পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৩-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: জাহান্নামের আগুনকে প্রথমে একহাজার বছর পর্যন্ত জ্বালানো হয়েছে, তাতে তা লাল হয়ে যায়। তারপর এক হাজার বছর প্রজ্জ্বলিত করা হয়, ফলে তা সাদা হয়ে যায়। অতঃপর একহাজার বছর অবধি জ্বালানো হয়, অবশেষে তা কালো হয়ে যায়। অতএব তা এখন ঘোর অন্ধকার কালো অবস্থায় রয়েছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أُوقِدَ عَلَى النَّارِ أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى احْمَرَّتْ ثُمَّ أُوقِدَ عَلَيْهَا أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى ابْيَضَّتْ ثُمَّ أُوقِدَ عَلَيْهَا أَلْفَ سَنَةٍ حَتَّى اسْوَدَّتْ فَهِيَ سَوْدَاءُ مُظْلِمَةٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2591) و ابن ماجہ (4320) * شریک القاضی مدلس و عنعن وقال ابو ھریرۃ رضی اللہ عنہ :’’ اترونھا حمراء کنارکم ھذہ ؟ لھی اسود من القار و القار الزفت ‘‘ (الموطا للامام مالک (2 / 994) و سندہ صحیح و حکمہ الرفع : وھو یغنی عنہ ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: হাদীসটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ বহন করে যে, জাহান্নামকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এটাই আহলুস সুন্নাহর মত, তবে ব্যতিক্রম মত পোষণ করে মু'তাযিলা এবং কিছু বিদ্আতী ভ্রান্ত ফিরকাসমূহ। তাদের ‘আক্বীদাহ্ হলো জান্নাত জাহান্নামকে এখনো তৈরি করা হয়নি।
অতএব এমনটি খুবই দুর্বল এবং ভুল ধারণামাত্র। জান্নাত-জাহান্নাম তৈরি করা হয়েছে এই পক্ষে আরো বহু হাদীস আছে যেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬/২৬৯১)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৪-[১০] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন কাফিরের দাঁত হবে উহুদ পাহাড়ের মতো, রান বা উরু হবে বায়যা পাহাড়ের মতো মোটা এবং জাহান্নামে তার বসার স্থান হবে তিন দিনের দূরত্ব পরিমাণ বিস্তীর্ণ। যেমন- ’রবযাহ’ (মদীনাহ্ হতে তিন দিনের দূরত্বের ব্যবধান)। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ضِرْسُ الْكَافِرِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِثْلُ أُحُدٍ وَفَخِذُهُ مِثْلُ الْبَيْضَاءِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ النَّارِ مسيرَة ثَلَاث مثل الربذَة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2578 وقال : حسن غریب
ব্যাখ্যা: (الْبَيْضَاءِ) এটা একটি পাহাড়ের নাম। ব্যাখ্যাকার বলেন, এটা ‘আরবের অঞ্চলগুলোর মধ্যে থেকে একটি জায়গা।
(مثل الربذَة) মদীনার নিকটবর্তী একটি প্রসিদ্ধ গ্রামের নাম এমনটিই নিয়াহাহ্ গ্রন্থে এসেছে। কেউ বলেছেন, মক্কার নিকটবর্তী একটি জায়গার নাম।
কেউ বলেছেন যে, মদীনার একটি গ্রাম, মদীনাহ্ থেকে তিন রাতের দূরত্ব। ব্যাখ্যাকার বলেন, যাতু ‘ইরকের নিকটবর্তী।
(مثل الربذَة) অর্থাৎ মদীনাহ এবং রবাযাহ্-এর মাঝের দূরত্বের সমান হবে। কেননা নবী (সা.) যখন এ হাদীস বলেছেন তখন তিনি মদীনাতেই ছিলেন এবং এর সমর্থন করে অন্য একটি বর্ণনা যা মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, আমার মাঝে এবং রবাযার মাঝে যতটুকু দূরত্ব আছে জাহান্নামীদের নিতম্ব এই পরিমাণ হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৫-[১১] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নামের মধ্যে কাফিরের দেহের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ হাত মোটা, দাঁত হবে উহুদ পাহাড়ের সমান এবং জাহান্নামে তার বসার স্থান হবে মক্কাহ্-মদীনার মধ্যবর্তী দূরত্ব সমান পরিমাণ। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ غِلَظَ جِلْدِ الْكَافِرِ اثْنَانِ وَأَرْبَعُونَ ذِرَاعًا وَإِنَّ ضِرْسَهُ مِثْلُ أُحُدٍ وَإِنَّ مَجْلِسَهُ مِنْ جَهَنَّمَ مَا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2577 وقال : حسن غریب صحیح) * الاعمش مدلس و عنعن و للحدیث شواھد عند احمد (3 / 328 ، 334) وغیرہ دون قولہ :’’ مکۃ و المدینۃ ‘‘ و ھذہ اللفظہ منکرۃ و الحدیث السابق (5674) یغنی عنہ
