পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللهِ إِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعاً إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

অর্থাৎ, ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ ক’রে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার ৫৩ আয়াত) তিনি আরো বলেন,

وَهَلْ نُجَازِي إِلاَّ الْكَفُور

অর্থাৎ, আমি অকৃতজ্ঞ (বা অস্বীকারকারী) কেই শাস্তি দিয়ে থাকি। (সূরা সাবা ১৭ আয়াত)

আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন,

إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى

অর্থাৎ, নিশ্চয় আমাদের প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য, যে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরা ত্বাহা ৪৮ আয়াত)। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ

অর্থাৎ, আমার দয়া তা তো প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত। (সূরা আ’রাফ ১৫৬ আয়াত)


(৪৪৪) উবাদাহ ইবনে সবামেত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, আর মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল এবং ঈসা আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল, আর তাঁর বাণী যা তিনি মারয়্যামের মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন এবং তাঁর রূহ। আর জান্নাত সত্য ও জাহান্নাম সত্য। তাকে আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; তাতে সে যে কর্মই করে থাকুক না কেন।

মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর রসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।

وَعَن عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ شَهِدَ أنَّ لاَ إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأنَّ مُحَمداً عَبْدهُ ورَسُولُهُ وَأنَّ عِيسَى عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ وَكَلِمَتُهُ ألْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ ورُوحٌ مِنْهُ وَأنَّ الجَنَّةَ حَقٌّ وَالنَّارَ حَقٌّ أدْخَلَهُ اللهُ الجَنَّةَ عَلَى مَا كَانَ مِنَ العَمَلِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وفي رواية لمسلم مَنْ شَهِدَ أنْ لا إلَهَ إلاَّ اللهُ وَأنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ حَرَّمَ اللهُ عَلَيهِ النَّارَ

وعن عبادة بن الصامت قال : قال رسول الله ﷺ من شهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له وان محمدا عبده ورسوله وان عيسى عبد الله ورسوله وكلمته القاها الى مريم وروح منه وان الجنة حق والنار حق ادخله الله الجنة على ما كان من العمل متفق عليه وفي رواية لمسلم من شهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله حرم الله عليه النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৪৫) আবূ যার্র বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আযযা অজাল্লা বলেন, যে ব্যক্তি একটি নেকী করবে, তার জন্য দশ গুণ নেকী রয়েছে অথবা ততোধিক বেশী। আর যে ব্যক্তি একটি পাপ করবে, তার বিনিময় (সে) ততটাই (পাবে; তার বেশী নয়) অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বিঘত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি দু’হাত নিকটবর্তী হব। যে আমার দিকে হেঁটে আসবে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাব। আর যে ব্যক্তি প্রায় পৃথিবী সমান পাপ করে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, অথচ সে আমার সাথে কাউকে শরীক করেনি, তার সাথে আমি তত পরিমাণই ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাৎ করব।

وَعَنْ أَبيْ ذَرٍّ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ يَقُولُ اللهُ - عَزَّ وَجَلَّ - : مَنْ جَاءَ بِالحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أمْثَالِهَا أَوْ أزْيَد وَمَنْ جَاءَ بالسَيِّئَةِ فَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِثْلُهَا أَوْ أغْفِرُ وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي شِبْراً تَقَرَّبْتُ مِنْهُ ذِرَاعاً وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي ذِرَاعاً تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعاً وَمَنْ أتَانِي يَمْشِي أتَيْتُهُ هَرْوَلَةً وَمَنْ لَقِيَني بِقُرَابِ الأرْضِ خَطِيئَةً لاَ يُشْرِكُ بِي شَيئاً لَقِيتُهُ بِمِثْلِهَا مَغفِرَةً رواه مسلم

وعن ابي ذر قال : قال النبي ﷺ يقول الله - عز وجل - : من جاء بالحسنة فله عشر امثالها او ازيد ومن جاء بالسيىة فجزاء سيىة سيىة مثلها او اغفر ومن تقرب مني شبرا تقربت منه ذراعا ومن تقرب مني ذراعا تقربت منه باعا ومن اتاني يمشي اتيته هرولة ومن لقيني بقراب الارض خطيىة لا يشرك بي شيىا لقيته بمثلها مغفرة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৪৬) জাবের (রাঃ) বলেন, এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! (জান্নাত ও জাহান্নাম) ওয়াজেবকারী (অনিবার্যকারী) কর্ম দু’টি কি? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার করবে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তার সাথে কোন জিনিসকে অংশীদার করবে (এবং তওবা না করে ঐ অবস্থাতেই সে মৃত্যুবরণ করবে) সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

وَعَن جَابِرٍ قَالَ : جَاءَ أَعرَابِي إِلَى النَّبيِّ ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ مَا الموجِبَتَانِ؟ قَالَ مَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بالله شَيئاً دَخَلَ الجَنَّةَ وَمَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً دَخَلَ النَّار رواه مسلم

وعن جابر قال : جاء اعرابي الى النبي ﷺ فقال : يا رسول الله ما الموجبتان؟ قال من مات لا يشرك بالله شيىا دخل الجنة ومن مات يشرك به شيىا دخل النار رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৪৭) মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি গাধার উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ার ছিলাম। তিনি বললেন, হে মুআয! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তিনি বললেন, বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, সে তাঁরই ইবাদত করবে, এতে তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক এই যে, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না, তিনি তাকে আযাব দেবেন না। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকেদেরকে (এ) সুসংবাদ দেব না? তিনি বললেন, তাদেরকে সুসংবাদ দিও না। কেননা, তারা (এরই উপর) ভরসা করে বসবে।

