পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
মহান আল্লাহ বলেছেন,
وَإِذَا سَمِعُوا اللَّغْوَ أَعْرَضُوا عَنْهُ
অর্থাৎ, ওরা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন ওরা তা পরিহার করে চলে। (সূরা ক্বস্বাস ৫৫)
তিনি আরো বলেন,
والَّذينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
অর্থাৎ, যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে। (সূরা মু’মিনূন ৩)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْؤُولاً
অর্থাৎ, নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। (সূরা বনী ইস্রাঈল ৩৬)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ في آيَاتِنا فَأعْرِضْ عَنْهُمْ حَتّٰـى يَخُوضُوا في حَدِيثٍ غَيْرِهِ وإمَّا يُنْسِيَنَّكَ الشَّيْطانُ فَلاَ تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَى مَعَ القَومِ الظَّالِمِينَ
অর্থাৎ, তুমি যখন দেখ, তারা আমার নিদর্শন সম্বন্ধে ব্যঙ্গ আলোচনায় মগ্ন হয়, তখন তুমি দূরে সরে পড়; যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে আলোচনায় প্রবৃত্ত হয় এবং শয়তান যদি তোমাকে ভ্রমে ফেলে, তাহলে স্মরণ হওয়ার পরে তুমি অত্যাচারী সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না। (সূরা আনআম ৬৮)
(২৯৭৬) আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করবে, কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের আগুন থেকে তার চেহারাকে রক্ষা করবেন।
وَعَنْ أَبِـيْ الدَّردَاءِ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ رَدَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيهِ رَدَّ اللهُ عَنْ وَجْهِهِ النَّارَ يَومَ القيَامَةِ رواه الترمذي وقَالَ حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৭৭) আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে (তার গীবত করা ও ইজ্জত লুটার সময় প্রতিবাদ করে) তার সম্ভ্রম রক্ষা করে, সেই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট এই অধিকার পায় যে, তিনি তাকে দোযখ থেকে মুক্ত করে দেন।
عَنْ أَسْمَاءَ بنتِ يَزِيدَ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ مَنْ ذَبَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيهِ بِالْمَغِيبِ كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يَعْتِقَهُ مِنَ النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৭৮) জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) ও আবূ তালহা বিন সাহল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোনও ব্যক্তি কোন মুসলিম ব্যক্তিকে সেই জায়গায় সাহায্য না করে বর্জন করবে, যেখানে তার সম্ভ্রম লুটা হয় এবং তার ইজ্জত নষ্ট করা হয়, সে ব্যক্তিকে আল্লাহ সেই জায়গায় সাহায্য না করে বর্জন করবেন, যেখানে সে তাঁর সাহায্য পেতে পছন্দ করে। আর যে কোনও ব্যক্তি কোন মুসলিম ব্যক্তিকে সেই জায়গায় সাহায্য করবে, যেখানে তার সম্ভ্রম লুটা হয় এবং তার ইজ্জত নষ্ট করা হয়, সে ব্যক্তিকে আল্লাহ সেই জায়গায় সাহায্য করবেন, যেখানে সে তাঁর সাহায্য পেতে পছন্দ করে।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ وَأَبِـيْ طَلْحَةَ بْنِ سَهْلٍ الأَنْصَارِىَّ يَقُولاَنِ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا مِنِ امْرِئٍ يَخْذُلُ امْرَأً مُسْلِمًا فِى مَوْضِعٍ تُنْتَهَكُ فِيهِ حُرْمَتُهُ وَيُنْتَقَصُ فِيهِ مِنْ عِرْضِهِ إِلاَّ خَذَلَهُ اللهُ فِى مَوْطِنٍ يُحِبُّ فِيهِ نُصْرَتَهُ وَمَا مِنِ امْرِئٍ يَنْصُرُ مُسْلِمًا فِى مَوْضِعٍ يُنْتَقَصُ فِيهِ مِنْ عِرْضِهِ وَيُنْتَهَكُ فِيهِ مِنْ حُرْمَتِهِ إِلاَّ نَصَرَهُ اللهُ فِى مَوْطِنٍ يُحِبُّ نُصْرَتَهُ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৭৯) ইতবান ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, যা বিগত ’আল্লাহর প্রতি আশা’ পরিচ্ছেদে বর্ণিত একটি সুদীর্ঘ হাদীসের অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়ানোর উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ’’মালিক ইবনে দুখ্শুম কোথায়!’’ একটি লোক বলে উঠল, ’সে তো একজন মুনাফিক; আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে না।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ও কথা বলো না। তুমি কি মনে কর না যে, সে (কালিমা) ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং সে তার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায়? যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে (কালিমা) ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম ক’রে দেন।