ব্যাখ্যা: আল জামি গ্রন্থের শব্দ হচ্ছে, (اثْنَانِ وَأَرْبَعُونَ ذِرَاعًا بِذِرَاعِ الْجَنَّارِ) অর্থাৎ বিয়াল্লিশ গজ হবে জাববার-এর হাতে। কামূস-এর মধ্যে বলা হয়েছে যে, (ذِرَاع) হলো কনুই থেকে মধ্যম অঙ্গুলির মাথা পর্যন্ত। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৭৭)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৬-[১২] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (জাহান্নামে) কাফির তার জিহ্বা এক ক্রোশ দুই ক্রোশ পর্যন্ত বের করে হেঁচড়িয়ে চলবে এবং লোকেরা তা মাড়িয়ে চলবে। (আহমাদ ও তিরমিযী এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْكَافِرَ لَيُسْحَبُ لسانُه الفرسَخ والفرسخين يتوطَّؤُه النَّاس» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَقَالَ: هَذَا حَيْثُ غَرِيب
حسن ، رواہ احمد (2 / 92 ح 5671) و الترمذی (2580) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (فرسَخ) শব্দটিকে আরবীতে তিন মাইল বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকী (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন, (إِنَّ الْكَافِرَ ليجر لسانه فرسخين) অর্থাৎ কাফিরদের জিহ্বা কিয়ামতের দিন দুই (فرسَخ) ফারসাখ (ছয় মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত করে দেয়া হবে আর মানুষ সেই জিহ্বা পাড়াবে এবং এটাই সহীহ। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৪৮৯, ২৫৮০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৭-[১৩] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: জাহান্নামে স’উদ নামে একটি পাহাড় আছে (কুরআনেও এর উল্লেখ রয়েছে) কাফিরকে সত্তর বছরে তার উপরে উঠানো হবে এবং সেখান হতে তাকে নীচে নিক্ষেপ করা হবে। এ অবস্থায় সর্বদা উঠানামা করতে থাকবে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الصَّعُودُ جَبَلٌ مِنْ نَارٍ يُتَصَعَّدُ فِيهِ سَبْعِينَ خَرِيفًا وَيُهْوَى بِهِ كَذَلِكَ فِيهِ أَبَدًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِي
حسن ، رواہ الترمذی (2576 وقال : غریب) و الحاکم (4 / 496 ح 8764 و سندہ حسن) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (الصَّعُودُ) এটা কুরআনের আয়াত (سَاُرۡهِقُهٗ صَعُوۡدًا) অর্থাৎ আমি তাকে জাহান্নামের পিচ্ছিল পাথুরে নির্মিত স'উদ পাহাড়ে আরোহণ করতে বাধ্য করব- (সূরাহ আল মুদ্দাসসির ৭৪ : ১৭)। অতএব স্পষ্ট হয়ে গেল যে, জাহান্নামের মধ্যে পিচ্ছিল পাথরের একটি পাহাড় থাকবে এবং কাফিরকে চড়তে বাধ্য করা হবে। (خَرِيفٍا) শব্দটির অর্থ হলো শরৎকাল কিন্তু ‘আরবরা এই শব্দটিকে বছরের অর্থে ব্যবহার করে, কেননা প্রতিটি কাল বা ঋতু বছরে একবার করেই আসে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৮-[১৪] উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)] নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলার বাণী (كَالْمهْلِ) “(তেলের) গাদ” (সূরা আল কাহফ ১৭ : ২৯)-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, তা যায়তুন তেলের নীচের তপ্ত গাদের মতো। যখন তা তার মুখের কাছে নেয়া হবে, তখন গরম উত্তাপে তার মুখের চামড়া-মাংস তাতে খসে পড়বে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي قَوْله: (كَالْمهْلِ) أَيْ كَعَكَرِ الزَّيْتِ فَإِذَا قُرِّبَ إِلَى وَجْهِهِ سَقَطت فَرْوَة وَجهه فِيهِ رَوَاهُ التِّرْمِذِيّّّّّّّ
حسن ، رواہ الترمذی (2581 ، 2584) و الحاکم (2 / 501 ح 3850) و ابن حبان (الاحسان : 7430 / 7473 و سندہ حسن) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (كَالْمهْلِ) শব্দটির ব্যাখ্যা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.) করলেন যে, এটা হচ্ছে তেলের নীচের গাদ।