وَعَن مُعَاذِ بنِ جَبَلٍ قَالَ: كُنْتُ رِدْفَ النَّبيِّ ﷺ عَلَى حِمَارٍ فَقَالَ يَا مُعَاذُ هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ الله عَلَى عِبَادِهِ ؟ وَمَا حَقُّ العِبَادِ عَلَى الله ؟ قُلْتُ : اللهُ وَرَسُولُهُ أعْلَمُ قَالَ فإنَّ حَقَّ اللهِ عَلَى العِبَادِ أنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيئاً وَحَقَّ العِبَادِ عَلَى اللهِ أنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لا يُشْرِكُ بِهِ شَيئاً فقلتُ : يَا رَسُولَ الله أفَلا أُبَشِّرُ النَّاسَ ؟ قَالَ لاَ تُبَشِّرْهُمْ فَيَتَّكِلُوا مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن معاذ بن جبل قال: كنت ردف النبي ﷺ على حمار فقال يا معاذ هل تدري ما حق الله على عباده ؟ وما حق العباد على الله ؟ قلت : الله ورسوله اعلم قال فان حق الله على العباد ان يعبدوه ولا يشركوا به شيىا وحق العباد على الله ان لا يعذب من لا يشرك به شيىا فقلت : يا رسول الله افلا ابشر الناس ؟ قال لا تبشرهم فيتكلوا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৪৮) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, মুআয যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ারীর উপর বসেছিলেন, তখন তিনি তাঁকে বললেন, হে মুআয! মুআয বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তিনি (পুনরায়) বললেন, হে মুআয! মুআয বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি হাজির আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তিনি (আবার) বললেন, হে মুআয! (মুআযও) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা তিনবার বললেন।

(এরপর) তিনি বললেন, যে কোন বান্দা খাঁটি মনে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ (সত্য) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও তাঁর রসূল, তাকে আল্লাহ তা’আলা দোযখের জন্য হারাম করে দেবেন।

মুআয বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকেদেরকে এই খবর বলে দেব না? যেন তারা (শুনে) আনন্দিত হয়। তিনি বললেন, তাহলে তো তারা (এরই উপর) ভরসা করে নেবে (এবং আমল ত্যাগ করে বসবে)। অতঃপর মুআয (ইলম গোপন রাখার) পাপ থেকে বাঁচার জন্য তাঁর মৃত্যুর সময় (এ হাদীসটি) জানিয়ে দিয়েছিলেন।

وَعَن أَنَسٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ وَمُعَاذٌ رَدِيفُهُ عَلَى الرَّحْلِ قَالَ يَا مُعَاذُ قَالَ : لَبِّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ يَا مُعَاذُ قَالَ : لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ يَا مُعَاذُ قَالَ : لَبِّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ وسَعْدَيْكَ ثَلاثاً قَالَ مَا مِنْ عَبْدٍ يَشْهَدُ أَن لاَ إلهَ إلاَّ الله وَأنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ صِدْقاً مِنْ قَلْبِهِ إلاَّ حَرَّمَهُ الله عَلَى النَّار قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ أفَلاَ أُخْبِرُ بِهَا النَّاس فَيَسْتَبْشِرُوا ؟ قَالَ إِذاً يَتَّكِلُوا فأخبر بِهَا مُعاذٌ عَندَ موتِه تَأثُّماً مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن انس ان النبي ﷺ ومعاذ رديفه على الرحل قال يا معاذ قال : لبيك يا رسول الله وسعديك قال يا معاذ قال : لبيك يا رسول الله وسعديك قال يا معاذ قال : لبيك يا رسول الله وسعديك ثلاثا قال ما من عبد يشهد ان لا اله الا الله وان محمدا عبده ورسوله صدقا من قلبه الا حرمه الله على النار قال : يا رسول الله افلا اخبر بها الناس فيستبشروا ؟ قال اذا يتكلوا فاخبر بها معاذ عند موته تاثما متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৪৯) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) অথবা আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, (বর্ণনাকারী সন্দেহে পড়েছেন। অবশ্য সাহাবীর ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ে সন্দেহ ক্ষতিকর কিছু নয়। কেননা সকল সাহাবাই নির্ভরযোগ্য।) সাহাবী বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় সাহাবীগণ অতিশয় খাদ্য-সংকটে পড়লেন। সুতরাং তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের সেচক উট জবাই করে তার মাংস ভক্ষণ এবং চর্বি ব্যবহার করি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ঠিক আছে) তোমরা কর। (এ সংবাদ শুনে) উমার (রাঃ) এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি (এমন) করেন, তাহলে সওয়ারী কমে যাবে। বরং আপনি (এই করুন যে,) তাদেরকে নিজেদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য আনতে বলুন এবং তাদের জন্য তাতে আল্লাহর কাছে বরকতের দু’আ করুন। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’হ্যাঁ, (তাই-ই করি।)

