললেন, ’’তুমি তাকে অত্যাচার করা হতে বাধা দেবে, তাহলেই তাকে সাহায্য করা হবে।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ انْصُرْ أخَاكَ ظَالماً أَوْ مَظْلُوماً فَقَالَ رجل : يَا رَسُوْلَ اللهِ أنْصُرُهُ إِذَا كَانَ مَظْلُوماً أرَأيْتَ إنْ كَانَ ظَالِماً كَيْفَ أنْصُرُهُ ؟ قَالَ تحْجُزُهُ أَوْ تمْنَعُهُ مِنَ الظُلْمِ فَإِنَّ ذلِكَ نَصرُهُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুসলিমের উপর মুসলিমের পাঁচটি অধিকার রয়েছেঃ (১) সালামের জবাব দেওয়া, (২) রোগী দেখতে যাওয়া, (৩) জানাযায় অংশ গ্রহণ করা, (৪) দাওয়াত গ্রহণ করা এবং (৫) কেউ হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া। (বুখারী ১২৪০, মুসলিম ৫৭৭৬)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, মুসলিমের উপর মুসলিমের অধিকার ছয়টিঃ তুমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তাকে সালাম দাও, সে তোমাকে দাওয়াত দিলে তার দাওয়াত গ্রহণ কর, সে তোমার কাছে উপদেশ চাইলে তুমি তাকে উপদেশ দাও, সে হাঁচি দিয়ে ’আলহামদু লিল্লাহ’ বললে তার জবাব দাও, সে অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাও এবং সে মারা গেলে তার জানাযার অংশ গ্রহণ কর। (মুসলিম ৫৭৭৮)
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ أنَّ رَسُوْلَ الله ﷺ قَالَ حَقُّ المُسْلِم عَلَى المُسْلِم خَمْسٌ : رَدُّ السَّلامِ وَعِيَادَةُ المَريض وَاتِّبَاعُ الجَنَائِزِ وَإجَابَةُ الدَّعْوَة وتَشْميتُ العَاطِسِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رواية لمسلم حَقُّ المُسْلِم عَلَى المُسْلِم ستٌّ : إِذَا لَقيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيهِ وَإِذَا دَعَاكَ فَأجبْهُ وإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ وإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ الله فَشَمِّتْهُ وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৬) আবূ উমারাহ বারা’ ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাতটি কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং সাতটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি রোগী দেখতে যেতে, জানাযায় অংশগ্রহণ করতে, কেউ হাঁচি দিলে তার জবাব দিতে, শপথকারীর শপথ রক্ষা করতে, নিপীড়িতদের সাহায্য করতে, সালামের প্রসার ঘটাতে এবং কেউ দাওয়াত দিলে তা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর তিনি আমাদেরকে সোনার আংটি পরতে, রূপার পাত্র ব্যবহার করতে, রেশমের জিনপোশ, কাস্সী, ইস্তাবরাক ও দীবাজ (সর্বপ্রকার রেশমী পোশাক) ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন।
وَعَنْ أَبِـيْ عُمَارَةَ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِسَبعٍ وَنَهَانَا عَن سَبعٍ : أمَرَنَا بعيَادَة المَرِيض وَاتِّبَاعِ الجَنَازَةِ وتَشْمِيتِ العَاطسِ، وَإبْرَارِ المُقْسِم، ونَصْرِ المَظْلُوم وَإجَابَةِ الدَّاعِي وَإِفْشَاءِ السَّلامِ ونَهَانَا عَنْ خَواتِيمٍ أَوْ تَخَتُّمٍ بالذَّهَبِ وَعَنْ شُرْبٍ بالفِضَّةِ وَعَن الميَاثِرِ الحُمْرِ وَعَن القَسِّيِّ وَعَنْ لُبْسِ الحَريرِ والإسْتبْرَقِ وَالدِّيبَاجِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৭) আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দয়ার্দ্র মানুষদেরকে পরম দয়াময় (আল্লাহ) দয়া করেন। তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি দয়া প্রদর্শন কর তাহলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন, যিনি আকাশে আছেন।
وعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عنِ النَّبِىَّ ﷺ الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ ارْحَمُوا أَهْلَ الأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِى السَّمَاءِ
পরিচ্ছেদঃ মুসলিমদের মান-মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা-প্রদর্শন ও তাদের অধিকার-রক্ষা এবং তাদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের গুরুত্ব
(৩০২৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সত্যনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত এই হুজরা-ওয়ালা আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, দুর্ভাগা ছাড়া অন্য কারো (হৃদয়) থেকে দয়া, ছিনিয়ে নেওয়া হয় না।
وعَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْقَاسِمِ الصَّادِقَ الْمَصْدُوقَ ﷺ صَاحِبَ هَذِهِ الْحُجْرَةِ يَقُولُ لاَ تُنْزَعُ الرَّحْمَةُ إِلاَّ مِنْ شَقِىٍّ