(سَقَطت فَرْوَة وَجهه) فَروَةُ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো চামড়া। মূলতপক্ষে (فَروَةُ) মানে হলো মাথার চামড়া যার উপর চুল গজায়, তবে এখানে চেহারার চামড়া উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫৮৪)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৭৯-[১৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: জাহান্নামীদের মাথার উপর তপ্ত গরম পানি ঢালা হবে এবং তা তার পেটের মধ্যে প্রবেশ করবে, ফলে পেটের মধ্যে যা কিছু আছে, সমস্ত কিছু বিগলিত হয়ে পায়ের দিক দিয়ে নির্গত হবে। কুরআনে বর্ণিত (الصِّهْرُ) (বিগলিত) করা হবে দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে। আবার সে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে (পুনরায় তা ঢালা হবে)। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الْحَمِيمَ لَيُصَبُّ عَلَى رؤوسهم فَينفذ الْحَمِيم حَتَّى يخلص إِلَى جَوْفه فسلت مَا فِي جَوْفِهِ حَتَّى يَمْرُقَ مِنْ قَدَمَيْهِ وَهُوَ الصَّهْرُ ثُمَّ يُعَادُ كَمَا كَانَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (2582 وقال : حسن غریب صحیح) * روایۃ شعبۃ عن الاعمش محمولۃ علی السماع ، انظر ’’ مسالۃ التسمیۃ ‘‘ لمحمد بن طاھر المقدسی (ص 47) و للحدیث علۃ غیر قادحۃ عند ابن ابی شیبۃ (13 / 161 ح 15991) و احمد (1 / 338 ح 3138) وغیرھما
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে ঐ আয়াতের প্রতি ইশারা করা হয়েছে, (یُصۡهَرُ بِهٖ مَا فِیۡ بُطُوۡنِهِمۡ وَ الۡجُلُوۡدُ) অর্থাৎ যার দ্বারা তাদের পেটের অভ্যন্তরে যা কিছু রয়েছে এবং তাদের চামড়াসমূহ বিগলিত করা হবে। (সূরাহ্ আল হাজ্জ ২২ : ২০)।
(شُمَّ يُعَادُكَماكَانَ) এটা দ্বারা ঐ আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, (کُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُوۡدُهُمۡ بَدَّلۡنٰهُمۡ جُلُوۡدًا غَیۡرَهَا) “যখনই তাদের চামড়াগুলো পুড়ে যাবে তখনই আমি তাদের চামড়াগুলো পাল্টিয়ে দিব যাতে তারা আবার আস্বাদন করতে পারে”- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৫৬)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৮২)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮০-[১৬] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। আল্লাহর বাণী- (يُسْقَى مِنْ مَاءٍ صديد يتجرَّعُه) “জাহান্নামীদের পুঁজ ও কদর্য রক্ত জাহান্নামীদেরকে পান করানো হবে, যা তারা ঢগটগ করে গিলবে”- (সূরাহ্ ইব্রাহীম ১৪ : ১৬)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, উক্ত পানীয় তার মুখের কাছে নেয়া হবে, কিন্তু সে তাকে পছন্দ করবে না। আর যখন তাকে মুখের কাছাকাছি করা হবে, তখন তার চেহারা (তার উত্তাপে) দগ্ধ হয়ে যাবে এবং তার মাথার চামড়া খসে পড়বে। আর যখন সে তা পান করবে তখন তার নাড়িভুড়ি খণ্ড খণ্ড হয়ে মলদ্বার দিয়ে নির্গত হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, (وَسُقُوا مَاءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أمعاءهم) ...এবং জাহান্নামীদেরকে এমন তপ্ত গরম পানি পান করানো হবে যে, তাতে তাদের নাড়িভুঁড়ি খণ্ড খণ্ড হয়ে বের হবে”- (সূরাহ্ মুহাম্মাদ ৪৭ : ১৫)। আল্লাহ তা’আলা আরো বলেছেন, (وَإِنْ يَسْتَغِيثُوا يُغَاثُوا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِي الْوُجُوه بئس الشَّرَاب)“...জাহান্নামীগণ যখন পানি চাবে তখন তেলের গাদের মতো পানি তাদেরকে দেয়া হবে, যাতে তাদের চেহারা দগ্ধ হয়ে যাবে। এটা খুবই মন্দ পানীয় বস্তু...”- (সূরা আল কাহফ ১৮ : ২৯)। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قَوْلِهِ: (يُسْقَى مِنْ مَاءٍ صديد يتجرَّعُه) قَالَ: يُقَرَّبُ إِلَى فِيهِ فَيَكْرَهُهُ فَإِذَا أُدْنِي مِنْهُ شَوَى وَجْهَهُ وَوَقَعَتْ فَرْوَةُ رَأْسِهِ فَإِذَا شَرِبَهُ قَطَّعَ أَمْعَاءَهُ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ دُبُرِهِ. يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: (وَسُقُوا مَاءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أمعاءهم) وَيَقُولُ: (وَإِنْ يَسْتَغِيثُوا يُغَاثُوا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِي الْوُجُوه بئس