সুতরাং তিনি চামড়ার একখানি দস্তরখান আনিয়ে নিয়ে তা বিছালেন। অতঃপর তিনি তাঁদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য জমা করার নির্দেশ দিলেন। ফলে কেউ তো এক খাবল ভুট্টা আনলেন, কেউ তো এক খাবল খুরমা এবং কেউ তো রুটির একটি টুকরাও আনলেন। পরিশেষে কিছু পরিমাণ খাদ্য জমা হয়ে গেল। তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দু’আ করলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা আপন আপন পাত্রে নিয়ে নাও। সুতরাং তাঁরা স্ব স্ব পাত্রে নিতে আরম্ভ করলেন। এমনকি সৈন্যের মধ্যে কোন পাত্র শূন্য রইল না। তাঁরা সকলেই খেয়ে তৃপ্ত হলেন এবং কিছু বেঁচেও গেল। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। যে কোন বান্দা সন্দেহমুক্ত হয়ে এ দু’টি (সাক্ষ্য) নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তাকে যে জান্নাতে যেতে বাধা দেওয়া হবে -তা হতেই পারে না (বরং সে বিনা বাধায় জান্নাতে প্রবেশ করবে)।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَوْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا شَكَّ الرَّاوِي ولاَ يَضُرُّ الشَّكُّ في عَينِ الصَّحَابيّ لأنَّهُمْ كُلُّهُمْ عُدُولٌ – قَالَ : لَمَّا كَانَ غَزوَةُ تَبُوكَ أصَابَ النَّاسَ مَجَاعَةٌ فَقَالُوْا: يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ أذِنْتَ لَنَا فَنَحَرْنَا نَواضِحَنَا فَأكَلْنَا وَادَّهَنَّا؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ افْعَلُوا فَجاء عُمَرُ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ إنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ وَلَكِن ادعُهُمْ بفَضلِ أزْوَادِهِمْ ثُمَّ ادعُ الله لَهُمْ عَلَيْهَا بِالبَرَكَةِ لَعَلَّ الله أنْ يَجْعَلَ في ذلِكَ البَرَكَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ نَعَمْ فَدَعَا بِنَطْع فَبَسَطَهُ ثُمَّ دَعَا بِفضلِ أزْوَادِهِمْ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجِيءُ بكَفّ ذُرَةٍ وَيَجِيءُ بِكَفّ تَمرٍ وَيَجِيءُ الآخرُ بِكِسرَةٍ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النَّطعِ مِنْ ذلِكَ شَيءٌ يَسيرٌ فَدَعَا رَسُولُ اللهِ ﷺ بِالبَرَكَةِ ثُمَّ قَالَ خُذُوا في أوعِيَتِكُمْ فَأَخَذُوا في أوْعِيَتِهِم حَتَّى مَا تَرَكُوا في العَسْكَرِ وِعَاءً إلاَّ مَلأُوهُ وَأَكَلُوا حَتَّى شَبعُوا وَفَضَلَ فَضْلَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أشْهَدُ أنْ لاَ إلهَ إلاَّ اللهُ وَأنّي رَسُولُ اللهِ لا يَلْقَى الله بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فَيُحْجَبَ عَن الجَنَّةِ رواه مسلم

وعن ابي هريرة او ابي سعيد الخدري رضي الله عنهما شك الراوي ولا يضر الشك في عين الصحابي لانهم كلهم عدول – قال : لما كان غزوة تبوك اصاب الناس مجاعة فقالوا: يا رسول الله لو اذنت لنا فنحرنا نواضحنا فاكلنا وادهنا؟ فقال رسول الله ﷺ افعلوا فجاء عمر فقال : يا رسول الله ان فعلت قل الظهر ولكن ادعهم بفضل ازوادهم ثم ادع الله لهم عليها بالبركة لعل الله ان يجعل في ذلك البركة فقال رسول الله ﷺ نعم فدعا بنطع فبسطه ثم دعا بفضل ازوادهم فجعل الرجل يجيء بكف ذرة ويجيء بكف تمر ويجيء الاخر بكسرة حتى اجتمع على النطع من ذلك شيء يسير فدعا رسول الله ﷺ بالبركة ثم قال خذوا في اوعيتكم فاخذوا في اوعيتهم حتى ما تركوا في العسكر وعاء الا ملاوه واكلوا حتى شبعوا وفضل فضلة فقال رسول الله ﷺ اشهد ان لا اله الا الله واني رسول الله لا يلقى الله بهما عبد غير شاك فيحجب عن الجنة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫০) ইতবান ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি বদর যুদ্ধে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বলেন, আমি আমার গোত্র বানু সালেমের নামাযে ইমামতি করতাম। আমার ও তাদের (মসজিদের) মধ্যে একটি উপত্যকা ছিল। বৃষ্টি হলে ঐ উপত্যকা পেরিয়ে তাদের মসজিদে যাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হত। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার দৃষ্টিশক্তিতে কমতি অনুভব করছি। (এ ছাড়া) আমার ও আমার গোত্রের মধ্যকার উপত্যকাটি বৃষ্টি হলে প্লাবিত হয়ে যায়। তখন তা পার হওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়। তাই আমার একান্ত আশা যে, আপনি এসে আমার ঘরের এক স্থানে নামায আদায় করবেন। আমি সে স্থানটি নামাযের স্থান রূপে নির্ধারিত করে নেব।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা তাই করব। সুতরাং পরের দিন সূর্যের তাপ যখন বেড়ে উঠল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আমার বাড়ীতে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ঘরের কোন্ স্থানে আমার নামায পড়া তুমি পছন্দ কর? আমি যে স্থানে তাঁর নামায পড়া পছন্দ করেছিলাম, তাঁকে সেই স্থানের দিকে ইশারা করে (দেখিয়ে) দিলাম।

সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামাযে) দাঁড়িয়ে তকবীর বললেন। আমরা সারিবদ্ধভাবে তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে গেলাম। তিনি দু’রাকআত নামায পড়ে সালাম ফিরলেন। তাঁর সালাম ফিরার সময় আমরাও সালাম ফিরলাম। তারপর তাঁর জন্য যে ’খাযীর’ (চর্বি দিয়ে পাকানো আটা) প্রস্তুত করা হচ্ছিল, তা খাওয়ার জন্য তাঁকে আটকে দিলাম। ইতোমধ্যে মহল্লার লোকেরা শুনল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বাড়িতে। সুতরাং তাদের কিছু লোক এসে জমায়েত হল। এমনকি বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম হল।

তাদের মধ্যে একজন বলল, মালিক (ইবনে দুখাইশিন) করল কী? তাকে দেখছি না যে? একজন জবাব দিল, সে মুনাফিক! আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন কথা বলো না। তুমি কি মনে কর না যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে? সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তবে আল্লাহর কসম! আমরা মুনাফিকদের সাথেই তার ভালবাসা ও আলাপ-আলোচনায় তাকে দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় ’লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে।

