পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১১৮-[১১] ’আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: আবূ বকর জান্নাতবাসী, ’উমার জান্নাতী, ’উসমান জান্নাতী, ’আলী জান্নাতী, ত্বলহাহ্ জান্নাতী, সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস জান্নাতী, সা’ঈদ ইবনু যায়দ জান্নাতী এবং আবূ ’উবায়দাহ্ ইবনুল জাররাহ জান্নাতী । (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
عَن عبد الرَّحْمَن بن عَوْف أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَبُو بَكْرٍ فِي الْجَنَّةِ وَعُمَرُ فِي الْجَنَّةِ وَعُثْمَانُ فِي الْجَنَّةِ وَعَلِيٌّ فِي الْجَنَّةِ وَطَلْحَةُ فِي الْجَنَّةِ وَالزُّبَيْرُ فِي الْجَنَّةِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي الْجَنَّةِ وَسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ فِي الْجَنَّةِ وَسَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ فِي الْجَنَّةِ وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ فِي الْجَنَّةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3747) ۔
(صَحِيح)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১১৯-[১২] আর ইমাম ইবনু মাজাহ (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি সা’ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ
صحیح ، رواہ ابن ماجہ (133) ۔
(صَحِيح)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২০-[১৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: আমার উম্মতের মাঝে আবূ বকর উম্মতের জন্য সর্বাধিক দয়ালু। আর উম্মতের মধ্যে আল্লাহর বিধানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠোর ’উমার। আর উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে প্রকৃত লাজুক ’উসমান। আর উম্মতের মধ্যে মীরাস সম্পর্কিত ব্যাপারে সর্বজ্ঞ যায়দ ইবনু সাবিত। আর উম্মতের মাঝে সর্বোত্তম কুরআন মাজীদের ক্বারী উবাই ইবনু কা’ব। আর উম্মতের মধ্যে হালাল ও হারাম সম্পর্কে সবচেয়ে জ্ঞানী মু’আয ইবনু জাবাল। আর প্রত্যেক উম্মতের মাঝে একজন আমীন থাকেন। এ উম্মতের আমীন হলেন আবূ ’উবায়দাহ্ ইবনুল জাররাহ।
[আহমাদ ও তিরমিযী এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ]
আর এ হাদীসটি মামার সূত্রে কতাদাহ্ হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর তাতে রয়েছে, উম্মতের সর্বোত্তম বিচারক ’আলী (রাঃ)।
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَرْحَمُ أُمَّتِي بِأُمَّتِي أَبُو بَكْرٍ وَأَشَدُّهُمْ فِي أَمْرِ اللَّهِ عُمَرُ وَأَصْدَقُهُمْ حَيَاءً عُثْمَانُ وَأَفْرَضُهُمْ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ وَأَقْرَؤُهُمْ أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ وَأَعْلَمُهُمْ بِالْحَلَالِ وَالْحَرَامِ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَمِينٌ وَأَمِينُ هَذِهِ الْأُمَّةِ أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيح وروى مَعْمَرٍ عَنْ قَتَادَةَ مُرْسَلًا وَفِيهِ: «وَأَقْضَاهُمْ عَلِيٌّ»
اسنادہ صحیح ، رواہ احمد (3 / 281 ح 14035) و الترمذی (3791) * حدیث معمر عن قتادۃ : رواہ عبد الرزاق (11 / 225 ح 20387) و سندہ ضعیف لارسالہ ۔
(صَحِيح)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২১-[১৪] যুবায়র (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন নবী (সা.) -এর দেহে দুটি লৌহবর্ম ছিল। তিনি একটি পাথরের উপর উঠতে চাইলেন, কিন্তু (বর্মের ভারী ওযনের দরুন) উঠতে পারছিলেন না। তখন ত্বলহাহ্ (রাঃ) রাসূল (সা.)-এর নিচে বসে গেলেন। এমনকি নবী (সা.) তার উপরে ভর দিয়ে পাথরটির উপরে উঠলেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, ত্বলহাহ্ নিজের জন্য (জান্নাত) আবশ্যক করে নিয়েছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنِ الزُّبَيْرِ قَالَ: كَانَ عَلَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ دِرْعَانِ فَنَهَضَ إِلَى الصَّخْرَةِ فَلَمْ يَسْتَطِعْ فَقَعَدَ طَلْحَةُ تَحْتَهُ حَتَّى اسْتَوَى عَلَى الصَّخْرَةِ فَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «أَوْجَبَ طَلْحَةُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (3738 وقال : حسن صحیح غریب) ۔