الشَّرَاب) رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2583) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (يُقَرَّبُ إِلَى فِيهِ) এ হাদীসের সমর্থন কুরআনে এভাবে এসেছে যে, (یَّتَجَرَّعُهٗ وَ لَا یَکَادُ یُسِیۡغُهٗ…)... অর্থাৎ সে তা গিলতে চাইবে কিন্তু সে সহজে গিলতে পারবে না- (সূরাহ্ ইবরাহীম ১৪ : ১৭)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৮৪)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮১-[১৭] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: জাহান্নাম চারটি প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। প্রত্যেক প্রাচীর চল্লিশ বছরের দূরত্ব পরিমাণ পুরু বা মোটা। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لِسُرَادِقِ النَّارِ أَرْبَعَةُ جُدُرِ كِثَف كل جِدَار مسيرَة أَرْبَعِينَ سنة . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (1 / 2584) و الحاکم (4 / 601 ح 8775 و سندہ حسن) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (لِسُرَادِقِ النَّارِ) এখানে ‘লাম’-এর উপর যবর পড়া যাবে তখন এই অংশটুকু মুবতাদাহ্ হবে আর ‘লাম’-এর উপর যেরও পড়া যায় তখন এই অংশটুকু খবর হবে আর এটাই অধিক স্পষ্ট। (لِسُرَادِقِ) বলা হয় প্রত্যেক ঐ জিনিসকে যা কোন কিছুকে বেষ্টন করে রাখে যেমন দেয়াল, তাবু ইত্যাদি। আর কুরআনে অন্য আয়াতে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, (نَّاۤ اَعۡتَدۡنَا لِلظّٰلِمِیۡنَ نَارًا ۙ اَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَا) অর্থাৎ “আমি যালিমদের জন্য আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি যার বেষ্টনি তাদেরকে বেষ্টন করে রাখবে।” (সূরাহ আল কাহফ ১৮: ২৯)।
(كِثَفُ) এই শব্দে (كاف)-এর উপর পেশও পড়া যায় এবং যেরও যবরও পড়া যায়, তবে যেরটাই পড়া ভালো, অধিকাংশ ব্যাখ্যা গ্রন্থে যেরই আছে। আর এটা (كِثَفُ) এর বহুবচন যার অর্থ হলো মোটা পুরু ইত্যাদি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮২-[১৮] উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নামীদের কদর্য পুঁজের এক বালতি যদি দুনিয়াতে ঢেলে দেয়া হয়, তাহলে এটা সমস্ত দুনিয়াবাসীকে দুর্গন্ধময় করে দেবে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ أَنَّ دَلْوًا مِنْ غَسَّاقٍ يَهَرَاقُ فِي الدُّنْيَا لَأَنْتَنَ أَهْلُ الدُّنْيَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
حسن ، رواہ الترمذی (2 / 2584) و الحاکم (4 / 602 ح 8779 و سندہ حسن) ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা: (غَسَّاقٍ) হলো জাহান্নামীদের পুঁজ এবং ময়লা পানি। কেউ বলেছেন, তাদের পঁচা রক্ত, কেউ বলেন তীব্র ঠাণ্ডা হওয়ার কারণে পান করা অসাধ্য হবে, যেমন অধিক গরম হওয়ার কারণে পানি পান করা যায় না। কিন্তু আমি (মুল্লা আলী ক্বারী) বলছি, এসবগুলো মিশ্রিত পানি হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৩-[১৯] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এ আয়াতটি পাঠ করলেন, (اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُم مُسلمُونَ) “...তোমরা আল্লাহকে যথার্থ ভয় কর এবং পূর্ণ মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না”- (সূরাহ আ-লি ’ইমরান ৩ : ১০২)। (অতঃপর) রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যদি ’যাক্কুম’ গাছের এক ফোঁটা এ দুনিয়ায় পড়ে, তবে সমস্ত দুনিয়াবাসীর জীবনধারণের উপকরণসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ঐ সমস্ত লোকদের দুর্দশা কিরূপ হবে, এটা যাদের খাদ্য হবে? [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ: (اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُم مُسلمُونَ) قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَو أَن قَطْرَة من الزقوم قطرات فِي دَارِ الدُّنْيَا لَأَفْسَدَتْ عَلَى أَهْلِ الْأَرْضِ مَعَايِشَهُمْ فَكَيْفَ بِمَنْ يَكُونُ طَعَامَهُ؟» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