وَعَن عِتْبَانَ بن مَالك وَهُوَ مِمَّن شَهِدَ بَدراً قَالَ : كُنتُ أُصَلِّي لِقَوْمِي بَني سَالِم وَكَانَ يَحُولُ بَيْنِي وبَيْنَهُمْ وَادٍ إِذَا جَاءَتِ الأَمْطَار فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ قِبَلَ مَسْجِدِهم فَجِئتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ فَقُلتُ لَهُ : إنّي أنْكَرْتُ بَصَرِي وَإنَّ الوَادِي الَّذِي بَيْنِي وبَيْنَ قَومِي يَسِيلُ إِذَا جَاءَتِ الأمْطَارُ فَيَشُقُّ عَلَيَّ اجْتِيَازُهُ فَوَدِدْتُ أنَّكَ تَأتِي فَتُصَلِّي في بَيْتِي مَكَاناً أتَّخِذُهُ مُصَلّى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ سَأفْعَلُ فَغَدَا رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَبُو بَكرٍ بَعْدَ مَا اشْتَدَّ النَّهَارُ وَاسْتَأذَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَأذِنْتُ لَهُ فَلَمْ يَجْلِسْ حَتَّى قَالَ أيْنَ تُحِبُّ أنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ ؟ فَأشَرْتُ لَهُ إِلَى المَكَانِ الَّذِي أُحِبُّ أَنْ يُصَلِّيَ فِيهِ فَقَامَ رَسُول الله ﷺ فَكَبَّرَ وَصَفَفْنَا وَرَاءَهُ فَصَلَّى رَكعَتَينِ ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا حِينَ سَلَّمَ فَحَبَسْتُهُ عَلَى خَزيرَةٍ تُصْنَعُ لَهُ فَسَمِعَ أهلُ الدَّارِ أنَّ رَسُول الله ﷺ في بَيْتِي فَثَابَ رِجالٌ مِنْهُمْ حَتَّى كَثُرَ الرِّجَالُ في البَيْتِ فَقَالَ رَجُلٌ : مَا فَعَلَ مَالِكٌ لا أرَاهُ فَقَالَ رَجُلٌ : ذلِكَ مُنَافِقٌ لا يُحِبُّ الله ورسولَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ تَقُلْ ذلِكَ ألاَ تَرَاهُ قَالَ : لاَ إلهَ إلاَّ الله يَبْتَغي بِذَلِكَ وَجهَ الله تَعَالَى فَقَالَ : اللهُ ورَسُولُهُ أعْلَمُ أمَّا نَحْنُ فَوَاللهِ مَا نَرَى وُدَّهُ وَلاَ حَدِيثَهُ إلاَّ إِلَى المُنَافِقينَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فإنَّ الله قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ : لاَ إلهَ إلاَّ الله يَبْتَغِي بذَلِكَ وَجْهَ الله مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن عتبان بن مالك وهو ممن شهد بدرا قال : كنت اصلي لقومي بني سالم وكان يحول بيني وبينهم واد اذا جاءت الامطار فيشق علي اجتيازه قبل مسجدهم فجىت رسول الله ﷺ فقلت له : اني انكرت بصري وان الوادي الذي بيني وبين قومي يسيل اذا جاءت الامطار فيشق علي اجتيازه فوددت انك تاتي فتصلي في بيتي مكانا اتخذه مصلى فقال رسول الله ﷺ سافعل فغدا رسول الله ﷺ وابو بكر بعد ما اشتد النهار واستاذن رسول الله ﷺ فاذنت له فلم يجلس حتى قال اين تحب ان اصلي من بيتك ؟ فاشرت له الى المكان الذي احب ان يصلي فيه فقام رسول الله ﷺ فكبر وصففنا وراءه فصلى ركعتين ثم سلم وسلمنا حين سلم فحبسته على خزيرة تصنع له فسمع اهل الدار ان رسول الله ﷺ في بيتي فثاب رجال منهم حتى كثر الرجال في البيت فقال رجل : ما فعل مالك لا اراه فقال رجل : ذلك منافق لا يحب الله ورسوله فقال رسول الله ﷺ لا تقل ذلك الا تراه قال : لا اله الا الله يبتغي بذلك وجه الله تعالى فقال : الله ورسوله اعلم اما نحن فوالله ما نرى وده ولا حديثه الا الى المنافقين فقال رسول الله ﷺ فان الله قد حرم على النار من قال : لا اله الا الله يبتغي بذلك وجه الله متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫১) উমার ইবনে খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু সংখ্যক বন্দী এল। তিনি দেখলেন যে, বন্দীদের মধ্যে একজন মহিলা (তার শিশুটি হারিয়ে গেলে এবং স্তনে দুধ জমে উঠলে বাচ্চার খোঁজে অস্থির হয়ে) দৌড়াদৌড়ি করছে। হঠাৎ সে বন্দীদের মধ্যে কোন শিশু পেলে তাকে ধরে কোলে নিয়ে (দুধ পান করাতে লাগল। অতঃপর তার নিজের বাচ্চা পেয়ে গেলে তাকে বুকে-পেটে লাগিয়ে) দুধ পান করাতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তোমরা কি মনে কর যে, এই মহিলা তার সন্তানকে আগুনে ফেলতে পারে?’’ আমরা বললাম, ’না, আল্লাহর কসম!’ তারপর তিনি বললেন, ’’এই মহিলাটি তার সন্তানের উপর যতটা দয়ালু, আল্লাহ তার বান্দাদের উপর তার চেয়ে অধিক দয়ালু।’’ (বুখারী ৫৯৯৯, মুসলিম ৭১৫৪)