وَعَنْ عِتبَانَ بنِ مَالكٍ فِي حَدِيثِهِ الطَّوِيلِ المَشْهُورِ الَّذِيْ تَقَدَّمَ فِي بَابِ الرَّجَاءِ قَالَ : قَامَ النَّبِيُّ ﷺ يُصَلِّي فَقَالَ أَيْنَ مَالِكُ بنُ الدُّخْشُمِ ؟ فَقَالَ رَجُلٌ : ذٰلِكَ مُنَافِقٌ لاَ يُحِبُّ اللهَ وَلاَ رَسُوْلَهُ، فَقَالَ النَّبِـيُّ ﷺ لاَ تَقُلْ ذٰلِكَ أَلاَ تَراهُ قَدْ قَالَ : لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ يُريدُ بِذَلكَ وَجْهَ اللهِ وإنَّ الله قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ : لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ يَبْتَغي بِذٰلِكَ وَجْهَ اللهِ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮০) কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, যা তওবা পরিচ্ছেদে সুদীর্ঘ হাদীস তাঁর তাওবার কাহিনী অতিবাহিত হয়েছে, তিনি বলেন, তাবূক পৌঁছে যখন তিনি লোকেদের মাঝে বসে ছিলেন, তখন আমার ব্যাপারে বললেন, ’কা’ব বিন মালেকের কী হয়েছে?’ বানু সালেমাহ (গোত্রের) একটি লোক বলে উঠল যে, ’হে আল্লাহর রসূল! তার দুই চাদর এবং দুই পার্শ্ব (বাহু) দর্শন (অর্থাৎ ধন ও তার অহঙ্কার) তাকে আটকে দিয়েছে।’ (এ কথা শুনে) মুআয বিন জাবাল (রাঃ) বললেন, ’তুমি নিকৃষ্ট কথা বললে। আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রসূল! আমরা তাকে ভালই জানি।’ সুতরাং আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন।
وَعَنْ كَعْبِ بنِ مَالِكٍ فِي حَدِيثِهِ الطَّوِيلِ فِي قِصَّةِ تَوْبَتِهِ وَقَدْ سَبَقَ فِي بَابِ التَّوبَةِ قَالَ : قَالَ النَّبِـيُّ ﷺ وَهُوَ جَالِسٌ فِي القَومِ بِتَبُوكَ مَا فَعَلَ كَعْبُ بنُ مَالِكٍ ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَالنَّظَرُ فِي عِطْفَيْهِ فَقَالَ لَهُ مُعاذُ بنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا عَلِمنَا عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْراً فَسَكَتَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮১) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসার অনুমতি চাইল। তিনি বললেন, ওকে অনুমতি দাও। ও নিজ বংশের অত্যন্ত মন্দ ব্যক্তি। (বুখারী ৬০৫৪, মুসলিম ৬৭৬১-৬৭৬২)
وعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا : أَنَّ رَجُلاً اسْتَأذَنَ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَ ائْذَنُوا لَهُ بِئْسَ أَخُو العَشِيرَةِ ؟ متفق عَلَيْهِ احتَجَّ بِهِ البُخَارِيُّ فِي جَوَازِ غِيبَة أَهلِ الفَسَادِ وَأَهلِ الرِّيبِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮২) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার মনে হয় না যে, অমুক ও অমুক লোক আমাদের দ্বীন সম্পর্কে কিছু জ্ঞান রাখে। (বুখারী ৬০৬৭-৬০৬৮)
এই হাদীসের অন্যতম রাবী লাইস বিন সা’দ বলেন, ’ঐ লোক দু’টি মুনাফিক ছিল।’
وَعَنهُا قَالَتْ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا أَظُنُّ فُلاَناً وَفُلاَناً يَعْرِفَانِ مِنْ دِينِنَا شَيْئاً رواه البخاري قَالَ : قَالَ اللَّيْثُ بنُ سَعدٍ أَحَدُ رُوَاةِ هٰذَا الحَدِيثِ : هٰذَانِ الرَّجُلاَنِ كَانَا مِنَ المُنَافِقِينَ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮৩) ফাত্বেমাহ বিনতে ক্বাইস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে নিবেদন করলাম, ’আবুল জাহ্ম ও মুয়াবিয়াহ আমাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছেন। (এ ক্ষেত্রে আমি কী করব?)’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’মুআবিয়াহ তো গরীব মানুষ, তার নিকট মালধনই নেই। আর আবুল জাহম, সে তো নিজ কাঁধ হতে লাঠিই নামায় না।’ (বুখারী মুসলিম ৩৭৭০)
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, ’আবুল জাহ্ম তো স্ত্রীদেরকে অত্যন্ত মারধর করে।’ আর এই বর্ণনাটি ’সে তো নিজ কাঁধ হতে লাঠিই নামায় না’--এর ব্যাখ্যা স্বরূপ। কারো মতে তার অর্থ, সে অধিকাংশ সময় সফরে থাকে।