صحیح ، رواہ الترمذی (2585) [و ابن ماجہ (4325) و صححہ ابن حبان (الموارد : 2611 ، الاحسان : 7427) و الحاکم علی شرط الشیخین (2 / 294 ، 451) و وافقہ الذھبی]
ব্যাখ্যা: (اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ...) অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় করা ওয়াজিব ফরযগুলো আদায়ের মাধ্যমে এবং গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে। 'আবদুল্লাহ ইবনু মাস্'উদ (রাঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যা করেছেন যে, তার আনুগত্য করা এবং অবাধ্যতা না করা, কৃতজ্ঞতা আদায় করা, কুফরী না করা এবং তাকে স্মরণ করা, ভুলে না যাওয়া।
(مُسلمُونَ) অর্থাৎ একত্ববাদী, নিবেদিত, বশীভূত, অনুতপ্ত এবং ভয় এবং আশার সমন্বয়কারী এবং আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা পোষণকারী। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(الزقوم) এক প্রকারের গাছের পানি যে গাছ জাহান্নামের গোড়া থেকে একাকি বলে হবে। কেউ বলেছেন, যাক্কুম হলো একটি তিক্ত ও দুর্গন্ধময় খবীস গাছ, যা জাহান্নামীরা ভক্ষণ করতে অপছন্দ করবে।
কেউ কেউ বলেন যে, (الزقوم) হলো এক প্রকারের খাদ্য যা খেজুর ও মাখন দ্বারা তৈরি করা হত এবং তা গিলে খেতে হত। অতএব যখন আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত নাযিল করলেন, (اِنَّ شَجَرَتَ الزَّقُّوۡمِ ﴿ۙ۴۳﴾ طَعَامُ الۡاَثِیۡمِ ﴿ۖۛۚ۴۴﴾) অর্থাৎ নিশ্চয় যাক্কুম বৃক্ষ গুনাহগারদের খাদ্য”- (সূরা আদ দুখা-ন ৪৪ : ৪৩-৪৪)। তখন আবূ জাহল বলল যে, মাখন দিয়ে খেজুর গিলে খাব সমস্যা কি? তখন আল্লাহ উক্ত আয়াত নাযিল করলেন যে, এটা জাহান্নামের গোড়া থেকে গজায় এটা দুনিয়ার মতো নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৫৮৫)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৪-[২০] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহর বাণী- (وهم فِيهَا كَالِحُونَ) “আগুন তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে”- (সূরাহ্ আল মুমিনূন ২৩ : ১০৪); এর অর্থ হলো, জাহান্নামী লোকের অবস্থা এই হবে যে, আগুনের প্রচণ্ড তাপে তার মুখ ভাঁজা-পোড়া হয়ে উপরের ঠোট সঙ্কুচিত হয়ে মাথার মধ্যস্থলে পৌছবে এবং নিচের ঠোট ঝুলে নাভির সাথে এসে লাগবে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: (وهم فِيهَا كَالِحُونَ) قَالَ: «تَشْوِيهِ النَّارُ فَتَقَلَّصُ شَفَتُهُ الْعُلْيَا حَتَّى تَبْلُغَ وَسْطَ رَأْسِهِ وَتَسْتَرْخِي شَفَتُهُ السُّفْلَى حَتَّى تضرب سُرَّتَهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2587 وقال : حسن صحیح غریب) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (كَالِحُونَ) বিভৎস চেহারাবিশিষ্ট, এমনকি আগুন তাদের চেহারাগুলো জ্বালিয়ে দিবে। কেউ বলেছেন, তাদের দাঁতগুলো বেড়িয়ে যাবে আর এটাই রাসূল (সা.) -এর ব্যাখ্যার উপযোগী।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫৮৭)।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৫-[২১] আনাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সা.) বলেছেনঃ হে মানুষ সকল! তোমরা (আল্লাহর ভয়ে) খুব বেশি বেশি ক্রন্দন কর। যদি কাঁদতে ব্যর্থ হও, তাহলে ক্রন্দনের রূপ ধারণ কর। কেননা জাহান্নামী জাহান্নামের মধ্যে কাঁদতে থাকবে, এমনকি পানির নালার মতো তাদের চেহারার অশ্রু প্রবাহিত হবে। এমন সময় অশ্রুও শেষ হয়ে যাবে এবং রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে, তাতে তার চক্ষুসমূহে এমন গভীরভাবে ক্ষত হবে যে, যদি তাতে নৌকা চালাতে হয় তবে তাও চলবে। (শারহুস্ সুন্নাহ্)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ ابْكُوا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِيعُوا فَتَبَاكَوْا فَإِنَّ أَهْلَ النَّارِ يَبْكُونَ فِي النَّارِ حَتَّى تَسِيلَ دُمُوعُهُمْ فِي وُجُوهِهِمْ كَأَنَّهَا جَدَاوِلُ حَتَّى تَنْقَطِعَ الدُّمُوعُ فَتَسِيلَ الدِّمَاءُ فَتَقَرَّحَ الْعُيُونُ فَلَوْ أَنَّ سُفُنًا أُزْجِيَتْ فِيهَا لجَرَتْ» . رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»
اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (15 / 253 ح 4418) * فیہ یزید الرقاشی : ضعیف و عمران بن زید التغلبی : لین و للحدیث لون آخر عند ابن ماجہ (4324) و سندہ ضعیف ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যাঃ (ابْكُوا) তোমরা তোমাদের গুনাহের উপর অনুতপ্ত হয়ে কাঁদো এবং তোমাদের রবের থেকে ক্ষমার আকাক্ষা করে কাঁদো।
‘আইন বর্ণমালায় পেশ দিয়ে এটা বহুবচন, একবচন হলো ‘আইন, যার অর্থ চোখ। অর্থাৎ চোখ অশ্রুশিক্ত হয়ে যাবে বা রক্তে রঞ্জিত হয়ে যাবে। (سُفُن) এটা (سَفِينَة) এর বহুবচন অর্থ হলো নৌকা। (أُزْجِيَتْ) এটা (الْإِزْجَاءِ) থেকে অর্থ পাঠানো। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৬-[২২] আবুদ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নামবাসীদের ভীষণ ক্ষুধায় লিপ্ত করা হবে এবং ক্ষুধার কষ্ট সেই ’আযাবের সমান হবে, যা তারা পূর্ব হতে জাহান্নামে ভোগ করছিল। তারা প্রার্থনা করবে। এর প্রেক্ষিতে তাদেরকে যরী’ নামক এক প্রকার কাঁটাযুক্ত দুর্গন্ধময় খাদ্য দেয়া হবে। তা তাদেরকে তৃপ্ত করবে না এবং ক্ষুধা নিবারণ করবে না। অতঃপর পুনরায় খাদ্যের জন্য প্রার্থনা করবে, এবার এমন খাদ্য দেয়া হবে, যা তাদের গলায় আটকে যাবে। তখন তাদের দুনিয়ার ঐ কথাটি স্মরণে আসবে যে, এভাবে গলায় কোন খাদ্য আটকে গেলে তখন পানি পান করে তাকে নীচের দিকে ঢুকানো হত, অতএব তারা পানির জন্য ফরিয়াদ করবে, তখন তপ্ত গরম পানি লোহার কড়া দ্বারা উঠিয়ে কাছে ধরা হবে, যখন তা তাদের মুখের কাছাকাছি করা হবে, তখন তাদের মুখের গোস্ত ভাজা-পোড়া হয়ে যাবে, আর যখনই সে পানি তাদের পেটের ভিতরে ঢুকবে, তা তাদের পেটের ভিতরে যা কিছু আছে, তা খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলবে। এবার জাহান্নামীগণ একে অপরে বলবে, জাহান্নামের রক্ষীদেরকে আহ্বান কর; (যেন আমাদের শাস্তি হ্রাস করা হয়) তখন রক্ষীগণ বলবেন, তোমাদের কাছে কি আল্লাহর রাসূল (সা.) স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ নিয়ে উপস্থিত হননি? তারা বলবে, হ্যা, এসেছিলেন।
তখন প্রহরীরা বলবেন, তোমাদের প্রার্থনা তোমরা নিজেরাই কর। অথচ কাফিরদের প্রার্থনা অর্থহীন (কবুল করবেন না) তিনি (সা.) বলেন, এবার জাহান্নামীগণ বলাবলি করবে, (জাহান্নামের দারোগা) মালিককে ডাক। তখন তারা বলবে, হে মালিক! তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের কাছে এই আবেদন কর, তিনি যেন আমাদেরকে মৃত্যু দান করেন। উত্তরে মালিক বলবেন, তোমরা সর্বদার জন্য এখানে এ অবস্থাতেই থাকবে। অধস্তন রাবী আমাশ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমাকে বর্ণনা করা হয়েছে, জাহান্নামীদের আহ্বান বা ফরিয়াদ আর মালিকের উত্তরের মাঝখানে একহাজার বছর অতিবাহিত হবে। তিনি (সা.) বললেন, জাহান্নামীগণ সর্বদিক হতে নিরাশ হয়ে অতঃপর তারা পরস্পরে বলবে, এবার তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে সরাসরি ফরিয়াদ কর। তোমাদের রবের চেয়ে উত্তম আর কেউ নেই। তখন তারা বলবে, হে আমাদের পরোয়ারদিগার! আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের ওপর প্রবল হয়ে গেছে, ফলে আমরা গোমরাহ সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছি। হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে এ জাহান্নাম হতে বের করে দাও। এরপরও যদি আমরা আবার অবাধ্যতায় লিপ্ত হই, তাহলে আমরাই হব নিজেদের উপর অত্যাচারী।
তিনি (সা.) বলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে উত্তর দেবেন, (হে হতভাগার দল!) দূর হও, জাহান্নামেই পড়ে থাক, তোমরা আমার সাথে আর কথা বলবে না। তিনি (সা.) বলেন, এ সময় তারা আল্লাহ তা’আলার সর্বপ্রকারের কল্যাণ হতে নিরাশ হয়ে পড়বে এবং এরপর হতে তারা (জাহান্নামের মধ্যে থেকে) বিকটভাবে চিৎকার ও হা-হুতাশ এবং নিজেদের ওপর ধিক্কার করতে থাকবে। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, লোকেরা এ হাদীসটি মারফু’রূপে বর্ণনা করেন না। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُلْقَى عَلَى أَهْلِ النَّارِ الْجُوعُ فَيَعْدِلُ مَا هُمْ فِيهِ مِنَ الْعَذَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ مِنْ ضَرِيعٍ لَا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِي مِنْ جُوعٍ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالطَّعَامِ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ ذِي غُصَّةٍ فَيَذْكُرُونَ أَنَّهُمْ كَانُوا يُجِيزُونَ الْغُصَصَ فِي الدُّنْيَا بِالشَّرَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالشَّرَابِ فَيُرْفَعُ إِلَيْهِمُ الْحَمِيمُ بِكَلَالِيبِ الْحَدِيدِ فَإِذَا دَنَتْ مِنْ وُجُوهِهِمْ شَوَتْ وُجُوهَهُمْ فَإِذَا دَخَلَتْ بُطُونَهُمْ قطعتْ مَا فِي بطونِهم فيقولونَ: ادْعوا خَزَنَةَ جهنمَ فيقولونَ: أَلمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ؟ قَالُوا: بَلَى. قَالُوا: فَادْعُوا وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ قَالَ: فيقولونَ: ادْعوا مَالِكًا فيقولونَ: يَا مالكُ ليَقْضِ علَينا ربُّكَ قَالَ: «فيُجيبُهم إِنَّكم ماكِثونَ» . قَالَ الْأَعْمَشُ: نُبِّئْتُ أَنَّ بَيْنَ دُعَائِهِمْ وَإِجَابَةِ مَالِكٍ إِيَّاهُمْ أَلْفَ عَامٍ. قَالَ: فَيَقُولُونَ: ادْعُوا رَبَّكُمْ فَلَا أَحَدَ خَيْرٌ مِنْ رَبِّكُمْ فَيَقُولُونَ: رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَالِّينَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَالِمُونَ قَالَ: فيُجيبُهم: اخْسَؤوا فِيهَا وَلَا تُكلمونِ قَالَ: «فَعِنْدَ ذَلِكَ يَئِسُوا مِنْ كُلِّ خَيْرٍ وَعِنْدَ ذَلِكَ يَأْخُذُونَ فِي الزَّفِيرِ وَالْحَسْرَةِ وَالْوَيْلِ» . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: وَالنَّاسُ لَا يرفعونَ هَذَا الحديثَ. رَوَاهُ الترمذيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2586) * الاعمش مدلس و عنعن و قال احمد :’’ الاعمش لم یسمع من شمر بن عطیۃ ‘‘ (المراسیل لابن ابی حاتم ص 82) ۔
(ضعيفٌ)
ব্যাখ্যা: (فَيَعْدِلُ مَا هُمْ فِيهِ) অর্থাৎ তাদের ওপর এমন ক্ষুধা লাগিয়ে দেয়া হবে যে, তারা আর সমস্ত শাস্তি থেকে এই ‘আযাবকেই অধিক কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক মনে করবে বা অন্য সমস্ত শাস্তির সমান মনে করবে শুধু ক্ষুধার শাস্তিটাকেই।
(ضَرِيعٍ) এটা হিজাযের একটি উদ্ভিত যার কাটা রয়েছে এবং কোন প্রাণী এর নিকটে যায় না তার দুর্গন্ধের কারণে আর যদি কোন প্রাণী তা ভক্ষণ করে তাহলে মারা যায়। এখানে উদ্দেশ্য হলো আগুনের কাটা যা এক প্রকার তিক্ত গাছের রসের থেকেও তিক্ত এবং মৃত প্রাণী থেকেও দুর্গন্ধ এবং আগুনের চেয়েও গরম।
(ذِي غُصَّةٍ) যা গলার মধ্যে আটকে যাবে এবং গিলতে পারবে না হাড্ডি বা অন্য কোন কিছুর কারণে যা উপরেও উঠবে না নিচেও নামবে না। (غُصَّة) এটা এক বচন এর বহুবচন (غُصَص) অর্থ হলো কাঁটা।
(كَلَالِيبِ)এটা বহুবচন একবচন হলো (كَلَاب) অর্থ লোহার বাঁকা পেরেক।
(الزَّفِيرِ وَالْحَسْرَةِ وَالْوَيْلِ)বলা হয় নিজেকে জালিয়ে দেয়া কঠোরতার কারণে। আর (الْحَسْرَةِ) হলো লজ্জা (الْوَيْلِ) হলো ধ্বংস ও শাস্তির কঠোরতা। কেউ বলেছেন, এটা জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৭-[২৩] নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, ’আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে ভীতি প্রদর্শন করেছি, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে ভীতি প্রদর্শন করেছি।’ তিনি এ বাক্যগুলো বারংবার এমনভাবে উচ্চৈঃস্বরে বলতে থাকলেন যে, বর্তমানে আমি যে স্থানে বসে আছি, যদি তিনি (সা.) এ স্থান হতে উক্ত বাক্যগুলো বলতেন, তবে তা বাজারের লোকেরাও শুনতে পারত। আর তিনি এমনভাবে (হেলে দুলে) বাক্যগুলো বলেছেন যে, তার কাঁধের উপর রক্ষিত চাদরটি পায়ের উপরে গড়িয়ে পড়েছিল। (দারিমী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «أَنْذَرْتُكُمُ النَّارَ أَنْذَرْتُكُمُ النَّارَ» فَمَا زَالَ يَقُولُهَا حَتَّى لَوْ كَانَ فِي مَقَامِي هَذَا سَمِعَهُ أَهْلُ السُّوقِ وَحَتَّى سَقَطَتْ خَمِيصَةٌ كَانَتْ عَلَيْهِ عِنْدَ رجلَيْهِ. رَوَاهُ الدَّارمِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الدارمی (2 / 330 ح 2815 ، نسخۃ محققۃ : 2854) [و صححہ الحاکم (1 / 287) و وافقہ الذھبی] ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (أَنْذَرْتُكُمُ النَّارَ) আমি তোমাদেরকে জানিয়েছি যার দ্বারা তোমরা আগুন থেকে বাঁচতে পার, এমনকি বলেছি আগুন থেকে বাঁচ যদিও খেজুরের বিচির দ্বারা হোক।