وَعَن عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ قَالَ : قُدِمَ رَسُولُ اللهِ ﷺ بسَبْيٍ فَإِذَا امْرَأةٌ مِنَ السَّبْيِ تَسْعَى إِذْ وَجَدَتْ صَبياً في السَّبْيِ أخَذَتْهُ فَألْزَقَتهُ بِبَطْنِهَا فَأَرضَعَتْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أتَرَوْنَ هذِهِ المَرْأةَ طَارِحَةً وَلَدَها في النَّارِ؟ قُلْنَا: لاَ وَاللهِ فَقَالَ للهُ أرْحَمُ بِعِبَادِهِ مِنْ هذِهِ بِوَلَدِهَا مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن عمر بن الخطاب قال : قدم رسول الله ﷺ بسبي فاذا امراة من السبي تسعى اذ وجدت صبيا في السبي اخذته فالزقته ببطنها فارضعته فقال رسول الله ﷺ اترون هذه المراة طارحة ولدها في النار؟ قلنا: لا والله فقال لله ارحم بعباده من هذه بولدها متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫২) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগৎ রচনা সম্পন্ন করলেন, তখন একটি কিতাবে লিখে রাখলেন, যা তাঁরই কাছে তাঁর আরশের উপর রয়েছে, অবশ্যই আমার রহমত আমার গযব অপেক্ষা অগ্রগামী।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَمَّا خَلَقَ الله الخَلْقَ كَتَبَ في كِتَابٍ فَهُوَ عَندَهُ فَوقَ العَرْشِ : إنَّ رَحْمَتِي تَغْلِبُ غَضَبي متفق عليه

وعن ابي هريرة قال : قال رسول الله ﷺ لما خلق الله الخلق كتب في كتاب فهو عنده فوق العرش : ان رحمتي تغلب غضبي متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৩) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ রহমতকে একশ ভাগ করেছেন। তার মধ্যে নিরানব্বই ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর পৃথিবীতে একভাগ অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই সৃষ্টজগৎ একে অন্যের উপর দয়া করে। এমনকি জন্তু তার বাচ্চার উপর থেকে পা তুলে নেয় এই ভয়ে যে, সে ব্যথা পাবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, নিশ্চয় আল্লাহর একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে একটি মাত্র রহমত তিনি মানব-দানব, পশু ও কীটপতঙ্গের মধ্যে অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই (সৃষ্টজীব) একে অপরকে মায়া করে, তার কারণেই একে অন্যকে দয়া করে এবং তার কারণেই হিংস্র জন্তুরা তাদের সন্তানকে মায়া করে থাকে। বাকী নিরানব্বইটি আল্লাহ পরকালের জন্য রেখে দিয়েছেন, যার দ্বারা তিনি কিয়ামতের দিন আপন বান্দাদের উপর রহম করবেন।

এ হাদীসটিকে ইমাম মুসলিমও সালমান ফারেসী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলার একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে মাত্র একটির কারণে সৃষ্টিজগৎ একে অন্যের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে। আর নিরানব্বইটি (রহমত) কিয়ামতের দিনের জন্য রয়েছে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা’আলা আসমান যমীন সৃষ্টি করার দিন একশটি রহমত সৃষ্টি করলেন। প্রতিটি রহমত আসমান ও যমীনের মধ্যস্থল পরিপূর্ণ (বিশাল)। অতঃপর তিনি তার মধ্য হতে একটি রহমত পৃথিবীতে অবতীর্ণ করলেন। ঐ একটির কারণেই মা তার সন্তানকে মায়া করে এবং হিংস্র প্রাণী ও পাখীরা একে অন্যের উপর দয়া করে থাকে। অতঃপর যখন কিয়ামতের দিন হবে, তখন আল্লাহ এই রহমত দ্বারা সংখ্যা পূর্ণ করবেন।

وَعَنْهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ جَعَلَ اللهُ الرَّحْمَةَ مِئَةَ جُزْءٍ فَأمْسَكَ عَندَهُ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ وَأنْزَلَ في الأرْضِ جُزْءاً وَاحِداً فَمِنْ ذلِكَ الجُزءِ يَتَرَاحَمُ الخَلائِقُ حَتَّى تَرْفَعَ الدَّابّةُ حَافِرَهَا عَن وَلَدِهَا خَشْيَةَ أنْ تُصِيبَهُ
وَفي رِوَايَةٍ إنّ للهِ تَعَالَى مئَةَ رَحمَةٍ أنْزَلَ مِنْهَا رَحْمَةً وَاحِدَةً بَيْنَ الجِنِّ وَالإنسِ وَالبهائِمِ وَالهَوامّ فَبِهَا يَتَعَاطَفُونَ وبِهَا يَتَرَاحَمُونَ وبِهَا تَعْطِفُ الوَحْشُ عَلَى وَلَدِهَا وَأخَّرَ اللهُ تَعَالَى تِسْعاً وَتِسْعينَ رَحْمَةً يرْحَمُ بِهَا عِبَادَهُ يَوْمَ القِيَامَة مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وَرَوَاهُ مُسلِمٌ أَيضاً مِنْ رِوَايَةِ سَلْمَانَ الفَارِسيِّ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إنَّ للهِ تَعَالَى مِئَةَ رَحْمَةٍ فَمِنْهَا رَحْمَةٌ يَتَرَاحمُ بِهَا الخَلْقُ بَيْنَهُمْ وَتِسْعٌ وَتِسعُونَ لِيَومِ القِيَامَةِ
وَفي رِوَايَةٍ إنَّ اللهَ تَعَالَى خَلَقَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ مَئَةَ رَحْمَةٍ كُلُّ رَحْمَةٍ طِبَاقُ مَا بَيْنَ السَّماءِ إِلَى الأرْضِ فَجَعَلَ مِنْهَا في الأَرضِ رَحْمَةً فَبِهَا تَعْطفُ الوَالِدَةُ عَلَى وَلَدِهَا وَالوَحْشُ وَالطَّيْرُ بَعْضُهَا عَلَى بَعْض فَإذا كَانَ يَوْمُ القِيَامَةِ أَكمَلَهَا بِهذِهِ الرَّحمَةِ