(حسن)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২২-[১৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) ত্বলহাহ্ ইবনু ’উবায়দুল্লাহ (রাঃ)-এর প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, যদি কেউ এমন কোন লোককে জমিনের উপর চলাফেরা করতে দেখতে চায়, যে তার মৃত্যু-প্রতিজ্ঞাপূর্ণ করেছে, সে যেন এই লোকটির দিকে চেয়ে দেখে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, যদি কেউ এমন শহীদকে দেখতে চায়, যে জমিনের উপর বিচরণ করেছে, সে যেন ত্বলহাহ্ ইবনু উবায়দুল্লাহ-কে দেখে নেয়। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: نَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ قَالَ: «مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ يَمْشِي عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ وَقَدْ قَضَى نَحْبَهُ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا» . وَفِي رِوَايَةٍ: «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى شَهِيدٍ يَمْشِي عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ الله» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ضعیف ، رواہ الترمذی (3739 وقال : غریب) [و ابن ماجہ (125)] * الصلت بن دینار : متروک و للحدیث شواھد ضعیفۃ ولم اجد لہ طریقًا صحیحًا ولا حسنًا
ব্যাখ্যা: (فَلْيَنْظُرْ إِلَى طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ الله) উক্ত হাদীস নবী (সা.)-এর মু'জিযার অন্তর্ভুক্ত, কেননা ত্বলহাহ্ (রাঃ) উষ্ট্রির যুদ্ধে শহীদ হন যেটা শতসিদ্ধ।
মুল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হতে পারে এই ইশারা ত্বলহা (রাঃ)-এর শাহাদাত অর্জন ও শেষ পরিণতি সুন্দর ও ভালো হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৭৪৮, ইবনু মাজাহ ১২৫, মুসতাদরাক ৫৬১২, সহীহাহ্ ১২৬),
ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) মুখতাসারুন্ নিহায়াহ্” গ্রন্থে বলেন, যেন নবী (সা.) ত্বলহাহ্ (রাঃ)-কে আবশ্যক করে দিলেন যে, তিনি যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং শহীদ হবেন।
মিরকাত প্রণেতা বলেন, ত্বলহাহ্ (রাঃ) উহুদ যুদ্ধের দিন নিজেকে নবী (সা.) -এর রক্ষক বানিয়ে ছিলেন। তিনি নিজ সম্পর্কে বলেন, উহুদের দিন আমার শরীরের প্রত্যেক অঙ্গে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল এমনকি আমার লজ্জাস্থানেও।
সাহাবীগণ তাঁর সম্পর্কে বলতেন, উহুদের দিন সম্পূর্ণটাই ত্বলহাহ্ (রাঃ)-এর। আবূ হাফস্ সোহরাওয়ার্দী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীসের মতন কোন রূপক অর্থ প্রকাশ করে না, বরং প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করে থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২৩-[১৬] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার দু’কান রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর জবান হতে বলতে শুনেছে, ত্বলহাহ্ ও যুবায়র (রাঃ) তারা দু’জন জান্নাতে আমার প্রতিবেশী।
[ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব।]
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ أُذُنِي مِنْ فِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «طَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ جَارَايَ فِي الْجَنَّةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3741) * فیہ عقبۃ بن علقمۃ و عبدالرحمن بن منصور العنزی : ضعیفان ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা: (طَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ جَارَايَ فِي الْجَنَّةِ) তুহফা প্রণেতা ‘আবদুর রহমান মুবারকপূরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীসে তুলহাহ ও যুবায়র (রাঃ) উভয়কে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে এবং সেই সাথে উভয়ের অতিরিক্ত মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে যে, উভয়ে জান্নাতে নবী (সা.) -এর প্রতিবেশী হবেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৭৫০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২৪-[১৭] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) সেদিন অর্থাৎ উহুদ যুদ্ধের দিন বললেন, হে আল্লাহ! তার তীর নিক্ষেপ সঠিক ও দৃঢ় কর এবং তার দু’আ গ্রহণ কর। (শারহুস্ সুন্নাহ্)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَوْمَئِذٍ يَعْنِي يَوْمَ أُحُدٍ: «اللَّهُمَّ اشْدُدْ رَمْيَتَهُ وَأَجِبْ دعوتَه» . رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»
اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (14 / 124 ۔ 125 ح 3922) [و الحاکم (3 / 499 ۔ 500) و ابن حبان (2215)] * فیہ ابراھیم بن یحیی الشجری و ابوہ ضعیفان و اسماعیل بن ابی خالد مدلس و عنعن ان صح السند الیہ ۔
(ضَعِيف)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২৫-[১৮] উক্ত রাবী [সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! তুমি সা’দ-এর দু’আ গ্রহণ কর যখনই সে দু’আ করে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اللَّهُمَّ اسْتَجِبْ لِسَعْدٍ إِذَا دَعَاكَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3751) * اسماعیل بن ابی خالد مدلس و عنعن و للحدیث شواھد