(خَمِيصَةٌ) এক প্রকারের কাপড় যা চাদরের পরিবর্তে পরিধান করা হত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৮-[২৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যদি একখানা সীসা দ্বারা নির্মিত গোলা- এ কথা বলে তিনি মাথার খুলির মতো গোল জিনিসের দিকে ইঙ্গিত করলেন- আকাশ হতে জমিনের দিকে ছেড়ে দেয়া হয়, তখন তা একটি রাত্র অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই জমিনে পৌছে যাবে, অথচ এ দুয়ের মধ্যবর্তী শূন্যস্থানটি পাঁচশত বছরের পথ। কিন্তু যদি তাকে ঐ শিকল বা জিঞ্জিরের এক পার্শ্ব হতে ছেড়ে দেয়া হয়, যার দ্বারা জাহান্নামীদেরকে বাধা হবে, তখন তা দিবারাত্রি অতিক্রম করতে করতে চল্লিশ বছর পর্যন্তও তার মূলে অথবা বলেছেন, তার গভীর তলদেশে পৌছতে পারবে না। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ أَنَّ رَصَاصَةً مِثْلَ هَذِهِ - وَأَشَارَ إِلَى مِثْلِ الْجُمْجُمَةِ - أُرْسِلَتْ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ وَهِيَ مَسِيرَةُ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ لَبَلَغَتِ الْأَرْضَ قَبْلَ اللَّيْلِ وَلَوْ أَنَّهَا أُرْسِلَتْ مِنْ رَأْسِ السِّلْسِلَةِ لَسَارَتْ أَرْبَعِينَ خَرِيفًا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ قَبْلَ أنْ تبلع أَصْلهَا أَو قعرها» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2588 وقال : حسن صحیح) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (رَصَاصَةً) সীসার একটা টুকরা আবার ছোট ছোট পাথরকেও (رَصَاصَةً) বলা হয় যেগুলোর কাজ করে এবং এটা আধুনিক অর্থ হলো গুলি বুলেট।
(جُمْجُمَةِ) এর অর্থ হলো মাথায় খুলি। কেউ বলেছেন, এটার দ্বারা একটি ছোট পেয়ালা বুঝানো হয়েছে। তবে প্রথমটাই অধিক সহীহ।
(سِّلْسِلَةِ) এটা একটি শিকলের নাম যা দ্বারা জাহান্নামীদেরকে বেঁধে রাখা হবে। এ হাদীসের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা.) জাহান্নামের গভীরতা বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ২৫৮৮)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৯-[২৫] আবূ বুরদাহ্ (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। নবী (সা.) বলেছেন: জাহান্নামের মধ্যে এমন একটি নালা বা গর্ত আছে, যার নাম ’হাবহাব’। প্রত্যেক স্বৈরাচারী অহংকারীকে সেখানে রাখা হবে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَن أبي بُردةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ فِي جَهَنَّمَ لَوَادِيًا يُقَالُ لَهُ: هَبْهَبُ يسكنُه كلُّ جبَّارٍ رَوَاهُ الدَّارمِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (2 / 331 ح 2819 ، نسخۃ محققۃ : 2858) * فیہ ازھر بن سنان : ضعیف ۔
ব্যাখ্যা: (وَادِيًا) এটা একবচন, বহুবচন হলো (أوديه) অর্থ হলো উপত্যকা। (هَبْهَبُ) এটা একটি নাম। কেউ বলেছেন, এখানে (أَمْرٌ) এর সীগাকে দু’বার আনা হয়েছে (هَبْهَبُ), কেননা যে উপস্থিত হবে সে বলবে (كلُّ جبَّارٍ) هَبْهَبُ প্রত্যেক অহংকারী বিদ্বেষী যে সত্য থেকে দূরে অবস্থানকারী সৃষ্টিজীবের উপর কঠোর।
ইবনু মারদাওয়াইহ ইবনু উমার থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, (فَلَق) জাহান্নামের একটি জেলখানার নাম। এর মধ্যে বন্দি করা হবে প্রত্যেক অহংকারী, প্রতাপশালী এবং স্বেচ্ছাচারীদেরকে। এখানে উল্লেখিত হয়েছে যে, জাহান্নামও এই জেলখানা থেকে আশ্রয় চায়। অনুরূপ আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, (الْفَلَقُ) হলো জাহান্নামের একটি গভীর গর্তের নাম যা ঢাকা থাকবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)