وعنه قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول جعل الله الرحمة مىة جزء فامسك عنده تسعة وتسعين وانزل في الارض جزءا واحدا فمن ذلك الجزء يتراحم الخلاىق حتى ترفع الدابة حافرها عن ولدها خشية ان تصيبه وفي رواية ان لله تعالى مىة رحمة انزل منها رحمة واحدة بين الجن والانس والبهاىم والهوام فبها يتعاطفون وبها يتراحمون وبها تعطف الوحش على ولدها واخر الله تعالى تسعا وتسعين رحمة يرحم بها عباده يوم القيامة متفق عليه ورواه مسلم ايضا من رواية سلمان الفارسي قال : قال رسول الله ﷺ ان لله تعالى مىة رحمة فمنها رحمة يتراحم بها الخلق بينهم وتسع وتسعون ليوم القيامة وفي رواية ان الله تعالى خلق يوم خلق السماوات والارض مىة رحمة كل رحمة طباق ما بين السماء الى الارض فجعل منها في الارض رحمة فبها تعطف الوالدة على ولدها والوحش والطير بعضها على بعض فاذا كان يوم القيامة اكملها بهذه الرحمة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৪) উক্ত রাবী [আবূ হুরাইরা (রাঃ)] থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন, কোন বান্দা একটি পাপ করে বলল, হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর। তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা’আলা বলেন, আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন। অতঃপর সে আবার পাপ করল এবং বলল, হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর। তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা’আলা বলেন, আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সুতরাং সে যা ইচ্ছা করুক।

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ فِيمَا يَحكِي عَن رَبَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ أذْنَبَ عَبْدٌ ذَنْباً فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي فَقَالَ الله تَبَاركَ وَتَعَالَى : أذنَبَ عَبدِي ذَنباً فَعَلِمَ أنَّ لَهُ رَبّاً يَغْفِرُ الذَّنْبَ وَيَأْخُذُ بِالذَّنْبِ ثُمَّ عَادَ فَأذْنَبَ فَقَالَ : أيْ رَبِّ اغْفِرْ لِي ذَنْبي فَقَالَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: أذنَبَ عبدِي ذَنباً فَعَلِمَ أنَّ لَهُ رَبّاً يَغْفِرُ الذَّنْبَ وَيَأْخُذُ بالذَّنْبِ قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي فَلْيَفْعَلْ مَا شَاءَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعنه عن النبي ﷺ فيما يحكي عن ربه تبارك وتعالى قال اذنب عبد ذنبا فقال : اللهم اغفر لي ذنبي فقال الله تبارك وتعالى : اذنب عبدي ذنبا فعلم ان له ربا يغفر الذنب وياخذ بالذنب ثم عاد فاذنب فقال : اي رب اغفر لي ذنبي فقال تبارك وتعالى: اذنب عبدي ذنبا فعلم ان له ربا يغفر الذنب وياخذ بالذنب قد غفرت لعبدي فليفعل ما شاء متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৫) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই মহান সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে অপসারিত করবেন এবং এমন জাতির আবির্ভাব ঘটাবেন যারা পাপ করবে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।

وَعَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ والَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ لَمْ تُذْنِبُوا لَذَهَبَ الله بِكُمْ وَجَاءَ بِقَومٍ يُذْنِبُونَ فَيَسْتَغْفِرُونَ اللهَ تَعَالَى فَيَغْفِرُ لَهُمْ رواه مسلم

وعنه قال : قال رسول الله ﷺ والذي نفسي بيده لو لم تذنبوا لذهب الله بكم وجاء بقوم يذنبون فيستغفرون الله تعالى فيغفر لهم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৬) আবূ আইয়ূব খালেদ ইবনে যায়দ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তোমরা যদি গুনাহ না কর, তাহলে আল্লাহ তা’আলা এমন জাতি সৃষ্টি করবেন, যারা গুনাহ করবে তারপর তারা (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা ক’রে দেবেন।

وَعَنْ أَبيْ أَيُّوبَ خَالِدِ بنِ زَيدٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ لَوْلاَ أنَّكُمْ تُذْنِبُونَ لَخَلَقَ الله خَلْقاً يُذْنِبُونَ فَيَسْتَغْفِرونَ فَيَغْفِرُ لَهُمْ رواه مسلم

وعن ابي ايوب خالد بن زيد قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول لولا انكم تذنبون لخلق الله خلقا يذنبون فيستغفرون فيغفر لهم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৭) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে আবূ বকর ও উমার (রাঃ)ও লোকেদের একটি দলে উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্য থেকে উঠে (কোথাও) গেলেন। তারপর তিনি আমাদের নিকট ফিরে আসতে বিলম্ব করলেন। সুতরাং আমরা ভয় করলাম যে, আমাদের অবর্তমানে তিনি (শত্রু) কবলিত না হন। অতঃপর আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে (সভা থেকে) উঠে গেলাম। সর্বপ্রথম আমিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খোঁজে বের হলাম। এমনকি শেষ পর্যন্ত এক আনসারীর বাগানে এলাম। (অতঃপর) তিনি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন, যাতে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যাও! অতঃপর (এ বাগানের বাইরে) যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ ঘটবে, যে হৃদয়ের দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ’লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর সাক্ষ্য দেবে, তাকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : كُنَّا قُعُوداً مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَعَنا أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا في نَفَرٍ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مِنْ بَيْنِ أظْهُرِنَا فَأبْطَأَ عَلَيْنَا فَخَشِينَا أنْ يُقتَطَعَ دُونَنَا فَفَزِعَنا فَقُمْنَا فَكُنْتُ أوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَخَرَجْتُ أبْتَغِي رَسُولَ اللهِ ﷺ حَتَّى أتَيْتُ حَائِطاً للأنْصَارِ وَذَكَرَ الحَدِيثَ بِطُولِهِ إِلَى قوله : فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اذهَبْ فَمَن لَقِيتَ وَرَاءَ هَذَا الحَائِطِ يَشْهَدُ أنْ لَا إِلٰهَ إلاَّ الله مُسْتَيقِناً بِهَا قَلبُهُ فَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ رواه مسلم