وَعَنْ فَاطِمَةَ بِنتِ قَيسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : أَتَيتُ النَّبِيَّ ﷺ فَقُلْتُ : إِنَّ أَبَا الجَهْمِ وَمُعَاوِيَةَ خَطَبَانِي؟ فَقَالَ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ أَمَّا مُعَاوِيَةُ فَصُعْلُوكٌ لاَ مَالَ لَهُ وَأَمَّا أَبُو الجَهْمِ فَلاَ يَضَعُ العَصَا عَنْ عَاتِقِهِ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮৪) যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক সফরে বের হলাম, যাতে লোকেরা সাংঘাতিক কষ্ট পেয়েছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই (মুনাফিকদের সর্দার, স্বমতাবলম্বী লোকদেরকে সম্বোধন ক’রে) বলল, ’তোমরা আল্লাহর রসূলের সঙ্গীদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা সরে দাঁড়ায়।’ এবং সে আরো বলল, ’আমরা মদীনায় ফিরে গেলে সেখান হতে সম্মানী অবশ্যই হীনকে বহিষ্কার করবে।’ (যায়েদ বলেন,) আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তা জানিয়ে দিলাম। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে ডেকে পাঠালেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই (কিন্তু) বারবার শপথ ক’রে বলল যে, সে তা বলেনি। লোকেরা বলল, ’যায়েদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিথ্যা কথা বলেছে।’ (যায়েদ বলেন,) লোকেদের কথা শুনে আমার মনে অত্যন্ত দুঃখ হল। অবশেষে আল্লাহ আমার কথার সত্যতায় সূরা ’ইযা জা-আকাল মুনাফিক্বূন’ অবতীর্ণ করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আল্লাহর নিকট) তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার উদ্দেশ্যে তাদেরকে ডাকলেন। কিন্তু তারা নিজেদের মাথা ফিরিয়ে নিল।
وَعَنْ زَيدِ بنِ أَرْقَمَ قَالَ : خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فِي سَفَرٍ أَصَابَ النَّاسَ فِيهِ شِدَّةٌ فَقَالَ عَبدُ اللهِ بنُ أُبَيّ : لاَ تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِندَ رَسُولِ اللهِ حَتّٰـى يَنْفَضُّوا وَقَالَ : لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى المَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ فَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَأخْبَرْتُهُ بِذٰلِكَ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبدِ اللهِ بنِ أُبَيِّ فَاجْتَهَدَ يَمِينَهُ : مَا فَعلَ فَقَالَوا : كَذَبَ زَيدٌ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَوَقَعَ في نَفْسِي مِمَّا قَالَوهُ شِدَّةٌ حَتّٰـى أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى تَصْدِيقِي : إِذَا جَاءكَ المُنَافِقُونَ ثُمَّ دَعَاهُمُ النَّبِيُّ ﷺ لِيَسْتَغْفِرَ لَهُمْ فَلَوَّوْا رُؤُوسَهُمْ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮৫) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সুফয়ানের স্ত্রী হিন্দ্ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন যে, ’আবূ সুফয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি তার সম্পদ থেকে (তার অজান্তে) যা কিছু নিই তা ছাড়া সে আমার ও আমার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খরচ দেয় না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার ও তোমার সন্তানের প্রয়োজন মোতাবেক খরচ (তার অজান্তে) নিতে পার।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : قَالَتْ هِنْدُ امْرَأةُ أَبِـيْ سُفْيَانَ لِلنَّبِيِّ ﷺ إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ وَلَيْسَ يُعْطِينِي مَا يَكْفِينِي وَوَلَدِي إِلاَّ مَا أَخَذْتُ مِنْهُ، وَهُوَ لاَ يَعْلَمُ ؟ قَالَ خُذِيْ مَا يَكْفِيكِ وَوَلَدَكِ بِالمَعْرُوفِ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গীবতে (পরচর্চায়) অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে সম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া যে কথা আসলে গীবত নয়
(২৯৮৬) আয়েশা (রাঃ) বলেন, এক অভদ্র ব্যক্তি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে খবর গেলে তিনি বললেন, ’বাজে লোক!’ তারপর তাকে প্রবেশ করার অনুমতি দিলেন। সে যখন বসল, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনে খুশী প্রকাশ করলেন এবং নম্রভাবে কথা বলতে লাগলেন। অতঃপর লোকটি চলে গেলে আয়েশা (রাঃ) তাঁকে বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি তার সম্পর্কে এই এই (কুমন্তব্য) করলেন। তারপর সে যখন ভিতরে এল, তখন তার সামনে খুশী প্রকাশ করলেন এবং নম্রভাবে কথা বলতে লাগলেন!’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্টমানের ব্যক্তি সেই হবে, যাকে মানুষ তার অশ্লীলতা থেকে বাঁচার জন্য বর্জন করে থাকে।
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلاً اسْتَأْذَنَ عَلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ ائْذَنُوا لَهُ فَلَبِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ أَوْ بِئْسَ رَجُلُ الْعَشِيرَةِ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ أَلاَنَ لَهُ الْقَوْلَ قَالَتْ عَائِشَةَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قُلْتَ لَهُ الَّذِى قُلْتَ ثُمَّ أَلَنْتَ لَهُ الْقَوْلَ قَالَ يَا عَائِشَةَ إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