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২৬-[১৯] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর মা-বাপকে একত্রে উৎসর্গ হওয়ার কথা সা’দ ছাড়া আর কারো জন্য উচ্চারণ করেননি। তিনি উহুদের দিন তাকে কেন্দ্র করে বললেন, তীর নিক্ষেপ কর হে বাহাদুর যুবক! আমার পিতা ও আমার মাতা তোমার জন্য কুরবান হোন। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: مَا جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبَاهُ وَأُمَّهُ إِلَّا لِسَعْدٍ قَالَ لَهُ يَوْمَ أُحُدٍ: «ارْمِ فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي» وَقَالَ لَهُ: «ارْمِ أَيهَا الْغُلَام الحزور» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3753 ، 2829 وقال : حسن صحیح) * فیہ سفیان بن عیینۃ وھو مدلس عنعن وکان یدلس عن الثقات و الضعفاء و المدلسین کما حققتہ فی تخریج الفتن و الملاحم ، و قولہ :’’ ارم ایھا الغلام الحزور ‘‘ سندہ ضعیف و باقی الحدیث صحیح بالشواھد
ব্যাখ্যা: (ارْمِ فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي) আবদুর রহমান মুবারকপূরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পিতা-মাতা উভয়কে একত্রে ‘ফিদা বা উৎসর্গ করা বৈধ। এ মত পোষণ করেন জমহুর বা অধিকাংশ ‘আলিমগণ। কিন্তু এ মতের বিরোধিতা করেছেন ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ), হাসান বাসরী (রহিমাহুল্লাহ) ও কতিপয় ‘আলিমবৃন্দ এবং কোন মুসলিম তার পিতা-মাতাকে উৎসর্গ করুক এটা তারা অপছন্দ করেছেন। তবে সঠিক মত হলো সাধারণত এমনটি করা বৈধ। কেননা এর দ্বারা প্রকৃত উৎসর্গ করা হয় না। এটা শুধুমাত্র একটি কথা, সম্পর্ক ও তার জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সাধারণত ‘ফিদা বা উৎসর্গ সংক্রান্ত অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে যা বৈধতার প্রতি প্রমাণ বহন করে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৭৬৪)
(ارْمِ أَيهَا الْغُلَام الحزور) নিহায়াহ্ গ্রন্থকার বলেন, গোলাম হলো যে ব্যক্তি বালেগের কাছাকাছি বয়সে পৌছে।
সাইয়িদ জামালুদ্দীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে প্রকৃত অর্থ হলো যুবক, কেননা সা'দ যুদ্ধের সময় বালেগ বয়স পার করেছিলেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশারাহ্ মুবাশশারা রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১২৭-[২০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন সা’দ (রাঃ) নবী (সা.) -এর সম্মুখে উপস্থিত হলেন। তখন নবী (সা.) বললেন, ইনি হলেন আমার মামা, অতএব কারো যদি এমন মামা থেকে থাকেন, তবে সে আমাকে দেখাক। (তিরমিযী)
ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন: সা’দ (রাঃ) ছিলেন যুহরাহ্ বংশের লোক আর নবী (সা.) -এর মাতাও ছিলেন সে বানী যুহরাহ্-এর কন্যা। এ হিসেবে নবী (সা.) (সা’দকে) বলেছেন, “ইনি আমার মামা। মাসাবীহ-এর গ্রন্থকার (فَلْيُرني) ’তবে সে আমাকে দেখবে’-এর পরিবর্তে (فلْيُكرمَنَّ) অর্থাৎ ’অবশ্যই তার সম্মান করা উচিত’ শব্দ বর্ণনা করেছেন।
اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابُ مَنَاقِبِ الْعَشَرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ)
وَعَن جَابر قَالَ: أَقْبَلَ سَعْدٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذَا خَالِي فَلْيُرِنِي امْرُؤٌ خَالَهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: كَانَ سَعْدٌ مِنْ بَنِي زهرَة وَكَانَتْ أُمُّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَنِي زُهْرَةَ فَلِذَلِكَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَذَا خَالِي» . وَفِي «الْمَصَابِيحِ» : «فلْيُكرمَنَّ» بدل «فَلْيُرني»
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3752 وقال : حسن) * مجالد ضعیف و للحدیث شواھد ضعیفۃ عند الحاکم (3 / 491) وغیرہ
ব্যাখ্যা: (هَذَا خَالِي فَلْيُرِنِي) মুল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমার মামার মত অন্য কারো মামা হতে পারে না। এ কথা প্রকাশার্থে নবী (সা.) এমনটি বলেছেন। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, বাক্যের প্রকাশভঙ্গি হলো এমন যে, তাকে নিয়ে অবশ্যই আমি মানুষের কাছে গর্ব করি, অতএব প্রত্যেক ব্যক্তি যেন তার মামাকে আমার মতো করে দেখায়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ৩৭৬১)
ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ), সা'দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর “মানাকিব”-এ বলেন, যুহরাহ্ গোত্রের সন্তানেরা নবী (সা.)-এর মামা।
ইবনু হাজার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কেননা নবী (সা.) -এর মা যুহরাহ্ গোত্রের ছিলেন। আর মায়ের পিতৃ গোত্রও নিকটবর্তী লোক মামা সমতুল্য। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৭৬১)