وعن ابي هريرة قال : كنا قعودا مع رسول الله ﷺ معنا ابو بكر وعمر رضي الله عنهما في نفر فقام رسول الله ﷺ من بين اظهرنا فابطا علينا فخشينا ان يقتطع دوننا ففزعنا فقمنا فكنت اول من فزع فخرجت ابتغي رسول الله ﷺ حتى اتيت حاىطا للانصار وذكر الحديث بطوله الى قوله : فقال رسول الله ﷺ اذهب فمن لقيت وراء هذا الحاىط يشهد ان لا اله الا الله مستيقنا بها قلبه فبشره بالجنة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৮) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ’স (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইব্রাহীম (আঃ) এর ব্যাপারে আল্লাহর এ বাণী পাঠ করলেন, হে আমার প্রতিপালক! এসব প্রতিমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে; সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেউ আমার অবাধ্য হলে তুমি তো চরম ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সূরা ইব্রাহীম ৩৬) এবং ঈসা (আঃ) এর উক্তি (এ আয়াতটি পাঠ করলেন), যদি তুমি তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর, তবে তারা তোমার বান্দা। আর যদি তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি অবশ্যই প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। (সূরা মায়েদাহ ১১৮ আয়াত)

অতঃপর তিনি তাঁর হাত দু’খানি উঠিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমার উম্মত, আমার উম্মত। অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন। আল্লাহ আযযা অজাল্ল বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদের নিকট যাও—আর তোমার রব বেশী জানেন—তারপর তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা কর। সুতরাং জিবরীল তাঁর নিকট এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সে কথা জানালেন, যা তিনি (তাঁর উম্মত সম্পর্কে) বলেছিলেন—আর আল্লাহ তা অধিক জানেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বললেন, হে জিবরীল! তুমি (পুনরায়) মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং বল, আমি তোমার উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করে দেব এবং অসন্তুষ্ট করব না।

وَعَن عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ تَلاَ قَولَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ في إِبرَاهِيمَ ﷺ رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيراً مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَني فَإِنَّهُ مِنِّي وقَولَ عِيسَى ﷺ إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ فَرَفَعَ يَدَيهِ وَقالَ اَللّٰهُمَّ أُمّتي أُمّتي وبَكَى فَقَالَ الله عَزَّ وَجَلَّ يَا جِبْريلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ وَرَبُّكَ أعْلَمُ فَسَلْهُ مَا يُبْكِيهِ ؟ فَأتَاهُ جبريلُ فَأخْبَرَهُ رَسُولُ الله ﷺ بِمَا قَالَ وَهُوَ أعْلَمُ - فَقَالَ اللهُ تَعَالَى يَا جِبريلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمّدٍ فَقُلْ : إنَّا سَنُرْضِيكَ في أُمّتِكَ وَلاَ نَسُوءكَ رواه مسلم

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما : ان النبي ﷺ تلا قول الله عز وجل في ابراهيم ﷺ رب انهن اضللن كثيرا من الناس فمن تبعني فانه مني وقول عيسى ﷺ ان تعذبهم فانهم عبادك وان تغفر لهم فانك انت العزيز الحكيم فرفع يديه وقال اللهم امتي امتي وبكى فقال الله عز وجل يا جبريل اذهب الى محمد وربك اعلم فسله ما يبكيه ؟ فاتاه جبريل فاخبره رسول الله ﷺ بما قال وهو اعلم - فقال الله تعالى يا جبريل اذهب الى محمد فقل : انا سنرضيك في امتك ولا نسوءك رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৫৯) বারা ইবনে আযিব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিমকে যখন কবরে প্রশ্ন করা হয়, তখন সে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। এই অর্থ রয়েছে আল্লাহ তা’আলার এই বাণীতে, যারা মু’মিন তাদেরকে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত বাণী দ্বারা ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে প্রতিষ্ঠা দান করেন। (সূরা ইব্রাহীম ১৭ আয়াত)

وَعَن البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ المُسْلِمُ إِذَا سُئِلَ في القَبْرِ يَشْهَدُ أنْ لاَ إلَهَ إلاَّ الله وَأنّ مُحَمّداً رَسُولُ الله فَذَلِكَ قَولُهُ تَعَالَى يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَة) إبراهيم : مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن البراء بن عازب رضي الله عنهما عن النبي ﷺ قال المسلم اذا سىل في القبر يشهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله فذلك قوله تعالى يثبت الله الذين امنوا بالقول الثابت في الحياة الدنيا وفي الاخرة) ابراهيم : متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৬০) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কাফের যখন দুনিয়াতে কোন পুণ্য কাজ করে, তখন বিনিময়ে তাকে দুনিয়ার (কিছু আনন্দ) উপভোগ করতে দেওয়া হয়। (আর পরকালে সে এর কিছুই প্রতিদান পাবে না)। কিন্তু মু’মিনের জন্য আল্লাহ তা’আলা পরকালে তার প্রতিদানকে সঞ্চিত করে রাখেন এবং দুনিয়াতে তিনি তাকে জীবিকা দেন তাঁর আনুগত্যের বিনিময়ে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, মহান আল্লাহ কোন মু’মিনের উপর তার নেকীর ব্যাপারে যুলুম করেন না। তাকে তার প্রতিদান দুনিয়াতেও দেওয়া হয় এবং আখেরাতেও দেওয়া হবে। কিন্তু কাফেরকে ভাল কাজের বিনিময়—যা সে আল্লাহর জন্য করে—দুনিয়াতেই দিয়ে দেওয়া হয়। এমন কি যখন সে পরকাল পাড়ি দেবে, তখন তার এমন কোন পুণ্য থাকবে না যে, তার বিনিময়ে তাকে কিছু (পুরস্কার) দেওয়া যাবে।

وَعَن أَنَسٍ عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ إنّ الكَافِرَ إِذَا عَمِلَ حَسَنَةً أُطعِمَ بِهَا طُعْمَةً مِنَ الدُّنْيَا وَأَمَّا المُؤْمِنُ فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى يَدَّخِرُ لَهُ حَسَنَاتِهِ في الآخِرَةِ وَيُعْقِبُهُ رِزْقاً في الدُّنْيَا عَلَى طَاعَتِهِ
وَفي رِوَايَةٍ إنَّ الله لاَ يَظْلِمُ مُؤْمِناً حَسَنَةً يُعْطَى بِهَا في الدُّنْيَا وَيُجْزَى بِهَا في الآخِرَةِ وَأَمَّا الكَافِرُ فَيُطْعَمُ بِحَسَنَاتِ مَا عَمِلَ للهِ تَعَالَى فِي الدُّنْيَا حَتَّى إِذَا أفْضَى إِلَى الآخرَةِ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَةٌ يُجْزَى بِهَا رواه مسلم

وعن انس عن رسول الله ﷺ قال ان الكافر اذا عمل حسنة اطعم بها طعمة من الدنيا واما المومن فان الله تعالى يدخر له حسناته في الاخرة ويعقبه رزقا في الدنيا على طاعته وفي رواية ان الله لا يظلم مومنا حسنة يعطى بها في الدنيا ويجزى بها في الاخرة واما الكافر فيطعم بحسنات ما عمل لله تعالى في الدنيا حتى اذا افضى الى الاخرة لم يكن له حسنة يجزى بها رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৬১) জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণ প্রচুর পানিতে পরিপূর্ণ ঐ নদীর মত, যা তোমাদের কারো দুয়ারের (সামনে বয়ে) প্রবাহিত হয়, যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে।

وَعَن جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ كَمَثَلِ نَهْرٍ جَارٍ غَمْرٍ عَلَى بَابِ أحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْم خَمْسَ مَرَّات رواه مسلم

وعن جابر قال : قال رسول الله ﷺ مثل الصلوات الخمس كمثل نهر جار غمر على باب احدكم يغتسل منه كل يوم خمس مرات رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৬২) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে কোন মুসলিম মারা যায় আর তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক শরীক হয়, যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না। নিশ্চয় আল্লাহ তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ কবূল করেন।

وَعَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ مَا مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ يَمُوتُ فَيقُومُ عَلَى جَنَازَتهِ أرْبَعُونَ رَجُلاً لاَ يُشْرِكُونَ بِاللهِ شَيئاً إلاَّ شَفَّعَهُمُ اللهُ فِيهِ رواه مسلم

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول ما من رجل مسلم يموت فيقوم على جنازته اربعون رجلا لا يشركون بالله شيىا الا شفعهم الله فيه رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব

(৪৬৩) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশ জন মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। একসময় তিনি বললেন, তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমরা জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে? আমরা বললাম, জী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমরা কি জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হতে পছন্দ কর? আমরা বললাম, জী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাঁর শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে, আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে, জান্নাতবাসীদের অর্ধেক তোমরাই হবে। এটা এ জন্য যে, শুধুমাত্র মুসলিম প্রাণ ছাড়া অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর মুশরিকদের তুলনায় তোমরা এরূপ, যেরূপ কালো বলদের গায়ে (একটি) সাদা লোম অথবা লাল বলদের গায়ে (একটি) কালো লোম।

وَعَن ابنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ في قُبَّة نَحْواً مِنْ أربَعِينَ فَقَالَ أتَرْضَونَ أنْ تَكُونُوا رُبُعَ أهْلِ الجَنَّةِ ؟ قُلْنَا : نَعَمْ قَالَ أتَرْضَوْنَ أنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أهلِ الجَنَّةِ ؟ قُلْنَا: نَعَمْ قَالَ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمّدٍ بيَدِهِ إنِّي لأَرْجُو أنْ تَكُونُوا نِصْفَ أهْلِ الجَنَّةِ وَذَلِكَ أنَّ الجنَّةَ لاَ يَدْخُلُهَا إلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ ومَا أنْتُم في أهْلِ الشِّركِ إلاَّ كَالشَّعْرَةِ البَيْضَاءِ فِي جِلدِ الثَّورِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ السَّودَاءِ في جِلدِ الثَّورِ الأحْمَر مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابن مسعود قال : كنا مع رسول الله ﷺ في قبة نحوا من اربعين فقال اترضون ان تكونوا ربع اهل الجنة ؟ قلنا : نعم قال اترضون ان تكونوا ثلث اهل الجنة ؟ قلنا: نعم قال والذي نفس محمد بيده اني لارجو ان تكونوا نصف اهل الجنة وذلك ان الجنة لا يدخلها الا نفس مسلمة وما انتم في اهل الشرك الا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الاسود او كالشعرة السوداء في جلد الثور الاحمر متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »